মাফিয়া ক্রাশ বর পর্ব-১০

0
2336

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা : মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ১০

খাওয়া শেষ করে সবাই বাড়িতে চলে যায়। অভি, রায়হান রাত জেগে অনেক্ষণ কাজ করে নেয়। দুদিন পর থেকে বিয়ের তোরজোড় শুরু হবে তখন বেশি কাজ করতে পারবে না তাই এখন থেকেই কিছুটা কমিয়ে নিচ্ছে।

বিজনেস রাজ্যে অভিদ রায়জাদা আর আখিল রহমান দুই শত্রু।অভিদের অন্যেন্য শত্রু থাকলেও অভিদ তাদের পাত্তা দেয় না কারণ তার পথ থেকে শত্রুদের সরিয়ে দিতে সময় লাগবে না,তবে অভিদ আখিলের সাথে এখনও কোনো প্রকার ঝামেলা জরায়নি। অভিদ সবার কালো ব্যাবসা নষ্ট করে, যারা এসব করে তাদের সবাইকে অভি শেষ করে দেয়। কালো ব্যাবসার শেষ করতে করতেই আস্তে আস্তে অভি মাফিয়া হয়ে উঠে।

অভিদ অল্প সময়েই তার বিজনেসে অনেক উন্নতি আর নাম করতে পেরেছে। কয়েক বছরের মাঝে সে বাংলাদেশের টপ লেভেলের বিজনেসম্যান হয়ে উঠে।
যার কারণে আখিলের জায়গা কিছুটা হলেও সরে গিয়েছিলো। আর আখিলের অনেক লসও হয়েছিলো। সেই থেকেই আখিল সব জায়গায় অভিদের থেকে বেশি কিছু করতে চায়। আখিল অভিদকে তার পথ থেকে সরানোর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে কিন্তু কিছুতেই সফল হয়নি।
আখিলের বিজনেস এখন top 3 তে রয়েছে। আর Top 2 তে খান কোম্পানি। আর Top 1 অভিদ রায়জাদা।

আখিলের মা – বাবা কানাডা থাকে। আখিল নিজেও কানাডায় থাকতো। কানাডায় ছোট থেকে পড়াশোনা করেছে। বাবা যখন সব কাজের ভার আখিলের হাতে দেয় তখন থেকেই আখিল বাংলাদেশে আসে আর তার মা – বাবা কানাডায় চলে যায়। আখিল ছোট থেকে একরেখা আর জেদি টাইপ ছেলে। আখিলের যা পছন্দ হয় সেটা তাকে দিতেই হয়।

আর অভিদ ছোট থেকে ফুপির কাছে বড় হয়েছে। ভিষন রাগি একজন মানুষ। আপন মানুষ ছাড়া আর কারো সাথে হেসে কথা বলে না। অভিদের আপন বলতে ছোট বোন অনি, রায়হান
ফুপি, ফুপির ছেলে, হাজবেন্ড। ফুপির অনি সহ তার পরিবার নিয়ে আমেরিকা থাকে। ফুপির হাজবেন্ড আমেরিকান সিটিজেন। অভিদ, অনি ছোট থেকে বাংলাদেশে থেকেছে। অভিদ কিলেজ শেষ করে তার বাকি পড়ালেখা শেষ করতে লন্ডন গিয়েছিলো আর অনির তখন ১৪ বছর ছিলো তাই অনিকে তার ফুপির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। অভিদ লন্ডন থেকে এসে বিজনেস,শুরু করে রাহুলকে নিয়ে।

