#কাশফুলের_মেলা
#পর্ব_১৭_শেষ
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara
আজ তিনদিন হয়ে গেলো আবিরের কোনো খুঁজ নেই। একবারের জন্য দেখা করতেও আসেনি।এমন কী একটু খুঁজ পর্যন্ত করেনি।অনু মন খারাপ করে এক ধ্যানে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। দৃষ্টি তার বহুদূর।এই দৃষ্টিতে যেন অনেক কিছু প্রকাশ করছে। আদিল ছাঁদে এসে বোনকে এক ধ্যানে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ওর কাঁধে হাত রাখল।
“আপ্পি কী এত চিন্তা করছো?
“কিছু না ভাই।
“আচ্ছা আপ্পি তুমি কী এখনো বাবা মা’র উপরে অভিমান করে আছো?এখনও কী মন থেকে সব ঝেড়ে ফেলতে পারোনি?
অনু একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
“এতই সহজ নাকি সবকিছু হুম?এক দুই বছর না পুরো বিশটা বছর আমি সবার থেকে দূরে ছিলাম। নিজের শৈশব নিজের বাড়িতে কাটাতে পারিনি।পাঁচবছর বয়সে বাচ্চাদের হাতে থাকে দামি খেলনা আর আমার হাতে ছিলো আম পাতা আর লাটিম দিয়ে বানানো গাড়ি।তবে এসবের জন্য আমার কোনো আফসোস নেই।আমার শৈশবও অনেক ভালো কেটেছে।ছোট বাচ্চাদের সাথে ক্ষেতে,নদীর চড়ে মাছ মারা, খুড়কুটো কুরানো এসব দিয়েই আমি শৈশব পার করেছি।যখন কিশোরী হলাম তখন মা আমাকে আর বাইরে বারোতে দেয়নি।আমার উপরে এক খারাপ মানুষের নজর পরে।সে সব সময় আমার উপরে নজরদারি করত।তার জন্য আমার মনটা একেবারে বিষিয়ে গেছিলো।প্রতিদিন মনে হত আমি দম বন্ধ হয়ে এখুনি মরে যাবো।কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি মরিনি আজও বেঁচে আছি।আচ্ছা আদি একটা কথা বলতো বাবার তো অনেক টাকা পয়সা,উনি কী লোকলস্কর লাগাতে পারেননি আমাকে খুঁজার জন্য?
সেটা জানিনা আপ্পি।কিন্তু আব্বুকে একদিন বলতে শুনেছিলাম উনি বলছিলেন এই শহর আর আসেপাশে যত গ্রাম আছে সব জায়গায় উনি তোমায় হন্যহন্য খুঁজেছিলেন কিন্তু পাননি।হয়তো মহিলাটি তোমায় নিয়ে অন্য কোনো জেলায় চলে গেছিলো।এখন তুমিই বলো বাংলাদেশের সব জায়গায় একজন মানুষকে খুঁজা কী আদৌ পসিবল।
”
“আচ্ছা সব বুঝলাম কিন্তু একটা কথা কিন্তু থেকেই যায়।
“কী কথা আপ্পি?
“আব কিছুনা।তুই যাতো এখন।ভালো লাগছেনা।
“আবির ভাইয়ের কথা মনে পরছে?
আদিলের কথা শুনে অনু একটু ইতস্তত বোধ করল। আদিল বুঝতে পেরে মুচকি হেঁসে আবিরকে ফোন দিল।রিং হওয়ার বেশ কিছুক্ষন পর আবির ফোন রিসিভ করল।
“আপ্পি এই নাও আবির ভাই!!
অনু কাঁপাকাঁপা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে কানে লাগাল।
“হ্যালো আবির!!
