গোধূলির শেষ আলো পর্ব ০৯ +১০

0
459

গোধূলির শেষ আলো?
#পর্ব ০৯ +১০
Writer Tanishq Sheikh Tani

তাসলী বেগম আপ্রাণ চেষ্টা করেন তানির বিয়ের খবর চাপা রাখতে।তিনি কালই ফজিলার মুখে শুনে এসেছিলেন তানির বিয়ের কথা।অনেক অনুনয় বিনুনয় করেও ফজিলা বেগমকে রাজি করাতে পারে নাই তাসলী।ফজিলা বেগমের এক কথা চেয়ারম্যানের ছেলের সাথে মেয়েকে তিনি কোনোমতেই বিয়ে দেবেন না।তাসলীর মুখের উপর বলে দিয়েছে চেয়ারম্যানের চরিত্র খারাপ কি বিশ্বাস তার রক্ত ভালো হবে?তাসলী বেগম সামনা সামনি এমন অপমানিত কখনোই হোন নি কাল ফজিলা যা করেছিল।আড়ালে চোখের পানি মুছে ছেলেকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন তাসলী।ছেলেকে তিনি কোনোমতেই আব্বাস চেয়ারম্যানের মতো হতে দিতে চান না।তাজকে সময় মতো বুঝিয়ে ঠিকই স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতো।কিন্তু ভাগ্য সহায় না হলে কিইবা করার আছে তাসলী বেগমের। তা না হলে সকাল সকাল মেম্বারের বউ গলা ছেড়ে তানির বিয়ের গল্পই বা কেন করবেন বাড়ি এসে।তাসলী জানে মেম্বারের বউ ইচ্ছে করেই কাজটা করেছে। যাতে তাজের কানে যায়।
ছেলে ঘরের জিনিসপত্র ভেঙে চিৎকার করছে তাসলী বেগম ঠেকাতে ঠেকাতে ক্লান্ত হয়ে পাশে ওয়াল ধরে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। ছেলেকে এমন কষ্টে কোনোদিন তিনি দেখেন নি।উগ্র মেজাজের হলেও ভাঙচুর তেমন করে না তাজ।কিন্তু আজ যেন তাজ তাজের মধ্য নেই।তাসলী বেগমের ঘোর কাটে তাজের ভয়ানক কাজ দেখে তাজ ভেঙে ফেলা আয়নার একটুকরো কাঁচ দিয়ে এলোপাতাড়ি টান মেরেই যাচ্ছে বুকে।রক্তে ভেসে যাচ্ছে বুক।কিন্তু তাজের যেন সেদিক খেয়াল ই নাই।তাসলী বেগম ভয় ডর সব ভুলে সামনে ছেলেকে থামাতে দৌড়ালেন

“- ও বাজান! বাজান গো।ও বাজান এসব কি করতেছো গো বাজান।ও বাজান থামো বাজান।

“- এই মা সর! মরতে দে আমারে।আমার ছোট্ট একটা ইচ্ছা তুই আর আব্বা পূরণ করতে পারলি না মা।আমার বাঁচে থেকে কি হবি।দে মরতে আমারে।মাকে জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে ঢলে পড়ে তাজ।চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসছে। দুচোখে টলটল করে পানি পড়ছে এখনও।

বিয়ের পরের দিনও তানি স্কুলে গেলো মায়ের হাজারটা নিষেধ স্বত্বেও।আশেপাশের সবাই নানা কানাকানি করলো তানির এমন কাজে।তানির সে দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই।কারো কোনো কথা বা ফিলিংস নিয়ে ওর ভাবনা নেয়। ওর সব ভাবনা মাকে পরাজিত করার।কিন্তু তাতে যে নিজের ক্ষতি করে বসছে সেদিকে এই বোকা মেয়েটার খেয়াল নেই।
পুষ্পাদের বাড়ি গিয়েও তো অবাক। পুষ্পা স্বামী নিয়ে এঁটে সেটে বসে আছে।সজিব পুষ্পাকে তানির সামনেই জড়িয়ে ফিসফিসিয়ে কি যেন বললো।তাতেই পুষ্পা হেসে সজিবের গায়ে হেলে পড়ছে।তানির কাছে হচ্ছে মনে কি আদিখ্যেতা শুরু করলো দুজন।ওর বেশিক্ষণ সহ্য হলো না দুজনের প্রেম বাধ্য হয়ে উঠে চলে গেলো।পুষ্পা তানির আর খালিদ ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করে নি।কারন ও জানে ওর বান্ধবী কোন ধাতুর তৈরি। বয়সে যুবতি কিন্তু আচরণে বাচ্চা শিশু।এই বাচ্চা শিশুকে স্বামীর মর্ম বোঝানোর দায় পুষ্পায় নিল মনে মনে।বেচারা খালিদ ভাইয়ের জন্য পুষ্পার দারুন কষ্ট লাগলো।

