নিরব সে পর্ব-২০

0
1279

১৯শ পর্বের পর থেকেঃ-

”নিরব সে”
#সাদিয়া_সৃষ্টি
২০শ পর্ব

–জিনিয়া তো নিজের বাবার বাড়ি গিয়েছে। কেন ? তুই এসব এখন জিজ্ঞেস করছিস কেন? তোকে জানায় নি ও?

–না না, মা । আমার কথার মানে ছিল জিনিয়া এখন কোথায়? মানে ও নিজের বাড়ি ঠিক মতো পৌঁছেছে কি না? আসলে সারাদিনে ফোন করে জিজ্ঞেস করা হয়নি একবারও। আর এখন এতো রাতে কল করা ঠিক হবে না। ও হয়তো ঘুমাচ্ছে। তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম। তুমি তো সবার খবর রাখো। তাই আর কি !

–ও আচ্ছা, তুই এখন যা ঘুমিয়ে পড়।

–জিনিয়া কবে ফিরবে সেটা বলেছে?

–মনে হয় বেশ কিছুদিন থাকবে ওখানে। আমি বলেছিলাম ১ মাস থেকে আসতে। ওর বাবা মাও তাহলে খুশি হয়ে যেত। কেন ? তুই এটাও জানতি না?

–না তো, মানে জিজ্ঞেস করা হয় নি। সকালে তো তাড়াহুড়োর মধ্যে হাসপাতালে গেলাম।

–কই? হাসপাতালে তুই তো অনেক আস্তে ধীরেই গেলি? তাড়াহুড়ো কখন করলি? আমি তো দেখলাম না।

এটা শোনার পর ওয়াফিফের মুখ অনুভূতি শূন্য হয়ে গেল। এই প্রথমবার সামান্য একটা পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না সে। মনে মনে নিজেকে একদফা বকল সে। তারপর একটা বানোয়াট হাসি মুখে এনে বলল,

–আমার ঘুম পাচ্ছে, আমি গেলাম।

বলেই হাই তোলার অভিনয় করল আর মুখে হাত দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। এদিকে আফিয়া রহমান ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হাসি দিলেন। তারপর নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে বিছানায় ফারহান রহমানের সামনে বসলেন।

–এই যে শুনছ?

–হুম।

–শোনো না।

–হুম।

–শুনবা নাকি কালকের সকালে দুপুরে রাতে খেতে দিব না?

–হ্যাঁ হ্যাঁ বল, আমি তোমার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছি কথা শোনার জন্য।

বলতে বলতে এম্নভাবে হালকা লাফিয়ে উঠলেন যে চোখ থেকে চশমা খুলে পড়ল আর হাতে থাকা খবরের কাগজটা কিছুটা দুমড়ে গিয়ে ছিঁড়ে গেল। তবুও সেটা বিছানার এক কোণে রেখে দিলেন। কিছুটা ছুঁড়ে ফেলার মতো করে। কারণ তিনি জানেন, আফিয়া রহমান যখন একবার বলেছেন তখন তার খাওয়া বন্ধের পাশাপাশি আরও অনেক কিছু করবেন রেগে গেলে। তাই তাকে রাগানো উচিত হবে না। কিন্তু মনে মনে খবরের কাগজের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন। গত কয়েক দিন ধরে তিনি রাতে খবরের কাগজ পড়া শুরু করেছেন। বেশ ভালই লাগছে তার এই কাজটা। সকালে ঘুমান আর রাতে খবরের কাগজ পড়েন। বুক সেলফে যত বই আছে সব পড়া শেষ। আর নতুন বই মাস শেষেই কেনার কথা ভাবা হবে। ছেলেদের সাথে এই নিয়ে কথাও বলেছেন তিনি। এমন না যে ছেলেদের উপর নির্ভরশীল তিনি। কাজের পাশাপাশি বই পড়াটা তার নেশা। তাই বই পড়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেন না। বইয়ের তাকে চোখ বুলালে এমন অনেক বই পাওয়া যাবে যেগুলো অনেকবার পড়েছেন তিনি। আর বাকি রইল বই কেনা। বই কিনতে না পারলেও লাইব্রেরি থেকে ধার নিতে পারবেন। কিন্তু মাঝে মাঝে বই পড়ায় এতো ডুবে যান যে বিশ্রাম নিতে ভুলে যান তিনি। তাই অতিরিক্ত বই কেনার জন্য ছেলে মেয়েদের অনুমতি নিতে হয়। আর না নিলে তো আফিয়া রহমান আছেনই। তিনি হুমকি দেন সব বই বিক্রি করে দেওয়ার।

