অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-২৫+২৬

0
786

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ২৫
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
মি.কে ডেকেছিলেন?

– হ্যাঁ। তোমার কল এসেছিলো।
ফোন টা হাতে নিয়ে দেখতেই দেখে অর্নব দিয়েছিলো।
.
নির্ভান ও দেখেছে যে অর্নব কল করেছিলো অবশ্যই নাম টা দেখেছে। সানভি চলে গেলো ফোন টা নিয়ে কল দিতো না ও কিন্তু অর্নব ই আবার কল করেছে তাই কল টা রিসিভ করলো

– হ্যালো।

– সানভি।

– জি বলুন।

– সানভি একবার জাস্ট আর একবার আমরা সামনাসামনি মিটিং করতে পারি? আমি আরো কিছু কথা বলতে চাই প্লিজ আর একবার দেখা করো আমার সাথে।

– আপনার ভাবার সময় শেষ?

– হ্যাঁ সানভি আর উত্তর টা আমি মুখোমুখি বসেই দিতে চাই।

– ফোনে ও বলে দিতে পারেন আমি শুনছি।

– প্লিজ যা বলবো দেখা করেই বলবো। তোমার কাজ শেষ হলে আমাকে কল দিয়ো আমি তোমাকে পিক করতে যাবো নে না করো না প্লিজ।

– আচ্ছা ঠিকাছে আমি বের হওয়ার কিছুক্ষন আগে কল দিবো।
.
আড়ালে দাঁড়িয়ে নির্ভান সানভির কথা গুলো শুনে বুঝতে পারলো সানভির যাওয়ার ইচ্ছে নেই তবুও যাবে বলছে।,,,, এই অর্নব অনেক সমস্যা করছে ও ই সানভি কে জব ছাড়ার কুবুদ্ধি দিয়েছে। আর এখন ওর যাওয়ার ইচ্ছে নেই তবুও যাচ্ছে। আমি ও যাবো তাহলে সান তোমার পিছে, টু মাচ ফান। বলেই নির্ভান আবার চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেলো ও যে এসেছিলো তা বুঝতে দেয়নি।
.
সানভি কাজ শেষ হওয়ার পর অর্নব কে কল করলো ও দশ মিনিটের ও কম সময় এর মধ্যে চলে এসেছে হয়তো আশে পাশেই কোথাও ছিলো। আজকে অর্নব গাড়ি নিয়ে এসেছে সানভি উঠে বসতেই বললো

– তোমার যদি আপত্তি না থাকে আমি তোমাকে আমার মা বাবার সাথে দেখা করাতে নিয়ে যেতে চাই।

– আপনার মা বাবার কেনো?

– তারা তোমাকে দেখতে চেয়েছে তোমার সাথে কথা বলবে। মা বলেছে তোমার সাথে কথা বলে ভালো লাগলে তাদের অপেক্ষা করতে অসুবিধা নেই।

– ওহ।

– তো যাবে?

– ঠিকাছে।
অর্নব বড় একটা হাসি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলো, সানভি ও ভাবছে এখন হয়তো আল্লাহ অর্নব এর সাথেই ওর জোড়া বানিয়েছেন তা নাহলে এই ছেলে টা বারবার ঘুরে ওর কাছেই আসতো না আর ভালো ও বাসে হয়তো অনেক!
কথা অনুযায়ী নির্ভান ও ওদের পেছনে পেছনে এসেছে কিন্তু যেই দেখলো ওরা একটা এপার্টমেন্ট এর সামনে এসে গাড়ি থামিয়েছে আর বের হলো না। সানভি কে কল করে জাস্ট জিজ্ঞেস করলো ও কোথায় আছে সানভি ও বলে দিলো এক ফ্রেন্ড এর বাসায় যাচ্ছে। ও অর্নব এর বাসায় গিয়েছে দেখে নির্ভান আর দাঁড়িয়ে থাকলো না এখানে তো আর পেছনে যাওয়া যাবে না তাই গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলো।

অর্নব গাড়ি নিয়ে একদম ভেতরে পার্কিং এ চলে গেলো, বের হয়ে সানভি কে বের করলো তারপর ওকে নিয়ে লিফট এ উঠে দশ নাম্বার ফ্লোরে যাওয়ার জন্য বাটন এ ক্লিক করলো।

– আপনারা নাইনথ ফ্লোরে থাকেন?

