ভালোবাসি তোমাকে পর্ব :৯

0
1209

গল্প ::::::ভালোবাসি তোমাকে ?❤️
পর্ব :::৯
Writer ::Sajna Akther

হঠাৎ পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরলো আমাকে
.
রোশান :::::কি হয়েছে আমার বউটার এমন বাংলা পাচের মতো মুখ করে আছে কেনো
.
আমি ::::কি বললেন আপনি ?
.
রোশান :::::না না কই কি বললাম আমিতো এটাই বলতে চেয়েছি যে অনেক রাত হয়েছে এভাবে বসে না থেকে শুয়ে পরো
.
আমি ::::::আমার কাজ আছে (মিথ্যা) আপনি শুয়ে পড়ুন আমাকে নিয়ে এতো
ভাবতে হবে না ?
.
রোশান :::::ওমা কি কাজ আছে আমিও তোমাকে সাহায্য করি চলো,, আর তুমি আমার একটা মাত্র বউ তোমাকে নিয়ে ভাববো নাতো পাশের বাসার নানীকে নিয়ে ভাববো নাকি,,, আসো দুজনে মিলে কাজ করি
.
আমি ::::দূরর এই কার সাথে কথা বলছি আমি মিথ্যা বলেও শান্তি নাই ফাজিল একটা (মনে মনে)
আপনাকে কষ্ট করে আমার কাজ করে দিতে হবে না,, আমি আমার নিজের কাজ নিজেই করতে পারবো (বলেই আমি আলমারি থেকে সব কাপড় নামিয়ে গুছিয়ে রাখতে শুরু করি কি আর করবো মিথ্যা যখন বলেছি একটা না একটা কাজ তো করতেই হবে )
.
রোশান :::::: কি হলো আমার বউয়ের গোছানো জিনিস আবার কেনো গুছিয়ে রাখছে সমস্যা নেই আমিও একি কাজ করতে পারি ?
.
আমি ::::আরে আপনাকে তো বলেছি আমি নিজেই করতে পারবো
.
রোশান :::::আহ বউ তোমার কষ্ট আমি মেনে নিতে পারছি না একটু সাহায্য করতে দাও তো
.
কিছুক্ষণ পর…
.
রোশান :::::যাক কাজ শেষ এবার তো (আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে)
.
আমি :::::কি ?
.
রোশান ::::::আদর ?
.
আমি ::::::বুঝে গেছি ওনি এখন কি চাইছেন আমিও না বুঝার ভান করে হাই তুলে বলে উঠি খুব ঘুম পেয়েছে আমাকে ডিসট্রাব করবেন না (বলেই আমি ওপাশ হয়ে শুয়ে পড়ি বেচারার মুখ দেখার মতো মনে হয় ?)
.
ধীরে ধীরে কেউ আমার উপর উঠছে কে সেটা দেখার জন্য চোখ খুলি তাকিয়ে দেখি বজ্জাতটা আমার উপর আদশুয়া হয়ে শুয়ে আছেন তার নিশ্বাস আমার উপর আছড়ে পড়ছে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসছেন
আমি বিরক্তির সাথে কিছু বলতে যাবো ওমনি ওনার ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট মিলিয়ে নেন কেনো জানি আমারো আজ ইচ্ছে করছে ওনাকে ভালোবাসতে তাই আমিও ওনার সাথে তাল মিলিয়ে ভালোবাসার সাগরে ডুব দেই ওনার গাড়ে গলায় চুমুতে রাঙগিয়ে দেই আজকে কারো মনে কোনো ঘৃণা নেই আছে শুধু ভালোবাসা ?❤️
.
.
কয়েকমাস পর

