জোয়ার-ভাটা পর্ব-৭+৮

0
307

#জোয়ার-ভাটা
#সুরাইয়া-সাত্তার-ঊর্মি
৭।

” ব্রাদার্স এবার শুরু হবে আমাদের আসল পার্টি। নিয়ে এসেছি তোমাদের জন্য হুর-পরী।”

বলেই হাসলো লোকজন। মার্জান এক পলক এদের দেখলো সবাইকে। কতগুলো ছেলে-মেয়ে বসে আছে এখানে। এদের দেখেই মনে হচ্ছে উগ্রবাদী মানুষ সব। কিন্তু শেষে যাকে দেখলো.. মার্জান বিষম খেলো…।

” গ্রীস্ম এবার কিন্তু তোমার উপস ভাঙ্গতেই হবে, আর কত মেয়েদের থেকে দূরে দূরে পালাবে? দেখো কত সুন্দর মেয়ে এসে পড়েছে তোমার পায়ের কাছে?”

রায়হানের কথায় গ্রীস্ম পাত্তা দিলো বলে মনে হলো না। শুধু চোখের দৃষ্টি মেলে রইলো সামনে পরে থাকা সকালের মেয়েটির দিকে। গ্রীস্মের নজর এবার ভালো করেই পড়েছে মার্জানের উপর। ওঁর সৌন্দর্য্য পূর্ণিমার আলোর মতো ঝলমল করছে। মেয়েটির আতঙ্কিত মুখটি বড্ড টানছে ওঁকে। মার্জান এদিকে ভয় পেয়ে আছে ভারী.. নতুন কোনো ঝামেলার মুখে আর পড়তে চায় না ওঁ। কিছু বলবে তার আগেই কেউ একজন টেনে তুলে তাকে,

” আম সরি মিস আপনাকে অন্য কেউ ভেবে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে , আপনি ঠিক আছেন তো!”

বিনম্র কন্ঠে শুধালো গ্রীস্ম। মার্জানের অন্তরের ভিতর এক ভালো লাগা কাজ করতে লাগলো। নাহ্ লোকটি আর যেমনই হোক না কেন? তাকে হেল্প তো করতে পিছুপা হয় নি? মার্জান ছলছল চোখে গ্রীস্মের হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। মার্জান ভাবেইনি এই লোকটির সাথে এত জলদি দেখা হবে। মার্জান বলল,

” থ্যাঙ্ক ইউ। ”

বলেই বেড়িয়ে যেতে নেয় মার্জান তখনি কেউ একজন বলে উঠলো,

” এখনি তো এসেছো জানেমান, এখনি চলে যাবে?”

মার্জান এবার রাগ উঠে গেলো। কিন্তু পরিবেশ আর জায়গায় দেখে, নিজেকে সামলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করলো,

” দেখুন আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে, আমি তো বের হচ্ছিলাম হুট করেই উনি টেনে নিয়ে এলেন। প্লিজ আমাকে যেতে দিন! ”

ওখানে বসে থাকা একটি মেয়ে, যে কি না একটি ছোট টপস্ পড়ে চিপকে বসে আছে রায়হানের পাশে সে বলে উঠলো,

” আজ কাল দেখছি দু’ টাকার নাচনী ওয়ালাদের কি-ভাব। ভাব তো এমন করে যেন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানে না।

মার্জান মেয়েটির দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চাইলো,

” কে কি পারে, আর কে কি পারে না.. তাতো বোঝায় যাচ্ছে। ”

তাচ্ছিল্য হাসলো মার্জান। মেয়েটি রেগে গিয়ে তেড়ে এলো মার্জানের গায়ে হাত তোলতে। মার্জান তখন উল্টো টেবিল থেকে ওয়াইনের গ্লাস তুলে মেয়ের মুখে মেরে দিলো। মেয়েটি ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে উঠলো,

” ইউ.. ব্লাডি..”

এর আগেই একটি কন্ঠ থামিয়ে দিলো মেয়েটিকে,

” মাইশা এখান থেকে যাও।”

” কিন্তু আমি..”

গ্রীস্মের কন্ঠ আরো ঠান্ডা হলো,

” আই সেইড.. গো!”

মাইশা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। রায়হান বলল,

” আমার ভাইয়ের বুঝি মেয়ে পছন্দ হয়ে গেছে?”

