নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব-৩৬+৩৭

0
1412

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৬

পরেরদিন সকালে আইরাত কে ঘুমের মাঝেই রেখে আব্রাহাম কে চট জলদি রেডি হয়ে কাজের ব্যাস্ততার ফলে বাইরে বের হয়ে যেতে হয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওপরে কোর্ট পরতে পরতে আইরাতের দিকে তাকায়। ঘুমের মাঝেই সে কিছুটা নড়েচড়ে উঠে। তার কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে বাইরে এসে পরে। আইরাত শুধু ঘুমের মাঝেই আব্রাহামের ছোয়া অনুভব করে। বাইরে এসেই দেখে আজকের পরিবেশ টা কেমন একটু ভারি ভারি, থমথমে। হোটেলের হলরুমে চলে গেলে কিছু সনামধন্য ব্যাক্তি আব্রাহামের দিকে এগিয়ে আসে। কথা বলে যা বুঝতে পারে তা হলো এতোদিন যাবত যে খবর টা প্রাইভেট করে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো তা লিক হয়ে গেছে। আর হওয়ারই কথা এতো বড়ো একটা কান্ড হলো আর তা পাবলিক হবে না তা কি হয়। মিডিয়ার লোকজন হলো কিছুটা পিপড়ার দলের মতো। মূহুর্তেই সব জায়গায় ছড়িয়ে পরে। তারাই জেনে গিয়েছে ফলে নিউজ লিক। লোকগুলোর সাথে আব্রাহাম কথা বলছিলো তখনই প্রত্যেকটা নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে কোহিনূরের ব্যাপার টাই দেখাচ্ছে। যা প্রতিনিয়ত আব্রাহাম কে অস্বস্তি তে ফেলছে। আব্রাহামের চোখ যায় আতিকের দিকে। সে মাত্রই হলরুমের পাশে থাকা করিডর পার হয়ে গেলো। কিছু একটা ভেবে আব্রাহাম সেখান থেকে এসে পরে। দ্রুত রাশেদ কে ফোন দেয়।

রাশেদ;; আসসালামু আলাইকুম স্যার। কেমন আছেন?

আব্রাহাম;; ওয়ালাইকুম সালাম, আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি আর বাকিরা সবাই কেমন আছে?

রাশেদ;; সবাই অনেক ভালো। আর স্যার সেখানকার খবর তো বেশি একটা ভালো শুনলাম না।

আব্রাহাম;; হুমম নিউজ লিক হয়ে গেছে।

রাশেদ;; স্যার আমি কি আসবো?

আব্রাহাম;; না থাক। তুমি সেদিক টাই সামলাও এছাড়াও এখানে আসতে তোমার কমপক্ষে দুদিন লাগবে। দুদিনে ব্যাপার টা হাতের বাইরেও চলে যেতে পারে।

রাশেদ;; স্যার আপনি বললে গার্ড পাঠাবো আরো!!

আব্রাহাম;; না এনাফ আছে এখানে। জাস্ট ডু ওয়ান থিং কোহিনূর বানাও।

রাশেদ ভেবাচেকা খেয়ে যায় আব্রাহামের কথা শুনে। তার কথার ধরন কিছুই বুঝে না।

রাশেদ;; ম মা মানে স্যার বুঝলাম না।

আব্রাহাম;; আ”ম ড্যাম সিওর এগুলোর পিছে যে আছে তাকে আতিক বেশ ভালোই চিনে। সে শুধু পালিয়ে বেড়াচ্ছে আর কিছুই না। সে মুখও খুলছে না একমাত্র টাকার লোভে। তো এমন কিছু একটা করতে হবে যে সাপও মরে আর লাঠিও ঠিক থাকে।

রাশেদ;; স্যার আ….

আব্রাহাম;; লিসেন সব গার্ড দের এলার্ট করে দাও তোমার কাছ থেকেই। এখানে তাদের কাছে সব ধরনের লিংক আছে।

রাশেদ;; কিন্তু স্যার কোহিনূর!

আব্রাহাম;; ফেইক। প্লাস্টিক সার্জারি করে যদি পুরো মুখের হুলিয়া পালটে যেতে পারে তাহলে শুধু মাত্র ক্ষণিকের জন্য একটা ডুপ্লিকেট কোহিনূর কে আসল বানাতে পারবে না। সবই সম্ভব। আমি প্রেজেন্ট-ই করবো এমন ভাবে যে কেউ ধরতেই পারবে না তা ফেইক। আর কথা রইলো নিউজ লিক হওয়ার তো তা ভুয়া প্রমাণ করে দিবো। অর্থাৎ কোহিনূর কখনো চুরিই হয় নি এমন ধরনা দিতে হবে। নয়তো সব ভেস্তে যাবে। আর আসলে যে কোহিনূর চুরি হয়েছে সেটাকেই ফেইক বানাতে হবে। এতে যে চুরি করেছে সে ভাবতে পারে যে তার কাছে বর্তমানে যে কোহিনূর আছে সেটাই ভুয়া আর আমার কাছে যেটা আছে সেটাই আসল।

রাশেদ;; স্যার সময় লাগবে!

