অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক পর্ব :- ০১

0
1289

গল্প :- অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক
পর্ব :- ০১
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
-:”বাসর ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
বুকটা ধুকপুক ধুকপুক করছে। কারণ বাসর ঘরে বউ সেজে যে বসে আছে। আজ থেকে দুই দিন আগেও সে ছিলো আমার ভাবি। আর এখন আমার ই বউ…..

তারপর আমি আস্তেধীরে দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকলাম সাথে সাথে বউ এসে পা চুয়ে সালাম করে।
আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। খুব নারবাস লাগছে। তখন সে নিজের জায়গায় চলে যায়।
আর আমিও গিয়ে খাটে বসলাম। তখন সে নিজেই নিজের ঘুমটা খুলে। আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখি বউ সাজে তাকে খুবই কিউট লাগছে। কিন্তু একি তার চোখে জল। কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফোলে গেছে।
আমি কিছু বলতে যাবো। তখন তার আগেই আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললো।

–নীল আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমাকে কোনোদিনও স্বামী হিসেনে মেনে নিতে পারব না।
কারণ আমি যে এখনোও রাফিকেই ভালবাসি।
তাকে ছারা আমি আর কাউকে নিয়ে কিছু ভাবতে পারবো না।

(আচ্ছা এখন পরিচয় পর্বটা দেওয়া যাক, আমি কাব্য আহম্মেদ (নীলয়)
আর রাফি হলো আমার বড় ভাই। যে কিনা প্রায় দুই মাস আগে কার এক্সিডেন্টে মারা গেছে আর মিরা হচ্ছে আগে ভাবী ছিলো এখন বউ।)

মিরার কথাটা শুনে হঠাৎ বুকটা চিন চিন করে উঠলো।
তারপরেও নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম।

–তাহলে বিয়েটা করার মানে কি..? আমার জীবনটা কেন এইভাবে নষ্ট করলে।

—I’m So Sorry নীলয়।
আসলে মা-বাবা এমনভাবে জোর করছিলো যে আমি কিছু বলতেও পারি নি। আর তোমার সাথেও বিয়ের আগে আমার দেখা হয়নি,, যে তোমাকে সব খুলে বলবো।

–হুম.. বুঝলাম।
(এখন আমি ই বা কি বলতে পারি। সব রাস্তা তো তুমি বন্ধ করে দিলে)–মনে মনে

—আচ্ছা তুমি এক কাজ করো। তুমি বিছানায় সুয়ে পরো আমি সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরি।

–আরে তা কি করে হয়।
তুমি মেয়ে মানুষ হয়ে সোফায় শুতে যাবে কেন?
তুমি বরং বিছানায় সুয়ে পরো। আমি সোফায় ঘুমাচ্ছি।

—আচ্ছা ঠিক আাছে।

এই বলে সে শুয়ে পরে বিছানায়। আর আমি বাতিটা নিভিয়ে বেলকানিতে চলে আাসলাম।
একটা সিগারেট ধরিয়ে -মনে মনে বলতে লাগলাম ”কোনোদিন ভাবিনি তোমাকে এইভাবে কাছে পাবো মিরা। অথচ আমার কি কপাল দেখো। আজ তোমাকে কাছে পেয়েও পাইনি। তুমি যে আমার কথাটা শোনার প্রয়োজনও মনে করলে না। নিজেই শুধু বলে গেলে।
অথচ একবারও জিজ্ঞেস করলে না। আমি তোমাকে কেন বিয়ে করলাম। বুঝতেও চইলে না আমার এই হৃদয়ের কথা। যে হৃদয় চিৎকার করে বলতে চাইছে।
মিরা আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। নিজের থেকেও অনেক বেশি “ভালোবাসি”।
.
.
.
.
আরে আপনারা হয়তো ভাবছেন মিরাকে নিয়ে কেন এসব ভাবছি। যে কিনা দুইদিন আগেও আমার ভাইয়ের বউ ছিল?।

#তাহলে_শুনেন
আসলে দুই মাস আগেই আমার বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিলো। আমার ভাই হলো পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তা।
বাসররাতেই বউকে রেখে চলে গিয়েছিলো নিজের দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু সেদিন সে আর ফিরে আসতে পারেনি। সেদিন তার এক্সিডেন্ট হয়ে যায়।
বাসরের খাটে উঠার বদলে তাকে মরণের খাটিকায় উঠতে হলো।
আমার বাবা-মা এটা মেনে নিতে পারেননি।
তখন নতুন বউয়ের জীবন যাতে নষ্ট না হয়। সেজন্য ছোট ছেলেকে দিয়ে আবার বিয়ে করান।

