#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ৩৩
অভিদ ভেতরে রুমে ঢুকে লাইট অন করে দিলো। রায়হান, আখিল, আশিক ভেতরে এসে ঢুকলো। সামনের দিকে তাকিয়ে চারজন হাসলো। সামনে সিহাব আর যাবেদ খান বাধা অবস্থায় পরে আছে।
অভিদ বাকা হেসে গার্ডকে ইশারা করতেই গার্ড ওয়াসরুম থেকে এক বালতি পানি নিয়ে আসে। দুজনের মুখের উপর ঢেলে দেয়। দুজনকে পানি দেওয়ায় হালকা নরেচরে উঠে। কিছুক্ষণ পরে হাই দিয়ে উঠতে গেলে পেছন থেকে হাত বাধা থাকার কারণে উঠতে পারলো না। আবার সেইভাবেই পরে থাকে কিছুক্ষণ পরে দুজন ঘুম ঘুম চোখ রুমে বুলিয়ে নেয়। রুমের আলো দেখে দুজন আবার ঘুমিয়ে পড়লো। আশিক মিটমিট করে হেসে বলে
” ক্লোরোফোমের ডোজটা বেশি হয়ে গিয়েছে।” অভিদ গম্ভীর গলায় গার্ডকে বলে
” আরো পানি ঢালো।” গার্ড আরো এক বালতি পানি এনে ওদের উপর ঢেলে দেয়। এবার দুজন হরবরিয়ে উঠে বসে। নিজেদের দিকে তাকিয়ে বাধা অবস্থায় দেখে যাবেদ আর সিহাব দুজনই খুব অবাক। সামনে তাকিয়ে দেখে অভিদরা দাঁড়িয়ে আছে। দুজন চোখ বড় বড় করে একে অপরের দিকে তাকায়। যাবেদ খান অবাক হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” অভিদ রায়জাদা !! আমরা এখানে কি করে এলাম ??” রায়হান একে হাটু গেড়ে আরেক হাটুতে হাত রেখে ওদের সামনে বসে বলে
” কি করে এসেছিস ?? কালকে রাতে ভালো ভালো খাবার খাওয়ার পর ঘুম দিয়েছিলি মনে আছে ?? এতো গভীর ঘুম দিয়েছিস যে তোর বাড়িতে কতো গার্ড গুলি খেয়ে মরে গিয়েছে সেটাও জানিস না। তোকে আর তোর ছেলেকে ঘুমের মধ্যেই ক্লোরোফোম দিয়ে অজ্ঞান করে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।” বলে হেসে উঠে দাঁড়ায়।
যাবেদ খান চেঁচিয়ে বলে উঠে
” তোর সাহস কি করে হয় আমাকে আমারই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসেছিস। তোকে তো আমি ছাড়বো না।” অভিদ বাকা হেসে বলে
” আগে নিজে ছাড়া পেয়ে নে তারপর নাহয় আমাকে ছাড়বি। তোকে বলেছিলাম না রুহিকে যতো আঘাত করেছিস তার থেকে হাজার গুন আঘাত তোকে ফিরিয়ে দেবো ?? এবার দেখবি কি করে আমি আমার কথা রাখি। তোর সব শেষ করে দেবো আমি। তোদের এমন অবস্থা করবো যে মরতে ইচ্ছে করলে মরতেও পারবি না আর বাচতে তো পারবিই না।” বলে অগ্নিচোখে দুজনের দিকে তাকায়। রায়হান গার্ডকে উদ্দেশ্য করে বলে
” আমাদের স্পেশাল গেস্টদের ওয়েলকাম করার জন্য যেগুলো সাজিয়ে রেখেছিলাম নিয়ে এসো তো। ” গার্ড দুজন মাথা নাড়িয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় কিছুক্ষণ পরে কয়েকটা হকিস্টিক, মরিচ গুড়ো, লবণ নিয়ে আসে। যাবেদ খান, সিহাবের এগুলো দেখে দুজনের গলা শুকিয়ে গেলো। সিহাব তুতলিয়ে বলে
” এ এগুলো কি ?? কেনো এননেছিস।” রায়হান মেকি হেসে বলে
” ওমা এখনও বুঝতে পারিসনি ?? এগুলো দিয়েই তো তোদের ওয়েলকাম করা হবে। অভিদ !! ওদের কিন্তু একটু ভালো করেই ওয়েলকাম করিস।” অভিদ একটা হকিস্টিক হাতে নিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলে
” শুধু ভালো না খুব ভালো করে করবো। আর তোরাও করবি।” বলে যাবেদের গায়ে হকিস্টিক দিয়ে বারি দেয়। রায়হান, আখিল, আশিকও হকিস্টিক হাতে নিয়ে এগিয়ে আসে। অভিদ যাবেদকে কয়েকটা বারি দিয়ে সিহাবের কাছে এসে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে রায়হানও অভিদের সাথে সিহাবকে মারা শুরু করে আর যাবেদকে আখিল, আশিক মারতে থাকে। দুজনের হা, পা বাধা থাকায় চিৎকার করা ছাড়া আর কিছু করতে পারছে না। অভিদ সিহাবকে মারতে মারতে গার্ডকে বলে
