ভালোবাসার চেয়েও বেশি পর্ব-০৪

0
2475

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৪

★পুরো ক্লাসরুম এখন পিনপতন নীরবতা। আবির আর তাসিরও বাইরে চলে গেছে। আদিত্য হেটে এসে একদম সামনের ব্রেঞ্চের কাছে এসে দাড়ালো।
গম্ভীর কণ্ঠে নূরের উদ্দেশ্যে বললো।
…এখানে এসে বসো।

নূর এতক্ষণও মাথা নিচু দাঁড়িয়ে ছিল। ভয়ে হাত পা কাপছে ওর।টেনশনে কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে। আদিত্যর ডাকে নূর কেপে ওঠে । কোনো রকমে কাঁপা কাঁপা পায়ে এগিয়ে গিয়ে সামনের সিটে বসে। এতটুক সময়ের ভিতরে একবারও মাথা উপরে তোলেনি।

আদিত্য একটা চেয়ার টেনে নিয়ে নূরের সামনে ওর মুখোমুখি হয়ে বসে।
নূরের এমন ভীতু অবস্থা দেখে আদিত্যের মনে মনে খুব হাসি পাচ্ছে। কিন্তু চেহারায় সেটা দেখাচ্ছে না।

নূর মাথা নিচু করে বসে হাত কচলাচ্ছে।আর মনে মনে দোয়া দরুদ পড়ছে।

আদিত্য একধ্যানে নূরের দিকে চেয়ে আছে।
ও ভাবছে, ওতো এখানে মেয়েটার ওপর রাগ দেখাতে এসেছিলো। তাহলে ওর রাগ আসছে কেন?
আদিত্যর এখন নূরের ভীতু মুখটা খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু নূর মাথা নিচু করে বসে থাকায় ও দেখতে পাচ্ছে না।

আদিত্য নূরকে বললো।
…মাথা উপরে তোলো। লুক এট মি।

নূর তবুও মাথা নিচু করেই বসে আছে।ও সাহস পাচ্ছে না আদিত্যর দিকে তাকানোর।

আদিত্য এবার একটু ধমকের সুরে বললো।
…আই সেড লুক এট মি।

আদিত্যর ধমকে নূর কেপে উঠে,এক ঝটকায় মাথা উপরে তুলে সামনে তাকালো।

আদিত্য যেন আবারও হারিয়ে গেলো নূরের মোহে। এক ঠান্ডা শীতল বাতাস বয়ে গেলো ওর পুরো শরীর জুড়ে।

আদিত্য এবার নূরকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।
পরনে একটা সাধারণ সুতির থ্রী পিছ।ওড়না দিয়ে মাথায় ঘোমটা দেওয়া। ইশশ,ভয়ে মেয়েটার চেহারা পুরো লাল হয়ে গেছে।ফর্সা মুখটাতে ঘেমে কপালের চুলগুলো লেপ্টে আছে সাথে। চোখের পাপড়ি গুলোও ভিজে আছে। ঠোঁট দুটো শুকিয়ে গেছে । ঠোঁটের দিকে তাকাতেই আদিত্যর মনে পরলো।এই ঠোঁট দিয়েই তো ওকে চুমু দিয়েছিলো।ভাবতেই কেমন একটা শিহরণ বয়ে গেলো আদিত্যর ভিতরে।অতি সাধারণের ভিতরেও যেন মেয়েটা অসাধারণ।
হঠাৎ খেয়াল করলো মেয়েটার গালে কেমন যেন লাল দাগ হয়ে আছে।মনে হচ্ছে কেউ চড় মেরেছে। ভাবতেই আদিত্যর বুকের ভেতর কেমন যেন চিন চিন ব্যাথা অনুভব করে।

আদিত্যর এমন চাহনির সামনে নূর আর টিকতে পারে না।আবারও চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।

আদিত্যর যেন দেখা শেষ ই হচ্ছে না।উপরে উপরে যতোই কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছে,ভিতরে ভিতরে ততই যেন ভ্যানিলা আইসক্রিমের মত গলে যাচ্ছে।
নিজের ওপর নিজেই চরম বিরক্ত হচ্ছে আদিত্য।