এখন আপনাদেরকে বলি যে আমি কি করে মিরাকে আগে থেকেই চিনিঃ
.
.
ফিরে গেলাম পাঁচ বছর আগে——-
.
.
-: আমি তখন অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি দুই মাস আগে।
কিন্তু ক্লাসে আজ প্রথম এলাম। কাউকেই তেমন ভাবে চিনি না। তো একেবারে পিছনে গিয়েই বসলাম।

কারণ ইতিহাস সাক্ষী পিছনের দিকেই সকল জিনিয়াস জ্ঞানী মানুষরাই অবস্থান করিয়া থাকেন।
আমি আর কি মেম আসার আগেই ওদের দলে যুক্ত হয়ে যাই। সবার সাথে ভাব জমাতে লাগলাম।
হঠাৎ তখনই ম্যামের প্রবেশ–

পুরো ক্লাস একেবারে চুপ মেরে গেছে। ম্যাম ক্লাসে এসে ম্যামের চোখ প্রথমেই আমার উপরেই পড়ল।

ম্যাম– অতিথি নাকি?

আমি –না ম্যাম। আমি মোঃ কাব্য আহম্মেদ (নীল)

–আমি তোমার নাম জিজ্ঞেস করি নাই। কে তুমি আর ক্লাসে এভাবে কথা বলস কেন?

–ম্যাম এইমাত্রই তো বললাম। আমি নীল।

–অম..? স্টুিপিড ছেলে। আমি বলতে চাচ্ছি,, তুমাকে আগে এই ক্লাসে দেখিনিতো???

–আমি আসলে আজকেই প্রথম এলাম, ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা ছিল।

–ঠিক আছে।
এখন থেকে ক্লাসে নিয়মিত হও। আর কারো থেকে নোটসগুলো নিয়ে নিও। আর এখন দাঁড়িয়ে থাকো।

–ম্যাম একটা কথা বলবো? যদি কিছু মনে না করেন।?

–হ্যাঁ বলো।

–ম্যাম আপনাকে না অনেক সুন্দরী লাগছে। ?

–আচ্ছা তাই?।
(সৌখিন মহিলাদের এটাই সবচেয়ে বড় দুর্বলাতা)

— হুম ম্যাম..

–ঠিক আছে যেহেতু আজকে প্রথমদিন তাই ছেরে দিলাম। বসো বসো।☺

–আমি ঐদিনের মতো ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরসি। মোবাইল টিপছিলাম আর হাটছিলাম। হঠাৎ ধপপাশ করে চিটপটাং হয়ে পরলাম।
কলার খোসার কারণেই এমনটা হলো। আসে পাশে তাকলাম কেউ আছে কিনা। নাহ কেউ নেই। বাচলাম বাব্বাহ?। তখন দেখি একটা পিচ্চি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে?। আর বলছে..

পিচ্চিঃ লাউটারে কেউ ওঠাও! লাউটা গেল রে..গেল..??

— ঐ পিচ্চি চুপ কর??।

পিচ্চিঃ ছেলেদের মান সম্মান আর রাখলিনা??। লাউ একটা ?…
(দেখছেন কতোবড় বেয়াদপ। সিনিয়রদের প্রতি কোনো রেসপেক্টই নেই?)

আমিঃ পিচ্চি চুপ করবি ?। পিচ্চটার দিকে রেগে এগিয়ে যাই। চুপ..

পিচ্চিঃ মারবি নাকি!৷ পারলে মার। দেখি তুই কি করতে পারিস?।
জানিস এটা আমার এলাকা। আর ঐটা আমার বাড়ি। (পিচ্চ বলে কি?)

“‘আজকালকার পিচ্চিদের কোনো ভরসা নেই।
এক একটা পিচ্চি হলো আস্ত শয়তানের হাড্ডি।
কিন্তু আমারওতো একটা মান সম্মান আছে।?
আজ যদি এই পিচ্চিকে ভয় পেয়ে চলে যাই,
তাহলে জাতি আমাকে ধিক্কার দেবে।

“‘এরপর আমি যেটা করলাম। এটা দেখে পিচ্ছি এক দৌড়ে ঘরে পালালো।
আরে আরে ভুল বুঝবেন না তেমন কিছুই করি নাই শুধু পিচ্চির পেন্টটা খুলে গাছে ঝুলিয়ে দিছি?।
সালা পিচ্চি আমার সাথে লাগতে আসছে।?

