গল্পঃ তুমি_ছারা_আমি_শূন্য পর্বঃ ৭+৮

0
1420

গল্পঃ তুমি_ছারা_আমি_শূন্য
পর্বঃ ৭+৮
লেখকঃ #Mohammad_Asad

“সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নেয় নিশাত। তারপর সকালের নাস্তা খেয়ে নেয়। কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিচ্ছে নিশাত। ছাদিকের ফোনে কল দেয় নিশাত।
-আসসালামু আলাইকুম,,
-হুম বলো নিশাত?
-কি করো এখন?
-এই তো স্কুলে যাচ্ছি।
-আচ্ছা,
-আর কিছু বলবে?
-নাহহ্ কিছু বলবো না,,
-আচ্ছা তাহলে বাই পড়ে কথা হবে।
-হুম ভালোবাসি।
-জ্বি ম্যডাম খুব বেশি ভালোবাসি।

নিশাত ফোনটা কেঁটে দেয়। এদিকে নিশাতের ভাই আরাফাত রুমে ডুকে সবকিছু শুনে নেয়।
-বাহহ্ আপু কার সঙ্গে কথা বলছিলে?
-আ,,আ,,আরাফাত তুই এখানে!
-হুম
-এইতো বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। তুই কখন আসলি?
-এই তো আরেকটু আগে।
-ওহ আচ্ছা।
-হুম
-কিছু শুনিস নাই তো?
-কি শুনবো আপু।

আরাফাত সয়তানি হ্যাঁসি দিতে থাকে।
-এই এমন করে হ্যাঁসছিস কেন?
-আহারে, আমার আপুটা প্রেম করে আর আমি যানিনা।
-কিসব বলছিস আরাফাত!
-কেন আপু কি বললাম।
-প্রেমের কথা বলছিস কেন?
-হা হা,, তুমি কাকে যেন ফোনে বলছিলে ভালোবাসি। দাঁড়াও এখুনি আম্মুকে বলে দিচ্ছি।
-প্লিজ ভাই এমন করিস না। আম্মুকে বললে আম্মু অনেক বকা দিবে।
-ইসস আপুটা দেখছি খুব ভয় পেয়েছে।
-হুম
-তাহলে ২০০ টাকা দে আপু। তাহলে কাউকে বলবো না।
-মানে,, আমার থেকে এতোটাকা নেই।
-তাহলে আম্মুকে গিয়ে বলি আপু প্রেম করে। তারাতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেও।
-এ্যাই দাঁড়া দিচ্ছি।
-গুড আপু,,
-কাউকে বলবিনা কখনো।
-হুম বলবো না। আচ্ছা আপু দুলাভাইয়ের নাম কি?
-ছাদিক,,
-অনেক সুন্দর দেখতে তাই না আপু।
-হুম
-ইসস আমার আপুটা দেখছি খুব লজ্জা পেয়েছে।
-ধুর কিসব বলিস লজ্জা পেতে যাবো কেন? তোর স্কুল কয়টার সময়।
-দশটা,,
-ওহ আচ্ছা।
-হুম,

আরাফাত এবার নিউ টেনে। আপুর কাছ থেকে ভুলভাল বুঝিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয় আরাফাত। আর নিশাত বোকার মতো টাকা দিয়ে দেয়। আরাফাত শুধু শুনতে পেরেছিলো ভালোবাসি শব্দটা। নিশাত ইচ্ছে করলে অন্যকিছু বলে কথাটা পার করে দিতে পারতো। আপুকে কিভাবে ঠকানো যায় আরাফাত তা ভালো করে যানে।

নিশাত কলেজে চলে যায়। একটা বড় গাছের নিচে আলামিন আর তানিয়া দাঁড়িয়ে আছে। নিশাত তানিয়ার কাছে গেলে আলামিন এখান থেকে চলে যায়। নিশাত তানিয়াকে বলে।
-কখন আসলি?
-এই তো আরেকটু আগে।
-বড় ভাইয়ের সঙ্গে কি কথা বলছিলি?
-তোর ব্যপ্যারে কথা বলছিলাম।
-তা কি বললি।
-বললাম যে তুই প্রেম করিস। তোকে যেন আর ডিস্টার্ব না করে।
-তা আলামিন বড় ভাই কি বললো?
-বললো তোকে নাকি ভুলতে পারবেনা। দরকার হলে নাকি জোর করে ভালোবাসা আদায় করবে। ভালোবাসা পাওয়া জন্য সব কিছু করবে।
-তাই নাকি
-তাই তো বললো, এখন নিজের সাবধানে রাখ।
-এরকম ছেলেকে হাজারটা থাপ্পড় দিলেও শরীলের রাগ মিটবে না। শুধু শুধু অশান্তি করতে চলে আসে জীবনে। আমি শুধু আমার হনুমানটাকে বিয়ে করবো আর কাউকে না।