“আমি পরে ফোন করছি এখন একটু ব্যস্ত আছি।
ওপাশ থেকে আবির ফোনটা কেটে দিলো অনুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই।অনুর চোখে পানি টলমল করছে।সে নাক টেনে আদিলের হাতে ফোন দিয়ে পিছন ঘুরে গেলো।এই প্রথম আবির ওকে ইগনোর করছে।যেটা ওর কাছে বুকে তীর বেধার মতো মনে হচ্ছে।আদিল হয়তো বোনের মনের অবস্থা বুঝতে পারছে তাই কিছু বলল না।আস্তে আস্তে ছাঁদ থেকে চলে গেলো।
দেখতে দেখতে আরও ক’টা দিন কেটে গেল।এই ক’টা দিন অনু নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে গেছে। চাইলেও আবিরের কথা মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছেনা।আরশি নিজের মেয়ের নিরবতার কারণ কিছুটা বুঝতে পেরে ওর মাথায় এসে হাত রাখল।
“অনু শপিংয়ে যাবে?দেখবে অনেক ভালো লাগবে।
“ভালো লাগছেনা মা।
“গিয়ে দেখই না একবার।তোমার বাবা, ভাই,আমিও যাব সাথে।
অনু ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো।আরশিও মুচকি হেঁসে রেডি হতে চলে গেল।
শপিং করা শেষ হলে আদিল ইশান আর আরশিকে বাসায় পাঠিয়ে দিল।আর অনুকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেলো।অনু রেস্টুরেন্টের চারিদিকে দেখছে হঠাৎ একটা টেবিলে দুজন মানুষকে দেখে সে একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে গেল।তার চোখ সেখানেই আটকে গেছে।অনু কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে বলল,
“আমাকে বাড়িতে দিয়ে আসবি?
“কী হলো আপু?তুমি হঠাৎ চলে যেতে চাইছো যে?
“এমনি
“ঠিকাছে চলো।
আদিল মন খারাপ করে অনুকে নিয়ে বাসায় চলে গেলো।
রাত দশটা বাজে অনু মন খারাপ করে বুকে কুশান চেপে ধরে ফ্লোরে বসে আছে।অনুর মা দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে এসে বেশ উচ্ছসিত কন্ঠে বললেন,
“অনু কাবার্ডে শাড়ি রাখা আছে।শাড়িটা পড়ে আর একটু সেজেগুজে নিচে আসো।
“রাত দশটার সময় আবার শাড়ি কেন পড়তে হবে?
“বেশি কথাা না বলে যা করেছি তাই করো।
অনু মন খারাপ করে শাড়ি নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো।
ড্রয়িংরুম জুড়ে হইহুল্লড় চলছে।অনু শাড়ি পরে নিচে এসে একেবারে চমকে গেলো। আবিরের ফ্যামিলি ড্রয়িংরুমে বসে আছে। এতরাতে উনাদের আসাটা ঠিক হজম হচ্ছেনা অনুর কাছে।
“বিয়ের জন্য রেডি থাকো মিস অনু।খুব শীগ্রই আমার বাড়িতে বউ হয়ে যাচ্ছো।
অনুর কাঁধে ধাক্কা দিয়ে কথাটা বলল আবির।অনু প্রথমে খুশি হলেও পরে আবার কী মনে করে মন খারাপ করে ফেলল।আবির অনুর কেনো ভাব ভঙ্গির পরিবর্তন না দেখে ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,
“অনু তুমি কী এই বিয়ে নিয়ে খুশি নও?
অনু একবার আবিরের দিকে তাকিয়ে ওর কাঁধ থেকে আবিরের হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।আবিরও অনুর পিছন পিছন গেলো।
“অনু কী হয়েছে তোমার বলোতো?আসার পর থেকে দেখছি তোমার মন খারাপ।আর আমার সাথেও অদ্ভুত ব্যবহার করছো?