আব্রাহাম;; সমস্যা নেই যত টাইম লাগার লাগুক বাট এভাবে বসে থাকা আর চলবে না। কিছু একটা করতেই হবে। আর এখানে সব সামলিয়ে নিতে হবে।

রাশেদ;; আর আতিক?

আব্রাহাম পেছন ঘুড়ে আতিকের দিকে তাকায়৷ শালা দিনে-দুপুরে এলকোহল গিলতে বসে পরেছে।

আব্রাহাম;; হায়াতের মাত্রা শেষ হয়ে গেছে ওর।

আব্রাহাম ফোন কেটে দেয়। কিছু গার্ড কে ডেকে আগামীকাল সকালের মাঝে সব মিডিয়া/প্রেস রা যেসব ঝড় বইয়ে দিচ্ছে তাকে দ্রুতই বন্ধ করতে বলে৷ আব্রাহাম করিডরের দিকটায় চলে যায়। সেম টাইমে তার নজর যায় রিয়ানার দিকে। রিয়ানার দশা একবার দেখে নেয় আব্রাহাম। তার বা পায়ের নিচের অংশ টায় সাদা ব্যান্ডেজ করা আর হাতের কুনির দিকটা তেও ব্যান্ডেজ করা। একদিনেই চোখের নিচে কেমন এক কালো দাগ পরে গেছে৷ রিয়ানা আব্রাহাম কে দেখে সেখান থেকে জলদি পা ফেলে চলে যায়৷ আর আব্রাহাম মুখ টিপে হাসে৷ কাল আইরাত যা করেছে বলার বাইরে। ফোনের স্ক্রিন টা অন করতেই আইরাতের হাসিমাখা মুখটা ভেসে আসে। আইরাতের কাছে ফোনই করে বসে সে। আইরাত ঘুমের মাঝেই ফোনের শব্দে হাতিয়ে হাতিয়ে তা নিয়ে রিসিভ করে। উঠে বসে হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে ফোন কানে ধরে।

আইরাত;; হ্যালো।

আব্রাহাম;; ঘুম হলো?

আইরাত;; হুমমম।

আব্রাহাম;; উঠেছো?

আইরাত;; হ্যাঁ

আব্রাহাম;; জানো রিয়ানা কে দেখলাম।

আইরাতের ঘুম উড়ে গেছে৷

আইরাত;; মানে কি? ওই মাইয়া কি আবার আপনার কাছে আসছে নাকি। দাঁড়ান আমি আসছি। আর এবার সোজা হকিস্টিক নিয়ে আসবো৷

আব্রাহাম;; আরে কুল কুল বেবিগার্ল কুল। রিয়ানা আসে নি আর কখনো আসবেও না কারণ যে ডোজ দিয়েছো কাল তুমি ওকে৷ হায় বেচারি এখন হাতে-পায়ে ব্যান্ডেজ করে ঘুরে ফিরছে।

আইরাত;; ভাগ্য ভালো চুল টেনে ছিড়ে দেই নি ওর।

আব্রাহাম;; হুমম এখন উঠে পরো। ফ্রেশ হও ব্রেকফাস্ট করো।

আইরাত;; আচ্ছা আপনি কোথায়? আর কখন আসবেন?

আব্রাহাম;; জান আমার আমি বাইরে এসেছি। কিছু সময় পরই রুমে আসছি।

আইরাত;; হুমম।

আব্রাহাম;; হে লিসেন!