আর এখন সব রাস্তা বন্ধ থাকায় তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নতুন কিছু চেষ্টা করার। তাই বিদেশীদের সময় অনুসারে যেন চলেন তিনি। সকালে ঘুমান আর রাতে জেগে থাকেন। এই নিয়ে কয়েক দফা বকা খেলেও পাত্তা দেন নি তিনি। বকা শেষ করে যখন আফিয়া রহমান মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবেন, তখন তিনি তার গাল টেনে দিয়ে সাহিত্যিকের মতো করে কিছু এমন লাইন শুনিয়ে দিবেন যাতে আফিয়া রহমান লজ্জা পেয়ে যান। আরপ্র মনে মনে নিজেই বলেন – ”বউ পটানোর মিশন একমপ্লিশড।”

আফিয়া রহমান বলতে শুরু করলেন নিজের সব কথা। ওয়াফিফকে নিয়ে তার কি মনে হয়। সারাদিন কি কি হয়েছে। প্রতিটা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কথা। এর মধ্যে পাশের বাড়ির ভাবির ছেলেও বাদ নেই। কি কি শুনেছে অন্যদের কাছে। এসব ফারহান রহমান শুনছেন আর মুচকি হাসছেন। মানুষটা তাকে সব কিছু বলে। বিয়ের এতো বছরেও মানুষটার মধ্যে এতোটুকু পরিবর্তন হয় নি। সবার কাছে ভয় পাওয়ার মতো মানুষ হলেও নিজের স্বামীর কাছে সবচেয়ে বেশি খোলামেলা তিনি। এসব চিন্তা আসতেই মুখের হাসি আরও প্রশস্ত হয় তার। ফারহান রহমানের মতে,

”তার স্ত্রী হল তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ধারাবাহিক গল্পের বইগুলোর মধ্যে একটি, যার শেষ নেই। যেখানে নতুন কিছু রোজ আবিষ্কার করে চলেছেন, যেই বইয়ের প্রেমে রোজ পড়ছেন নতুন করে। আগের ভালোবাসা কমছে না, বরং প্রতিনিয়ত সেটা হয়তো দ্বিগুণ হারে বেড়ে চলেছে কিংবা তারও বেশি।”

অন্যদিকে ওয়াফিফের রুমে আলো না জ্বললেও আলোর কমতি নেই নেই। চাঁদের আলো না থাকলেও বাইরের অন্যসব বাড়ির আলোর ছটা কিংবা রাস্তার লাইটের আলো এসে ভিতরে ঢুকেছে। ওয়াফিফ শান্ত হয়ে শুয়ে থাকতে পারছে না। কিছুক্ষণ বিছানায় শুয়ে থেকে আবার উঠে পড়ছে। ওই হালকা আলোর মধ্যে বুঝে বুঝে কদম ফেলছে আর হাঁটছে ধীরে ধীরে। তবে তার তীব্রতা খুব বেশি বলেই মনে হচ্ছে। তার মধ্যে এক আলাদা অনুভূতির জন্ম হচ্ছে। এক অস্থিরতা কাজ করছে। সে হাঁটতে হাঁটতে জানালার কাছে গিয়ে থামছে আর তালগাছটার দিকে তাকিয়ে থাকছে কিছুক্ষণ। জিনিয়ার কথা মনে পড়তেই হেসে উঠছে সে। কি করে বিয়ের পর ১ম দিনই সে জিনিয়াকে ভয় দেখিয়েছিল। অন্যরা দেখলে হয়তো হাসত জিনিয়ার বোকামিতে। হাসারই কথা। তবে ওয়াফিফের এখন হঠাৎ করে বেশ ইচ্ছা করছে জিনিয়ার তখনকার মুখটা দেখার।

এর মধ্যে অবাক করার বিষয় একটাই। আজ পর্যন্ত ওয়াফিফ যতবার একা থেকেছে, ততবার ছবির কথা ভেবেছে। কিন্তু আজ একবারও ভাবছে না। তবে জিনিয়ার ছোট ছোট বিষয়গুলো তার ভীষণভাবে মনে পড়ছে। জিনিয়ার চুপ করে থাকার সময়টা যখন মাথা নিচু করে থাকত, বড়জোর তখন কিছু করলে একটা কাজই করত, নিজের শাড়ির আঁচল আঙুলে পেঁচাত। কারো নজরে পড়ে কি না জানা নেই। কিন্তু তার নজরে বেশ পড়ত। আবার জিনিয়ার হাসি মুখ, যখন কিছু সম্পর্কে ওয়াফিফের থেকে জানতে চাইত তখন জ্বলজলে চোখ জোড়া, যখন ভুল বুঝে অভিমান করত কিংবা রাগ করে মুখ ফুলিয়ে থাকত, আবার যখন লজ্জা পেত তখন হঠাৎ করেই তার কান লাল হয়ে যাওয়া। সেদিন হঠাৎ করেই ঘরে ঢুকেছিল ওয়াফিফ। ঘরে ঢুকে দেখে জিনিয়া তার সাদা এপ্রোন পরে আর চশমা চোখে দিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু দাঁড়িয়ে আছে বললে ভুল হবে, এর পাশাপাশি ওয়াফিফের নকল করছে। এটা দেখে হাসি পেলেও পরে দেখল জিনিয়া হুবুহু তার নকল করে কথা বলছে। কথা বলার সময় চোখের চশমাটা আঙুল দিয়ে ঠেলে দিচ্ছে হালকা। আবার বই হাত থেকে নামিয়ে চশমাও খুলে ফেলছে। ওয়াফিফ যে বই পড়া বা কাগজ দেখার সময় শুধু চশমা পরে এটাও খেয়াল করেছিল জিনিয়া।