“আমার মন খারাপ থাকুক বা ভালো থাকুক তাতে আপনার কী?আপনি তো দিব্যি ভালো আছেন, সুখে আছেন।
“মানে কী বলতে চাইছো তুমি?আমি ভালো থাকব সুখে থাকব তাও তোমাকে ছাড়া তা কখনো হয় নাকি অনু।
“হয় নাকি হয় না সেটা জানিনা। আচ্ছা একটা কথা বলেন তো আপনার কয়টা মেয়ে লাগে?
“মানে?
“মানে মানে আবার কী?
“প্লিজ অনু আমি হাত জোড় করে বলছি তুমি কেনো আমার সাথে এমন করছো প্লিজ একটু খুলে বলো তা নাহলে আমি বুঝব কী করে?
“আচ্ছা ঠিকাছে বলছি। আপনার তো আরও একজন মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে তাই না।তাই তো আপনি আজ রেস্টুরেন্টে তার হাত ধরে গল্প করছিলেন।
অনুর কথা শুনে আবির হেঁসে ফেলল
“তাহলে ম্যাডামের জ্বলন হচ্ছে।
“জ্বলন হবে কেনো?
“তুমি রেস্টুরেন্টে যা দেখেছো সব মিথ্যা ছিলো।এক ধরনের নাটক বলতে পারো। আদিলকে বলে আমিই তোমাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম।আর যে মেয়েটাকে তুমি আমার সাথে দেখেছিলে সে হলো আমার এক কলেজ বান্ধবী যে আমাকে তার বিয়ের দাওয়াত দিতে এসেছিলো। এন্ড ম্যাডাম আমি ওর হাত ধরেনি ও ধরেছিলো আর রিকুয়েস্ট করেছিলো যাতে আমি তার বিয়েতে যাই।ওমা কিছুক্ষন পর পাশে চেয়ে দেখি তোমরা নেই। তারপর আদিল আমায় বলে যে মেয়েটাকে আমার সাথে দেখে তুমি রাগ করে চলে এসেছো।তারপরই তোমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার এইসব ব্যবস্থা।
আবিরের কথা শুনে অনু মাথা নিচু করে নিলো। আবির অনুর মাথা উচু করে বলল,
“কখনো আমার সামনে মাথা নিচু করে থাকবে না। সব সময় মাথা উচু করে এসে আমার সামনে দাঁড়াবে। আর কখনো কোনো জিনিস আমার থেকে লুকাবে না বরং সব কিছু শেয়ার করবে। যাতে দুজন মিলে প্রবলেম সল্ভ করতে পারি।
অনু আবিরকে গিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। বিষয়টা বুঝতে আবিরের কয়েক সেকেন্ড লেগে গেল। পরে সেও হেসে অনুকে জড়িয়ে ধরলো।
“আমি আপনার সব কিছু মানব। খুব ভালোবাসি আপনাকে আর সারা জীবন ভালোই বেসে যাব। আর আপনাকেও আমায় সারাজীবন ভালোবাসতে হবে কিন্তু।
“সব সময় ভালোবাসব। কাল সকালে রেডি থেকো তোমার আগের মায়ের বাড়িতে বেড়াতে যাব।
অনু কথাটি শুনে খশি হয়ে আবিরকে আরও শক্তে জড়িয়ে ধরলো।আবির অনুর মাথায় একটা কিস করে ওকে জড়িয়ে ধরল।
#কাশফুলের_মেলা
#পর্ব_দ্বিতীয়_শেষাংশ
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara
অনুর বিয়ের আর দুইদিন বাকি আছে।আজ সকাল থেকে অনু শুধু একটা কথাই ভেবে যাচ্ছে বিশ বছর আগে কে বা কারা ওর বাবা মায়ের উপরে এ্যাটাক করেছিলো। অনু অনেকবার ওর বাবা মাকে জিজ্ঞেস করতে চাইছিলো কিন্তু উনারা কাজের চাপে আর ওর কথা শুনতে পারেননি।রাতে সবাই ফ্রি হলে অনু ওর বাবা মায়ের রুমে গেলো।
“বাবা মা আমার তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করার আছে।
“কী বলো?