এর পরেই মার্জানকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,

” কংগ্রাচুলেশন, ইরফানুর মাসাবীহ গ্রীস্মের নজর তোমার উপর পড়ে গেছে। কে বাঁচাবে তোমায় এবার।”

মার্জান রাগে ফেঁটে পড়লো এবার পাশেই থাকা গ্রীস্মকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলো ওঁ। ঠিক তখনি টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে নিজেও পড়ে গেলো গ্রীস্মের উপর। সঙ্গে সঙ্গে মার্জানের ঠোঁটের লিপস্টিকের দাগ গ্রীস্মের সাদা শার্টের উপর সুন্দর ভাবে লেগে গেছে। মার্জান গ্রীস্মের শক্ত-পোক্ত শরীরটা অনুভব করছে। ওঁর শ্বাস-প্রশ্বাস আর শরীরের মিষ্টি সুবাস আছড়ে পড়ছে মার্জানের নাকে মুখে । মার্জান হারিয়ে যেতে লাগলো যেন। এক পলক মনে হলো ওদের দু’জনের চারপাশে হাজারো প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে। পরক্ষনেই মার্জানের ধ্যান ভাঙ্গে, হন্তদন্ত হয়ে উঠতেই গ্রীস্ম ওঁর কোমর শক্ত করে চেপে ধরলো।তখনি রায়হান রাঙ্গানীত কন্ঠে বলল,

” ষ্টুপিড গার্ল, তোমার সাহস তো কম না.. তুমি গ্রীস্মকে ধাক্কা দাও, জানো এর আগে যে মেয়ে গ্রীস্মকে টাচ্ করেছিলো শুধু ওই মেয়েটির দু’টো হাত কেঁটে নিয়া হয়েছিলো।”

মার্জানের মনে হলো এবার পায়ের নিচ থেকে মাটি স্বরে গেছে। ওঁর কিছু হয়ে গেলে মৃণালের কি হবে?গ্রীস্ম অনেক ডেঞ্জারাস ইতি মধ্যই বুঝে গেছে মার্জান, সব কিছু ভেবেই সে গ্রীস্মের ভাবলেশহীন মুখের দিকে তাকিয়ে বিনীত সুরে অনুরোধ করলো,

” প্লীজ আমাকে যেতে দিন, আমি ইচ্ছে করে করিনি। প্লীজ।”

গ্রীস্ম এবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো মার্জানকে মাটিতে।মার্জান ধড়াম করে পড়লো। গ্রীস্ম চেচিয়ে উঠলো,

” এখান থেকে গায়েব হয়ে যাও। মেয়েদের ঢং একদম পছন্দ নয় আমার। ”

মার্জান ডান বামে কিছু দেখলো না। গ্রীস্ম কি বলল, তাতেও ভ্রুক্ষেপ করলো না। এক ছোটে পালিয়ে গেলো সেখান থেকে। তখনি রায়হান আহ্ করে শ্বাস ফেললো,

” গ্রীস্ম তুমিকি মেয়েটিকে চিনো? কেন ওঁকে এভাবে বাঁচাতে চাইছো?”

গ্রীস্ম উত্তর দিলো না। বাঁকা হাসলো শুধু। এদিকে মার্জান চট জলদি ওয়াশরুম চলে এলো। হুট করেই অনুভব করলো ওঁর পেট খুব ব্যথা করছে। এবং জামার পিছনে দাগ লেগে গেছে রক্তের। বুঝতে বাকি নেই মার্জানের ওঁর পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে। মার্জান এবার ঘাবড়ে গেলো। লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলো। যখন গ্রীস্মের উপর পড়েছিলো মার্জান তখন নিশ্চয়ই ওই লোকের কাপড়ে দাগ বসে গেছে? মার্জান ভয়ে আঙ্গুল চাবাতে লাগলো। এই লোকের মুখ দর্শণ আর করতে চায় না.. কমছে কম কিছুদিন। মার্জান আবারো তাকালো নিজের ড্রেসটির দিকে। কালো জামা বলেই স্থীর শ্বাস ছাড়লো।

হোটেলের ফাস্ট ফ্লোরে ইন্টার ভিউ চলছিলো নির্ঝরের। এইবার ধারাবাহিক নাটকের বদলে রবীন্দ্রনাথের লিখত বিখ্যাত গল্পের কদম্বারি দেবির চরিত্রের অভিনয় করতে চলেছে সে। সেই সুবাদে ডিরেক্টর, প্রডিউসারের সাথে সাথে সে নিজেও নিজের ব্যক্তব্য রেখে যাচ্ছে। এন্টারটেইনমেন্ট জগতে নির্ঝোর পরিচিত মুখ আর সব থেকে ইনোসেন্ট এবং ভালো চরিত্রের মানবী। যেখানে নায়ক-নায়কার স্ক্যান্ডালের অভাব থাকে না.. সেখানে নির্ঝোরের কোনো স্ক্যান্ডাল নেই বললেই চলে। ওঁর অভিনয় প্রতিটি মানুষ মুগ্ধ। নির্ঝোর এবার হাপিয়ে উঠেছে বসে থাকতে থাকতে ভিতরে। তাই রুমের বাহিরে বেলকনিতে এসে দাঁড়ালো। এবং ফোনে কথা বলতে লাগলো শীপ্রার সাথে,

” দোস্ত.. আর বলিস না। মাথা পুরো হ্যাং হয়ে গেছে। বাই দ্যা ওয়ে.. তোর কথা বল?”

