তুমি যে আমার পর্ব-৩৯+৪০ + এক্সট্রা পর্ব

0
771

#তুমি_যে_আমার🥀
#Writer_Nondini_Nila
#Part_39

নিদ্রা সেন্সলেস হয়ে পরে আছে। বর্ষা তারাতাড়ি পানির গ্লাস এনে ওর চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলো। জ্ঞান ফিরছে না ভয়ে ওর হাত পা কাঁপছে। হঠাৎ কি হলো এভাবে অজ্ঞান হয়ে গেলো কেন বুঝতে পারছে না বর্ষা। অভ্র নিদ্রার হাত ধরে ওকে চেক করছে। ডাক্তার যেহেতু তিনিই তাই আর তূর্য কে নতুন করে ডাক্তার ডাকতে হয় নি।

বর্ষা এক পাশে গুটিগুটি মেরে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিদ্রার দিকে। আর ভাবছে এই ছবি গুলো দেখে এমন সেন্সলেস হলো কেন? সোফার নিচে পরে আছে ফটো এ্যালবামটা। এ এ্যালবামের ছবিগুলো দেখতে গিয়ে নিদ্রা আপু অজ্ঞান হয়ে গেল। স্ট্রেঞ্জ!

‘ আদিল আমাদের এইভাবেই বাসায় ফিরতে হবে। নিদ্রার জ্ঞান ফিরতে লেট হবে। হঠাৎ এভাবে সেন্সলেস কেন হলো কিছু বুঝতে পারছিনা ও মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে। কিন্তু এমনটা কেন হলো?’ অভ্র চিন্তিত মুখে বলল।

তূর্য বলল, ‘ আজকে এখানে রাতটা কাটিয়ে যান মিস্টার অভ্র। এভাবে আপনাকে বাসায় যেতে দিতে পারি না।’

‘না বাসায় ফিরতে হবে। থাকাটা সম্ভব না।’

তূর্য বলেও রাজি করাতে পারলো না তাই বাধ্য হয়ে বললো,

‘তাহলে আমি আপনাদের কে ড্রপ করে দিই। এভাবে ছাড়তে পারবো না।’

‘ ইটস ওকে আমি ম্যানেজ করতে পারবো।’

‘ বাসায় যেতে চাইলে আমার অফারটা গ্রহণ করতে হবে। না হলে আজকে এখানে থাকতে হবে। ‘

‘ আচ্ছা চলুন।’

তূর্য চলে গেলো। আমি গেট পর্যন্ত এসে বিদায় দিলাম। অভ্র নিদ্রা কোলে তুলে গাড়িতে নিয়ে বসলো আর তূর্য ড্রাইভিং সিটে বসলো।
গাড়িটা আড়াল হতেই আমি দরজা আটকে ভেতরে চলে এলাম। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে নিদ্রা আপুরা এসেছিলো। তাদের দেখে তো আমি চমকে যায়। নিদ্রা আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে আমি ও ধরি। তারপরই জানতে পারি নিদ্রা আপুরাই হচ্ছে তূর্যের সেই স্পেশাল গেস্ট। এই লোকটার সাথে আবার নিদ্রা আপুদের এত খাতির কিভাবে হল জানিনা কিন্তু আসার পরে তাদের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারলাম সাথে তূর্যের খুব ভালো একটা সম্পর্ক।

নিদ্রা আপুরা তূর্য এর বাবার সাথে দেখা করলেন। সেখানে গিয়ে এক অদ্ভুত কান্ড ঘটলো। তূর্য এর বাবা নিদ্রা আপুকে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। অস্বাভাবিক আচরণ করতে লাগলেন। কিছুই বুঝতে পারলাম না। সেসব দেখে নিদ্রা আপু ভয় পেয়ে রুম থেকে চলে এসেছে।
আমি তো হা করে বোঝার চেষ্টা করছি কি হচ্ছে এসব। নিদ্রা আপুও অবাক কিন্তু তিনি অসুস্থ সেটা আপু জানে তাই ভেবেছেন অসুস্থতার জন্য বোধহয় এরকম করেছে। তিনি যাওয়ার জন্য না। সবকিছু ভুলে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হলো। তারপর তুর্য কোথা থেকে একটা ফটো এ্যালবাম এনে নিদ্রা আপুর হাতে দিয়ে বলল, এটা নাকি তূর্য এর ফ্যামিলি ফটো এ্যালবাম। নিদ্রাকে সেটা দেখতে দিল।
তূর্যের সাথে এক বাসায় আছি কয়দিন হয়ে গেল কিন্তু এই এলবামের খবরা-খবর কিছুই আমার জানা নাই। আমি বোকা চোখে তাকিয়ে ছিলাম। এ্যালবাম খোলার পরে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। গোল গোল চোখ করে আমি অ্যালবামের নিদ্রা আপুর ছবির দিকে তাকিয়ে আছি।
এই তূর্যের ফ্যামিলি ফটো তে নিদ্রা আপুর ছবি কিভাবে এলো এই ছবিগুলোতে এখানকার না।কারণ মহিলাটি দেখতে নিদ্রা আপুর মতো কিন্তু তার সাজ পোশাক দেখে নিদ্রা আপুর মতো লাগছেনা একদম ডিফারেন্স দুজনের সাজপোশাক।

