নিরব সে পর্ব-০৯

0
1462

৮ম পর্বের পর থেকেঃ-

”নিরব সে”
#সাদিয়া_সৃষ্টি
৯ম পর্ব

–জিনি, এটা কি সত্যিই তুমি?

–রিতিকা আপু। আপনি এখানে?

–হ্যাঁ, জানো না ? আমি তোমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি আর কয়েকদিন থাকব।

–ওহ ভালোই তো। এখন আসলেন?

–হ্যাঁ।

–তাহলে বাড়ি চলুন। দেরি হয়ে যাচ্ছে। অনেক দূর থেকে এসেছেন। এখন রেস্ট নিবেন।

বলেই মাঠে বসা থেকে উঠে দাঁড়াল জিনিয়া। তারপর রিতিকার হাত ধরে বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করল। রিতিকাও ওর সাথে হাঁটা ধরল। হাঁটার মাঝেই বলে উঠল,

–শুনলাম তোর না কি বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

–জ্বি আপু।

–ওহ, মা একটু অসুস্থ ছিল তাই আসতে পারলাম না। ইশ, অনেক মজা হয়েছিল না? আমি মিস করলাম।

–তেমন কিছু না আপু, আমি আর উনি তো এখন বাসায় কয়েকদিনের জন্য এসেছি। আমাদের সাথে সময় কাটাতে পারবে। অবশ্য উনি হাসপাতালে থাকবেন। হয়তো বেশি সময় বাসায় থাকবেন না। কিন্তু আমি থাকব।

–তাহলে তো ভালোই, তোর সাথে পুরো পাড়া ঘুরে বেড়াব। কিন্তু উনি, উনি মানে কি? এখনই উনি? আপনি করে বলিস এখনো? তুমি করে বলতে পারিস না?

বলেই রিতিকা খোঁচা মারা শুরু করল জিনিয়ার পিঠে। জিনিয়াও জবাব দিল,

–কি যে বলেন না আপু। বাড়ি চলুন দেরি হয়ে যাচ্ছে।

বলেই আবার হাঁটা ধরল জিনিয়া। রিতিকাও একটু জোরে হেঁটে তার পাশে পাশে হাঁটা শুরু করল।

রিতিকা জিনিয়ার মামাতো বোন। জিনিয়ার থেকে ৩ বছরের বড়। এমএ পরীক্ষা শেষ করে জিনিয়ার বাড়ি ঘুরতে এসেছে সে। ফেরার পথেয় দেখা হল ওদের।

জিনিয়া হাঁটার সময় খেয়াল করল সামনে দিয়ে জাবির হেঁটে যাচ্ছে। ও দেখেও না দেখার ভান করল। কারণ জাবির এবার ও ওকে দেখেও খেয়াল করে নি। নিজের মতো চলে গিয়েছে। তাহলে সে কেন অতীত নিয়ে পড়ে থাকবে। হ্যাঁ, এটা সে মানে যে তার সাথে জাবিরের অতীত অনেক সুন্দর ছিল। আর ৫ টা মানুষের মতো স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। দুজন দুজনকে সম্মান করত। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই যদি এক পক্ষ নিজ থেকেই চলে যায়, আর যোগাযোগ না করে। এক্ষেত্রে অপর পক্ষ চেষ্টা করা ছাড়া আর কি ই বা করতে পারে? অপর পক্ষ থেকে জিনিয়া অনেক বার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জাবির হয়তো তাকে নিজের ব্যবহৃত একটা জিনিসের সাথে তুলনা করেছে। যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছে, তখন ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে জিনিয়া চাইলেও কিছু করতে পারে নি, আর না পারবে। এখন সে নিজেও অন্য আরেকজনের সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। এখন তো এটা অসম্ভব। তাই এসব নিয়ে না ভেবে সে তাকে এড়িয়ে চলাই শ্রেয় মনে করল। কিন্তু বিপত্তি ঘটল তখন যখন রিতিকা বলে উঠল,

