#হারানো_হিয়া (পর্ব ১৩)
১.
ইহান ঘাড় গুঁজে ড্রয়িং করছিল। বাম হাত দিয়ে আর্ট পেপার চেপে ধরে ডান হাতে রংপেন্সিল চালাচ্ছিল। মীরা পাশে এসে বসে। তারপর কৌতূহলী গলায় বলে, ‘কী আঁকছে আমার ইহান বাবা?’
ইহান মুখ তোলে, লাজুক হেসে বলে, ‘নদীর ছবি।’
মীরা তাকিয়ে দেখে নদীতে রঙিন পাল তোলা নৌকার একটা অবয়ব ফুটে উঠছে। ও জিজ্ঞাসু গলায় বলে, ‘কিন্তু তুমি তো কখনও নদী দেখোনি।’
ইহান সংকুচিত গলায় বলে, ‘আমি গুগল থেকে সার্চ দিয়ে দেখেছি। হয়নি ঠিকঠাক?’
মীরা এবার ছেলের কাঁধে হাত রেখে বলে, ‘খুব সুন্দর হয়েছে বাবা। তবে তুমি চাইলে আমরা সত্যিকারের নদী দেখতে যেতে পারি।’
ইহানের চোখ চকচক করে ওঠে, ‘সত্যি বলছ মা?’
মীরা মাথা নাড়ে, ‘হ্যাঁ, সত্যিই। ময়মনসিংহে একটা সুন্দর নদী আছে, ব্রহ্মপুত্র নাম। একদিন গিয়ে দেখে আসব।’
ইহান এবার আগ্রহের গলায় বলে, ‘কবে আম্মু? সামনে আমার স্কুল ছুটি আছে। চলো যাই তাহলে।’
মীরা আনমনে মাথা নাড়ে। সেই ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলার পর ওর নিজেরও খুব ইচ্ছে হচ্ছে নদীটা দেখতে। আর যদি বিয়ে করতেই হয় সেক্ষেত্রে ইহানের সঙ্গে সেই মানুষটার সঙ্গে একটা পরিচয় হবারও দরকার আছে। সেদিন ইহানের বাবার বন্ধু ওয়াকার ভাই মাহিনের কথা বলেছিল। ওনার বড় চাচার ছেলে। দীর্ঘদিন আমেরিকা ছিল। বউয়ের সঙ্গে সেপারেশন হয়েছে বছরখানেক। কী কারণে সেটা ও জানতে চায়নি। অবশ্য ওয়াকার ভাই বলেছেন মানুষ হিসেবে ওনার চাচাতো ভাইটা নাকি ভালো। আমেরিকার জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে না পেরেই চলে এসেছে।
সে যাই হোক, কিন্তু ইহানকে নিজের বিয়ের কথা ও বলবে কী করে? মাকে স্বার্থপর ভাববে না তো? কিন্তু এমন একা একা থাকতে ইদানিং ওর ভয় করে। সেদিন যখন ইহানের হাত ভাঙার খবর পেল, কেমন শক্তিহীন হয়ে পড়েছিল। একজন যে কেউ শক্ত করে ওর হাত ধরে বলবে, ভয়ের কিছু নেই, আমি আছি। তেমন কেউ নেই। সুমনকে এভাবে বার বার ডেকে নেওয়াটাও অনুচিত হচ্ছে। নাফিসা ইতোমধ্যে ওর সঙ্গে সুমনের ব্যাপারটা নিয়ে কথা শুনিয়েছে। তাই এখন ওদের বাসায় যাওয়া বন্ধ। মীরার ভয় হয়, আরও বড়ো বিপদ এলে ও সামলাবে কী করে? আপন বলতে এই মামা মামি। এরা মারা গেলে ও কোথায় যাবে? একটা চাকরি হলেও হতো। কিন্তু এই বয়সে কোথাও চাকরি নেই।
‘মা, দেখো কেমন হলো। তোমার সেই ব্রহ্মপুত্র নদীর মতো হয়েছে কিনা’, ইহান আর্ট পেপারটা ওর চোখের সামনে মেলে ধরে।
মীরা প্রশংসা করে বলে, ‘খুব সুন্দর হয়েছে বাবা। আচ্ছা, তোমার বাম হাতে ব্যথা নেই তো?’