‘আপু তুমি এই ফটোতে কিভাবে এলে? আর এটা কবে কার ফটো তুমি এরকম করে কবে ছবি তুলেছো? আর সামনের বাচ্চা দুটো কে?’

প্রথম ছবিতে নিদ্রা আপুর মতো মহিলার সাথে একটা ছেলে একটা, ও একটা মেয়ে আছে। এই ছোট মেয়ে টা কেও কেন জানি আমার নিদ্রা আপুর মতই লাগছে আর এই পাশের ছেলেটা কে কেন যেন আমার তূর্যের মত লাগছে। আপু ও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। পরের পেজে মহিলাটার সাথে একটা পুরুষের ছবি দেখলাম সেটা তো তূর্যের বাবা। আমার মাথা ঘুরছে কি হচ্ছে এসব নিদ্রা আপু তূর্য এর বাবার সাথে। এমন ছবি কেন তুলেছে যেন দুজন স্বামী স্ত্রী। এবার আমার মাথা ঘোরার উপক্রম।
আমার মাথা ঘোরা সেকেন্ডের মধ্যে থেমে গেল। পরের পেজে দেখতে পেলাম তূর্যের বাবা আর 3 জন ছেলেমেয়ে আরে নিদ্রা আপুর মতো দেখতে মহিলাটি ও। এবার তূর্য বললো,

এই মহিলাটা নাকি তার মা, পাশে বাবা, কোলে তার ছোট ভাই, আহান, আর তার বড় বোন আরোহী।
এবার সব ক্লিয়ার হলো। কিন্তু বর্ষা ভাবছে তূর্য এর মা দেখতে নিদ্রা আপুর মতো কেন? এতটা মিলতো শুধুমাত্র জমজ বোনের মধ্যে হয় আর ছেলেমেয়েদের মধ্যে হয়। তাহলে কি নিদ্রা আপু তূর্যের বোন? সোফায় বসে বসে আকাশ-পাতাল ভেবে যোগসুত্র মিলানোর চেষ্টা করছি অ্যালবাম হাতে নিয়ে। কাজের মেয়ে শান্তার কথা আমার ধ্যান ভাঙ্গলো।

‘বউ মনি!’

‘হ্যাঁ বলো।’

‘সবকিছুতো গুছাই ফেলছি আমি কি তাহলে ঘুমাতে যামু। আমনের কিছু লাগব চা-কফি?’

‘না তুমি যাও আমার লাগলে আমি নিজে করে নিতে পারব!’

‘আপনে কষ্ট কইরা করতে যাইবেন ক্যান! আমি থাকতে। আমারে কন আমি কইরা আইনে দেয়।’

‘এখন আমার লাগবে না!’

‘আচ্ছা তাইলে চা কইরা ফ্লাক্সে রাখি! যখন মন চায় খাইয়া নিয়েন।’

‘তুমি যাও তো ঘুমাইতে আমার কিছুই লাগো না!’

শান্তা মুখ কালো করে চলে গেল। শান্তা আমার থেকেও ছোট কিন্তু কাজকর্মে খুব পারদর্শী। আর আমাকে খুবই ভালোবাসে। সারাদিন কাছাকাছি থাকে আর বলে কিছু লাগবে কিনা। মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে।ওর এতো এইসব কথায়। এই যেমন এখন ঝাড়ি দিলাম কিন্তু কখনো কিছু মনে করে না ওকে ঝাড়ি দিয়ে আমার‌ই খারাপ লাগে। শাওন এর মা চলে গেছে। তূর্য আমার জন্য এই মেয়েটারে আনছে আমাকে হেল্প করবে। কিন্তু হেল্প আর কি সব কাজ সে নিজেই করে আমাকে কিছুই করতে হয়না। আর আমি ততটা কাজ পারিও না আর পারলে আমার করতে ইচ্ছা হয়না তূর্যের জন্য ওর বাড়ির মানুষের জন্যে আমার কিছুই করতে ইচ্ছুক না আমি।
কিন্তু মেয়েটা খুব কাজ করে এজন্য আমার মায়া লাগে। এজন্য রান্নাঘরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি ও আমাকে বসিয়ে রেখে নিজেই সব করে। ওর কাজ রান্নাবান্না করা আর আমার সুবিধা অসুবিধা দেখা।ওর রান্নার হাত খুব ভালো। তূর্যের বাবার জন্য আলাদা একজন লোক রাখা আছে। যিনি সবসময় তার দেখাশোনা করে তার খাবার-দাবার ওষুধ তার সমস্ত কিছু দেখাশোনা তার দায়িত্ব।