– ইয়েস।
মুহূর্তেই পৌছে গেলো ওরা, লিফট খুলতেই বের হয়ে অর্নব সানভি কে ওদের ফ্ল্যাট এর কাছে নিয়ে গিয়ে কলিং বেল দিলো কিন্তু তারপর নিজেই আবার চাবি বের করে বললো,,,আমার কাছেই তো চাবি আছে।,,,গেইট খুলে আগে সানভি কে যেতে বললো।
সানভি দাড়িয়ে ছিলো

– আরে আসো। বলেই অর্নব ওর হাত ধরে ওকে নিয়ে ফ্ল্যাট এ ঢুকলো। ঢুকেই অর্নব ওর মা বাবা কে ডাকতে লাগলো কিন্তু কোনো সাড়া পেলো না,,, আরে মা বাবা কোথায় গেলো! বলেই বাকি রুম গুলো তে খুজে এসে বললো,,, মা বাবা কেউ বাসায় নেই। আমি কল করে দেখছি তারা কোথায় গিয়েছে। বলেই কল করে কি কি যেন বললো তারপর সানভির কাছে ফিরে এসে বললো

– আমার চাচা হটাৎ খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন হসপিটালে ভর্তি তাই তারা তাকে দেখতে গিয়েছেন। সরি তাড়াহুড়ায় আমাকে জানায়নি আর তোমাকে শুধু শুধু।

– ইটস ওকে তাদের সাথে অন্য কোনোদিন দেখা হবে, আজ তাহলে যাই।

– আরে কি বলছো এতোদূর এসেছো খালি মুখে যেতে তো দিবো না। একটু বসো তুমি আমি কফি বানিয়ে আনছি।

– না না তার দরকার নেই। আমি যাই।

– আরে বসো তো। বলেই অর্নব চলে গেলো। এখানে একা কেমন একটু অদ্ভুত লাগছিলো তাই ভাবলো এখন অর্নব কে বললে ও যেতে দিবে না কিন্তু ওর এভাবে একটা ছেলের সাথে একা বাড়িতে থাকা ভালোও লাগছিলো না তাই ভাবলো এখন না বলেই চলে যাবে নিচে নেমে পরে কল দিয়ে বলে দিবে ইমার্জেন্সি ছিলো তাই চলে গিয়েছে। তাই ব্যাগ নিয়ে উঠে চলেই যাচ্ছিলো তখনই অর্নব আবার চলে এলো।

– কোথায় যাচ্ছো?? আমি তোমাকে যেতে বলেছি?

– অর্নব আমার কোথাও যেতে হলে আপনার পারমিশন নিতে হবে?

– না কিন্তু কিসের একটু তাড়া তুমি বসো তো। না না চলো রুম গুলো ঘুরে ঘুরে দেখি।
বলেই ওকে নিয়ে রুম গুলো দেখাতে লাগলো ওর বাবা মায়ের রুম দেখিয়ে ওর রুমে নিয়ে গেলো লাইট জ্বালিয়ে দিতেই সানভি দেখতে পারলো অর্নব এর রুমে ওর ছবি দিয়ে ভরা আর একটা ছবি তো খুব বড় করে দেয়ালে টানানো আছে। ওর আর সানভির রিসেন্টলি তোলা কয়েকটা ছবি ও দেয়ালে টানানো।

– তোমার অপেক্ষায় করতে কষ্ট হয়না এই ছবি গুলোর জন্য। প্রায়ই কথা বলি তোমার সাথে এগুলার মাধ্যমে।

– খুব সুন্দর, কিন্তু অর্নব আমাকে এখন যে যেতে হবে একটু কাজ আছে আমি আবার আরেকদিন আসবো প্রমিজ।

– নাহ এসেছো যখন এতো তারাতারি যেতে পারবেনা। এভাবেই মাঝে মাঝে তোমার দেখা পাই আজকে যেতে পারবে না যেতে দিবোই না।

– সত্যি আমার যেতে হবে। বলেই রুম থেকে বের হয়ে যেতে নিচ্ছিলো কিন্তু অর্নব তখনই নিজের এমন একটা রুপ দেখালো যে সানভি ও ভয় পেয়ে গেলো কারণ অর্নব ওকে খুব জোরে ধাক্কা দিয়ে বাহিরে থেকে গেইট লক করে দিয়ে বলতে লাগলো