–ওটা জাবির না? তোর ক্লাস মেট? হ্যাঁ তো ওই তো। তাহলে দেখা না করেই চলে যাচ্ছিস? দাঁড়া। দাঁড়া। জাবির জাবির…

বলে জোরে জোরে ডাকা শুরু করল রিতিকা। রিতিকা জিনিয়ার খুব কাছের হওয়ায় জিনিয়ার সম্পর্কে ও সব ই জানে। জিনিয়া সসব থেকে বেশি ফ্রি রিতিকার সাথে। তাই সে তার জীবনের সব কথা রিতিকার সাথে শেয়ার করে। তাছাড়া জিনিয়ার বাড়ি আর তার মামার বাড়ি বেশি দূরে না হওয়ায় তাদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় থাকে। প্রায়ই দেখা হয় তাদের। তাই এদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক বেশি মজবুত। তবে জাবিরের ব্যাপারটা জিনিয়া বলতে চায় নি কাউকে। এটা জাবির ই বলতে মানা করেছিল। তাই সে রিরিতকা কে পর্যন্ত বলে নি। চুপ করেছিল সব সময়। নিজের মায়ের থেকেও বেশি রিতিকা জানে জিনিয়ার ব্যাপারে। কিন্তু জাবির কে চেনে না রিতিকা। একদিন জাবির ফোনে ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল। জিনিয়ার ফোন তখন রিতিকার কাছে ছিল। তাই দেখে রিতিকা জানতে পেরেছিল ও জিনিয়ার ক্লাসমেট। আর রিতিকা যে জিনিয়ার এই ছোট বিষয়টাও মনে রাখবে, সেটা জিনিয়া বুঝতে পারে নি। জাবির এর সাথে কোথাও হয়েছে রিতিকার। দেখাও হয়েছে আগে। জাবির ও রিতিকাকে তাই চিনে। অবশ্য জাবির জিনিয়া সম্পর্কিত সব কিছুই চিনে। সে জিনিয়ার সম্পর্কে সব চেয়ে বেশি জানে। যখন রিতিকার ডাক শুনল, তখন আর এড়িয়ে গেল না জাবির। সে হেঁটে তাদের কাছে গেল।

–কেমন আছো জাবির?

–এই তো, ভালো আপু, আপনি কেমন আছেন?

–ভালো, আমাকে এখনো মনে আছে?

–জ্বি আপু।

–সো সুইট অফ ইউ। এই দেখ ছেলে লজ্জা পাচ্ছে।

–না না তেমন কিছু না। শুধু আমার সাথেই কথা বলছ? পাশে যে তোমার ফ্রেন্ড দাঁড়িয়ে আছে সেটা দেখছ না?

–না, তেমন কিছু না।

–তাহলে কথা বল তোমরা। কথা তো শুধু আমি একাই বলে যাচ্ছি।

–কেমন আছো জিনিয়া?

এই কথাটা শোনার পর জিনিয়ার মনে ঝড় বয়ে গেল। আগে এই ডাক শুনলে যেখানে এক শান্তি কাজ করত আজ সেই ডাকে তার অস্বস্থি কাজ করছে। যেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তার। কত দিন ধরে এই দাকের অপেক্ষায় ছিল সে। কিন্তু এখন আর সেটা সম্ভব না। এখন আর সেই অপেক্ষা তার নেই। সত্যিই কি নেই, না কি জিনিয়া এখনো অপেক্ষা করছে এই দাকের কিন্তু মানতে চায় না। অনেকক্ষণ চুপ থেকে জিনিয়া ছোট্ট করে জবাব দিল,