“তানিয়া মুচকি হেঁসে বলে।”
-এই হনুমানটা কে নিশাত।”
-তোকে বুঝতে হবে না তানিয়া। এই হনুমানটা আমার কলিজা।
-এক্কেরে কলিজা।
-হুম আমার কলিজা আমার জীবন। আল্লাহ, নবী রাসুল, আব্বু আম্মু,, তারপরে যদি কাউকে খুব বেশি ভালোবাসি। সেটা হচ্ছে আমার হনুমান।
-তোদের প্রেম কতদিনের রে?
-এই তো ১মাস হয়েছে।
-মাত্র এক মাসে এতোকিছু।
-হ্যাঁ রে অনেককিছু।

নিশাত আর তানিয়া অনেকক্ষণ পযন্তু গল্প করে। তারপর ক্লাসে চলে যায়। সবগুলো ক্লাস শেষ করে দুপুরে দিকে নিশাত বাসায় যাবে তখন বৃষ্টি চলে আসে। নিশাত সিয়েন্জি অথবা রিকশা কোনোটায় পায়না। হঠাৎ করে এমন বৃষ্টি মেনে নিতে পাচ্ছে না নিশাত। নিশাতের বৃষ্টি খুব পচ্ছন্দের। খুব ইচ্ছে করছে বৃষ্টিতে ভিজতে। নিশাত একটা বন্ধ দোকানের পার্শে দাঁড়িয়ে থাকে। আশেপাশের দোকানগুলো বন্ধ করে নামাজ পড়তে গিয়েছে। নিশাত চোখ বন্ধ করে বৃষ্টিগুলো ছুঁয়ে দেখছে। হঠাত করে হাতে গরম অনুভব করে নিশাত। চোখ খুলে দেখে আলামিন বড় ভাই বাইক নিয়ে এসেছে। আর নিশাতের হাতে হাত দিয়েছে। নিশাত তা দেখে অনেক রেগে যায়।
-এই আমার হাত ধরেছেন কেন? আপনি আমার সিনিয়র না হলে না থাপ্পড় দিতাম গালে।
-নিশাত দেখো এখন রাগার সময় না। অনেক বৃষ্টি হচ্ছে এসো তোমাকে বাসায় পৌচ্ছে দিয়ে আসি।
-তার কোনো দরকার নেই।
-নিশাত দেখো আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই। তুমি না যেতে চাইলে না যাও। তবে বৃষ্টি ছারবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই বলছি কি বাইকে চড়ো। কয়েকমিনিটে বাসায় রেখে আসি তোমাকে।
-বললাম না দরকার নেই। এখান থেকে যান আপনি।

নিশাত রাগ করে ভিজতে ভিজতে হাঁটা শুরু করে। নিশাতের বাসা এখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। নিশাত রাস্তার এক সাইড দিয়ে হাঁটতে শুরু করে। কয়েকজন ছেলে নিশাতকে দেখে হ্যাঁসা হ্যাঁসি শুরু করে। তারপর নিশাতের পিছু নেয়। নিশাত তা দেখতে পেয়ে দৌড়াতে শুরু করে। ছেলে গুলোও নিশাতের পিছনে দৌড়েতে শুরু করে।

হঠাৎ করে আলামিন বড় ভাই বাইক নিয়ে নিশাতের সামনে দাঁড়িয়ে যায়।
-আবার আপনি কোথা থেকে আসলেন।
-নিশাত দেখো এখন রাগার সময় না। ছেলেগুলো কুকুরের মতো তোমাকে পেলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে। তারাতাড়ি বাইকে চড়ো। নয়তো তোমার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে মার খেতে হবে।