– সানভি তুমি শুধু আমার আমি তোমাকে আর কারো হতে দিবো না। তুমি শুধু আমার ই থাকবে আর তা আমি আজকে নিশ্চিত করেই ছাড়বো ব্যাস একটু অপেক্ষা করো।
ধাক্কা লাগায় সানভি পরে গিয়েছিলো তাই উঠে দৌড়ে গিয়ে গেইট ধাক্কাতে লাগলো

– অর্নব গেইট খুলুন কি করছেন আপনি। গেইট খুলুন আমাকে যেতে দিন।
কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো শব্দ এলো না সানভি এখনো গেইট ধাক্কাচ্ছে। খুব ঘাবড়ে গিয়েছে ও এখন কি করবে কেউ নেই এখানে আর এপার্টমেন্ট এ তো এক শব্দ অন্য পাশে যায় ও না ওর চিৎকার করাতেও কিছু হবে না তখনই রুমের দিকে তাকিয়ে দেখলো ও তো আসার সময় ব্যাগ টা রাখেনি যাক না ফোন টা আছে এখনো ইলাকে কল করতে হবে ও ইফাজ কে বললে ইফাজ আসতে পারবে। কিন্তু ইলা কে দুই বার কল দিলেও ও ধরলো না! আর কাকে দিবে আর কোনো আত্মীয় তো নেই ওর তাই আর কোনো উপায় না পেয়ে নির্ভান কে কল করলো।
এদিকে নির্ভান অর্ধেক পথ চলে এসেছে তখনই সানভির কল পেয়ে কল টা রিসিভ করলো।

– হ্যাল..

– মি.কে হে হেল্প অর্নব আমা….. আর কিছু বলতে পারলো না কারণ অর্নব গেইট খুলে ভেতরেই এসেই ওর ফোন টা নিয়ে ফেলো দিলো।
হটাৎ ফোন কেটে যাওয়া আর সানভির কথা শুনে নির্ভান ও ভয় পেয়ে গেলো যে ওর কিছু হলো না তো তাই আবার ওকে কল করতেই যখন ফোন বন্ধ পেলো তখনই সিওর হলো যে কিছু তো হয়েছে তাই তারাতারি আবার এপার্টমেন্ট এর দিকে রওনা হলো। কি হয়েছে ভেবে ভেবেই নার্ভাস হয়ে যাচ্ছে।
.
এদিকে সানভির ফোন টা ফেলে দিয়েই অর্নব ওর দিকে এগিয়ে গেলো

– কি কাকে ফোন দিয়েছিলে? সবাইকে কি সব কথা বলতে হয় নাকি!?

– অ অর্নব আপনার ক কি হয়েছে আপনি এমন করছেন কেন?

– আমার কি হবে আমি ঠিকই আছি। তুমিই ঢং করছো আমাকে কেন ভালোবাসতে পারছো না আমাকে কেন আপন করে নিচ্ছোনা কি হয়েছে তোমার??
সানভি বারবার পেছনে যাচ্ছে আর অর্নব বারবার ওকে সামনে টেনে নিচ্ছে।।,,,, আজ থেকে তুমি আমার ঠিকাছে না বাবু! এখন তুমি বসো আমি কাজ টা শেষ করে আসি। আর সুইটহার্ট আর কাউকে কল করবে না ঠিকাছে! আমি যেন আর না দেখি। আহ আমি ফোন টা নিয়েই যাচ্ছি। বলেই ফোন টা তুলে নিয়ে চলে গেলো।
সানভি থামাতে পারলো না কারণ ও ভেবেই পাচ্ছে না এ কোন অর্নব! ওকে তো ও কখনোই দেখে এই রুপ টা ওর কাছে অপরিচিত। এ কোন পরিস্থিতি তে ফেসে গেলো ও! আর মি. কে ই বা কি করবেন উনি তো কিছু জানে না আমি কার সাথে আছি কোথায় আছি উনি কিছুই জানেন না শুধু জানেন আমার হেল্প লাগবে। এখন আমি কি করবো অর্নব তো ফোন টা ও নিয়ে গেছে। আমার আসাই উচিৎ হয়নি! আমি কখনো কল্পনা ও করতে পারিনি এটা যে অর্নব।।। বলেই নিচে বসে পরলো সানভি।
.
নির্ভান এপার্টমেন্ট এর দিকে ফিরে আসছে আর সানভি কে কল করেই যাচ্ছে কিন্তু সানভির ফোন এখনো বন্ধ। ও ভেবেই পাচ্ছে না কি করবে সানভির কি হেল্প দরকার কিছুই তো ও জানে না শুধু জানে সানভি প্রবলেম এ আছে।
সানভি রুম টা ভালো করে খেয়াল করে দেখলো বের হওয়ার মতো তো কিছু নেই কিন্তু জানালা আছে ওইখান দিয়ে চিৎকার করলে কেউ না কেউ তো শুনবে।তাই জানালার পাশে গিয়ে জানালা খুলতেই আযান শুরু হয়েছে দেখে দাঁড়িয়ে রইলো এখন তো চিৎকার করলেও কেউ শুনবে না।
.
এদিকে গাড়ির স্পীড যতোটা সম্ভব বাড়িয়ে দিয়ে এপার্টমেন্ট এর সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে তারাতারি একটা ক্যাপ নিয়ে নেমে ভেতরে ঢুকতে নিলেই দাড়োয়ান থামিয়ে দিলো