” কস্টিপ নিয়ে এসে দুজনের মুখে টেপ মারো ” গার্ড কস্টিপ এনে দুজনের মুখে লাগিয়ে দেয়। এবার দুজন শব্দবিহীন ভাবে চিৎকার করতে থাকে। ওদের অভিদ পৈশাচিক হাসি দেয়।
প্রায় আধ ঘন্টা দুজনকে মারলো। অভিদ হকিস্টিকটা মিটিতে ফেলে দম নেয়। রায়হানরাও হকিস্টিক রেখে মাটিতে বসে পরে। দুজনের দিকে তাকিয়ে দেখে দুজন চোখের পানি ফেলছে। অভিদ গিয়ে যাবেদ খান আর সিহাবের মুখের টেপ খুলে দেয়। দুজন চিৎকার করে কাতরাতে থাকে। অভিদ এবার মরিচের গুড়ো আর লবন হাতে নিলো। রায়হান, আখিল, আশিক উঠে দাঁড়ায় আবার। আখিল অবাক হয়ে বলে।
” এগুলো দিয়ে কি করবে তুমি ??” অভিদ দুজনের দিকে তাকিয়ে রাগে কিড়মিড় করতে করতে বলে
” ওদের গায়ে ঢালবো। আমার রুহিকে তো কম কষ্ট দেয়নি।” বলে মরিচ আর লবণ নিয়ে এগিয়ে যায়। যাবেদ খান কাতরানো গলায় বলে
” অভিদ প্লিজ এসব দিস না। আমি ক্ষমা চাইছি তোর কাছে প্লিজ মরিচ দিস না।” সিহাব চিৎকার করে কেঁদে বলে
” প্লিজ ভাই দিসনা। তোর সব কথা শুনবো আমরা।প্লিজ!! ” ওদের কোনো কথায় অভিদ পাত্তা দিলো না। অভিদ মরিচ আর লবণ নিয়ে দুজনের পুরো গায়ের উপর ঢেলে দিলো। দুজন গগন ফাটানো চিৎকার করতে থাকলো। একসময় যন্ত্রণায় অজ্ঞান হয়ে গেলো। অভিদ দরজা খুলে হনহন পায়ে বেড়িয়ে গেলো। রায়হানরাও বেড়িয়ে গেলো পেছন পেছন।
অভিদ বাড়ির ড্রইংরুমে এসে শার্টের কয়েকটা বাটন খুলে সোফায় বসে পরে। রায়হান ধপ করে এসে পাশে হাত পা ছড়িয়ে বসে। আখিল, আশিক এসে পাশের সোফায় বসে। একজন সার্ভেন্ট এসে সবাইকে কোল ড্রিংক্স দিলো।
অভিদ ড্রিংক্স খেয়ে উঠে দাঁড়ায়। রায়হান অভিদকে উঠতে দেখে বলে
” কোথায় যাচ্ছিস।”
এমন প্রশ্নে অভিদ বিরক্ত মুখ করে রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলে
” জানিস না কোথায় যাবো?? রুহির কাছে ছাড়া আর কোথায় যাবো ?? উঠে আবার কিছু করেছে কিনা দেখতে হবে তো !!” বলে উপরে চলে গেলো।
রায়হান অভিদের দিকে তাকিয়ে বলে
” হুহ, আমার বউ যে কবে আসবে ??” আশিক হেসে বলে
” বিয়ে করলেই তো আসবে। তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নাও তাহলে তাড়াতাড়ি এসে পরবে।” রায়হান চোখ ছোট ছোট করে আশিকের দিকে তাকায়। আশিক ছেলেটার মুখে হাসি লেগেই থাকে। সিরিয়াস কাজ ছাড়া সবসময়ই হেসে হেসে কথা বলে। রায়হান নিজেও একটু মজা করে তবে আশিকের মতো সবসময় হাসি মুখে ঘুরে না অভিদের সাথে ছাড়া আর সব কজেই সিরিয়াস হয়ে থাকে অভিদের মতোই। রায়হান এক চোখ ছোট করে বলে
” তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে তাই না ??” আশিক মিনিট দুই,এক সময় অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে মাথা নিচু করে ফেলে। রায়হান খেয়াল করে দেখলো আশিকের চেহারায় হালকা লজ্জা লজ্জা ভাব দেখা যাচ্ছে। যার মানে গার্লফ্রেন্ড আছে। রায়হান চোখ বড় বড় হয়ে গেলো তার আন্দাজে মারা ঢিলটা একদম সঠিক জায়গায় লেগেছে। আশিক রায়হানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে
” তোমারও তো গার্লফ্রেন্ড আছে। ম্যাম এর বেস্ট ফ্রেন্ড তো তোমার গার্লফ্রেন্ড তাই না ??” রায়হান চুপ মেরে গেলো। আখিল, আশিক রায়হানের চেহারা দেখে ফিকফিক করে হেসে দিলো। রায়হান দুজনকে হাসতে দেখে গলা ঝেড়ে বলে