নিশাত আর সাত পাঁচ না ভেবে। আলামিন বড় ভায়িয়ের বাইকে চড়ে বসে। ঠান্ডায় কেঁপে যাচ্ছে নিশাত।
-নিশাত তোমার ঠান্ডা লাগছে?
-জ্বি না।

নিশাতকে আলামিন বাসার সামনে নামিয়ে দেয়। নিশাত আলামিনের দিকে তাকিয়ে বলে।
-থান্কিউ
“মিস্টি হেঁসে আলামিন বলে”
-ওয়েলকাম।

নিশাত দৌড়ে বাসায় ঢুকে পড়ে। গোসল করে টাওয়াল দিয়ে মাথা মুচতে মুচতে ভাবে ছেলেগুলো কেন আমার পিছু নিলো। আমি তো নিজাব পড়ে ছিলাম। তাহলে কি আলামিন বড় ভাই এইসব করিয়েছে। নাহহ্ কিসব ভাবছি আমি। আলামিন আমাকে বাঁচিয়েছে।

আআআআচ্ছু,, ইসস শদ্ধি হয়ে গেছে আমার। একটু কলিজাটাকে ফোন দেই।
-আসসালামু আলাইকুম
-উলাইকুম আস্সালাম, কখন কলেজ থেকে আসলে?
-এইতো আরেকটু আগে। আআআআআআচ্ছু,, আআআআআআচ্ছু,।
-নিশাত কি হয়েছে তোমার হাচ্ছি দিচ্ছো যে।
-কই কিছু না।
-কিছু না বললেই হবে। বৃষ্টিতে ভিজেছো তাই না।
-হুম
-পাজি মেয়ে একটা। বৃষ্টিতে যেমন ভিজেছো এখন ঠেলা সামলাও। অসুখ নিয়ে আসছো।
-এমন করে বলছো কেন?
-হু বলবো না। আগে বিয়ে করে নেই তারপর একদম বৃষ্টিতে ভিজতে দিবোনা তোমাকে।
-হিহিহিহি তাই।
-হুম তাই।
-বিয়ের পর তো দুজনে এক সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিজবো হিহিহিহি।
-ইসস রে পেত্নীটার ইচ্ছে কতো।
-খুব ইচ্ছে।
-তা তো হবার না পেত্নী। বৃষ্টিতে ভিজে অসুখ আনলে তোমাকে দেখবে কে?
-কেন তুমি তো আছোই।
-পেত্নী তোমাকে নিয়ে পড়ে থাকলে আমার হবে বলো। স্কুলে আসতে হবে না আমাকে?
-হুম তাই তো।
-ভাত খেয়েছো?
-নাহহ্ এখনো না।
-কেন?
-গোসল করে আসলাম এখন নামাজ পড়ে ভাত খেয়ে নিবো।
-আচ্ছা ভালো করেছো। আমি একটু আগে নামাজ পড়ে আসলাম এখন ক্লাস রুমে আছি।
-হিহিহিহি
-আবার হ্যাঁসো কেন?
-তুমি খুব নরম স্যার।
-তাই,
-হুম তাই, তোমাকে দেখে কি কোনো স্টুডেন্ট ভয় করে মনে হয়না আমার।
-হা হা ভয় করতে যাবে কেন? সুন্দর করে শিখিয়ে দিলে কোন স্টুডেন্ট ভয় পাবে না পেত্নী। আর লাঠি দেখিয়ে পড়ালে ভয় তো পাবেই। তার সঙ্গে কতটুকু পড়াইছি সব ভুলে যাবে।
-হিহিহিহি অনেক কিছু যানো দেখি।
-পেত্নী আমি কি এমনি মাস্টার।
-আচ্ছা মাস্টার মশাই বাই। আমাকে আবার নামাজ পড়তে হবে।
-আচ্ছা বাই, আর কয়েকমিনিট পর ক্লাস শুরু হবে।
-ভালোবাসি।
-হুম খুব বেশি ভালোবাসি।

(চলবে?)

