প্রীতিলতা আসবে বলে ৩ পর্ব-০৪ এবং বোনাস পর্ব

0
1094

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন:৩
পার্ট :৪

সকালের আলো চোখে পড়তেই প্রীতির ঘুম ভেঙ্গে যায় ৷তাকিয়ে দেখে সে বারান্দার ফ্লোরে পড়ে আছে ৷কাল রাতে এখানে বসে সিগারেট খেতে খেতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারে নি ৷চারিদিকে তার সিগারেটের ছাই পরে আছে ৷প্রীতি ওয়াসরুমে চলে গেল ৷তারপর ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই তার মোবাইলে একটা কল এলো ৷প্রীতি ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার ভার্সিটির অধ্যক্ষ কল করেছে ৷প্রীতি ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে উনি বললেন

কেমন আছো প্রীতি মা ৷

জ্বী স্যার ভালো আছি ৷তা হঠাৎ কেন কল করেছেন ৷আপনাকে কি কেউ আবার হুমকি দিয়েছে ৷

আসলে মা একটা সমস্যা হয়ে গেছে ৷ ভার্সিটির ভিপি নির্ঝরকে তো চেন ৷সে তোমার ঠিকানা নেওয়ার জন্য কাল থেকে ভার্সিটিতে সমস্যা করছে ৷আজকে এসেও তোমার ঠিকানা চাইছে ৷আমি বলেছি তুমি আজ আসবে ৷তুমি একবার আসো মা ৷নইলে নির্ঝর কি করে বসে আমি জানি না ৷ছেলেটা বারবার আমার কাছে আসছে ৷তোমার অনুমতি ছাড়া আমি কিভাবে ঠিকানা দেব ৷

ঠিক আছে আমি আসছি স্যার ৷ ৷

প্রীতি ফোনটা রেখে দিল ৷তারপর রেডি হয়ে রওনা দিল ভার্সিটির দিকে ৷

প্রীতি সোজা চলে গেল প্রধান অধ্যক্ষের রুমে ৷কিছুক্ষন কথা বলে সে বেড়িয়ে গেল ৷এদিকে প্রীতির আসার খবর নির্ঝরের কাছে চলে গেছে ৷প্রীতি তার ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনে চলে গেল ৷প্রীতি একটা ফাকাঁ চেয়ারে বসে পড়লো ৷খুব খিদে পেয়েছে তার ৷প্রীতি নিজের খাবার খাচ্ছিল ৷হঠাৎ করেই তার সামনে কেউ একজন বসে ৷প্রীতি ঐ দিকে তাকায় না ৷না তাকিয়ে প্রীতি বলল

আমার খোজঁ কেন করে ছিলেন ৷ আপনাদের এখানে পড়ার কোনো যোগ্যতাই আমার নেই ৷তাই চলে গিয়ে ছিলাম ৷আবার কেন আমার খোজঁ করলেন ৷নাকি অপমান করা বাকি আছে আরো ৷

সামনে বসে থাকা মানুষটা মাথা নিচু করে রইলো ৷মুখে একটা কথাও বলল না ৷প্রীতি অপর মানুষটার দিকে তাকিয়ে বলল

আপনি এই ভার্সিটির ভিপি ৷আপনি কেন মাথা নিচূ করে আছেন ৷

আমি আপনাকে অপমান করতে চাই নি প্রীতিলতা ৷ আপনি আমাদের যতটা খারাপ ভাবেন ৷ আমরা আসলে ততটা খারাপ নই ৷আমরা ঐ দিন একটু মজা করতে চেয়ে ছিলাম শুধু ৷কিন্তু আমরা মজা করতে যেয়ে আপনাকে হার্ট করে ফেলেছি ৷আপনি আমায় কিস করে ছিলেন ৷তাই আমারও মাথা ঠিক ছিল না ৷আমি সত্যি সরি প্রীতি ৷আপনি আমার বোনকে বাচিঁয়েছেন বলে আমি এই কথা গুলো বলছি না ৷আপনি ঐ দিন চলে যাওয়ার পর আমার সত্যি খারাপ লেগে ছিল ৷

