ঠোঁট ১৩+১৪

0
885

#ঠোঁট

১৩+১৪

বাসায় আসার পরে ঝরনা আমার সাথে কোন কথা বলেনি। আমি বুঝতে পেরেছি সে চরমভাবে রাগ করেছে। কিন্তু তার রাগটা এখন কি করে ভাঙবো সেই চিন্তায় আমার মাথা ঘুরছে। যদি এখন তাকে জড়িয়ে ধরি নিশ্চয় কিল-ঘুসি খেতে হবে। আর যদি সরাসরি চুমু খায় তার ঠোঁটে। তাহলে হয়তো পুরোপুরি চুমু খেতে দেবে না।
চুমু খাওয়ার আগেই ছাড়িয়ে দেবে।

আমি ঘরের চুপ করে বসে আছি। আসামির মতো বলতে গেলে।
কিছুক্ষণ পরে দেখি ঝরনা নিজেই আমার জন্য ঠান্ডা এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে আসলো। ব্যাপারটা আমাকে খুব অবাক করলো।
এটা কি আমার জন্য নেগেটিভ হবে নাকি পজিটিভ হবে তা অবশ্য বুঝতে পারছি না।

আমি তার দিকে না তাকিয়ে গ্লাসটা ধরে অর্ধেক গিলে নিলাম ।অর্ধেক খাওয়া পরে তাকে বললাম। এ বাকিটুকু আপনি খান।

ও আমার হাত থেকে গ্লাস নিয়ে সুন্দর করে আমার পাশে বসলো। তাও আবার আমার গায়ের সাথে ঘেশে।

এমন কাহিনী দেখে আমার শরীর বিদ্যুৎ চমকে ওঠে। ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারলাম না। ওর রাগ কি তবে ভেঙ্গে গেছে। নাকি ঝড়ের আগে পূর্বাভাস দিচ্ছে।

আমিও তবুও মনে মনে ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করছি। যদি সত্যি ঝড় হয় তাহলে আমাকে ঝড়টা সইতে হবে। ঝড়ের বিপরীতে যাওয়ার কোন সুযোগ নাই আমার।

ঝরনা গ্লাসের অর্ধেক শরবত শেষ করার পরে আমার দিকে ধীর চোখে তাকায়। তেমন চাহনি দেখে আমার ভিতরে করে যেটা আঁতকে ওঠে। মাগো মা, যেন পুরোটা গিলে ফেলতে চাইছে আমাকে।

তারপর আবার ধীরকন্ঠে আমাকে প্রশ্ন করে।

ক্লাসে কি মেয়েটার সাথে আর কোন কথা হয়েছিল?

না হয়নি।

মেয়েটা কি এর আগে আপনার সাথে কোনদিন কথা বলেছিল?

না এর আগে কখনো কথা হয়নি।

তাহলে আজকে ডেকে বসলো কেন?

জানিনা আমি ,বলতে পারবো না।

আপনি কালকে আমাকে মিথ্যা কেন বললেন?

কি মিথ্যা বললাম?

মেয়েটা নাকি দেখতে অত সুন্দর না।

এটা আবার মিথ্যা বললাম কখন সত্যিই তো বলেছি। ওকি দেখতে খুব আহামরি সুন্দর। একদমই তো সুন্দর না।

দেখেন, কথা উল্টাবেন না। বিয়ের আগে আপনার এসব ছলচাতুরি দেখলে সহ্য করতাম। কিন্তু এখন এসব সহ্য করার মতো না। আমি যদি আর ফারদার দেখেছি ওই মেয়েটার দিকে তাকাতে কিংবা ওই মেয়েটার সাথে কথা বলতে। ছেড়ে যাবো না ‌। তোর মিটার বক্স ব্লাস্ট করে দেবো একদম। কথা যেন মনে থাকে। আর আজকের জন্য ছেড়ে দিচ্ছি।

ঝরনা আমার সামনে থেকে উঠে চলে যায়। কিন্তু এমন একটা হুমকি দিয়ে যায়। যেটা ভবিষ্যতের জন্য খুব মারাত্মক একটা দুর্যোগ বলা যায়। তাকাবো না তো অবশ্যই। কিন্তু যা হুমকি দিয়েছে বাপরে বাপ। এমন হুমকি আমার বন্ধুরাও কোনদিন দেয়নি।