গল্পঃ #তুমি_ছারা_আমি_শূন্য
পর্বঃ ৮
লেখকঃ #Mohammad_Asad

“নিশাত বিকেলের দিকে ঘুমিয়ে আছে। বৃষ্টিটাও থেমে গেছে, নিশাত যখন গভীর ঘুমে তখন নিশাতের ফোনে কল আসে। নিশাত ঘুমের মাঝে ফোন রিসিভ করে।
-আসসালামু আলাইকুম কে বলছেন?
-আমি আলামিন,

নিশাত এক ল্যাফে বিছানায় দাঁড়িয়ে যায়।
নিশাত হাঁচ্ছি দিতে দিতে বলে।
-আপনি কেন ফোন করেছেন?
-ইচ্ছে হয়েছে তাই।
-মানে, ইচ্ছে হলেই কি ফোন দিতে হবে? আআআআআআচ্ছু,
-নিশাত তোমার কি হয়েছে? হাঁচ্ছি দিচ্ছো যে?
-একটু ঠান্ডা লেগেছে।
-ওহ আচ্ছা। ঔষধ খেয়েছো? ঔষধ নিয়ে যাবো নাকি?
-নাহহ্ দরকার নেই।
-কেন নিশাত?
-আমি এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবো।
-নিশাত তোমাকে একটা গিফট দেওয়া আছে।
-কি গিফট।
-তোমার ইমুতে পাঠিয়েছি দেখো।
-মানে?
-হা হা আগে দেখো। তারপর আমাকে মিসকল দিও।

নিশাত তারাতাড়ি ফোনের ডাটা চালু করে। তারপর ইমুতে গিয়ে নিশাতের চোখ ঝাল্যাফেল্যা হয়ে যায়। নিশাত আলামিনকে জরীয়ে ধরে আছে। আর আলামিন সেলফি তুলেছে। এটা দেখে নিশাত রাগে ফুঁসতে থাকে। “এই ছেলেটা এতো খারাপ। আমি নিজের অজান্তেই জরীয়ে ধরেছিলাম ওকে। আর কখন বা ছবিটা তুললো আলামিন? কি বা করতে চায়? ” নিশাত কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আলামিনকে ফোন করে।,

আলামিন ওপাশ থেকে হ্যাঁসতে হ্যাঁসতে বলে।
-কি নিশাত চমকে গেলে তো? বলেছিলাম না যেটা আমি চাই না পেলে কেঁড়ে নেই।
-কি চান আপনি আমার কাছ থেকে?
-কোনোকিছু চাইনা নিশাত। শুধু তোমার ভালোবাসা চাই।
-তা কখনো সম্ভব না।
-কেন?
-কারণ আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।
-হা হা,, ঠিক আছে। তাহলে ছবিটা ছাদিককে পাঠিয়ে দেই। কি বলো।
-এই ছেলে এই কাজটা কখনো করবেন না। আপনি ছাদিককে চিনলেন কি করে?
-হা হা, কেন তোমার ফেসবুক আইডি থেকে। কি ভাবছো আমি কিছু যানিনা। তোমার আইডি আমি চিনি গো চিনি অনেক আগে থেকে। তুমি রিলেশন স্টাস দিয়েছো এখান থেকে ছাদিকের আইডি পেয়েছি আমি। তুমি যদি চাও তাহলে তোমার আর আমার পিকটা দিয়ে দিতে পারি ছাদিককে।

