একটি নির্জন প্রহর চাই পর্ব-১৮+১৯

0
363

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
১৮
Writer_Mousumi_Akter
কাকডাকা ভোর।শরীর ঠান্ডায় হিম হয়ে আসছে।জড়সড় হয়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করছি।শীতল হাওয়াতে শরীরের প্রতিটা লোমকূপ জেগে উঠছে।হঠাৎ গায়ে আরামদায়ক কিছু অনুভূত হলো।ঘুমে বিভোর থাকা অবস্থায় শরীরে উষ্ণ কিছু অনুভব করলাম।হঠাৎ পাতলা চাদরের আবরণে ঢেকে গেলো সারা শরীর।আরামদায়ক পরিবেশে চাদর টা ভালো ভাবে গায়ে টেনে নিয়ে পাশে থাকা কোলবালিশটা ভালো ভাবে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইলাম।ঘুমে অচেতন আমি।কানে ঝুম ঝুম শব্দ ভেসে আসছে।কর্ণকুহরে শ্রুতিমধুর লাগছে।ঠান্ডার প্রবণতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে,সেই সাথে পাল্লা দিয়ে উষ্ণতাও বেড়ে চলেছে। ঘুমন্ত অবস্থায় নিজের ভেতরে কেমন অদ্ভুত এক ভাল লাগা কাজ করছে। মাতাল করা এক অনুভূতি। কিসের অনুভূতি বুঝতে পারছিনা।তবে আমাকে নেশার মত টানছে।নিজের শরীরের অনুভূতির অদ্ভুত এক পরিবর্তন বুঝতে পারছি।পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এক ভাললাগার অনুভূতি। ওষ্টেদ্বয়েও উষ্ণতা অনুভব হচ্ছে।ধীরে ধীরে আমার ইন্দ্রীয় শক্তি জাগ্রত হচ্ছে।সমস্ত ইন্দ্রীয় ঘুমের দেশ থেকে সজাগ হচ্ছে।আমি বুঝতে পারছি,কারোর আড়ষ্ট হাতের বাঁধনে আমি আবদ্ধ,কারো উষ্ণতায় মাতোয়ারা।কারো ঘন, গাড়, উষ্ণ নিঃশ্বাস উপচে পড়ছে আমার মুখের উপরে। কারোর ওষ্ট মিলিত হয়েছে আমার ওষ্টে।আস্তে করে চোখ জোড়া খুললাম।কোলবালিশ ভেবে জড়িয়ে থাকা মানুষটা ওশান স্যার।আমার মত করেই উনিও আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন খুব শক্তকরে।দু’জনের ওষ্টদ্বয় একত্রিত।উনি ঘুমে বিভোর,কিন্তু উনার অনুভূতি জাগ্রত। আমি খেয়াল করছি উনি নেশাক্ত এক অনুভবে আমাকে টানছেন উনার দিকে।উনিও কি আমার মতোই কোলবালিশ ভেবে এমন করছেন!দু’জনের শরীরে একটা কাঁথা।ইশ!কী লজ্জা!ভয়ানক কিছু ঘটে যায়নি তো আবার?।যে অবস্থায় আছি,এর থেকে ভয়ানক কিছু আর হতেই পারেনা।লজ্জায় ভয়ংকর এক অবস্থা আমার। উনার সাথে আর ঝ*গ*ড়া করব কিভাবে?আজ যা ঘটল।উনি আমার কাছে এলেন কখন?উনার শক্তপোক্ত বাঁধন থেকে তো ছোটার ও উপায় নেই।যেনো শক্ত এক শিকলে বাঁধা আমি।কখন মিলিত হয়েছি দু’জন!উনি তো এতটা বেখেয়ালি নন।ঘুমোলে তো একচুল ও নড়েন না।তাহলে আজ কিভাবে আমার কাছাকাছি এলেন!আর আমার ই বা এত ভাল লাগছে কেনো?মনে হচ্ছে ভুল করে কাছে এসে বুঝি জীবনের শ্রেষ্ঠ সুখ পেলাম।উনার স্পর্শে এত ভাললাগা,এত নেশা,এত তৃষ্ণা। যেনো আমার দীর্ঘদিনের পিপাসিত হৃদয় শীতল হলো।একটা রাগী,গম্ভীর মানুষের শরীরের গন্ধ ও এত দারুণ হয়!এত ভাললাগা, এত অনুভূতির মিশ্রণ থাকে।চোখ বন্ধ করে পড়ে রইলাম উনার বুকে।এই ভাললাগাময় মুহুর্তটুকু শেষ না হোক।বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে,বিরতিহীন বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্যই বুঝি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল?উনি তো আরামে ঘুমোচ্ছেন। আমি আর কতক্ষণ এভাবে থাকব!জানালার একটা পাল্লা খুলে গিয়েছে,বৃষ্টির ছিটা এসে ভিজে যাচ্ছে ঘর।খয়েরী কালারের পর্দাটা উড়ছে।জানালার সোজা ল্যাপটপ টেবিলে ল্যাপটপ রাখা।বৃষ্টির পানি এসে সেটা ভিজে যাচ্ছে।আজ আবার ফরম ফিল-আপ করতে হবে সেকেন্ড ইয়ারের।নয়টার মধ্য ব্যাংকে পৌছাতে হবে।কলেজে অনেক কাজ আছে।আজ লাস্ট ডেইট ফরম ফিল-আপ এর।ছোঁয়া গতকাল কুমিল্লা থেকে ফিরেছে।ওয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সকাল সাড়ে সাতটা বাজে।ইশ!তরীর একার পক্ষে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে নিশ্চয়ই। উনাকে ঠেলে সরিয়ে ওঠার চেষ্টা করলাম।আমার কিছুক্ষণ নড়াচড়ার পর উনি চোখ মেললেন।এভাবে আমাকে উনার সাথে মিশে থাকতে দেখে চট জলদী উঠে বসে বললেন, ‘উফস! তুমি?’
উনার চোখে মুখে সে কী লজ্জা!লজ্জায় আমি নিজেই মিইয়ে যাচ্ছি।লজ্জাজনক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে আমি বিছানা ত্যাগ করে ওড়না খোঁজাখুঁজি করে দেখলাম ফ্লোরে পড়ে আছে ওড়না টা।ফ্লোর থেকে ওড়না তুলে গায়ে দিয়ে উনার ল্যাপটপ টা জানালার সাইড থেকে সরিয়ে এনে বললাম,
‘ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো আমার দিকে?আমি ঘুমোলে আপনি তার ফায়দা নেন তাইনা?’
উনি কেমন চিন্তিত সাথে লজ্জিত মনে হচ্ছে।সামনের চুলে হাত দিয়ে চিরুনি করতে করতে বললেন,
আমি কেনো ফায়দা নিতে যাবো?নিশ্চয়ই তুমি এসেছিলে আমার কাছে?
‘আমি একটুও যায়নি,আপনি এসছিলেন।আপনাকে আমি ওড়না খুলতে দেখছিলাম।বাট আমার মনে হলো আমি ওটা স্বপ্ন দেখছিলাম।’
‘ওটা স্বপ্ন নয়, সত্য।গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পটল তুলে ফেলতে তাই সরিয়ে দিয়েছিলাম।’
‘এখন এসব অজুহাত দিচ্ছেন!আমার গায়ে কাঁথা আসল কিভাবে?’
‘শীতে হিম হয়ে যাচ্ছিলে।তাই দেখে হেল্প করছিলাম।এটাও আমার দোষ?
‘তাহলে আপনার কাছাকাছি গেলাম কিভাবে?’
‘আমি জানি সেটা।নিজেই এসছো।তুমি কিভাবে ঘুমোও একদিন ভিডিও করি তাহলে বুঝবে।রাতে কতবার এসে আমাকে হামলা করো।বার বার কোল বালিশ ছেড়ে আমাকে এসে ;থাক আর বললাম না।’
‘মোটেও আমি আপনার কাছে যায় না! আমি ঘুমিয়ে গেলে আপনি রেগুলার ওইসব করেন তাহলে।’
‘হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ওইসব?
‘আপনি প্রাপ্তববয়স্ক, নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।’
‘তুমিও প্রাপ্তবয়স্ক। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ ওইসব করলে এতদিন বেবির আম্মু হয়ে যেতে।’
‘ছিঃ!কি লজ্জা!আপনার কি একটুও লজ্জা নেই?
‘তুমি কি লজ্জা রাখতে দাও আমার?আর হ্যাঁ! বিয়ে করা বউ আমার।ফায়দা নেওয়ার কী আছে?হক আছে আমার।আর আজ যা সর্বনাশ করলে আমি শেষ।নারী এভাবেই পুরুষের সর্বনাশ করে।’
বলেই উনি শাওয়ারে ঢুকলেন।আল্লাহ রোশান স্যার দিন দিন এমন বেহায়া হয়ে যাচ্ছেন কেনো?মুখে কি কিছু আটকাচ্ছে না উনার!