ইহান মাথা নাড়ে, ‘একদম ঠিকঠাক।’
মীরার সুমনের কথা মনে হয়। সেদিন ও না থাকলে কী যে করত ও! ইহান ভালো হয়ে যাবার পর একটা দিন ওকে বাসায় দাওয়াত করে খাওয়াতে চেয়েছিল। কিন্তু মামার এই বাসায় সুমন নিশ্চয়ই আসবে না। ওর বিয়ের সময় মামি অনেক কথা শুনিয়েছিল। অথচ আজ প্রয়োজনে প্রায়ই সুমনের সাহায্য নিতে হচ্ছে ওকে। এই যে ও বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটা নিয়েও সুমনের সঙ্গেই কথা বলার দরকার মনে হচ্ছে। এই পৃথিবীতে একমাত্র সুমন নিঃস্বার্থভাবে ওর ভালো চায়। একমাত্র ওই বলতে পারবে ওর সিদ্ধান্তটা ঠিক হচ্ছে কিনা।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠতেই মীরা একটা মেসেজ পায়। সুমন লিখেছে – শুভজন্মদিন মীরা। জীবন সুন্দর হোক তোর।
মীরার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। একটা মানুষ ওকে আজও সেই আগেরমতোই মনে রেখেছে। একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়। তখন সুমনের সঙ্গে ওর ভাব হয়ে গেছে। এক জন্মদিনে ও ঘুম থেকে উঠে দেখে ওর বাসার ব্যালকনিতে একটা ফুলের টব রাখা। ছোট্ট একটা চিরকুটে লেখা ‘শুভজন্মদিন’।
আহ! কী সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো। বিশুদ্ধ সব মুহুর্ত। আজ এতটা বছর পর সেই স্মৃতি এখনও একইরকম মন ভালো করে দেয়।
মীরা ছোট্ট করে লিখে, ‘তুই মনে রেখেছিস আজও? আজ একটু দেখা করতে পারবি?’
ওপাশ থেকে সুমন একটু সময় নেয়, তারপর লিখে, ‘আচ্ছা, সেদিনের সেই ব্যাংকে আসতে পারবি?’
মীরা হাসে। আহারে বেচারা। বাইরে একটা রেস্টুরেন্টেও বসতে পারবে না। ও লিখে, ‘আচ্ছা। আমি এগারোটার মধ্যে চলে আসব।’
সুমন চিন্তিত মুখে ব্যাংকের সামনে সেই চায়ের দোকানটায় বসেছিল। আশেপাশে এখন পর্যন্ত পরিচিত কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কে যেন ওর সঙ্গে মীরাকে দেখলেই বাসায় খবর দিয়ে দেয়। অথচ ওর সঙ্গে মীরার সম্পর্কটা এখন সেই আগেরমতো নেই। অনেকটা পরম বন্ধুর মতো। কিন্তু সে কথা তো নাফিসা বোঝার কথা না।
মীরার আসতে পনের মিনিট দেরি হয়। আজ ও সবুজ একটা জামা পরেছে সাথে লাল ওড়না। দেখেই হাত নাড়ে। কাছে আসতেই সুমন হেসে বলে, ‘শুভজন্মদিন।’
তারপর পেছন থেকে ছোট্ট একটা গোলাপ ফুল বাড়িয়ে দেয়। মীরা ফুলটা নেয়, তারপর বলে, ‘তুই যে একবার আমাকে টবসহ ফুলের গাছ দিয়েছিলি, মনে আছে?’
