তোমাতেই আমি পর্বঃ০৪

0
1986

#তোমাতেই_আমি
#পর্ব_০৪
#Tabassum_Kotha

আয়নার সামনে দাড়িয়ে চোখে কাজল পরছি। ভেজা চুলগুলো থেকে পানি টপটপ করে মেঝেতে পরছে। আয়না ভেদ করে অর্ণবের দৃষ্টি আমার উপর এসে পরেছে। আজ অর্ণবের দৃষ্টিতে হিংস্রতা নেই। নেই কোনো অভিযোগ। একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। মাঝে মাঝে অর্ণবের দৃষ্টিও আমাকে ভ্রমে ফেলে দেয়। তার চোখে আমি আমার জন্য একাধারে চিন্তা, যত্ন, রাগ, প্রতিশোধ সব দেখতে পাই। কিন্তু কেনো? এই একটা প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজে পাই না। অর্ণবের করা টর্চার গুলো যতো বেদনাদায়ক, তার চোখের দিকে তাকালে মনে হয় ততোটাই বেদনা সেও পেয়েছে।

অর্ণবের ডাক আমার ঘোর ভাঙলো,
— কফিটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। রূপচর্চা পরে করো। অনেকক্ষণ ভিজে ছিলে। জ্বর এসে পরবে।

এবারো অবাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছি। প্রায় দেড় ঘন্টার মতো বৃষ্টিতে তার জন্যই ভিজেছি আমি। আর এখন সে আমার জ্বর হওয়ার চিন্তা করছেন! ওহ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম একটু আগেই না বললেন আমি অসুস্থ হলে তার লস হবে।
আমিও না মাঝে মাঝে অনেক আবেগি হয়ে যাই।

?

অর্ণবের হাত থেকে কফি মগটা নিয়ে ব্যালকোনিতে গিয়ে দাড়ালাম। পিছনে অর্ণবও এসেছেন। বৃষ্টি কিছুক্ষণ আগেই থেমে গেছে। এখন চারপাশ টা একদম স্তব্ধ হয়ে আছে। বৃষ্টির পরে মাটির যে মৃদু সুগন্ধ পাওয়া যায়! সেটা আমার নাকে আসছে হালকা। ভালো লাগছে। এভাবে অন্ধকার রাতে শেষ কবে নিজেকে হারিয়েছিলাম মনে পরছে না।




মীরা কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর অর্ণব স্থির দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মীরার ভেজা চুল থেকে গরিয়ে পরা পানির ফোঁটাগুলো তার বুকে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে। সে তো মীরাকে ভালোবাসে না, তার মনে মীরার জন্য শুধুই ঘৃণা আছে। তাহলে কেনো এই ধরনের ফিলিংস কাজ করছে তার মাঝে মীরার জন্য!!

না সে মীরার প্রতি দুর্বল হতে পারে না। সে তার ঘৃণা এতো সহজে ভুলে যেতে পারে না। একটু তুচ্ছ মোহ এর কাছে তার এতো বছরের ক্ষত কিছুতেই হেরে যেতে পারে না। নিজেকে খুব বেশি অস্থির মনে হচ্ছে অর্ণবের। মস্তিষ্ক বারবার করে বলছে মীরার থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু মন কে কিছুতেই স্বাভাবিক করতে পারছে না। এই মুহূর্তে তার খুব করে ইচ্ছে করছে একবার মীরাকে বুকে জরিয়ে নিতে। কিন্তু সে অপরাগ। সে মীরাকে নিজের কাছে এনেছে শুধু শাস্তি দিতে, ভালোবাসতে নয়।

নিজের মনের ক্ষতগুলো ভরিয়ে তোলার জন্যই তার এতো জল্পনা কল্পনা। ১৯ বছর ধরে তার মনে যেই আগুন জ্বলছে সেই আগুন শুধু মীরার চোখের পানিতেই নিভবে।

আপন মনে কফিতে চুমুক দিচ্ছিলাম আর তখন অর্ণব আমার হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলেন। অর্ণবের এহেম কান্ডে আমি পুরোই বেকুব বনে গেছি। হঠাত্ এই লোকটা এমন করলো কেনো! অর্ণবের এভাবে জরিয়ে ধরে রাখায় আমার বুকে প্রচন্ড রকম ধুকপুকানি হচ্ছে। মনে হচ্ছে বুকটা লাফ পারতে পারতে এখন মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে। অর্ণব এর আগেও
আমাকে জরিয়ে ধরেছেন কিন্তু আজকে তার স্পর্শে হিংস্রতা নেই। তার স্পর্শ আমাকে একরাশ মুগ্ধতার জানান দিচ্ছে।