“নিশাত চিৎকার দিয়ে বলে উঠে”
-এইসব আপনার খেলা ছিলো তাই না।
-হ্যাঁ নিশাত যা ভাবছো তাই। তোমার পিছনে আমার বন্ধুদের লেলিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর তোমাকে বাদ্ধ করেছিলাম আমাকে জরীয়ে ধরতে। তুমি ভুল করে আমাকে জরীয়ে ধরেছিলে। অনেক কাহিল হয়ে গেছিলে তুমি। তারি সুযোগ নিয়ে ছবিগুলো তুলেছি আমি। হা হা হা হা।
-আপনি খুব খারাপ।
-হ্যাঁ তুমি যা ভাবছো তাই। তবে নিশাত আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি উমমমমমমম্মা।
-ছিঃ আপনাকে কাছে পেলা না জুতা পিটা করতাম আমি।
-হা হা তাই নাকি?
-হ্যাঁ
-এইসব বলে তো কোন লাভ নেই নিশাত। তোমার বাবাকে সবকিছু বলে দিয়েছে আমার বন্ধুরা। তুমি একটা ছেলের সঙ্গে নষ্টামি করছো। দূর থেকে তোমার আর আমার ছবি তুলেছে আমার বন্ধুরা। সেগুলা তোমার আব্বুকে দেখিয়েছে আমার বন্ধুরা। ছবিগুলো এমন ভাবে তুলা। তুমি আমাকে জরীয়ে ধরে আছো। তবে ছবিগুলোতে আমার মুখ চিনা যাবে না। হা হা ভালো থাকো নিশাত।
“কথা গুলো বলে আলামিন ফোন কেঁটে দেয়। নিশাত চিন্তায় পড়ে যায়। আব্বুকে এইসব দেখিয়েছে মানে। আব্বু হয়তো আমার উপর অনেক রেগে আছে। তবে সব ছবিগুলো তো ভুল। কিছু একটা করতে হবে আমাকে। নয়তো ছাদিককে হারাতে হবে। কি করবো আমি কিছু বুঝতে পারচ্ছি না।
আব্বু ছবিগুলো দেখেছে সমস্যা নেই। আব্বু আমাকে অনেক ভালোবাসে। আব্বু হয়তো আমাকে অনেক বকা দিবে। তবে ছাদিক যদি ছবি গুলো দেখতে পায়। তবে তো ভুল বুঝবে আমাকে। কি করি এখন।”

নিশাত অনেক চিন্তিত হয়ে রুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি শুরু করে। এদিকে আরাফাত স্কুল থেকে ফিরে আসে। আপুর ঘরে ডুকে দেখে আপু অনেক চিন্তিত। আরাফাত আপুর ফোনটা হাতে নিয়ে বলে।
-আপু তুমি হাঁটাহাঁটি করছো কেন? আর চিন্তিত দেখা যাচ্ছে কেন তোমাকে? এইটা কি আমার দুলাভাই। “আরাফাত আপুর ফোনটা হাতে নিয়ে কথাগুলো বলে।”

নিশাত আরাফাতের গালে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বলে।
-তোর সাহস তো কম না আরাফাত। আমার ফোন হাতে নিয়েছিস কেন?
-,,,,,,,,
-বের হয়ে যা রুম থেকে।

আরাফাত আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়। জীবনে কোনোদিন আরাফাতের শরীলে হাত তুলেনি আব্বু আম্মু অথবা নিশাত। আরাফাত চোখে জল ফেলতে ফেলতে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

আরাফাত রুম থেকে বের হয়ে গেলে নিশাত মাথায় হাত দিয়ে চিন্তা করতে থাকে। আব্বুকে ছবিগুলো দিখিয়েছে। আব্বু কতটা কষ্ট পেয়েছে কে যানে। নিশাত কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আরাফাতের রুমে যায়।
-আরাফাত
-,,,,,,,
-এই আরাফাত
-হুম বলো আপু
-তোকে আমি ভুল করে থাপ্পড় মেরেছি রে। স্যরি ক্ষমা করে দে আমাকে। তুই যাকে দুলাভাই বলছিলিস। ওই ছেলেটাই আমার জীবনটা নষ্ট করতে চাইছে।
-মানে কি আপু,, আমি যানতাম কিছু একটা হয়েছে তোমার। তুমি আমাকে থাপ্পড় মারতে পারো বিশ্বাস হচ্ছিলো না।

নিশাত আরাফাতকে সবকিছু বিস্তারিত বলে। আরাফাত আলামিনের উপর রেগে যায়।
-আপু তুমি চিন্তা করোনা। তোমার ভাই আছে না সবকিছু সামলিয়ে নিবে। আর দুলাভাইকেও বুঝিয়ে বলবো আমি। তুমি একদম চিন্তা করোনা আপু।
-এই তো আমার লক্ষি ভাই।
.
.
নিশাতের আব্বু রাত নয়টার সময় অফিস থেকে বাসায় আসে। এসেই নিশাত নিশাত বলে চিল্লিয়ে উঠে। নিশাত অনেক ভয় পেয়ে রুমে সুয়ে থাকে।
“আব্বু ভাববে হয়তো আমি ঘুমিয়ে আছি। তাহলে আব্বু আমাকে কিছু বলবে না।”

আব্বু রুমের দরজাটায় ধাক্কা দিয়ে রুমের মধ্যে ঢুকে যায়। নিশাত চোখদুটি বন্ধ করে আছে। এদিকে নিশাতের আম্মু নিশাতের রুমে চলে আসে।
-কি করছোটা কি তুমি। এরকম ভাবে নিশাত নিশাত বলে চিল্লিয়ে যাচ্ছো কেন?