শান্তা চলে গেছে ঘুমাতে। আমি সোফা থেকে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে এক কাপ চা করে রুমে চলে এলাম। বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি আর ব্যস্ত মানুষের চলাচল দেখছি। দশটা বাজে আজকে আকাশে জোসনা আছে। নিজের ফোন না থাকায় বাপি কে একটা কল করতে পারছি না। বাসার ফোনটা ফেলে এসেছি। নজর গেল তূর্য এর গাড়ি চলে এসেছে। নিদ্রা আপুদের কে নিজের গাড়িতে করেই নিয়ে গিয়েছিল। আর নিদ্রা আপুদের গাড়ি তাদের ড্রাইভার নিয়ে গেছে। গাড়ি পার্কিং করে ভেতরে আসতে যাবে তখন একবার উপরে তাকালো আমি দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে ফেললাম।

চা হাতে বসে আছি। দুই চুমুক দিয়েছিলাম।আর খেতে ইচ্ছে করছে না ঘুমাবো এখন‌। চা হাতে উঠে দাড়াতেই তূর্য ছুটে এসে আমার হাত থেকে চায়ের কাপ ছিনিয়ে নিলো। আমি মৃদু চিৎকার করে বললাম,

‘ আমার চা’

তূর্য চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, ‘ ঠান্ডা হয়ে গেছে কিন্তু তবুও ঠান্ডা চা টাই সেই লাগছে।’

‘অসভ্য লোক একটা! আপনি আমার খাওয়া চা কেন ছিনিয়ে নিলেন? বাসায় কি চায়ের অভাব পড়েছে যে আমার হাতে চা ছিনিয়ে নিয়ে খেতে হবে।’

‘তুমি যে আর এটা খেতে না সেটা আমি ভালো করে জানি। আর যদি খেতেও তবু আমি এটাই খেতাম তোমার ঠোটে লাগা চায়ের খাওয়ার লোভ আমি মিস করতে চাইনা বুঝেছ।’

‘আপনি আমাকে জ্বালিয়ে পুরিয়ে শেষ না করা পর্যন্ত শান্ত হবেন না আমি জানি।’

বলেই তূর্য এর সামনে থেকে চলে এলাম।
তূর্য ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চা খাচ্ছে। বর্ষা বিছানায় শুয়ে পরলো আর মাঝে একটা বালিশ রেখে চোখ বন্ধ করলো।

তূর্য চা শেষ করে রুমে এসে দেখে বর্ষা শুয়ে আছে মাঝে খানে বালিশ দিয়ে। ও ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে রুমের লাইট অফ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে বিছানায় গেলো। মাঝখানে থেকে বালিশ সরিয়ে একদম বর্ষার গা ঘেঁষে শুয়ে পড়ল। বর্ষা জেগেই ছিলো ওর গায়ের সাথে তূর্য এর শরীর লাগতে ঝট করে চোখ খুলে ফেললো। কিছু বলতে যাবে তার আগেই তূর্য বর্ষার কোমরে দুহাত চেপে ধরে বর্ষাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফিরায়। বর্ষা ড্রিম লাইটের আলোতে অগ্নিদৃষ্টিতে তূর্য এর দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

‘ কি শুরু করেছেন? ছাড়ুন আমাকে।’ ছটফট করতে করতে।

তূর্য উত্তর না দিয়ে মাথা এগিয়ে এনে বর্ষার ঠোঁটে চুমু খেতেই বর্ষার সারা শরীর কেঁপে ওঠে। ও নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে তূর্য কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসে হাঁপাতে লাগে।

‘খবরদার আমার কাছে আসার চেষ্টা করলে আমি আপনাকে খুন করে ফেলবো’

‘ বর্ষা মনি খুন তো আমি হয়েই গেছি আর কিভাবে করবে?’