সন্ধ্যায় ভাইয়ের ঘরের বিছানায় হাটু মুড়ে বসে টিভি দেখছিলো তানি।ফজিলা বেগম স্বামীকে বলেও মেয়েকে শাসাতে ব্যর্থ। তমিজ মোল্লা মেয়েকে আর কিছু বলবেন না।তার মেয়ে কাল যা করেছে তাতেই তার মনে ভয় ঢুকে গেছে।বাপ হিসেবে তমিজ মিয়া মেয়ে পাগল।এই নিয়ে যতো কষ্ট ফজিলার।মেয়ে বাপকে দেখে থরথর করে কাঁপবে তা না মেয়েকে মাথায় তুলে নাচে তার স্বামী।তার জন্যই তানির এতো অর্ধপতন বলে মনে করেন ফজিলা।সন্ধ্যা উতরে রাত হতে লাগলো কিন্তু খালিদ এলো না দেখে মেয়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। মাকে দেখে না দেখার ভান ধরে রইলো তানি।তাতে মেজাজ আরো চড়ে গেলো ফজিলার।রিমোট টা খপ করে কেড়ে নিলেন মেয়ের হাত থেকে।ভেবেছিলেন তানি হয়তো ঝগড়া করবে কিন্তু না তানি চুপচাপ উঠে যেতে লাগলো।ফজিলা বেগম তৎক্ষণাৎ মেয়ের হাত টেনে আবার বিছানায় বসালেন।

“- জ্বামাই আসলো না ক্যা?

“- জানি না আমি।

“- তুই এভাবে মানসম্মান নষ্ট করার জন্যি উঠে পড়ে লেগেছিস ক্যা? কোন পাপের শাস্তি দিচ্ছিস তুই?

“- মা আমি ঘুমাতি যাবো সরো।

“- খালিদের মতো ছেলে হয়না রে মা।ওর মনে দুঃখ দিস না।আল্লাহ তোরে মাফ করবি না তাইলে।দে মা একটা ফোন করে জিজ্ঞেস কর ও আসবি কি না।নতুন জ্বামাই বিয়ের পরদিন আসে নাই মানুষ শুনলি কি কবি ক?

“- মা আমার ঘুম পাচ্ছে। আমারে ঘুমাতি দিবা।তোমার এতো দরদ তুমিই কতা কও।আমি পারবো না।তানি হনহন করে উঠে নিজের ঘরে গিয়ে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো।

এভাবে দুদিন কেটে যায়।খালিদ দিনে আসে যখন তানি স্কুলে থাকে।তারপর শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলে তানি আসার আগেই চলে যায়।ফজিলা বেগম খালিদের হাত ধরে কাঁদে। তার অবুঝ বোকা মেয়েটার কথায় খালিদ যেন কষ্ট না নেয়।খালিদ স্বহাস্যে ফজিলা বেগমকে চিন্তার কিছু নাই বলে।তার আসা হচ্ছে না কারন বাড়ির কাজ তাকে দ্রুত সারতে হচ্ছে। এজন্য সে যারপরনাই লজ্জিত। খালিদ তানির কথা রাখতে ওর সামনে আসে না কিন্তু সে চাই না এজন্য তানি কোনোরকমের কথা শুনুক।তাই সত্যি কথা কাওকে বলে না।

বাড়ির কাজ সব শেষ কালকেই তানিকে উঠিয়ে নেওয়া হবে।সারাদিন দৌড়া দৌড়ি করছে এসব আয়োজনের জন্য খালিদ।পরিচিত সবাইকে বউভাতের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। সজিব সবসময় খালিদের সাথে থেকে সাহায্য করছে। খালিদের ভাই মাজিদ ফিরেও তাকাচ্ছে না ভাইয়ের দিকে।বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ঘরের দরজাটাও খোলে নাই মাজিদ।এতো কিসের অভিমান তার প্রতি ভাইয়ের খালিদ বুঝে উঠতে পারে না।খালিদের মন আজ খুব খারাপ।একদিকে ভাইয়ের কথা না বলা অন্যদিকে প্রিয়তমার রূঢ়তা।নদীর পাশে বসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো শূন্যে।
সজিব খালিদের কষ্ট বোঝে।তাইতো যতোটুকু সময় পাই খালিদের মন ভালো রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায়।আজও জোর করে খালিদকে নদীর পাড় থেকে টেনে নিজের শ্বশুরবাড়ি পথে হাঁটা দেয়।