–আলহামদুলিল্লাহ্‌।

আবার মাথা নিচু করে ফেলল সে। সে মাথা উঁচু করে শুধু একবার ই দেখে নিল জাবিরকে। এখন তার উপর কোন মায়া কাজ করলেও সেটা প্রকাশ করতে চায় না সে। জিনিয়া জানে, জাবির তাকে দেখলেই বুঝে যাবে জিনিয়ার মনের অবস্থা। এটা প্রথম না। আগেও অনেক বার ইনিয়া যখন জাবির কে মিথ্যা বলার চেষ্টা করেছে, তখন জাবির তাকে ধরে ফেলেছে। এমন কি কোন কথা বলার আগেই সেটা বুঝে যেত। জিনিয়াকে কিছু বলা লাগত না। তখন এসব ব্যাপারে জিনিয়া মুগ্ধ হত। এক মনে তাকিয়ে থাকত জাবিরের দিকে। আর বলত, ”তুমি এতো ভালো কেন জাবির? কি করে বুঝ আমাকে এতো?” জাবির হেসে শুধু তার চুল হাতিয়ে ওলটপালট করে আবার নিজেই সেটা ঠিক করে দিত হাত দিয়ে। আর বলত, ‘পাগলী একটা”। এসব কাজেও জিনিয়া মুগ্ধ হত। প্রতি টা ছোট ছোট জিনিস খেয়াল করত জাবির কে ঘিরে। ওর হাঁটা, চলা, কথা বলা, চোখের পলক ফেলা, প্রতিটা মুহূর্তে করা সব কাজ। কখনো কখনো যেন সে জাবিরের নিঃশ্বাস গোনার চেষ্টা করল। কত টুকু সফল হত তা জানা নেই। তবে জাবিরকে বোঝার চেষ্টা করত। কিনতি জাবির যেভাবে জিনিয়াকে বুঝত, সেভাবে সে জাবিরকে বুঝত না অতো। এতেই সে ঈর্ষান্বিত হত। তবুও ভালো লাগত এসব। কিন্ত এখন কিছুই করার নেই তাদের, তাদের রাস্তা আলাদা। আর এটা জাবির ই ঠিক করেছে। সে যেমন নিজের সম্পর্ক তৈরি করেছিল, জিনিয়াকে তার প্রতি পাগল করেছিল, সেভাবেই সে নিজ থেকেই এই সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। নিজে থেকেই চলে গিয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই। এখন আবার ফিরে এসেছে কেন? জিনিয়াকে ভেতর থেকে ক্ষতবিক্ষত করতে? কিন্তু সেটা জাবিরকে দেখাতে চায় না। তার এখনো বিশ্বাস, জাবির তার চেহারা দেখলেই মনের অবস্থা বুঝে যাবে।

কিছুক্ষণ নিরবতা চলল ৩ জনের মধ্যে। হঠাৎ করেই রিতিকা বলে উঠল,

–তোমাদের আর কোন কথা নেই? অবশ্য যাই বল, আমি তো ভেবেছিলা তোমাদের বিয়ে হবে। কিন্তু জিনির বিয়ে আগে হয়ে গেল। তুমি কবে বিয়ে করছ জাবির?

”জিনির বিয়ে আগে হয়ে গেল” – কথাটা জাবিরের কানে পৌঁছাতেই জাবির চোখ তুলে জিনিয়ার দিকে তাকাল। সে এখনো মাটির দিকেই তাকিয়ে আছে। জিনিয়া সত্যিই বিয়ে করে ফেলেছে এটা বিশ্বাস করতে পারছে না জাবির। কি করে? ও তো ভেবেছিল জিনিয়া শুধু মজা করে বলছিল কথাগুলো সেদিন। কিন্তু সত্যিই বিয়ে করে ফেলল কি করে? জাবিরের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, জিনিয়া তাকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করবে না। কিন্তু …

সে প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জিনিয়ার দিকে । জিনিয়ার মনে এমন অনুভব হল যেন কেউ তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই সে মাথা তুলে জাবিরের দিকে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেলল। জাবিরের দিকে তাকিয়ে থাকার ক্ষমতা তার নেই আপাতত। তাই সে মাথা নিচু করে রাখাই ঠিক মনে করল। রিতিকা এদের হঠাৎ করে চুপ হয়ে যাওয়া দেখে নিরবতা ভেঙে বলল,

–আবার চুপ হয়ে গেলে? আজ কি তোমরা দুজন নিরব থাকার প্ল্যানিং এ আছো? যাই হোক তোমার…

–এই রিতিকা আপু, জিনিয়া, এখনো তোমরা দাঁড়িয়ে আছো? বাড়ি যাবে না না কি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে।

পেছন থেকে বলে উঠল সারিকা। ও রিতিকার বোন। রিতিকার থেকে এক বছরের ছোট। সারিকাকে দেখে বলে উঠল,

–এখানেই দাঁড়িয়ে থাকব, তাতে তোর কোন সমস্যা সারিকা?