অর্ণবের গরম নিশ্বাস আমার ঘাড়ে আঁছড়ে পরছে। তার শরীরের ঘ্রাণে মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাবো। না তার প্রতি দুর্বল হতে পারবো না। সে শুধু আমাকে কষ্টই দেয়। আর এমনিতেও অর্ণব আর আমার সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত নেই।কিছুদিন পর তার বিয়ে হয়ে যাবে আর আমি আর জীবন থেকে চলে যাবো। কি দরকার মায়া বাড়ানোর। কোনো প্রয়োজন নেই।

নিজেকে অর্ণবের কাছে থেকে ছাড়াতে গেলে সে আমাকে আরো শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। অর্ণবের বাহুডোর থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছি না। নাকি ছাড়াতে চাচ্ছি না বুঝতে পারছি না। অর্ণবের এক হাত আমার কোমড় জরিয়ে ধরে আছে আর অন্য হাত চুলের গভীরে বিচরণ করছে।

অজানা কোনো আবেগ ভর করছে আমার মাঝে। কাঁধ থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে অর্ণব আমার কাঁধে একটা চুমু খেলেন। অর্ণবের ঠোঁটের স্পর্শে মনে হলো শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেলো। নাহ অর্ণবের মতি গতি ভালো ঠেকছে না। একপ্রকার জোর করে নিজেকে তার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারলাম না। অর্ণব পিছন থেকে আমাকে কোলে তুলে নিলেন। এখন আমার ভয় করছে। আজকে ঘুমের ঔষধও দেয়া হয় নি অর্ণব কে। হয়তো আজকেই আমি আমার অহংকার হারিয়ে ফেলবো। অনেক চেষ্টা করছি নিজেকে অর্ণবের কাছে থেকে সরাতে কিন্তু পারছি না। চোখ বেয়ে অলরেডি পানি পরছে। একটু আগে যেই অনুভূতি টা হয়েছিল এখন সেখানে ভয় আর কষ্ট এসে জমা হয়েছে। আমি কি পারবো না আমার সতীত্ব রক্ষা করতে!!

অর্ণব আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজের সমস্ত ভর আমাকে উপর ছেড়ে দিলেন। হয়তো আজ আর শেষ রক্ষা হবে না। অর্ণব আমার গলায় চুমু খাচ্ছেন মাঝে মাঝে দুই একটা কামড়ও দিচ্ছেন। ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, অর্ণবের স্পর্শগুলো আমার সহ্য হচ্ছে না। ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।

আমাকে অবাক করে দিয়ে হঠাত অর্ণব থেমে গেলেন। আমার গলা থেকে মুখ উঠিয়ে একবার আমাকে দেখলেন। আমার দুচোখ দিয়ে সমানে পানি পরেই যাচ্ছে। অর্ণব স্থির দৃষ্টিতে বেশকিছুক্ষণ আমার মুখপানে তাকিয়ে রইলেন। কিছুক্ষণ পর তার দৃষ্টি নামিয়ে নিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে আমার বুকের উপর ঘুমিয়ে পরলেন।

আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি, অর্ণব কি চায়! আমি বুঝতে পারছি না তার মনে কি চলছে। আমার উপর কেনো এতো অধিকার দেখায় সে? শুধুই কি সেই ১০ লাখ টাকার জন্য এতো কিছু!! নাহ কিছুই ভাবতে পারছি না। আমার সব চিন্তা শক্তি যেনো অর্ণবের মুখের দিকে তাকালে লোপ পেয়ে যায়। সে কেনো বুঝতে পারে না তার আমার এতো কাছাকাছি আসা আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়! বুকের ধুকপুকানি টা চরম আকাড় ধারণ করে, ঠিক যেমন এখন করেছে!!

?
?

সকালে ঘুম ভাঙতেই অর্ণবকে নিজের বুকের উপর পেলাম। অজানা এক প্রশান্তি আমার মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। অর্ণবকে এভাবে পাশে পেয়ে ভালো লাগার সৃষ্টি হচ্ছে। আচ্ছা আমি কি অর্ণবের প্রতি দূর্বল হচ্ছি!!