সুমন হেসে ফেলে, ‘হ্যাঁ খুব মনে আছে। আমি ফজর নামাজ পড়েই তোদের বাসার ব্যালকনি টপকে টব রেখে এলাম। খুব ভয় পাচ্ছিলাম কেউ না আবার দেখে ফেলে।’
মীরা হাসে। কতদিন পর একটু মন খুলে হাসল। তারপর ব্যাগ থেকে একটা পোলো শার্ট বের করে বলে, ‘নে, এটা তোর।’
সুমন চেয়ে দেখে ল্যাভেন্ডার কালারের একটা পোলো। এই রঙটাতে ওকে খুব মানায়। কথাটা মীরাই বলেছিল। আজও মনে রেখেছে।
সুমন ওর দিকে তাকিয়ে বলে, ‘কই তোর জন্মদিন আমি কিছু দিব উল্টো তুই দিচ্ছিস। মীরা, অনেক দিন পর এই কালারের পোলো পেলাম।’
মীরা হাসে, ‘হুম। এটাতে তোকে মানায়। আচ্ছা শোন, তোর সঙ্গে আমার জরুরি একটা কথা আছে।’
সুমন সামনে ঝুঁকে বলে, ‘বল।’
মীরা একটু ইতস্তত করে বলে, ‘মামা, মামি বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছেন। এদিকে ইহানের বাবার বন্ধু ওয়াকার ভাই একটা সমন্ধ এনেছেন। ভদ্রলোক বছরখানেক হলো ডিভোর্সড। পেশায় ডেন্টাল ডাক্তার। ময়মনসিংহ থাকেন। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না বিয়ে করাটা ঠিক হবে কিনা।’
সুমনের চোখের পাতা কাঁপে। টের পায় বুকের ভেতর কোথাও একটা সূক্ষ্ম ব্যাথা হচ্ছে। কেন আজও এমন হয়? কত আগেই তো সব চুকেবুকে গেছে। ওর জমজমাট সংসার, সন্তানদের মায়ার বন্ধন আজ সুগভীর। নাফিসাও আজ তেমন করে মনের ভেতর একটা স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু তারপরও কেন মন খারাপ হয়?
সুমন নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, ‘বাহ, ভালো তো। যদি সত্যিই ভালো একজন মানুষ পাস তবে অবশ্যই বিয়ে করা উচিত। একজন মানুষ তো লাগে সুখে, অসুখে।’
মীরা টের পায় সুমনের আপাত উচ্ছ্বাসের ভেতর একটা মন খারাপ করা বিষণ্ণতা লুকিয়ে আছে। এই যে কষ্ট পাওয়া, এটাই কি ভালোবাসা? মীরার এখন নিজেরও কষ্ট হচ্ছে।
ও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘জানি না কী করব। যাই করি তোকে জানাব। আজ যাই, ভালো থাকিস বোকা ছেলে সবসময়।’
সুমনের গলা ধরে আসে। মাথা নেড়ে বলে, ‘আচ্ছা যা। আবারও শুভজন্মদিন।’
সুমন এমন। জন্মদিনের দিন যতবারই দেখা হতো ততোবারই শুভজন্মদিন বলত। আজও ঠিক তেমন। শুধু মাঝখানে একটা মজবুত দেয়াল যেটা লঙ্ঘনের সাহস বা উপায় কোনটাই নেই আজ।
সেদিন রাতে সুমন বাসায় ফিরে খাওয়া শেষ করতেই নাফিসা মিটিমিটি হেসে বাঁকা গলায় বলে, ‘তোমার জন্য একটা দুঃখের খবর আছে।’
সুমন ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘কী খবর?’
সেদিন মাহিনের কাছে ও বিস্তারিত সব জেনেছে। ওর চাচাতো ভাইয়ের নাকি কলিগ ছিল মীরার হাসব্যান্ড।
নাফিসা কৃত্রিম মন খারাপ গলায় বলে, ‘তোমার প্রেমিকা মীরার বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। আমাদের ময়মনসিংহের এক ছেলের সঙ্গে। তোমাকে নিশ্চয়ই জানিয়েছে?’