“আসলে বিশ বছর আগে তোমরা কার ভয়ে আমাকে ফেলে এসেছিলে?আর কী শত্রুতাই বা ছিলো তোমাদের সাথে তার?
আরশি আর ইশান অনুর এমন প্রশ্নে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। আরশি অনুর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,
“সবই জানো দেখছি।
“হ্যাঁ জানি কারণ আমি সেই ডায়েরিটা পড়েছি। প্লিজ বলো না মা কে সেদিন তোমাদের উপরে এ্যাটাক করেছিলো।
‘ডায়েরিতে তুর্ব নামে একজন ছেলের নাম পড়েছিলে তাই না?
“হ্যাঁ তো?
“তুর্বই সেদিন আমাদের উপরে এ্যাটাক করেছিলো।
“কিন্তু কী শত্রুতা ছিল তোমাদের সাথে?
“ওর স্ত্রী ওকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছিলো আর ও মনে করত আমাদের কারণেই ওর স্ত্রী ওকে ডিভোর্স দিয়েছে। সেদিন ছিল শ্রাবণ মাস। চারিদিকে ছিল কাশফুলের মেলা।বরাবরই কাশবন আমার খুব পছন্দের।কাশবনের শুভ্র কাশফুল দেখার জন্য আমি আর তোমার বাবা তোমাকে নিয়ে সেই গ্রামে গিয়েছিলাম যে গ্রামে তোমাকে প্রথম রেখে দিয়ে এসেছিলাম। গ্রামটা শহরের চাইতে অনেক দূরেই ছিল। সেদিন জানিনা কী করে তুর্ব আমাদের খুজ পেয়েছিলো। আসতে আসতে অনেক লেইট হয়ে গিয়েছিলো। মাঝ রাস্তায় গাড়িটা আসতেই সামনে আরেকটা গাড়ি এসে থামলো। আর সেখান থেকেই তুর্ব আর তিনটে ছেলে এসে আমাদের উপরে এ্যাটাক করে।
এতটুকু বলেই আরশি থেমে গেলো। অনুর আরশির দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।ওর যে আরও কিছু জানতে ইচ্ছে করছে। আরশি আবারো অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
“আবির আমাকে আর তোমাকে আরও আগেই গাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছিলো। তারপর নিজে তুর্বর সাথে মোকাবিলা করে।অনেক চোটও পেয়েছিল। তোমার বাবা আবার ফাইটিং ভালোই জানে।কিন্তু একজন চারজনের সাথে তো আর একা পেরে ওঠতে পারবেনা না।ছেলেগুলোদের কয়েকটা কিল ঘুষি দিয়ে আমাদের নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে লাগল। তারপর কী হয়েছিলো নিশ্চয় জানো।
অনু মাথা নাড়িয়ে বলল,
“হ্যাঁ জানি।কিন্তু তুর্ব?তুর্ব এখন কোথায়?
“জেলে আছে।
“ওহ ভালোই হয়েছে।এটা হওয়ারই ছিলো আচ্ছা আসি আমি।
অনু ওর মায়ের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। আজ এতদিন পর মনটা হাল্কা লাগছে।রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে লাইট অফ করে শুয়ে পরলো। চোখে সবে মাত্র ঘুম এসে হানা দিয়েছিলো কিন্তু হঠাৎ মাথার পাশের হেড লাইটটা জ্বলে উঠাতে অনু চোখ মেলে তাকালো। একটা ছেলেকে ওর দিকে ঝুকে থাকতে দেখে অনু চিৎকার দিতে যাবে তার আগেই সে অনুর মুখ চেপে ধরল।
“আরে আরে ডাফার আমি।আবির।তোমার উড-বি।
অনু আবিরের কন্ঠে কিছুটা সস্তিবোধ করল।কিছুটা হাপিয়ে বলল
“আপনি এতো রাতে কী করেন?