” হ্যা আছেই তো রুহি নিজে আমাকে ওর ফ্রেন্ডের সাথে সেটিং করিয়ে দিয়েছে। কদিন পর বিয়েও করে ফেলবো। কিন্তু আখিলের কি অবস্থা??” আখিল নিজের নাম শুনে হাসি বন্ধ করে দিলো। আড়চোখে একবার আশিকের দিকে তাকিয়ে নিলো। আশিক দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে। কিছু বলতে গেলেই আখিল দ্রুত গতিতে বলে
” আমার !! আমার তো কেউ নেই। আমি তো আগেও একা ছিলাম আর এখনও একাই।” রায়হান সন্দেহ দৃষ্টিতে আখিলের দিকে তাকায়। কারণ আখিলকে গত তিনদিন যাবত কোনো কারণে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখেছে।
আশিক রায়হানের তাকানো দেখে বড় একটা হাসি দেয়। যেন এমন কিছুরই অপেক্ষা করছিলো। আশিক রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
” স্যার এর বাবা স্যারের সব কথা জানতে পেয়ে রেগে মেয়ে দেখা শুরু করেছিলো আর এতো দিনে একটা মেয়েকে পছন্দও করে ফেলেছে। মেয়েটা স্যারের কোনো এক ক্লাইন্টের মেয়ে। স্যারকে নাকি আগে থেকেই পছন্দ করতো তবে বলতে পারতো না। স্যারের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ম্যাম স্যারকে দিন রাত ফোন করছে আর তাই স্যার একদিন বিরক্ত হয়ে বকে দিয়েছিলো তারপর তিন ধরে ম্যাম আর ফোন দেয়নি আর স্যার ফোন দিলে ম্যাম ফোন ধরে না। তাই স্যার মন খারাপ করে বসে থাকে।” বলে বড় একটা শ্বাস নিলো আশিক। আখিল কপালে হাত দিয়ে বসে আছে আর রায়হান মূর্তির মতোন আখিলের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বসে রইলো। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ রায়হান পেটে দিয়ে হাসা শুরু করলো। আশিকও তার সাথে যোগ দিলো। আখিল অসহায় মুখ করে বসে থাকে। আখিলের মুখ দেখে রায়হানের হাসি আরও বেড়ে গেলো।
এদিকে অভিদ কাঁদোকাঁদো মুখ করে খাটের এক কোনায় বসে আছে আর রুহি বিছানায় হেলান দিয়ে কান্না করে যাচ্ছে আর বারবার চোখ মুচ্ছে, নাক টানছে। কান্নার কারণে চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। জোতি খাটের অন্য কিনারে বসে আছে।
অভিদ রুমে এসে দেখেছিলো রুহি কান্না করছে। অভিদ রুহিকে কান্না করতে দেখে অস্থির হয়ে গিয়েছিলো। রুহির কাছে গিয়ে পাগলের মতো জিজ্ঞেস করছিলো
” কি হয়েছে পাখি কান্না করছো কেনো ?? আবার কোথাও ব্যাথা করছে ?? ডক্টর ডাকবো ?? মেডেসিন দেবো ?? রুহি পাখি কি হয়েছে ?? ভয় পেয়েছো আমাকে না দেখে ?? দেখো আমি এসে পরেছি একটু নিচে গিয়েছিলাম। বলো না কি হয়েছে ??” আরও পাগলের মতো অনেক কথা বলেছে কিন্তু রুহি কান্না ছাড়া আর কিছুই করেনি বলেওনি। জোতিকে জিজ্ঞেস করলে জোতি বলে
” একটু আগেই ঘুম থেকে উঠে আমাকে তোমাকে না দেখে কান্না করা শুরু করেছে।”
অভিদ আবার রুহির কাছে যেতেই রুহি খাটের কুশন অভিদের উপর ছুড়ে মারে। তারপর থেকে কোণায় বসে আছে।
অভিদ রুহিকে এতো কান্না আবার একটু এগিয়ে এলো। আদুরে গলায় বলে।
” পাখি আমার কথা শোনো !! দেখো এতো কান্না করলে তুমি অসুস্থ হয়ে পরবে তো। আমাকে বলো কাদছো কেনো তুমি ?? কোথাও ব্যাথা করছে ?? বলো না।” রুহি এবার কান্না করতে করতে বলে