আইরাত;; হুমমমম।

আব্রাহাম;; আই লাভ ইউ।

আইরাত;; টু।

আইরাত ফোন কেটে দেয়। আব্রাহামের কেমন যেনো লাগছে এখন। এতোক্ষণ তো ভালোই ছিলো তবে আইরাতের সাথে কথা বলার পর থেকে কেমন যেনো লাগছে তার। আব্রাহামের কিছু ভালো লাগছে না। মন বারবার বলছে যে কিছু না কিছুটা একটা হবে মানে কোন একটা বিপদ হবেই যা আব্রাহাম কোন ভাবেই চাইছে না আর চায় না।যাই হোক, যা কিছুই হয়ে যাক না কেনো আইরাত যেনো সেইফ থাকে। তার যেনো কোন কিছু বা কোন ক্ষতি না হয় তাহলে আব্রাহাম শেষ হয়ে যাবে একদম। একটা কথা একবার মনে এসে নাড়া দিলে তাও তা মানা যায় কিন্তু বারবার। যাই হোক সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে। বেশকিছু কাজ ছিলো সেগুলো মিটিয়ে আব্রাহাম চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে আইরাত রুমে নেই। করিডরেও নেই। কোথাও নেই। আব্রাহাম তড়িঘড়ি করে যেই না রুমের বাইরে বের হতে যবে তখনই ওয়াসরুম থেকে শব্দ আসে। আইরাত ওয়াসরুমে৷ আর আব্রাহামের মাথা থেকে তা বেরই হয়ে গিয়েছিলো৷ আব্রাহাম আস্তে করে এগিয়ে গিয়ে দরজায় নক করে। কিন্তু তা আইরাতের কান অব্দি পৌঁছায় না। সে ওয়াসরুমের ভেতরে মনের আনন্দে গান গাইছে আর হয়তো লাফাচ্ছেও। আব্রাহাম বুঝলো যে তার বউ মস্ত বড়ো একখান বাথরুম সিংগার৷

আব্রাহাম;; ওরে আমার আরিজিৎ সিং রে। হলো তোমার!

আব্রাহামের কন্ঠস্বর পেয়ে আইরাত থেমে যায়৷ তার মাথায় শ্যাম্পু, দুগালে সাবানের ফোয়ারা লেগে আছে। হালকা করে ওয়াসরুমের দরজা টা ফাক করে মাথা বের করে দিয়ে রুমের আশেপাশে চোখ বুলায়। কোথাও কেউ নেই তবে হুট করেই আব্রাহাম তার সামনে চলে আসে। এতে আইরাত বেশ চমকে ওঠে। যেই না দ্রুত গতিতে দরজা লাগিয়ে দিতে যাবে তখনই আব্রাহাম তার একহাত দিয়ে দরজা ধরে ফেলে৷ আইরাত তার দুহাত প্লাস বডি দিয়ে দরজা লাগানোর চেষ্টা করছে আর আব্রাহাম শুধু তার একহাত দিয়ে দরজা ধরে রেখেছে। আর না পেরে আইরাত হাল ছেড়ে দেয়। আর আব্রাহাম এক নিমিষেই বাথরুমে ঢুকে পরে। আইরাত ছোট খাটো একটা চিল্লানি দিয়ে ওঠলে আব্রাহাম তার মুখ চেপে ধরে৷ খেয়াল করে দেখে শুধু একটা হুয়াইট কালারের টাওয়াল জড়িয়ে আছে আইরাত। নিজের দিকে আব্রাহাম কে এভাবে অদ্ভুত নজরে তাকিয়ে থাকতে দেখে আইরাত ঘুড়ে দাঁড়ায়।

আব্রাহাম;; ঢেকে লাভ নেই বেবিগার্ল।

আইরাত;; লুচু ছেলে। ছাড়ুন আমাকে।

আব্রাহাম;; ধরলামই তো না।

আইরাত;; আপনি বাইরে যান। সরুন আমার পেছন থেকে৷

আব্রাহাম;; আর যদি না যাই তো!

আইরাত;; এমন করেন কেনো! প্লিজ বাইরে যান না।

আব্রাহাম;; চুপ।

আব্রাহাম আইরাত কে দেয় এক ধমক মেরে। আইরাতের শীতল বাহু ধরে টান দিয়ে একদম শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দেয় নিজের সাথে। শাওয়ার অন করে। ঝিরিঝিরি পানি বিন্দু দুজনের ওপরে পরে। আইরাতের মাথায় তো শ্যাম্পু ছিলো তা পানি দিয়ে গলে তার মুখে পরতেই চোখে তীব্র ভাবে কামড় ধরে।

আইরাত;; আহহহহহহহহ।

আব্রাহাম;; কি হলো? চোখে শ্যাম্পু গিয়েছে!

আইরাত;; হ্যাঁ।

আব্রাহাম;; দেখি দেখি।

আব্রাহাম আইরাত কে একদম শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দেয়৷ কিছু সময় পর চোখের জ্বালাপোড়া কমে আসে তার।

আব্রাহাম;; এখনো জ্বলছে?

আইরাত;; নাহ, ঠিক আছি।

আব্রাহাম আইরাতের দুচোখে চুমু দিয়ে দেয়। দুজনে ফ্রেশ হয়ে বেশ সময় পর বাইরে বের হয়ে আসে। বিকেলের দিকে আব্রাহাম-আইরাত করিডরে বসে ছিলো। আসলে আইরাত আব্রাহাম কে খাইয়ে দিচ্ছে। তবে খাওয়ার মাঝেই আব্রাহামের ফোন কল আসে।

আব্রাহাম;; জানপাখি আমায় যেতে হবে এখনই।

আইরাত;; আরে কিন্তু মাত্র একটুই তো খেলেন। আরো একটু খেয়ে তারপর যান।

আব্রাহাম;; এতো খেলে মোটা হয়ে যাবো। তোমার মতো।

আইরাত;; আমি মোটা?