“এত কথা বলো কেনো তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে তাই এসেছি।
“আচ্ছা তা মিস্টার আবির আপনার এতো রাতে আমাকে মনে পরেছে।সত্যি।কিন্তু আমার তো মনে হয় আপনি শুধু দেখা করার জন্যই আসেননি বরং আপনার আরও কোনো বিশেষ মতলব আছে।
আবির অনুর দুইহাত ওর দুইহাতে মুষ্টিবদ্ধ করে বলল,
“সত্যিই বলেছো।আমি আরও একটা মতলবে এসেছি।
আবির অনুর হাত ছেড়ে দিয়ে ওর পকেটে হাত দিল।
“চোখ বুঝো?
“কিন্তু কেন?
“যা বললাম তাই করো।
“আচ্ছা বাবা করছি।
অনু চোখ বুঝলো। আবির অনুর হাত নিয়ে ওর অনামিকা আঙুলে আংটি পরিয়ে দিলো।
“এবার চোখ খুলো।
অনু চোখ খুলে ওর আঙুলের দিকে তাকিয়ে একেবারে হা। এই আংটি সোনা বা হিরের নয় সাধারন একটা হিজল ফুলের।অনুর চোখ খুশিতে চিকচিক করছে। সে আবিরের দিকে তাকিয়ে হেঁসে দিল।
“পছন্দ হয়েছে?
“ভীষণ।
“এবার গলায় হাত দিয়ে দেখো।
অনু ওর গলায় হাত দিয়ে দেখল গলায়ও হিজল ফুলের মালা।
“আমি জানি এই ফুল তোমার খুব পছন্দের তাই এসবের ব্যবস্থা।
“আচ্ছা আপনি কী করে ভিতরে এলেন?
“ডাফার!ব্যালকনির দরজা যদি এভাবে খুলে রাখো তাহলে যে কেউই আসতে পারবে পাইপ বেয়ে।
“তারমানে আপনি পাইপ বেয়ে এসেছেন?
“জ্বী।আর এখন থেকে দরজা বন্ধ করে ঘুমাবা।খুব চিন্তা হয় তোমাকে নিয়ে আমার।
অনু আবিরের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
“আর দুই-তিন দিন বাকি।তারপর আর আপনার আমাকে নিয়ে ভয় থাকবেনা মিস্টার আবির রায়হান চৌধুরী।
আবির অনুর কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলল,
“তো তুমিও মিস থেকে মিসেস অনু আবির রায়হান চৌধুরী হওয়ার জন্য প্রস্তুত তো?
“একদম।
“আমি আপনার সাথে রাগ করেছি!
“আবে ওই।কী হলো আবার হঠাৎ? আমি কী করেছি?
“সেদিন আপনি আমার সাথে ফোনে কথা বলেননি কোনো জানেন কতটুকু মিস করেছি আমি আপনাকে।
“আমিও খুব মিস করেছিলাম।কিন্তু তখন এত এত ব্যস্ত ছিলাম।তাই কথা বলতে পারিনি।স্যরি।
“আচ্ছা ঠিকাছে।জানেন আজ আরুহি এসেছিলো।এসে ক্ষমা চেয়ে গেছে।সেদিন ও ইচ্ছাকৃত ভাবাে আমায় অপমান করতে চায়নি। যদি ও বলত যে আপনি আমায় আপনার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন তাহলে নাকি মা আপনার উপরে রাগ করত। পরবর্তীতে সে আমায় স্যরি বলতে চাইছিলো কিন্তু তার আগেই তো আমি আপনাদের বাড়ি থেকে চলে এসেছি।
“হুম সব বুঝলাম।আচ্ছা আজ আসি তুমি শুয়ে পরো। সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখো আর স্বপ্নে আমায় রেখো।
আবির অনুকে ছেড়ে দিয়ে ওর কপালে একটা কিস করে দিয়ে চলে গেলো।
বেঁচে থাকুক এদের ভালোবাসা।
————-সমাপ্ত———