শীপ্রা ফোনের ওপাশ থেকে জোড়ালো শ্বাস ছাড়লো। বলল,

” তেমন কিছু না। মৃণালকে নিয়েই আছি আপাতত। ”

মৃণালের কথা শোনে খুশিতে গমগম করে উঠলো নির্ঝর। বলল,

” ওহ্ ডিয়ার আমি যে কবে আমার বাবুজানকে দেখবো? আর তর সইছে না। এদিকে ব্যস্ত আর ব্যস্ত। তবে খুব জলদি আমাদের পছন্দের জায়গায় দেখা হবে, মার্জানকে বলিস খুব মিস করছি আমি!”

শীপ্রা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো। টুক টাক কথা বলে ফোন কেঁটে পিছনে ফিরতেই ধাক্কা লেগে ফোন পড়ে গেলো নির্ঝোরের। সামনের ব্যক্তিটিকে কিছু শক্ত কথা বলবে বলেই মুখ খুললো ওঁ। কিন্তু মুখের কথা মুখেই রয়ে গেলো। একজন সুদর্শন যুবক যার চার্ম পুরো করিডোর যেন গ্লো করছে। নির্ঝর হারিয়ে যেতে লাগলো এই লোকটির উপর। লাভ এট ফাস্ট সাইড যাকে বলে আর-কি। এই ব্যক্তিটির সাথে নির্ঝোর কথা বলার জন্য এগিয়ে যেতেই থামিয়ে দিলো ওঁর গার্ডরা। নির্ঝোর শুধু হা করে চেয়েই রইলো। নির্ঝোর যেতেই একটি গার্ড বলে উঠলো,

” গ্রীস্ম স্যার ম্যাম মনে হয় হোটেল থেকে বেড়িয়ে গেছে!”

রাত গাড় হচ্ছে। রাস্তার ধারের মানুষ কমছে। মার্জান তাই ট্যাক্সি বা সি এন জি নিয়ে নিবে ভেবেই ওয়াশরুম থেকে বের হলো। কিন্তু হায়.. সামনেই গ্রীস্মকে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলতে দেখে আত্না শুকিয়ে গেলো। লোকটি এবার ভিলেন মনে হচ্ছে। মার্জান সেখান থেকে লুকিয়ে বেড়িয়ে গেলেও কিছু কালো পোশাকদারি লোকের মুখে পড়ে গেলো। সেখানের লোকটি ব্লু টুথে কথা বলছে,

” মেয়েটি-কে পেয়ে গেছি স্যার!”

মার্জারের বুকের ভিতর এবার ধড়াস ধড়াস শব্দ করছে। সে পিছনে ফিরে আবার দৌঁড়। আজকে এই দিনটি যে কি জন্য এসেছিলো মার্জানের জীবন? মার্জান নিজের ভাগ্যকে হাজার টা গালি দিতে দিতে লুকিয়ে পড়লো সামনে একটি বট গাছের আঁড়ালে। আলো নেই সুনশান-নিস্তব্ধ। একটি মানুষ পর্যন্ত নেই। মার্জান কিছুতেই বুঝতে পারছে না। লোকটি তো তাকে ছেঁড়ে দিয়েছিলো। তাহলে কেন আবার আটকাতে চাইছে ওঁকে। কি চাইছে? মার্জানের ভাবনার মাঝে পর পর কয়েকটি গাড়ি এসে ঘিরে ফেললো বট গাছটি। মার্জানের আত্মা এবার বেড়িয়ে আসার উপক্রম। মার্জান নিজেকে আড়াল করতে ব্যর্থ। ঠিক তখনি সামনের গাড়ি থেকে গ্রীস্ম বেড়িয়ে এলো। মার্জান স্পষ্ট দেখতে পেলো লোকটির সাদা শার্টের বুকের মাঝে ওঁর ঠোঁটের লিপস্টিকের ছাপ। আর সাদা প্যান্টের মাঝে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। মার্জানের শরীর হীম হয়ে গেলো। গ্রীস্মের কন্ঠ ভেসে এলো তখন,

” তোমার লুকোচুরি খেলা শেষ হয়েছে মিস? বের হও!”