‘ আপনি দূরে যান‌। আমাকে জোর জবরদস্তি করলে আমি হয় আপনাকে খুন করবো না হলে নিজেই নিজেকে শেষ করে দেব। একবার জোর করে আমাকে ভোগ করে ও আপনি ক্ষান্ত হননি‌। আবার আমার কাছে আসার চেষ্টা করছেন।আর একবার যদি আপনি আমাকে এভাবে জোর করে নিজের স্বামীর অধিকার চান। তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো। আপনার এই স্পর্শ গুলো আমার কাছে বিষের চেও বিষাক্ত লাগে। এতটা খারাপ লোক আমি জীবনে দেখি নাই। এইভাবে আমার শরীরের উপর নিজের অধিকার ফলানোর জন্য বিয়ে করেছেন তাই না আমি আগেই জানতাম আপনার মতলব।’

বর্ষার কথা শুনে তূর্য এর মাথায় রক্ত উঠে গেলো। ও বিছানায় উঠে বসে ঠাস করে বর্ষার গালে চর মেরে দিলো।

‘সত্যি কথা বললেই গায়ে ছেকা লাগে তাইনা। মারবেন‌ই তো মেরে ফেলো আমাকে।’ বলে কেঁদে উঠলো বর্ষা।

তূর্য বর্ষার কান্না দেখে কিছুটা শান্ত হলো। আর বর্ষার মাথা টেনে বুকের মাঝে নিলো। বর্ষায় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে তূর্য ওইভাবেই বর্ষাকে জড়িয়ে শুয়ে পরলো।

#চলবে…….

#তুমি_যে_আমার🥀
#Writer_Nondini_Nila
#part_40

অভ্র চিন্তিত মুখ করে তাকিয়ে আছে হাতে থাকা রিপোর্টটির দিকে। নিদ্রা যে ছোট বেলার কিছু স্মৃতি
ভুলে গেছে এমন কথা তো কখনো ওকে বলেনি। ওদের বন্ধুত্ব তো আর একদিনের নয়। অনেকদিনের তবুও এতো বড় কথাটা ওর থেকে লুকিয়ে গেছে কেন? ছোট বেলার ও মাথায় আঘাত পায় যার ফলেই তার আগের স্মৃতি ওর কিছু মনে নেই। আর সেই বিষয়টা ও আজ জানতে পারলো। অফিসার আদিলের বাসায় জ্ঞান হারানোর পর দিন ওকে হসপিটালে নিয়ে কিছু টেস্ট করিয়ে আনে। আর আজ তার রিপোর্ট দিয়েছে তা দেখেই সব ক্লিয়ার হয় অভ্রের কাছে।
অভ্র চাপা অভিমান হয় নিদ্রার উপর। ও ই
রিপোর্ট হাতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পরে। এখন বাসায় গিয়ে ও লাভ নেই নিদ্রা বাসায় নাই। ও ওর হসপিটালে। তাই ও সেখানে যাওয়ার চিন্তা করে। এই মুহূর্তে ওর নিদ্রা কাছ থেকে সব জানা চাই না হলে শান্তি পাবে না। আর নিদ্রা কেন ওষুধ খায় না সে সবার জানতে হবে? ঠিকমতো ওষুধ খেলে আর এতদিন সুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু তা করেনি এজন্যই এখনো যদিও ওর দশ বছর বয়সের আগের কথা জানার চেষ্টা করে তাহলে মাথায় পেইন হয়। ও অভ্র গাড়ি নিয়ে ছুটে চলে নিদ্রার হসপিটালের উদ্দেশ্য এ।

হসপিটালে এসে গাড়ি থামতেই হনহনিয়ে বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে। বড় বড় পা ফেলে হসপিটালের ভিতরে ঢুকে যায়।আর লিফটে উঠে চার তলায় এসে পৌঁছায়। বের হয়ে নিদ্রার কেবিনের দিকে পা বাড়ায়। এক নার্স ওকে দেখে বলে,

‘ স্যার আপনি এখানে?’

‘ হুম নিদ্রার কাছে এসেছি!’

‘ ম্যাডাম তো কেবিনে নাই?’

নার্সের কথা শুনে পা থেমে যায় অভ্রের ও ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,

‘কেবিনে নাই তাহলে কোথায়? ওর কি আজকে কোন অপারেশন আছে। আমি তো কিছু জানি না।’

‘ না ম্যাডাম তো হসপিটালে নাই।’

‘হোয়াট? হসপিটালের নাই মানে?’