সুমন একটা জোর ধাক্কা খায়। নাফিসা কি জাদু জানে? আজই মাত্র মীরার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হলো। আর ও জেনে গেল? কিন্তু কী করে? ওর আর মীরার মাঝে তো একান্তেই কথা হয়েছে।
সুমন না জানার ভান করে। ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘কে বলল তোমাকে?’
নাফিসা সামনে এসে ওর মুখের দিকে উঁকিঝুঁকি মারে, তারপর তেড়ছা গলায় বলে, ‘কষ্ট পেলে মনে হয়? আহা, এবারও তোমাকে ফাঁকি দিয়ে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে ফেলছে। জীবনে দু’বার ছ্যাঁকা খেলে তুমি।’
সুমন আহত চোখে তাকিয়ে থাকে। নাফিসা এমন করে বলতে পারল! সুমন কোনো উত্তর না দিয়ে বেডরুমে চলে যায়।
নাফিসা মুখ অন্ধকার করে বসে থাকে। শেষ কথাটা যে ওর জন্যও সত্য। মাহিনও তো বিয়ে করছে। ইশ, কেন যে জীবনের এই পর্যায়ে এসে এমন জটিলতার মুখোমুখি পড়ে গেল!
২.
‘কেমন আছেন?’
মীরা রাতের খাবার শেষ করে সবে টিভির সামনে বসেছিল। এমন সময় মেসেঞ্জারে মেসেজটা আসে। চেয়ে দেখে সেই ভদ্রলোক।
মীরা লিখে, ‘ভালো আছি। আপনি?’
মাহিন উত্তর দেয়, ‘আমিও ভালো আছি। তারপর কিছু কি ভাবলেন?’
মীরা মিটিমিটি হাসে। তারপর লিখে, ‘হ্যাঁ, ভাবলাম তো। সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম।’
ওপাশ থেকে বিস্মিত হবার ইমোজি দিয়ে মাহিন লিখে, ‘সত্যি বলছেন?’
মীরা এবার টাইপ করে, ‘হ্যাঁ সত্যিই। ভাবলাম আপনাদের ওখানে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদটা দেখেই আসব। আপনি একটা রাত থাকার জন্য ভালো একটা হোটেলের ব্যবস্থা করে দিয়েন। তবে খুব বেশি যেন খরচ না হয় সেটা দেখবেন।’
মাহিন চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে থাকে। ও আরও ভাবল মেয়েটা বুঝি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।
মাহিন মাথায় হাত দেবার ইমোজি দিয়ে লিখে, ‘ওহ! আমি ভেবেছিলাম আপনি বুঝি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন। অবশ্য নদী দেখতে আসবেন এটাও কম পাওয়া নয়। ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে একটা সুন্দর রিসোর্ট আছে। আমার পক্ষ থেকে আপনার আর ছেলের জন্য উপহার।’
মীরা দ্রুত টাইপ করে, ‘না, এটা হয় না। ওসব জায়গায় অনেক খরচ। আর খামোখা আপনি দেবনই বা কেন?’
