তুমি কবে আমার হবে পর্ব-২৩+২৪

0
204

#তুমি_কবে_আমার_হবে
#পর্ব_২৩
লেখিকা #sabihatul_sabha

রুদ্র ফোন দিয়ে শান্ত কে ওদের বাসায় নিয়ে আসলো। আজ সারা রাত কেউ ঘুমাবে না। সবাই মিলে আড্ডা দিবে ছাঁদে। রুদ্র কিছু ফ্রেন্ড ও আসলো৷
এরি মধ্যে আবির হাতে করে একটা উইস্কির বোতল নিয়ে ছাঁদে চলে আসলো।
শান্তঃ এটা কই পেলি?
আবিরঃ আহা ভাই কোথায় পেয়েছি এই গুলা তুমি ভাবতে হবে না।তুমি শুধু আজকের রাতটা এনজয় করো।কাল থেকে তো ভেজা বিড়াল হয়ে থাকতে হবে।
আবিরের কথা শুনে সবাই হাসা শুরু করলো। আর শান্ত একটু মুচকি হাসলো।

রুদ্র বললো,’আবির এটা এখন ফ্রিজের ভেতর রেখে আয়।সবাই ঘুমানোর পর এটা বের করবো।নাহলে যদি ভুলে কারো হাতে পরে তাহলে কিন্তু শেষ।

আবির নিয়ে এটা ফ্রিজের ভেতর রেখে দিলো।

দিয়া দৌড়ে গিয়ে সাফা কে বললো,’ কি রে তোর হবু জামাইর তো দেখছি আর সইছে না।তকে দেখার জন্য এখনি চলে আসছে। সত্যি করে বলতো।প্রেম কয়দিন ধরে চলছে।
সাফাঃ ছি আপু এই গাধা বেটার সাথে কে প্রেম করবে।আর আমি তো ইম্পসিবল দরকার হলে রিক্সা ওয়ালার সাথে প্রেম করবো তাও এই জগরাটে ভাঙা রেডিওর সাথে প্রেম করবো না।

মেঘাঃ সাফার বাচ্চা আমার ভাইকে আরেক বার গাধা বললে। আমি তকে জিন্দেগীতেও ভাবি বলবো না,বলে দিলাম।
দিয়াঃ আচ্ছা তর দ্বিতীয় বিয়ে নাহয় রিক্সা ওয়ালার সাথেই দিবো।
আমি বলে উঠলাম, ‘ আচ্ছা সবি বুঝলাম কিন্তু কাল কে বাসা থেকে পালিয়ে গেলি।আবার ফিরে আসলি কেনো?
সাফাঃসাফা আমতা আমতা করে বললো,’ কোথায় পালিয়েছি। আমি তো বাহিরে হাটতেহাঁটতে গিয়ে ছিলাম।’
~ওওও আচ্ছা তাই নাকি।
সাফার মুখের দিকে তাকিয়ে সবাই হাসা শুরু করলাম।বেচারী মুখটা কেমন ফেকাসে হয়ে গেছে। হয়তো বুঝে গেছে আমরা সব জানি।

আমার অনেক পানির পিপাসা পেয়েছে তাই ওদের বলে পানি খেতে আসলাম।
ফ্রিজ খুলেই দেখি একটা বোতল, ভাবলাম হয়তো ঠান্ডার বোতল তাই বোতলটা হাতে নিয়ে অর্ধেকটা খেয়ে নিলাম।
~ছি!! এতো বাজে টেস্ট ওয়াক…কেমন যেনো মাথাটা ঝিমঝিম করছে তাই রুমে চলে আসলাম হাতে বোতলটা এখনো আছে। এসেই বোতলটা খাটের উপর রাখলাম। কেমন যেনো লাগছে।