আব্রাহাম আইরাতের গাল টেনে দেয়।

আব্রাহাম;; একদম পারফেক্ট আছো। বাট গালগুলো ফুলো ফুলো যা আমার সবথেকে বেশি পছন্দ।

আইরাত;; হয়েছে। আপনার খেতে হবে না যান আমিই খাই।

আব্রাহাম হেসে দিয়ে আইরাতের গাল টেনে দেয়। কানের নিচে চুমু দেয়।

আব্রাহাম;; ওরে আমার রসগোল্লা রে।

আইরাত;; হুম এখন যান আর পারলে একটু জলদি আসবেন।

আব্রাহাম;; যো হুকুম মহারানী।

আব্রাহাম রেডি হয়ে নেয়। তবে তার গেটাপ দেখেই আইরাত বুঝে যায় যে বাইরে কিছু একটা গন্ডগোল পাকাতে যাচ্ছে সে। কি আর করার আইরাত কিছুই বলে না। আব্রাহাম আইরাত কে বলে বের হয়ে পরে। রুম থেকে বের হয়ে লিফটে চরে হোটেলের হলরুম পেরিয়ে বাইরে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই কতো গুলো পুলিশের গাড়ি আসে রেড এলার্ট বাজিয়ে। তারাই সবদিক টা ঘেড়াও করে রেখেছে। আব্রাহাম আসলে পুলিশ তার সাথে কিছু কথা বলে। তারপর গাড়িতে উঠে চলে যায়। হাতে থাকা ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে রাত বেশ হয়ে এসেছে। বারো টা ছুই ছুই। গাড়িতে উঠে গার্ড কে আগে ক্লাবের দিকে যেতে বলে। বিশ-ত্রিশ মিনিট পর ক্লাবের সামনে গাড়ি থামলে আব্রাহাম নেমে পরে। হুডি দিয়ে পা থেকে মাথা অব্দি সব ঢাকা। মাথার ওপরেও হুডি আছে আর মুখে কালো মাস্ক পরা। চোখ দুটো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ক্লাবের ভেতরে যেতেই একরাশ ধোঁয়া আসে। ধোঁয়ার মাঝ দিয়ে আবাহাম চলে যায়। মূলত আতিক কে হন্নে হয়ে খুঁজে যাচ্ছে আব্রাহাম আর তার জানা মতে এই সময়ে আতিক ক্লাবেই ছাইপাস সব খেয়ে পরে আছে। কয়েক কদম আগে যেতেই আব্রাহাম যা ভেবেছিলো তাই হলো। আতিক এখানে তো আছে কিন্তু ঠিকই আছে ড্রাংক না। যাই হয়ে যাক আজ এর মুখ থেকে কথা বের করতেই হবে। আব্রাহাম গিয়ে একটা টেবিলে বসে। তবে আতিকের থেকে আড়াল করে যেনো সে বুঝতে না পারে। এভাবেই কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আতিক উঠে দূরে যায়। আর সেটারই সুযোগ আব্রাহাম নেই। সেও উঠে আতিকের পিছু চলে যায়। আব্রাহাম তার হাতে একটা ইঞ্জেকশন নিয়ে নেয়। আতিক যেখানে মানুষ জন কিছুটা কম সেখানে এসে পরে। হঠাৎ আতিকের কেনো যেনো মনে হয় যে তার ঠিক পেছনেই কেউ দাঁড়িয়ে আছে। পিছে ঘুরে দেখতে যাবে কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে না। তার আগেই আব্রাহাম তার হাতে থাকা ইঞ্জেকশন টা আতিকের ঘাড়ের ডান দিক বরাবর বসিয়ে দেয়। ব্যাথায় কুকড়ে যায় সে। সম্পূর্ণ ইঞ্জেকশন তার ঘাড়ে পুশ করার পর তা তুলে নেয়। আতিক তার ঘাড়ের দিকে হাত দিয়ে হালকা করে চেপে ধরে তারপর আপনা আপনিই তার চোখের সামানে সব ঘোলা হয়ে আসে। আস্তে আস্তে লুটিয়ে পরে ফ্লোরে সে।