আজকে রুহি, অভিদের গায়ের হলুদ। অভিদের কথা অনুযায়ী আজকে হলুদের অনুষ্ঠান রুহিরদের বাড়িতে একইসাথে হচ্ছে। রুহিদের বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে হলুদের জন্য। রুহির বাবা, চাচা, ফুপিরা সবাই রুহিকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসে। রুহির বাবা তার বড় মেয়ের বিয়েতে সব সুন্দর করে করার চেষ্টা করছে। বিয়েতে রুহির চাচা,ফুপিরাও তার বাবাকে সাহায্য করছে। সেইদিন জোতির ঘটনা শোনার পর জোতির মা – বাবা খুবই লজ্জিত, আর অপরাধবোধে সবার কাছে ক্ষমা চায়। রুহির বিয়েতেও আসতে চায়নি তবে রুহি আর অভিদ গিয়ে দুজনকে বুঝিয়ে – সুঝিয়ে, ব্লেকমেইল করে নিয়ে আসে।
রুহিদের বাড়িতে মেহমানে গিজগিজ করছে।
রুহি, অভিদের গায়ের হলুদের জন্য বাড়ির সামনের বাগানে বড় করে স্টেজ করা হয়েছে।

অভিদরা এখনও আসেনি। মেয়েরা এখনও সাজ গোজ করছে। রুহিকে সাজানোর জন্য পার্লার থেকে কয়েকজন মেয়ে এসেছে। রুহির সাজা এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে তবে পার্লারের মেয়েরা বাকিদের সাজানো শেষ করে দিচ্ছে তাই রুহি খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে আর মোবাইলে অভির সাথে মেসেজে কথা বলছে।

এতোদিনে অভি আর রুহির সম্পর্ক আগের থেকে অনেক ভালো হয়ে গিয়েছে। রুহির মনেও অভিদের জন্য আলাদা অনুভূতি জন্ম নিচ্ছে। রুহি অভিদের সাথে সামনে কথা না বললেও রাত শেষে অভিকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন দেখে। সারাদিন অভিদের ফন আর মেসেজের অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু কাউকে বুঝতে দেয় না।

রুহি অভিদকে মেসেজ করছে আর মিটমিট করে হাসছে। রুহি সাধারণত মেসেজে কথা বলে না তবে এখন বলছে। রুহির সামনে বসে আছে নিলা। অনেক্ষণই হলো এখানে বসে আছে। নিলা ভ্রু কুচকে ছোট ছোট চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে। রুহিকে শুধু শুধু হাসতে দেখেনি কখনো তবে এখন মোবাইলে তাকিয়ে কিসের জন্য হেসে যাচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না।

এতোক্ষণ কথা না বললেও এখন আর নিজেকে আটকাতে পারলো না নিলা। রুহির দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
” তুই মোবাইলে তাকিয়ে বারবার এভাবে হাসছিস কেনো ”
নিলার কথায় রুমের সবাই রুহির দিকে তাকায়। আর রুহি থতমত খেয়ে হাত থেকে মোবাইল রেখে বলে
” কই হাসছি চোখে বেশি দেখিস নাকি। ”

নিলা কোমড়ে হাত দিয়ে বলে
” এই তুই মিথ্যা রকথা বলছিস কেনো আমি স্পষ্ট দেখেছি তুই মিটমিট করে হাসছিলি ”

রুহি মেকি রাগ দেখিয়ে বলে
” চুপ, বেশি কথা বলছিস তুই, আর কোনো কাজ নেই তোর। যা বাইরে যা ” রুহির কথায় নিলা মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে।
মিশু এসে নিলার কাধে হাত রেখে বলে
” থাক নিলা মন খারাপ করিস না। আমাদের রুহি বেবির কালকে বিয়ে। আজকে তো আমাদের দুলাভাইয়ের সাথেই কথা বলবে আর মিটমিট করে হাসবে। তাইনা ?? ”

নিলা হেসে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে
” ওও হ্যা আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। আচ্ছা সরি তোকে ডিস্টার্ব করার জন্য।”
রুহি মুখ ফুলিয়ে তাকায় ওদের দিকে। ওরা হি হি করে হেসে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। পার্লারের মেয়েটা এসে আবার রুহিকে সাজানো শুরু করে।

অভিরা এসে পরেছে। অভিদের সব গেস্ট এসে স্টেজের কাছে চলে যায়। অভির ফুপির হাজবেন্ড, ছেলেও দুদিন আগে অভিদের বিয়ের জন্য এসেছে। অভির ফুপি আর আর ফুপা রুহির মা – বাবার সাথে কথা বলতে যায়।