–রিতিকা আপু, তুমি… তুমি একটা যা তা।

এদের কথার মাঝে জাবির বলে উঠল,

–আমি যাই, আমার কাজ আছে।

বলে আর কারো অপেক্ষা না করেই দ্রুত পদে অপর দিকে এগিয়ে চলল। জিনিয়াও এই নিয়ে আর কথা না বাড়িয়ে সারিকার হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে বলে উঠল,

–চল, কিছুক্ষণের মধ্যে অন্ধকার হয়ে আসবে। আর দেরি করো না। চলো, চলো।

বলেই আওয়ার তাড়া দিয়ে নিজেও জোরে জোরে এগিয়ে গেল। রিতিকা আর সারিকাও ওদের পিছনে হেঁটে চলল।

দরজায় বেল বাজাল সারিকা। ও আর দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে দৌড়ে আগে চলে এসেছিল। বেশি হাঁটার অভ্যাস নেই ওর। এর থেকে একটা হুইল চেয়ার এনে দিলে সারাদিন ওতে করে চলাফেরা করতেও রাজি আছে সারিকা। কিন্তু হাঁটতে ও চায় না, এক্ষেত্রে ওর থেকে বড় অলস আর কেউ নেই যেন।

দরজা খুলল ওয়াফিফ। ওয়াফিফ অচেনা মুখ দেখে ভ্রূ কুচকাল। আর বলল,

–জ্বি, কাকে চাই?

সারিকা এর উত্তর দিল না। বরং সে ওয়াফিফের দিকে তাকিয়ে থাকল। পলক না ফেলে। এতে ওয়াফিফের কয়ালে বিরক্তির ভাঁজ পড়লেও সারিকার মনে ঝড় বয়ে চলেছে। এক ঠাণ্ডা হাওয়া আর সাথে সফটেড মিউজিক। সে হা করে তাকিয়ে আছে ওয়াফিফের দিকে। ওয়াফিফ কোন জবাব না পেয়ে অচেনা ভেবে দরজা আটকে দিতে গেল। তখন তারদের কানে ভেসে এলো জিনিয়ার আওয়াজ।

–আরে আরে দরজার বন্ধ করছেন কেন? আমরা আছি তো।

ওয়াফিফ জিনিয়াকে দেখে দরজা পুরো খুলে দিল। ওয়াফিফ কে এই সময় বাড়িতে দেখে অবাক হল জিনিয়া। সে ভেতরে ঢুকতে গিয়েও ঢুকতে পারল না। সামনে সারিকা তখনও দাঁড়িয়ে আছে। জিনিয়া আবার বলে উঠল,

–সারিকা আপু, সরো, ভেতরে যাবো তো আমরা।

রিতিকাও তাল মেলাল,

–এই সারিকা সর আগে।

সারিকার ধ্যান ভাঙল এতে। সে সরে দাঁড়াতেই ওয়াফিফ জিনিয়ার হাতে ভারী ব্যাগ দেখে সেটা নিজে নিয়ে নিল আর জিনিয়া সহ বাকিরা ভেতরে ঢুকল। সেই ব্যাগটা বেশি ভারী না হলেও হালকা ভারী ছিল। তাই ওয়াফিফ সেটা নিজেই নিয়ে নিল। সারিকার মুখ তখনও বন্ধ হয় নি। সে ওয়াফিফ কে দেখে ক্রাশ খেয়েছে। আর এখন তাকে সেই ঘোর থেকে বের করাও কঠিন। জিনিয়ার মা রান্না ঘোর থেকে বের হয়ে এসে সবার পরিচয় করিয়ে দিলেন। সারিকা দেখার মতো অবস্থা হয়েছিল যখন জিনিয়ার মা বলেছিল,