অর্ণবকে নিজের ওপর থেকে সরিয়ে দিয়ে উঠে পরলাম। ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গিয়ে তার জন্য নাস্তা বানিয়ে ফেললাম। কিচেনের দরজার দিকে একবার লক্ষ্য করে অর্ণবের জুসে ঔষধটা মিশিয়ে দিলাম। এই কাজ টা আমার মধ্যে অনেক অপরাধবোধ জাগিয়ে তোলে কিন্তু আমি নিরুপায়। সব ঠিক করতে হলে আমাকে এটা করতেই হবে।

ওয়াশরুমে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে আছে অর্ণব। মনের ভিতর অনবরত জ্বলে যাওয়া আগুনটা নেভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে। মীরাকে ভালোবেসে ফেলেছে সে। মীরার প্রতি এই অদ্ভুত আবেগের রহস্য বের করে ফেলেছে সে। এই পৃথিবীতে যেই কয়েকটা জিনিস কে সে ঘৃণা করে তার মধ্যে মীরা একজন। তাহলে কিভাবে সে ভালোবেসে ফেললো তাকে। খুব তো ভেবেছিল মীরাকে কষ্ট দিয়ে নিজের সুখ খুঁজে নিবে সে। কিন্তু হলো তো তার উল্টোই। মীরাকে কষ্ট দিলে ব্যথাটা তার কলিজায় গিয়ে লাগে। কেনো তার সাথেই হলো এমন!! কেনো সে না চাইতেও ভালোবেসে ফেললো মীরাকে!

যেদিন সে মীরার হাত পুড়িয়ে দিয়েছিল ভেবেছিল তার ভিতরে দাও দাও করে জ্বলে উঠা আগুন নিভে যাবে। কিন্তু সেই আগুন তো নিভে নি। উল্টো সেই আগুনের তাপ আরও বেড়ে গেছে যা তার ভিতর টা পুড়িয়ে দিয়েছে। সে চায় না মীরাকে ভালোবাসতে। সে কাউকে ভালোবাসতে চায় না। তার জীবনে ভালোবাসার কোনো স্থান নেই। সে মীরাকে এনেছিল শুধু শাস্তি দিতে,, কিন্তু সে পারছে না। মীরার চোখের পানি তার বুকে রক্ত ঝড়ায়।

প্রায় একঘন্টার মতো ভিজে শাওয়ার শেষ করে বের হয় অর্ণব।

নাস্তা ঘরে নিতেই দেখি অর্ণবের শাওয়ার শেষ। ল্যাপটপে কিছু একটা কাজ করছেন বেডে বসে। অর্ণবের চোখের দিকে চোখ পড়তেই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো। অসম্ভব লাল হয়ে আছে চোখ দুটো। শরীরটাও কেমন ফ্যাঁকাশে হয়ে আছে। আচ্ছা সে কি অনেকক্ষণ ভিজেছিল! আমার মনে উদয় হওয়া প্রশ্নগুলো আমার মনেই থেকে যায়। উত্তর পাই না কখনও।

নাস্তাটা টেবিলে রেখে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। গোসল করে বেরুতেই দেখি অর্ণব জুস টা খাচ্ছেন। যাক বাবা কাজ হচ্ছে। শীঘ্রই আমি আমার উদ্দেশ্যে সফল হয়ে যাবো। আয়নার সামনে দাড়িয়ে তৈরি হচ্ছিলাম তখন খেয়াল হলো অর্ণব আমার দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে আছেন। তার এই দৃষ্টি আমাকে ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। অস্বস্তি কাটিয়ে উঠে কোনোমতে বললাম,

— কি দেখছেন?

— তোমাকে!

— কি বললেন!!

— না মানে বলছিলাম আজকে তোমার অফিসে যেতে হবে না।

— কেনো?

— বলেছি যেতে হবে না মানে হবে না। এতো প্রশ্ন কিসের?

— আমি প্রশ্ন করলে আপনার কি সমস্যা?

— রক্ষিতাদের এতো প্রশ্ন করার অধিকার থাকে না।

অর্ণবের মুখ থেকে পুনরায় রক্ষিতা শব্দটা শুনে বুকটা মুচড়ে উঠলো। তার কালকের ব্যবহারে আমি ভেবেছিলাম হয়তো সে আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আমি নিজের জায়গা ভুলে গিয়েছিলাম। আমি তো তার রক্ষিতা! এসব প্রেম প্রেম খেলা সে আমার সাথে নির্দ্বীধায় খেলতে পারে। দুচোখের কার্নিশ বেয়ে দু ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরলো আমার। অর্ণব ল্যাপটপ টা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলেন।

অর্ণব চলে গেলে পুরো বাড়িতে আমি একদম একা। সার্ভেন্টরা কেউ আমার সাথে কোনো কথা বলে না। সবার চোখেই আমি একটা খারাপ মেয়ে যে কি না বিয়ে ছাড়াই পর পুরুষের সাথে এক ঘরে থাকে। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। আমার হাত পা বাঁধা। চাইলেও এখান থেকে যেতে পারবো না। বাবার কথা ভীষণ মনে পরছে। সাতপাঁচ না ভেবে বাবার সাথে দেখা করতে চলে গেলাম।