রুদ্র নিজের রুমে এসে ছিলো মোবাইল নিতে। এসে দেখে দরজা খুলা,আসতে করে ভেতরে ঢুকলো মনে হচ্ছে কেউ আছে রুমে।লাইট বন্ধ তাই কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
রুদ্র আগে লাইট জ্বালিয়ে নিলো।লাইট জ্বালানোর সাথে সাথে রুদ্রের চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ওর খাটের উপর পা দিয়ে মাথা ফ্লটে দিয়ে শুয়ে বিড়বিড় করে কি যেনো বলছি।
রুদ্রঃ এই মেয়ে এই তুমি এই রুমে কি করছো?
রুদ্রের আওয়াজ শুনে লাফ দিয়ে উঠলাম,
~আরে স্যার এটা আপনার রুম বুঝি!! বলে পরে যেতে নিয়ে আবার ঠিক হয়ে দাড়ালাম।
~তো কি ভালো করে তাকিয়ে দেখো।আর এই রুমে কি করছো?
~এটা আপনার রুম। কই কোথাও আপনার নাম দেখছি না তো,চোখ ছোটো ছোটো করে বললাম।
~ভালো করে তাকিয়ে দেখো। দেয়ালে আমার ছবি।
~ওহহ হা ছবি।কি কিউট আপনি স্যার বলেই রুদ্রের গাল ধরে টানা শুরু করলাম।
~এই মেয়ে ছারো।নূর ঠিক আছো তুমি । এমন করছো কেনো!!
~হুম এই দেখুন আমি ঠিক আছি বলার সাথে সাথে ধপাস করে খাট থেকে নিচে পরে গেলাম।ওহ মাগো আমার কোমর গেলো।
~আরে তুমি তো ঠিক আছো তাহলে পরলে কিভাবে।?
….
~কি হলো উঠো।
~কোলে নেন।না হলে উঠবো না।

রুদ্র চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,না এই মেয়ের কিছু তো হয়েছে বলেই খাটের উপর উউস্কুর বোতলটা দেখে ওর চোখ তো মনে হয় বেরিয়ে আসবে।বোতলটা হাতে নিয়ে দেখে অর্ধেক নাই।তাই তো বলি এমন মাতালের মতো মাতলামি কেনো করছে। রুদ্র যা বুঝার বুঝে নিলো। তারাতারি আবির কে কল দিলো।
~আমাকে খাটের উপর বসালো।

এরি মধ্যে আবির চলে এলো।আবির অবাক হয়ে বললো,’ কি হয়েছে ওর?
রুদ্রঃ উইস্কুর অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে এখন মাতলামো করছে।
আবিরঃ ওহহ সিট আমি তো ফ্রিজে রেখে ছিলাম ও পেলো কিভাবে!!!!?
রুদ্রঃ তুই নিচে গিয়ে লেবু চিপে নিয়ে আয় আর আসার সময় সাফা কে সাথে করে নিয়ে আয় জলদি। কেউ জানার আগে ওকে ঠিক করতে হবে।
আবিরঃ আমি কি জানতাম এই কিছু সময়ের মধ্যে ফ্রিজে কেউ হাত দিবে। আমার উইস্কু বলে বোতলটা হাতে নিয়ে তাকিয়ে আছে। এখন কি হবে?
রুদ্রঃ কিছু হবে না লেবু নিয়ে আয়,জল মিশাবি না।ততক্ষণ আমি সামলাচ্ছি।
আবিরঃ ওকে।

আবির চলে যেতেই রুদ্র এদিকে তাকালো। এলোমেলো খোলা চুল গুলো উড়ছে।রুদ্র মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। আসলে আমরা যাকে ভালোবাসি তার সব কিছুই আমাদের কাছে ভালো লাগে।এখন যেমনটা রুদ্রের লাগছে।
তার সামনের মেয়েটির পাগলামো, খোলা চুল, সব কিছুই ওকে মুগ্ধ করছে।
রুদ্রঃ আমার প্রথম ভালোলাগা ভালোবাসা তুমি।যার প্রতি আমি সেকেন্ডে সেকেন্ডে মুগ্ধ হই।যাকে দেখলে আমি আমার মাঝে থাকি না। আমি না হয় তোমার প্রথম ভালোলাগা ভালোবাসা হলাম না, কিন্তু শেষ ভালোবাসা হবো।খুব তারাতারি আমি তোমাকে আমার করে নিবো।তুমি কতো ভুঁকা এখনো ভালোলাগা আর ভালোবাসার মধ্যে তফাতটাই বুঝলে না। তুমি অভি কে কোনো দিন ভালোবাসোনি ওইটা ছিলো তোমার ভালোলাগা। ভালোবাসা এতো সহজ নয়।ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে অন্য কারো জন্য ছেড়ে দেওয়া এতো সহজ নয় ও তোমার ভালোলাগা ছিলো তাই তো ওর কথায় অভিমান করে ওকে ছেড়ে দিয়েছো।ভালোবাসলে আকরে ধরে রাখতে চাইতে সারা জীবন।
~স্যার!……
রুদ্রঃকি বলো?
~স্যার লাভ ইউ।
রুদ্র চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। ‘এই মেয়ের মাথা গেছে,ইসস আমি কি ভিডিও করে রাখবো।ঠিক হলে তো কিছুই মনে থাকবে না। বললেও বিশ্বাস করবে না। ভিডিও দেখালে তো করবে।
যা ভাবা তাই কাজ মোবাইল বের করে বললো,’ নূর কি বললে?
~স্যার আই লাভ ইউ… উম্মা…….হ

