#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা : মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ১১
অভিদ রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে যেতে বলে
” রুহিকে কেউ খুজে পাচ্ছে না। তাড়াতাড়ি চল ওকে খুজে বের করতে হবে ” রায়হান অবাক হয়ে অভির পেছনে দৌড় দেয়।
অভি গাড়িতে উঠতে উঠতে সব বডিগার্ড কে রুহিকে খুজতে বেড়িয়ে পরতে বলে। অভি রায়হানকে নিয়ে সব জায়গায় খুজতে থাকে।
পিটপিট করে চোখ খুলতেই রুহি নিজেকে একটা অন্ধকার রুমে আবিষ্কার করে। মাথাটা প্রচণ্ড ভার হয়ে আছে। রুহি ভার মাথা নিয়ে চারপাশ ভালো করে তাকিয়ে দেখে নেয়। জায়গাটা দেখে একটা বড় গোডাউন মনে হচ্ছে। রুহি বুঝতে পারছে না এখানে কি করে এলো।
যতোটুকু মনে আছে তাতে, মিশু তাকে ফ্রেশ হতে বলে রুম থেকে চলে যায় আর রুহি ফ্রেশ হয়ে এসে রুমে থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুলতে নিলেই পেছন থেকে কেউ মুখে রুমাল চেপে ধরে। আর রুহি ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করতে করতেই অজ্ঞান হয়ে যায়।
রুহি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে তাকে একটা চেয়ারে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে। রুহি হাত মোচড়ামুচড়ি করতে থাকে। রুহি চিৎকার করে বলতে থাকে
” কেউ আছেন ?? প্লিজ হেল্প মি। হেল্প, অভিদ !!! অভিদ কোথায় আপনি ?? অভিদ ”
” অভিদকে তো কোথাও পাবে না তুমি। এখানে শুধু আমি আর তুমি ডার্লিং ” অপরিচিত গলার স্বর পেয়ে রুহি মুহূর্তেই শান্ত হয়ে যায়। রুহি সামনে তাকিয়ে দেখে একজন অন্ধকারের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে রুহির দিকে।
সাদা লাইটের আলোর ছোয়ায় পরতেই রুহি তার চেহারা দেখতে পারে। উজ্জ্বল শেমলা গায়ের রং এর অধিকারী,হাইট সম্ভবত ৫:১০ হবে , নাক টা একটু লম্বা, মুখে অন্যরকম হাসি, বলতে গেলে মুচকি হাসি। কোট,সুট পড়া একটা ছেলে, অভিদের বয়সের হবে।
রুহি অবাক হয়ে বলে
” কে আপনি ?? আর আমাকে এখানে কিসের জন্য আনা হয়েছে ?? কে নিয়ে এসেছে ??”
ছেলেটা হেসে সাইড থেকে একটা চেয়ার এনে রুহির সামনে বসে পরে। রুহির হাতের উপরে হাত রাখতেই রুহি রেগে হাত সরাতে চেষ্টা করে। ছেলেটা বাকা হেসে হাত সরিয়ে নেয়। রুহির দিকে তাকিয়ে বলে
” আমি আখিল রহমান।। তুমি আমাকে হয়তো কোনোদিন দেখোনি। যদিও টিভিতে অনেক বার দেখানো হয়েছে আমাকে। আমি কিন্তু অভিদের প্রাণ প্রিয় শত্রু। মানে অভিদ শত্রু ভাবে ভাবতে নাও পারে তবে আমি অভিদকে শত্রু ভাবি ”
রুহি অবাক হলেও বিরক্ত হয়ে বলে
” তো আমাকে বলছেন কেনো ?? আমি কি এসব ধুয়ে পানি খাবো। আমাকে এখানে তুলে নিয়ে আসার মানে কি ?? আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি ”
আখিল কপালে আঙুল দিয়ে ঘষতে ঘষতে বলে
” করেছো তো অনেক বড় ক্ষতি করেছো যেটা তুমি নিজেও জানো না। আমার রাতের ঘুম কেরে নিয়েছো।”
রুহি রেগে বলে
” হেয়ালি না করে সোজা সাপটা উত্তর দিন আর আমাকে এখানে তুলে নিয়ে আসার মানে কি ”
আখিল চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত গুজে বলে
” তোমাকে না আনলে বিয়ে হবে কি করে?? বিয়েতে বউ নেই অথচ বিয়ে হয়ে গেলো এটা কি হয় নাকি ??”