নির্ঝর কিছুক্ষন থেমে আবারো বলল

আমরা চাইলে ভালো বন্ধু হয়ে থাকতে পারি ৷আপনি কি আমার বন্ধু হবেন ৷আমার সব থেকে ভালো বন্ধু ৷কথা দিচ্ছি কখনো খারাপ আচরন করবো না আমি ৷আমি আমার বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম ৷নির্ঝর একটা হাত প্রীতির দিকে বাড়িয়ে দিল ৷

প্রীতি নির্ঝরের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের দিকে তাকালো ৷তারপর নিজের হাতটাও বাড়িয়ে দিয়ে বলল

কিছু না থাকার থেকেও ,অল্প কিছু থাকা ভালো ৷আমার মতো একটা মানুষের বন্ধু আছে এটাই অনেক সূর্য সেন ৷

প্রীতির কথার মাঝেই একজন বলল শুধু কি নির্ঝর তোমার বন্ধু ৷আমরা বুঝি বন্ধু হতে পারি না ৷প্রীতি পেছনে তাকিয়ে দেখে নির্ঝরের বন্ধুরা আর মিলা দাড়িয়ে আছে ৷প্রীতি ওদের দিকে তাকিয়ে হাসেঁ ৷কেউ মাফ চাইলে তাকে মাফ করতে হয় ৷কেউ নিজের ভূল বুঝতে পারলে তাকে ক্ষমা করতে হয় ৷প্রীতিও ঠিক তাই করলো ৷

রাত বাজে এগারোটা দ্বীপ চৌধুরী পুলিশের কাছে গেছে ৷ তার ছেলে দিহান নিখোজঁ ৷আজ রাতে সে ক্লাবে গিয়ে ছিল ৷হঠাৎ করেই সে গায়েব হয়ে গিয়েছে ৷সে কোথায় আছে কেউ জানে না ৷তার গাড়ীটাও পার্কিং করা ৷কিন্তু তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ছেলের জন্য দ্বীপ চৌধুরীর মাথা ঠিক নেই ৷ছেলের জন্য সে সব করতে পারে ৷চারিদিকে সে লোক লাগিয়ে দিয়েছে ছেলের জন্য ৷তার ছেলের কিছু হলে সে বাচঁবে না ৷

রাত একটা বাজে দ্বীপ চৌধুরীর চোখে ঘুম নেই ৷ দিহানকে কোথাও কেউ খুজে পায় নি ৷বাড়ীর অবস্থা ভালো না ৷তার স্ত্রী ডায়না ছেলের জন্য কাদঁছে ৷হঠাৎ করেই দ্বীপ চৌধুরীর মোবাইলটা বেজে ওঠে ৷নাম্বারটা অচেনা দেখেও দ্বীপ রিসিভ করলো ৷

দ্বীপ কিছু বলার আগেই অপাশ থেকে একটা মেয়েলী কন্ঠ ভেসে এলো ৷মেয়েটা বলল

ছেলের জন্য চিন্তা হচ্ছে তাই না ৷কিন্তু তাকে তো খুজে পাবেন না ৷সে তো আমার কাছে ৷

এই মেয়ে কে তুমি ৷কি চাই তোমার হ্যা ৷আমার ছেলে কোথায় ৷তার যদি কোনো ক্ষতি করো তো আমি ছাড়বো না তোমাকে ৷

উফফ চাচাজান এত হাইপার হবেন না ৷আপনার বয়স হয়েছে ৷বেশি হাইপার হলে তো আপনার হার্টে সমস্যা হবে ৷আপনি তো আমার হাতে মরবেন ৷তাই নিজেকে তত দিনের জন্য সুস্থ রাখুন ৷

এই কে তুই ৷তোর কত বড় সাহস আমায় হুমকি দিস ৷সাহস থাকলে নিজের নাম বল ৷

যদি বলি প্রীতিলতা ৷

একদম মিথ্যা বলবি না ৷ওকে নিজের হাতে খুন করেছি আমি ৷আমার চোখের সামনে ও মরেছে ৷দ্বীপের মাথা ঠিক নেই ৷ সে কি বলছে তা নিজেও জানে না ৷