কিছুক্ষনের মধ্যেই আবির আর সাফা চলে আসলো।
সাফাঃ কি হয়েছে নূরের।ও ঠিক আছে তো?আর তুমি এভাবে হাসছো কেনো?
রুদ্রঃ হুম এতোক্ষন তো ঠিক ছিলো না। এখন ঠিক হয়ে যাবে।

লেবু খেওয়ানোর সাথে সাথে রুদ্রের উপর বমি করে ওর কাপড় একদম শেষ।
আবিরঃসিট এটা কি করলো!!
রুদ্রঃ কিছু করার নাই।তুই আমার জন্য কাপড় বের কর। আর সাফা ওকে ফ্রেশ করিয়ে কাপড় চেঞ্জ করে দে।
আবিরঃ ঘুমিয়ে আছে।ঘুম থেকে উঠে নরমাল হয়ে যাবে।
রুদ্রঃ হুম। আজকের দিনটা আসলেই মেমরেবল হয়ে থাকবে।
সাফাঃ ভাইয়া নূর কি তোমার রুমে থাকবে নাকি ওর রুমে দিয়ে আসবে?
রুদ্রঃ এখন এখানেই থাকুক…..বলে সবাই রুম থেকে চলে গেলো।

সাফা যাওয়ার সময় দেখে শান্ত কার সাথে যেনো ফোনে কথা বলছে।
সাফাঃ এমন হেসে হেসে কার সাথে কথা বলছে?এই বেটার কি গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি!!!ওহহ আল্লাহ তাহলে আমার কি হইবো। দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার চেষ্টা করতেছে নাতো।দারাও তোমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে যদি ব্রেকাপ না করাইছি,

শান্ত ফোনে কথা বলছে, আর সাফা গিয়ে পিছনে শান্তর কানের কাছে গিয়ে বললো,’বেবি তুমি এখানে আর আমি তোমাকে কোথায় কোথায় না খুঁজেছি।তুমি এখানে কি করছো গো।তুমি একদমি আমাকে ভালোবাসো না!!

শান্তর চোখ চড়কগাছ এই মেয়ে বলে কি।শান্ত পরে ফোন দিচ্ছি বলে কল কেটে সাফার একদম কাছে এসে দাড়ালো।
শান্তঃ হুম এবার বলো কি বলতে ছিলে?
সাফাঃ কই কিছু নাতো।
শান্তঃ বেবি,ভালোবাসা এই গুলো কি।ওহহ আমি তো ভুলেই গিয়ে ছিলাম। তুমি তো আবরার আহমেদ শান্তর বউ সব কিছুতে তো ফাস্ট হবেই,বলে চোখ মারলো।
সাফাঃ আমতা আমতা করে বলে উঠলো, আমি তো ফোনে আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম।বলেই ফোন দেখালো।
শান্ত হাসতে হাসতে বললো,ফোন কোথায়! এটা তো রুদ্রের ফোন।
সাফা লজ্জায় পরে গেলো ইসস এবারো ধরা খেয়ে গেলাম।
শান্তঃ আচ্ছা এটা বলো এইসব কেনো বলতেছিলা।তুমি তো আমাকে বিয়ে করতে চাও না।
সাফাঃ আপনি বুঝি আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতে ছিলেন?তাই আপনার গার্লফ্রেন্ডকে শুনানোর জন্য বলেছি।
শান্তঃ লাইক সিরিয়াসলি আমার আবার গার্লফ্রেন্ড!! শুনো মেয়ে আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।
সাফাঃ তাহলে হেসে হেসে কার সাথে কথা বলছিলেন।?
শান্তঃআমার ফ্রেন্ডের সাথে।
সাফাঃ সত্যি তো?
শান্তঃ এই দেখো……