আদিত্য মনে মনে নিজের মনকে নিজেই ঝাড়ি দিয়ে বললো।
কাম অন আদিত্য, বি এ ম্যান।এভাবে একটা মেয়ের দিকে হ্যাংলার মতো তাকিয়ে থাকা তোর পার্সোনালিটিকে সোভা দেয় না।
তারপর মাথাটা ঝাকিয়ে একটু নড়েচড়ে বসে আদিত্য।
—————————————

তানি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে টেনশনে নক কামড়াচ্ছে। নূরের জন্য ওর অনেক টেনশন হচ্ছে। না জানি মেয়েটা কত ভয়ে আছে।
তানির থেকে সামান্য দূরে আবির আর তাসিরও দাঁড়িয়ে আছে।

আবির অনেকক্ষণ ধরে তানির দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবছে, মেয়েটা সত্যিই কিউট। ট্রাই করাই যায়। আবির এগিয়ে গেলো তানির কাছে।

আবির তানিকে বললো।
..হাই আ্যাম আবির।আদিত্যর কাজিন।তুমি?

তানি সৌজন্য মূলক হাসি দিয়ে বললো
…আমি তানজুমা তানি।নূরের বান্ধবী। আই মিন ভিতরে যে মেয়টা আছে।

…ওকে, তা তুমি সকালে খাওয়া দাওয়া করে আসোনি? এভাবে নক খাচ্ছো কেন?

তানি একটু ইতস্তত হয়ে বললো।
…আসলে ভাইয়া আমার বান্ধবীর জন্য একটু টেনশনে আছিতো তাই।

ভাইয়া ডাক শুনে আবিরের মুখটা চুপসে গেলো।সে তানিকে বললো।
… তুমি জানো না হ্যান্ডসাম ছেলেদের কখনো ভাইয়া বলতে নেই। এটা আইনত দন্ডনিয়ো অপরাধ।

তানি হালকা হেসে বললো।
..তাই নাকি?

আবিরো হালকা হেসে বললো।
..হুম অবশ্যই। আর তুমি টেনশন করোনা। আদিত্য রাগী হলেও মেয়েদের সাথে কখনও খারাপ ব্যাবহার বা অসম্মান করে না।

তানি চোখে মুখে খুশির ঝিলিক নিয়ে বললো।
…সত্যিই, আপনি সত্যি বলছেন?”জেইন কসম”?

আবির ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
….জেইন! হু ইজ জেইন?

তানি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দুই গালে হাত রেখে বললো।
…কিইহহ্….? আপনি জেইন কে চেনেন না? দ্যা গ্রেট জেইন ইমাম কে চেনেন না?

তানির এমন এক্সপ্রেসনে আবির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। মনে হচ্ছে এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য ওর এখনি ছাদ থেকে পরে মরে যাওয়া উচিত।

আবির জোরপূর্বক একটা হাসি দিয়ে তানির সামনে নিজের তর্জনী আঙ্গুলের উপর বৃদ্ধাঙ্গুল চেপে বললো।
….এক মিনিট, আমি এখোনি আসছি।

আবির তাসিরের কাছে এসে বললো।
…এই শোননা, তুই কি জেইন কে চিনিস?

তাসির ভ্রু কুঁচকে বললো।
…কে জেইন? আমি কোনো জেইন ফেইন কে চিনি না।

…আরে আমিওতো চিনিনা।তবে তানির কথায় মনে হচ্ছে অনেক বড়ো কোনো ব্যাক্তিত্ব।

…কে তানি?

