প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
সিজন:৩
পার্ট :১১
এক এক করে সব কিছু ঠিক করছে প্রীতি ৷সে জানে পুলিশ তাকে খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করবে ৷তার বিরুদ্ধে চলা সকল ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সে জানে ৷কিন্তু সে আর কিছুই করবে না ৷এখন যত দ্রুত সম্ভব নারী পাচারকারী গ্যাংটা শেষ করতে হবে ৷শহর থেকে এক এক করে মেয়েরা গায়েব হয়ে যাচ্ছে ৷কাল তাদের মিশনে যেতে হবে ৷ভার্সিটির ভেতরে থাকা সকল নারী পাচারকারী কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ফাইল রেডি করেছে ৷প্রীতির আন্ডারে থাকা পুলিশদের মধ্যে শান্ত এবং আরো কিছু পুলিশ দ্বীপ চৌধুরীর কাছে গিয়েছে ৷ কেননা পুলিশ একটা কেসের সাথে আরেকটা কেসের খুব সুক্ষ্ম মিল খুজে পাচ্ছেন ৷কিন্তু কেসের আসল খেলোয়াড়কে তা আন্দাজ করতে পারছেন না ৷এখন শান্ত বসে আছে দ্বীপ চৌধুরীর পাশে ৷শান্ত দ্বীপ চৌধুরীকে বলল
মিঃ চৌধুরী আপনার কথা অনুযায়ী আপনি অপহরন হয়েছেন ৷এবং আপনার ছেলেকেও একই ব্যক্তি অপহরন করেছে আর আহত করেছে ৷আপনার ভাষ্য মতে আবেশ চৌধুরীর ছেলে মেয়েকেও একই ব্যক্তি অপহরন করেছে তাই তো ৷কিন্তু আপনি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন ৷সে আজ থেকে চৌদ্দ বছর আগে মারা গেছে ৷আগুনে পোড়ার কারনে তার লাশটা পাওয়া যায় নি ৷তাহলে আমরা কি করে বুঝবো আপনার অভিযোগ সঠিক ৷
আমার চাচা একদম মিথ্যে বলছে না অফিসার ৷পেছন থেকে আবেশের এমন কথায় শান্ত ঘুড়ে তাকালো তারপর বলল
আপনি কি করে সিওর হলেন যে আপনার বোন এমনটা করছে ৷
আমি নিজেও জানি না আমার বোন এমন করছে কি না ৷ তবে যেই করছে সে একজন ৷আমার ছেলে মেয়েকে যেই দিন পাই ৷তার আগের দিন আমার কাছে একটা কল আসে ৷আর সেখানে সে নিজেকে প্রীতিলতা বলে পরিচয় দেয় ৷আর চাচাকে যে অপহরন করেছে সেও নিজেকে প্রীতিলতা বলে দাবী করেছে ৷
শান্ত কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল আপনার কাছে কোন নাম্বার থেকে কলটা এসে ছিল আমায় দেখাতে পারবেন ৷
জ্বী পারবো ৷
ওকে ৷
আবেশ নাম্বারটা পুলিশকে দিল ৷শান্ত তার প্রয়োজনীয় সব তথ্য নিয়ে চলে গেল ৷
অপর দিকে প্রীতি গত কাল নিয়ে আসা ফাইলটা দেখছে ৷ফাইলটার একটা একটা কপি নিজের ফোনে তুলে নিল ৷হঠাৎ শেষের পাতায় একটা নাম দেখেই প্রীতির চোখ ঝলসে উঠলো ৷প্রীতি প্রথম থেকে ফাইলটা পড়া শুরু করলো ৷ফাইলটা পড়ে প্রীতির হাত পা কাপঁতে লাগলো ৷কেননা এখানে এমন একজন মানুষের নাম আছে যে তার অন্যতম বিশ্বাসের জায়গা ৷প্রীতি নিজের চুল খামচে ধরলো ৷তারপর বিরবির করতে করতে বলল
এটা হতে পারে না ৷ও এটা করতে পারে না ৷নিজের লোকের সাথে কেউ কিভাবে এমন করতে পারে ৷কোথাও একটা ভুল হচ্ছে ৷না না এটা হতে পারে না ৷কিন্তু ও যদি সত্যি মা বাবার খুনের সাথে সংযুক্ত থাকে ৷ তখন আমি কি করবো ৷ওকে তো আমি মারতে পারবো না ৷ আমাকে খোজঁ নিতে হবে আরো ভালো করে ৷প্রীতি ফাইল নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে গেল ৷
পরের দিন নির্ঝর ভার্সিটি যেয়ে সবার কাছে প্রীতির খোজঁ করলো ৷ কিন্তু কোথাও পেল না ৷নির্ঝরের সাথে ওর বন্ধুরাও আছে ৷নির্ঝরে বুকের ভেতরটা তার কাজল কালো প্রীতিলতাকে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে ৷কিন্তু কাজল লতার খবর নেই ৷নির্ঝরের চিন্তার মাঝেই বিশ থেকে পচিঁশ টা পুলিশের গাড়ী ভার্সিটির ভেতরে ঢুকে গেল ৷গেটের ভেতরে দলকে দল পুলিশ এসে ঢুকে পড়লো ৷পুলিশ পুরো ভার্সিটির মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো ৷ পুলিশের লোকরা ছাত্র ছাত্রীদের আলাদা করে এক পাশে দাড় করালেন ৷পুলিশ চল্লিশটা ছেলেকে আটক করে ফেলেছে কয়েক মিনিটের মধ্যে ৷তারা হয়তো ভাবতেও পারে নি এভাবে পুলিশ আসবে ৷হঠাৎ করেই একটা ছেলে পুলিশের থেকে বাচাঁর জন্য দৌড় লাগালো ৷কিন্তু বেশি দূর যাওয়ার আগেই একটা গুলি খুব নিখুত ভাবে তার পায়ে লাগলো ৷হঠাৎ গুলিও আওয়াজে সবাই চমকে গেল ৷গাড়ী থেকে একটা মেয়ে বেড়িয়ে এলো ৷তার পড়নে কালো জিন্স আর কালো শার্ট ৷চুল গুলো উপরে বান করা ৷চোখে কালো সানগ্লাস ৷ভার্সিটির ছেলে গুলো হা করে তাকিয়ে আছে ঐ দিকে ৷কিন্তু মেয়ে অফিসারের দৃষ্টি এক দিকে আটকে আছে ৷কিন্তু বেশি সময় সে ঐ দিকে তাকালো না ৷নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নিল ৷মেয়ে অফিসার টি গাড়ীতে উঠে গেলেন ৷একটু পর সেখানে সাংবাদিক এলো ৷সাংবাদিক আসতেই পুলিশ তাদের জানিয়ে দিলেন এত গুলো ছেলেকে আটক করার ঘটনা ৷আসলে তারা নারী পাচারকারী গ্যাং এর সাথে সংযুক্ত ৷ শুধু তাই নয় শহরের মেয়েরা অনেক ঝুকিতে আছে ৷ কারন কে কখন এই গ্যাং এর শিকার হয় তা কেউ জানে না ৷
অন্যদিকে কেউ একজন নিজের ফোন আছাড় দিয়ে ফেলে চিৎকার করে বলল
এটা হতে পারে না ৷ আমার এত দিনের গ্যাং এভাবে শেষ হতে পারে না ৷যেই গ্যাং এর জন্য দুনিয়ার সব থেকে নিচে নেমেছে ৷সেই গ্যাং সে শেষ হতে দেবে না ৷আয়ান চৌধুরীর খুন চাইলেই আটকাতে পারতো ৷কিন্তু ঐ লোকটা বেচেঁ থাকলে এত এত টাকা সে কোথায় পেত ৷তার পথের কাটা হয়ে দাড়িয়ে ছিল ৷তার গোপন কাজের কথা জেনে গিয়ে ছিল ৷তাই মেরে ফেলেছে সবার সাথে মিশে ৷
চলবে