কতোবার বোঝাবো বল পর্ব-১৪+১৫

0
2561

#কতোবার_বোঝাবো_বল🌿
#ইফা_আমহ্নদ
পর্ব::১৪

— এই মেয়ে তোমার গাল গাল দুটো একদম স্টোভেরির মতো লাগছে ।।ইচ্ছে তো করছে টুস করে পেরে খেয়ে ফেলি । আচ্ছা এতো ঝাল খেলে বুঝি গাল দুটো স্টোভেরির মতো হয়ে যায়,, কিন্তু আমি তো ঝাল খেতে পারি না।। এখন যদি তোমাকে খেয়ে ফেলি তাহলে কি আমি স্টোভেরির মতো হবো !!( আমার দিকে তাকিয়ে কৌতূহল নিয়ে আবির)

ইচ্ছে তো করছে ,,,গালে ঠাটিয়ে দুটো লাগিয়ে দেই ।। কিন্তু সিনিয়র বলে কথা‌।। নাহলে ভাবতাম না ,, সোজা বসিয়ে দিতাম।। এমনিতেই ঝালে আমার অবস্থা নাজেহাল তার ওপর আবার এর ঝামেলা মেজাজ টাই নষ্ট করে দিলো ।। কিন্তু আমাকে তো চ্যালেঞ্জ টা জিততে হবে ।। নাহলে ফুচকার সব পে আমাকে করতে হবে ।। চ্যালেঞ্জ টা ছিলো এমন যে ,,, আমি যদি ৮ প্লেট ফুচকা খেতে পারি তাহলে আহাদ সব পে তো করবেই সাথে ওর জিএফ এর সাথে ব্রেক আপ করবে।।আর যদি না পারি তাহলে একদিনে যা টাকা খরচ করবে সব তো আমাকে দিতেই হবে সাথে আবার আজকের ফুচকার পে টাও করতে হবে ।। তাই হাওয়ায় মন দিলাম।। হাতের প্লেটাও শেষ করে আরো একটা প্লেট নিয়ে খেতে থাকলাম,, কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা শেষ হয়ে গেল।। শেষ হয়ে গেল ৭ টা প্লেট।। চোখের অশ্রু টলটল করছে।।শরীর হার মেনে গেছে ।। কিন্তু আমার জেদের কাছে তা তুচ্ছ ।। তাই আরো একটা প্লেট হাতে নিতেই আবির এসে আমার হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো ,, আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে।। আমি তাকে দেখেও না দেখার ভান করে আরো একটা হাতে তুলে নিলাম।। এবার ও আবির ঠিক আগের মত আমার হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে ফেলে দিয়ে দাঁত কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।। মনে হচ্ছে,,এই আমাকে খেয়ে ফেলবে ।। কিন্তু তার দিকে দৃষ্টি পাত করছি না।। তাই আমি ও রাগের মাথায় তার কলার টা চেপে ধরে জোরে জোরে বলতে লাগলাম…..

— কি পেয়েছেন টা কি আপনি ।। হে বলুন কি পেয়েছেন।। আমাকে কি আপনার মানুষ মনে হয় না।। কেন বিরক্ত করছেন আমাকে ।। আমি কখনো হারতে শিখিনি।। আর হারতে চাই ও না।। চ্যালেঞ্জ ধরা আমার হবি আর এতে আমার যা হওয়ার তাই হবে,,, কিন্তু আমি হার মানতে রাজি নই।। লাইফে একবার আমি হেরেছি ।। আর সেই মানুষটা হলেন আপনি ।। আর আমি লাইফে কোনোদিন হারতে চাই না।। সেটাই আমার লাইফের প্রথম এবং শেষ হার হিসেবে থাকবে ।। বুঝতে পেরেছেন আপনি!!( চেঁচিয়ে বললাম আমি)