চলবে~~

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৭

সম্পূর্ণ এক অন্ধকার রুমে একটা চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে আতিক কে। নিভু নিভু ভাবে চোখ মেলে তাকায়। মাথা যেনো সারা দুনিয়া চক্কর দিচ্ছে। ভনভন করে ঘোরাচ্ছে। দেহে বিন্দু মাত্র শক্তি পাচ্ছে না। ঘাড় টা খানিক ওপরে তুলতেই ঘাড়ের ডান দিকটায় বেশ ব্যাথা অনুভব করে আতিক। হাত দিয়ে ঘাড়ে ধরতে যাবে কিন্তু তা পারে না। খেয়াল করে দেখে তার হাত তো বাধা চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে। আস্তে আস্তে ঘাড় বাকিয়ে নিজের আশে পাশে দেখে। একটা গোডাউনের মতো ঘর। বেশ পুরনো বলে মনে হয় এটা। কতো খারাপ জায়গায় ঘুরেছে সে তবে এর আগে এখানে এসেছে বলে মনে পরে না। গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে, মুখটা কেমন মূহুর্তেই ফ্যাকাশে বর্ণ হয়ে গেছে। মাথা তুলে ওপরে তাকাতেই দেখে একটা হলুদ কালারের বাতি রয়েছে যা পুরো ঘর কে আবছা আলোকিত করে রেখেছে। পরমূহুর্তেই তার মনে পরে যে সে তো ক্লাবে ছিলো তাহলে এখানে এলো কি করে! চোখের সামনে সব কেমন আধো আধো ভাবে ভাসতে লাগলো। তার ক্লাবে দাঁড়িয়ে থাকা তখনই পেছন থেকে তার ঘাড়ে কারো ইঞ্জেকশন পুশ করা ব্যাস আর কিছু মনে নেই তার। আতিকের খেয়াল আছে বেশ যে সে বারো টার সময় ক্লাবে ছিলো। হাতে তার ঘড়ি পরা ছিলো যার দরুন সময়ের দোটানায় আর তাকে পরতে হলো না। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে রাত বাজছে আড়াই টা। মানে বারো টা থেকে শুরু করে আরো আড়াই ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরেছে। আতিক এবার নড়াচড়া শুরু করে দেয়। তাকে এখান থেকে বের হতে হবে। চেয়ারে বাধারত অবস্থাতেই বেশ নড়াচড়া করে যাচ্ছে সে। কিন্তু তখনই কারো ভারি কদমের আওয়াজ তার কানে আসে। নিস্তব্ধ রুমে পায়ের আওয়াজ সুস্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। আতিক ছোট ছোট চোখ করে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। অন্ধকারে শুধু পায়ের অংশ টুকুই দেখা যাচ্ছে ব্যাক্তি টির। আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে এলে এবার মাথার অংশ টুকুও চোখে পরে তবে তার চেহারা না।

আতিক;; ক ক কে আ আপনি? আমি কি করেছি যে আ আ আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেনো? কে আপনি?

এবার সে আলোতে এগিয়ে এসে একটা চেয়ার হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঠাস করে রেখে দেয়। তাতে বসে এক পায়ের ওপরে হাত রেখে দেয়। আরেক হাত দিয়ে মাথার ওপর থেকে হুডি টুকু পেছনে ফেলে দেয়। শক্ত ভাব মুখে নিয়ে সামনে তাকায়। আব্রাহাম সে, আর আব্রাহাম কে দেখে আতিক স্বভাবতই কপাল কুচকে ফেলে।

আতিক;; আপ আপনি? স্যার আমাকে কেনো নিয়ে এসেছেন আমি কি করেছি? আর, আর আপনিই কি আমাকে….

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমিই ইঞ্জেকশন পুশ করেছিলাম তোকে। সেটা অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন ছিলো। চিন্তা করিস না মরবি না তুই।

আতিক শুকনো ঢোক গিলে কেননা আব্রাহাম যে আসলে কেমন প্রকৃতির লোক সে তা জানে বেশ ভালো করেই।

আব্রাহাম;; আসলে ভালো কথার মানুষ না তুই বুঝলি তাই সম্মান দিয়ে আর কি হবে।

আতিক;; আমাকে যেতে দিন স্যার।

আব্রাহাম;; হুমম অবশ্যই যেতে দিবো। তোকে এখানে ধরে বেধে রেখে দেওয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই। তবে তার আগে আমার সব প্রশ্নের জবাব দে।

আতিক;; কি স্যার?

আব্রাহাম দুহাত এক করে গম্ভীর মুখে ঝুকে পরে।

আব্রাহাম;; কোহিনূর কোথায় আর কার কাছে আছে?

