এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব-০৬

0
238

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
পর্ব_৬
#নিশাত_জাহান_নিশি

অয়ন্তী এবং আলিজার তোপের মুখে পড়ে পুরোপুরি কথা না শুনেই রাফায়াত বাধ্য হলো পার্ক থেকে বের হতে। আলিজা এবং অয়ন্তীকে নিয়ে সে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এসবের মাঝে রাফায়াত একটা জিনিস লক্ষ্য করল, অয়ন্তী কিছুটা হলেও তার সাথে স্বাভাবিক হচ্ছে! রাফায়াতকে নিয়ে বেশ ভাবুক মনে হচ্ছে!

আলিজাদের এলাকা পাড় হয়ে ঠিক পরের এলাকাতেই অয়ন্তীদের বাড়ি। আলিজাদের এলাকায় বাস থামতেই আলিজা বাস থেকে নামার প্রস্তুতি নিলো। পাশের সিটে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকা অয়ন্তীকে শুধালো,,

“কী রে? তুই একা যেতে পারবি তো? নাকি সামনের স্টপ পর্যন্ত আমরা তোকে এগিয়ে দিয়ে আসব? কী বলিস?”

চট করে রেগে বসল অয়ন্তী! বিক্ষুব্ধ চাহনিতে আলিজার দিকে ঘুরে তাকালো৷ নাক ফুলিয়ে রূঢ় গলায় বলল,,

“হাউ স্ট্রেঞ্জ আলিজা! আমি কী এখন নিজের বাড়ি অবধিও একা একা যেতে পারব না? তাও আবার এই দিনে-দুপুরে? কী পেয়েছিসটা কী তোরা আমাকে বল তো?”

চুপসে গেল আলিজা। অবিন্যস্ত দৃষ্টিযুগল ফেলল আলিজার দিকে। টিমটিমে স্বরে বলল,,

“না। তুই তো ঐসময় আরিফকে ভয় পাচ্ছিলি তাই বললাম।”

চোখ লাল করে অয়ন্তী আলিজার দিকে তাকালো। আলিজা কীভাবে তার মজা উড়ালো! এতই ভীতু নাকি সে? সঙ্গে সঙ্গেই আলিজা ঠোঁট চেপে হেসে বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো। অয়ন্তীকে কিছু বলার সময়টাও অবধি দিলো না। অন্তত বাসের মধ্যে সে অয়ন্তীর সাথে ঝগড়া করতে পারবেনা। বাসের দরজা থেকে রাফায়াত আলিজাকে ইশারা করে বলল সামনে এগিয়ে আসতে। ইশারা বুঝে আলিজা রাফায়াতের দিকে এগিয়ে গেল। হুডির টুপিটা সরিয়ে রাফায়াত আলিজার জিজ্ঞাসু মুখমণ্ডলে তাকালো। কর্ণতলে ফিসফিসিয়ে বলল,,

“আমি অয়ন্তীকে এগিয়ে দিয়ে আসছি ওকে? তুমি বাড়ি যাও।”

দ্বিমত পোষণ করল আলিজা। দ্রুত গলায় বলল,,

“এই না না ভাইয়া। অয়ন্তী রাগ করবে। এমনিতেই সে আমার উপর প্রচুর ক্ষেপে গেছে। এখন আবার আপনাকে দেখলে আরও বেশী ক্ষেপে যাবে।”

“আরে ধূর। রাখো তোমার ক্ষেপাক্ষেপি! ঐ ক্ষেপিকে আমি সামলে নিব! এভাবে একা তাকে একা ছেড়ে দেওয়াটা আমার ঠিক মনে হচ্ছেনা। তাছাড়া তোমরা দুজন আমার দায়িত্বেই বের হয়েছ। রাস্তাঘাটে অপ্রীতিকর কিছু একটা ঘটে গেলে এতে পরে আমার নিজেরই খারাপ লাগবে। একচুয়েলি আমি রিস্ক নিতে চাইছিনা।”

“ঠিক বলেছেন ভাইয়া। আরিফের সাথে বিশ্বাস নেই। সে হয়তো এতক্ষণে আমাদের ফলো করা শুরু করেছে। যা অসভ্য এই ছেলে! আপনি এক কাজ করুন ভাইয়া। অয়ন্তীকে বাড়ি অবধি পৌঁছে দিয়ে আসুন। আমি বরং এখানেই নেমে যাচ্ছি।”

বাস থেকে নেমে পড়ল আলিজা। রাফায়াত উঁকি মেরে বাঁকা চাহনিতে অয়ন্তীর দিকে তাকালো। আড়চোখে বাসের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা রাফায়াতের দিকে তাকালো অয়ন্তী। রাফায়াতের চোখে চোখ পড়তেই অয়ন্তী দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো! চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে বিড়বিড়িয়ে বলল,,

“ধ্যাত। এই মা’স্তা’নটা কেন নামছে না গাড়ি থেকে হ্যাঁ? আলিজা তো নেমে গেল। এর তাকানোর লক্ষ্মণও তো ভালো ঠেকেনি আমার! আবার কী ব্ল্যা”কমে”ইল করতে আসবে আমাকে?”

ভাবতেই গাঁ টা ছমছম করে উঠল অয়ন্তীর! দম নেওয়ারও কিঞ্চিৎ সময় পেলনা অয়ন্তী। ঝড়ের বেগে তেড়ে এসে রাফায়াত অয়ন্তীর পাশের সিটে বসে পড়ল! ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে অয়ন্তী রাফায়াতের ভাবশূণ্য মুখের দিকে তাকালো। অমনি রাফায়াত অয়ন্তীকে চোখ মেরে দিলো! যাত্রীরা নামার সাথে সাথেই ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দিলো। আচমকাই গাড়িটা কেমন ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই অয়ন্তী এসে ছিটকে পড়ল রাফায়াতের গাঁয়ের উপর! ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটে গেল যে অয়ন্তী কিছু বুঝে উঠতে পারলনা। কেমন যেন বেকুব বনে রইল। ব্যগ্র হাসল রাফায়াত। অয়ন্তীর হঠকারী মুখমণ্ডলে কদাকার দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। দুষ্টু গলায় বলল,,

“কী ম্যাম? সহ্য হচ্ছিলনা না? কখন আমার মত একটা হ্যান্ডসাম ছেলের গাঁয়ের উপর এসে এভাবে হামলে পড়বেন অস্থির হয়ে উঠেছিলেন তাইনা?”

“শাট ইউর মাউথ ওকে? আমি ইচ্ছে করে আপনার গাঁয়ের উপর পড়িনি। ড্রাইভার হঠাৎ করেই গাড়িটা ব্রেক নেওয়াতেই এই অঘটনটা ঘটে গেছে।”

“আরে হইছে হইছে। আসল ঘটনাটা যে আসলে কী তা তো আমি বেশ ভালোভাবেই বুঝে গেছি! উফফফস! এখনো গাঁয়ের সাথে লেগে আছে। কেমন হট হট ফিলিংস হচ্ছে!”

ঝট করে রাফায়াতের গাঁ থেকে সরে এলো অয়ন্তী। মুখের সামনে পড়ে থাকা এলোমেলো চুলগুলোকে দু’হাত দিয়ে সরিয়ে হিংস্র দৃষ্টিতে তাকালো রাফায়াতের দিকে। ওড়নাটাকে ভালো করে বুকে জড়িয়ে নিলো। চোয়াল উঁচিয়ে বলল,,

“এই? আপনি এত অসভ্য কেন হ্যাঁ? এত হট হট করছেন কেন?”

“আপনি দেখতে হট তাই! উফফফস! আবারও হট হট লাগছে!”

“ইশশ! কী বিচ্ছিরি কথাবার্তা।”

“কে বলল বিচ্ছিরি এটা বিচ্ছিরি কথা? হট আবার বিচ্ছিরি ভাষা হয় কীভাবে? আমি তো জানি হট খুবই কমন ভাষা। আমার মত হ্যান্ডসাম ছেলের কাছে খুবই কমন! আমাকে দেখার পর সব মেয়েদের মুখে শুধু হট শব্দটা উঠেই থাকে!”

“কথায় কথায় শুধু হ্যান্ডসাম আর হ্যান্ডসাম করছেন কেন? আপনি জানেন? আমার অনিক ভাই আপনার চেয়ে কতটা হ্যান্ডসাম?”

“ওহ্ আই সি! তো বলো কতটা হ্যান্ডসাম?”

“ওয়েট ছবি দেখাচ্ছি!”

পার্স থেকে অয়ন্তী তার সেলফোনটি বের করল। গ্যালারী ঘেঁটে অনিকের ফরমাল লুকের একটি সুন্দর ছবি বের করল। রাফায়াতের মুখের কাছে ফোনটি ধরে বেশ অহংকার নিয়ে কড়া গলায় বলল,,

“দেখুন দেখুন। আমার বফ কতটা হ্যান্ডসাম! আপনার চেয়ে দ্বিগুন হ্যান্ডসাম।”

অয়ন্তীর হাত থেকে ফোনটি ছোঁ মেরে কেড়ে নিলো রাফায়াত। শান্তশিষ্ট মুখমণ্ডল তার মুহূর্তের মধ্যেই অশান্ত হয়ে উঠল৷ চোখে-মুখে অঢেল রাগ ফুটে উঠল। নাকের ডগা ক্রমশ লাল হতে লাগল। হাত-পা কচলাতে লাগল। অনিকের হাসোজ্জল ছবিটির দিকে তাকিয়ে ক্ষোভ ঝেড়ে বলল,,

“অতিরিক্ত হ্যান্ডসাম ছেলেরা যে অতিরিক্ত রকমের ক্যারেক্টারলেস হয় জানো তুমি?”

রাগে বিক্ষুব্ধ হয়ে অয়ন্তী রাফায়াতের হাত থেকে ফোনটি কেড়ে নিলো। রাগে গজগজ করে বলল,,

“কে বলল আমার অনিক ক্যারেক্টারলেস হ্যাঁ? শুনুন? মেপে ঝেপে কথা বলবেন আমার সাথে। অনিকের নামে উল্টো পাল্টা কথা তো ভুলেও নয়। আমারই ভুল হয়েছে! অনিকের ছবিটা আপনাকে দেখানো। জেলাসী থেকে আপনি এমন করছেন। আজ বুঝতে পারলাম ছেলেরাও জেলাসী হয়।”

অয়ন্তীর কথার মধ্যে হুট করেই বাস থেমে গেল। তিনজন মাঝবয়সী ছেলে তাড়াহুড়ো করে বাসে উঠে পড়ল। বাসে উঠেই তারা সিট খুঁজতে আরম্ভ করল। তাদের আড়চোখে দেখামাত্রই ঘাবড়ে উঠল রাফায়াত! হুডির টুপিটা যদিও তার মাথায় তবুও সে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য অয়ন্তীর পারমিশন ছাড়াই অয়ন্তীর ওড়নার আঁচলটি তার মুখের উপর মেলে ধরল! ছেলেগুলো রাফায়াতের সিটের সামনে আসতেই অয়ন্তী অতিষ্ট হয়ে রাফায়াতের মুখ থেকে ওড়নাটি সরিয়ে নেওয়ার পূর্বেই রাফায়াত অয়ন্তীর হাত টেনে ধরে অয়ন্তীকে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো! ঘটনার আকস্মিকতায় ভড়কে উঠল অয়ন্তী। আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পরিস্থিতিতে রইলনা। অজানা ভয়ে রাফায়াতের হার্ট দ্রুত গতিতে বিট করতে লাগল! অয়ন্তী কান পেতে সেই হার্টবিটের আওয়াজ শুনছিল। ছেলেগুলো একবার অয়ন্তী এবং রাফায়াতের দিকে চোখ ঘুরিয়ে তাকালো। দুজনকে চিপকু অবস্থায় দেখে মিটিমিটি হেসে তারা পেছনের দিকে চলে গেল। পেছনের ফাঁকা সিট গুলোতে তিনজন চাপাচাপি করে বসল। গাড়ি ছেড়ে দিতেই রাফায়াত তাড়াহুড়ো করে অয়ন্তীকে তার বুক থেকে ঠেলে সরিয়ে দিলো! অপমানিত বোধ করল অয়ন্তী। মৃদু চিৎকার করার পূর্বেই রাফায়াত মুখ থেকে ওড়নাটি সরিয়ে অয়ন্তীর মুখটি হালকা ভাবে চেপে ধরল। কর্ণতলে ঠোঁট ঠেকিয়ে গুঞ্জন তুলে বলল,,

“একটু চুপ থাকো প্লিজ। এতে যেমন তোমারও ভালো হবে, তেমনি আমারও।”

চোখ দুটো প্রকাণ্ড করে অয়ন্তী উম উম করতে লাগল। ইশারায় বুঝাতে লাগল তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। হাতটা সরিয়ে নিতে। পাশের সিট থেকে লোকজন কটু দৃষ্টিতে রাফায়তের দিকে তাকাচ্ছিল। ঝামেলা বাড়তে পারে সেই ভয়ে রাফায়াত চট করে অয়ন্তীর মুখ থেকে হাতটি সরিয়ে নিলো। গলা খাঁকিয়ে কিঞ্চিৎ নড়েচড়ে বসল। বিড়বিড় করে কাশতে থাকা অয়ন্তীকে বলল,,

“বাস থামলেই কিন্তু আমার পেছনে পেছনে হাঁটা ধরবে। মুখ থেকে একটা টু শব্দও বের করবেনা।”

অয়ন্তী কী বলবে ভেবে পাচ্ছিলনা। কেবল আক্রোশিত দৃষ্টিতে রাফায়াতের অস্থির মুখমণ্ডলের দিকে তাকিয়ে রইল। এই মুহূর্তকে রাফায়াতকে খু”ন করতে ইচ্ছে করছিল তার। তবে ব্ল্যা”ক”মোইলিংয়ের ভয়ে চুপ হয়ে রইল! পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে বাস এসে অয়ন্তীদের এলাকায় থামল। হুডির টুপিটা ভালো করে মাথায় পড়ে রাফায়াত চ্যালচ্যালিয়ে হেঁটে বাস থেকে নেমে গেল। জানালার কাঁচ দ্বারা ঐ তিনটি ছেলেকে রাফায়াত আড়চোখে দেখল। অস্ফুটে সুরে বলল,,

“ড্যাম ইট। ইয়াদের কাজিনরা এখানে কী করছে? অনিক আবার তাদের হায়ার করলনা তো? এমন কিছু হলে তো অয়ন্তীকে একটা ছেলের পাশে দেখলে ওরা অভেয়সলি রিয়েক্ট করত। আই থিংক অয়ন্তীকে তারা চিনতে পারেনি! যাই হোক, আমাকে এবার থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমি যে অনিকের এলাকাতেই আছি তা কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা!”

রাফায়াতের পিছু পিছু বাস থেকে নেমে পড়ল অয়ন্তী। রাফায়াতের ঠিক পেছনের দিকটায় দাঁড়িয়ে সে রণরঙ্গিণী ভাব নিলো। কোঁমড়ে দুহাত গুজে মুখের আদল যতটা সম্ভব কুঁচকে নিলো। খরতর গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“এই আপনার সমস্যাটা কী হ্যাঁ? সমস্যাটা কী? বাসের মধ্যে ওভাবে আমার মুখ চেপে ধরেছিলেন কেন? কেনই বা আমার ওড়নার আঁচল আপনার মুখের উপর ধরে রেখেছিলেন? কারণ কী এসবের হ্যাঁ? কারণটা কী? এমন একটা ভাব নিচ্ছিলেন মনে হচ্ছিল যেন আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড!”

“ইশশশ! হবে নাকি আমার গার্লফ্রেন্ড?”

ঠোঁট কামড়ে রাফায়াত কথাটা অয়ন্তীকে জিজ্ঞেস করল! মুখমণ্ডলে ফুটিয়ে তুলল দুশ্চরিত্রের ছাপ! প্রচণ্ড রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল অয়ন্তী। গিজগিজিয়ে ওঠে রাফায়াতের একদম মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো। রূঢ় স্বরে বলল,,

“এই আপনি এত লু’চ্চা কেন হ্যাঁ? এত লু’চ্চা কেন? আমার বয়ফ্রেন্ড আছে জানা সত্ত্বেও আমার সাথে লুচ্চামি করছেন।”

মুহূর্তের মধ্যেই রাফায়াতের দুষ্টু মুখে অস্থিরতার ছাপ ফুটে উঠল। অধীর দৃষ্টিতে সে এদিক-ওদিক তাকিয়ে হুট করেই অয়ন্তীর সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই সে দৌঁড়ে কোথায় যেন একটা হারিয়ে গেল! অয়ন্তী রাফায়াতকে তার দৃষ্টির সীমানায় আর ঠাওড় করতে পারলনা। ইতোমধ্যেই পেছন থেকে হঠাৎ অনিকের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো! অয়ন্তীর বুকটা কেমন যেন ধড়ফড়িয়ে উঠল। কোনো দিকে কালক্ষেপণ না করেই সে পিছু ঘুরে তাকালো। হাসতে হাসতে অনিক অয়ন্তীর দিকে এগিয়ে এলো! তাজ্জব বনে দাঁড়িয়ে থাকা অয়ন্তীর মুখপানে তাকিয়ে হাসি হাসি গলায় বলল,,

“হেই অয়ন্তী! তুমি এখানে কী করছ? চাচীমনি তো বলল তুমি বাসায় আছো!”

থতমত খেয়ে গেল অয়ন্তী। অবিলম্বেই মাথা নুইয়ে নিলো৷ আমতা আমতা স্বরে বলল,,

“ঐ তো অনিক বাড়িতেই যাচ্ছিলাম।”

“আচ্ছা চলো। আমরা বরং একসাথেই বাসায় যাই।”

অয়ন্তীর হাত টেনে ধরে অনিক পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এইতো সামনেই অয়ন্তীদের বাড়ির মেইন গেট। অস্থির দৃষ্টিতে অয়ন্তী দৃষ্টি ঘুরিয়ে কেবল আশেপাশে তাকাচ্ছিল। রাফায়াত কোথায় গেল তাই তাকে গভীর চিন্তায় ডুবিয়ে দিলো!

,
,

আধভাঙা পুরোনো একটি গ্যারেজে আপাতত রাফায়াত পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে! একহাতে সিগারেট তার অন্যহাতে আরিফের শার্টের কলার! কপাল থেকে টপটপ করে র’ক্ত গড়িয়ে পড়ছে তার। আরিফের নাক থেকেও র’ক্ত পড়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে। সিগারেটটিতে সানন্দে একটি ফুঁক দিয়ে রাফায়াত শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল আরিফের দিকে। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“এই? তুই জানিস না অয়ন্তী অনিকের গার্লফ্রেন্ড?”

আরিফ আধমরা অবস্থাতেই খুকখুক করে কেশে বলল,,

“জাজাজানি।”

“তাহলে ডিস্টার্ব করছিস কেন অয়ন্তীকে? কেন ফলো করছিলি আমাদের?”

“ধূর! অনিক সিরিয়াস নাকি অয়ন্তীকে নিয়ে! অনিকের তো এক মেয়েতে হয়না! তার প্রতিদিন নতুন নতুন মেয়ে চাই। কিছুদিন আগেও তো শুনলাম একটা মেয়েকে এবর্শন করানো হয়েছে। মেয়েটির নাম সম্ভবত প্রিয়া!”

#চলবে???