নিশাতের আব্বু পকেট থেকে ফোন বের করে নিশাতের আম্মুকে ছবিগুলো দেখায়। নিশাতের আম্মু আর কিছু বলতে পারে না। এদিকে আরাফাত ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ আব্বু যতটা সান্ত ততটা রাগি।

নিশাতের আব্বু নিশাতের পাঁ ধরে মেঝেতে ফেলে দেয়। তারপর চলতে থাকে গালে থাপ্পড়। আরাফাত অথবা আম্মু কেউ’ই আব্বুকে সামলাতে পারে না। নিশাত গলা চাপা কান্না করেই যাচ্ছে।

নিশাতের আম্মু চিৎকার দিয়ে বলতে থাকে।
-কি করছোটা কি, মেয়েটাকে মেরে ফেলবা নাকি?
-হ্যাঁ তাই করবো এই মেয়েকে জিন্দা কবর দিয়ে আসবো। বাজারের ছেলেদের সঙ্গে নষ্টটামি করে বেরাচ্ছে। মানসম্মান কিছুই রাখলোনা আমার।

“নিশাত বলে উঠে”
-আব্বু তুমি যা দেখেছো সবকিছুই ভুল।”

নিশাতের গালে আরো অনেক গুলা থাপ্পড় দেয় নিশাতের আব্বু। তারপর রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়। আজকে প্রথম এতোগুলা মেরেছে নিশাতের আব্বু নিশাতকে। এই প্রথম শরীলে হাত তুলেছে।

নিশাতের ঠোঁট দিয়ে রক্ত পরতে থাকে। ঘাঁড়ে পাঁ দিয়ে লাথি দেওয়া জন্য দাগ হয়ে গেছে। নিশাতের আম্মু কান্না করতে করতে নিশাতকে বিছানায় সুয়ে দেয়। নিশাত অনেক কাহিল হয়ে গেছে মার খেয়ে।

এদিকে নিশাতের আব্বু নিজের রুমে এসে কান্না করতে শুরু দেয়।
-স্যরি রে মা,, তোকে এতোগুলা আঘাত কারার জন্য। তুই আমার ভরসা নষ্ট করলি কেন রে মা। আমি তো তোর কোন অভাব রাখেনি। যা চেয়েছিস তাই দিয়েছি। তাহলে কেন এমন করলি? তোর ওই ফোনটা সব নষ্ট গোঁড়া তাই না।
“নিশাতের আব্বু নিশাতের ফোনটা ভেঙে দুই টুকরো করে দেয়।
.
.
রাত ১২ঃ০০ নিশাতের আম্মু নিশাতের শরীলে ঔষধ মেখে দেয়। নিশাতের মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে।

এদিকে ছাদিক নিশাতের ফোনে অনেকবার কল দেয়। তবে কল ধরছেনা নিশাত। ধরবে কেমন করে নিশাতের ফোন তো আর নেই। ফোনের সঙ্গে সঙ্গে নিশাতও যে দুই টুকরো হয়ে গেছে।,, ছাদিক অনেক চিন্তিত হয়ে যায়। এমন তো হওয়ার কথা না। এতোবার ফোন দিলাম ফোন ধরছেনা কেন?
“ছাদিকের কেন যানি ঘুম ধরছেনা সারারাত।
.
.
এভাবে’ই কেঁটে যায়,
১০টা দিন।
নিশাত এখন কলেজেও যায় না। আর ছাদিকের সঙ্গে কথাও বলেনা ফোনে। ছাদিকের রাতে ঘুম হয়না নিশাতের সঙ্গে কথা না বললে। এতোদিন হয়ে গেলো নিশাত কেন ফোন ধরছেনা।

নিশাত মাঝ রাতে কান্না করতে থাকে। কেন এমন হয়ে গেলো জীবনটা উল্টো পাল্টো।

(চলবে?)