‘আসলে স্যার আমি বলতে চাচ্ছি ম্যাডাম তো আজকে হসপিটালে আসেই নাই।’

‘হোয়াট? কীসব যা তা বলছেন? হসপিটালে আসে নাই তো কোথায় গিয়েছে? ও তো আমার সাথেই বের হয়েছে। আপনি কি বলছেন প্লিজ আমাকে উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না। এমনিতেই আমার মাথাটা খুব গরম আছে আপনি দয়া করে এখান থেকে যান।’

বলেই নার্সটাকে রেখেই নিদ্রার কেবিনে ঢুকে গেলো। নিদ্রা আজকে ওর সাথেই হাসপাতালে আসার জন্য বের হয়েছে আর এই নার্সটা কিনা বলছে আজ ও আসে নাই। এটা ইম্পসিবল।

কেবিনে এসেও নিদ্রা দেখা মিলল না আজকে সারাদিন কেবিনে কেউ বসেছে বলে মনে হচ্ছে না। সবাই একথাই বললো অভ্র কে আজ নিদ্রা হাসপাতালে আসে নাই। অভ্র অবাক ও চিন্তিত মুখে বেরিয়ে এলো। রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড়ালো অভ্র। সামনে ওর গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে একহাত গাড়ির উপর রেখে ভাবতে লাগলো, নিদ্রা হাসপাতালে আসার নাম করে কোথায় যেতে পারে? কয়েকটা ফ্রেন্ড কে কল করলো কিন্তু যায় নাই।

মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে উঠে বসলো। এখন কেবল এগারোটা বাজে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলেই জানা যাবে। অভ্র আর হসপিটালে যায় না সোজা বাসায় চলে আসে।

.
এদিকে বর্ষা আজ অনেক দিন পর কলেজে এসেছে। তূর্য ওকে নামিয়ে দিয়ে গেছে। কলেজে গিয়ে মাঠে ওর সব বিচ্ছু বাহিনীকে বসে থাকতে দেখলে। ওরা সবাই ওর উপর রাগ করে আছে ও জানে। থাকা স্বাভাবিক। বান্ধবী বিয়ে করে নিলো অথচ ওরা কেউ খবর অবধি পেলো না। সব কটা ওর দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। যেন ওকে খেয়াল‌ই করে নি। বর্ষা গিয়ে চুপচাপ ওদের পাশে ঘাসের উপর বসে পড়ল।

‘ তোদের সবার কি খবর?’

বর্ষা কথাটা বলে সবার দিকে চাইলো কিন্তু কেউ ওর দিকে তাকালো না। নিজের মতো কথা বলে যাচ্ছে ওকে পাত্তা দিচ্ছে না। বর্ষার এসব দেখে খুব খারাপ লাগলো। তিশার হাত ধরে বললো,

‘ প্লিজ তুই অন্তত কথা বল। এমন করছিস কেন তোরা?’

তিশা হাত ছাড়িয়ে নিলো।

‘ কেউ কি আমার সাথে কথা বলবি না। এতোটা পর হয়ে গেলাম আমি তোদের?’

এবার কথা বললো একজন বললো, ‘ তুই আমাদের আপন ছিলি সব সময় কিন্তু আমরা ছিলাম না কখনো তাই তো এতো বড় কাজটা লুকিয়ে চুরিয়ে করলি।কিভাবে পারলি রে দাওয়াত না দিতি বলতে তো পারতি! বললিই না আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড এর বিয়ের কথা কিনা অন্য মানুষের মুখে শুনতে হয়।’

‘ আমি তোদের অভিমানটা বুঝতে পারছি রে। কিন্তু আমি বিশ্বাস কর আমি এমনটা চাইনি। সব ঠিক থাকলে তোদের ঠিক জানাতাম। কিন্তু আমিই তো এই সবের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে…

‘ ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। তুই আমাদের আপন ভাবিস না আমরা বুঝতে পেরেছি।

‘ এই সামান্য কারণে তোরা আমার সাথে এমন করছিস? আমি কি খুব খুশি মনে আনন্দ উল্লাস করে বিয়ে করিছি যে এমন করছিস? আমি যে কতোটা কষ্টে আমি সেটা কেউ বুঝছে না তোরাও বুঝছিস না। থাক কথা বলা লাগবে না। আমার কষ্ট আমি একাই সহ্য করি তোরা তোদের রাগ নিয়ে থাক। বাই।’

কষ্ট বুকটা ফেটে যাচ্ছে এতো দিন পর ওদের সাথে দেখা আর ওরা এমন করলো। কেউ আমাকে কেন বুঝে না।সব জায়গা থেকে খালি আমি কেন কষ্ট পাই কেন? চোখের কোনে জল চলে এলো আমি উঠে দাড়াতেই তিশা আমার হাত চেপে ধরে আবার বসিয়ে দিলো। আমার চোখে পানি দেখে সবাই অবাক হয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। নিজেরাই সরি বলতেই লাগলো।

‘ আরে সরি ইয়ার কাঁদছিল কেন? আমরা শুধু অভিমান করে কথাগুলো বললাম। সত্যি কি তোর উপর রাগ করতে পারি। এটা জাস্ট মজা ছিলো প্লিজ কাদিস না।’