সকালে ফ্রেশ হয়ে রান্নার কাজ সেরে নাস্তা করে আমি আর রোশান বেরিয়ে পড়ি আমি কলেজে আর রোশান অফিসে,,, বাবা একটু অসুস্থ তাই ওনার সাথেই যেতে হচ্ছে
গাড়ি থেকে নামার সময় ওনি আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে কিস করেন, আমি মুচকি একটা হাসি দিয়ে চলে আসি যতক্ষণ না কলেজের ভেতর ডুকছি ওনার গাড়ি ততক্ষণ ছিলো মনে হচ্ছে আমি ক্লাস টু এর বাচ্চা একটা মেয়ে
আজ তো দেখি আমার ফ্রেন্ড একটাও আসেনি তারমানে সারাটা ক্লাস আমাকে একাই কাটাতে হবে,, আমার শরীরটা কেমন লাগছে গা গুলিয়ে বমি আসার মতো আর একমূহুর্ত এখানে থাকতে পারবো গুরুতর কিছু হবার আগেই এখান থেকে যেতে হবে তাই একজন মিস কে শরীর খারাপ বলে চলে আসি কলেজের গেটে কিন্তু এখানে যে আমার জন্য মহা বিপদ দাঁড়িয়ে আছে আমি ভাবতেও পারিনি কয়েকটা লোক আমাকে ধরে ইয়া বড় একটা গাড়িতে তুলে নেয় এরকম অবস্থায় আমি আর চোখ খুলে থাকতে পারিনি সেখানেই জ্ঞান হারাই,, বিপদ যখন আসে তখন সেটা না জানিয়েই হঠাৎ আসে
.
এদিকে রোশানের মন অস্থির হয়ে আছে কোনো কাজে মন লাগাতে পারছে না কখন কলেজ ছুটির সময় আসবে সেই অপেক্ষায় আছে
.
একেক করে সবাই চলে যাচ্ছে নিশাত এর কোনো খবর নেই রোশানের সারা শরীর কেমন গেমে যাচ্ছে নিশাতের কোনো দেখা না পেয়ে রোশান কলেজের ভিতর ঢুকে পড়ে ওখানে একজন মহিলাকে দেখে রোশান এগিয়ে যায়
.
রোশান :::::: নাফিসা জামান নিশাত ও কোন ক্লাসে বলতে পারেন
.
মিস :::::ও হে ও তো অনেক আগেই চলে গেছে মেয়েটার শরীর খারাপ লাগছিল তাই আমাকে বলে চলে গেছে
.
রোশান ::::ধন্যবাদ (বলেই রোশান একমুহূর্ত ওখানে না দাঁড়িয়ে চলে আসে গাড়ির কাছে যখনি গাড়ি খুলতে যাবে বয়স্ক একটা লোক এসে বলে)
.
লোক :::::স্যার আপনার আপত্তি না থাকলে একটা কথা বলি
.
রোশান :::::জী বলুন
.
লোক :::::আমি সকালে খেয়াল করে দেখেছি আপনি একটা মেয়েকে কলেজে দিয়ে গিয়েছিলেন তার ঘন্টা খানিক পর মেয়েটি এখানে এসে দাঁড়িয়েছিল তারপর কয়েকটা লোক এসে মেয়েটিকে গাড়িতে করে তোলে নিয়ে যায় আমি আড়াল থেকে দেখেছি স্যার আপনার যদি কোনো উপকার হয় তাই বললাম
.
রোশান কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না ওর মনের ভিতর যে অস্থিরতা ছিলো তা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে দ্রুত ড্রাইভ করে বাসায় আসে কিন্তু ফলাফল শূন্য রোশান নিশাততত চিৎকার করে মাটিতে বসে পড়ে
.
.
আমি :::::ভাইয়া আপনি আমাকে এখানে তোলে এনেছেন কেনো, দেখুন আমার স্বামী চিন্তা করবেন আমার জন্য আমার এক্ষুনি যেতে হবে বলেই আমি বিছানা থেকে উঠে পড়ি
. কি হলো ভাইয়া আমার হাত ধরেছেন কেনো ছাড়ুন যেতে হবে আমার
.