–ওয়াফিফ জিনিয়ার হাসবেন্ড।

জিনিয়ার মুখ সেই সন্ধ্যা থেকে শুকিয়ে ছিল। জারিফ বিষয়টা বেশ খেয়াল করেছে। জারিফ তাই তার বোনের মন কি করে ভালো করা যায় তাই ভাবছিল। জিনিয়ার মাথা থেকে তখনও জাবিবের ব্যাপারটা বের হয় নি। জিনিয়ার বিয়ে হয়েছে জানার পর জাবির কি করবে সেই বিষয় ভাবাচ্ছে তাকে। আগে যখন এই বিষয় নিয়ে কথা হত তখন জাবিরের মন্তব্য কিছুটা এমন হত,

–আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করলে তাকে মেরে ফেলে তোমাকে বিয়ে করব জান। তাই অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা ভাববে না।

কিন্তু এটা অনেক আগের কথা হলেও জিনিয়ার ভয় করছে। জাবিরের জিদ অনেক বেশি। যদি কিছু করে বসে? সেটাই বেশি চিন্তায় ফেলছে জিনিয়াকে।

জারিফ হঠাৎ করে নিজের ফোনে একটা গান চালু করে জিনিয়ার কানে এয়ারফোনটা লাগিয়ে দিল। জিনিয়ার কানে আওয়ার পৌঁছাতেই জিনিয়া সোফাতে বসেই লাফিয়ে উঠল। ওয়াফিফ তাকে ধরে সামলাল। সামনে থাকা রিতিকা আর সারিকাও অবাক হল। জারিফ এখ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। জিনিয়ার হাতে ধরা পড়া যাবে না। জিনিয়া জোরে বলে উঠল,

–ওই জিরাফ, তুই আমাকে হিরো আলমের চাইনিজ গান শোনালি কেন?

ব্যাপারটা বুঝতে সবার একটু সময় লাগল। বুঝতে সবাই হু হা করে হেসে উঠল। ওয়াফিফ জিনিয়াকে এক হাত দিয়ে ধরে সামলাল। জারিফ গিয়ে ওয়াফিফের পিছনে লুকাল। আর বলল,

–দুলা ভাই, আজ আমার প্রাণ রক্ষার দায়িত্ব আপনার, বাঁচান আমাকে।

ওয়াফিফ জিনিয়াকে শান্ত করে বসাল। জিনিয়া রাগে ফুঁসতে ফুঁসতেই বলে উঠল,

–কেন শোনালি তুই? বল।

জারিফ জবাব দিল,

–তাহলে তুই পেচার মতো মুখ করে রেখেছিস কেন? তোকে একদম পেত্নি লাগছিল। তাই এই পেত্নিকে ঠিক করে মানুষ করতেই শোনাচ্ছিলাম, এই জন্যই বলে কারো ভাল করতে নেই।

বিষয়টা মাথায় ঢুকতেই মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল জিনিয়ার। তার ছোট ভাইটা কত ভাবে তাকে নিয়ে। জিনিয়া বলল,

–এদিকে আয়।

–আগে বল মারবি না।

–মারব না। এদিকে আয়।

জারিফ ওয়াফিফের পিছন থেকে জিনিয়ার কাছে যেতেই জিনিয়া ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল। সবাই ওদের দুই ভাই বোনকে দেখে হেসে ফেলল। কিন্তু এই মুহূর্তেও ওয়াফিফের দিকে সারিকা এক দৃষ্টিতেই তাকিয়ে আছে। তার মাথায় এতক্ষণ হওয়া ঘটনা কিছু ঢুকছে না।

চলবে।

[রিচেক করি নি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে আর ধরিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ]
Sadia Hq Sr.