তিশা আমার হাত ধরে বললো, ‘ তোর আবার কি কষ্ট বলতো? সত্যি করে বলবি তোর জামাই কি পরকীয়া করে? তোকে মেনে নেয়নি। আচ্ছা আমি তো শুনলাম তিনি নাকি নিজেই বিয়ের কথা বলেছিল তাহলে এখন তোকে কষ্ট কেন দিচ্ছে সব শেয়ার কর। ওই পুলিশ ব্যাটা যদি কিছু করে থাকে বল একদিন টাইট দিয়া দিমু আমরা আমাগো কলিজারে কষ্ট দেওয়া বের করমু।’

ওদের এসব কথা শুনে হা হা করে হেসে উঠলাম। আমার হাসি থেকে ওরা ও হাসলো। সব দুঃখ ভুলে গেলো যেন কিন্তু ছুটির পর‌ই আবার মনটা খারাপ হয়ে গেলো সবাই কথা বলতে বলতে বের হতেই তূর্য কে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো। তূর্য কে দেখে বর্ষার হাসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো।

তূর্য এগিয়ে এলো ফোন হাতে। বর্ষার বান্ধবী রা বর্ষাকে জিজ্ঞেস করলো, এই কি আমাদের দুলাভাই?

বর্ষা হ্যা না কিছু বললো না। তূর্য নিজে থেকেই সবার সাথে কথা বললো। আর নিজের পরিচয় দিলো। তারপর সবার সামনেই বর্ষার হাত ধরে টেনে এগিয়ে গেলো। বর্ষা রাগে ঝামটা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিজেই গাড়িতে উঠে বসলো।
বর্ষার ফ্রেন্ড রা হা করে তূর্য কে দেখছে। বর্ষার আর কথা না বললেও তূর্য সবার দিকে তাকিয়ে গাড়িতে উঠে বাই বললো।

‘ আমাদের দুলাভাই তো সেই হ্যান্ডসাম রে।’ তিশা বললো।

সবাই বললো, ‘ হ্যা রে বর্ষা কপাল আছে বল। কিভাবে নিয়ে গেলো। খুব ভালোবাসে বর্ষাকে বোধহয়।’

#চলবে……

#তুমি_যে_আমার🥀
#Writer_Nondini_Nila
#extra_part

অভ্র বাসায় এসে এক ঘুম দেয়। বাসায় এসেই ফ্রেশ হয়ে হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। সন্ধ্যায় বিছানা ছেড়ে উঠে যখন জানতে পারে নিদ্রা এখনো বাসায় ফিরেনি তখন চিন্তিত হয়ে পড়ে।
সারা দিন বাসায় ফিরে নি। তাহলে ও আছে কোথায়? হাসপাতালেও তো যায় নাই!’

সোফায় বসে ফোনে কল করে। কিন্তু নাম্বার বন্ধ রাগে ফোনটাই আছাড়ে ফেলে অভ্র। ছুটে আসে অভ্র মা।

আতঙ্কিত মুখে জিজ্ঞেস করে, ‘কি হয়েছে এমন করছিস কেন?’

‘পাগল হয়ে যাব আমি। জ্বালা যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না।’

‘ কি হয়েছে বলবি তো?’

‘নিদ্রা এখনো বাড়ি ফিরে নি।’

‘ হ্যা তুই তো বলেছিলি। ফ্রেন্ড এর বাড়ি গেছে।

‘ মিথ্যে বলেছিলাম। ও আজ হসপিটালে ও যায় নি। আমার পরিচিত কোন কোন ফ্রেন্ডের বাড়িতে ও যাইনি।

‘তাহলে কোথায় গেছে?’

‘সেটাইতো বুঝতে পারতাছিনা! আমিতো ভেবেছি সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে আসবে কিন্তু এখনো আসেনি।’

‘ নিদ্রার কোন বিপদ হলো না তো?’ চিন্তিত মুখে বললো অভ্ররের মা।

‘আমি কি করে বলব আম্মু? আমি কি ওর সাথে ছিলাম! বারবার করে বলেছিলাম চাকরিটা ছেড়ে দে ছেড়ে দে কিন্তু ও তো আমার কোন কথাই শুনবে না। যেদিন বাসা থেকে বের হবে সেদিন ই কিছু না কিছু ঘটে। আজ ও এখন কোথায় খুঁজবো তুমিই বলো।’

অভ্রের ভাবি এসে বলে, ‘ কি মেয়ে বিয়ে করলা খালি হারায় যায়। দুই দিন পর পর এক তামাশা। বয়ফ্রেন্ড- টয়ফ্রেন্ড সাথে থাকতে পারে।’