মার্জানের মনে হলো পা জমে গেছে। শরীরটাো মৃদুমন্দ কাঁপছে। মার্জানকে বেড়িয়ে আসতে না দেখে দু’টো বডি গার্ড গেলো ওঁর কাছে। টেনে ছিঁড়ছে দাঁড় করালো গ্রীস্মের সামনে।

” আপনি কি চাইছেন আমার কাছে? আপনিতো যেতে দিয়ে ছিলেন আমাকে, তাহলে এমন করছেন? প্লিজ যেতে দিন!”

গ্রীস্ম হাসলো, ওঁর বডিগার্ডদের উদ্দেশ্য করে বলল,

” ওঁকে গাড়িতে উঠাও।!”

মার্জান চোখ বড় বড় করে চাইলো। চিৎকার চেঁচামেচি করে বলল,

” মগের মুল্লুক পেয়েছেন নাকি? আমি যাবো না আপনাদের সাথে। ছাড়ুন আমাকে। হেল্প, হেল্প হেল্প। কেউ আমাকে বাঁচান এঁরা আমাকে কি’ড’নে’প করছে।”

মার্জানের কথায় বিরক্তি নিয়ে চাইলো গ্রীস্ম। ধমকের সুরে বলে উঠলো,

” অনেক বকবক করো তুমি। একদম চুপ থাকো। নয়তো এখানেই পুতে রেখে দিবো।”

মার্জান অসহায় চোখে তাকালো। বলে উঠলো,

” দেখুন আপনি আমাকে যেমন মেয়ে ভাবছেন আমি তেমন মেয়ে নই.. প্লিজ আমাকে যেতে দিন!”

মার্জানের কথা কর্ণপাত হলো না যেন। লোক গুলো এবার মার্জানের মুখে রুমাল চেপে ধরলো। তীব্র মেডিসিনের গন্ধে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে লাগলো মার্জান। তাহলে আবার কি মার্জানের ওই সব কিছু ফেইস করতে হবে? কি হতে চলেছে ওঁর সাথে? লোকটি কি ওই মেয়েটির মতো ওকেও গুম করে দিবে? ওঁর কিছু হলে,মৃণালের কি হবে? ওঁর মার কি হবে? কে দেখবে ওদের? কে?

চলবে,

#জোয়ার-ভাটা
#সুরাইয়া-সাত্তার-ঊর্মি
৮।

নিঝুম রাত। চতুর্দিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। কখনো বা থেকে থেকে ভেসে আসছে শেয়ালের হাঁক। নিরব-নিস্তব্ধ চারপাশের ঘেড়া বড় বড় গাছ-গাছালি। সুনশান এলাকার মাঝে গড়া একটি ডুপ্লেক বাড়ি। মার্জান পিট পিট করে চোখ খুললো। আলিশান একটি হল রুমের দামি সোফায় শুয়ে আছে সে। মাথায় তীব্র ব্যথা করছে..মার্জান ধীরে ধীরে উঠে বসলো। ঠিক সেই মুহূর্তে একজন বৃদ্ধ লোক এসে দাঁড়ালো মার্জানের সামনে। হাতের মাঝে একটি ব্যগ। লোকটি বলল,

” মেডাম এই ব্যগটা নিন। বাম সাইডের রুমে ওয়াশরুম আছে, ওখানে গিয়ে গোসল করে এটি পড়ে উপরের ঘরে স্যার আছে ওখানে চলে যান!”

একদমে কথা গুলো বলেই থামলেন। মার্জান ভ্রু-কুচকালো,

” আমি এসব পড়বো না। গোসল-ও করবো না। আপনার স্যারকে বলুন আমাকে যেতে দিতে!”

লোকটি মাথা নত করে ফেললো,
” আমি কেন মেডাম স্যারকে এই কথা বলার সামর্থ্য আমাদের নেই।”

মার্জান হতাশার শ্বাস ছাড়লো,
” আমিই যাচ্ছি কথা বলতে।”

পা বাড়ালো মার্জান। বৃদ্ধ লোকটি পিছন থেকে কিছু বলতেই থেমে গেলো মার্জান,
” মেডাম স্যার অপরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন না। শুচিবায়ু রোগ আছে। প্লিজ মেডাম আগে ফ্রেস হয়ে নিন।”

মার্জান চোখ ছোট ছোট করে চাইলো। ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে উপরে চলে গেলো। পিছন থেকে কেয়ার টেকারের এর একটি বাক্য-ও কানে তুললো না মার্জান। যতটা সাহস নিয়ে না রুমটির সামনে এলো ওঁ, ওতটা সাহস নিয়ে দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করতে পারলো না মার্জান। কি হবে? না হবে? ভেবেই হিম হচ্ছে শরীর। ঠিক সেই মুহূর্তে ভিতর থেকে ভেসে এলো গ্রীষ্মের গলা,