আখিলের কথায় রুহি চমকে উঠে বলে
” মানে কে বউ আর কার বিয়ে ??
আখিল আবার ধপ করে চেয়ারে বসে পরে। রুহির দিকে তাকিয়ে বলে থাকে
” তুমি, তুমি বউ। আমার বউ। এখনও হওনি তবে এক ঘন্টার মধ্যে হয়ে যাবে। ” বলে শব্দ করে হেসে দেয়।
রুহি চোখ, মুখ কুচকে আখিলের দিকে তাকিয়ে আছে। অর্ধেক অর্ধেক কথায় কিছুই বুঝতে পারছে না রুহি। রুহি মহা বিরক্তকর মুখ করে বলে
” একটু খুলে বলবেন প্লিজ ?? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ”
আখিল রুহির দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে
” আশিক যখন বলেছিলো অভিদ তোমাকে বিয়ে করছে তখন আমি অনেক অবাক হয়েছিলান। বুঝতে পারিনি দ্যা গ্রেট অভিদ রায়জাদা এতো বড়বড় বিজনেসম্যানদের মেয়েদের বিয়ে না তোমাকে কেনো বিয়ে করতে চাইছে। কিন্তু আশিক যখন তোমার সব ডিটেইলস যোগাড় করলো। তখন তোমার ছবি দেখে বুঝতে পারলাম অভি তোমাকে কেনো বিয়ে করতে চাইছে। সত্যি বলতে কি জানো তোমার ছবি দেখেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। এতোদিন শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। ”
বলে থামে রুহির দিকে ঝুকে বলে
” সত্যিই তোমার মাঝে এমন কিছু আছে যা আমাকে পাগল করে তোলে। আমি তোমাকে খুব করে চাই। যে করেই হোক চাই। আজকে, একটু পরেই আমাদের বিয়ে। একটু পরেই তুমি আমার হয়ে যাবে। ” বলে মুচকি হাসি দেয়।
রুহি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। রুহি দাতে দাত চেপে বলে
” আমি শুধু অভির। অভিদ আমাকে নিয়ে যাবে। আমার শুধু অভিদের সাথে বিয়ে হবে। কালকে আমার আর অভির বিয়ে। আমি অন্য কাউকে বিয়ে করবো না।”
আখিল রেগে চেয়ারে লাথি দিয়ে চিৎকার করে বলে
” অভিদ, অভিদ আর অভিদ কিসের অভিদ ??
সবজায়গায় শুধু অভিদ কেনো ”
এগিয়ে এসে রুহির মুখ শক্ত করে চেপে ধরে বলে
” ওই অভিদের নাম যাতে তোমার মুখে দ্বিতীয় বার না শুনি। আর তোমার তো আমাকেই বিয়ে করতে হবে আর সারাজীবন আমার সাথেই থাকতে হবে। অভিদ আজকে তোমাকে এখান থেকে কিছুতেই নিয়ে যেতে পারবে না ”
রুহির ব্যাথায় কান্না করে দিয়েছে। চোখ বন্ধ করে বলে
” অভিদই নিয়ে যাবে। হতে দেবে না এই বিয়ে।”
আখিল রুহির মুখ ছেড়ে বলে
” অনেক রাত তো তাই বিয়ের কাজপত্র রেডি হতে সময় নিচ্ছে। বাট খুশি হওয়ার কিছু নেই তুমি তো আমারই হবে ” বলে হনহন করে বেরিয়ে যায়।
আখিল বেরিয়ে যেতেই রুহি হু হু করে কান্না করে দেয়। উপরের দিকে মুখ তুলে চোখ বন্ধ করে কান্মা করতে করতে বলে
” কোথায় আপনি অভিদ, তাড়াতাড়ি এসে আমাকে এখান থেকে নিয়ে জান ” বলে কান্না করতে থাকে।
এদিকে অভিদের সব বডিগার্ড, অভিদ আর রায়হান পুরো এলাকা দেখে ফেলেছে তবে রুহিকে কোথাও খুজে পাচ্ছে না। রুহিকে না পেয়ে অভিদের কান্না করতে ইচ্ছে করছে তবে সেটা করতে করতে পারছে না। অভিদ গাড়িতে হাত রেখে কপালে হাত ঠেকিয়ে রেখেছে। কোথায় খুজবে ভেবে পাচ্ছে না।
রায়হান অভিদের কাধে হাত রেখে বলে
