অনুভবে তুমি পর্ব-২৬

0
660

#অনুভবে_তুমি
#পর্ব_২৬
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

রাত তিনটা বাজে।ইভানের বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।সেজন্য পুরো বাসার লাইট অফ করা।কিন্তু হঠাৎ কে যেনো বাসার ভিতর প্রবেশ করলো।অতশী জেগেই ছিলো।সেজন্য সে দরজা খোলার শব্দ শুনতে পেয়ে নিজেও বের হয়ে এলো।অতশী দরজা খুলে বাহিরে বের হতেই দেখে ইভানের রুমের লাইট অন করা। দরজা খোলা থাকায় রুমের আলো দূরে থেকেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
অতশী বুঝতে পারলো ইভান মাত্র বাসায় আসলো।সারাদিন সারারাত ইভান বাহিরে থাকে।ছেলেটা এতো পরিশ্রম করে এই বাসায় না থাকলে সেটা বুঝতেই পারতো না অতশী।
অতশী ইভানের রুমের দিকে চলে গেলো।দরজাতে দাঁড়াতেই দেখে ইভান তার ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে।অতশী মনে মনে ভাবতে লাগলো বাসায় মাত্র আসলো।এসে কই একটু রেস্ট নিবে তা না করে আবার সেই কাজ নিয়ে বসে পড়েছে।
হঠাৎ ইভান অতশীকে জিজ্ঞেস করলো,ঘুমাও নি?এতো রাতে জেগে আছো কেনো?

অতশী ইভানের কথা শুনে একটু চমকেই উঠলো কারন ইভান তার দিকে না তাকিয়েই কি করে বুঝতে পারলো যে সে এসেছে!

অতশী কে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা দেখে ইভান বললো,ভিতরে আসো।ওভাবে বোবার মতো দাঁড়িয়ে আছো কেনো?
অতশী সেই কথা শুনে বললো, না মানে ভাইয়ার কথা জিজ্ঞেস করার জন্য এসেছিলাম।অয়ন ভাইয়া এখন কেমন আছে?
–ভালো আছে।ওকে নিয়ে কারো চিন্তা করতে হবে না।

অতশী তখন বললো,আসলে আম্মু ভাইয়ার জন্য খুব টেনশন করছিলো।আপনাকে জিজ্ঞেস করতে বলেছিলো।কিন্তু আপনি তো সারাদিন বাসাতেই ছিলেন না।তা সারাদিন কই ছিলেন?

ইভান অতশীর কথা শুনে তার ল্যাপটপ টা বন্ধ করলো,আর অতশীর কাছে এসে বললো,এখন থেকেই কৈফিয়ত নেওয়া শুরু করে দিয়েছো?

–না মানে সেভাবে বলি নি কিন্তু।আমি আসলে,,,,

অতশী পুরো কথা শেষ না করতেই ইভান বললো, আমার বউ হতে হলে অনেক বেশি ধৈর্য্যশীল হতে হবে,সারাদিন সারারাত একা থাকা শিখতে হবে।আর কোনো কাজের ব্যাপারে প্রশ্ন করা যাবে না।আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করা যাবে না।সারাদিন সারারাত কোথায় থাকি,কি করি এসব ও জিজ্ঞেস করা যাবে না।
পারবে এসব?

অতশী ইভানের কথা শুনে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো। ইভান কি বলছে এসব?সে তো এমনি জিজ্ঞেস করছিলো।আর সে তাকে বউ হওয়ার নিয়মকানুন শেখাচ্ছে!

ইভান হঠাৎ অতশীর হাতে একটা ডায়রি দিয়ে বললো, রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।আর ঘুম না ধরলে ডায়রি টা পড়তে পারো।আমার এখন অনেক কাজ আছে।ওকে?

অতশী ইভানের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে রইলো।কারন সে ইভান কে এখনো বুঝতে পারছে না।এই ছেলেটা আসলে চাচ্ছে টা কি?