” ভিতরে এসো।”

মার্জান সাতপাঁচ ভেবে ভিরু পায়ে প্রবেশ করলো ঘরটিতে। সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা হাওয়া স্পর্শ করে গেলো মার্জানের শরীর।রুমটির ভিতরের কারুকার্য আধুনিক হলেও দামি ফার্নিচার আর বড় বড় প্যান্টিং দিয়ে সাজিয়ে রাখা। মার্জান কিছুতেই বুঝতে পারছে না, এই আমিরজাদাটা কে? মার্জান কথা ঘোরালো না। সোজাসাপ্টা বলল,

” মিস্টার গ্রীষ্ম, কেন করছেন এমন? যেতে দিন আমায়…।”

গ্রীষ্ম দাঁড়িয়ে ছিলো জানালার পাশে। বাতাসের দমকা হাওয়ায় এলোমেলো করছে পর্দা। উড়ছে এলোমেলো গ্রীষ্মের মাথার চুল। মার্জান লক্ষ করলো, লোকটি এখনো ওই প্যান্ট আর শার্ট পড়ে আছে। যার মাঝে রক্তের দাগ আর লিপস্টিকের দাগ লেগে আছে। মার্জান ভাবলো কিছুক্ষণ,

” এই লোকের না শুচিবায়ু রোগ আছে? তাহলে এই কাপড় চোপড়া এখানো পাল্টায়নি কেন?”

গ্রীষ্ম এবার পিছনে ফিরে তাকালো। মার্জানকে এখনো আগের কাপড়ে দেখে ভ্রু কুচকালো। কিছু বলল না। শুধু তাকিয়ে রইলো অনুভূতিহীন গভীর নীল চোখ জোড়া নিয়ে। মার্জান এই প্রথম গ্রীষ্মের চোখ জোড়া দেখছে। মার্জানকে আগাগোড়া পর্যবক্ষেণ করার পরেই লম্বা লম্বা পা ফেলে একদম কাছে চলে আসে মার্জানের। মার্জানের মুখোমুখি দাঁড়াতেই ভয়ে পিছিয়ে যেতে নেয় মার্জান। তখনি শক্ত-পোক্ত হাত দু’টি ধরে ফেলে মার্জানকে। মার্জান চোখ জোড়া বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে গ্রীষ্মের দিকে। গ্রীষ্ম তখন ঠান্ডা গুরুগম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,

” তুমিকি চাও? আমি তোমাকে গোসল করাই?”

মার্জান চমকে গেলো। কিছু বুঝলো না ওঁ, তা বুঝতে পেরেই গ্রীষ্ম বলে উঠলো,

” নোমান আঙ্কেল কি তোমাকে গোসলের কথা বলে নি?ওঁ কি জানায় নি? আমার অপরিষ্কার কিছু পছন্দনা?”

মার্জান গ্রীষ্মকে ধাক্কাতে লাগলো দূরে সরাবার জন্য। বলল,

” আমি কেন শোনবো আপনাদের কথা!”

গ্রীষ্ম হাসলো। বলল,

” আমার এই মহলের আসে-পাশে অনেক জঙ্গলী জানোয়ার আছে, তোমাকে মেরে এদের হাতে তুলে দিলেও তোমার হাড়গোড় ও পাবে না কেউ। বলো মরতে চাইছো কি?”

মার্জান ঘাবড়ে গেলো। গ্রীষ্মকে ঠান্ডা মাথায় বোঝাবার চেষ্টা করে বলে উঠলো,

” দেখুন, আপনি আমাকে যা ভাবছেন আমি মোটেও তা নই, বিশ্বাস করুন?”

” আচ্ছা, তো তুমি কেমন মেয়ে? না-কি তোমার ছেলে মানুষ পছন্দ না!”

মার্জান রাগে কিড়মিড় করে উঠলো,

” দেখুন আমার বলার মানে তা নয়, আমি বলতে চাইছি টাকা নিয়ে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড করা মতো মেয়ে নই। প্লিজ আমাকে যেতে দিন।”

গ্রীষ্ম এসব কথায় পাত্তা না দিয়েই বলে উঠলো,

” খোলো।”

মার্জান বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো,

” কি বলছেন এসব? আপনাকে তো মাত্র-ই বললাম আমি বুঝিয়ে, তারপরেও এসব কি বলছেন? ছিঃ আপনি একটা নিকৃষ্ট মানুষ। ”

গ্রীষ্ম থামালো, থমথমে কন্ঠে বলে উঠলো,

” আমার যে কাপড় গুলো তুমি নোংরা করেছো, তা খোলো। এবং ধুয়ে পরিস্কার করবে, নাও…।”

মার্জানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এই লোক পাগল কি-না?