“- আচ্ছা সজিব তুই আমাকে নিয়ে এতে ভাবিস কেন? যেখানে যাদের ভাবার কথা তারাই ভাবে না।

“- ভাই সময় দেন।দেখবেন তারাও ভাববেনে।ততদিন আমিই না হয় ভাবি।তারা ভাবা শুরু করলি তো আর আমি আপনাকে পাবো না এমন করে।

“- তোর নতুন বিয়ে হয়েছে বউকে রেখে আমার পিছনে সময় নষ্ট করিস না।পুষ্পা কে সময় দিস।

“- সে তো দেই ই ভাই। ও তো স্কুলে গেছে।ঐ তো আসছে ওরা।ছুটি হয়ে গেছে বোদহয়।চলেন ভাই আমরা একইসাথেই যায়।

খালিদ সামনে তাকাতেই দেখে তানি হেসে হেসে পুষ্পা সহ আরো দুটো মেয়ের সাথে আসছে।তানি খালিদ কে সামনে দেখেই হাসি সল্প করে পাশের মেয়েগুলোর সাথে কথা বলে খালিদের দিকে আড়চোখে চেয়ে।
পুষ্পা খালিদকে সালাম দিয়ে তানি ছাড়া বাকি বান্ধবীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।যেহেতু খালিদ দেখতে শুনতে সুদর্শন ও আকর্ষণীয় তাই তার পরিচিতি স্কুলের মেয়েদের কাছে অনেক বেশি।পুষ্পা ও তানির বাকি দু বান্ধবী তানির বিয়ের খবর জানলেও ওর বর কে সেটা জানে না।কারন তানি ওদের এ বিষয়ে কিছু বলে না।পুষ্পা সজিবের সাথে হাঁটছে সামনে।মাঝে তানি দুই বান্ধবী নীলা আর রত্নার সাথে গল্প করলেও সম্পূর্ণ মনোযোগ ওর পেছনে মোবাইলে কথা বলা খালিদের দিকে।খালিদ বাড়ির টাইলস বসানো নিয়ে কথা বলছে কার সাথে যেন।

“- এই তানি শোননা! ( রত্না)

“-কয়ে ফেল

“- খালিদ ভাইকে আকাশী কালারের টি শার্টে দারুন লাগছে তাই না ক?

“- আমি ফ্যাশন ডিজাইনার না যে ওসব খেয়াল করবো।

“- তুই রত্না ঠিক বলেছিস। এই তানি এসব কোন কালে বুঝলো যে আজ বুঝবি।খালিদ ভাইকে তো সব কিছুতে নায়ক নায়ক লাগে।

“- ঠিক কইছিস নীলা।এই নীলা চল আমরা গিয়ে কথা বলি। তুই তো জানিস তারে কি পরিমান পছন্দ করি আমি।

বান্ধবীদের কথা শুনে বিস্মিত হয় তানি।ওর স্বামীর দিকে কেমন করে তাকাচ্ছে দুটো।রত্নাকে ইচ্ছে করছে ধরে মারতে তানি।লুচ্চা ছেরি।

“- রত্না এসব কি শুরু কললি তোরা? পরপুরুষের দিকে নজর দিতে লজ্জা হয় না তোগের।

“- না হয় না।তোর জন্য খালিদ ভাই পর পুরুষ হতি পারে।কিন্তু আমাগের জন্যি সে বড় আপন পুরুষ কি বলিস নীলা?

“- হি! হি! হি! ঠিক কয়েছিস।আর শোন তানি পরপুরুষকে আপন পুরুষ করতি হলি আগে তার কাছে যাতি হয়।রত্না চল ওর সাথে কতা কয়ে লাভ নেই।ও এসব বোঝে নাকি যা ফিডার খা গে তুই তানি।

রত্না আর নীলার এমন আচরণে অবাক হয় সাথে রাগও।কিন্তু কিছুই বলে না।খালিদের সাথে তো ও সম্পর্কই রাখবে না।কাজেই এরা যা ইচ্ছা করুক তাতে তানির কিছুই আসে যাই না।তানি নিজেও জানে ওর অনেক কিছু আসে যাচ্ছে রত্না নীলা খালিদের সাথে হেসে কথা বলায়।রাগে শরীর জ্বলছে এ দৃশ্য দেখে।তার চে বেশি মেজাজ খারাপ হচ্ছে খালিদের ভাব দেখে।ভাব এমন ধরেছে যেন তানিকে ও চেনেই না।কিন্তু রাগ আর জেদ পুষে রাখতে তানি চুপচাপ রয়ে গেলো।

“- আসসালামু আলাইকুম খালিদ ভাই।

“- ওয়ালাইকুম আসসালাম। ভালো আছো তোমরা?