শান্ত হয়ে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না ওয়াফিফ। নিজেকে জিনিয়ার ভাবনা থেকে দূরে রাখার জন্য আবার শুয়ে পড়ল। চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর আপ্রান চেষ্টা করল। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হল না। পাশ ফিরে শুতেই তার কাছে খালি খালি মনে হল কিছু একটা। হাত দিতেই মনে পড়ল সেখানে জিনিয়া নেই। আর সাথে এটাও মনে হল সে রাতে জিনিয়া কি করে লেগপিস ভেবে ওয়াফিফের হাত কামড়ে দিয়েছিল। এসব ভেবে হাসতে গিয়ে আবার নিজেই শান্ত হয়ে গেল। সে ভেবে নিয়েছে জিনিয়ার কথা আর ভাববে না। একসময় ঘুমিয়েও গেল সে।


জিনিয়া ছাদে বসে আছে। আজ ৩ দিন ধরে ওয়াফিফের সাথে কথা হয় নি তার। ভাগ্য ভালো ওয়াফিফের ছবি ছিল সাথে। সেটাই দেখে যখন ইচ্ছা করে। শুনেছে সারিকা আপুর বিয়ে ঠিক হতে পারে। শিশিরের সাথে হতে পারে। তবে কবে হবে তার ঠিক নেই। সারিকা আপু না কি ক্রাশ ছেড়ে ভালোবাসায় পড়ে গিয়েছে শিশির ভাইয়ের সাথে। আর এখন সেও না কি এনজিও তে কাজ করার জন্য জিদ ধরেছে। তাই বিয়ে করতে গেলে কি করতে পারে সেই নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ফোনে। আর জিনিয়া শুধু হেসেছে। রিতিকা আপুর না কি এই চিন্তা তার ছোট বোন বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে আর বাবা মা ছোট মেয়েকে বড় মেয়ের আগে বিয়ে দিতে পারবে না বলে রিতিকা আপুর বিয়ে যার তার সাথে দিয়ে দিবে। তখন স্বাধীন জীবন বিদায় বলতে হবে।

এসব চিন্তা ভাবনা করতে করতেই আবার ওয়াফিফের খেয়াল মাথায় আসে তার। সে আবার ডুবে যায় ওয়াফিফের ভাবনায়। নিজেকে কয়েকদফা বকে সেই চিন্তা থেকে বের হলেও আবার সেই চিন্তায় পড়ে যায়। নিজেকে কিছুতেই ওয়াফিফের চিন্তা থেকে আলাদা রাখতে পারছে না। আগে তো তাও দেখত মানুষটাকে। কিন্তু এখন দেখা হয় না বলে তার চিন্তা আরও বেশি হয়। রোজ ফোন করে সবার খবর নিলেও ওয়াফিফের সাথে কথা হয় নি তার। অবশ্য এইটুকু রাগ করতে ইচ্ছা করছে জিনিয়ার। ওয়াফিফ তাকে ভুল বুঝল ঠিক আছে, কিন্তু ওর কথা শোনার সুযোগ কেন দিল না? আর দিল না ঠিক আছে, নিজের ফোন তো একবার চেক করতে পারতো, নাকি নিজের কমনসেন্স এর পাশাপাশি ফোনটাকেও ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে। ওয়াফিফ কি করে ভেবে নিতে পারল জিনিয়ার মতো মেয়ে এতো বড় কিছু ভাবতে পারবে তাও ওয়াফিফকে না জানিয়ে। এতোটা বুদ্ধিমান মানুষের এই বোকামি মানা যায় না। তাই কিছুদিনের জন্য এসব থেকে দূরে থাকতে চেয়েছে। সেদিন হঠাৎ করেই মা বাবার সাথে কথা হল। তারাই আফিয়া রহমানের সাথে কথা বললে আফিয়া রহমান ই এই আইডিয়া দেন । মেয়ের থেকে দূরে থেকে যেহেতু কষ্ট পাচ্ছেন, তাই মেয়েকে ১০-১৫ দিনের জন্য নিজের কাছে রেখে দেন। তাছাড়া জিনিয়া এখন প্রেগন্যান্ট, তাই ওর যেন মন খারাপ না হয় সেজন্যই বলেছিলেন এই কথাটা। জিনিয়াও তাতে সায় দেয়। সে নিজেকে তৈরি করতে কিছু সময় নিতে চাইছিল। যাতে ওয়াফিফের সাথে দেখা হলে নিজের ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ বলে দিতে পারে কোনোরকম ভয় না পেয়েই। যাই হোক, ওয়াফিফের থেকে দূরে থাকতে পারবে না এটা নিশ্চিত। এজন্য না যে ওয়াফিফ তার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে, বরং এইজন্য যে জিনিয়া ওয়াফিফের থেকে নিজে দূরে থাকতে পারছে না। আর এই ৩ দিনে তো তার প্রমাণ সে পেয়েই গিয়েছে। তাই ফিরে যেতে চায় সে।