” আমি আপনার কাছে পুরাতন হয়ে গয়েছি আর দেখতে খারাপ হয়ে গিয়েছি তাই না ?? তাই আপনি এখন সুন্দর নতুন গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছেন। আশিক ভাইয়া কালকে তাহলে ঠিকই বলেছিলো আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে তাই না ?? আর আপনি এখন তার সাথেই দেখা করতে নাহলে কথা বলতে গিয়েছিলেন।” বলে আবার কেঁদে দেয়। অভিদ রুহির কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলো। এমন কথা স্বপ্নেও সে ভাবেনি। মুহূর্তেই রাগ উঠে গেলো রুহির কথা ভালো করে খেয়াল করে। অভিদ রাগি গলায় জোতিকে বলে
” একটু বাইরে যাও তো।” জোতি মাথা নেড়ে বেড়িয়ে গেলো। অভিদ উঠে দরজা লাগিয়ে রুহির পাশে এসে রুহির দুই বাহু চেপে ধরে রেগে বলে
” কি বললি তুই ?? আবার বল। তুই দেখতে খারাপ হয়ে গিয়েছিস দেখে আমি নতুন গার্ল ফ্রেন্ড জুটিছি ?? তোকে কে বলেছে তুই দেখতে খারাপ ?? কার এতো সাহস তোকে খারাল বলার !! আর তুই নিজেকে খারাপ বলার কে ?? বল !!” অভিদের রাগি গলার ধমক শুনে গলা শুকিয়ে গেলো কান্না অটোমেটিক থেমে গেলো তবে হিচকি উঠে গিয়েছে। রুহি হিচকি দিতে দিতে ভয়ে ভয়ে অভিদের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে
” ককেউ বলেনি..আমায় নিজেই বলেছি। আমার মুখে, শরীরে কতো.. দাগ এখন তো আমাকে দেখতে অনেক খারাপ লাগে আমি জানি। আশিক ভাইয়া আমাকে কালকে বলেছে আপনি একটা মেয়ের সাথে.. সুন্দর করে কথা বলছিলেন। এখনও.. তার সাথে কথা বলতে গয়েছিলেন তাই না ?? হু জানি তো আমি। আমি একা ভয় পাই জেনেও জোতিকে রেখে চলে গিয়েছেন।” বলে আবার কেঁদে দেয়।
অভিদ চোখ বন্ধ করে নিজের রাগটা কন্ট্রোল করলো। রুহির হাত আলগা করে হালকা বাধনে ধরে অসহায় গলায় বলে
” নারে পাগলি। তুমি এখনও বুঝোনি ?? আশিক তোমার সাথে মজা করেছে। আমি তো বাইরের কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিনা। আর আমি এখন নিচেই গিয়েছিলাম। রায়হান, আখিল, আশিক সবাই ছিলো আমার সাথে। একটা ইম্পরট্যান্ট কাজ ছিলো তাই গিয়েছি। নাহলে তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিলো না।” বলে রুহিকে নিজের বাহুডোর আগলে নেয়। রুহি কান্না থামিয়ে অভিদের বুকে মাথা রাখে।
অভিদ রুহিকে নিজের বাধনে রেখেই রুহির গালে হাত রেখে বলে
” তুমি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নারী। কোনো বিশ্ব সুন্দরী আমার কাছে আসলেও আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না। তুমি দেখতে খারাপ নও আর খারাপ হবেও না আর হলেও তুমি যেমন আমি তেমিন তোমাকে ভালো বাসবো।”
অভিদের কথা শুনে রুহির চোখের কোণে আবার পানি জমে গেলো। যেই ছেলেটা তাকে এতো ভালোবাসে আজকে তাকে নিয়েই কিনা কি ভাবলো। ভাবলেই নিজের উপর রাগ উঠে। রুহি আরও ভালো করে অভিদের বুকে মাথা গুজে দেয়।
চলবে…
#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ৩৪
অভিদের কথা শুনে রুহির চোখের কোণে আবার পানি জমে গেলো। যেই ছেলেটা তাকে এতো ভালোবাসে আজকে তাকে নিয়েই কিনা কি ভাবলো। ভাবলেই নিজের উপর রাগ উঠে। রুহি। আরও ভালো করে অভিদের বুকে মাথা গুজে দেয়।
অভিদ রুহির মাথক উঠিয়ে মুখটা সামনে এনে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে দুই গালে হাত রেখে গম্ভীর গলায় বলে
” আর কখনও এসব নিয়ে কান্না করবে না। তোমাকে ছাড়া আমি আর কাউকে ভাবতেই পারি না। তুমিই আমার সব। সব পরিবর্তন হলেও আমার ভালোবাসার পরিবর্তন হবে না কথা দিচ্ছি। আর আমাদের বেবিকে তো আমি খুব ভালোবাসবো।” অভিদের কথা শুনে রুহি প্রচন্ড লজ্জা পেলো। রুহি লজ্জায় লাল হয়ে অভিদের থেকে চোখ নামিয়ে নিচে তাকায়। অভিদ রুহিকে লজ্জা পেতে দেখে ঠোট কামড়ে হাসলো। আস্তে আস্তে রুহি লজ্জায় নুয়ে যেতে লাগলো।রুহিকে বেশি লজ্জা পেতে দেখে অভিদ রুহির মন ঘুরানোর জন্য বালিশ ঠিক করতে করতে বলে