“- জ্বী ভাইয়া।আপনি কেমন আছেন ভাইয়া?

“- আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

“- রত্না আর নীলা একে অপরকে ঠেলাঠেলি করে কি বলবে ভেবে।রত্না সামনে একা হাঁটা তানিকে টেনে নিজেদের সাথে নিয়ে আসে।তানি খালিদের দিকে তাকিয়ে দেখে কিন্তু খালিদ ভুলেও একবারও তাকায় না ওর দিকে।এটা দেখে তানির ফর্সা মুখটা কালো হয়ে যায়।

“- খালিদ ভাই কি বিয়ে করবেন না? রত্নার ধাক্কা ধাক্কিতে নীলা লজ্জা লাল হয়ে প্রশ্ন করে।

খালিদকে জবাব দিতে না দিয়ে সামনে থেকে সজিবই জবাব দেয়,

“- বিয়ে তো করবে কিন্তু যোগ্য মেয়ে পাচ্ছি না বুঝলে। তোমরা একটু খোঁজ নিও তো? খালিদ ভাইকে এবার এমন মেয়ে দেখে বিয়ে দেবো বাসর রাতে সোহাগ করতে জানে।তা রত্না তোমার বিয়ের কি বয়স হয়েছে?

পুষ্পা আড়চোখে তানিকে ফুলতে দেখে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে।তানির মাথা ঘুরে ওঠে সজিবের কথা শুনে।সজিব যে তাকেই উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলছে এতোটুকু তানি ঠিক বুঝতে পারছে।আবার রত্নার বিয়ের বয়স জিজ্ঞেস করছে! রাগে মুখ ফুলিয়ে টমেটো বানিয়ে ফেলেছে তানি।খালিদ সেটা বুঝতে পেরে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।

“- সজিব তোরা এগোতে থাক আমার একটা কাজ আছে আমি একটু পর আসছি।খালিদ যেতে যাবে তখনি নীলা আর রত্না ওর দু হাত ধরে ফেলে।খালিদের বিষয়টা মোটেও পছন্দ হয় না।হাত ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে।

“- ভাইয়া প্লিজ আপনি যাবেন না।

“- রত্না আমি জরুরি কাজটা শেষ করে তারপর আসবো।তোমরা যেতে থাকো।

“- কাজটা পরে করলেও তো হয়।প্লিজ ভাইয়া যাইয়েন না।

“- ঠিক আছে যাচ্ছি না।হাতটা ছাড়ো কেউ দেখলে ভালো দেখাবে না বিষয়টা।

“- সত্যি যাবেন না তো?

“- যদি কথা দাও এভাবে আর হাত ধরবে না তাহলে।

“- এই ছেড়ে দিলাম ভাইয়া।আর ধরবো না।শুধু পাশে হাঁটবো।

খালিদ একটা মুচকি হাসি দিয়ে মোবাইল টা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো হাঁটতে হাঁটতে। এই মেয়েদুটো এভাবে হাত ধরবে খালিদ কল্পনাও করে নি।অস্বস্তিতে কপালে ঘাম ঝরা শুরু হয়ে গেছিলো খালিদের।
সজিব একটা চটপটির দোকানের সামনে এসে দাড়ায়।সবাইকে চটপটি খেতে বলে।খালিদ আর সজিব চটপটি ওয়ালার পাশে দাড়িয়ে বানানো দেখছে।সজিবকে কিছুটা ধমকও দেয় খালিদ তখন ওসব বলায়।সজিব হেসে জবাব দেয় না।

পুষ্পা তানি বান্ধবী সহ বেঞ্চে বসে আছে।পুষ্পা অনেক্ষণ ধরে তানিকে লক্ষ করছে। তানির মুখে হাসি নেয় এক ফোটাও। চিন্তা আর চিন্তা চোখে মুখে।

“- এই নে তানি।চটপটির প্লেটটা এগিয়ে দেয় পুষ্পা।

“- খাবো না আমি।

“- ও মা! কি জন্যি? তুই তো চটপটি নিয়ে কাড়াকাড়ি করিস অন্যদিন।আজ কি হলো?