চুল ঠিক করে বাইরে বের হলাম।তরী চা করে ডায়নিং-এ দিয়েছে।আগুনগরম চা ধোঁয়া উড়ছে।খেয়াল করলাম তরীর মুখটা ভারী হয়ে আছে।ডায়নিং এ বসে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি,ওশান,আর দাদু চা খাচ্ছেন।তরী কোনো কথা বলছে না,কিন্তু কেনো?কী হয়েছে ওর!ওশান কে বেশ পরিপাটি লাগছে দেখতে।জিন্স,গেঞ্জি পরে রেডি;যেনো বাইরে যাবে।আমাকে দেখে শাশুড়ি বললেন, কী ব্যাপার তরী সং এর মত দাঁড়িয়ে আছো কেনো?সারাহ মা কে চা দাও।’
ওশান আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছে।আমিও ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে ওশানের দিকে তাকালাম।একটা চেয়ার টেনে বসতে বসতে বললাম, ‘নাহ! আমি চা খাবো না এখন।তরীর কি মন খারাপ আম্মা?ও এমন চুপচাপ কেনো?’
‘ও তো অলক্ষী।মুখ ওইরকম প্যাঁচার মতো করে রেখে সংসার টাই শেষ করে ফেলল।’
‘মুখ ওরকম রাখে কেনো আম্মা?’
দাদু বললেন, ‘ওর মনে কত সুখ যে তাই হাসবে?’
আম্মা বললেন, ‘আহা!বাবা।আপনি এত প্রশ্রয় দিবেন না।আপনার জন্যই মাথায় চড়েছে ও।’
আমি বুঝতে পারলাম না ব্যাপার টা আসলে কী ঘটেছে।আম্মার দিকে তাকিয়ে বললাম,
‘তরী কী করেছে আম্মা?
‘আরে মা কাল যে তুমি শাড়ি টা গোসল করে খুলে রেখেছিলে ও সেটা ধুয় দেয়নি।আমার শাড়ি ও পড়ে আছে।তোমার বাবার লুঙ্গী,ওশানের লুঙ্গী সব পড়ে আছে।এত ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে কাপড়ের রং থাকে?ওর নাকি মনে নেই।নবাবজাদির মেয়ের নাকি মনে নেই।পাখনা গজিয়েছে নাকি!খাওয়া টা কোন জায়গা থেকে আসে!বাপের বাড়ি থেকে তো চারআনার সুতো ও আনার ক্ষমতা নেই।ঘুম থেকে উঠে সবার ভেজা কাপড় দেখে আমার মাথা ঠিক নেই।কাল আমার বিছানা ও ঝেড়ে দেয়নি।এ বাড়ি থেকে আর কতবার দূর করব।মাগনা খাওয়া আছে কোথায় আর যাবে!এই আপদ দূর হলে আমার ছেলে ও বাঁচত আমিও বাঁচতাম।’
ওশান বলে উঠল, ‘কত মানুষ গলায় দ* ড়ি দেয়, ও কি দড়ি ও চোখে দেখেনা?আম্মা ও আমার চোখের সামনে আসলেই আমার বিরক্ত লাগে!
ওশানের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘তরীর গায়ে হাত তুলেছো তুমি?’
দাদু বললেন, ‘একি নতুন।দেখো তো হাত টা মুচড়ে কেমন ভেঙে ফেলেছে।’
র*ক্তকণিকা জ্বলে উঠল আমার।তরীর হাতের দিকে তাকালাম আমি।হাত টা কেমন ফুলে উঠেছে।কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু শেয়ার করার মানুষ নেই।আমার ভেতর টা হুহু করে উঠল যন্ত্রণায়।
শ্বাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আপনাদের সবার কাপড় খুলে রেখেছিলেন কেনো?না ধুয়ে ফেলে রেখেছিলেন কেনো?’ তৎক্ষনাৎ আমার শাশুড়ি বল উঠলেন,
‘বাড়ির পুরুষ মানুষ কি পরনের কাপড় ধুতে পারে ?আর ছেলের বিয়ের পর শাশুড়ি কেনো কাপড় ধুবে?
‘ধুতে পারেনা মানে!তাহলে আপনার বড় ছেলে আমার কাপড় কিভাবে ধুয়ে দিলো।’
‘কী বললে!আমার রোশান তোমার কাপড় ধুয়েছে।’
‘হ্যাঁ ধুয়েছে।আপনার কাপড় এখন থেকে আমি ধুয়ে দিবো আম্মা।আর ওশান আমার দেবর, ওর টাও আমি ধুয়ে দিবো।মানে সবার টা ই আমি ধুয়ে দেবো।তরী তো এতদিন ধুয়েছে। ও যেহেতু করতে চায়ছে না আমি করব।’
ওশান চোখ বড় বড় করে তাকাল আমার দিকে।টেবিলের বাকিরাও অবাক হলো।শাশুড়ির ঘোর আপত্তি সে আমাকে এসব করতে দিবেন না।দাদু মুচকি হাসছেন আর বিড়বিড় করে বললেন,
‘ধামাকা হবে বোঝায় যাচ্ছে।’