” আচ্ছা অনেক কেঁদেছ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছো নিশ্চিই !! নাও এখন শুয়ে পরো।” বলে রুহিকে শুয়ে দিতে নিলেই রুহি বিরক্ত মুখ করে বলে
” উহহ। এতো শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না। আমাকে বাইরে নিয়ে চলুন। একটু ঘুরবো।” অভিদ ভ্রু কুচকে বলে
” কি, এই রাতের দিকে তুমি ঘুরবে ?? কোথায় ঘুরবে শুনি ?? এতো ঘুরা ঘুরির কথা বললে কিন্তু আবার হসপিটালে ভর্তি দিয়ে দেবো !!”
রুহি মুখ গোমড়া করে বলে
” এমন করছেন কেনো ?? একটু রুমের বাইরে নিয়ে চলুন না !! বাড়ির ভেতরেই তো থাকবো। প্লিজ ??” অভিদ ফুস করে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেললো। রুহিকে কোলে তুলে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। কয়েক পা এগিয়ে আলমারি থেকে একটা চাদর এনে রুহির গায়ে জড়িয়ে চুল গুলো ছেড়ে দিলো। রুমের লাইট গুলো অফ করে দিয়ে রুহিকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। রুহি সামনে তাকিয়ে চারপাশ দেখতে দেখতে বলে
” আচ্ছা বাড়িতে যাবো কবে আমরা ?? আর কতো দিন থাকবো এখানে ?? তাড়াতাড়ি যেতে হবে কিন্তু !!” অভিদ হালকা হাসলো। এতোদিন ধরে বাড়ি থেকে দূড়ে আছে। বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছে আর সবাইকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছে করছে রুহির, সেটা বুঝতেই পারছে। অভিদ রুহিকে সিরির দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলে
” অনেক দেড়ি হবে। তুমি পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হলে তারপর যাবো। এতদিন এই বাড়িতেই থাকতে হবে।” রুহি হা করে অভিদের দিকে তাকায়। চেঁচিয়ে বলে উঠে
” কি !! এতো দিন থাকবো এখানে ?? পাগল হয়ে গিয়েছেন আপনি ??” রুহির চেঁচানো শুনে অভিদ রাগি চোখে তাকায় রুহির দিকে। রুহি ঢোক গিলে জোড় করে হাসার চেষ্টা করলো। অভিদ ভারী গলায় বলে
” চেঁচাচেচি করলেও লাভ হবে না। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তুমি হসপিটাল ছাড়া কোথাও যাবে না।” রুহি মুখ কালো করে বসে থাকে।
অভিদ রুহিকে নিয়ে আবার লিফটের দিকে যেতে নিলেই রুহি কারো গলা শুনতে পেলো। কারো বলতে আখিলের গলা। লিফটের অনেক আগেই আখিলের রুম। আখিল কারো সাথে কথা বলছে। রুহি অভিদের ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে
“আখিল ভাইয়ার রুমের দিকে নিয়ে চলুন তো ”
অভিদ এক ভ্রু উঁচু করে বলে
” কেনো সেখানে গিয়ে তোমার কি কাজ ??” রুহি অনুরোধ করে বলে
” চলুন না প্লিজ !!” অভিদ চোখ গুলোকে ছোট করে তাকিয়ে রুহিকে নিয়ে যেতে থাকে।আখিলের রুমের সামনে আসতেই স্পষ্ট ভাবে আখিলের কথা শুনতে পেলো। রুহি মাথাটা একটু এগিয়ে দরজা দিয়ে দেখতে পেলো আখিল ল্যাপটপের সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে। রুহি অবাক হয়ে ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকায়। ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই রুহির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। অতি অবাকে যা হয় আরকি।