আবির চোখের ইশারায় দেখালো।
…আরে ওইজে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে যে কিউট মেয়েটা।আদিত্যকে যে মেয়েটা চুমু দিয়েছে তার বান্ধবী। মেয়েটাকে আমার ভালো লাগছে দোস্ত। কথা বলতে গেছিলাম, বাট এই জেইন কে না চেনার জন্য সব ঘেটে গেলো।

তাসির বিরক্তির স্বরে বললো।
…তুই আবার শুরু করেছিস।দেখ এটা লন্ডন না বাংলাদেশ। এখানকার মেয়েরা অনেক ইমোশনাল হয়। তোর মতো এসব টাইম পাস করে না।প্রেম করতে গেলে বিয়ে না করা পর্যন্ত ছাড়বে না।

আবির বললো।
…আরে তুই ভুল বুজছিস আমাকে। আমিও এসব বুঝি।আমার সত্যিই মন থেকে ভালো লেগেছে মেয়েটাকে। এখন বল এই জেইন কে কিভাবে চিনবো।

…আরে গুগল কবে কাজে লাগবে গুগলে সার্চ দে।

…হ্যা তাইতো এই কথাটা আমার
মাথায় কেন এলোনা। এখনি দেখছি দাড়া।

অতঃপর আবির গুগলে সার্চ দিল।আর সার্চ দিয়ে যা দেখলো তাতে ওদের দুজনেরই মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার উপক্রোম।ওরা একজন আরেকজনের দিকে মুখ চাওয়া চায়ি করছে। তারপর হঠাৎ দুজন একসাথে উচ্চস্বরে হাসা শুরু করে দিলো।

হাসতে হাসতে তাসির বললো।
…সিরিয়াসলি ইয়ার! এই তোর মহান ব্যাক্তি। একজন টিভি এ্যাকটর।

…আরে আমার কি দোষ। যেভাবে ও বললো আমি ভাবলাম হয়তো কোনো বড়ো আকারের কেউ হবে।

….ভালোই হয়েছে তোদের দুজনের ভালোই মিলেছে। একদম রবনে বানাদি জোড়ি।দুজনেই এক নম্বরের ফিল্মি, ড্রামাবাজ।

আবির মনে মনে হাসে।মেয়েটা আসলেই খুব ফিল্মি।ওকে ফিল্মি কায়দায়ই ইমপ্রেস করতে হবে।

আবির আবার তানির কাছে যেয়ে বললো।
…এই যে ম্যাডাম। আপনার জেইন সম্পর্কে জানতে পেরেছি। সত্যিই উনি মহান লোক।

…হুম সেটাতো আমি জানি। নতুন কিছু থাকলে বলুন।

আবির তানির মুখের সামনে একটু ঝুকে বাঁকা হেসে বললো।
…”ওয়সে হামভি কিসি জেইন ছে কম হে কে””
((#Danggal dialogue))

তানি লজ্জা পেয়ে গেলো আবিরের কথায়।লাজুক হেসে আরচোখে আবিরকে দেখতে লাগলো। ছেলেটা আসোলেই হ্যান্ডসাম।

———————————–

আদিত্য গলা খাঁকারি দিয়ে নূরকে জিজ্ঞেস করলো।
…নাম কি?

নূর কাঁপা কাঁপা গলায় বললো।
…ননননূর।

…পুরো নাম?

….মেহরুমা নূর।

এই প্রথম নূরের কন্ঠ শুনলো আদিত্য। ওর কানে যেন বীণার সুরের মত মতো বাজছে এই কন্ঠ। কি মধুর কন্ঠ। আদিত্য আবার হারিয়ে যাচ্ছে। ও ভেবে পাচ্ছে না কি আছে এই মেয়েটার মাঝে যা ওর মতো শক্ত মনের মানুষকেও এলোমেলো করে দিচ্ছে।
আদিত্য আবার নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
…তো ভার্সিটিতে কি এসব করতে আসো? তুমি জানো আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে আমার হাত ধরারও সাহস পায়নি।আর তুমি কিনা…।আমি যদি এখন তোমার ফেমিলির কাছে ফোন করে বলি যে তুমি ভার্সিটি এসে এসব করে বেড়াচ্ছো তখন কেমন হবে।

নূর আৎকে উঠলো। ভয়ে হাত পা আসার হয়ে এলো। সত্যিই যদি এসব কথা ওর বাসায় বলে তাহলে তো ওর পড়ালেখাই বন্ধ হয়ে যাবে। ওর জীবন আরো দূর্বিষহ হয়ে যাবে।
নূর আর সহ্য করতে পারেনা।এবার ও কেঁদেই ফেলে। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরতে থাকে।
কাঁদতে কাঁদতেই নূর বলে।
…সসসসরি আআআমি ইইচ্ছে কককরে কককরিনি ওওওরা আআমাকে করতে ববলেছিলো।
কান্নার কারণে নূর ঠিক মতো কথাও বলতে পারছে না।

নূরের কান্না দেখে আদিত্য চমকে তাকায় ওর দিকে। নূরের কান্না কেন যেন ওর সহ্য হচ্ছে না। বুকের ভেতর কেমন যেন চিন চিন ব্যাথা অনুভব করছে। এতক্ষণ নূরের ভীতু চেহারা ভালো লাগলেও। কান্নারত এই চেহারা একদমই ভালো লাগছে না আদিত্যের। নূরের চোখের বৃষ্টি যেন আদিত্যের বুকে রক্ত ক্ষরণ করছে। ওতো শুধু নূরকে ভয় দেখাতে চেয়েছিলো। মেয়েটা যে কেদে ফেলবে বুঝতে পারেনি আদিত্য।

আদিত্য বললো।
…ওকে ওকে কান্না থামাও আগে তারপর কথা বলো।

নূর কেঁদেই চলেছে।

…কি হলো কান্না থামাও।

নূর তাও থামছে না।

আদিত্যর এবার রাগ উঠে যায় এক হাত ব্রেঞ্চের ওপর বারি দিয়ে ধমকের সুরে বললো।
…আই সেড স্টপ ক্রাইং।

আদিত্যের ধমকে নূরের অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে। সাথে সাথে নূর কান্না বন্ধ করে দেয়। দুইহাত মুখে চেপে ধরে কান্না আটকে রাখার জন্য।

আদিত্য চোখ বন্ধ করে লম্বা নিশ্বাস নিয়ে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে।

কিছুক্ষণ পর নূর নিজেকে কোনরকমে ঠিক করে বলে।
…আই এ্যাম সরি।আমি ইচ্ছে করে করিনি। ওই সিনিয়র ভাইয়া গুলো আমাকে করতে বলেছিলো।নাহলে ওরা আমাদের দুজনের সাথে অনেক খারাপ ব্যাবহার করতো।তাই আমি ওটা করতে বাধ্য হয়েছি।

আদিত্য বললো।
…সে যাই হোক অন্যায় যখন করেছো শাস্তি তো পেতেই হবে।

নূর করুন স্বরে আবার বলে।
….দেখুন আপনি আমাকে যে শাস্তি দিবেন আমি মাথা পেতে নিবো।আমাকে মারুন কাটুন যা খুশি করুন কিন্তু দয়া করে আমার পরিবারে এই কথা বলবেন না প্লিজ ।আমার পরালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। প্লিজ ভাইয়া।

শেষে ভাইয়া কথাটা শুনে আদিত্যর বিরক্ত লাগলো। তারপর কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেসে আদিত্য বললো।
…যে শাস্তি দিবো সেটাই মানবে?

নূর ভয় পেলেও মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বুঝালো।

আদিত্য বললো।
…হুম ঠিক আছে, কালকে ক্লাস শেষে আমার সাথে দেখা করবে। তখন বলবো তোমাকে কি শাস্তি দিবো।ওকে?