মাহিন পালটা জবাব দেয়, ‘খরচ নিয়ে ভাববেন না, আমার নিজের জন্যই করা। আপনি এলে পাত্রী দেখার কাজটা হয়ে গেল। আর সেক্ষেত্রে দায়িত্বটা তো আমার। তাই আপনি নিশ্চিন্ত মনে প্ল্যান করুন। আমাকে শুধু একটা সপ্তাহ আগে জানাবেন।’
মীরা লিখে, ‘সেক্ষেত্রে তো দায়টা আমারও। আমিও পাত্র দেখে গেলাম। তাই যা খরচ হয় তার অর্ধেক আমি দেব।’
মাহিন অনেকগুলো হাসির ইমোজি দেয়, ‘হা হা। আচ্ছা। আপনি যথার্থই বলেছেন।’
মীরা লিখে, ‘হ্যাঁ, জীবনে যথার্থ কাজই জরুরি। আচ্ছা, আমি আপনাকে জানাব। ভালো থাকবেন।’
মাহিন একটা লাইক সাইন দিয়ে চুপচাপ মেসেজগুলোর দিকে চেয়ে থাকে। মেয়েটা আর দশটা মেয়েদের মতো না। মুগ্ধ হবার কিছু উপাদান আছে যা চট করে সবার মাঝে দেখা যায় না।
এই যখন ভাবছিল ঠিক তখন মেসেঞ্জারে আবার টুন করে শব্দ হতেই ও আগ্রহ নিয়ে তাকায়। নাহ মীরা মেয়েটার মেসেজ না। নাফিসার মেসেজ।
‘বিয়ে ঠিকঠাক?’
মাহিন হাসে, তারপর লিখে, ‘না, পাত্রী দেখবার ব্যবস্থা করলাম। তুমিও ময়মনসিংহ চলে আসো। একসাথে দেখলাম।’
নাফিসা লিখে, ‘পাত্রী আমি আগেই দেখেছি। কিন্তু মীরা ময়মনসিংহ যাবে? আমেরিকার পাত্র দেখে বুঝি উতলা হয়ে গেল।’
মাহিন টের পায় নাফিসার রাগ হচ্ছে। পুরনো অধিকার বুঝি কেউই ছাড়তে পারে না। ও তাড়াতাড়ি লিখে, ‘না। ওই ছেলেকে নিয়ে নদী দেখতে আসবে। আমিই বলেছিল একবেলা এখানে এসে ঘুরে যেতে। তুমি তো আর আসবে না।’
নাফিসা একটু চুপ থেকে লিখে, ‘আমি এলেই আর কী হবে। যখন সময় ছিল তখন তুমি চলে গেলে।’
এইখানটায় একটা অস্বস্তি আছে মাহিনের। হঠাৎ একটা কথা মনে হতেই ও লিখে, ‘আচ্ছা নাফিসা, কিছুদিন আগে তোমাকে আমি একটা কথা বলেছিলাম, মনে আছে?’
নাফিসা মনে করতে না পেরে বলে, ‘কী যেন বলেছিলে?’
মাহিন লিখে, ‘বলেছিলাম, জীবন কখনও যদি সুযোগ দেয় আমার কাছে ফিরে আসার, তুমি আসবে?’
নাফিসা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, ‘সেটা কি আর কখনও আসবে?’
মাহিন এবার দ্রুত টাইপ করে, ‘সুযোগ এসেছে তো। ভালো করে ভেবে দেখো। মীরা যেমন সুমনকে চায় ঠিক তেমনি আমি তোমাকে চাই। তুমি যদি আমাকে বিয়ে করো তাহলে কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। যে যার পছন্দের মানুষকে খুব সহজেই পেয়ে যায়। তাই বলছিলাম, জীবন কিন্তু ঠিকই একটা সুযোগ দিয়েছে। ভেবে দেখো, কী করবে?’
নাফিসা স্তম্ভিত হয়ে মেসেজের দিকে তাকিয়ে থাকে। ব্যাপারটা এভাবে তো ভেবে দেখেনি কখনও। হ্যাঁ, সুমন আজও পুরনো প্রেমিকা মীরার প্রতি দুর্বল। আর মাহিন আজও ওকে পেতে চায়। তাহলে বাধাটা কোথায়?
কেমন দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে। মনের ভেতর ভীষণ একটা ঝড় ওঠে। হ্যাঁ, মাহিনের কথাটা সত্য। জীবন সত্যিই একটা অদ্ভুত সুযোগ দিয়েছে বটে। যে যার নিজের প্রিয় মানুষের কাছে ফিরে গেল। কিন্তু, সেটা কি এতই সহজ?
(চলবে)
মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান