বৃষ্টিতে ভেজা সেই রাত পর্ব-১২

0
1200

বৃষ্টিতে ভেজা সেই রাত
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ১২

আদ্রিতাঃ ছাড়ুন সারা রাত আমাকে একটুও ঘুমাতে দেন নি এখন নিজেই আরাম করে ঘুমাচ্ছেন…

সাঈদঃ কেনো এত তাড়া কিসের আরেকটু আদর করি না…

আদ্রিতাঃ আচ্ছা আপনার এত আদর কোথা থেকে ভেসে আসতেছে…

সাঈদঃ কেনো নিজের বউকে না আদর করলেন কাকে করবো….

আদ্রিতাঃ আমি জানি না..

সাঈদঃ ওকে তাহলে আমার কিন্তু আরেকটা গালফ্রেন্ড আছে ও কাছে গেলে আমায় খুব আদর করে

আদ্রিতাঃ কী কবে থেকে চলছে এই সব

সাঈদঃ পরশু থেকে

আদ্রিতাঃ ভালো তো তাহলে ওর কাছেই যান আমার কাছে আসবেন না

সাঈদঃ আচ্ছা আমি তখন উঠে এমনি বাইরে যাচ্ছিলাম ( আমি জানি ও আটকাতে আসবেই)


আদ্রিতাঃ ওনি তো সত্যি সত্যি চলে যাচ্ছে তার মানে কী সত্যি কোনো মেয়ে সাথে সম্পর্ক আছে না এটা হতে পারে না..

যে করেই হোক ওনাকে আটকাতে হবে। আমি কাউকে এনার একটুও ভাগ দিতে পারবো না..

আদ্রিতাঃ এই যে শুনছেন..

সাঈদঃ শুনেও না শুনার ভান করে..

আদ্রিতাঃ ধুর কেনো যে এই কথা বলতে গেলাম। না এবারে যেতেই হচ্ছে দেখছি তার পর তাড়াতাড়ি নিচে গিয়ে

এই যে দাড়ান বলছি…

সাঈদঃ কী হয়েছে

আদ্রিতাঃকই যাচ্ছেন হুম আমাকে রেখে..

সাঈদঃ কেনো এইতো কিছু খন আগে বললাম আমার গালফ্রেন্ডের বাসায়…


আদ্রিতাঃ কেনো আপনার ওই গালফ্রেন্ড কী আমার থেকে বেশি যত্ন নেয় আপনি এখন কোথাও যেতে পারবেন না ঘরে চলুন…

সাঈদঃ যেতে পারি এক সত্য..

আদ্রিতাঃ কী..

সাঈদঃ আগে দুটো ইয়ে দিতে হবে

আদ্রিতাঃ ইয়ে টা আবার কী..

সাঈদঃ সাঈদ এটা উম্মাহহ…

আদ্রিতাঃ এটা কী হলো

সাঈদঃ এটাকে তো ইয়ে বলে

আদ্রিতাঃ আপনি কী চুমুটার নতুন নাম ইয়ে রাখছেন আপনি পারেন ও বটে…


সাঈদঃ হুম এবার দাও না হলে গালফ্রেন্ডের বাসায় চলে যাবে ( বউকে কন্ট্রোল এ রাখার নতুন উপায়)

আদ্রিতাঃ চোখ বন্ধ করুন তার আগে..

সাঈদঃ কেনো..

আদ্রিতাঃ এমনি লজ্জা লাগে তো আমি তো আপনার মতো রোমান্টিক না..

সাঈদঃ ওত পাম দিতে হবে এই যে চোখ বন্ধ করলাম..

আদ্রিতাঃ উম্মাহ হ ( এনার সাথে কথায় পারা যাবে না তাই দিতেই হলো)

সাঈদঃ হুম আজ থেকে সকালে তিনটা.. দুপুরে দুটা আর রাতে তো ওটা স্পেশাল..

আদ্রিতাঃ স্পেশাল মানে..