–কি হলো?বললাম তো রুমে যাও।কাজ আছে আমার।

অতশী সেই কথা শুনে ডায়রি টা নিয়ে তার রুমে চলে গেলো।সে মনে মনে ভীষণ লজ্জিত হলো।কেনো যে আসতে গেলো এ রুমে?ইভান মনে হয় অন্য কিছু ভাবছে।

অতশী রুমে গিয়ে দেখে সবাই এখনো ঘুমিয়ে আছে।সেজন্য সে ডায়রি টা বের করে পড়তে লাগলো।

❝সারাটা জীবন পার করলাম পড়াশোনা করতে করতে। আর এখন জীবন পার করছি সন্ত্রাসীদের পিছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে।আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমিও একজন প্রেমিক পুরুষ।আমার মনেও ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
আমার মনের এই সুপ্ত প্রেম কে জাগিয়ে তুললো পিচ্চি এক মেয়ে।যদিও সে সবার চোখে একজন ইয়ং মেয়ে।কিন্তু আমাকে কেনো জানি তাকে পিচ্চি পিচ্চি লাগে।
এতো ব্যস্ততা আর পরিশ্রমের মাঝে যদি একবার তার মুখ দেখি মুহুর্তের মধ্যে সব কষ্ট দূর হয়ে যায় আমার।আমি গভীর ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছি তার উপর।কি আছে তার ঐ চোখজোড়ায়?যা দেখলেই মুহুর্তের মধ্যে আমাকে অবশ করে দেয়,আমি আমার চেতনা হারিয়ে ফেলি।আর যখন হেসে ওঠে তখন আর নিজেকে সামলাতে পারি না।
এই পিচ্চিটাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিন সে ব্লু কালারের একটা থ্রী পিচ আর মাথায় সাদা কালারের একটা হিজাব পড়েছিলো।আমি পরি দেখি নি কোনদিন।কিন্তু এক দেখায় তাকে আমার পরিই মনে হয়েছিলো।আমার মনে প্রথম প্রেমের সূচনা সেই করেছে,সেই আমার প্রথম প্রেম।
কোনদিন যদি তাকে আমার মনের কথাগুলো সরাসরি বলতে পারতাম তখন মনে হয় আত্নাটা আমার শান্তি পেতো।কিন্তু আফসোস! তার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি বেঁহুশ হয়ে যাই।কিছুই মনে থাকে না।
তার সাথে যখনি আমার কথা হয়েছে তখনি শুধু তাকে বকা দিয়েছি,ধমক দিয়ে কথা বলেছি।তাকে কখনোই ভালোবাসে আদর করে কথা বলতে পারি নি।মাঝে মাঝে মনে হয় আমি মানুষ টা একজন হলেও আমার মাঝে দুই রকমের চরিত্র।বাহিরে আমি অনেক বেশি রুঢ়,আমার ভাষা রুঢ়,আমার আচরনও রুঢ়।
কিন্তু যখন দিনশেষে আমি আমার মনের কথা অনুভব করি,তখন বুঝতে পারি, আমার মন ভরা শুধুই ভালোবাসা।সেখানে নেই কোনো জটিলতা❞

কবিতাটি শুধু আমার সেই ভালোবাসার মানুষের জন্য,যাকে আমি সবসময় ফিল করি।

“তুমি পরম যতনে,
রাখলে লাল গোলাপ তোমার ঐ কানে
অত্যন্ত অবাক হয়ে,
আমি দেখি চেয়ে।
ফেরাতে পারি না নয়ন আমার,
দেখে ঐ সৌন্দর্য তোমার।
ক্ষমা করিও আমায় ওগো সুন্দরী
একদৃষ্টে যদি তোমার পানে চেয়ে থাকি
বললে হবে না একটুও ভুল।
এক ফুলে পায় শোভা আরেক ফুল।

সৌন্দর্যের প্রতিমা তুমি
দেখি যত মুগ্ধ হই তত আমি,
মায়াবি তোমার চাহনি
মায়াবি তোমার মন জানি
মনের অজান্তেই পড়েছি প্রেমে,
অনুভবে তুমি প্রিয়া অনুভবে তুমি।

অতশী ডায়রির প্রথম পৃষ্ঠাটি পড়তেই তার পুরো শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেলো।সে আর পড়তে পারলো না।ডায়রি টা নিয়ে এক দৌঁড়ে আবার ইভানের রুমে আসলো।
ইভান এখনো তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে।অতশী সাহস করে কিছু বলতেও পারছে না।তবুও এগিয়ে গেলো ইভানের কাছে।আর ডায়রিটা ইভানের হাতে দিয়ে বললো,সেই মেয়েটি কে জানতে পারি কি?
–কোন মেয়ে?
–ডায়রি টে যে মেয়ের কথা লিখেছেন।
–তোমার কি মনে হয়?

অতশী তখন ইভানের ল্যাপটপ টা বন্ধ করে দিয়ে বললো,আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলুন।এটা কোন মেয়ে?