ফোনের ওপাশে থাকা মেয়েটা হাসেঁ ৷তারপর বলল

নিজের করা খুনের কথা এভাবে শিকার করতে নেই ৷দেওয়ালের কিন্তু কান আছে চাচাজান ৷প্রীতিলতা যে আছে এই প্রমান আপনি কালকেই পেয়ে যাবেন ৷আর একটা কথা শুনুন ৷আমি নিজের হাতে ওসমান আর শাকিলকে মেরেছি ৷আপনি যাকে পাঠিয়েছিলেন আমার ভাইয়ের ছেলে মেয়েকে মারতে ৷তাকেও খুন করেছি আমি ৷এইবার এমপি সাইদ , তার ব্যরিস্টার ভাইকে খ করবো ৷তারপর আপনার পালা ৷গুনে গুনে পাচঁটা খুন করবো৷তারপর কথা দিচ্ছি ভালো হয়ে যাবো ৷ আপনি প্রতি মুহূর্তে আমায় খুজবেন ৷কিন্তু পাবেন না ৷আপনাকে আমি একেবারে শেষ করে দেব ৷নিজের ছেলের মরা মুখ দেখার জন্য প্রস্তুত হন ৷ আপনাদের সব কিছু কেড়ে নেব ৷আমার থেকে প্রতি মুহুর্তে মুক্তি চাইবেন কিন্তু পারবেন না ৷আমার উপস্থিতি টের পাবেন ৷কিন্তু আমায় ধরতে পারবেন না ৷ ওপাশ থেকে ফোনটা রেখে দিল ৷দ্বীপ চৌধুরী ঘামছেন ৷তার মানে ওসমান আর শাকিল নেই ৷

সারারাত বাড়ীতে যায় নি প্রীতি ৷দরকারি কাজ আছছ তার তাই বাড়ীতে যেতে পারবে না সে ৷

পরের দিন সকালে ৷দেশের জনগনের মাঝে টান টান উত্তেজনা ৷কেননা এমপি সাইদ হাসান রনির একের পর দুর্নীতির তথ্য ফাসঁ হয়ে যাচ্ছে ৷কে ফাসঁ করছে এটা কেউ জানে না ৷গতকাল রাতে তিনটা মাদক পাচাঁর গোডাউনে আগুন লেগেছে ৷যেগুলো এমপি সাঈদের ছিল ৷ সেখানে এমপি প্রায় সময় যেতেন ৷সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ৷ এমপি গতকাল রাতেই পালিয়েছে ৷তার নামে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ এসেছে ৷তার বাড়ীতে আজ পুলিশের অভিযান হবে ৷এছাড়াও গতকাল রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে এক নারী আসামী ৷সে জেল থেকে পালাতে গিয়ে মারা গেছেন ৷সে আর কেউ নয় ৷ কিছু দিন আগে নারায়নগঞ্জের পতিতা পল্লী থেকে আটক করা সেই নারী সর্দারনী আমেনা ৷

টিভিতে সর্দারনীর মৃত্যুর খবরে প্রীতির বাড়ীতে থাকা মেয়ে গুলো কেদেঁ দিল ৷এই মহিলা তাদের দিয়ে জোড় করে খারাপ কাজ করিয়েছে ৷ অত্যাচার করেছে দিনের পর দিন ৷আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না ৷আল্লাহ জুলুমকারীর বিচার দুনিয়াতে করেন ৷অত্যাচারী মানুষকে তাদের পরিনতি দেখান ৷

চলবে।

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন:৩
বোনাস পার্ট

দেশের অবস্থা ভালো না ৷এক এক করে এমপি সাঈদের নানা পাপের খবর বের হচ্ছে ৷পুলিশ তাকে পাগলের মতো খুজছে ৷পুলিশ তার স্ত্রীকে আটক করেছে ৷সাঈদের স্ত্রী এর ভাষ্য মতে সাঈদ ভোর রাতে বাসা থেকে বের হয় ৷তার উদ্দেশ্য ছিল দেশ থেকে পালানো ৷বাড়ী থেকে বের হওয়ার পর কথাও হয়ে ছিল ৷কিন্তু তা পরে আর খোজঁ পাওয়া যায় নি ৷তার গাড়ীটা পরে আছে রাস্তায় ৷

অপর দিকে দ্বীপ চৌধুরী নিজের ঘরে বসে আছেন ৷ হঠাৎ করেই কাজের লোক এসে দরজায় নক করলো ৷

