ভালোবাসব যে তোকে? পর্ব ১৯(শেষ)

0
5804

#ভালোবাসব_যে_তোকে?
পর্ব ১৯(শেষ)
লেখিকাঃসারা মেহেক

??

আয়ান টেনশন করতে করতে মনে হয় শেষই হয়ে যাবে।আরো তার আম্মু আর শাশুড়ি মায়ের কান্না তার টেনশনের পরিমান দ্বিগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে।এদিকে ডক্টর রাও কিছু বলছে না।

বেশ কিছুক্ষন পর বাচ্চার কান্নার আওয়াজ কানে ভেসে আসলো আয়ানের।এ কান্নাটা শুনে মনে একধরনের প্রশান্তি অনুভব করলো আয়ান।
সবার মুখেই হাসি ফুটে উঠলো।কিন্তু এই হাসি যে বেশিক্ষণের না তা তারা জানতো না।কিছুক্ষন পর একজন নার্স বের হয়ে এলো ওটি থেকে।নার্সকে দেখে আয়ান দ্রুত পায়ে নার্সের কাছে গিয়ে দাড়াঁলো। নার্স আয়ানকে দেখে বললো,

“কংগ্রাচুলেশনস, আপনার ছেলে হয়েছে।”

আয়ান আর বাকি সবাই এ কথা শুনে অনেক খুশি হলো।তারা সবাই ভাবলো দুশ্চিন্তার প্রহর হয়তো শেষ হয়েছে।কিন্তু আসলে তা হয়নি।

আয়ান নার্সকে জিজ্ঞাসা করলো,

” নার্স বেবি কেমন আছে?আর মৌ?”

নার্স এ কথার জবাবে গম্ভীর মুখে বললো,

“কিছুক্ষন পর ডক্টর আসবেন।উনার কাছ থেকে শুনে নিবেন সব। এ বলে নার্সটা চলে গেলো সেখান থেকে।কিন্তু আয়ান আর বাকি সবাইকে আরেক দুশ্চিন্তায় ফেলে রেখে গেলো।
বেশ কিছুক্ষন পর ডক্টর বের হয়ে এলেন।সবার উদ্দেশ্যে তিনি বললেন,

“পেশেন্ট এর হাসবেন্ড কে? আমার সাথে আসুন।”

ডক্টর এর এ কথা শুনে আয়ান এগিয়ে গেলো ডক্টর এর কাছে।ডক্টর আয়ানকে দেখে বললেন,

“আমার কেবিন এ আসুন আমার সাথে।”

এরপর আয়ান ডক্টর এর পিছু তার কেবিনে গেলো। যাওয়ার পথে আয়ানের টেনশনে গলা শুকায় যাওয়ার মতো অবস্থা।
আয়ান আর ডক্টর বসে আছে।কিছুক্ষন পর ডক্টর বলে উঠলেন,

“দেখুন,আমি জানি,আপনি আপনার ছেলে হওয়ার কথা শুনে অনেক খুশি হয়েছেন।কিন্তু কিছু কথা এ খুশিটাকে হয়তো বেশিক্ষণ রাখবে না।”

ডক্টর এর এ কথা শুনে আয়ানের চিন্তা আরো কয়েকগুন বেড়ে গেলো।সে চিন্তিত মুখে জিজ্ঞাসা করলো,

“কি ডক্টর?”

“আপনি তো জানেনি আপনার ওয়াইফ এর সাড়ে সাত মাস চলছিলো।এর মধ্যে এক্সিডেন্টটা হওয়ায় বাচ্চার জীবন বাচাঁতে ডেলিভারি করতে হয়।যেহুতু বেবিটা সাড়ে ৭ মাস চলছিলো তার মানে বেবিটার প্রিমেচুয়ার ডেলিভারি হয়েছেই বলা যায়। প্রিমেচুয়ার হওয়ায় ওর লাইফের এখনো কোনো সিওরিটি দেওয়া যাচ্ছে না। এই জন্য ওকে ইনকিউবিটরে রাখা হয়েছে।এখন আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যাতে বেবিটার লাইফ সেইভ হয়।”

এ কথা শুনে আয়ানের মনে হচ্ছিলো পুরো পৃথিবী হয়তো থমকে গিয়েছে।তাদের প্রথম সন্তান এভাবে মৃত্যুর মুখে দাঁড়ীয়ে আছে!!!
আয়ানের কেনো যেনো মনে হচ্ছে হয়তো মৌ কে নিয়ে খবরটাও ভালো হবে না।তারপরও সে সাহস জুগিয়ে ডক্টর কে মৌ এর কথা জিজ্ঞাসা করলো।

“ডক্টর মৌ ঠিক আছে তো?”

“আমি এতোক্ষন ধরে ভাবছিলাম যে আপনাকে আপনার ওয়াইফ এর কথাটা কিভাবে বলবো।”

আয়ান ভয় নিয়ে বললো,

“সিরিয়াস কিছু ডক্টর?”

ডক্টর কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,

“আপনার ওয়াইফ আর দ্বিতীয়বার মা হতে পারবে না।”

এই কথা শুনার জন্য আয়ান মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।তার মাথায় একটা করা ঘুরছে মৌ এ নিউজ শুনলে কেমন রিয়েক্ট করবে??

ডক্টর আবারও বললো,

“বাচ্চা পেটে থাকার সময় এমন এক্সিডেন্ট করায় ইন্টারনাল কিছু ইনজুরি হয়েছে। এজন্য তিনি দ্বিতীয়বার আর মা হতে পারবেন না।আর এখন পর্যন্ত উনার ব্লিডিং বন্ধ হয়নি।আর আপনি হয়তো জানেন,অনেকের ব্লিডিং বন্ধ না হওয়ার কারনে তাকে এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হয়।”

এটুকু বলে ডক্টর মাথা নিচু করে সেখান থেকে উঠে চলে গেলেন।
আর আয়ান সেখানেই ঠায় দাঁড়ীয়ে রইলো।তার শরীর যেনো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। মৌ এর কিছু হয়ে গেলে সে কিভাবে বাচঁবে!!আর তাদের সন্তান!!!
মনে হচ্ছে সব খারাপ কিছু তার সাথেই ঘটছে…
আয়ানের চোখ দিয়ে এখন পানি পরে গেলো।তার ইচ্ছা করছে গলা ফাটিয়ে কান্না করতে।কিন্তু বলে না,ছেলেদের এমন কাঁদতে নেই।

“আল্লাহ,এমন শাস্তি কেনো দিচ্ছো আমাকে?? আমার কলিজাটা মনে হচ্ছে এখনই বের হয়ে যাবে। ওদের দুজনের কিছু হয়ে গেলে আমি কি নিয়ে বাঁচবো!!
আল্লাহ তুমি ওদেরকে সুস্থ করে দাও।”
এ বলে আয়ান হাউমাউ করে কেদেঁ উঠলো।হঠাৎ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেলো সে। পিছে ঘুরে দেখে দাদি দাঁড়ীয়ে আছে। আয়ান দেখলো উনার চোখও ভিজা। তার মানে দাদিও কান্না করেছে!!এতোক্ষন শক্ত থাকা মানুষটাও আর পারলো না শক্ত হয়ে থাকতে।
আয়ান তার দাদিকে জড়িয়ে ধরে আবারও কান্না করতে থাকে,

“দাদি,আমি কি করে বাঁচবো বলো???”

“চিন্তা করিস না।আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন।ডক্টর আমাদের সব বলেছে।
তুই এক কাজ কর,এখন এশার নামাজ পরে আল্লাহর কাছে তোদের বাচ্চা আর মৌ এর সুস্থতা কামনা কর।”

আয়ান এ কথা শুনে তাড়াতাড়ি কেবিন থেকে বের হয়ে নামাজের উদ্দেশ্যে গেলো।গিয়ে দেখলো,মাহতাব,মৌ এর আব্বু আর তার আব্বু ও নামাজে দাঁড়ীয়েছে।

নামাজ শেষে যে যার মতো দোয়া করছে।

রুমের বাইরে থেকে আয়ান তাদের সন্তানকে দেখছে।কিছুক্ষন আগে সবাই দেখছিলো। পরে আয়ান মাহতাবকে বলে যে সবাইকে নিয়ে চলে যেতে।সে কিছুক্ষন তার ছেলেকে মনভরে দেখবে।
আয়ানের এখন ইচ্ছা করছে নিষ্পাপ এ শিশুটিকে আলতো করে একটু ছুয়ে দিতে,কিন্তু আফসোস সে পারছে না।