আমার কথায় উওরে আবির আর কোনো কথা বলবো না। আমিও আবিরের কলারটা ছেড়ে দিয়ে এক প্লেট ফুচকা নিয়ে খেতে থাকলাম।। শেষ প্লেট ফুচকা খেতেই না চাইতেও আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরতে শুরু করলো।। কিন্তু তবুও আমার ফুচকা খাওয়া কমছে না।। আবির একটা ফুচকা আমার প্লেট থেকে নিয়েছিলো ,, যার কারনে ৮ প্লেট পূর্ণ হয়নি।। তাই অন্য একটা প্লেট থেকে একটা ফুচকা মুখে তুলে চিবুতে লাগলাম।। খেতে পারছি তবুও জোর করে খাচ্ছি ।। মাথাটা ঘুরছে ,, চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে,, পুরো শরীর লাল হয়ে গেছে,,আর জ্বলছে।। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকার মতো শক্তি আমার নেই তাই সেখানে দাঁড়িয়ে “গেম ইজ ওভার ,,আই এম উইন ” বলেই একটা রিক্সা নিয়ে বাড়ি চলে এলাম।।

বাড়ি ফিরে নিজের রুমে যাওয়ার শক্তিটুকুও খুঁজে পেলাম না।। ড্রয়িং রুম পর্যন্ত আসতেই মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলাম।। মাম্মাম আর আপি আমার কাছে এসে আমাকে তোলার চেষ্টা করছে ,, আর কিছু দেখার আগেই সেখানে জ্ঞান হারালাম।।

জ্ঞান ফিরতেই নিজের রুমে আবিষ্কার করলাম।। পাপা মাম্মাম ,আসি আর ভাইয়া আমার পাশে।। চারদিকে ভালোভাবে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম রাত হয়ে গেছে।। আমার জ্ঞান ফিরতেই মাম্মামের রাগারাগি শুরু হয়ে গেলো। আমি অসুস্থ হওয়ার পর ই নাকি মাম্মাম তাসফিকে ফোন করে জানতে পেরেছিলো আমার কেন এই অবস্থা।। এখন আর কি করার মায়ের ঝাড়ি খাও।। মাম্মাম অনেকক্ষন নিজে নিজে বকবক করে থেমে গেল।। তারপর খাবার এনে নিজের হাতে আমাকে খায়িয়ে দিয়ে ব্লাকেট আমার শরীরে দিয়ে তার রুমে চলে গেলো ।। আজকে আপি আমার সাথে ঘুমাবে তাই মাম্মাম তার নিজের রুমেই ঘুমাবে।।আপি আমার পাশে শুয়ে আমার কপালে তার ঠোঁট দুটো ছুয়িয়ে দিয়ে ,,,আমাকে জরিয়ে ধরলো।।আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো সাথে গানও গাইতে লাগলো ।।আমিও আপিকে জরিয়ে ধরে তার গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লাম।।

🍂 🍂 🍂

ঘুমের মধ্যে বেডের পাশ হাত দিতেই ফাঁকা ফাঁকা অনুভব করলাম । তাকিয়ে আপিকে দেখতে পেলাম না।। চোখ সরিয়ে জানালার দিকে দিতেই চমকে উঠলাম।। বাহিরে তাকিয়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এখন প্রায় ১১ টার বেশি বাজে ।। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম ১১.১৫ ।। হয়তো তাই আপি উঠে গেছে।। আমিও একটু উঠে ওয়ালরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম কিন্তু এখনো ঘুমের রেশ কাছে নি তাই আবার ঘুমাবো ঠিক করলাম।। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বেডের দিকে তাকাতেই দেখলাম….
কেউ একজন ব্লাকেট পেঁচিয়ে শুয়ে আছে ।।হয়তো আপি এসেছে তাই এগিয়ে গিয়ে আমিও ব্লাকেটের ভেতরে ঢুকে আপিকে জরিয়ে ধরলাম।। তার পর বললাম…

— কোথায় গিয়েছিলি বল তো ,, আমি তোকে খুঁজছিলাম।।

কিন্তু কোনো উত্তর পেলাম না।। তার আপিকে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার বুকে মাথা রেখে নাকটা টেনে দিলাম।। হঠাৎ কোনো শক্তপোক্ত হাত আমাকে ঝাপ্টে জরিয়ে ধরলো।। আমার জীবন যাই যাই অবস্থা।। শ্বাসটাও যেনো আটকে যাচ্ছে।। তাই আমি সরানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।। কিন্তু পারছি না।। তাই জোরে জোরে বললাম….