ইভান তখন বললো,যাকে আই লাভ ইউ বলেছি এটা সেই মেয়ে।

–মানে আমি এটা?আপনি আমাকে এমন ভাবে কবে পর্যবেক্ষণ করলেন?আপনি তো আমার দিকে তাকাতেনই না।কথা পর্যন্ত বলতে চাইতেন না।তাহলে কবে থেকে এতো ভালোবাসতে শুরু করেছেন?

–আমার এখন কাজ আছে অতশী।আমি খুব জরুরি একটা বিষয় নিয়ে ফাইল তৈরি করছি।পরে কথা বলছি।

–না আমি এখনি শুনবো।আমি আপনাকে বুঝতে পারছি না।আপনার কথার আগামাথাও কিছু বুঝি না আমি।আপনি প্লিজ ক্লিয়ার করে বলবেন একটু।

ইভান সেই কথা শুনে অতশীর একদম কাছে চলে গেলো।আর পাগল করা চাহনিতে তাকিয়ে রইলো।
অতশী ইভান কে এভাবে তার কাছে আসা দেখে পেছাতে লাগলো।
ইভান তখন অতশীর হাত টেনে ধরে বললো, পিছিয়ে যাচ্ছো কেনো?বোঝানোর জন্যই তো এলাম।

–না মানে?আপনি এসব কি করছেন?এভাবে এগিয়ে আসছেন কেনো?আমি তো শুধু বলতে,,,,

অতশী পুরো কথা শেষ না করতেই ইভান অতশীর ঠোঁটের কাছে নিজের ঠোঁট নিয়ে গেলো।আর বললো,এতো রাতে আমার জন্যই জেগে আছো তাই না?অনেক বেশি ভালোবাসো আমাকে তাই তো?বিয়ে করার জন্য প্রস্তুতি নাও।খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে চাই।

ইভান কে এমন কাছে আসা দেখে অতশীর পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো।আর বিয়ের কথা শুনে সে একদম থ হয়ে গেলো।অতশী আর তাকিয়ে থাকতে পারলো না।সে চোখ বন্ধ করে থাকলো।
ইভান তখন অতশীর হাত ছেড়ে দিয়ে তার ঠোঁট স্পষ্ট করে বললো আই লাভ ইউ।আই লাভ ইউ সো মাচ অতশী।
এই বলে ইভান আবার তার কাজে মনোযোগ দিলো।

অতশী এখনো ঘোরের মধ্যে আছে।সে এখন পর্যন্ত চোখ খোলে নি।তার বুক এখনো ধড়ফড় করছে।তার মনে হচ্ছে ইভান এখনো তার কাছেই আছে।কারন সে এখনো ইভানের শরীর থেকে আসা পারফিউম এর ঘ্রাণ পাচ্ছে।

–কি হলো?যাও রুমে।এতো রাতে কেউ যদি তোমাকে দেখে তখন কি হবে?

এতোক্ষনে অতশীর ধ্যান ভাংলো।সে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ইভান তার কাজ করছে।সেজন্য অতশী আর দেরী না করে দৌঁড়ে তার রুমে চলে গেলো।
আজ সারারাত ঘুমাতে পারলো না অতশী।বার বার শুধু তার কানে একটা কথাই বাজছে,আই লাভ ইউ।আই লাভ ইউ সো মাচ।

অতশীর পুরো পরিবার এখন ইভান দের বাসাতেই আছে।কিন্তু ব্যাপারটাকে সহজ ভাবে নিলেন না মুহিব সাহেব।কারন যেখানে অয়ন একজন নামকরা সন্ত্রাসী,আর পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেখানে অয়নের পরিবার কে আশ্রয় দেওয়া মোটেও ঠিক হয় নি ইভানের।
মুহিব সাহেব এই বিষয় নিয়ে ইভানের সাথে কথাও বলে।কিন্তু ইভান কোনো উত্তর দেয় না।

কারণ ইভান নিজেও জানে, এটা তার জন্য অনেক বড় একটা রিস্কের কাজ।কারন কেউ যদি শুনতে পারে সন্ত্রাসী অয়নের পরিবার ইভানের বাসায় তাহলে তার চাকরি চলে যাওয়ার সাথে সাথে নানা রকম শাস্তি হতে পারে।
ইভান এজন্য অনেক টেনশনে আছে।কিন্তু এই সময়ে ওদের সবাইকে একা একা রাখা নিরাপদ মনে হয় নি দেখেই ইভান এনেছে তাদের।