কিছুক্ষন পর অহনা আয়ানের কাছে হাসিমুখে এসে বললো,

“ভাইয়া,আল্লাহর রহমতে মৌ এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।”

অহনার এ কথা শুনে আয়ান তাড়াতাড়ি করে ছুটে যায় মৌ কে দেখতে।মৌ কে যে রুমে শিফট করা হয়েছে সে রুমে গিয়ে দেখে যে মৌ শুয়ে আছে।রুমের বাইরে সবাই অপেক্ষা করছে কখন তারা মৌ এর সাথে দেখা করবে।মৌ এর জ্ঞান ফিরার পর সে ডক্টরকে বলে যে সে আয়ানের সাথে দেখা করবে।

আয়ান গিয়ে মৌ এর পাশে বসে।মৌ আলতো করে চোখ খুলে দেখে যে আয়ান বসে আছে তার পাশে।সে আয়ানকে জিজ্ঞাসা করে,

“আমাদের বেবি কেমন আছে?”

“আমাদের ছোটো বেবিটা সুস্থ আছে। তুই আর কোনো কথা বলিস না তো। একদম সুস্থ হয়ে নে আগে।”

“বেবি সুস্থ থাকলে ডক্টর রা আমার কাছে দিচ্ছে না কেনো ওকে??”

আয়ান আমতা আমতা করে বললো,

“আরে তুই তো অসুস্থ তাই তোর কাছে বেবিকে দেয়নি।”

“মিথ্যা কথা।আমাকে দয়া করে সত্যি কথাটা বলো প্লিজ।আমি কোনো মিথ্যা শুনতে চাই না।”

আয়ান মৌ এর কথা শুনে মাথা নিচু করে কিছুক্ষন চুপ করে রইলো। তারপর বললো,

“আমি যা বলবো তা শুনার পর তুই শান্ত থাকবি ওকে?’

“ওকে।”

“আমাদের বেবির অবস্থা খুব একটা ভালো না। কারন নির্দিষ্ট সময়ের আড়াই মাস আগে ও জন্ম নিয়েছে।তাই বেশ কিছু জটিলতা আছে।এখন ওকে ইনকিউবিটরে রাখা হয়েছে। বাকি আল্লাহ ভরসা।”

মৌ এসব শুনে চুপ হয়ে যায়।তার গলা দিয়ে যেনো কোনো আওয়াজই বের হতে চাচ্ছে না।তার সন্তানের এমন অবস্থা!!!

হঠাৎ করে মৌ আয়ানকে বলে,

“আমি আমার বেবিকে দেখতে চাই প্লিজ।”

“এখন না। তুই এখনো পুরোপুরি সুস্থ না।”

“আমি সুস্থ আছি।আমি আমার বাচ্চাকে দেখতে চাই মানে দেখতে চাই।”

“আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ডক্টর কে বলছি।”

এরপর আয়ান গিয়ে ডক্টরকে এ কথা বলে।ডক্টর তো প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না। আয়ানের জোরাজুরিতে রাজি হয়ে যায় অবশেষে।

মৌ কে একটা হুইলচেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া হলো বেবির কাছে।সে রুমে বাইরে থেকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে বাচ্চাটার দিকে। মৌ এর খুব ইচ্ছা করছে তাদের বেবিটাকে কোলে নিতে কিন্তু পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক না। তাই চাইলেও পারছে না এমন করতে।
মৌ এর চোখ দিয়ে নিরবে জল পরছে। আয়ান এটা দেখেছে ঠিকই কিন্তু কিছু বলেনি। কারন সে জানে, এখন যদি ওকে শান্তনা দিতে যাওয়া হয়,বা কিছু বলা হয় তাহলে হাউমাউ করে কান্না করে উঠবে মৌ।তাই আয়ান চুপ করে আছে।

প্রায় ১মাস হয়ে গিয়েছে।এখন সব কিছুই মোটামুটি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে।আয়ান আর মৌ আজকে তাদের বেবিকে বাসায় নিয়ে যাবে।তাদের বেবির নাম রাখা হয়েছে মায়ান।এ নামটা অবশ্য অহনা রেখেছে আয়ান আর মৌ এর নামের সাথে মিলিয়ে।