অভ্র আর ওর মা বিরক্ত মুখে তাকায় তার দিকে তিনি থামার বদলে আরো কয়েকটা কথা বলে রান্না ঘরে চলে যায়। অভ্র বাবা এসেও এসব শুনে বিরক্ত হয়। বিয়ে দিয়েও শান্তি নাই এতো যন্ত্রণা। সে কি ছোট বাচ্চা প্রতিদিন তাকে খোঁজে আনতে হবে। বিরক্ত মুখে নিজের রুমে চলে যায়। অভ্র নিজেই বাসা থেকে বের হয়। সবাই বিরক্ত হলেও অভ্রকে নিদ্রাকে কে খুঁজে বের করতে হবে। নিশ্চয়ই ওর কোনো বিপদ হয়েছে না হলে ফোন বন্ধ করে রাখত না। সকালে আমি কেন যে এটা সিরিয়াসলি নিলাম না। এখন এই রাতের বেলা কোথায় খুজবো।

শশুর বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হয় অভ্র। না আজকে এখানে কেউ নাই। নিদ্রা চাচা চাচি বললো,

‘কি বলতেছো তুমি নিদ্রা আমাদের এখানে আসেনি। তুমি তোমার বউ নিয়ে গেল এখন আবার আমাদের এখানে এসে হাঙ্গামা করতেছ কেন?’

‘আমার বিশ্বাস আপনার‌ই নিদ্রাকে আবার তুলে এনেছেন না হলে আপনার ওই ছেলে কোথায় সে? সত্যি করে বলুন কোথায় এখন? নিদ্রা আমার স্ত্রী।ওকে নিয়ে টানা হাচরা করবেন না আমি মেনে নেবো না। এমন করলে আমি আপনাদের ও আপনার ছেলেকে পুলিশের হাতে দিবো।

‘কি কইলা তুমি আমাদের পুলিশের কাছে দিবা? এত বড় সাহস তোমার! বের হয়ে যাও আমাদের বাড়ি থেকে।আমাদের বাড়িতে এসে আমাদেরকেই হুমকি দিচ্ছো। নিজের বউ সামলে রাখতে পারো না আবার আমাদের দোষারোপ করছো। আমাদের মাইয়া না পাইলে উল্টা আমরা তোমার নামে কেস করে দিমু।’

‘ এই বাড়ি আপনাদের না মাথায় রাখবেন। নিজেরাই তো অন্যের বাসায় থাকেন আবার আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন? হাহাহা আপনি তারানোর কে? আমি নিদ্রাকে না নিয়ে বাসা থেকে এক পা ও নড়ব না বলে রাখছি।’

বলে অভ্র সোফায় বসে পড়ল। একটু আগে সারা বাড়ি তল্লাশি করে এসেছি কিন্তু নিদ্রাকে খুঁজে পায়নি। ও নিশ্চিত এই লোক গুলো জানে নিদ্রা কোথায় আছে। তারা না জানলেও তার ছেলে অবশ্যই জানে। সে বাড়ি ফিরা না পর্যন্ত আমি বাসা থেকে বের হবো না।
নিদ্রার চাচা চাচি চেষ্টা করেও অভ্রকে এক চুল পরিযান নড়াতে পারল না। এদিকে নিজের ছেলেকে ফোন করে যাচ্ছেন। নিদ্রা তো সত্যিই তার ছেলের কাছে আছে এটা তারা জানেন কিন্তু সেটা অভ্র কে বলতে পারবে না। ছেলে তার নিদ্রার জন্য পাগল হয়ে গেছে। আমাদের কথা শুনলে তো।
ফোন রিসিভ করছে না। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে অভ্রকে দেখে যাচ্ছে।

.
বর্ষাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে তূর্য কোথায় জানি চলে‌ গেছে। বর্ষা ফ্রেশ হয়ে শুয়ে ছিলো বিকেলে উঠে একবার তূর্য এর বাবার রুমে উঁকি মেরেছে। তিনি বিছানায় শুয়ে আছে। আর অদ্ভুত বিষয় বর্ষাকে উঁকি মারতে তিনি দেখে ফেলেছে। বর্ষা চমকে উঠে চলে আসে আবার ভাবে ধ্যাত উনি দেখলে তাতে কি হলো? উনি তো কথাই বলতে পারেন না। বর্ষা উল্টা ঘুরে বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখছে। ঘুরতে ঘুরতে ছাদের দরজায় এসে থামে ইয়া বড় একটা তালা ঝুলানো।
বর্ষা উঁকি ঝুঁকি মেরে নিচে নেমে আসে। শান্তার দেখা মিলে,

‘ বউ মনি কই গেছিলেন?’