“”তারপর বিকালের দিকে একটু শপিংমলে গেলাম। আমি দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলাম। তখন দেখি ঐ পিচ্চি এসে আমার সামনে হাজির।
এরপর পিচ্চি যা করল। তা মনে থাকলে জীবনে আর কোনোদিন কোনো পিচ্চদের সাথে পাল্লা দিমু না???

পিচ্চিটা হঠাৎ করেই আমার সামনে থাকা মেয়েটার কোমরে চিমটি কেটে উধাও?

মেয়েটি ঘুরে আমাকে দেখে ঠাস করে লাগেয়ে দিল। আর বলল লু্চ্চা, বদমাইস, ইতর ঘরে মা-বোন নেই।
??আমিতো মামা পুরাই আবুল বনে গেলাম।

আমি গালে হাত দিলাম। কারণ কিছু বলার জায়গা নেই। বেশি কথা বললে গণধোলাই খেতে হবে। দৌড়ে ওখান থেকে পলায়ন করলাম। তবে মেয়েটি কিন্তু খুবই কিউট ছিল।?। বলতে হবে হাতেও ভালোই জোর আছে। এখনো গালটা টনটন করছে?।

এরপর দিন কলেজে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন কে যেন পিছন থেকে ডাক দিল।

–এই যে হ্যালো শুনছেন?

আমি ঘার ফিরিয়ে পিছন দিখে তকিয়েই ভয় পেয়ে দুই পা পিছিয়ে গেলাম।

হে আল্লাহ এটাতো গতকালের সেই মেয়েটা। এখানে আবার কিছু করতে আসে নাই তো। ?
কলেজে কিছু করলে বসলে আমার মান-সম্মান নামক আর কোন বস্তুু থাকবেনা।

এরপর মেয়েটা কিছু বলার আগেই বললাম।
আমি বলে উউঠলাম।

–দেখুন ঐদিন যা হয়েছে আমি কিছুই করি নাই। সবকিছু একটা বদ পিচ্চি করেছে?।

–আরে নাহ…না।
আসলে ঐদিনকার জন্য আমি সরি। আমার বান্ধুবী সব দেখেছিলো গতকাল, পরে ও বললো ঐ পিচ্ছির কথা ।

–আচ্ছা ব্যাপার না। আর মিস……সরি আপনার নামটা?

–আমার নাম শামিমা আফরিন (মিরা)। আপনার?

–আমি নীল। (কাব্য আহম্মেদ নীল)
একটা কথা বলবো?

–জ্বী বলুন কি বলবেন?

–আপনি দেখতে অনেক সুন্দরী?।
আর আমি আপনাকে প্রথম দেখেই প্রেমে পরে গেছিলাম।
আই লাভ ইউ মিরা।? (এক নিশ্বাসে বলে ফেললাম)

বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল।
–তোর তো সাহস কম না..?।
জানিস আমি কে?
আমার বাবা জানতে পারলে না তোকে এক্ষুনি জেলে পুরবে।

–দেখো মিরা তুমি কে।
তোমার বাবা কি করে এবং ওনি কে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি আমার জবাব চাই।☺

–এই নে জবাব।
এই বলে আমার দুই গালে দুইটা থাপ্পর!! ?। তারপর ওখান থেকে চলে যায়।

–ঐ দিন থেকে আমি সারাক্ষণ মিরার পিছনে লেগেই ছিলাম। কিন্তু ওর কাছে প্রতিবারই আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হয়েছি + অপমানিত হয়েছি। তাতে কি আমি মিরাকে ভালোবাসি তো।

এভাবেই কেটে গেল চার বছর। আজকে কলেজের শেষদিন। আমি ভাবলাম আজকেই মিরাকে রাজি করাতে হবে।

আমি মিরার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
একটু পরই দেখলাম মিরা একটা ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে এলো…

তখন আমি এক তোরা গোলাপ ফুল নিয়ে মিরার সামনে যাই।
আর হাটু গেরে বসে ফুল গুলো এগিয়ে দিয়ে বললাম..

–? মিরা হবে কি আমার সারা জীবনের সাথী”
“হবে কি আমার সকাল বেলার পাখি
হবে কি বৃষ্টিতে ভিজার সাথী,
“ধরবে কি আমার হাত
আমার হৃদয়ের গহিনে গড়বে কি তোমার ভালবাসার বাড়ী”
“জানিনা তোমায় সারা জীবন খুশি রাখতে পারবো কিনা,, তবে এটা বলতে পারি, মরণের আগ পর্যন্ত তোমার হাতটা ছারব না..”