চলবে..
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

#তুমি_কবে_আমার_হবে
#পর্ব_২৪
লেখিকা #sabihatul_sabha

আবির স্টেজ সাজানো শেষ করেই বললো, সাফাকে নিচে নিয়ে আসতে।
দিয়া আপু, মেঘা,আমি সাফাকে নিয়ে নিচে আসলাম।
মেঘা ওদের বাসায় যায় নি। ও নাকি মেয়েপক্ষ বিয়ের পর ছেলেপক্ষ হয়ে যাবে। তাই সাফার বাসায় থেকে যায়।
আবিরের চোখ মেঘার দিকে পরতেই, আবিরের মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে আসে,’ মাশাল্লাহ।’
দিয়া আপু ভ্রু কুচকে বলে, কাকে বললি?
আবিরঃ’ তকে’
দিয়াঃ আমার সাথে বাটপারি না। বল কাকে দেখে বলছোস?
আবিরঃ বললাম তো তকে দেখে।
দিয়াঃ কই তোই তো এখনো আমার দিকে তাকাস নি বেপার কি?তর ভাবসাব আমার সুবিধার মনে হচ্ছে না।
আবিরঃ পেত্নী তুই চুপ করে সামনে দেখ বলে আঙ্গুল দিয়ে রুদ্র কে দেখিয়ে দিলো।(আবির জানে তার বোন রুদ্র বলতেই পাগল। আর রুদ্র নূর বলতে পাগল তাও আজ বাঁচার জন্য আবারো রুদ্র কে দেখিয়ে দিলো।মাঝে মাঝে নিজের বোনের জন্য আপসোস হয় আবিরের আর কাউকে পেলো না তার বোন। রুদ্র কে কেনো ভালোবাসতে গেলো।তার বোন যেদিন যানবে রুদ্র অন্য কাউকে ভালোবাসে, অন্য কাউকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে। তখন নিজেকে সামলে নিবে কিভাবে। যদিও দিয়া খুব স্টং একটা মেয়ে তাও ভয় হয় বোনটাকে নিয়ে)

দিয়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে।’কালো পাঞ্জাবি তার উপর সাদা সুতার কাজ করা আর ব্লেক জিন্স পরেছে। দারুণ লাগছে রুদ্রকে চোখ ফিরানো দায়।

দিয়া আপু, মেঘা,আমি মিলে সাফাকে সাজাচ্ছি। শান্ত নাকি মেঘা কে বলেছে সাফাকে যেনো পার্লারের লোক না সাজায় এমনি সাফাকে সুন্দর লাগে। সাফা কে সাজিয়ে আমরাও রেডি হয়ে নিচে নামলাম।

আবির ভাইয়া এসে বললো,এখনি ওরা চলে আসবে তোমরা রেডি তো।

~জি ভাইয়া, আপনি এই টেবিলটা গেইটের সামনে রাখুন।আমরা সাজাচ্ছি।
আবিরঃ ওকে।
গেইট ধরার জন্য সব এরেইন্জমেন্ট করে ফেলে।বরের গাড়ি গেইটের ভেতরে ঢুকতেই একটা হৈচৈ শুরু হয়ে যায়।
বরের গাড়ি থেকে একে একে সবাই নামে।
শান্তকে গেইটে আটকে ফেলি আমরা সবাই। এরি মধ্যে রুদ্র স্যার এসে হাজির।
শান্তর সাথে শান্তর কিছু ফ্রেন্ড এসেছে ওরা রুদ্র স্যারকে বললো,’ দেখ রুদ্র এখানে তুই আমাদের ফ্রেন্ড। আর ভেতরে হবু ভাবির ভাই ওকে। এবার আমাদের সাথে চলে আয় বলে উনাকে নিয়ে নিলো।

রুদ্র স্যার আমার দিকে তাকিয়ে আছে তখনি উনার পাশ থেকে মেঘ বলে উঠলো, ‘শুভদৃষ্টি শেষ হলে আমরা আসল কাজে আসি।’
স্যার সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে এদিক ওদিক তাকালেন।
আমার সাথেই দিয়া আপু দাড়িয়ে ছিলো,আমি আপুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি মুখ লাল টমেটোর মতো হয়ে আছে।বেপার কি আপুকি লজ্জা পাচ্ছে, কিন্তু কেনো?
(দিয়া ভেবেছে রুদ্র এতোক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো তাই লজ্জায় বেচারির এই অবস্থা)