– আরে আরে কোথায় যাচ্ছেন?

– আ.. অর্নব মি.অর্নব এর কাছে এসেছিলাম। উনি কোন ফ্লোর এ থাকেন?

– উনার কাছে যাইতাছেন আর উনি কোন ফ্লোরে থাকে আপনি তাই জানেন না?

– না আসলে উনি একটু আগেই আমার মানে আমাদের আর একটা ফ্রেন্ড কে নিয়ে তার বাসায় গিয়েছেন। আমাকে আসতে তো বলেছে কিন্তু ফ্লোর নাম্বার টা বলেনি আর এখন ফোন ও রিসিভ করছে না। আপনি যদি বলতেন একটু।

– ফোন রিসিভ করছে না ফ্লোর নাম্বার বলতাম?? হাট.. যতো সব চুরি ছেচরামি করার জায়গা পাস না না!?

– না না আমি সত্যি তাদের ফ্রেন্ড হই আর আমি আমি ওইরকম মানুষ না।

– আরে তুই এখান থেকে যাবি নাকি পুলিশ এর আইতে হবে?
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ২৬
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.

– ফোন রিসিভ করছে না ফ্লোর নাম্বার বলতাম?? হাট.. যতো সব চুরি ছেচরামি করার জায়গা পাস না না!?

– না না আমি সত্যি তাদের ফ্রেন্ড হই আর আমি আমি ওইরকম মানুষ না।

– আরে তুই এখান থেকে যাবি নাকি পুলিশ এর আইতে হবে?
.
দারোয়ান এর কথায় কি করবে বুঝতে না পেরে নিজের মাথার ক্যাপ টা খুলে ফেললো আর সাথে সাথেই লোকটা বলে উঠলো

– চিনা চিনা লাগতাছে কেন?

– দেখুন আমি….

– আরে আপনে তো ওইযে কি জানি নাম আমার মাইয়া সারাদিন আপনের গান শুনতে থাকে।।আপনেরে অনেক পছন্দ করে।

– হ্যাঁ হ্যাঁ আমি নির্ভান আপনি প্লিজ আমাকে অর্নব এর ফ্ল্যাট কোন ফ্লোরে, কোন সাইডে প্লিজ আমাকে বলুন তার বদলে আমি আপনার মেয়ের সাথে দেখা করবো প্লিজ আমাকে বলুন।

– এমনে তো আমি এসব মানতাম না কিন্তু আপনে তো অনেক বড় মানুষ খারাপ কিছু তো করবেন না। অর্নব স্যার এর নয় তালায় থাকে ডান পাশের শেষ ফ্ল্যাট টায়।

– ওকে থ্যাংক ইউ চাচা অনেক হেল্প করলেন।

– সমস্যা নাই আপনে যান।
নির্ভান আবার ক্যাপ টা পরে যলদি ভেতরে চলে গেলো।
.
সানভি চিৎকার করতে পারেনি তার আগেই অর্নব এসে পরেছে। এসেই সানভির দিকে আগাচ্ছে আর ওকে বলছে,,,, তুমি আমাকে ভয় পেয়ো না আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবোনা আমি তোমাকে ভালোবাসি শুধু নিজের করে নিতে চাই।