সেই দিন আর একসাথে গোসল করা হয় না। ঝরনা মন খারাপ হয়ে আছে। এখন কিছু থেকে কিছু করেই এই মন ভালো করা যাবে না। এমনি সে এখন উষ্ণতা ও নেবেনা।

তবে দুপুরে আমাকে খাইয়ে দিয়েছিলো। যতই রাগ থাক। এই আদর থেকে অন্তত আমাকে বঞ্চিত করে না সে।
এই দিকটা সে খুব খেয়াল রাখে।

সকালে দুজনেরই খুব ভালমতো ঘুম হয় না। যা ঘুম হয় কিছুটা উষ্ণতা হয় দুপুর বেলায়। সকালে হয় তবে সব দিনগুলোতে না। ক্লাসের জন্য সম্ভব হয় না।
ঠিক এখন দুপুরবেলা তেও সে আমাকে তার বুকের মধ্যে টেনে নিয়েছে। ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে পরম যত্নে। আমিও চুপ করে থাকি নি। খুব শক্ত করে চেপে ধরি তাকে। মনটা চাইছিল তাকে একটু উষ্ণতার দিয়ে যদি তার মনটা ভালো করতে পারি। কিন্তু চেপে ধরার সাথে সাথে ঝর্না আমার কানের কাছে এসে বলে। না এখন না। এখন আমার বুকে আপনি ঘুমান। এসবের জন্য অনেক সময় আছে।

কথাটা শুনে আমি একটু মুচকি হাসি হাসি। যাক অন্তত তার মনটা একটু হলেও গেলছে।

সন্ধ্যেবেলায় আবার তার কাছে নিত্য নিয়ম অনুযায়ী পড়তে বসি। তখন আমার তাকে একজন মাস্টারনী লাগে। কি দারুণ করে পড়ায় আমাকে।

এভাবেই সময় গুলো খুব সুন্দর ভাবে আনন্দের সাথে কেটে যায়।
তারপর আসে রাত। আর এই রাতে তাকে আমি বুকে ঘুমিয়ে দি পরম যত্নে। রাতটা কাটে তার আমার বুকে।আমি তো তেমন কোনো কাজই করি না বলতে গেলে ক্লাস ছাড়া।
মাসে একটা আউট সাইট থেকে আমার বেতন গুলো আসে। আর সেই বেতন গুলো দিয়ে আমার ছোট্ট এ সংসারটা খুব আরামে চলে যায়।
কিন্তু তার তো খাটনির অভাব নেই। এই পুরো বাসা, রান্নাবান্না, আমার যত্ন নেওয়া। আরো কত কাজ তার উপরে। এইসব সারাদিনের সামলে রাতে একটু ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে। আর সেই ক্লান্তির ঘুম টা কাটিয়ে দেয় আমার বুকের ভেতর। তার সুখ মানে আমার সুখ। আর এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আনন্দের।

তবে এই রাতটাও যে আমার জন্য অন্য রকম একটি ঘটনা নিয়ে আসবে। সেটা আমি ঝর্ণাকে বুকে নেওয়ার সময় ভাবিনি।

চলবে
#ঠোঁট

চোদ্দ,
মাঝরাতে আমি আর ঝর্ণা দুজনে ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার ঘুম বরাবরের মতই হালকা ছিল।তবে কোন একটা কারণে সেই সময় আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমি তখন ঝর্ণার বুকে হাল্কা ভাবে হাত বুলিয়ে দিতে থাকি। ও ঘুমের মধ্যে আমার হাতটা চেপে ধরে তার বুকের সাথে।ঠিক এমন সময় বাহির থেকে আচমকা কোন একটা কুকুরের শব্দ ভেসে আসে। তবে এটা আসল কুকুরের শব্দ নয়। কোন একটা সংকেত। যা আমার কাছে খুব পরিচিত শব্দ বা সংকেত মনে হচ্ছে। আমি খুব অবাক হয়ে যায়। আজ রাতে হঠাৎ করে এই শব্দ টা আবার কেন আসছে?