সাঈদঃ আরে ছোট বাচ্চা কিছু বুঝে না আজ রাত হলেই বুঝতে পারবে

আদ্রিতাঃ এনার মাথায় সব সময় শয়তানি বুদ্ধি গুলো ঘুর পাক খায়..

সাঈদঃ তুমি যদি চলো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়..

আদ্রিতাঃ আচ্ছা এবার তো রুমে যাবেন নাকি …

সাঈদঃ হুম…

তার পর রুমে এসে হালকা নাস্তা করে অফিসের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম..

আদ্রিতাঃ ধুর একটুও ভালো লাগতেছে না ওনি যখনি বাসা থেকে বেড়িয়ে যান তখন কেমন যানি একলা একলা লাগে কিছু ভালো লাগে না …

কিছু খেতেও মন চায় না আগে এক মুঠো খাবারের জন্য কত কষ্ট করতে হতো তবুও তিন বেলা ঠিক মতো খেতে পেতাম না কিন্তু এনার সঙ্গে আসার পর খাবার খাওয়ার ইচ্ছেই করে না ওনি পাশে থাকলেই মনে হয় পৃথিবীতে সব থেকে সুখে আমিই আছি..


সাঈদঃ অফিসে এসে হালকা কিছু কাজ ছিলো সে গুলো শেষ করে বাসার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম কেনো না মেয়েটা একা বাসায় আছে…


আদ্রিতাঃ বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগতেছিলো না তাই ফ্রিজ থেকে মুরগীর মাংস বেড় করে তাড়াতাড়ি রান্না করে ফেললাম ওনার আবার মুরগীর মাংস খুব পছন্দ ..


সাঈদঃ বাসায় এসে..

আদ্রিতা চলো হোটেলে দুপুর হয়ে গেছে..
আর আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে..

আদ্রিতাঃ কেনো বাসায় খাবার নেই বুঝি…
.।

সাঈদঃ কই আমি তো দেখতে পাচ্ছি না

আদ্রিতাঃ আপনি দেখতে পাবেন না হাত মুখ ধুয়ে.. টেবিলে খেতে বসুন আমি খাবার নিয়ে আসছি…


সাঈদঃ কী আর করার হাত মুখ ধুয়ে টেবিলে বসে পড়লাম তখনি


আদ্রিতাঃ ওনাকে ভাত আর মুরগির মাংস টা বেরে দিলাম..

সাঈদঃ একটু মুখে দিতেই ওয়াও খুব সুন্দর হয়েছে কোথা থেকে এনেছো..

আদ্রিতাঃ আনতে যাবো কেনো আমি বুঝি রান্না করতে শিখিনি

সাঈদঃ ওয়াও আমার তো বিশ্বাস এ হচ্ছে না তুমি এত সুন্দর রান্না জানো…

আদ্রিতাঃ জানতে তো হবেই..

সাঈদঃ হুম তুমি খেয়েছো..

আদ্রিতাঃ না..

সাঈদঃ কেনো খাও নি হুম..

আদ্রিতাঃ আপনাকে রেখে কী আমি কখনো খাইছি..

সাঈদঃ সত্যি তো আজ পযন্ত আমি না খাওয়া পযন্ত মেয়েটা কখনো একা খায় নি..

দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসে পরো…

আদ্রিতাঃ কোথায় বসবো হুম..

সাঈদঃ বসার কী জায়গার অভাব রয়েছে নাকি তার পর আদ্রিতাকে কোলে বসিয়ে খাবার খাইয়ে দিলাম..

মেয়েটার স্বভাব টা এখনো ছোট বাচ্চাদের মতোই রয়ে গেলো একটু কিছু হলে ছোট বাচ্চার মতো ভ্যা করে কেদে দেয় আর মেয়েটা কাদলে ওর থেকে বেশি আমারি কষ্ট লাগে..

আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলার ছিলো..

সাঈদঃ কী কথা হুম আজ থেকে বলতেছো.

আদ্রিতাঃ থাক আর বলবো না ( বলতে গেলেই ভয় লাগে)

সাঈদঃ থাক এ নিয়ে কত বার বলবে বলবে বলে বলছো তার পর আর বলোই নি..