রায়হান :::::আমি তোমাকে যেতে দিবো না এখান থেকে,, কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি নিশাত পাড়ছিলাম না তোমায় ভুলে থাকতে দেখো আমার দিকে একবার তাকিয়ে দেখো বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়,, আমাকে ছেড়ে যেও না প্লিজ পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে
.
আমি :::::হোয়াট ? আপনার মাথা ঠিক আছে তো আপনার কোনো ধারণা আছে আপনি কি বলছেন আমি একজনের স্ত্রী ভাইয়া প্লিজ আমাকে যেতে দিন আপনার এসব কথা আমি আর শুনতে চাই না
.
রায়হান :::::তুমি চাইলেই এখান থেকে যেতে পারবে না নিশাত আমাদের দুজনকে কেউ কোথাও খুঁজে পাবে না তুমি আমাকে বিয়ে করবে আজ,, আর ওই রোশান আহমেদ কে সারাজীবন এর জন্য ভুলে যেতে হবে আজ থেকে তোমার জীবনে শুধু আমি থাকবো আর কেউ না
.
ঠাসসসস আপনার সাহস হয় কি করে আমাকে এমন কথা বলার এতদিন আপনাকে আমি সম্মান করেছি ভাইয়া বলে আর আপনি আজ আমার থেকে আমার স্বামীকে কেড়ে নেওয়ার কথা বলছেন আপনি জানেন আমরা দুজন দুজনকে কতটুকু ভালোবাসি আমরা একে অপরের অস্তিত্ব বুঝতে পারছেন আপনি আমাদের আলাদা করার চিন্তাও করবেন না আপনি এর পরিণতি ভালো হবে না(এসব বলতে বলতে আমি আবার জ্ঞান হারাই)
.
রায়হান :::::::ডক্টর নিশাতের কি হয়েছে ও কি সুস্থ
.
ডক্টর :::::ও pregnant শরীর দুর্বল থাকায় জ্ঞান হারিয়েছে একটু পরেই জ্ঞান ফিরে আসবে এই ওষুধ গুলো খাইয়ে দিবেন (বলেই ডক্টর চলে গেলেন)
.
রায়হান :::::নিশাত মা হবে আর রোশান বাবা না এ হতে পারে না আমি নিশাতকে কোথাও যেতে দিবো না দরকার হলে এই সন্তানকে. (বাঁকা হেসে)
.
.
এদিকে চারিদিকে রোশান এর লোক ছড়িয়ে পড়েছে উদ্দেশ্য নিশাতকে খুঁজে বের করা যে করেই হোক রোশানের নিশাত চাই রোশানের বাবা ছেলের এই অবস্থা দেখে নিজেকে অসহায় মনে করছেন কি আছে রোশানের জীবনে
.
রোশান খাবার টুকু মুখে দিচ্ছে না তার নিশাতকে চাই এই খাবার গলা দিয়ে নামবে না,, সকালে একসাথে নাস্তা করে বের হয়েছিলো তার আদরের বউয়ের সাথে কি করছে নিশাত এই শরীর খারাপ নিয়ে হয়তো আমার জন্য কান্না করছে আমিও পারছি না
মানুষের জীবনে চাওয়ার শেষ নেই,
স্বপ্নের সমাপ্তি নেই,
আকুলতার অন্তি নেই,
আমার চাওয়া তুমি স্বপ্ন,
তুমি আমার সব আকুলতা,
শুধু তোমার মাঝে আমার জীবন,
শুধু তোমাকে ঘিরে..
আই মিস ইউ !
যেখান থেকেই হোক আমি আমার নিশাতকে খুঁজে বের করবো
.
এদিকে
রুমের সবকিছু ভেঙে ফেলছে নিশাত রুম লক করে কোথাও গিয়েছে রায়হান
.

আমি থাকবো না এখানে আমাকে আমার রোশানের কাছে যেতে দাও কেনো এমন করছো আমার সাথে প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও আমি শুধু রোশানকে ভালোবাসি (এই বলে কাছের আসবাব আরো জিনিস সব কিছু মাটিতে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলছে নিশাত)…..
.
.
.
চলবে…..