নূর মাথা ঝাকিয়ে বললো। ঠিক আছে।

আদিত্য বললো।
…হুম ঠিক আছে আজ তাহলে চলে যাচ্ছি। আমার কথা যেন মনে থাকে। নাহলে তুমি ভালো করেই জানো আমি কি করবো।

নূর মাথা ঝাকালো।মানে সে বুজেছে।

আদিত্য উঠে চলে যেতে নিয়ে কিছু একটা ভেবে আবার ফেরত এসে নূরের সামনে এসে দাড়ায়। গলা খাঁকারি দিয়ে কিছুটা ইতস্তত হয়ে নূরকে জিজ্ঞেস করে।
…তোমার মুখে কি হয়েছে? না মানে কেমন দাগ হয়ে আছে তাই জিজ্ঞেস করলাম।

নূর সাথে সাথে গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।কি বলবে এখন ও ভেবে পাচ্ছে না।আমতা আমতা করে বললো।
…এএএলার্জি এলার্জি হয়েছে।

আদিত্য ভ্রু কুঁচকে তাকালো।কথাটা তার কাছে কেমন যেন বিশ্বাস যোগ্য হলো না।তারপরও আর কিছু না চলে গেলো আদিত্য।

আদিত্য চলে যেতেই নূর একটা লম্বা দম ছাড়লো। আর কিছুক্ষণ হলে নূর মনে হয় দম আটকে মরেই যেতো। নূরের টেনশন হচ্ছে না জানি কাল কি শাস্তি দেয় ওকে।যদি খারাপ কিছু করতে চায় তখন? না না তেমন খারাপ লোক মনে হলো না ওনাকে। একটু রাগী বেশি তবে খারাপ কিছু মনে হলো না।আল্লাহ ভরসা
যা হয় দেখা যাবে। জীবনে তো আর কম কষ্ট সহ্য করিনি।উনিও যদি আমাকে মারতে চায় তো সহ্য করে নিবো।
———————————–

আদিত্য বের হয়ে সোজা চলে গেলো ওর ক্লাসে। তাসিরও চলে গেলো। আবির ওদের যাওয়া দেখে তানিকে বললো।
…ওকে কিউটি বাই।সি ইও লেটার।

তানিও মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো।
ওরা চলে যেতেই তানি দৌড়ে নূরের কাছে গেলো। তানি নূরের পাশে বসে নূর কে বললো।
…তুই ঠিক আছিস?
নূর তানির দিকে তাকিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো।
তানি কিছুটা ঘাবড়ে গেলো। নূর কে জিজ্ঞেস করলো।
…এই কাদছিস কেনো? কি হয়েছে?উনি কি তোর সাথে খারাপ কিছু করেছে?

নূর মাথা ঝাকায়।তারমানে না।

…তাহলে কাঁদছিস কেনো।কান্না থামা। বল আমাকে কি হয়েছে?

কিছুক্ষণ পর নূর একটু স্বাভাবিক হয়ে তানিকে সবটা খুলে বলে।

তানি সবটা শোনার পর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে। চিন্তা করিস না আমি আছিতো। যা হয় দেখা যাবে।
নূর মাথা ঝাকিয়ে সায় জানায়।

আজ ওদের প্রথম দিন তাই তেমন ক্লাস হয় না। একটু পরে ওরা বাসায় চলে যায়।

আদিত্যরাও ক্লাস শেষ করে বেড়িয়ে যায়। বাইরে এসে আবির আদিত্যকে বললো।
…তা ভাই কি শাস্তি দিলি মেয়টাকে?

আদিত্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
…নূর, নূর নাম ওর।আর কি শাস্তি দিবো সেটা কি এখন তোকে বলতে হবে আমার।

আবির তাসির এর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে বললো।
….ওওওও নূ…র।শুনেছিস তাসির নূ…র নাম তার। কিছুটা টেনে টেনে বললো।

তাসির হেসে দিলো।

আদিত্য বললো।
…ওয়াট সো ফানি গাইস??এনিওয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আমার অফিসে মিটিং আছে। বাই।

আবির বললো বাসায় আসবি কবে? অনেক দিন হলো তো আসিস না।সানা শুধু তোর কথা জিজ্ঞেস করে।

…আজ রাতে আসার চেষ্টা করবো। বাবাকেও বলেছি।

…ওকে বাই।

তারপর সবাই যে যার গন্তব্যে চলে গেলো।

চলবে….