প্রথম দিকে মায়ানের বেশ কিছু অসুস্থতা ধরা পরেছিলো।কিন্তু এখন বেশ সুস্থ সে।আয়ান আর মৌ বাইরে দাঁড়ীয়ে আছে।তারা অপেক্ষা করছে নার্স কখন এসে মায়ানকে কোলে দিয়ে যাবে।
কিছুক্ষন পর নার্স তোয়ালে তে জড়ানো অবস্থায় মায়ানকে নিয়ে এসে মৌ এর কোলে দিলো।মায়ানকে কোলে নেওয়ার পর মৌ এর আজনব এক ধরনের অনুভুতি হচ্ছে। এই প্রথম সে তার বাচ্চাকে কোলে নিয়েছে। এই প্রথম মায়ানের ছোটো ছোটো হাত পা ধরছে।মৌ তে খুশিতে কান্না করে দিলো।আয়ান দেখে বললো,

“কি রে কাঁদছিস কেনো??”

মৌ ভেংচি কেটে বললো,

“কাঁদবো না তো কি হুম??একটা মাস পর আমার বাচ্চাকে কোলে নিতে পেরেছি আমি।”

“আমার কোলে দে ওকে। কতোক্ষন ধরে তুই কোলে নিয়ে থাকবি ওকে??পাশে যে ওর আব্বু দাঁড়ীয়ে আছে তার খেয়াল কি আছে তোর??”

মৌ খানিকটা হেসে আয়ানের কোলে দেয় মায়ানকে।
আয়ান কোলে নেওয়ার পর আলতো হাতে হাত পা ছুঁয়ে দিচ্ছে তার বাচ্চাকে।

“মৌ দেখেছিস?ওর হাত পা গুলো কি রকম নরম!!আমার তো ভয় হচ্ছে যে আমার হাত থেকে না পরে যায় ও।”

“এমন ই মনে হয়। কিন্তু কিছুক্ষন কোলে রাখলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

আচ্ছা আজকে কি বাসায় যাবেনা নাকি??কিছুক্ষন পর সবাই ফোন দেওয়া শুরু করে দিবেনে।”

“হুম চল।”

বাসায় এসে মায়ানকে দেখে সবার মধ্য খুশির আমেজ বয়ে যায়।একে একে সবাই কোলে নিচ্ছে মায়ানকে। অহনার কোলে আসার পর তো সে আর কারোর কোলে মায়ানকে যেতে দিবে না। এতোক্ষন মায়ান কান্না করলেও অহনার কোলে আসার পর চুপ হয়ে যায়।ফাহাদ অনেকক্ষন ধরে মায়ানকে কোলে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু অহনা দিচ্ছেই না।
ফাহাদ গিয়ে অহনার কানে কানে বললো,

“আরে আরে নিজের বাচ্চাকে এভাবে কোলে করে রেখো বুঝছো??এখন আপাততো ওর ফুপার কোলে একটু দাও।”

ফাহাদের এ কথা শুনে অহনা একটা ভেংচি কেটে মায়ানকে ফাহাদের কোলে দিলো।মায়ানকে কোলে নিয়ে ফাহাদ অহনাকে বললো,

“শুনো,খুব শীঘ্রই কিন্তু আমি এমন একটা বেবি চাই।মায়ানের খেলার সাথিকে তো আনতে হবে না??”

ফাহাদের কথা শুনে অহনা এবার বেশ লজ্জা পেলো।

এভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেলো ৪টা বছর।মায়ান এখন ৪বছরের হয়ে গিয়েছে। আর অহনা এবং ফাহাদের ২টা বেবি হয়েছে।প্রথম বেবি হয়েছে মেয়ে। আর দ্বিতীয় বেবি হয়েছে ছেলে।দুজনের বয়সের পার্থক্য ১ বছরের।মেয়ের নাম ফারিয়া।আর ছেলের নাম অর্নব।এ দুজনের সাথে মায়ানের বেশ ভাব। একসাথে হলে তারা একে অপরকে ছাড়া থাকেই না।

আজকে অহনা, ফাহাদ,ফারিয়া,অর্নব আসব আয়ানদের বাসায়।মৌ তাদেরকে দাওয়াত দিয়েছে লান্চে।উদ্দেশ্য একসাথে আড্ডা দেওয়া।

সকালে মায়ানকে গোসল করিয়ে দিয়ে রেডি করাচ্ছে মৌ। আর আয়ান খাটে শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে।হঠাৎ মায়ান বলে উঠে,

“আম্মু আমাল কোনো তোতো বাইবোন নেই কেনো?”