আব্রাহামের কথা শুনতেই আতিকের চোখ কপালে ঠেকে যায়।

আতিক;; স্যার আমি এইসবের কিছুই জানি না। আমি কি করে বলবো।

আব্রাহাম;; দেখ আমার সামনে ভোলা সাজার ট্রাই তো তুই করিসই না। কাজে দিবে না। বললাম তো যে তোকে কিছুই করবো না। বিনা আচড়ে সহি-সালামত বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসবো তবে তার আগে আমি যা বলি তার ঠিক ঠিক উত্তর দে।

আতিক;; আমি সত্যিই কিছু জানি না।

তখনই একটা গার্ড এসে আব্রাহামের সামনে একটা কালো কালারের বক্স রেখে যায়। আর আব্রাহাম তা খুলে ভেতর থেকে একটা ছোট কাচের শিশি বের করে আর একটা খালি ইঞ্জেকশন বের করে। কোন কথা ছাড়াই সেই কাচের শিশি থেকে তরল কিছু পদার্থ ইঞ্জেকশনের ভেতরে ভরে নিতে লাগে। আতিক এইসব কিছু না বুঝে তড়িঘড়ি করে বলে ওঠে…

আতিক;; স স্যার, স্যার কি কি করছেন আপনি?

আব্রাহাম তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে।

আব্রাহাম;; আরেহ চিল, বেশি কিছু না এই ইঞ্জেকশন টা শুধু তোর বডিতে পুশ করবো আর তারপর! তারপর তুই কাতরাতে কাতরাতে মারা যাবি ব্যাস আর কিছুই না। লাইক বিষাক্ত এসিড ছুরে দিলে যেমন হয় তোরও তেমন হাল হবে তারপর শেষ তুই।

আব্রাহামের কথা শুনে আতিকের কলিজার পানি শুকিয়ে যায় কারণ আব্রাহাম যা বলে সে আসলেই তা করে ছাড়ে। আর এখন আব্রাহামের মতিগতি একদম সুবিধের লাগছে না। আতিক আগে থেকে আরো জোরে নড়াচড়া শুরু করে দেয়।

আতিক;; স্যার স্যার প্লিজ স্যার আমাকে ছেড়ে দিন। আমি কিছুই করি নি আর সত্যিই কিছুই জানি না।

আব্রাহাম;; মরণ কাছিয়ে এলো তাও মিথ্যের পর মিথ্যে বলেই যাচ্ছিস।

আতিক;; স্যার ছেড়ে দিন প্লিজ।

আব্রাহাম;; আগে বল তুই এখানে কি করিস? আমেরিকা কেনো এসেছিস?

আতিক;; স্যার আমাকে আসতে বলেছিলো।

আব্রাহাম;; কে?

আতিক;; ____________________

আব্রাহাম;; বল।

আব্রাহাম আতিকের গলা চেপে ধরে। আতিক চোখের মনি উল্টিয়ে দেয়, শ্বাস যেনো এই ফুরিয়ে এলো। দম যখন যায় যায় অবস্থা তখন আব্রাহাম তার হাত সরিয়ে ফেলে। কাশতে কাশতে অবস্থা অনেক খারাপ তার।

আব্রাহাম;; বলে ফেল দ্রুত।

আতিক;; ____________________

আতিক যখন তাও কিছু বলে তখন আব্রাহাম হাল একদম ছেড়ে দিয়ে ইঞ্জেকশন টা আতিকের বাহুতে সোজা লাগিয়ে দেয়। ইঞ্জেকশনের শুইটা শুধু লেগে রয়েছে আতিজের বাহুতে এখনো চাপ দিয়ে তরল পদার্থ টুকু বডির ভেতরে দেওয়া হয় নি। নিজের দেহে যে ইঞ্জেকশন টা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে তা দেখেই আতিক ভয়ে কাপাকাপি শুরু করে দেয়। আর হ্যাঁ আব্রাহাম যা বলেছিলো তা আসলেই সত্যি কেননা কাচের শিশির ওপরে একটা সাদা মাথার খুলির নকশা দিয়ে অতিমাত্রায় বিষাক্ত চিহ্ন দেওয়া। এবার আর আতিক থাকতে পারে না জীবনের মায়ায় পরে তড়িঘড়ি করে বলে….