” কি বলছেন এসব?”

গ্রীষ্ম কিছুটা সরে এলো। বাঁকা হেসে বলল,

” তোমার কি মনে হয়, তোমাকে এখানে আমি রাত কাঁটানোর জন্য এনেছি? নো ওয়ে।”

মার্জানের মাথা ঘুরে গেলো।এক দিকে যেমন খুশি হলো, অন্য দিকে রাগ-ও উঠলো ওঁর। কত বড় সাইকো এই লোক? সামান্য কাপড় ধোবার জন্য মার্জাকে কি’ড’নে’প করে আনলো? এত রং তামশা করলো? মার্জান বুঝতে পারছে না.. এই পাগলো ব্যক্তিটিকে কি বলা উচিত। আচ্ছা এই এত বড় আমিরজাদার ঘরে কি কোনো কাজের মানুষ নেই নাকি? মার্জানকে আকাশ কুসুম ভাবতে দেখে গ্রীষ্ম বলল,

” তোমার কি বাড়ি যাবার ইচ্ছে নেই ? না-কি হতাশ হচ্ছো কিছু করছিনা বলে?”

মার্জান রাগ ধপ করে বেড়ে গেলো।

” আপনার মতো সাইকো মানুষ আর একটা-ও দেখিনি। ”

ভ্রুক্ষেপ করলো না মার্জানের কথায়। হাত দু’টো মেলো ধরলো শুধু। মার্জান মনে মনে ভাবলো,

” এইটুকুনই তো কাজ এই লোকের কাপড় ধুয়ে দিলেই কাহিনি শেষ। ”

গ্রীষ্মের গলা ভেসে আসতেই ভঙ্গন হলো মার্জানে ভাবনা,

” তোমার বুঝি সত্যি শখ জেগেছে, আমার বাড়ির পালিত কুকুরদের ডিনার হবার? ট্রাস্ট মি এরা মেয়ে মানুষের নরম মাংস খুব পছন্দ করে!”

মার্জানের লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেলো। বুঝতে বাকি নেই, এই লোকটি সাধারণ কেউ তো নয়.. মার্জানকে মেরে ফেললেও কেউ কখনো জানতেও পারবে না। মার্জান তাই এগিয়ে গেলো। গ্রীষ্মের শক্ত-পোক্ত শরীরে জড়িয়ে থাকা শার্ট খুলতে লাগলো মার্জানের নরম তুলতুলে আঙুল। গ্রীষ্ম কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো মার্জানের মুখ পানে। ফর্সা মুখে ভয়ে লাল হয়ে আছে। নাকে জমছে বিন্দু বিন্দু ঘাম… গ্রীষ্মের জানি কি হলো? ঝুঁকে পড়লো মার্জানের মুখের উপর। দখল করে নিলো মার্জানের ওষ্ঠদ্বয় নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের মাঝে। গভীর চুম্বন করতে লাগলো ধীরে ধীরে… অকস্মাৎ ঘটনা হতবিহ্বল ভাবে দাঁড়িয়ে রইলো মার্জাণ। হঠাৎ ঠোঁটে তীব্র ব্যথা অনুভব হতেই ফিরলো ধ্যানে। গ্রীষ্মকে ধাক্কা, লাথি মেরেও নিজ থেকে সরাতে পারছে না যেন.. রাগে দুঃখে এবার নোনাজল গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। মার্জানের মুখে এবার রক্তের স্বাদ অনুভব হচ্ছে। এই মুহুর্তে গ্রীষ্মকে কোনো হিংস্র পশু মনে হচ্ছে। মার্জান যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করতে করতে তখনি গ্রীষ্ম মার্জানকে ছেঁড়ে দেয়। মার্জান তখন রাগে ক্ষোভে থাপার বসায় গ্রীষ্মের গালে। থাপর খেয়ে শক্ড হয়ে যায় গ্রীষ্ম। মার্জান তখন ফোপাঁতে লাগলো মার্জান। গ্রীষ্ম যখন ধাতস্থ করে নিজেকে সঙ্গে সঙ্গে চেপে ধরে মার্জানের গলা। মার্জান শ্বাস নিতে পারছে না। হাসফাস করতেছে ছুটবার। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। গ্রীষ্ম বুঝি আজ ওকে মেরেই দিবে? মার্জানের চোখে মৃণালের ছোট মুখটা ভেসে উঠলো। চোখের সামনে আঁধার হয়ে আসছে ধীরে ধীরে। এই বুঝি প্রাণ পাখিটা বেড়িয়ে যাবে দেহ নামক খাঁচা থেকে? এক পর্যায় যখন মনে হলো মার্জান মারাই যাবে? তখনি ছেড়ে দিলো গ্রীষ্ম। রাগে তপ্ত কন্ঠে চেঁচালো ওঁ,