— আপি তোর শরীর কবে থেকে এতো শক্ত হলো বল তো ।। কালকে রাতে যখন তুই আমাকে জরিয়ে ধরেছিলি তখন তো এমন কষ্ট হয়নি ।। পিলিজ হাত সরা ।।
কিন্তু আমার কথায় সামনে থাকা লোকটা কোনো কথাই বললো না।। আমি লোকটাকে সরানোর চেষ্টা করছি ।। হঠাৎ করেই আমার হাত তার মাথায় যেতেই ধমকে গেলাম।। চুলগুলো ছোটো ছোটো।। আমি ভয়ে একটা ঢোক গিললাম।। তারপর বললাম…

— দদেখুন ছছারুন ।। আমি কিন্তু চেঁচিয়ে সবাইকে ডাকবো ।।
তবুও সামনে থাকা লোকটি কোনো টু শব্দটি ও করে নি।। আর আমি জোরে ডাক দিতে যেতেই আমার মুখটা চেপে ধরলো ।। আমি ছারানো আপ্রাণ চেষ্টা করছি।। কিন্তু পারছি না।।
হঠাৎ দরজায় নক করার শব্দে লোকটা আমাকে ছেড়ে দেয়।। ছাড়া পেতেই আমি এক দৌড় দেই।। কিন্তু বিপদ আরো কমার বদলে বেড়ে যায়।। দৌড় দিয়ে বেরুনোর বদলে বেডে থেকে পড়ে কোমরে ব্যথা পাই।। ব্লাকেট সরিয়ে দেখতে নিবো কিন্তু তা আর হলো না ,, যেভাবে দরজা নক করছে একটু হলেই ভেঙে যাবে।। তাই আর মানুষটিকে দেখা হলো না।। ভাবলাম আগে দরজা খুলে দেই তারপর নাহয় দেখবো।। এই ভেবে দরজা খুলে দিলাম,,,খুলে দেখলাম মাম্মাম এসেছে।।

— কি রে ,,ভেতরে বসে কি একা একা ফুটবল খেলছিলি নাকি ??( দরজা খুলতেই রাইসা)

— না শুধু ফুটবল কেন ক্রিকেট,,বেডমিন্টন ,,হলিবল সব খেলছিলাম !!( প্রিন্ট করে আমি)

— কি জানো পরে যাওয়ার আওয়াজ পেলাম তাই জিজ্ঞেস করলাম,,কি পরেছে!!( কৌতূহল নিয়ে রাইসা)

— আমি পড়েছি ।। যেভাবে দরজা ধাক্কা দাও না তুমি,, মনে হচ্ছিল বাড়িতে ডাকাত পরেছে ।। সেই ডাকাত ধরতে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বেডে থেকে পড়ে গেছি তাই ,, (কোমরে হাত দিয়ে আমি)

— ও আচ্ছা,,আবির কোথায়??

— আবির কোথায় আবির বলবো কীভাবে আজব ।। আমি কি ওর বিয়ে করা বউ যে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করতাছো ।। যাও তো এখন থেকে ঘুমাতে দাও!!( মেজাজ গরম করে আমি)

— ও তো বললো তোর রুমে আসবে ।। আসে নি তাই তো ।। বললো কফি খাবে ,, হিয়া কফি বানিয়ে ওকে খুঁজছে,,কি পাচ্ছে না।। ( রাইসা)

— কি উল্টা পাল্টা বলছো তুমি আপি তো আমার রুমে ।। ঐ দেখো শুয়ে আছে ।।( দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে বেডকে উদ্দেশ্য করে আমি)

কিন্তু বেডে কেউ নেই।। কিন্তু একটু আগেই তো ছিলো।।আমার মাথায় লোকটার চুলের কথা মনে পড়তেই আমি তাড়াতাড়ি ভেতরে গিয়ে সারা রুম খুঁজতে লাগলাম।। কিন্তু কাউকে পেলাম না ।। মাম্মাম আমার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে আসলে আমি কি খুঁজছি।।

— এই তুই মিথ্যা কথা কেন বললি ,,যে আবির তোর রুমে আসে নি।। আমি আগেই বুঝেছিলাম আবির এসেছিলো।। যখন তোর রুমের দরজা নক করা পেয়েছিলাম।। আবির তোর রুমে এসেছিলো,, তুই নোটস গুলো নিয়ে ওকে রুম থেকে বের করে দিয়ে দরজা লক করে দিয়েছিস ।।( টেবিলের উপর রাখা নোটস গুলোকে উদ্দেশ্য করে রাইসা)