অন্যদিকে ওয়াফিফ বাড়িতে যতক্ষণ থাকে, বেশির ভাগ সময় ড্রয়িং রুমে বসে সময় কাটায়। বিশেষ করে দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে। মাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে না। নাহলে মা কি না কি ভেবে বসবেন। আবার জিনিয়ার দেখাও পায় না। সব মিলিয়ে সে রেগেও আছে, আবার জিনিয়ার কমতিও অনুভব করছে। ওয়াফিফ যে ছবির পর আর কারো প্রতি ওই অনুভূতি অনুভব করেছে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। তবে এই অনুভূতি আরও বেশি গভীর। যেটা ছবিকে ভুলিয়ে রাখতে পারছে। ওয়াফিফের সামনে থাকত এতদিন জিনিয়া। ওয়াফিফ যখন চাইত তখন তাকে দেখতে পারতো। কিন্তু এখন চাইলেই দেখতে পারছে না। তাই সে বেশি করে মনে করছে জিনিয়াকে। মিস করছে খুব। নিজের কাজে সে নিশ্চিত । কিন্তু নিজের ওই পুরনো চিন্তা নিয়েই আছে যে জিনিয়া তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভেবেছে।

নিজের চিন্তায় এতটাই ডুবে গিয়েছিল যে নিজের শার্ট এর বোতাম ঠিকমতো লাগায় নি সেটা বুঝতে পারে নি। হঠাৎ রুমে এসে মিলা দেখল তার ভাই কোন এক চিন্তায় ডুবে আছে। তাই সে মজা করে বলল,

–আরে বড় ভাবি তুমি এখানে?

ওয়াফিফ নিজের চিন্তা থেকে বের হয়ে পিছনে ঘুরে বলল,

–কোথায় জিনিয়া?

মিলা এবার নিশ্চিত হল যে তার ভাই জিনিয়ার কথাই ভাবছে। তাই সে হেসে জবা দিল,

–বউয়ের চিন্তায় এতই মগ্ন হয়ে আছো যে নিজের শার্ট এর বোতাম উল্টোপাল্টা করে লাগাচ্ছ ভাইয়া?

ওয়াফিফ বিষয়টা বুঝতে পেরে বলল,

-তকে আর ভাবতে হবে না যা এখান থেকে, কে বলল আমি জিনিয়ার কথা ভাবছিলাম? আমি তো পেশেন্টের কথা ভাবছিলাম।

বলেই মিলাকী ঘর থেকে বের করে সে দরজা লাগিয়ে দিল।


জিনিয়া ওই বাড়িটাকে খুব মিস করছিল। তাই জারিফের সাথে ঘুরতে গিয়েছিল। আর এমন সময় গিয়েছিল যখন ওয়াফিফ ঘরে থাকে না। ওয়াফিফের রুমে গিয়ে দেখল রুমের অবস্থা ঠিক দেখালেও আসলে ঠিক নেই। কোনোমতে রুমটাকে রুম বলা যেতে পারে। সে গুছিয়ে দিয়ে আফিয়া রহমান, সুফিয়া ভাবি, মিলা মিনা আরিফ এর সাথে দেখা করল। আসফির সাথে খেলা করল। আফরানের সাথে শুধু ফোনেই কথা হল। আর ওয়াফিফের সাথে দেখা হল না।

সেদিন ওয়াফিফ বাড়ি ফিরে নিজে রুম আগের মতো গোছানো পেয়ে পুরো বাড়িতে একবার চোখ বুলাল। তারপর মাকে জিজ্ঞেস করল,

–আমার ঘর গুছিয়েছে কে মা?

–জিনিয়া এসেছিল, ওই করেছে মনে হয়।

–ওহ।

এর থেকে বেশি বলল না সে। আজ প্রথমবার তার মনে অভিমানের মেঘ জমল। সে অনুভব করতে পারছে, সে জিনিয়ার উপর রেগে নেই, তবে অভিমান করে বসে আছে এখনো।

চলবে।