I Love You Mira. Love You so very much.?

Please অন্তত আজকে ফিরিয়ে দিওনা।
আমি তোমাকে সত্যিই অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
সেইজন্যই এতো কিছুর পরও তোমার পিছনে পরে আছি।

মিরা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
মিরা যে আজকে এমনকিছু করবে সেটা আমি কল্পনাও করতে পারেনি।
মিরা কিছুক্ষণ ঐ ভাবেই চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

কিছুক্ষণ মিরা বললো…

–মিরা কিছুক্ষন একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,,

–সরি নীল এটা সম্ভব না। আমি তোমাকে ভালোবাসি না।

আমি কেন জানি মিরার থেকে এই না শব্দটা আজকে নিতে পারছি না।
তাই হঠাৎ আমি মিরার হাত ধরে ফেললাম।
আর বলতে লাগলাম,,

–মিরা দেখো এমন করো না। আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
মিরা আমার থেকে হাতটা ছাড়াতে চাইছে।
কিন্তু আমি ছাড়ছি না দেখে,,
ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় আমার গালে।
আর হাতটা টান দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বলতে লাগলো,,

–নীল তোমাকে কতোবার বলবো যে আমি তোমাকে ভালোবাসি না বাসি না।
আসলে আমার ই ভুল হয়েছে। আমার তোমাকে এতোদিন একটা কথা বলে দেওয়া দরকার ছিলো।

–শুনো নীল আমি তুমাকে কষ্ট দিতে চাইনা।
কিন্তু এটাই সত্যি যে আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। আর তার সাথে আমার রিলেশন হয়েছে আমার কলেজ লাইফের শুরু থেকেই। আমরা একে অপরকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তাই প্লিজ তুমি আর এভাবে আমার পিছা করোনা।

আমি মিরার মুখে কথাগুলো শুনে আমার চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগলো। জীবনে প্রথম কাউকে ভালোবাসলাম। নিজের সবটুকুই তার নামে করে দিয়েছিলাম। আর আজ বলছে সে নাকি অন্য কাউকে ভালোবাসে।
আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম ওখানে। মাথাটা নিচু করে আছি। চোখ বেয়ে বেয়ে শুধু জল পড়ছে। তখন আমি খুবই নরম ভাবে মিরাকে বললাম,,

–আমি যখন এতোদিন তোমার পিছনে পরে ছিলাম। কৈ তখনতো কিছুই বলোনি। তুমি আমাকে যদি প্রথমেই বলে দিতে যে তোমার রিলেশন আছে।
তাহলে আমি এতদিন বেহায়ার মতো তোমার পিছন পিছন ঘুরঘুর করতাম না।আর আমিতো ভেবেছিলাম তুমিও আমাকে পছন্দ করো,কিন্তু সেটা হয়তো প্রকাশ করছো না।

আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিলো তাই নিজের ভেতরের আবেগটাকে বেশিক্ষন ধরে রাখতে পারলাম না। তখন আমি চেচিয়ে বলে উঠলাম,,

–মিরায়ায়া কেন করলে তুমি আমার সাথে এরকম। কেন আমাকে প্রথমেই বলে দাওনি। তাহলে আজকে আমাকে এতোটা কষ্ট পেতে হতো না।
এবার কলেজের সবাই আমার উঁচু গলা শুনে আমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। সবার চোখেই বিষ্ময়। হুমম.. হয়তো আমি একটু বেশিই রিয়েক্ট করে ফেলেছি।
আর ঐ দিকে মিরা আমার আচরণে খুবই অবাক হয়ে গেছে। তখন সে বললো,,

–নীল আমি সেটার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখীত স্যরি। আর পারলে এর জন্য আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর প্লিজ আমার পিছনে পরে থেকো না। এতেই আমাদের ভালো হবে।

এই মুহুর্তে মিরার আর কোনো কথাই আমার শুনতে ইচ্ছা করছিলো না। তাই ফুলগুলো জোড় করে ওর হাতে ধরিয়ে বাইক নিয়ে দ্রুত কলেজ ত্যাগ করলাম। আমার সামনের সবকিছু যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। তাই কিছুক্ষণ গিয়েই বাইকটা সাইট করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কি হলো আমার এতো কষ্ট হচ্ছে কেন?
মিরা তো আমাকে কোনোদিনই ভালোবাসেনি।
এমনকি আমার সাথে ভালো করে কখনো কথাই বলেনি পর্যন্ত।
আমার ভালোবাসাটা তো শুধু একতরফা ছিলো। আমি নিজে থেকেই ওকে ভালোবেসে গেছিলাম। আর এখন তো মিরা বলেই দিয়েছে সে আমাকে ভালোবাসে না। অন্য কাউকে ভালোবাসে। তাহলে এখানে আমার এত কষ্ট পাওয়ার কি আছে?
জানিনা কতক্ষন এভাবে মনের ভেতর যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি চললো।
হঠাৎ তখন আমার ফোনটা বেজে উঠলো। রিসিভ করতেই মা বলে উঠলো,,