স্ক্রিনে অনির চেহারা ভাসছে। অনি মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। আর আখিল অসহায় চেহারায় দুই কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আখিল অসহায় গলায় বলে
” প্লিজ অনি। মাফ করে দাও আর কোনোদিন তোমার ফোন পেয়ে বিরক্ত হবো না। বিরক্ত হয়ে তোমাকে বকাও দেবো না। তোমার সাথে সারাদিন
কথা বলবো। please forgive me !!” অনি রেগে বলে
” শালা আর কোনোদিন আমাকে বকা দিয়ে ফোন কেটে দিলে তোর মাথার সব চুল আমি টেনে ছিড়ে ফেলবো আর ভাইয়াদের বলবো কার সাথে।আমার বিয়ে ঠিক করেছে। যে আমার ফোন দেখে বিরক্ত হয় তার সাথে ৩ বছর পর বিয়ে হবে কি করে আর তার সাথে সারাজীবন কাটাবো কি করে। ” আখিল কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে
” প্লিজ অনি। এতো গুলো শাস্তি দিয়েও কি তমার মনে দয়া মায়া হয়নি ?? তিনদিন ফোন ধরোনি আমি কতো মিস করেছি তোমায় জানো?? আর এখন আবার এক পায়ে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে রেখেছো। আর কি বলবো !! আমার মানসম্মান সব জলে ডুবে গেলো। কবে যেন ব্রেকিং নিউজ দেখা যায়, আখিল রহমান !! অভিদ রায়জাদার ছোট বোন হৃদিয়া অনি রায়জাদার রাগ কমানোর জন্য কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।” অনিকে বোঝা গেলো অনি ভিষন রেগে গিয়েছে। অনি চাপা চিৎকার করে বলে
” আমি এখনি ফুফিকে বলে বিয়ে ভেঙে দিচ্ছি।তুই
আমাকে ভালো না বেসে নিজের মানসম্মান নিয়ে পরে আছিস !! আমি এখুনি ভাইয়াকে বলবো আর ফুপিকে বলবো। ভাইয়া তো তোর সাথেই আছে। ভাইয়া সব জানলে এমন ধোলাই দেবে তোকে !! দারা এখনি যাচ্ছি।” বলে ল্যাপটপ অফ করতে নিলেই আখিল চেঁচিয়ে বলে উঠে
” না, না, না প্লিজ কল কেটো না। দেখো আমি তো এসব এমনি বলছিলাম। কিন্তু তুমি এতো সিরিয়াস ভাবে নিবে বুঝতে পারিনি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করো।” বলে ল্যাপটপের সামনে হাটু গেড়ে হাত জোড় করে বলে। অনি কিছুটা ভাব নিয়ে বলে
” ঠিকাছে ঠিকাছে। মনে রাখবে আমার দয়ার শরীর তাই মাফ করে দিয়েছি নাহলে কোনোদিন আর কথাই বলতাম না।” আখিল জোড় পূর্বক হেসে বলে
” হ্যা বুজেছি। সব বুঝেছি।” বলে বিছানার উপর ঠিক হয়ে বসে ল্যাপটপ কোলে নিয়ে অনির সাথে কথা বলতে থাকে।
রুহি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে দুজনের দিকে। দরজা হালকা ভিড়ানো থাকায় রুহি,অভিদ সব দেখতে পাচ্ছে তবে আখিল আর অনি, রুহি আর অভিদকে খেয়াল করেনি। অভিদের চেহারাও রুহির মতো হয়ে আছে। অভিদ বুঝতে পারছে না এতোক্ষণ কি শুনেছে। আর রুহির তো মাথা ঘোরা শুরু হয়ে গিয়েছে। রুহি মাথায় হাত দিয়ে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করতে থাকে। অভিদ রোবটের মতো রুহিকে নিয়ে লিফটে উঠে। লিফট থামতেই অভিদ আগের মতো রুহিকে নিয়ে আসতে থাকে। সোফায় রায়হান, আশিক, জোতি গল্প করছিলো। অভিদ আর রুহিকে এমন ভাবে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। রায়হান অভিদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে
” কিরে রুহুর কি হয়েছে ?? আর তোর কি হয়েছে ?? ” রায়হানের কথায় অভিদের ধ্যান ভাঙে। অভিদ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। অভিদ ভয় পেয়ে গেলো হঠাৎ রুহির কি হলো। অভিদ তাড়াতাড়ি করে টেবিলের উপর থেকে গ্লাস এনে রুহির মুখে পানি ছিটিয়ে দিয়ে রুহির গালে হাত দিয়ে উদগ্রিব হয়ে বলে
” রুহি চোখ খোলো!! রুহি ?? কি হয়েছে তোমার ?? রুহি।” ডাকতে ডাকতে আরও দুইবার পানি ছিটিয়ে গ্লাসটা পাশে রেখে রুহিকে কোলে তুলে সোফায় বসিয়ে নিজের এক হাতে জড়িয়ে ধরে অন্যহাতে রুহির হাত পা ঘষতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে রুহি আস্তে আস্তে চোখ খুললো। অভিদ যেন তার প্রায় ফিরে পেলো। হঠাৎ সেন্সলেস হয় যাওয়ায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলো। অভিদ রুহির মুখের সামনের ভেজা চুল গুলো সড়িয়ে দিতে দিতে বলে
” ঠিকাছো তুমি ?? হঠাৎ কি হয়েছে তোমার।”
রায়হান রুহির পাশে বসে বলে
” হয়তো খারাপ লাগছিলো। তাই সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। তুই ডক্টরের সাথে কথা বলে নিস। রুহি খারাপ লাগছে ??” রুহি উওরে দুর্বল ভাবে মাথা নাড়িয়ে না বলে। রুহি অভিদের দিকে তাকিয়ে অভিমানী গলায় বলে
” আপনি রুহির বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন আর আমাকে বললেনও না !!” অভিদ অবাক হয়ে গেলো। নিজেই জানে না অনির বিয়ে কে ঠিক করেছে। রায়হান চমকে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায়। চিৎকার করে বলে
” কি ??? অনির বিয়ে ঠিক করেছিস তুই ?? তাও আমাকে না জানিয়ে ??”
অভিদ কপালে হাত দিয়ে অসহায় গলায় বলে
” নারে ভাই। আমি তো নিজেই জানি না আমি কখন আখিলের সাথে অনির বিয়ে ঠিক করেছি। আমি সত্যি জানি না অনির বিয়ে কে ঠিক করেছে। তাও আখিলের সাথে !! আমিও তো মাত্রই শুনলাম।”বলে মাথা উঠায়। রায়হান এবার ধপ করে সোফায় বসে পরলো। বিস্ময় নিয়ে বলে
” আখিলের সাথে !!! আল্লাহ কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না আমি।” জোতি চোখ বড় বড় করে বসে আছে। রায়হান আশিকের দিকে তাকিয়ে দেখে আশিকের চেহারায়ও অবাকের রেশ রয়েছে। রায়হাম গিয়ে আশিককে চেপে ধরে। আশিকের হাত ধরে চোখ রাঙিয়ে বলে
” এই তুমি না বলেছিলে আখিলের কোনো বিজনেস ক্লাইন্টের মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে ?? তাহলে এসব কি শুনছি ??” আশিক থতমত খেয়ে গেলো এমন প্রশ্নে। মাথা চুলকে বলে
” রায়হান সত্যি বলছি আমি। আমি জানি না এসব কি হচ্ছে। আমাকে স্যার যা বলেছে আমি তাই জানি এর বেশি কিছু নয়। সত্যি বলছি।” রায়হান শুকনো ঢোক গিললো। রুহির এতো বড় শক পেয়ে সত্যি সত্যি দুর্বল হয়ে গয়েছে। বিয়ে ঠিক হলেও বিয়েটা আসলে কিনা সেটা চিন্তা করছে আর বিয়েটা ঠিক করেছে কে !! রুহির এসব ভাবনার মাঝে অভিদ রেগে দাঁড়িয়ে গেলো। রাগি গলায় বলে
” আমার বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে গয়েছে অথচ আমিই জানি না !! ফুপির সাথে কথা বলতে হবে।” বলে টেবিলের উপরে থাকা রায়হানের ল্যাপটপ দিয়ে ফুপিকে ফোন দিলো। কিছুক্ষণ রিং হবার পর কল রিসিভ হলো। ফুপিকে কোনো কথা বলতে না দিয়েই অভিদ প্রথমে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” অনির বিয়ে ঠিক করেছে কে ?? আর আমাকে না জানিয়েই এতো কিছু কি করে হলো ?? কে এসব ঠিক করেছে ?? আর আখিলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে আমাকে এক জানালোও না ?? রিয়েলি !!” অভিদের চেঁচিয়ে বলা কথা গুলো শুনেও ফুপি গা ছাড়া ভাব নিয়ে বসে আছে। ফুপির এমন ভাবমূর্তি দেখে অভিদ আরও রেগে গেলো। কিছু বলতে নিলেই ফুপি বলে উঠে
” আরে জেনে গিয়েছিস ?? আমি ভাবছিলাম আজকে তোকে ফোন দিয়ে সব জানাবো। কিন্তু আমাকে আর কিছু করতে হলো না তুই এমনি জেনে গেলি। খুবই ভালো হয়েছে।” অভিদ চোয়াল শক্ত করে বলে