আমি তখন ঝরণার বুকে হাল্কা করে চাপ দিয়ে উঠে পড়ি। বারান্দায় গিয়ে ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করি।শব্দ টা আসলেই কি কোনো সংকেতের জন্য নাকি কেউ কাউকে কোন হবে ডাকছে।

কিন্তু না আমার ধারণাটা সঠিক। এই ডাক এবং সংকেত আমার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এতক্ষণ ধরে।
তবে যেই লোকটা বাসার সামনে থেকে এমন শব্দ করছিল। সে যখন দেখলো আমি বারান্দায় এসে গেছি। ঠিক তখন একটা সাদা কিছু ছুড়ে মারে আমার বারান্দার দিকে। আর সেটা আরেকটু জন্য আমার মুখে লাগতে যেও লাগেনি। তবে সেটা পাশে গিয়ে পড়েছে

আমি সেটা হাতে তুলে নিলাম। সেটা একটি কাগজ। আর ভেতরে একটি ছোট্ট ইটের ঢেলা।

কাগজটা খুলে দেখি। ভিতরে মাত্র কয়েকটা শব্দের কিছু লেখা আছে।
সেগুলো হলো-

তোমাকে পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত সময় দেয়া হলো। এর মধ্যে তুমি যদি আত্মসমর্পণ না করো।তাহলে পরীক্ষার পরে তোমার জান নিয়ে টানাটানি হয়ে যাবে।

আমি কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলাম। তবে এই স্বস্তি আমার কাজে লাগলো না।

আমি তখনই কাগজটা বাথরুমে নিয়ে যেয়ে ফ্লাশ করে দিই। যেন এই কাগজের আর সেই লেখাটার কোনো অস্তিত্বই না থাকে।
তারপর মুখ ধুয়ে এসে ঝরনার পাশে মাথা এলিয়ে দি। শান্তি পাচ্ছিলাম না কিছুতে। এর মধ্যে ঝরনা ঘুমন্ত চেহারাটা বেশ কয়েকবার দেখা হয়ে গেছে আমার। তবুও তার দিকে কোন টান পাচ্ছি না ভেতর থেকে। একবার ভেবে দেখলাম। এখন যদি তাকে উষ্ণতার জন্য পাগল করে দি, তাহলে কি ভেতরের অস্বস্তিটা কাটতে পারবে।
মনে হয় না।

তবুও তার বুকটা নগ্ন করে ফেললাম। আদর দিতে থাকলাম ধীরে ধীরে। এক পর্যায়ে ঝরনার ঘুম ভেঙে যায়।

ঝরনা তখন আমার মুখের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে।
আপনি ঘুমাননি?

ঘুমিয়ে ছিলাম তবে ভেঙ্গে গেছে।

তাহলে কি এখন আমাকে লাগবে ভাবছেন?

আপনাকে আমার সব সময় লাগে। আপনি হয়তো বুঝেন না তাই।

আহারে আমার ভালোবাসাটা রে। আচ্ছা বুক থেকে কাপড় সরিয়ে ফেলছি। আসেন বুকে ঘুমাবেন।

আমি আর তখন কোন কথা বাড়ালাম না। কারণ বুঝতে পারছি আমি আর কিছু করতে পারবো না। ভেতর থেকে কোন টান আমি আর পারছি না। সুতরাং তাকে উত্ত্যক্ত করে আমার কোনো ফায়দা হবে না।
আমি তখন লক্ষ্মী সোনার মতো তার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করি অনেকক্ষণ ধরে।

কোন এক পর্যায়ে তার নগ্ন বুকে আমি ঘুমিয়ে যাই।

তারপর থেকে দিন আসে রাত যায়। সময়ের বিবর্তনে আমিও কিছুটা ভালো হয়ে আসি। আবার সেই খুনসুটিতে মেতে উঠি ঝরনার সাথে। ভালোবাসায় মাঝে মাঝে তলিয়ে নিয়ে যায় অনেক গভীরে। কখনো কখনো উষ্ণ তাই মেতে উঠি তার খোলা পিঠে। কখন আবার নগ্ন বুকে। কখনো বা তার ভেজা দুই ঠোটের ভিতর।

এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় একটা বছর শেষ হয়ে আসতে চাই।
কিন্তু বছরের শেষের দিকে আমি বলতে গেলে সবার সাথে একদম ফ্রী হয়ে যাই। এখন অনেকেই আমার বন্ধু হয়ে গেছে। কেউ কেউ নোটের ধান্দায় বান্ধবী ও হয়ে গেছে। তবে ক্লাসে আমি ভালো ছাত্র ছিলাম। সব কারণ এর পেছনে ঝর্ণা আছে। সে যদি পাশে না থাকতো তাহলে এতো ভালো ছাত্র হতে পারতাম কিনা সন্দেহ আছে।

তবে এত কিছুর ভিড়ে ও সে মেয়েটা আমার পিছু ছাড়তো না। ওর চাহনি কিংবা কথা বলার ধরন গুলো আমার খুব চেনা চেনা লাগতো। কিন্তু আমি কখনো মনে করতে পারতাম না। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় একে আমি আগে কোথাও দেখেছি। কিন্তু কোনদিন কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করিনি আপনাকে আমি এর আগেও কোথাও না কোথাও দেখেছি। কারণ ঝরনার কড়া নির্দেশ ছিল তার সাথে কথা না বলার।

তবে ঝর্নার কাছে এসে একদিন অনুমতি চাই আমার সাথে কিছু কিছু সময় কথা বলার জন্য।আর সেই কথাগুলো নোট কিংবা পড়াশোনা মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যদি সমস্যা হয় তাহলে ঝর্না নিজেই সামনে থাকবে।

ঝরনা ঠান্ডা মাথায় অনুমতি দিয়ে দিলেও আমি তাকে কোনভাবে পাত্তা দিতাম না। আমার সন্দেহ হতো তাকে।

কিন্তু ঝরনা অনুমতি দেওয়ার পর থেকে তার সাথে আমার কথা টুকটাক হতে থাকে। আমি কেমন আছি না আছি। বাসায় ঝরনার সঙ্গে আমার সময় কেমন কাটে। সে আমাকে কতটা ভালোবাসে। কতটা আমি তাকে ভালবাসি।
কথাগুলো এতো দূর পর্যন্ত গড়িয়ে যায়।

তবুও আমি চেষ্টা করতাম কোন না কোন ভাবে কথাগুলো আমাদের মধ্যে যেন সীমাবদ্ধ থাকে।কিন্তু মেয়েটা আমাকে কোন সীমাবদ্ধতার মধ্যে রাখতে দিত না।
এই সীমাবদ্ধতা যেন সে লুফিয়ে নিতো নিজের সময় মনে করে। এটা আমার কাছে খুব অস্বস্তিকর অবস্থা লাগতো।

একদিন ক্লাসের মধ্যে আমার কাছে মেয়েটা কিছু নোট চাই যেগুলো ঝর্ণা নিজে করে দিয়েছে আমাকে।

আমি তখন তাকে বলি, আজকে দিতে পারব না কারণ আজকে আমি নিয়ে আসিনি কালকে দিব তোমাকে।

ও এ কথার উত্তর না দিয়ে আমাকে বলে। ক্লাস শেষে সরাসরি বের হয়ে যাবেন না আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

আমি আমার চোখ মুখ রাঙ্গিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম তার দিকে।
তবুও বললাম ঠিক আছে অপেক্ষা করব।

ক্লাস শেষে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম গেটের বাইরে। সে আমার দিকে তখন মুচকি হাসি হাসতে হাসতে এগিয়ে আসছিল।

কাছে এসে সরাসরি বলে। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করব?

হ্যাঁ করতে পারো।

ইসলামে কি দুটো বিয়ে করা কিংবা তার অধিক বিয়ে করা জায়েজ নাই?

আমি তার এমন প্রশ্ন শুনে আকাশ থেকে পরি।

আচমকা সুরে বলি।
কি বলতে চাচ্ছো তুমি?