দুপুরের পর পর দিয়ে বাসায় চলে এলাম। ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে। সকালেও খাওয়া হয় নি। ক্লান্তিও লাগছে অনেক। নিতা নামের একটা মেয়ে আছে যার সাথে আমার টুকটাক কথা হয়। উপরের ঘরে যাওয়ার আগে নিতা কে ডেকে খাবার পাঠিয়ে দিতে বললাম।

ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখি খাবার সেন্টার টেবিলে রাখা। প্রচন্ড ক্ষুধার্ত থাকায় গপাগপ সবটা খাবার খেয়ে নিলাম। ঘুম আসছে প্রচুর। চোখ মেলে তাকাতে পারছি না ঘুমরের জ্বালায়। আচ্ছা অর্ণব তো সন্ধ্যার পরে আসবেন। ততখন আমি একটু ঘুমিয়ে নেই! বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই ঘুমপরী নিজের মাঝে বিলীন করে নিলেন আমাকে।

অফিসে নিজের রুমের জানালার কাঁচে হেলান দিয়ে ব্যস্ত শহর দেখছে অর্ণব। চার তলার উপর থেকে খুব যে স্পষ্ট সে দেখছে তা কিন্তু নয় তবুও স্থির দৃষ্টি রেখেছে। দৃষ্টি জানালার বাইরে হলেও তার মনে চলছে অন্য কিছু। তার মনের সর্বত্রই বিরাজ করছে মীরা। এই কয়েক দিনের মধ্যেই তার সবচেয়ে ঘৃণার মানুষটা তার ভালোবাসায় পরিণত হবে এটা সে বুঝতে পারে নি। তার ধারণা ছিল মীরাকে তার সাথে রেখে শাস্তি দেবে। সবার সামনে মীরাকে কলঙ্কিত করবে। কিন্তু প্রেমের জালে সে নিজেই আটকা পরে গেছে। মীয়ার মায়াতে আটকে গেছে সে। এখন প্রতি মুহূর্তে তার মীরাকে চাই। তার জীবনে, তার অর্ধাঙ্গিনী রূপে তার মীরাকে চাই। কিন্তু সে দিয়ার সাথে অন্যায় করতে চায় না। দিয়ার সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। এই অবস্থায় যদি মীরাকে ভালোবেসে ফেলে এটা তো অন্যায় হয়ে যাবে। তখন তার মধ্যে আর সেই মানুষটার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। সারাজীবন সে যার কাছে থেকে দূরে থেকেছে শেষ পর্যন্ত তার পথেই পা রাখতে চলেছে!!

মীরার প্রতি ঘৃণা যদি সে এক মুহূর্তের জন্য ভুলেও যায়, তার বর্তমান অবস্থা কিভাবে ভুলবে! সেও তো সেই একি কাজ করছে যেটাকে সে আজ পর্যন্ত ধিক্কার জানিয়ে এসেছে। প্রচন্ড রকম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে অর্ণব। একদিকে তার আদর্শ আর অন্যদিকে ভালোবাসা। কোনটাকে বেছে নেবে সে!! ভীষণ অস্থিরতা কাজ করছে তার মাঝে। তবে একটা জিনিস আজ সে খেয়াল করছে অন্যসব দিন এরকম অস্থিরতা হলে নিজেকে সে কন্ট্রোল করতে পারে না। কিন্তু আজ সে নিজেকে সামলে নিচ্ছে। এতো দুশ্চিন্তার মাঝেও অর্ণবের মাঝে এক আলাদা ভালোলাগা কাজ করছে। এসবটাই মীরার জন্য। মীরার তার জীবনে আসার পর থেকেই সে নিজেকে সামলাতে শিখেছে। ১৯ বছর পর এই কয়েক দিন সে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছে মীরার বুকে মাথা রেখে। মীরাই কি তার পারফেক্ট ম্যাচ? তার ভালোবাসা? মীরাই কি সেই মানুষটা যার বুকে মাথা রেখে অর্ণব তার অতীত ভুলতে পারবে? তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার মাধ্যম কি মীরা?

অর্ণব কিছুক্ষণ স্তব্ধ দৃষ্টিতে কিছু একটা ভেবে মোবাইলটা হাতে কাউকে ফোন করলো। ফোনটা রেখে হন্তদন্ত হয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো।।

চলবে..