‘কোথাও না এমনি হাঁটছিলাম। আচ্ছা তোমার কাছে কি ছাদের চাবি আছে?’

‘না তো বউ মনি।’

‘ ছাদে কি তুমি গেছিলা আসার পর?’

‘ না তো একবার স্যার এর কাছে চাইলাম বলছে ওখানে যাওয়ার দরকার নাই।’

‘ ওহ।’

‘ ব‌উমনি আপনার আর স্যারের কি প্রেমের বিয়ে?’

বর্ষা বাগানের দিকে যাচ্ছিলো। পেছনে পেছনে শান্তা ও এলো‌ আর প্রশ্নটা করলো ওর কথা শুনে আমি ওর দিকে তাকালাম।

‘ কেন তোমার এমনটা মনে হলো কেন?’

‘জানিনা বউ মনি। কিন্তু আমার তাই মনে হয়। স্যার আপনারে কত্তো ভালোবাসে। আবার দুজনেই কি সুন্দর দেখতে একদম পারফেক্ট জুটি। তাই মনে হয় আপনাদের সম্পর্ক করে বিয়ে।’

‘তোমার ধারণা একদমই ভুল শান্তা। উনি আমাকে একটুও ভালোবাসে না। আর না আমাদের সম্পর্ক ছিল আগে। উনার সাথে আমার শত্র….
বলতে গিয়ে থেমে গেলো বর্ষা। শান্তা ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

‘ না মানে বলছিলাম যে। আমাদের আগের চেনা পরিচিত ছিলো না। উনাকে আমার বাপি পছন্দ করে তাই বিয়েটা হয়েছে।’

‘ ওওওও’

বর্ষা হাঁটতে হাঁটতে একপাশে এসে দাড়ালো। ওর পাশে শান্তা ও আছে। ওর সাথে কথা বলছে। হঠাৎ শান্তা লক্ষ্য করলো দূর থেকে তূর্য ওকে ইশারা করে ভেতরে যেতে বলছে। শান্তা তা দেখে আর কোন দিক না তাকিয়ে চলে গেলো। তূর্য শব্দহীন পায়ে হেঁটে বর্ষার পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। আর দুহাতে জাপ্টে ধরে পেছন থেকে। বর্ষা আচমকা কারো স্পর্শ পেয়ে লাফিয়ে উঠে। কেঁপে উঠে ও। শুরু করে দেয় ধস্তাধস্তি করা ছাড়া পেতে। তূর্য বর্ষার কাঁধে থুতনি রেখে বলে,

‘ আরে এমন করছো কেন? তোমার হাজবেন্ড তোমাকে জরিয়ে ধরেছে শান্ত থাকো।’

স্পর্শ পেয়েই বর্ষা তূর্য কে চিনতে পেরেছে। ওর কথা শুনে রেগে বললো,

‘ ছাড়ুন আমাকে। আপনার মতন নির্লজ্জ বেহায়া লোক আমি জীবনে দেখিনি। এতবার বলার পরও আপনি আবার আমাকে টাচ করছেন।’

‘আমি যদি নির্লজ্জ না হয়ে তোমার মতো হয়। তাহলে আর এ জীবনে আমার বাবা ডাক শুনা হবে না। তাই আমাকে তো নির্লজ্জ হতেই হবে। প্রত্যেকটা পুরুষ ই তার বউয়ের কাছে নির্লজ্জ হয়ে থাকে বুঝেছ বর্ষা মনি।’

‘ বাজে কথা বন্ধ করে ছাড়ুন আমাকে।’

তূর্য ছারলো না। দশ মিনিট এর মতো ধরেই থাকলো। বর্ষা ওর হাতে চিমটি কেটে দিয়েছে তাও ছাড়েনি। ফট করেই ছেড়ে দিলো বর্ষাকে। বর্ষা ছিটকে দূরে সরে দাঁড়ালো। আর রেগে তাকালো তূর্য এর মুখের দিকে।

‘ তোমার হাতের নখ আগে আমার কাটতে হবে।’

বলেই হাতের চিমটি দেওয়া স্থানে ঠলতে লাগলো। বর্ষার রাগী দৃষ্টি তূর্য সেসব তোয়াক্কা না করে হেলেদুলে হেঁটে বাসায় ভেতরে ঢুকে গেল। বর্ষা ওরনা শক্ত করে চেপে ধরে ভাবছে যদি তূর্য কে একটা ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিতে পারতাম। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ভাবছে আমার ঘুষিতে ওই শক্তিশালী খাম্বার কিছু হবে না উল্টা আমার হাত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

#চলবে…….