মৃন্ময় এর নাম্বার থেকে ফোন ক্রমাগত আসছে ।আমি আড়ালে গিয়ে ফোন রিসিভ করে বললাম, কী হয়েছে এত ফোন দিস কেনো?জানিস না জামাই আছে আমার।আগের মত ফ্রি থাকিনা।’
‘সারাহ!সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে।’
‘কী হয়েছে?’
‘তন্ময় সু ই সা ইড করেছে?আমি হসপিটাল আছি।অবস্থা ভালো না।ঘুমের ওষুধ খাইছে অনেক গুলো।’
‘ক্যান?কী হইছে ওর?
‘ছোঁয়ার জন্য।তুই তো জানিস তন্ময় ছোঁয়াকে কত ভালবাসে।’
‘জানি!বাট সু*ই*সা*ই*ড এর কারণ।?
‘কাল ছোঁয়া কুমিল্লা থেকে ফিরলে তন্ময় ছোঁয়ার বাসার নিচে গিয়েছিলো।ছোঁয়ার জন্য এক গুচ্ছ লাল গোলাপ,একটা পান্ডা, একটা থ্রিপিছ নিয়ে গেছিল।তন্ময় টিউশনির টাকা জমিয়ে ওগুলো কিনেছিল।কিন্তু ছোঁয়া তন্ময়কে বকেছে।আর গিফট গুলা তো নেয়নি সাথে অনেক গালি গালাজ করেছে।বলেছে তন্ময় বন্ধু নামের কলঙ্ক।বন্ধু হয়ে কিসের প্রেম ভালবাসা।বন্ধুত্ত্বের মাঝে এসব কী?সে তন্ময় এর সাথে ফ্রেন্ডশীপ ব্রেক করেছে।সাথে বলে দিয়েছে ওশান ছাড়া তার জীবনে কেউ জায়গা পাবেনা।আরো অনেক কথা।তন্ময় সহ্য করতে পারেনি।বিগত চারটা বছর তন্ময় ছোঁয়াকে বোঝাচ্ছে কিন্তু ছোঁয়া লক্ষবার রিজেক্ট করে দিলো।ছোঁয়া বেশী রেগে গিয়েছে তন্ময় বলেছে সে গরীব বলেই ছোঁয়া তাকে চায়না।কাহিনীর শেষ নেই।তুই আয়।এসে বাকিটা শুনিস।’

‘বাঁচবে তো?

‘বলা যাচ্ছেনা।তন্ময় এর মতো ফর্সা,ভালো হাইট,ভাল স্টুডেন্ট রেখে কিভাবে যে ছোঁয়া ওশানের জন্য পা* গ* ল!কত মেয়ে তন্ময় কে প্রপোজ করল অথচ তন্ময় ছোঁয়ার জন্য পা* গ* ল।

আমি দ্রুত চেঞ্জ করে রোশান স্যারকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গেলাম সিটি হসপিটালের উদ্দেশ্যে।
চলবে?