~ দাড়িয়ে থেকে আজাইরা কথা বলার কোনো মানে হয় না।
মেঘঃ তাহলে তরা টেবিল সরা।সাইট দে আমরা ভেতরে চলে যাই।এমনি তেই আমার বেচারা ভাইয়ের অবস্থা খারাপ। বিয়ের দিন কিন্তু এখনো বউয়ের মুখ দেখতে পারলো না।শালিকাদের মুখ দেখে কি আর মন বরে।
মেঘাঃ তোর মতো সবাই কে ভাবিস।চুপ থাক তুই।আর চুপচাপ আমাদের পাওনা আমাদের দিয়ে দে তাহলে আমরা সরে যাবো।
মেঘঃ তুই তো বোন নামের ডাইনী। কই ভাইয়ের পক্ষ ধরে কথা বলবি তা না। বিয়ের আগেই ভাবির পক্ষে।আমার বিয়েতে তকে দাওয়াত ও দিমু না।
দিয়াঃ ওই তরা বাসায় গিয়ে ও জগরা করতে পারবি।
দিয়া শান্ত কে মিষ্টি মুখ করালো তারপর জল খাওয়ালো। এখন আমাদের পাওনা আমাদের দিয়ে ভেতরে যান।

রুদ্রঃ কিসের পাওনা?
~গেইট ধরেছি দেখছেন না। টাকা না দিলে ভেতরে যেতে দেওয়া হবে না।
শান্তর এক বন্ধু বলে উঠলো, ‘ইটস নট রাইট। সব কিছু তেই তোমরা টাকা চাও।এটা কিন্তু রিতিমতো টর্চার।
দিয়াঃ আপনার বিয়েতে আরো বেশি চাওয়া হবে কোনো টেনশন করবেন না।
মেঘঃ এটা ঠিক না সিনিয়র সুন্দরী আপু।আমার ভাইটাকে কিন্ত আমার ভাবির কাছে যেতে দিচ্ছেন না। এতো দিন জানতাম বান্ধবী মানে অর্ধেক বউ এখন দেখছি বান্ধবী আমার জোগ পাল্টে ফেলেছে এখন বান্ধবী মানে ভাবি।বাই দা রাস্তা আপনি দেখতে কিন্তু মাশাল্লাহ। আমার অনেক জীবনের সখ, একটা সিনিয়র আপু আমার পঞ্চাশ নাম্বার গার্লফ্রেন্ডের শূন্য জায়গাটা পূরন করে দিবে।আপনি রাজি থাকলে আমি ডাকতে রাজি কাজি…
~ পঞ্চাশ নাম্বার গার্লফ্রেন্ড!!ওরে ভাই এদের জায়গা দেছ কোথায়?
মেঘাঃ কাজি একটু পরি আসবে তোই আর কষ্ট করে ডাকতে হবে না।
দিয়াঃ আমি তোমার এই মেয়ে মানুষের ভিড়ে গিয়ে ধাক্কা ধাক্কিতে জুতা ছিড়ে ফেলেছি। এখন আমাদের পাওনা দিয়ে বিদায় হও।
মেঘঃ দেখ নূর ছুনা এটা কিন্তু ঠিক না। আমাদের যেতে দে জান্স।
~তুই এতো কথা বলতেছোস কেনো। আমরা আমাদের জিজুভাইয়ার সাথে কথা বলতেছি।তোর সাথে না।তুই চুপ থাক।
মেঘঃ তকে…..
রুদ্রঃ আচ্ছা দিয়ে দিচ্ছি টাকা।এখন তো ভেতরে জেতে দাও।
মেঘঃ স্যার এটা ঠিক না। আপনি ওদের পক্ষ নিয়ে নিলেন এভাবে।
রুদ্রঃ আগে আগে দেখো কি হয়।
দিয়াঃ জি না! আগে টাকা তারপর ভেতরে যেতে দিবো।
রুদ্র পকেট থেকে টাকা বের করে দিয়ে দিলো।
মেঘাঃ কতো আছে স্যার?
রুদ্রঃ তোমরা যতো চাচ্ছ তার থেকে বেশি আছে।
দিয়াঃ ভালো করে দেখ,যদি কম হয়….
রুদ্রঃ এতো সময় কই। এমনি অনেক দেরি হয়ে গেছে।