আদ্রিতাঃ সময় হোক তার পর এ সব বলবো..

সাঈদঃ সময়টা কবে হবে শুনি…

আদ্রিতাঃ পরের জন্মে

সাঈদঃ আচ্ছা…



অপর দিকে..

তামান্নাঃ আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে শান্তিতে সাংসার করা হচ্ছে তাই না..

আমি বেচে থাকতে তা কখনো হতেই দিবো না তোদের সুখের সংসারে যদি ভেঙ্গে না দিয়েছি তাহলে আমি তামান্না না


তামান্নাঃ যে করেই হোক ওই মেয়েটার একটা খারাপ ভিডিও করে সাঈদ কে দেখাতে হবে বাশ খেলা শুরু যেমন কথা তেমনি কাজ..


একদিন সাঈদের বাসায় এসিটা নষ্ট হয়ে যায় সে দিন এসি মেকানিকের দ্বারা গোপনে একটা ক্যামেরা ফিট করিয়ে নিয়..



আদ্রিতাঃ ওনি সকাল বেলা যে বেড়িয়েছেন এখনো আসেনি ..

তখনি কলিং বেলটা বেজে উঠলো.

আদ্রিতাঃ দরজাটা খুলে দিতেই একজন অচেনা মানুষ..


লোকটাঃ মিঃ সাঈদ স্যার ভিতরে আছেন..

আদ্রিতাঃ না তো কেনো..

লোকটাঃ একটু দরকার ছিলো..
আচ্ছা আপনি ওনার কী হোন..


আদ্রিতাঃ আমি ওনার বউ যা বলার আমাকেই বলতে পারেন আমি ওনাকে বলে দিবে ..

লোকটাঃ তেমন কোনো একটা কাজ নেই এই কাগজে একটা সাইন লাগতো .


আদ্রিতাঃ কীসের কাগজ এটা…

লোকটাঃ তেমন কিছু না যাস্ট একটা সাইন করে দিন..


আদ্রিতাঃ কিছু না ভেবেই সাইনটা করে দিলাম কিন্তু এই সাইনটাই যে আমার জীবনে সব থেকে বড় বিপদটা টা ডেকে আনবে তা জানতাম না…



সাঈদঃ অফিসে বসে কাজ করছিলাম তখনি একজন মানুষ আসলো..

মানুষটাঃ স্যার আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো..


সাঈদঃ জ্বী বলুন..

লোকটাঃ স্যার আদ্রিতা ম্যাডাম আপনার সমস্ত প্রোপার্টি নিজের নামে করে নিতে চাচ্ছেন তাই আমাকে এই সমস্ত প্রোপার্টির কাজ বানিয়ে দিতে বলেছেন এই হলো কাগজটা এই ম্যাডামের সাইন.


সাঈদঃ প্রথমে তো কথাটা শুনে মেজাজট খারাপ হয়ে গেছিলো যখন কাগজটা দেখলাম তখন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না..

যে মেয়েটাকে এতটা ভালো বাসতাম তার জন্য সব কিছু করেছি সে এমন কিছু করবে কল্পনাও করে নি..

অন্য দিকে..


তামান্নাঃ ওই সময়ে যে মেয়েটা কাগজটাতে সাইন করেছিলো সেটা ভিডিও করে নিয়েছি কাজে লাগবে..

আমার সাথে আজ পযন্ত কেউ পেরে উঠতে পারে নি আর পারবেও না…

হা হা হা its only me tamanna..

আদ্রিতাঃ ওনাকে এত ফোন করতেছি ধরছে না কেনো ওনি তো কখনো এমন করে না.

সাঈদঃ আদ্রিতাও এতটা নিচে নামতে পারলো আমাকে বললে আমি খুশি খুশি ওর নামে সব কিছু লেখে দিতাম আর সে কী না ছিঃ ভাবতেও ঘৃণা লাগতেছে..


চলবে..