আমি মাম্মামের কথা শুনে টেবিলের দিকে তাকাতেই কিছু নোটস দেখতে পেলাম।। কিন্তু এ নোটগুলো তো আমার না তাহলে ।।
আমাকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে মাম্মাম চলে গেল।। আমিও বেডের উপর বসে সে মানুষটাকে কে তা ভাবতে লাগলাম।। আবির নয়তো ।। হঠাৎ কেউ পেছন থেকে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে,,আমার কাঁধ থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে ,, আমার কাঁধে তার থুতনিটা রাখল।। কারো স্পর্শ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে আবিরকে দেখতে পেলাম।। সে আমার দিকে তাকিয়ে টেডি স্মাইল দিয়ে বললো …..

চলবে….💞💞

#কতোবার_বোঝাবো_বল 🌿
#ইফা_আমহ্নদ
পর্ব::১৫

— তোমাকে তো একটা শাস্তি পেতেই হবে ,, ভার্সিটির সবার সামনে তুমি আমার কলার চেপে ধরেছো ।। যাতে নেক্সাস টাইম থেকে আর কেউ সাহস না পায়।।(বাঁকা হেসে আবির)

— মমমমানে….!! ( আবিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বেড থেকে নিচে নেমে আমি)

— মানেটা আর বলবো না,, ডিরেক্টলি করে দেখাবো ,,(আবির)

বলেই আমার বেডে টানটান হয়ে শুয়ে পড়লো।। আমি তো আবিরের দিকে চোখ দুটো রশগোল্লা করে তাকিয়ে আছি।।

— পায়ে না প্রচুর ব্যাথা করছে,, একটু টিপে দাও তো ।। (পা দুটো কে ইশারা করে আবির)

— হে ইউ ,, আমি আপনার পা দুটো টিপে দিবো ।। পাগলা কুকুরে কামড়ায় নি আমাকে ।। নিজের বউকে গিয়ে বলুন।। (ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সোজা বসতে বসতে আমি)

— বউয়ের মত আমাকে কিস করতে পারো ,,, জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারো ,, আমাকে প্রপোজ করতে পারো।। তাহলে বউয়ের মতো সেবা কেন করতে পারবে না!!না করলেও সমস্যা নেই কিভাবে করাতে হয় আমি তা খুব ভালো করে জানি ।। ( আবির)

— তাহলে তা এপ্লাই করেন ,, আমিও একটু দেখি ।। বিয়ের পরে কাজে লাগতে পারে ।।(পায়ের উপর পা তুলে বসে আমি)

— এই ভিডিও টা আমি সবাইকে দেখিয়ে আসি ,,আর একটু নেকা কান্না করে আসি ।। দেখবে সবাই তোমার বিয়েটা আমার সাথে দিয়ে দিবে ।।তখন না হয় পা টিপে দিবে ,,, আর একটু আদরও করে দিবে ।। ( সেদিনের ভিডিও টা কে ডেডিকেট করে আবির)

বলেই উঠে দরজা খুলে নিচের দিকে যেতে নেয় ।। আমি এখন করবো ,, বুজতে পারছি না,,তাই তাড়াতাড়ি আবিরের কাছে গিয়ে ওকে টেনে রুমের ভেতরে এনে দরজাটা লক করে দিয়ে বলি …
আমি ও সব কথা শুনবো।। আমার কথা শুনে আমাকে ইশারায় বসতে বলে ।। আমি বসতেই পা দুটো আমার কোলে তুলে দেয়।। এই অসহায় বাচ্চাটা পা টিপতে থাকে ।। পা টিপছি আর ওর পিন্ডি চটকাচ্ছি ।।

— এই মেয়ে আমাকে বকা অফ করো ,,নাহলে শাস্তি আরো বাড়বে কিন্তু??(পা দিয়ে খোঁচা দিয়ে আবির)

— আমি তো আপনাকে মনে মনে বকা দিচ্ছিলাম,,তাহলে আপনি ,,, শুনলেন কিভাবে??( কৌতূহল নিয়ে আমি)