– একদম আমার কাছে আসবেন না একদম না। বলেই পেছনে যেতে লাগলো কিন্তু অর্নব ততই পিছাতে লাগলো।,,,, অর্নব আপনার হয়েছে টা কি আপনি তো মোটেও এমন ছিলেন না আপনি এমন….
এবার অর্নব এগিয়ে এসে সানভি কে ধরে ওকে জরিয়ে ধরতে নিলেই ডোর বেল বেজে উঠতেই সরে এলো অর্নব সানভি হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করতে নিলেই ওকে ওই রুমে রেখেই গেইট লাগিয়ে দিয়ে মেইন গেইট এর সামনে এসে কোনো শব্দ না করে দেখলো কে এসেছে। নির্ভান ক্যাপ পরা থাকলেও নির্ভান কে চিনে ফেলেছে। অনেক বার নির্ভান গেইট নক করলো ডোরবেল বাজালো কিন্তু অর্নব কোনো সাড়া দিলো না অনেক সময় হয়ে যাওয়ায় পরেও কোনো সাড়া না পেয়ে নির্ভান আবার নিচে চলে এলো। ওকে চলে যেতে দেখে অর্নব এ আবার সানভির কাছে গেলো

– বেবি দেরি হয়ে যাচ্ছে…। নির্ভান এসেছিলো যে সেটা ওকে জানালো না।
সানভি অর্নব এর থেকে সরে ছোটাছুটি শুরু করে দিলো। এদিকে নির্ভান কোনো উপায় খুজে পাচ্ছে না তখন ইলার কথা মনে পরলো যে ও ই তো দুইজনকে মিলিয়ে ছিলো। কিন্তু ওর নাম্বার তো নেই ওর সাথে কন্টাক্ট করার কোনো উপায় পাচ্ছে না।

এদিকে প্রায় অনেকক্ষন ধরে এদিক ওদিক করে সানভি ক্লান্ত কিন্তু অর্নব না ও এবার সানভি কে ধরে ওকে কিস করার জন্য জোরাজোরি করছিলো ব্যপারে টা খারাপের দিকেই যাচ্ছিলো কিন্তু সানভি ওর পুরো শক্তি দিয়ে অর্নব কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ব্যাগ নিয়ে ওই রুম থেকে বের হয়ে এলো অর্নব ও উঠে ওর পেছনে আসতে লাগলো। মেইন গেইট এর সামনে পৌছাতেই আবার ওকে ধরে ফেললো

– সানভি তুমি আমার না হতে পারলে তুমি কারোই না আমি তোমাকে আর কারো হতে দিবোনা।
বলেই ওর চুল শক্ত করে ধরে ওকে আবার ওর ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু বাহিরে থেকে মেইন গেইট খোলার শব্দে থমকে গেলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই গেইট খুলে গেলো আর সামনে নির্ভান আর পেছনে দুইজন পুলিশ আর আরেকটা লোক আর সেই দাড়োয়ান দাড়িয়ে। কোনো উপায় না পেয়ে নির্ভান ওর এক পরিচিত পুলিশের সাহায্য নিয়েছে দারোয়ান আংকেল এর কথায় সুবিধা হয়েছে ওর কারন উনি ও বলেছিলেন যে অর্নব একটা মেয়েকে নিয়ে ঢুকেছে বের হয়নি তাই পুলিশ এই এপার্টমেন্ট এর ম্যানেজার এর কাছে বলে ইমার্জেন্সি কি দিয়ে গেইট এর লক খুলেছে আর ফল সামনে।
এমন সময়ে সানভি নির্ভান কে দেখে আর থামতে পারলো না পুলিশ এসে অর্নব কে ধরে ফেলতেই ও দৌড়ে নির্ভান কে জরিয়ে ধরল আর কান্না শুরু করে দিলো। নির্ভান ও শক্ত করে ধরে সাহস দিলো, ও দেখলো সানভির ড্রেসের হাতা বিভিন্ন জায়গায় ছিড়ে গেছে তাই ওর ওড়না টা দিয়েই একটু ঢেকে দিয়ে পুলিশ কে বলে ওকে নিয়ে নিচে চলে গেলো। আশে পাশে কিছু মানুষ দাড়িয়ে আছে কিন্তু ওর ফেস ঢেকে নিলো আর সানভি কে এভাবে নিয়ে হাটলো যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পাড়ে। ওদের পেছনে পুলিশ ও অর্নব কে নিয়ে বের হয়ে আসছে নিচে এসে সানভি কে গাড়িতে বসিয়ে নির্ভান পুলিশের সাথে কথা বলে গাড়িতে উঠে স্টুডিও তে রওয়ানা হলো।
.
সানভি কে স্টুডিও তেই নিয়ে গেলো ওর কাছেই রাখবে ও এভাবেও অনেক ভয় পেয়ে আছে একা রাখা যাবে না। আর ইলার নাম্বার বলার মতো অবস্থায় ও সানভি নেই।
সানভি কে স্টুডিও তে নিয়ে যাচ্ছে এটা সানভি খেয়াল করছে না কিছুই বলছে না। নির্ভান তাই একদম স্টুডিওর সামনে গাড়ি থামিয়ে নিজে বের হয়ে সানভি কে বের করে ভেতরে নিয়ে যেতে চাইলে তখন সানভি একবার দাঁড়িয়ে গিয়ে বললো