” ফুপি !! এসব কি হেয়ালি হচ্ছে ?? সোজা সুজি আমাকে সব বলো আর তোমরা আমাকে না জানিয়ে এতো কিছু কি করে ঠিক করতে পারলে ??” ফুপি ইনোসেন্ট মুখ করে বলে
” বা রে!! আমি কোথায় হেয়ালি করলাম। আমি তো কিছুই বলনি তোকে। তবে এখন বলবো। আখিলের বাবা আখিলের জন্য মেয়ে খুজছিলো তখন কিভাবে যেন অনির ছবি দেখে অনিকে পছন্দ করে ফেলেছে। ছেলের সব কীর্তি জেনেও অসহায় হয়ে বললো অনিকে আখিলের বউ করতে চায়। অনেক কিছুর পর আমি কথা ফাইনাল করেছি। আমি তোকে সব ঠিক হওয়ার আগেই জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুই এতোদিন রুহিকে নিয়ে কেমন অবস্থায় ছিলি সেটা তো আমরা দেখেছি তখন যদি এই কথা জানাতাম তাহলে তুই সঙ্গে সঙ্গে সব না করে দিতি তাই ভেবেছিলাম রুহিকে খুঁজে পাওয়ার পর জানাবো। কালকে রুহিকে দেখে কথা বলে তারপর ভাবলাম তুই রুহিকে খুঁজে পেয়েছিস এখন বললেও বলা যেতে পারে। তাই আজকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুই জেনে গিয়েছিস।” অভিদ হাত দিয়ে চুল টানছে। রায়হান কপালে হাত দিয়ে বসে আছে।
অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” ফুপি আখিলের সব কথাই তো তুমি সব জানো তাও কি করে এসব ঠিক করলে ?? ফুপি হাত দিয়ে ইশারা করে থামতে বলে। নিজে বলে উঠে
” আমি সব ঠিক করেই হ্যা বলেছি। আমি আখিলের সাথে কথা বলেছিলাম। আখিল বলেছে রুহিকে সে পছন্দ করতো তাই জেদের বশে এতো কিছু করেছিলো। আর এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। এখন বাবা যাকে বিয়ে করতে বলবে তার সাথেই করবে। অনি বলেছিলো আমি, তুমি, রায়হান রাজি হলে অনিও রাজি। আমি অনিকে বলেছি অভিদ, রায়হান আমি তিনজনই রাজি।অনি বলেছে তাহলে বিয়ে ফাইনাল। আমি আখিলের বাবার সাথে কথা বলেছি। আমি বলেছি অনি,আখিলের ১ বছর পর engagement হবে আর ৩ বছর পর বিয়ে হবে। তিনি সব শর্তে রাজি। দেখো সব ঠিক ঠাক আছে। আখিলের সাথে তুমি নিজে এখন এক ছাদের নিচে থাকছো। তাই তুমিও হয়তো বুঝে গিয়েছো আখিল কেমন। তাই বিয়েতে না করতে পারবে না তুমি।” অভিদ ভাবতে লাগলো। এই কদিনে বা এতো বছরে আখিলের মধ্যে কোনো খারাপ স্বভাব বা কাজ করতে দেখেনি। শুধু দুইটাই দোষ ছিলো আখিল অভিদকে হিংসা করতো আর রুহিকে নিয়ে জেদের খেলা। এই দুটো দোষ ছাড়া আর কোনো দোষ ছিলো না। এখন সেটাও নেই। অনির জন্য আখিল কোনো দিক দিয়েই কম না।
রায়হান ফুপির দিকে তাকিয়ে বলে
” ফুপি আমি তো রাজি।” অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” ঠিকাছে আমি রাজি।” সবার চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। এতো সহজে অভিদ রাজি হয়ে যাবে ভাবেনি। ফুপি অভিদ, রুহি, রায়হান সবার সাথে আরও কিছু কথা বলে ফোন কেটে দেয়। অভিদ রুহিকে অসুস্থ দেখে রুহিকে আগে আগে খাবার খাইয়ে রুমে নিয়ে মেডিসিন খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দেয়।
রাতে সবাই ডিনার করে ঘুমাতে চলে যায়। অভিদ রুমে গিয়ে দেখে রুহি ঘামছে আর ছটফট করছে। অভিদের বুঝতে বাকি রইলো না রুহি ঘুমের মাঝে প্যানিক হয়ে গিয়েছে। অভিদ তাড়াতাড়ি রুহির পাশে শুয়ে রুহিকে বুকে জড়িয়ে নেয়। কিছুক্ষণ যেতেই আস্তে আস্তে রুহি ঠিক হয়ে যায়।
চলবে…wait for next part….
বিদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।