দ্বীপ বলল কি হয়েছে ৷

স্যার আপনার নামে একটা চিঠি এসেছে ৷

দ্বীপ নিচে গেল ৷গিয়ে দেখলো পিয়ন দাড়িয়ে আছে ৷দ্বীপ সাইন করে চিঠিটা নিয়ে নিল ৷দ্বীপ চিঠিটা নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল ৷বিছানার পাশে দাড়িয়ে চিঠির খামটা খুললেন ৷খামটা খুলতেই কিছু ছবি তার হাতে এলো ৷প্রথম ছবিটা দেখেই দ্বীপের হাত পা কাপঁতে লাগলো ৷যেখানে স্পষ্ট আয়ান আর চারুর হত্যাকান্ড দেখা যাচ্ছে ৷তার নিচের ছবিটা দেখে দ্বীপ বিছানায় বসে পড়লো ৷তার কর্নেল বন্ধু ওসমানের রক্তাক্ত কাটা মাথার ছবি ৷তার নিচে ডাক্তার শাকিলের জলন্ত দেহের ছবি ৷একের পর এক ছবি দেখতে দেখতে দ্বীপ দেখলো নিচে তার ছেলে আর এমপি সাঈদের ছবি ৷তাদের দুইজনকে দড়ি দিয়ে বাধা হয়েছে ৷দুইজনেরই চোখ বন্ধ ৷খামের ভেতরে থাকা চিঠিটা দ্বীপ পড়তে শুরু করলো ৷

এবার বিশ্বাস হলো তো আমার উপস্থিতি ৷তোমায় আমি একেবারে মারবো না ৷তিলে তিলে মরবে তুমি ৷তোমার বেচেঁ থাকার সব রাস্তা আমি বন্ধ করে দেব ৷তোমার প্রিয়জনদের এক এক করে কেড়ে নেব আমি ৷আমার মা বাবা ভাই যেমন জানাযা পায় নি ৷ তুমিও পাবে না ৷তোমার আপনজনরা তোমার শেষ যাত্রার সঙ্গী হবে না ৷আমি তোমায় কি বলেছিলাম মনে আছে ৷আমার উপস্থিতি তুমি টের পাবে ৷কিন্তু ধরতে পারবে না আমায় ৷যে মানুষটা তোমার বাড়ীতে পিয়নের রূপে আসতে পারে ৷যে তোমার সামনে দাড়িয়ে থাকতে পারে ৷ সে আরো অনেক কিছু করতে পারে ৷ আমি তোমার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকবো কিন্তু ধরতে পারবে না আমায় তুমি ৷আজ থেকে তোমার ধ্বংস শুরু হচ্ছে মিহান চৌধুরী ৷উফফ সরি দ্বীপ চৌধুরী ৷দেখা হচ্ছে আমার রাজ্যে খুব তাড়াতাড়ি ৷

দ্বীপ দৌড়ে বারান্দায় গেল ৷তার বাড়ী থেকে অনেক দূরে একটা বাইক দাড় করানো ৷বাইকে পাশে থাকা লোকটা যেন বাকাঁ হাসলো তাকে দেখে ৷উপহাস করে যেন চলে গেল তার ভয়ার্থ মুখটা দেখে ৷

দুপুর তিনটা বাজে ৷প্রীতি সিআইডি অফিসে ৷কিছু দরকারি কাগজ দেখছে সে ৷হঠাৎ করেই শান্ত এসে ঢুকলো ভেতরে ৷শান্তকে দেখে প্রীতি হাসলো ৷প্রীতি ফাইল দেখতে দেখতে বলল

হঠাৎ আমার কেবিনে ৷কি মনে করে এলে ৷

এমনি ম্যাডাম ৷

ওহহহ৷

ম্যাডাম একটা কথা বলবো ৷

হুমম বলো ৷

ঐ বেনুনী করা মেয়েটা কেমন আছে ৷

ও বেনুনী করা মেয়ে নয় ৷ওর নাম জবা ৷

শান্ত অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ৷তারপর বলল আপনি কি করে তার নাম জানলেন ৷আর আমি কার কথা বলছি আপনি কি জানেন ৷

প্রীতি বাকাঁ হাসে ৷ফাইল গুলো গুছিয়ে রাখতে রাখতে বলল যেই মেয়েটার সাথে তুমি রাত্রী যাপন করতে গিয়ে ছিলে ৷তার কথাই বলছো তো ৷