– আমি বাসায় যেতে চাই।

– সান তুমি এখন বাসায় যাওয়ার অবস্থায় নেই। আর আমি নির্ভান তুমি বিশ্বাস করো রাইট?
বলেই ওকে ভেতরে নিয়ে গেলো সানভি ও থামালো না।

– সান ইলা কে কল করবে? তোমার ফোন কোথায়?

– আআমার কাছে ননেই ইলার নাম্বার ও মনে নেই।

– It’s okay Sun you are strong right? nothing happened it’s okay.
বলেই ওর সামনে এসে ওর দুই হাত ধরে দাড়ালো,,,, আমি আছি তোমার পাশে আর সবসময় থাকবো আর এমন কিছুই হয়নি যে আমার এতো স্ট্রং সান ভেঙে পরবে। বলেই ওর দিকে তাকালো সানভি তাকাচ্ছে না ওর দিকে,,, সান আমার দিকে তাকাও।
সানভি তবুও তাকালো না কিন্তু চোখের পানি টলমল করতে করতে পরেই গেলো।
– চলো রেস্ট নিবে তুমি তোমার জন্য একটা এক্সট্রা ড্রেস আনিয়ে রেখেছিলাম ওইটা চেঞ্জ করে পরে নাও। কান্না মুছো তুমি মোটেও উইক না তাই এরকম হলে চলবে না।
নির্ভান এর কথায় ড্রেস চেঞ্জ করতে চলে গেলো নির্ভান এর রুমে। অনেকক্ষন হওয়ার পর ও বের হচ্ছিলো না দেখে নির্ভান গেইট নক করতেই সানভি গেইট খুলে দাড়াতেই নির্ভান ওর হাত ধরে নিয়ে এসে বাহিরের সোফায় বসলো।

– মি.কে আপনি আমি যে ওই বাড়িতে আছি কিভাবে বুঝলেন?

– আ…. ওই যে আম আমি একজন কে দিয়ে তোমার নাম্বার ট্রেক করিয়েছিলাম তাই। (ওকে তো আর বলতে পারবে না যে ও আজকে ওর পিছু নিয়েছিলো, ও আজ গর্বিত যে ও পিছে পিছে গিয়েছিলো)

– ওহ! সব কিছু খুব তারাতারি হয়ে গেলো থ্যাংক ইউ মি.কে আমাকে হেল্প করার জন্য।

– আরে এর দরকার নেই। তোমাকে না হেল্প করতে পারলে আজ নিজের কাছে নিজে খুব ছোট হয়ে যেতাম। তুমি যে আমার কি যদি তোমাকে বলতে পারতাম!!

– তো বলুন।

– I am sorry San. বলেই নিজের ঠোঁট সানভির ঠোঁটে মিশিয়ে দিলো হটাৎ কিস এ সানভি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ওকে সরানোর জন্য হাত দিয়ে ধাক্কা ও দিচ্ছিলো কিন্তু নির্ভান ওর হাত ধরে থামিয়ে দিলো তারপর ছেড়ে দিতেই সানভি হাপাচ্ছিলো,,,, I love you Sanvi I love you a lot. এটাই সত্যি আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।

সানভি কিছু বলছে না দেখে নির্ভান বললো,, আমি সরি সানভি তুমি যদি আমার কিস করায় রাগ করে থাকো বাট তুমি জানতে চাওয়ায় কেন যেনো নিজেকে থামাতে পারিনি… কিন্তু আমার ফিলিং তোমার জন্য মোটেও খারাপ না আমি সবার থেকে আলাদা ফিল করি তোমার জন্য। তোমাকে আমি…

– মি.কে..!!
.
.
.
চলবে।