“- কিছু হয় নেই।চুপ করে খা তোরা।

খালিদ একনজর তানির দিকে তাকিয়ে আবার মোবাইলের দিকে তাকিয় সজিবের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে গেলো।

“- তানি তোর কি খারাপ লাগছে? খারাপ লাগলি তুই বাড়ি চলে যা।হাত মুখ ধুয়ে সন্ধ্যায় আসিস।রত্না নীলা থাকবেন তখনও।

“- আমি ঠিক আছি।তুই খা।খালিদের দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে থাকে তানি।খালিদের না তাকানোতে এতো কষ্ট লাগছে কেন বুঝতে পারে না তানি।পুষ্পার কথায় ঠিক।সত্যি তানির খারাপ লাগছে এখানে তবুও যাবে না তানি।বলা তো যায় না এই রত্না গলায় না ঝুলে পড়ে আবার।কেন যে বললাম না আমার বিয়ে খালিদের সাথে হয়েছে।যা হয়েছে হয়েছে তানি।এবার এমন কিছু কর যেন ওরা বোঝে খালিদ তোর।শুধুই তোর সম্পত্তি।

খাওয়া শেষে সবাই আগের মতো হাটা শুরু করলো।এবারও রত্না খালিদের পাশে ঘেঁষার অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না তানির কারনে।তানি খালিদ আর রত্নার মাঝে রয়েছে।রত্না সরে আসতে গেলে তানি রত্নাকে ঠেলা দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।খালিদ সব দেখেও না দেখার ভান ধরে আছে।এই মেয়েকে বিশ্বাস নাই কখন কি বলে আর করে।

“- এই আমার বইগুলো ধরেন তো? হাত ব্যথা করছে আমার।
কথাটা বলেই খালিদের হাতে বইগুলো ধরিয়ে দেয়।সজিব আর পুষ্পা যতনা অবাক হয় খালিদ তার চেয়ে বেশি অবাক হয় তানির বইগুলো হাতে নিয়ে।মৃদু হেসে তাকিয়ে থাকে বইয়ের দিকে।রত্না আর নীলা হা করে তাকিয়ে থাকে।রত্না মুখ ফুলিয়ে তানির কানেকানে বললো,

“- তোর পায়ে ব্যথা করছে না? খালিদ ভাইয়ের কোলে উঠে যা পারলি?

“- ভালো কথা বলেছিস তো? কিন্তু আমার না লজ্জা করে তোগের সামনে উনার কোনে উঠতে।হিহিহি

“- ডং দেখলে গায়ে জ্বালা ধরে যায়।তোর না বিয়ে হয়ছে স্বামীর কোলে ওঠ গিয়ে।

“- সেটা তোকে বলতে হবে না।তুই সামনে হাট যা।রত্নাকে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে সামনে পাঠিয়ে দেয়।খালিদ বইনিয়ে দাড়িয়ে আছে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু শান্ত গলায় বলে,” আপনি ওভাবে দাড়িয়ে আছেন কেন হাঁটতে থাকেন?

“- ভালোয় নাটক জানো তুমি।করো যতো পারো নাটক করো।আমি তো তোমার সবকিছুই ভালোবাসি।তোমার ভালোবাসা, তোমার দেওয়া কষ্ট,ছলনা সবকিছু।তানির কাঁধে হাত রেখে নিজের বুকের পাশে টেনে এনে গানে গানে ফিসফিসিয়ে বললো খালিদ,
তুমি যদি সুখী হও দাও আরো ব্যথা দাও
বিরহের আগুনে পোড়াও,,,,,

রত্না নীলা পুষ্পা সজিব মিটমিটিয়ে হাসতে লাগলো সামনে হাটতে হাটতেই। তানি লজ্জায় একটুখানি হয়ে দৃষ্টি অবনত করে ফেললো।খালিদের সামনে সব জারিজুরি ফাস হয়ে গেলো ভেবে নিজেই নিজেকে বোকা বললো মনে মনে।

চলবে,,,,গোধূলির শেষ আলো?
#পর্ব ১০
writer Tanishq Sheikh Tani

নতুন মেয়ে জ্বামাই বাড়ি এসেছে দেখে পুষ্পার মা অনেক পদের রান্না করেছেন।পিঠা,পায়েস,পোলাও,মাংস সাধ্যের মধ্যে যতোটুকু করা যায় তার চেয়ে বেশিই করেছেন তিনি।সজিব খালিদ পাশাপাশি বসা।বিছানার উপর নতুন শীতল পাটিটা বিছিয়ে জ্বামাই আর তার বন্ধুকে খাবার পরিবেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
খালিদ সজিব একে অন্যের সাথে গল্পে মজেছে

“- খালিদ ভাই একটু নজর টা এদিকেও দেন!
পুষ্পার কথা শুনে খালিদ চোখ তুলে সামনে তাকাতেই নির্বাক।সামনে লজ্জায় লাল হয়ে অবনত দৃষ্টিতে গোলাপি জামদানি, সোনার ঝুমকো,হাতে বড় বড় সোনার বালা,গলা জুড়ে স্বর্ণের একটা পাতলা হার।খালিদের লজ্জায় অবনত চোখজোড়া আড়চোখে দেখে যাচ্ছে নববিবাহিতা বধূকে।তানির ইচ্ছা হচ্ছে একদৌড়ে পালিয়ে কোথাও লুকিয়ে থাকতে।কিন্তু না! এই মুহুর্তে তা কোনোমতেই সম্ভব নয়। এই পুষ্পা হাতটা লতার মতো জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

“- খালিদ ভাই দেখি নতুন বউয়ের মতো লজ্জা পাচ্ছে। হি!হি!। এই তানি আয় আমার সাথে। আয়

“- আহ! ছাড় না।অনেক অসভ্য হয়েছিস তুই?