আতিক;; আমি জানি, আমি জানি। হ্যাঁ আমি এসেছি এখানে কোহিনূর বিষয়েই। আমাকে, আমাকে তায়াফ খান এখানে আসতে বলেছিলো। আর কোহিনূরের আসল চোর আর কেউ না ওই তায়াফ খান নিজেই। সে, সে আপনার ব্যাপারে সব খবরই নিয়েছে। সে ওই সেভেন স্টার হোটেলেই আছে। আর সে, সে শুধু আপনার না বরং আপনার বউ আইরাত ম্যামের বিষয়েও অনেক খবর নিয়েছে।

আব্রাহাম;; এর জন্যই বলে ”সময় থাকতে কদর করতে শেখো”। আগেই বলেছিলাম যে বলে দে বলে দে বললি না তুই। নিজের পায়ে কোড়াল নিজেই মারলি। এই সামান্য কথা টুকু যদি কয়েক সেকেন্ড আগেও বলতি আজ তুই বেঁচে থাকার খাতায় থাকতি। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত এখন আর লাভ নেই বলে।

আব্রাহাম ইঞ্জেকশন টার শেষের অংশে ধরে তার ভেতরে থাকা বিষাক্ত কেমিক্যাল টুকু আতিকের বডিতে পুশ করে দেয়। ইঞ্জেকশন টা দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। ২-১ মিনিট পরই আতিক কেমন পাগল উন্মাদের মতো আচরণ করতে লাগলো। শরীরে কেমন যেনো এক জ্বালাপোড়া করতে লাগলো তার। হাত-পা যে দড়ি দিয়ে বাধা ছিলো তা টান টান করতে লাগলো যেনো এই ছিড়ে যাবে। আব্রাহাম হুডি টা আবার তার মাথায় মুড়িয়ে সেখান থেকে বের হয়ে যায়। যে রুমে আতিক ছিলো সে রুমের বাইরে লক করে রেখে যায় আর আগামী এক ঘন্টা অব্দি কোন গার্ড কে সেই রুমে যেতে মানা করলো। আর রুমের ভেতরে চলছে এক ভয়ংকর কান্ড। আতিক তার শরীরের বাধন গুলো খুলেই ফেলেছে। চোখ যেনো মেলে তাকাতে পারছে না সে, সব কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে। চেয়ার থেকে পরে গিয়ে নিচে হাটু গেড়ে বসে পরে আতিক। সারা শরীরে এক তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে যা সহ্য করা এক কথায় অসম্ভব। হঠাৎ আতিকের শরীরের এক একটা অংশ আপনা আপনিই এসিড ছুড়ার মতো জঘন্য হয়ে আসতে লাগলো। দেহ বেয়ে বেয়ে রক্ত ঝড়ছে। গলা ফাটিয়ে দিয়ে চিৎকার করে যাচ্ছে সে। বাইরে যে গার্ড রা ছিলো তারাও বুঝতে পারছে যে আতিকের অবস্থা খারাপ। সারা শরীর যখন রক্তে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আসে তখন আতিক একাই ফ্লোরে লুটিয়ে পরে। শরীরের মাংস ক্ষয়ে ক্ষয়ে পরছে। গলার জায়গা টাও বিচ্ছিরি হয়ে গেছে এতোটাই বিচ্ছিরি যে এখন গলা দিয়ে একটা টু শব্দও বের হচ্ছে না। নিঃশব্দে কাতরাতে কাতরাতে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পরে আতিক। ভেতরে সবকিছু শান্ত শুনে আর এক ঘন্টার বেশিই অতিবাহিত হয়েছে বলে বেশ কিছু গার্ড রুমের ভেতরে যায়। গিয়ে দেখে আতিক কে আর চেনার উপায় নেই। এমনকি শরীরের হাড্ডি অব্দিও দেখা যাচ্ছে। আতিকের মৃত শরীর কে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন এটাকে ঠিকানা লাগানোর পালা।