” বেড়িয়ে যাও আমার সামনে থেকে।”

মার্জান দম নিতে পারছে না।খুক খুক করে কাশতে লাগলো। পা দু’টো চলছে না। হিংস্র সাইকোটা ওঁর গলায় দাগ বসিয়ে দিয়েছে পাঁচ আঙ্গুলের। ঠোঁট থেকে পড়ছে রক্ত। বীভৎস দেখাচ্ছে তাকে। মার্জান নিজের প্রাণ পাখি হাতে নিয়ে বেড়িয়ে এলো কোনরকম। সিঁড়ি দিয়ে নামতে ধাক্কা খেলো কারো সাথে! সামনে তাকাতেই বিষম ভরা কন্ঠ শোনা গেল,

” মিস আপনি এখানে?”

মার্জান হাঁপাতে হাঁপাতে তাকালো ব্যক্তিটি আর কেউ নয়, সন্ধ্যা বেলার ওই লোকটি যার নাম রায়হান। মার্জানকে দেখেই লোকটি আহত কন্ঠে বলে উঠলো,

” মিস আ’ম সরি, আমরা তখন বুঝতে পারিনি, পরবর্তীতে আমরা যাকে হায়ার করেছিলাম, ও আসায় ক্লিয়ার হয়েছি। কিন্তু আপনাকে কি এখানে গ্রীষ্ম এনেছে?”

অবাকতার শেষ নেই কন্ঠে। মার্জান কোনো কথাই বললো না। নোমান আঙ্কেল যিনি কেয়ার টেকার উনিকে বলে উঠলেন শুধু,

” আমাকে বাসায় যেতে দিন।”

তাৎক্ষণিকভাবে বলল রায়হান,
” আপনি এখানে কোনো গাড়ি বা সি এমন জি পাবেন না। চলুন আমি আপনাকে পৌঁছে দেই!”

নোমান আঙ্কেল হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়িয়ে বললেন,

” হ্যাঁ মেডাম স্যার ঠিক বলছেন, এই এলাকায় রাত হয়ে গেলে তেমন গাড়ি কেন মানুষ জনের দেখা মেলা দুষ্কর। ”

মার্জান আর ভাবলো না। কোনো রকম এই খান থেকে যেতে চায় সে। যে লোক একটু আগে তাকে মেরে ফেলতে চাইছিলো ওঁর শরণাপন্ন আর হতে চায় না। এবার তো মার্জান জান্তেও চায় ওই রাতের ব্যক্তটি কি গ্রীষ্মই কিনা? যদি হয়-ও মার্জান আর চায় না এই লোক আবার আসুক ওঁদের জীবনে। মার্জান সম্মতি জানালো। বের হবার সময় বাড়িটির দিকে এক পলক তাকিয়ে মিন মিন করে বলল,

” আই হোপ, আপনি আমার বাচ্চার বাপ না হন।”

গাড়ি চলছে, ঘন বন জঙ্গল আর বড় বড় গাছ পালা পিছনে ফালিয়ে চলছে গাড়ি। নিরবতা ভেঙ্গে রায়হান জিজ্ঞেস করলো এবার,

” আপনি কি গ্রীষ্মের গায়ে হাত তুলে ছিলেন?”

মার্জান চকিতে তাকালো কিছু বলল না। রায়হান আবার বলে উঠলো,

” গ্রীষ্মের গায়ে কেউ হাত দিলে স্পেশালি মেয়েরা? তো ও সহ্য করতে পারে না। ওঁর মনে অন্য কেউ আছে, যাকে ওঁ মনে প্রানে চায়.. এই জন্যই ও’ মেয়েদের থেকে দূরে থাকে। তবে কেন জানি আপনাকে ওঁর বাসায় নিয়ে এলো, কাহিনী বুঝলাম না। তবে, হ্যাঁ আমার বন্ধু কিন্তু এতটাও খারাপ না!”

মার্জান তাচ্ছিল্য হাসলো বললো,
” কতটা ভালো তাতো দেখতেই পাচ্ছি, আর কিছুক্ষণ হলেই লাশ পড়তো আমার। সাইকো একটা!”