“- চুপ কর! বলদী ছেমরি। তানিকে জোর করে খালিদের পাশে বসিয়ে দেয় পুষ্পা।
” খালিদ ভাই শোনেন! আপনি এই বোকা গাধী মার্কা বউয়ের কথায় যদি দূরে দূরে থাকেন তাহলি আপনারই লস।কারন আপনার বউ বাচ্চা বউ।সে এমনিতে কিচ্ছুই বুঝবি না।তারে হাতে কলমে সব বুঝোতে হবি।

পুষ্পার কথা শুনে তানি লজ্জায় বান্ধবীর হাত টেনে ঝুঁকিয়ে এনে ফিসফিসিয়ে বলে,
“- পুষ্পা কি কচ্ছিস এসব? আমি কিন্তু উঠে যাবো।তোর না ভাসুর হয়।লজ্জা করে না তোর ভাসুরের সামনে এসব কচ্ছিস?

“- তোমরা মান অভিমান করে সব রসাতলে ডুবাচ্ছো আর আমি লজ্জা নিয়ে বসে থাকবো? তা হবি না।শোনেন খালিদ ভাই আজ আপনি তানির সাথে আপনার শ্বশুরবাড়ি যাবেন বুঝতি পারছেন?

“- ইয়ে মানে পুষ্পা! আমার একটু কাজ আছে।আর কাল তো ও চলেই আসবে আমাদের বাড়ি।

“- ওসব আমি শুনবো নানে।আপনি তারে নিয়ে বাড়িতে যাবেন শেষ কথা।আর কোনো কথা নাই।চলেন খেয়ে নেবেন।এই তানি ভাইকে খাবার বাড়ে দে

তানিকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে পুষ্পা জোড়ে একটা চিমটি দিলো সজিব আর খালিদের নজরের আড়ালে।

“- উহু! চিমটি দিলি ক্যা? অসহায় চোখে ঠোঁট নাড়িয়ে বললো তানি।

“- যা বলছি শোন না হলে দেখিস কি করি? খাবার বেড়ে দে।

তানি লজ্জা পাচ্ছে ভেবে খালিদ নিজেই পোলাওয়ের চামচে ধরে ভাত নিতে যায়।

পুষ্পার চোখ গরমে তানি কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে পুষ্পার মুখের দিকে।পুষ্পা আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে চামচ নিজের হাতে নিতে বলে তানিকে।

“- আপনি প্লেট টা এদিকে দেন আমি খাবার বাড়ে দিচ্ছি। অন্যদিকে তাকিয়েই বলে তানি

“- না! থাক। কষ্ট করা লাগবে না।আমিই নিয়ে নেবো।তুমি খাও।

“- কষ্ট কিসের এটাতো বউয়ের কর্তব্য।স্বামীর সেবা যত্ন করলে মোহাব্বাত বাড়ে দুজনের মধ্যে। ভাইয়া ওকে স্বামী সেবা করার সুযোগ টা তো দেন।স্বামী সেবাতে পূন্য হয়।আমার বান্ধবীকে আপনি পুণ্যবতী হতে দেবেন না?এই তানি প্লেটে খাবার বাড়ে দে।

তানি কাঁপা কাপা হাতে পোলাও বাড়তে থাকে। পোলাও বাড়তে গিয়ে কিছুটা ঝুঁকে খালিদের সাথে লেগে যেতেই আবার সরে হাত উঁচু করতেই আঁচল টা মাংসের তরকারির উপর পড়তেই খালিদ সেটা উচু করে ধরে।তানি খাবার বেড়ে তাতে কয়েক টুকরো গরুর গোশত, রুই মাছের টুকরো,ডিম সহ সাজিয়ে দেয় পুষ্পার কথায়।

“- নিন ভাইয়া সাজিয়ে দিল আপনার বউ আপনার খাবার প্লেট।খেয়েই দেখুন বউয়ের বাড়ে দেওয়া খাবার। কতো স্বাদ আর মজা।

খালিদ মুচকি হেসে এক লোকমা মুখে দিতে পুষ্পা থামিয়ে দেয়।

“- আরে! আরে! আর খায়েন না।

পুষ্পার কথা শুনে বিস্মিত হয় খালিদ।কিন্তু তা প্রকাশ করে না।এই আমাকে মেয়ে এক লোকমা খাইয়ে বিদায় করতে চাই নাকি?