–হ্যালো নীল
–জ্বী মা বলো?
–কোথায় তুই?
–এই তো মা, রাস্তায় আসছি।
–আচ্ছা তাড়াতাড়ি আই আগামীকাল তুর ভাইয়া বাসায় ফিরছে।
আর বাসায় অনেক কাজ পরে আছে। তুর বাবাও তো বিজনেসের কাজে বাইরে আছেন। তাই বাজার-সদাই সব তুকেই করতে হবে।

আম্মুর কথা শুনে আমি আর কোনো সময় নষ্ট না করে বাড়িতে ফিরলাম।

ফ্রেস হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। কিন্তু এখনো আমার মন থেকে কিছুতেই মিরাকে বের করতে পারছি না। কতোটা মায়াবী মেয়েটা। এতোকিছুর পরও তার কথাই ভেবে যাচ্ছি। মিরার কথা ভাবতে ভাবতে কখন যেন ঘুমিয়ে পরলাম। বুঝতেও পারি নি।

রাত্রে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি মা আমার পাশে বসে আমাকে উঠার জন্য ধাক্কাধাক্কি করছে। আমি উটে বসতেই মা বললো,,
–কিরে তোর হয়েছেটা কি?
তুইতো কখনো এমন সময় ঘুমাসনা। আর চোখ-মুখের কি অবস্থা করেছিস। তুইকি কাঁদছিলি নাকি?

–কিসব বলছো মা। আরে ঘুমের কারণে হয়তো চোখ এমন হয়ে গেছে। চোখে-মুখে পানি দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

–আচ্ছা ঠিক আছে।
এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নিচে আয়। নিচে ডিনার টেবিলে তোর ভাইয়া বসে তোর জন্য অপেক্ষা করছে।

–কিহ! মা ভাইয়া কখন ফিরলো??

–এইতো মাগরিবের পরপরই। আচ্ছা এসব ছেরে নিচে আয়।

তারপর আমি জলদি করে ফ্রেস হয়ে নিচে নামলাম। সত্যি বলতে কি ভাইয়া আসাতে আমি খুবই খুশি হয়েছি। কারণ ভাইয়া শুধু ভাইয়া নয় আমার সব থেকে কাছের এবং একজন ভালো বন্ধু।
খাবার টেবিলেই ভাইয়ার সাথে দেখা এবং অনেক কথা হলো।

(ওহ ভাইয়ার সম্পর্কে কিছু বলা দরকার)
আমার ভাইয়ার নাম :- রাফি আহম্মেফ।
সে পড়ালেখা শেষ করে ভালো ভালো চাকরির অফার পেয়েও ছেরে দিয়েছে কোনো এক বিশেষ কারণে, কারণ সে এখন পুলিশের ট্রেইনিং নিচ্ছেন। অনেকবার আমি প্রশ্ন করা সত্যেও কিছুই বলেনি।
বলে যে আগে পুলিশ হয়ে নিই তারপর বলবো। এজন্য আমরাও আর জোর করিনি)

তারপর সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা ছাদে চলে যাই আড্ডা দিতে। অনেকদিনপর ভাইয়ার সাথে আড্ডা দিয়ে ভালোই লাগছে।
মিরার ব্যাপারটা মাথা থেকে প্রায় বেরিয়েই গেছে। কিন্তু ভাইয়া কিছুক্ষণ পর প্রশ্ন করে বসলো যে,,

–নীল তা তোর মিরার খবর কি?
তোদের রিলেশন কিছুটা এগুলো নাকি আগের মতোই।

–ভাইয়ার কথা শুনে আমার মোডটাই আবার অফ হয়ে গেলো। আমার মুখ দেখে ভাইয়া আবার বললো,,

–কি হলো নীল কি হয়েছে?
আচ্ছা বুঝেছি বুঝেছি মেয়েটা এখনো হ্যা বলেনি। আরে চিন্তার কোন কারন নাই। না তো আর বলেনি। তাই চালিয়ে যা। দেখবি একদিন না একদিন হ্যা বলে দিবেই।
.
.
.
চলবে………………♥♥