শান্ত বোকার মতো তাকিয়ে রইলো ৷শান্তর দিকে তাকিয়ে প্রীতি বলল

যেভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিলে ঐ দিন ৷তাতে শুধু আমি না সবাই বুঝে যাবে ৷ প্রীতি হাতে একটা ফাইল নিয়ে কেবিন থেকে বের হওয়ার সময় বলল

যদি মেয়েটাকে ভালোবাসো ৷তাহলে আমার বাড়ীতে বিয়ের সম্মন্ধ নিয়ে এসো ৷আমি চেষ্টা করবো আমার বোনটাকে তোমার হাতে তুলে দিতে ৷ কাউকে ভালোবাসলে আগলে রাখতে হয় ৷তার অতীত দিয়ে মানুষটাকে বিচার করতে হয় না ৷

প্রীতি চলে গেল ৷আর শান্ত তাকিয়ে রইলো তার যাওয়ার পানে ৷প্রীতি মানুষটা গম্ভীর হলেও খারাপ না ৷তার সাথে সহজেই নিজের সমস্যা গুলো বলা যায় ৷উপর দিক থেকে কঠিন হলেও সে মানুষটা ভালো ৷

রাত ঘড়িতে আটটা ৷ব্যরিস্টার সোহেল পঞ্চাশ কোটি টাকা নিয়ে একটা নির্জন রাস্তায় দাড়িয়ে আছে ৷তার হাত পা ক্রমশ কাপঁছে অজানা ভয়ে ৷আমেনা মারা গেছে ৷আমেনা শেষ বার যেই কথা গুলো বলেছিল ৷তা যদি সত্যি হয় ৷তাহলে সে ফেসেঁ যাবে ৷সোহেলের নাম্বারে কল এলো একটা ৷ফোনের ওপর পাশ থেকে বলল টাকা ওখানে রেখে ,রাস্তার ডান দিকে আসো ৷

সোহেল তাই করলো ৷রাস্তার ডান দিকের বট গাছটার কাছে চলে গেল ৷ বট গাছের ডালে একটা ফাসিঁ দড়ি ঝুলছে ৷তার নিচে একটা টুল দাড় করানো ৷টুলের উপর একটা ধারালো ছুড়ি রাখা ৷সোহেল তাকিয়ে দেখলো একটু দূর থেকেই কেউ একজন এগিয়ে আসছে ৷চাদেঁর আলোয় তার মুখটা স্পষ্ট হতেই সোহেল চমকে গেল ৷সোহেল কাপাঁ কন্ঠে বলল

তুমি এখানে কি করছো ৷

আপনি যার অপেক্ষা করছেন ৷আমি সেই প্রীতিলতা ৷

আমি সবাইকে তোমার ব্যপারে বলে দেব ৷

সে রাস্তা আমি খোলা রাখি নি ৷চেষ্টা করতে পারো ৷কিন্তু তাতে লাভ হবে না ৷

আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও ৷

লাভ নেই ৷হয় তোমার মৃত্যু ৷নয়তো তোমার মেয়ের ভিডিও ভাইরাল ৷কোটি মানুষ দেখবে তাকে ৷ মোবাইলে আবারো কল এলো ৷ সোহেল টুলে থাকা ছুড়িটা হাতে নিয়ে নিল ৷সে নিজেও জানে তার সব রাস্তা বন্ধ ৷সামনে থাকা মানুষটার কথা মতো নিজের হাত নিজেই কেটে লিখতে লাগলো

আমি সত্যকে মিথ্যা বানিয়েছি ৷আর মিথ্যাকে সত্য বানিয়েছি ৷তাই এটাই আমার শাস্তি ৷

সোহেল টুলের উপর দাড়িয়ে পড়লো ৷তারপর গলায় ফাসিঁর দড়ি লাগিয়ে নিল ৷তার চোখ থেকে এক ফোটাঁ পানি গড়িয়ে পড়লো ৷পায়ের ধাক্কা দিয়ে টুলটা সরিয়ে দিল সে ৷সোহেল ছটফট করতে লাগলো ৷একটা সময় শান্ত হয়ে গেল ৷

চলবে