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
১৯
#Writer_Mousumi_Akter.
ঝুম বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছি।চারিদিকে ঢল নেমেছে।রাস্তায় ভ্যান,রিক্সা,অটো কোনো কিছুরই দেখা মিলছে না।মাথার উপরে ধরে রাখা ছাতাটির উপর ঝুমুর ঝুমুর করে নৃত্যে মেতেছে বৃষ্টিকণা।পায়ের নিচ থেকে হাঁটু অবধি ভিজে গিয়েছে বৃষ্টির পানিতে।ছাতায় বাঁধ মানছেনা।সাইড ব্যাগ টা কোনোরকম ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছি।মনটা বড্ড অস্থির হয়ে আছে।তন্ময় আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।ওর কোনো কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারব না।ভ্যান-গাড়ির জন্য অপেক্ষা না করে হাঁটা শুরু করলাম।মন দৌড়ালে কি কখনো পথ ফুরায়!আধাঘন্টা হাঁটার পরে একটা অটোর দেখা পেলাম।অটোওয়ালাকে হাত ইশারা করতেই থেমে গেল।জিজ্ঞেস করলাম, সিটি হসপিটালে যাবেন?
অটোওয়ালা বলল, না আমি বাজার নিতে এসেছিলাম।আজ আর ভাড়া টানব না।বাসায় গিয়ে ঘুমাব।
আধাঘন্টা পরে আর একটা অটো পেয়েছি। এখানেও হতাশ হলাম।কিন্তু এনাকে কোনো ভাবেই ছাড়া যাবেনা।এই অটো টা ধরতেই হবে।খুব কাকুতি মিনতি করে বললাম,
মামা আমার বন্ধু সু*ই*সা*ই*ড করেছে। অবস্থা খুব একটা ভালো না। ইমারজেন্সি হসপিটালে পৌঁছাতে হবে আমাকে, প্লিজ চলুন।
না, না ওইদিকে এখন যাব না।তাছাড়া আর প্যাসেঞ্জার ও পাওয়া যাবে না।
মামা আপনার ভাড়া তো ত্রিশ টাকা।আমি আপনাকে ২০০ টাকা দিবো,প্লিজ চলুন।
আচ্ছা ওঠেন।
‘ঘন্টা খানিক এর মাঝে ভিজে নেয়ে উপস্থিত হলাম সিটি হসপিটালে।
হসপিটালের করিডরে দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপ।দ্বীপকে ভীষণ ব্যাস্ত দেখাচ্ছে।হাতে প্রেসক্রিপশন।রিসেপশনে কথা বলছে।দ্বীপ আমাকে দেখেই চিন্তিত কন্ঠে বলল, সারাহ এসেছিস তুই?
হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম, ‘তন্ময় কই দ্বীপ,কী অবস্থা ওর?
দো’তলায় আছে। জ্ঞান ফেরেনি এখনো।আমি স্যালাইন নিয়ে আসছি।যা তুই।আমি ব্যাস্ততার সাথে দো’তলায় উঠলাম।খুব দ্রুত বেগে উঠার ফলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
আমাকে দেখেই মৃন্ময় ডাক দিল, সারাহ এদিকে আয়।
তন্ময় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে।স্যালাইন চলছে।ফর্সা গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে তন্ময়কে সব সময় সুন্দর লাগে।মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে আছে আজ!
মৃন্ময়কে বললাম, ডাক্তার কী বলেছে?
বলল আর একটু পরে আনলে কী হতো ঠিক নেই।
তন্ময়ের বাড়িতে জানিয়েছিস?
ওর মা অসুস্থ।আর কেউ নেই।শৈশবকালে বাবা ও মা*রা গিয়েছে।একমাত্র ছেলের এমন খবর শুনলে আন্টির কী অবস্থা হবে এটা ভেবে বলিনি।তাতে আবার হাই প্রেসারের রোগী।
তন্ময় কি পা* গ * ল হয়ে গিয়েছে মৃন্ময়? এমন একটা ভুল কীভাবে করল?যদি কিছু হয়ে যেত!
সারাহ!আমি আর দ্বীপ জানি তন্ময় ছোঁয়ার জন্য কত পা* গ* ল।মেসের ওয়াল জুড়ে ছোঁয়ার নাম লেখা।ওয়াল জুড়ে ছোঁয়ার ছবি টাঙানো।ছোঁয়াকে দেখার জন্য রাত নেই দিন নেই ছুটে গিয়েছে ছোঁয়ার বাসার সামনে।সারা মাস পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে টাকা বাঁচিয়েছে ছোঁয়ার সাথে একটু রিক্সায় চড়ার জন্য,ছোঁয়ার পছন্দের চকলেট, আইসক্রিম খাওয়ানোর জন্য।ছোঁয়া ধনী পরিবারের মেয়ে। গাড়িতে চড়তে ওর ভাল লাগেনা আর।রিক্সায় চড়তে পছন্দ করে।আর জানিসই তো রেগুলার রিক্সায় যাতায়াত তন্ময়ের মত ছেলের জন্য কতটা টাফ।তন্ময় রোজ দুই কিঃমিঃ হেঁটে যাওয়া আসা করে। যাতায়াত ভাড়া বাঁচিয়ে ছোঁয়াকে এটা সেটা গিফট দিয়েছে।ছোঁয়া কি জানে তন্ময়ের দু’পায়ে কতশত ব্যাথা জমেছে হাঁটতে হাঁটতে!ছোঁয়া অনেক বার আপত্তি জানিয়েছে এসব গিফট নিতে;কিন্তু তন্ময়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে।মাস শেষে তন্ময়ের হাতে টাকা থাকেনা।একটা শার্ট, টি-শার্ট কতদিন ইউজ করে তার হিসাব নেই।টিউশন থেকে টাকা জমিয়ে মায়ের জন্য টাকা পাঠাতে হয়,নিজের লেখাপড়া। তন্ময় জীবন-যুদ্ধে লড়াই করা একজন বীর।ছোঁয়াটা যে কবে বুঝবে!সিজিপিএ তে তন্ময় ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট।আমরা জানি তন্ময় একদিন সবার মুখ উজ্জ্বল করবে ।আমি একটা টুল টেনে তন্ময়ের পাশে বসলাম।আমরা বন্ধুদের যেমন সব থেকে পঁচাতে বেশি ভালবাসি,তেমনি বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসি।তন্ময়কে দেখে আমি সহ্য করতে পারছিনা।কাঁন্না আটকাতে কষ্ট হচ্ছে,ঠোঁট অনবরত কাঁপছে। তন্ময়ের হাতের উপর হাত রেখে বললাম,তন্ময় তুই মৃন্ময় আর দ্বীপ সারাজীবন আমাকে আর ছোঁয়াকে আগলে রেখেছিস,শাসন করেছিস আবার ফানও করেছিস,গা**লি দিয়েছিস।আমাদের কত শত স্মৃতি বিজড়িত মুহূর্ত।আমরা কেউ কাউকে ছেড়ে থাকার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনা।তোর কিছু হলে আমাদের কী হতো?এমন কেনো করলি বল?এত সহজে হেরে যাবি,তুই না ছেলে মানুষ? ছেলেদের এত সহজে ভেঙে পড়তে নেই।”সব ভালো যারা শেষ ভাল তার”।কেনো আমাকে একটু সময় দিলি না তন্ময় সবটা গুছিয়ে দেওয়ার জন্য?আমি তোকে সবটা গুছিয়ে দিতাম।