রায়হান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। বলল,
” গ্রীষ্ম মানসিক ভাবে অসুস্থ, ওঁর বাইপোলার ডিসঅডার্র আছে। যার কারণে ওর রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না। যখন রাগ উঠে যায়.. ওঁর সামনে যেয়েই থাকুক ওকেঁ মারতে পিছপা হয় না।ইনফেক্ট নিজেকে হার্ম করে ফেলে।”

এসব শোনার পর মার্জান আরো ঘাবড়ে গেলো। মনে মনে দোয়া করতে লাগলো, এই ব্যক্তটি তার জীবনে আর কখনো না আসুক। এই লোকের সাথে এই জীবনে কেন পরকালেও দেখা না হোক। এমন মানসিক রোগীদের তো পাগলা গরদে ভর্তি করে রাখা উচিত। ঘর বন্দি করে রাখা উচিত, এদের কেন এভাবে খোলামেলা ছেঁড়ে রেখেছে?মনে মনে বললেও মুখে চুপ রইলো মার্জান।

প্রভাত হয়েছে সেই কখন। বেলা উঠতে শুরু করেছে। মৃণাল ঘুমুচ্ছে বেঘোর। শীপ্রা কাঁথা ভালো করে টেনে দিলো। নিজেকে তৈরি করে নিলো ওঁ। সকাল সকাল টাটকা শাক-সবজি, মাছ এসব আনতে যাবে বলেই বেড়িয়ে পড়লো ওঁ। পাশেই কাঁচাবাজারে গিয়ে এটা সেটা নিতে ব্যস্ত শীপ্রা খেয়াল করেনি কখন ওঁর পিছনে লাভ চলে এসেছে। মাছের দোকানের সামনে আসতেই মাছের আঁশটে গন্ধে নাক ছিটকে ফেললো,

“ইয়াক কি দূর্গন্ধ। ”

শীপ্রা মোটেও চমকালো না। লাভের রোজকার কারবার এসব। মাছের দাম করতে করতে বলে উঠলো ওঁ,

” তাহলে কেন এসোছো এখানে লাভ, মাছি তাড়াতে?”

লাভ খুশি খুশি গলায় বলে উঠলো,

” নাহ্, লাভের লাভকে দেখতে!”

শীপ্রা সপ্তপর্ণ শ্বাস লুকিয়ে ফেললো। বলল,

” বিরক্ত করো না তো যাও এখান থেকে। ”

বাচ্চাদের মতো মুখ করে বলল লাভ,
” চাইলেও যেতে পারছি না, আঙ্কেলের সাথে এসেছি, উনি আজ আমাকে শাস্তি সরূপ বাজার করাতে এনেছেন!”

কাঁদো কাঁদো মুখ করতেই হেসে ফেললো শীপ্রা। শীপ্রার হাসিতে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো লাভ। শীপ্রা হাসতে হাসতে যখনি লাভের পানে চাইলো, তখনি একটি পরিচিত মুখ দেখে কাঁপতে লাগলো শীপ্রা। পা দু’টি যেন সেখানেই এঁটে গেলো। কোনো রকম নিজেকে সামলিয়ে বিড়বিড় করলো,

” তায়ান শাহ্”

বলেই পিছু ফিরে এক দৌড়ে পালাতে লাগলো সেখান থেকে। লাভ তখন হতবাক। মেয়েটি এভাবে পালারো কেন? ভেবেই পাচ্ছে না ওঁ। তখনি পিছন থেকে একটি ভড়াট কন্ঠ ভেসে এলো,

” লাভ!”

” আসছি তায়ান আঙ্কেল। ”

বলেই পিছনে ফিরে চলে গেলো সেই ব্যক্তিটির দিকে। এদিকে শীপ্রা ভয়ে আলুথালু অবস্থা বাড়ি ফিরে দরজা লাগিয়ে দিলো। দরজার ঘেসে সেখানেই বসে ঢুকরে উঠতেই, মার্জান ছুঁটে এলো। শীপ্রার এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেল সে নিজেও।

” কি হয়েছে শীপ্রা বনু, বল কান্না কেন করছিস? কেউ কিছু বলেছে?”

শীপ্রা হাউ-মাউ করে কেঁদে চলেছে।মার্জানকে ঝাঁপটে ধরে ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে বলল,

“ওঁ.. ওঁ আবার ফিরে এসেছে জান.. ওঁ আবার ফিরে এসেছে.. ওঁ আমাকে ছাড়বে না এবার। ছাড়বে না!”

মার্জান চিন্তায় পড়ে গেলো। কার কথা বলছে শীপ্রা? কে ওঁকে ছাড়বে না? কার থেকে পালাতে চাইছে? কি হয়েছিল ওঁর সাথে? যা মার্জান জানে না? আর সব থেকে বড় কথা? কে ওই ব্যক্তি যাকে ভয় পাচ্ছে শীপ্রা?

চলবে,