সবাই টাকা পেয়ে খুশিতে ওদের ছেড়ে ভেতরে বউয়ের কাছে চলে গেলো।

সবাই গিয়ে সাফার সামনে টাকা গুলো বের করলো।টাকা দেখে সবার চোখ কপালে।
মেঘাঃ দিয়য় আপু……….ও..!!
দিয়াঃচিল্লাচ্ছিস কেনো? আমার কি দোষ।হাতে নেওয়ার সময় ভালো করে দেখার দরকার ছিলো।
মেঘাঃ সাফা তোর ভাই আমাদের এভাবে ধোকা দিলো কেনো?
সাফাঃ আমার ভাইয়ের কি দোষ তোর ভাই এতো কিপটা কেনো।বিয়ে করতে আসছে শালিকাদের টাকা দিবে তাও নকল টাকা দিলো। আবার ভাব এই কিপটার সাথে আমি সারা জীবন থাকবো কিভাবে।
~তুই কথা কেনো ঘোরাচ্ছিস আমি এখনি স্যার কে জিজ্ঞেস করবো এতো বড় ধোকা।
দিয়া আপুঃ থাক নূর রুদ্র ভাইয়া কে কিছু বলো না। যা বলার দুলাভাই কে বলবো।
মেঘাঃ তোমারো দুলাভাই হয় বুঝি?
দিয়াঃ আরে বড় ভাবি সেজেও তো মজা করতে পারি তাই না।
~বড় ভাবি!!!!!
দিয়াঃ আরে এতো সিরিয়াস কেনো হচ্ছো জাস্ট এনজয়। বড় হয়েছি বলে কি একটু মজাও করতে পারবো না নাকি৷ তাই ভাইয়ের বউ সেজে গেলাম।
সাফাঃ তোমাকে আমি ভাবি বানাবো না।
দিয়াঃ তুই বানানো লাগবে না, আমি এমনিতেই হয়ে গেছি।
সবাই একসাথে,’কি!!!!!!
দিয়া আপু সবার মুখের রিয়াকশন দেখে বললো,’ আরে আমি তো জাস্ট মজা করছি।

আমরা সবাই স্যারের পিছে পিছে ঘুরছি আর বলছি~স্যার আপনি এমনটা কেনো করলেন?এমন নকল টাকা না দিলেই পারতেন।
কিন্তু স্যার মনে হয় আমাদের কতা শুনছেনি না।
রুদ্রঃ আমি কিছু করিনি যা করেছে মেঘ করেছে। টাকা যে নকল তা আমি জানতাম না। মেঘ আমার পকেটে দিলো আমিও তোমাদের দিলাম।
~মেঘের বাচ্চা ছারবো না তকে। শুধু একবার সামনে পাই। তোর পকেট যদি খালি না করছি দেখিস।

ওই মেয়েটা কে?
রুদ্রের আম্মুকে একজন মহিলা জিজ্ঞেস করলো, সম্পর্কে তিনি রুদ্রের মামি।
রুদ্রের আম্মু বললো,’ কাকে দেখাচ্ছেন ভাবি?
~ওই যে কালো লেহেঙ্গা পরা মেয়েটা।
~ওহ ওতো সাফার বান্ধবী নূর।
~ মাশাল্লাহ দেখেন তো আমাদের মাহিনের সাথে কেমন মানাবে। আমার তো খুব পছন্দ হয়েছে মাহিনের জন্য। সাফার বিয়েটা শেষ হোক। তারপরি মাহিনের জন্য নূরের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবো। কি বলেন ভাবি।
রুদ্রের আম্মুর মুখটা ফেকাসে হয়ে গেছে, ওনি তো রুদ্রের জন্য নূরকে পছন্দ করে রেখেছেন।

তাদের পাশ দিয়েই রুদ্র যাওয়ার সময় সবটাই শুনলো। রুদ্র মাথা গরম হয়ে গেছে যাই হোক নূরকে সে অন্য কারো হতে দিবে না।
রুদ্রঃএই মেয়ে এদিকে আসো।
~জি স্যার।
রুদ্রঃ আমার সাথে সাথে থাকবে এদিক থেকে কোথাও যাবে না।
~আজব তো আমি কেনো এখানে দাড়িয়ে থাকবো।
রুদ্রঃ চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো।বেশি কথা আমার পছন্দ না।
~আপনি দাড়িয়ে থাকেন।আমি গেলাম।
~যদি আর এক পা সামনে বারিয়েছো, তাহলে এই ভিডিও টা সবাই কে দেখিয়ে দিবো।
আমি থমকে দাড়িয়ে গেলাম,’কিসের ভিডিও?

চলবে…..

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।