না তেমন কিছু না। এমনি এই প্রশ্নটা করতে ইচ্ছে করছিল তো তাই আপনাকে দাঁড়াতে বলেছিলাম।

আমি তখন উত্তর না দিয়ে সোজা হন হন করতে করতে বের হয়ে যায়। তারপর ঝরনা কে নিয়ে সোজা বাসার দিকে।
সেদিন বাসায় যাওয়ার পরে ঝরনার সাথে রাগের মাথায় উষ্ণতায় মেতে উঠি। যেন আমার শরীরে উপর রাগ জমে গেছে। আর সেই রাগটা ঝাড়ছিলাম উষ্ণতার মাধ্যমে ঝর্নার উপরে।
রাগটা হলো আমার এই জন্য যে। আজ ঝরনার অনুমতির কারণে সেই মেয়েটা আমার মাথার উপরে উঠে বসতে চাইছে। সেটা মেয়ের কথাটা শুনলেই বোঝা যায়।

তারপরে বেশ কয়েকদিন আমার সামনে মেয়েটা আর আসেনি। শুরু হয় বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে খুব ভালো রেজাল্ট করি আমি। পুরো কলেজে আমার একটা সুনাম বয়ে যায়। আর এর পুরো কৃতিত্ব টা ঝরনার জন্যই বলতে গেলে।

তারপর শুরু হয় আবার নতুন একটি বছর। এর মধ্যে আমি অনেক কিছু ভুলে গেছি কিংবা নতুন করে শুরু হতে যাচ্ছে আমার জন্য ‌।

তবে আর যাই হোক সুখে আছি।

বছরের শুরুর দিকে মেয়েটা একদিন হঠাৎ করে এসে আমাকে বলে।
একটা বছর হয়ে গেল। আপনার সাথে বলতে গেলে সবারই কোন না কোন ভাবে সাক্ষাৎ হয়ে পরিচয় হয়ে গেছেন। কিন্তু আপনার সাথে আমার কোন ভাবে পরিচয় হওয়া হয়নি।
সেই সুযোগটা কি আমাকে দেওয়া যাবে না?

আমি তার এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায়। কি উত্তর দিব তাকে।

আমি তখন কথা কাটানোর জন্য বলি।

আচ্ছা আজকে না হয় থাক কালকে আপনার সাথে কোন এক সময় কথা বলব।

ও তখন আমার উত্তর শুনে মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়।

তবে পরের দিন ও সকালবেলায় আমার আগে এসে কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে ছিল।

আমি আর ঝর্ণা যখন রিকশা থেকে নামছিলাম।
তখনই মেয়েটা দৌড়ে এসে ঝরনার সামনে দাঁড়িয়ে ঝর্ণাকে সালাম দেয়।

তারপর ঝরনার হাতে ছোট্ট একটি বাক্সের মধ্যে কিছু একটা ধরিয়ে দেয়।

ঝর্ণা তখন মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করে।
এর মধ্যে কি আছে?

মেয়েটা হাসতে হাসতে বলে। আমি আপনাদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করে নিয়ে এসেছি। শুধু আপনাদের জন্যই। হটপট এর ভিতরে গরম থাকবে। সময় করে খেয়ে নিবেন।

এমন কাহিনী দেখে ঝর্না একবার আমার দিকে আমি একবার ঝরনা দিকে বারবার চাওয়াচাওয়ি করি। ব্যাপারটা ঠিক কিছুই বুঝতে পারি না।

তারপর মেয়েটা ক্লাসের অজুহাত দিয়ে ভিতরে চলে যায়।

ঝরনার কাছে আমিও বিদায় নিই ক্লাসে যাওয়ার জন্য।

তবে দুটো ক্লাস শেষে হঠাৎ করে পিয়ন এসে আমাকে বলে। আপনাকে জরুরী ভিত্তিতে এখনই বাসায় যেতে হবে।

আমি এই কথাটা শুনে একদম চমকে উঠি। আতঙ্কে ঘিরে ধরে আমাকে।

চলবে*

Written by-Ibna Imtiaj