দ্বীপ নিচ থেকে ব্যাস্ততার সহিত উঠে এসে মৃন্ময় কে বলল,

‘নার্স কে ডেকে নিয়ে আয়।’

দ্বীপ এর চোখে মুখে চরম বিরক্তি,আর রাগ। কপালে ঘামের বিন্দু বিন্দু ফোঁটা জমেছে।আঙুল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে আমার দিকে তাকাল।চোখে অগ্নিরূপ।অগ্নিকন্ঠেই বলল,

‘সারাহ! তোরা মাইয়ারা এক একটা কা**ল না**গি**নী।একটা পোলারে এমনে ছো*ব*ল মারিস সোজা কাল ছো*ব*ল।আর এমন বি*ষ ঢেলে দিস একটা পোলা আজীবন জ্বলতে থাকে।’

‘তোরা ছো*ব*ল নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসিস কেনো?’

কী জানি! আল্লাহ কী এমন বিশেষ পাওয়ার তোদের মাঝে দিয়ে দিছে।পুরুষ আজীবন ধ্বংস হয় এই মাইয়াগো জন্য।
মৃন্ময় নিরবতা ভেঙে বলল,
ছোঁয়া যে ক্যান তন্ময় রে বোঝেনা!

দ্বীপ আরো বেশি বিরক্ত হয়ে বলল, ‘আচ্ছা ছোঁয়া ওশানের মাঝে কী পাইছে?ক্যামনে ভালোবাসার ফিল পায়?ওইটারে দেখতেই তো আমার কাছে কেমন লুইচ্চা লুইচ্চা লাগে।আমি সিরিয়াসলি বলছি সারাহ ছোঁয়াকে থা* প্রা** মু। ওই শা**লী*র জন্য তন্ময় কষ্ট পাচ্ছে।

ছোঁয়াকে খবর দিয়েছিস?

মৃন্ময় দিয়েছে।আমিতো না করছিলাম।

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে বললাম,

‘দ্বীপ তন্ময় কে আমরা সামলাতে পারব।কিন্তু ছোঁয়াকে কীভাবে সামলাবো?অনেক কিছু বলার আছে তোদের।তন্ময়ের আর কতটুকু মন ভেঙেছে,তন্ময়ের ছিল
একপাক্ষিক ভালবাসা।যেখানে তন্ময়ের কোনো এক্সপেকটেশন ছিল না।ছোঁয়ার মুখের মিষ্টি কোনো প্রেমের বাণী ও তন্ময় শোনেনি।তন্ময় কে ছোঁয়া কোনো স্বপ্ন ও দেখায় নি।কিন্তু ছোঁয়ার ব্যাপার টা ভিন্ন।ও ওশানের সাথে রিলেশন এ আছে।দুজন দুজন কে ভালবাসে।সেখানে যদি ছোঁয়ার মন ভাঙে কীভাবে সহ্য করবে?’আমার তো ছোঁ**য়া কে নিয়ে ভয় হচ্ছে বেশি!ছোঁয়াকে কি বাঁচাতে পারব!

দ্বীপ আর মৃন্ময় এক সাথে জিজ্ঞেস করল,

কেনো রে?

‘ছোঁয়ার পুরো জীবন টা এলোমেলো হয়ে যাবে। মন ভাঙার কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।যেটা সামলানো খুব একটা সহজ হবেনা ছোঁয়ার পক্ষে।’

মৃন্ময় উত্তেজিত হয়ে বলল,

আচ্ছা খোলাসা করে বলবি?

ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বললাম,

ওশান ম্যারেড!

মৃন্ময় আর দ্বীপ দু’জনেই যেন আকাশ থেকে পড়ল।ভীষণ ভাবে চমকে গেল।যেমন টা প্রথমে আমি হয়েছিলাম।ওরা দু’জনেই বলল,

হোয়াট?

হ্যাঁ! আমি ঠিকই বলছি।

দ্বীপ বলল,

তুই শিওর সারাহ?

আমি শিওর না হয়ে একথা কেনো বলব?

তাহলে কি ওই শা*লা*র পুত ছোঁয়াকে ঠকালো?দেখে তো মনে হয় ছোঁয়াকে মারাত্মক ভালবাসে।তাহলে কেমনে কী?

মৃন্ময় বলল,

‘আল্লাহ বাঁচা গেলো!তন্ময় এর রাস্তা এবার ক্লিয়ার।ভাই ওঠ ম*রা*র আগে গুড নিউজ টা শোন।আপাতত মরিস না।আমরা ফর্ম ফিল আপের ঝামেলায় আছি।ফ্রি হয়ে নেই দেন ম*রি*স।আর না ম* র* লে*ও চলবে আপাতত। ছোঁয়ার রাস্তা ক্লিয়ার।
দ্বীপ বলল,

‘শা**লা* মাদারবোর্ড তাহলে বিয়ে করবে না ফাউ ফাউ টাইম পাস করছিল?

আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,

‘না না বিয়ে করবে।বিয়ে করবে না ব্যাপার টা এমন নয়।ওশান এর ওয়াইফ কে ওশানের পছন্দ নয়।’

মৃন্ময় বলল, ‘তাহলে ওর বউ আমারে দিয়ে দিক।আমার আবার মন ভাঙা মেয়ে ভালো লাগে।এরা ভালবাসাহীনতায় ভুগে তাই কারো ভালবাসা পাইলে উজাড় করে ভালবাসে।দীর্ঘদিন এমন মাইয়া খুঁজতেছি।আমি ভাঙা মন জোড়া দিয়ে নেব।

অলওয়েজ ফান করিস না মৃন্ময়?

দ্বীপ মৃন্ময় কে চাটি মেরে বলল,

সিরিয়াস ব্যাপারে ফান করিস না।
সারাহ তাহলে কি ওশানের ছোঁয়ার গাড়ি,বাড়ি দেখে মাথা ঠিক নেই?

হ্যাঁ এটাও একটা কারণ কিন্তু।
কিন্তু ছোঁয়া এটা মেনে নিবে কীভাবে?’

কেনো মেনে নিবেনা?তন্ময়ের সাথে বিয়ে করায় দিবো।আমরা আছিনা ওরে মানিয়ে নেওয়ার জন্য।

এরই মাঝে ছোঁয়া ও ভিজে নেয়ে একাকার হয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে উপস্থিত হলো।আমার আর দ্বীপের আলোচনা থামাতে মৃন্ময় বলল,

‘সারাহ, ছোঁয়া এসেছে।
তিনজনেই ছোঁয়ার দিকে তাকালাম।ছোঁয়া আমাদের তিনজনের দিকে একবার তাকিয়ে তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে রাগে কটমট করে বলল,

‘আচ্ছা এরে জু** তা দিয়ে পিটাতে হয়না বল?ওরে টেনে তোল আগে।আমি আগে ওরে জু**তা দিবো।তারপর ও মরবে।না মানে আমি রাগ করে বলেছি যে তোর সাথে রিলেশন নেই আমার আর ও সু**ই**সা**ই**ড করবে?মানে কি ফাইজলামি পাইছে?আমার প্রেসার বাড়ায় দিছে।রিলেশন না হয় করিনা ;তাই বলে কি আমি ওরে ভালবাসিনা?ও আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।’

ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে মলিন কন্ঠে বললাম,

তুই বা বলিস কেনো?তুই জানিস না ও কত উইক তোর প্রতি?

ও কেনো উইক হবে?উই আর বেষ্ট ফ্রেন্ড।আমার এমন কোনো ফিল আসেনা ওর প্রতি।আমাত যদি এক সেকেন্ডের জন্যও তন্ময়ের প্রতি ফিল আসতো তাহলে আমি ওশান কে ছেড়ে দিতাম সাথে সাথে।ওশানের প্রতি আমার যত অনুভূতি তা কাউকে বুঝাতে পারব না।তাছাড়া তন্ময়কে তো কত মেয়ে ভালবাসে।যে ওকে ভালবাসে না কেনো তার পিছে পড়ে আছে?

প্রিন্সেস ডায়নার একটা উক্তি মনে পড়ে গেল ছোঁয়া, “আমি যাকে ভালবেসেছিলাম সে বাদে সারা বিশ্ব আমাকে ভালবেসেছিলো।”এ টাইপ কিছু একটা ছিল মেইবি।

দ্বীপ বলল, তন্ময় এর কথা বাদ দে সারাহ।কোনো ভনিতা না করে ছোঁয়াকে ডিরেক্ট বল ওশানের ব্যাপার টা।

কী বলবে?

তুই এত বোকা ক্যানো ছোঁয়া।শুধু ওশানের মিষ্টি কথা ই শুনে গেলি।ওর আড়ালের রুপ টের ও পেলিনা।

কো টের পাব?কী বলছিস সারাহ?
ওশান ম্যারিড ছোঁয়া।

ছোঁয়া হেসে বলল, ওশান আমাকে বলেছিল তুই আমাকে পরীক্ষা করতে এসব বলবি।আমি যেন মন খারাপ না করি।

দ্বীপ বলল, ‘বাহ!নাইস অভিনয়।ছোঁয়াকে আয়ত্তে রাখতে আগেই বলে রেখেছে।

আমি যেন কষ্ট না পায় এইজন্য বলেছে।

মৃন্ময় বলল, বাহ!ট্রু ল্যাব।ওশান কে পাইলে পাব্লিক প্লেসে জু** তা দিতাম।

মৃন্ময় ফান কর বাট প্লিজ ওকে অসম্মান করিস না।

তোর রুচি এত জঘন্য এক পোলার বাপরে পছন্দ করলি?

বেশি বেশি বলছিস এবার!

আমি বললাম, ও ঠিকই বলেছে।আর আমরা কেউ ফান করছি না।ওশান ম্যারেড ছোঁয়া।

সবাই মিলে কী পাইছিস তোরা?প্লান করে ওশানের নামে বদনাম করে আমাকে তন্ময় এর ঘাড়ে ওঠাতে চাইছিস?

আমি খেয়াল করলাম, ছোঁয়ার শরীর কাঁপছে।ও মুখে যাই বলুক ভেতরে ভেতরে টেনশন করছে।ভূমিকম্পনের মত ঘুরছে ছোঁয়ার চারিপাশ;কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেনা।

দ্বীপ বলল, দেখ ছোঁয়া তন্ময় এর সাব্জেক্ট বাদ।আমরা সত্য বলছি।

‘সত্য! প্রুভ কী?’

‘প্রুভ দেখালে কী করবি?ওশান কে ছেড়ে দিতে পারবি?নাকি ওই ল*ম্প*ট এর সাথেই থাকার সিদ্ধান্ত নিবি?

প্রুভ দেখা প্লিজ।আমি আর নিতে পারছিনা।

প্রুভ দেখালে কী করবি?ওশান কে গা*লি*গা*লা*জ করবি?দেন ওশান বিভিন্ন কারণ দেখাবে আর তুই ভালবাসার জন্য মাফ করে দিবি?

প্লিজ দ্বীপ!আমি আর সহ্য করতে পারছি না।এমন কিছু হলে আমি ওশান কে জীবনের মত শিক্ষা দিয়ে ছাড়ব।আমি ওই রকম প্রেমিকা নই যে, অন্য কারো স্বামী কেড়ে নিবো।অন্তত তোরা আমাকে চিনিস।

আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ছোঁয়ার চোখে মুখে কষ্ট।হৃদয় ভাঙার হাহাকার যন্ত্রণা। দুই ঠোঁট চেপে কাঁন্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে।

দ্বীপ আমাকে ইশারা দিয়ে বলল,

‘সারাহ! প্রুভ দেখা।’
চলবে?