— তুমি যেভাবে পিঁপড়ার মতো পা টিপছো না,, তাতে সবাই বলবে তুমি আমাকে বকছো।। তাই আরেকটু জোরে জোরে টিপো ।।শরীরে একদম শক্তি নেই।।(আবির)

আমার শরীরে শক্তি নেই এটা শোনার পর আমি আবিরের পা টা নামিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওর পায়ের উপর পা দিয়ে চাপছি।। আবির তো ব্যাথায় আহহ উহহ করছে ,,,আমি তো আমার কাজ করেই যাচ্ছি।। আমি তো আরো জোরে জোরে করছি আর ওর পায়ে উপর নাচছি ।। নাচতে গিয়ে আমি পা পিচলে সোজা আবিরের উপর পড়লাম।।পড়েই আমি আবিরের শার্ট চেপে ধরে আছি ।। আবির তো আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।। আমিও তাকিয়ে আছি।।

— আমি তো তোমাকে পা টিপে দিতে বলেছি ,,আদর করতে নয় ।। এখন যদি একটু আদর করতে বলি ,,তাহলে যে কি করবে গড নো!!( ঠোঁট টিপে আবির)

আবিরের কথার মানেটা বুঝতে আমার বাকি রইলো না ।। তাই তাড়াতাড়ি আবিরের উপর থেকে উঠে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছি ।। আবির তার মাথাটা আমার কোলে রেখে আমাকে মাথাটা টিপে দিতে বললো।। আমিও টিপে দিতে লাগলাম।। তিনি তার মাথাযটা আমার কোমরে গুজে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলেন।।এক পর্যায়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন।।

২ ঘন্টা ধরে আবিরের মাথা টিপে দিচ্ছি।।হাতে প্রচুর ব্যাথা করছে।। বসে থাকার কারণে কোমরেও ব্যাথা করছে।। তার উপর আরো একজন ঘুমিয়ে আছে।। আবিরকে ঘুমানো অবস্থায় সত্যি ই বাচ্চাদের মত লাগছে।। আচ্ছা,,সব ছেলেদের কি ঘুমালে কি এতো মোহনীয় লাগে।। নাকি শুধু আবিরকেই লাগে ।। বাচ্চা দেখতেই সবসময় ওদের কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে ।। আর কাজ আবিরকে পুরো বাচ্চাদের মতো লাগছে।। ঠিক আগের মতই আমার ইচ্ছে করছে আবিরের কপালে ঠোঁট দুটি ছুয়িয়ে দিতে ।। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে না পেরে ঠোঁট দুটি ছুয়িয়ে দিলাম।। সাথে সাথে চুলগুলো ছুটে আবিরের মুখের উপর পরলো।। আবির একটু নরেচরে উঠি চোখ খুলে বললো…

— আমাকে আদর করতে ইচ্ছে করছে ,, আমি জেগে থাকলেই করতে পারতে ।। ঘুমানো অবস্থায় সুযোগ নেওয়ার কি দরকার??( ঘুম ঘুম চোখে আবির)

আমি আর কিছু বলবো তার আগেই খাবারের জন্য নিচে ডাক পরে ।। আবির উঠে নিচে চলে যায় ।। আবির যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমিও যাই টেবিলে।।

সবাই যার যার নিজের মতো করে খাচ্ছে।। কিন্তু আমার আর খাওয়া হচ্ছে না।। কারন আমার পাশের চেয়ারটাতেই আবির বসেছে। আর আমার দিকে ঢেপঢেপ করে তাকিয়ে আছে।। তবুও খাওয়া চেষ্টা করছি ।। এর মধ্যেই পাপা আর ভাইয়া অফিস থেকে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসেছে।।

— আরে আবির যে ,, কখন এলে দেখতে পেলাম না যে ??( চেয়ার টেনে বসতে বসতে তানজিম)

— আরো অনেক আগেই এসেছি,, (আবির)

— দেখলাম না তো ,, কোথায় ছিলে??দেখাও তো করলে না ।।(হিয়ান)

— কি যে বলো না শালা বাবু ,,পাশে থাকলে নামের বউ ,,,লাগে না আর কেউ!! বউয়ের সাথে রোমান্স রেখে কি আর তোমার সাথে নিরামিষ বসে থাকতে ভালো লাগে!!( বিরবির করে আবির)
আবিরের কথায় আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি।। আমি তার পাশে বসায় কথাটা শুধু কথাটা আমার কানে এসেছে।।