সকালবেলা হঠাৎ করেই ইভান কে কিছু না জানিয়েই পুলিশ অফিসার আকরাম আসলো ইভানের বাসায়।ইভানরা সবাই তখন নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছে।
ইভান পুলিশ অফিসার আকরাম কে দেখামাত্র তাড়াতাড়ি করে তাকে রুমে নিয়ে গেলো।অফিসার আকরাম রুমে যেতেই ইভান কে বললো,অয়নের ফ্যামিলির কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।হয় তো অয়ন এসে নিয়ে গেছে।
ইভান কি বলবে বুঝতে পারছে না।তার শুধু ভয় হচ্ছে আকরাম সবাইকে চিনে ফেললো না তো?
ইভান তখন বললো অফিসার আপনি ওর ফ্যামিলিকে না খুঁজে অয়ন কে খুঁজুন।কারন আমাদের মূল টার্গেট অয়ন,অয়নের পরিবার না।

পুলিশ অফিসার আকরাম তখন বললো, হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছেন।কিন্তু আমি এসেছি অন্য আরেকটা নিউজ শুনে।

–কি নিউজ?

–আপনার বোনের সাথে নাকি অয়নের বিয়ে হয়েছে?

ইভান বুঝতে পারলো অফিসার আকরাম সব জেনেই এসেছে।সেজন্য ইভান বললো,হ্যাঁ।আমাদের কে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে।আমরা রাজি ছিলাম না।

অফিসার আকরাম তখন বললো, সেজন্য সেদিন রাতে আমাকে চালাকি দিয়ে বোন কে এ বাড়িতে নিয়ে এসেছেন?

ইভান চুপ করে রইলো।তার কিছু বলার নাই।

তখন অফিসার আকরাম বললো,বুঝতে পারছেন কত বড় অন্যায় করেছেন আপনি?মৌরি যদি শুধু আপনার বোন হতো তাহলে মানা যেতো।কিন্তু সে এখন সন্ত্রাসী অয়নের বউ।সেজন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।আর আপনি কাউকে না জানিয়ে কেনো এই কাজ করলেন?

ইভানের পুরো শরীরের রক্ত গরম হয়ে উঠলো।ইচ্ছা করছিলো আকরামের কানে কপালে দুই টা চড় বসে দিতে।

আকরাম তখন বললো, ওদের সবাই কে পাঠিয়ে দিন।অয়নের মা দাদী বোন এবং বউ সবাই কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ইভান তখন বললো,না আমি ওদের পাঠাবো না আর।কারন ও বাড়িতে থাকলে সন্ত্রাসীরা ক্ষতি করতে পারে ওদের।

আকরাম তখন অবাক হয়ে বললো,
সন্ত্রাসী!কোন সন্ত্রাসী!
অয়ন তো নিজেই সন্ত্রাসীদের লিডার।তাহলে ওর পরিবারের কে ক্ষতি করবে?তারমানে আপনি অয়ন ছাড়াও অন্য জনকে সন্দেহ করছেন?

ইভান ভুল করে কথা টা বলে ফেলেছে।এখন অফিসার কে সে কি উত্তর দেবে?কারন সবাই জানে অয়নই সন্ত্রাসী দের লিডার।

–কি হলো অফিসার ইভান?চুপ হয়ে গেলেন কেনো?আপনি কি কিছু লুকাচ্ছেন?

–এখানে লুকানোর কি আছে?আপনার বোন হলে আপনিও এটাই করতেন।যেখানে তার স্বামী পলাতক,সেই বাড়িতে বোনকে কি করে পাঠাবো আমি?

অফিসার আকরাম তখন বললো, আপনি আবার আপনার বোনের স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন না তো?

ইভান এবার ভীষণ রেগে গেলো।সে জোরে চিৎকার করে বললো, অফিসার মুখ সামলিয়ে কথা বলুন।ভুলে যাবেন না আমি একজন সি আই ডি অফিসার।আমার কাছে সবাই সমান।যে যেমন কাজ করবে সে তেমন শাস্তি পাবে।

–তাহলে অয়নের ফ্যামিলিকে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিন।মৌরি কে নিজের বোন না ভেবে সন্ত্রাসী অয়নের স্ত্রী ভাবুন।আমি জানি আপনি একজন দায়িত্ববান অফিসার।নিশ্চয় আইন মান্য করবেন।

#চলবে,