মায়ানের এ কথা শুনে মৌ একদম চুপ হয়ে যায়। তার মনে পরে যায় ৪ বছর আগেকার সেই স্মৃতি।যখন সে জানতে পারে যে সে আর দ্বিতীবার মা হতে পারবে না।প্রথমে তো তার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না।অনেক হাইপার হয়ে গিয়েছিলো সে।কেউই তাকে শান্ত করাতে পারছিলো না।শেষে আয়ান আর কোনো উপায় না পেয়ে মায়ানকে মৌ এর কোলে দিয়ে বলে,

“আমাদের কি আর কোনো সন্তানের দরকার আছে বল??মায়ান আছে আমাদের লাইফে। আর কোনো বেবি হবে না তে কি হয়েছে। শুধু মায়ানকে নিয়ে আমরা বাকি জীবন কাটিয়ে দিবো।
আর একবার ভেবে দেখ,অনেকের তো কোনো সন্তানই হয়না। তারা কিভাবে বেঁচে আছে?আমাদের কাছে তো মায়ান আছে তাইনা??”

আয়ানের কথা শুনে মৌ তাদের বাচ্চা আর আয়ানকে জড়ীয়ে ধরে।আর ইচ্ছামতো কান্না করতে থাকে।

মায়ানের কথায় মৌ অতিত থেকে ফিরে আসে।

“বলো না আম্মু।”

“আমার বেবিটার হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো??তার কি খেলার মানুষ নেই??ফারিয়া আর অর্নব আছে না?”

“না আম্মু।ওলা তো আমাল থাতে থবথময় তাকে না।ওলা তলে দায় আল অনেকদিন পল আতে।”

মায়ানের কথা শুনে আয়ান ফোন রেখে বলে উঠে,

“বাবা, তুমি কি চাও যে আমরা তোমাকে কম ভালোবাসি??”

এ কথা শুনে মায়ান ভয় নিয়ে বলে উঠে,

“না আব্বু আমি এমন তাই না।আমি তাই তোমলা আমাকে বেতি বেতি ভালোবাতো।”

“এমন চাইলে কিন্তু আর ভাইবোন চাইবে না ঠিক আছে??”

“থিক আতে আব্বু।”

মৌ এদের দুজনের কথা শুনে নিরবে অশ্রু বিসর্জন দেয়।মায়ানকে রেডি করিয়ে সে নিচে যেতে বলে।

মায়ান নিচে চলে যাওয়ার পর আয়ান গিয়ে মৌ কে জড়ীয়ে ধরে।কিছুক্ষন মৌ চুপচাপ থাকার পর হুট করে কান্না শুরু করে দেয়।মৌ এর কান্না শুনে আয়ান বলে,

“আমি না বলেছি যে এই টপিকে আর কান্না না করতে।”

আয়ানের কথা শুনার পরও মৌ কান্না করতে থাকে।আয়ান আবারো বলে,

“আর কান্না করলে কিন্তু আমি এখনই চলে যাবো।”

এ কথা শুনে মৌ এর কান্না থামে।

বিকালে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে।আর বাচ্চারা সবাই খেলছে।
কথার মাঝে মৌ এর চোখ যায় মায়ানের দিকে।কি সুন্দর করে খেলা করছে তার ছেলে।এর জন্যই তো আজ সে অনেক সুখি।তার অপূর্ণতা এই সুখের সামনে কিছু না। আবার মা হতে পারবে না তো কি হয়েছে। তার মায়ান তে আছে তার সাথে। তার জীবনসঙ্গী আয়ান আছে তার সাথে। আর কি চাই তার। এদের দেখেই কাটিয়ে দিবে বাকি জীবন।

“সমাপ্ত”