“-হি! হি! হি! মানে বলতে চাচ্ছি এখন বউকে খাইয়ে দিন।

“- এই কি কচ্ছিস তুই? চুপ কর।আমি একাই খায়ে নিবোনে।

“- কি হলো ভাইয়া? দেন খাইয়ে।

পুষ্পা এক প্রকার জোর করিয়ে খালিদকে দিয়ে তানিকে ভাত খাওয়ালো। আবার তানিকে দিয়ে খালিদকে।তানির লজ্জায় ঠোঁট খুলছিলোই না।লজ্জা সাথে হাসিও পাচ্ছিলো।কিন্তু মনের এককোনে ঠিক ভালোলাগা কাজ করছিলো।
তখনি হাসতে হাসতে নীলা আর রত্না খাবার ঘরে ঢুকলো।পুষ্পার কথায় যুক্তি করেই ওরা খালিদের সাথে ওমন করেছিল তানিকে রাগানোর জন্য। বর বউয়ের মান ভাঙাতে পেরে তানির বান্ধবীরা খুশি।

“-আরে আমাগের ছেড়ে বউ বর দেখি খেয়ে নিলো? এই তানি সরেক তো! আমরাও দুলাভাইয়ের হাতে এক লোকমা খাই।তানির কানে কাছে এসে রত্না ফিসফিস করে বলে”কি রে নতুন বউ বরের হাতের খাবার কেমন মজা?

“- যা! লজ্জায় খালিদের পেছনে মুখ লুকায় তানি।

“- আমারেও খাইয়ে দাও না বউ!

“- আদিখ্যেতা করো না সোয়ামী।চুপচাপ খেয়ে ওঠো।ওরা আর আমরা কি এক? আর তাছাড়া এ কদিন কার হাতে খাচ্ছ শুনি?চুপ করে খাও নয়তো রাতে মিষ্টি দেবো না।

বেচারা সজিব পুষ্পার দিকে করুন দৃষ্টিতে প্লেট হাতে বসে রইলো।পুষ্পা মিটিমিটি হাসলো কিন্তু খাইয়ে দিলো না।

খাওয়া দাওয়া শেষে বিদায়ের সময় এলো।নীলা রত্না আগেই বাড়ি চলে গেছে।সন্ধ্যা শেষে এখন রাত।তানিকে পুষ্পা টেনে নিয়ে একান্তে কিছু কথা বললো ।তারপর খালিদের সাথে পাঠিয়ে দিলো তানিদের বাড়ির দিকে।খালিদের সাথে হেঁটে পেরে উঠছে না তানি।লম্বা মানুষ এক পা ফেলছে মনে হচ্ছে এক মাইল পেছনে ফেলে দিল।দুজন চুপচাপ অন্ধকার ঝিঝি ডাকা আধাপাকা ইটের রাস্তায় হেঁটে চলছে।খালিদ কিছুদূর এগিয়ে আবার থেমে যাচ্ছে তানির জন্য। শাড়ি পড়ে হাটতে তানির অসুবিধা হচ্ছে সেটা খালিদ বুঝতে পারছে।খালিদ অনেক ধীরে হেটে তানি পেছনে পরে যাচ্ছে। মোবাইলের টর্চ টা জ্বালিয়ে এবার পা গুনে গুনে হাটছে খালিদ তানির পিছু পিছু।রাস্তার দু’পাশে দু একঘর বাড়ি আর মাঠ। মাঠের কোল দিয়ে যেতেই শীত শীত লাগছে খুব।গ্রামের শীত মানে হাড়কাপানো।সামান্য জামদানি শাড়ি আর সুতি ব্লাউজে কি এই শীত সয় গায়ে? শাড়ির আঁচল ভালো করে টেনে জড়োসড়ো হয়ে হাটছে তানি।হঠাৎ গায়ে উষ্ণতা এনে দিলো খালিদের দেওয়া চাদরটা।খালিদের গায়ের চাঁদরটা তানির গায়ে সুন্দর করে জড়িয়ে দিলো খালিদ।তানি অন্ধকারেই মুখটা উচু করে একপলক খালিদের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি বিনিময় হতেই সাথে সাথে দৃষ্টি অবনত করে নিল। মুচকি হেসে পাশে দাঁড়ালো খালিদ।

“- আপনার শীত লাগবে না?