” এখনি ভেঙে পরিস না। রুহিকে আরও খুজতে হবে। দেখবি রুহিকে পেয়ে যাবো ”
অভিদ হাত মুঠো করে গাড়িতে ঘুষি মেরে বলে
” কোথায় পাবো ?? এতো বড় মাফিয়া হওয়া সত্যেও কেউ আমার হবু বউকে তুলে নিয়ে গিয়েছে আর কি বলবো। ”
রায়হান নিশ্বাস ফেলে সিটে হেলান দিয়ে বসে। হঠাৎ করে কিছু মনে পড়তেই অভিদকে বলে উঠে
” আচ্ছা রুহিদের বাড়ির সামনে আমি একটা সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে ছিলাম। ক্যামেরা চেক করেই তো আমরা দেখতে পাবো রুহিকে কে নিয়ে গিয়েছে ”
অভিদ হালকা হেসে বলে
” আরে হ্যা আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। এবার তো রুহিকে খুজে বের করা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না। যে করেই হোক আমার রুহিকে খুজে বের করবো ” বলে বাকা হেসে গাড়ি বাটির দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
বাড়িতে পৌছেই কন্ট্রোল রুমে চলে গেলো। অভিদের পুরো বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো। তাই আলাদা কন্ট্রোল রুমও রয়েছে। রায়হান বডিগার্ড কে বলতেই সে রুহির বাড়ির সামনের ক্যামেরার ভিডিও রেকর্ড চালু করে।
পুরো ভিডিও দেখে অভির চোখ আগুনের মতো লাল হয়ে গিয়েছে। অভির রেগে একাকার। অভি, রায়হান রুমে গিয়ে তাদের গান গুলো নিয়ে, কয়েজন বডিগার্ড নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে।
রুহি বসে বসে কাদছিলো। এরমাঝেই আখিল এসে রুহির দড়ির বাধন খুলতে থাকে। বাধন খুলে রুহির হাত ধরে দাড় করিয়ে বাকা হেসে বলে।
” চলো ডার্লিং, বিয়ের সব কাজপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে এখন শুধু আমাদের সাইন করলেই হয়ে যাবে। ” বলে রুহিকে নিয়ে যেতে থাকে।
রুহির মনের সব আশা যেন নিভে যাচ্ছে। রুহি মনে মনে বলছে যেন অভিদ এসে রুহিকে বাচিয়ে নেয়। রুহির এখন কান্না করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আখিল রুহিকে নিয়ে সামনের রুমে গিয়ে সোফায় বসে। সামনের একটা সোফায় একজন উকিল বসে আছে সাথে একজন কাজি আর পাশে আশিক দাঁড়িয়ে আছে। রুহি পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নেয়।
আখিল বাকা হেসে বলে
” কোথাও তাকিয়ে লাভ নেই ডার্লিং। পুরো গোডাউনেই বডিগার্ড ছড়িয়ে আছে। তাই পালাতে পারবে না। ”
রুহি হালকা হেসে বলে
” পালাতে হবে না অভিদই নিয়ে যাবে ”
আখিল চোয়াল শক্ত করে রুহিকে জোড় করে পাশে বসিয়ে উকিলকে বলে
” তাড়াতাড়ি কাগজ দিন কোথায় সাইন করতে হবে বলুন ” উকিল কাগজ বের করে আখিলের সামনে রেখে কাগজের কোথায় সাইন করতে হবে তা দেখিয়ে দেয়।
আখিল কলম হারে নিয়ে সব কাগজে করে সাইন করে দেয়। কাগজটা রুহির সামনে দিয়ে বলে
” নাও সাইন করো ”
রুহি মাথা মেড়ে বলে
” না আমি সাইন করবো না ” আখিল একটা গান বের করে রুহির মাথায় ঠেকিয়ে বলে
” তাড়াতাড়ি সাইন করো নাহলে ভালো হবে না ”
রুহি শক্ত গলায় বলে
” আমার প্রাণ থাকতে আমি কোনোদিন সাইন করবো না ”
আখিল রেগে ধমক দিয়ে বলে