— কি যে বলো না তুমি ,,ওতো সেই কখন এসেছে,, কোথায় যে ছিলো ও নিজেই তা জানে ।।(রাইসা)

— আন্টি আমি তো মিষ্টির ঘরে ছিলাম।।(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আবির)

–কি হানি তুই যে বললি ,, আবির তোর রুমে নেই ।। তাহলে ও তোর রুমে কি করে ছিলো।।(রাইসা)

— আন্টি আমার মনে হয়,, আপনি যখন জানতে চেয়েছিলেন,,তারপর হয়তো আমি ওর রুমে গিয়েছিলাম।।আর এতোক্ষণ আমি ওকে নোটগুলো বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।।(আবির)

এতোক্ষণে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।। কিন্তু আমি কিছুতেই আবিরের নোটস নিবো না,,যদি একা বলি তাহলে জানো আবার কি বলে ।। তাই সকলের সামনে বললাম……

— বলছিলাম কি,, আপনার এই নোটস গুলো কিছুই আমি বুঝতে পারছি না।। তার চেয়ে বরং এগুলো আপনি নিয়ে যান ।।

— আঙ্কেল আমি যদি আরো কিছুক্ষণ আপনাদের বাড়িতে থাকি ,,তাহলে কোনো সমস্যা হবে।। আসলে আপনার মেয়ে তো এক্সাম ভালো না হলে বিয়েতে মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে রাখবে ।। তাই আমি যদি ওকে নোটস গুলো বুঝিয়ে দিয়ে যেতাম!!(ইনোসেন্স ফেইস করে আবির)

— এটা তুমি কি বললে ,,,এটা তোমার ও বাড়ি ।। যতোক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ তুমি এখানে থাকবে।। আর যখন ইচ্ছে তখন আসবে বুঝলে ।। তাছাড়া আমাদের কোনো সমস্যা নেই তুমি বরং ওকে বুঝিয়ে যাও !!( তানজিম)

পাপার কথার তালে তাল মিলিয়ে গেল সবাই ।। বিপদ একটু সরাতে পুরো আমার ঘাড়ে চেপে বসলো ।। এখন কি না এই আপদটাকে আমার সহ্য করতে হবে,,ও গড হেলেপ করো ।।

এখন রাত ২০ বাজে ।। আবির আমার রুম থেকে চলে যেতে কিছুক্ষণ আগে।। লান্ধ করে আসার পর থেকেই আমার সাথে ফেবিকলের মতো লেগে ছিলো।। পড়তে বসেও শান্তি পাইনি ।। আমার দুপাশের ফাঁকে তার দুপা দিয়ে চেপে ধরে স্লাইড করেছে।। এটা নাকি আমার শাস্তি ।। আমি তখন ওর দেওয়া নোটস গুলো ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম তাই।। যদি কিছু বলতাম তাহলেই ,, চোখ দিয়ে অগ্নি দৃষ্টি দিতো ।। তাই মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছি,, কিন্তু আমার সামনে কেউ থাকলে আমার পড়া হয় না,, তবুও।।

মাম্মাম ডিনার রুমেই পাঠিয়ে দিয়েছিলো ।। তাই আর নিচে গিয়ে খেতে হয়নি ।। রুমে খেয়েই পড়তে বসলাম।। পড়তে পড়তে কখন যে ২.৫০ বেজে গেছে ,, খেয়াল ই করি নি।। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম।।

🍂🍂🍂

ঘুম থেকে উঠেতে দেরি হয়ে গেছে।। তাই তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই বেরিয়ে যেতে নেই এক্সাম দেওয়া উদ্দেশ্য।। কিন্তু মাম্মাম আমাকে কিছুতেই না খেয়ে যেতে দেয় না ,, আমাকে টেনে এনে টেবিলে বসিয়ে দেয়।। টেবিলে পাশে চোখ পড়তেই আবিরকে দেখতে পেলাম।। তাহলে কি কালকে রাতে বাড়ি ফিরে নি !!!!!!

— এ যে আপনি কি কালকে বাড়ি যান নি নাকি ??!( কৌতূহল নিয়ে আমি)

চলবে ….💞💞

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,,, ধন্যবাদ)