অন্যদিকে রাত প্রায় শেষের দিকে এখন আর আব্রাহাম বাইরে না থেকে সোজা হোটেলে রুমে চলে যায়। নিজের কাছে ডুপলিকেট চাবি ছিলো তা দিয়েই রুমের ভেতরে চলে যায়। গিয়ে দেখে আইরাত তার বুকের ওপর একটা বই রেখেই ঘুমিয়ে গিয়েছে। হয়তো পড়তে পড়তে চোখে ঘুমের রেশ নেমে আসে আর তখনই ঘুমের অতলে তলিয়ে গেছে। আব্রাহামের মেজাজ বেশ চড়া ছিলো কিন্তু রুমে এসে ঘুমন্ত আইরাতের মুখ দেখে সব রাগ নিমিষেই ঠান্ডা পানি। নিজের ওপর থেকে হুডি টা খুলে একটা সিংগেল সোফার ওপরে রেখে দেয়। এশ কালারের শার্টের হাতা গুলো গুটিয়ে নিতে নিতে আইরাতের কাছে যায়। আস্তে করে আইরাতের হাত সরিয়ে তার বুকের ওপর থেকে বই টা নিয়ে নেয়। দেখে এটা একটা ম্যাগাজিন আর ম্যাগাজিন টা আব্রাহামেরই। মানে আব্রাহাম কে নিয়েই লিখা আর কি। তা দেখে মুচকি হাসে সে। আইরাতের দুপাশে নিজের হাতের ওপর ভর দিয়ে তার কপালে চুমু একে দেয়। আইরাতের পাশে বসেই হাত দিয়ে গালের পাশে আলতো হাতে ছুইয়ে দিতে লাগে। আইরাত ঘুমের মাঝে কিছুটা নড়েচড়ে আব্রাহামের হাতটা আকড়ে নিয়ে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে ধরে। কি যে মায়াময়ী লাগছে আইরাত কে। আব্রাহাম কিছুক্ষণ এক মনে আইরাতের চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকে। এভাবে আর থাকতে না পেরে আব্রাহাম ঘুমের মাঝেই আইরাতের ঠোঁট দুটো আকড়ে ধরে। ঘুমের মাঝে নিজের ওপরে কারো খানিক ভর অনুভব করতে পেরেই আলতো করে চোখ মেলে তাকায় আইরাত। হোস আসতেই বুঝে যে তার ঠোঁট গুলো আব্রাহামের দখলে। চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়। হাত দিয়ে আব্রাহামকে কিছুটা দূরে ঠেললেও সে সরে না। উল্টো একহাত আইরাতের পিঠ পিছে রেখে দেয়।
আইরাতও তার হাত টা এবার আব্রাহামের কাধের ওপর রেখে দেয়। কিছুক্ষন পর আব্রাহাম আইরাতের ওপর থেকে সরে আসে। মাথা তুলে দেখে আইরাতের সামনের চুলগুলো এসে তার মুখের ওপরে পরেছে। হাত দিয়ে তা সরিয়ে দেয়।

আইরাত;; কখন এলেন?

আব্রাহাম;; মাত্রই।

আইরাত;; এতো দেরি!

আব্রাহাম;; কাজ শেষ করে এলাম বেবিগার্ল।

আইরাত;; হুমমম।

আব্রাহাম;; আমায় মিস করছিলে?

আইরাত;; অনেক বেশিই। এর জন্য আপনার ম্যাগাজিন নিয়ে আপনার বিষয়ে পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে পরেছি।

আব্রাহাম;; সরি জান আমার দেরি হয়ে গেছে।

আইরাত;; ইট”স ওকে। আসুন খেয়ে নিন।

আব্রাহাম;; যা খেয়েছি তারপরেও আরো কিছু খেতে হবে বলে মনে হয় না।

আইরাত বুঝলো যে আসলে আব্রাহাম কি বলেছে।
আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে এসে তাও আইরাত জোর করেই কিছু খাইয়ে দেয় তাকে। আব্রাহাম আইরাত কে পাজাকোলে তুলে নিয়ে বেডে গিয়ে শুয়ে পরে। আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে আর আইরাত তার হাত আব্রাহামের মাথার ওপর হাতিয়ে দিতে লাগে। এক সময় দুজনেই ঘুমিয়ে পরে।


পরেরদিন সকালে উঠেই আব্রাহাম দ্রুত গতিতে কনফারেন্স রুমে চলে যায়। আশেপাশে তার অনেক গার্ড। চারিদিকে শুধু মিডিয়ার লোকজন যাদের হাতে বড়ো বড়ো সব ক্যামেরা। আব্রাহাম কে আসতে দেখে তারা যেনো আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। কিন্তু সব কিছু বাদ দিয়ে আব্রাহাম মিটিং রুমে চলে যায়। সবকিছু ঠিকই আছে। সবকিছু একদম প্ল্যান মতো চলছে। আর সেই হিসেবে নকল কোহিনূরও আছে যা মূলত সবার কাছেই আসল। কনফারেন্স রুমে আব্রাহাম কে আসতে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে পরে। সবকিছু ঠিক ঠাক আছে দেখে আব্রাহাম মিটিং স্টার্ট করে।

আব্রাহাম;; Topping our list of the most expensive diamonds in the world is
”The Legendary Koh-I-Noor”

আব্রাহামের এই বলতেই একটা ভারি কালো কালারের বক্স থেকে ওপরে আপনা আপনিই উঠে আসে কোহিনূর হীরে। যা টেবিলে সবার ওপরে রাখা। চিকচিক করছে, চোখ ধাধানো। সবার নজর এখন তার দিকেই। আর এই কনফারেন্স লাইভ হচ্ছে। মিডিয়া/প্রেস সবাই এটা দেখতে পারছে। আর এক লাইভে আব্রাহামের এই প্রেজেন্ট করা হীরে তায়াফের চোখেও পরে। এটা দেখে তো তার মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। চোখে-মুখে তার চিন্তার ছাপ স্পষ্ট।





চলবে~~