“- পুরুষ মানুষের চামড়া মোটা শীত, কষ্ট কিছুই লাগে না।মৃদু হেসে নিরবে হাটতে থাকে খালিদ।খালিদের কথা শুনে মুখটা মলিন হয়ে যায় তানির।সত্যি যে খালিদ তার ব্যবহারে কতটা কষ্ট পেয়েছে আজ খালিদের কথায় তানি অনুমান করতে পারলো।পাশাপাশি চুপচাপ হেঁটে চলছে গন্তব্যের দিকে দুজন।

“- তানি!

“- হুমম

“- একটা অনুরোধ রাখবে?

“- হুমম

“- একটা জায়গায় যাবে আমার সাথে?

“- নিশ্চুপ হয়ে যায় তানি। কি জবাব দেবে বুঝে উঠতে পারে না।

“- আচ্ছা থাক।

“- শুনেন!

“- বলো!

“- চলেন যাবো আমি।

“- শীতে তো কষ্ট পাচ্ছো থাক্ অন্যদিন বরং যাবো।

“- হুমম।মন টা খারাপ করে ” হুমম “বলে তানি

“- আচ্ছা চলো।

তানিকে নিয়ে চাঁদের আলোর রাতে নদীর পাড়ের উচু মাটির নির্জন কাঁচা রাস্তায় এসে বসে পাশাপাশি।চাদের আলো ছাড়া আলো বলতে খালিদের মোবাইলের উজ্জ্বল টর্চের আলোটুকুই যা।
নদীর হাওয়ায় বেশি শীত লাগছে তানির।শীতে দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে। তবুও চুপচাপ বসে আছে খালিদের পাশে।শীতের কষ্টের মাঝেও অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে তানির মাঝে।দুজনের নিরবতা ভেঙে কথা শুরু করলো খালিদ,

“- শীত লাগছে খুব তাইনা?

“- না। ঠিক আছি আমি।

“- একটা কথা জিজ্ঞেস করি সত্যি সত্যি উত্তর দেবে তানি?

“- হুম।সামনের চাঁদের আলোয় নদীর কালো জল দেখতে দেখতে

“-তোমার ধারণা আমি ভালোবাসার কথা বলে তোমাকে কবুল বলতে বাধ্য করেছি।সত্যি কি এতো জোর ছিল আমার ভালোবাসা প্রকাশে যার জন্য তুমি কবুল বলেছো?

“- (নিশ্চুপ)

“- আমি জানি আমি তোমার সাথে গত কিছুদিন অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি।বিশ্বাস করো আমি আর নিজের ভালোবাসাকে বুকে চেপে রাখতে পারি নি।আমি তোমাকে রাগ করে, ভয় দেখিয়ে আমার অনুভূতি গুলো বোঝানোর চেষ্টা করতে চেয়েছি।পাগলের মতো হয়ে যেতাম তোমাকে সামনে দেখলে।মন উজার করে বলতে চাইতাম ভালোবাসি তানি।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বলতে শুরু করে,”আমি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার কথা কোনোদিন ভাবি নি তানি।তবুও অজান্তেই দিয়ে ফেলেছি।বড্ড ভুল করে ফেলেছি আমি।জোর করে, ভয় দেখিয়ে ভালোবাসা পাওয়া যায় না সেটা আমি ভুলে গিয়েছিলাম।আমি হয়তো তোমার চোখে কোনোদিন সম্মানিত কেউ হতে পারবো না। আমার উপর রাগ রেখো না তানি।ঘৃণা করো না আমাকে দোহায় তোমার।কিছুক্ষণ থেমে ধড়া গলায় বলে”তুমি যা চাও তাই হবে।যদি চাও,,,

খালিদ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে খালিদের বুকে ঝুকে খালিদের মুখ চেপে ধরে তানি।

“- মুখে আনেন না দোহায় আপনার।ভুল আপনার না আমার।আমি জেদের বশে আপনার মতো ভালো মানুষের মনে কষ্ট দিয়েছি।আমাকে থাপ্পড় দেন তবুও ঐ কুলক্ষনে কথা মুখে আনবেন না।আমার সাত কপালের ভাগ্য আপনি আমারে ভালোবেসেন।পুষ্পা আমার চোখ খুলে দিছে না হলি আমার মাথার কোহিনূর মুকুট হারাতাম আমি।মাফ করে দেন আমারে আপনি।

খালিদ একটানে তানিকে বুকে জড়িয়ে ধরে আনন্দের অশ্রু ফেলে।তানি খালিদের বুকের শার্ট খামচে হুহু করে কেঁদে ওঠে।চেতনা ফিরে পেয়ে অনুশোচনায় চোখের জল নাকের জল এক করে স্বামীর বুকে তানি।

চলবে,,,