” চুপ, তাড়াতাড়ি সাইন কর নাহলে খুব খারাপ হবে ” ধমক শুনে রুহি আবার কেদে দেয়। কেদে কেদে বলে
” আমি বলেছি তো সাইন করবো না ” এবার আখিল নিজেকে সামলাতে না পেরে রুহির গালে জোড়ে থাপ্পড় মারে।
সামনে যে বিয়ে পড়ানোর জন্য হুজুর বসে ছিলো সে ক্ষিপ্ত স্বরে বলে উঠে
” এটা কেমন অসভ্যতামো ?? মেরেধরে, জোর বিয়ে হয় নাকি ”
আখিল আশিকের দিকে তাকিয়ে বলে।
“এটাকে গুলি মেরে উপরে পাঠিয়ে দে ” আশিক তার পাশের বডিগার্ডের দিকে তাকয়ে ইশারা করতেই বডিগার্ড এসে তার মাথায় একটা বন্দুক ধরে। হুজুরটা ভয়ে চুপ মেরে যায়।
রুহি কেদে কেদে বার বার বলতে থাকে সে বিয়ে করবে না। আর আখিল রুহিকে থাপ্পড় মারতে থাকে। রুহির ঠোটের কোণা কেটে রক্ত পরছে, গাল দুটো দেখে মনে হচ্ছে যে গাল থেকে রক্ত পরছে। আখিল আবার থাপ্পড় দিয়ে বলে
” সাইন করো বলছি ”
রুহি আখিলের থেকে নিজের হাত ছাড়ানো চেষ্টা করতে করতে ভাঙা গলায় বলে
” করবো না সাইন, আপনাকে বিয়েও করবো না ” বলতে বলতেই আখিল আরেকটা থাপ্পড় দেয়। রুহি ছিটকে নিচে পরে যায়।
আখিল আবার রুহির দিকে এগিয়ে আসতে নিলেই হাত ধরে ব্যাথায় আহহ বলে চিৎকার করে উঠে। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে হাত থেকে রক্ত পরছে। আখিল দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে অভিদ দাঁড়িয়ে আছে।
আখিল পেছন ফিরে টেবিলের উপর থেকে তার গানটা নিয়ে রুহির কাছে গিয়ে রুহির মাথায় ঠেকায়। অভিদ অনেকটা এগিয়ে আসে। রুহি থাপ্পড় খেয়ে দুর্বল হয়ে পরেছে মাথা ঝিম ঝিম করছে, উঠে বসতে পারছে না। আখিল রুহির বাহু চেপে ধরে রুহিকে আস্তে করে দাড় করায়।
রুহি অভিদকে দেখেই খুশি বলে
” আপনি এসেছেন ?? এতো দেড়ি করেছেন কেনো ”
অভিদ রুহির দিকে তাকিয়েই রেগে গেলো। রুহির ঠোটের কোণা থেকে রক্ত পরছে, গাল একদম লাল হয়ে আছে। অভিদ রেগে আখিলের দিকে তাকিয়ে গর্জে বলে উঠে
” তোর সাহস কি করে হয় আমার রুহির গায়ে হাত দেওয়ার ?? ”
আখিল হেসে বলে উঠে
” এখন তো শুধু হাত দিয়েছি এরপর আরও কি হয় দেখতে থাক।। একটু পর তোর রুহি আর তোর রুহি থাকবে না ”
অভিদ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি কান্না মাখা মুখ নিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। রুহি কান্না গলায় বলে
” আমাকে নিয়ে জান এখান থেকে প্লিজ ”
অভিদ চোখের পলক ফেলে শান্ত হতে বলে রুহিকে।
আখিল বাকা হেসে বলে
” তোমাকে কেউ নিয়ে যেতে পারবে না। এখনি তুমি আমার হয়ে যাবে ”
অভিদ ভ্রু কুচকে বলে
” তোর হয়ে যাবে মানে ??”
আখিল বাকা হেসে বলে
” তোর সামনে তোর হবু বউকে আমি বিয়ে করবো ” আখিলের কথা শুনে অভিদের চেহারায় কোনো রিয়েক্ট আসেনি। অভিদ শান্ত গলায় বলে
” নাইছ জোকস ইয়ার, তোর কি মনে হয় ?? তুই আমার সামনে আমারই ভালোবাসাকে বিয়ে করতে চাইছিস আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো ”
আখিল শব্দ করে হেসে উঠে।
” ভালোবাসা ?? তুই ভালোবাসিস রুহিকে কিন্তু রুহি কি তোকে ভালোবাসে ??”
অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” এমন ভাবে বলছিস যেন রুহি তোকে ভালোবাসে ??
আখিল দাত কিড়মিড় করে বলে
” ভালো না বাসলেও ওকে আমার সাথে থাকতে হবে। রুহি শুধু আমার ”
অভিদ বাকা হাসি দিয়ে বলে
” এখনি দেখা যাবে রুহি কার ”
অভিদের কথায় পাত্তা না দিয়ে আখিল রুহিকে নিয়ে সোফায় বসিয়ে কাগজটা সামনে এগিয়ে দিয়ে বন্দুকটা রুহির মাথায় চেপে ধরে বলে
” সাইন করো জলদি ”
রুহি ছলছল চোখে অভিদের দিকে তাকাতেই অভিদ তার পকেটে দুই হাত গুজে শান্ত স্বরে বলে
” সাইন করে দাও ” অভিদের কথায় রুহির মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। রুহি অবাক হয়ে অভিদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
অভিদের কথায় শুধু রুহি অবাক হয়নি। এখানে থাকা সবাই অবাক হয়ে তাকায়। আখিল অবিশ্বাসও চোখে তাকিয়ে থাকে। আশিকও অবাক হয়ে সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নেয়। সবাই অবাক হয়ে থাকলেও শুধু দুজনের মাঝে অবাক হওয়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। এক হলো অভিদ আর দুই হলো রায়হান। অভিদ শান্ত ভাবে থাকলেও রায়হান মিটমিট করে হাসছে। রায়হানকে হাসতে দেখে আশিক কপাল কুচকে ফেলে। আশিক বুঝতে পারছে এটাও অভিদের কোনো চাল হবে হয়তো।
রুহি অভিদের কথায় কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে হুট করে দাঁড়িয়ে কান্না করে বলে
” না সাইন করবো না আমি। ” আখিল রুহির কান্না শুনে নিজের অবাকের রেশটা কাটিয়ে নেয়। রুহিকে বলে
” এখনও সাইন করবে না। তোমাকে তো সাইন করতেই হবে ”
রুহি আখিলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে চিৎকার করে বলে
” করবো না আমি সাইন ” আখিল রেগে এসে রুহিকে আবার থাপ্পড় মারে। রুহি থাপ্পড় খেয়ে ছিটকে টেবিলের উপর পরে। টেবিলের কোণায় মাথা লেগে রুহি মাথা কেটে যায়। আগের এতো গুলো থাপ্পড় খেয়ে দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো এখন আবার মাথা কেটে যাওয়ায় রুহি আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না, অজ্ঞান হয়ে যায়।
অভিদ রাগে কাপতে কাপতে এগিয়ে এসে আখিলের কলার চেপে ধরে। হাত মুঠো করে ঘুষি মারতে নিলেই রায়হান বলে উঠে
” অভিদ এসব পরে হবে। রুহির মাথা থেকে অনেক ব্লিডিং হচ্ছে তাড়াতাড়ি হসপিটালে চল ”
অভিদ আখিলকে ছেড়ে রুহির কাছে গিয়ে রুহির মাথাটা নিজের কোলে উঠিয়ে রুহির গালে হাত দিয়ে বলে
” রুহি !! রুহি!! চোখ খোলো। রুহি !! ”
আখিল তার গান অভিদের দিকে তাক করে যেই না বুলেটে চাপ দেবে তার আগেই রায়হান অভিদের বাহুতে গুলি করে দেয়। আখিলের হাত থেকে গান পরে যায় । আশিক দৌড়ে আখিলের কাছে এসে বলে
” স্যার ঠিকাছেন আপনি ??”
অভিদ রুহিকে কোলে তুলে বাইরে বেড়িয়ে যায়। রায়হান সব বডিগার্ড নিয়ে বেড়িয়ে আসে। অভিদ রুহিকে নিয়ে পেছনে বসে আর রায়হান ড্রাইভিং সিটে বসে।
চলবে… wait for next part….