অভির পেছনে ৬,৭ জনের মতো বডিগার্ড আর সাথে রায়হান, অনি আর ফুপির ছেলে তুষার চৌধুরী। তুষারের পড়ালেখা শেষ এক বছর আগে। এখন বাবার ব্যাবসায় বসেছে।

অভির সাথে অনেকে এসে কথা বলছে। আর অনিরা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে। ওদের এই অসহায়ত্ব দূর করতে ওদের কাছে নিলা, মিশু, রাইমা, নিলয়, জিহান সবাই আসে।

মিশু, নিলা, রাইমা এসে অনিকে জড়িয়ে ধরে।
অনি হাসি মুখে বলে
” তোমাদের দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। ”

রাইমা হেসে বলে
” তোমাকেও কম সুন্দর লাগছে না। আচ্ছা ভাইয়া কোথায় ”

অনি নিশ্বাস ছেড়ে বিরক্তিকর ভাবে বলে
” আর কোথায় থাকবে সবার সাথে কথা বলছে। নিজের গায়ের হলুদে এসেছে নাকি অফিসের কাজে এসেছে সেটাই বুঝতে পারছি না ”
মিশুরা সবাই হেসে উঠে অনির কথায়।

এদিকে মিশু বুঝতেই পারছে না তার এই মারাত্মক রুপ দেখে তাকে কেউ খুটিয়ে খুটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। মিশু হলুদ, গোলাপি মিশ্রণের শাড়ির পরেছে, চুল সামনে দিয়ে ডিজাইন করে বেধে ছেড়ে দিয়েছে। রায়হান অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে মিশুর দিকে। মিশু, নিওয়া, রাইমা, অনি আরও কয়েকজন কাজিনের একই রমক সাজ হলেও রায়হানের কাছে মিশুকে অন্যরকম লাগছে। তবে বুঝতেই পারছে না কেমন লাগছে।

রায়হান আনমনে বলে উঠে
” অপূর্ব লাগছে তোমাকে ” রায়হানের কথা তুষার ছাড়া আর কেউ শুনতে পায়নি। কারণ সবাই কথা বলতে ব্যস্ত। তুষার রায়হানের দৃষ্টি অনুসরন করে তাকাতেই বুঝতে পারে রায়হান মিশুকে বলছে। তুষার ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে দুজনের দিকে।

তুষার রায়হানকে ফিসফিস করে বলে উঠে
” ভাইয়া আস্তে বলো কেউ শুনে ফেলবে ”

তুষারের কথায় রায়হানের হুশ আসে। রায়হান চোখ বন্ধ করে নিজের মাথা গাট্টা মারে। কথা বলতে বলতে রাইমার চোখ তুষারের দিকে পরে
রাইমা অনিকে বলে
” আপু উনি কে ”

অনি বিরক্ত হয়ে বলে
” উফফ, সরি ভুলেই গিয়েছি পরিচয় করিয়ে দিতে। উনি হচ্ছে তুষার ভাইয়া। ফুপির ছেলে। ”
অনি সবাইকে তুষারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

অভি সবার সাথে কথা বলতে বলতে এক সময় সুযোগ পেয়ে সেখান থেকে সরে আসে। স্টেজের সামনে একটা টেবিলের উপর হলুদ রাখা রয়েছে। হলুদের জন্য সব সাজিয়ে টেবিলের উপর রাখছিলো। অভিদ গিয়ে সেখান থেকে কিছুটা হলুদ হাতে নিয়ে নেয়। সবাই বাইরে এসে পরেছে। অভিদ সবার চোখের আড়ালে বাড়ির ভেতরে যেতে থাকে।

রুহির রুমের সামনে এসে চারপাশ দেখে দরজা খুকে দেখে নেয় ভেতরে কেউ আছে নাকি। ভেতরে পার্লারের মেয়েদের দেখে অভি রেগে সোফায় বসে পরে। কিছুক্ষণ পরে পার্লারের মেয়েরা বের হতেই অভিদ ধুপধাপ করে রুমের ভেতরে ঢুকে যায়।
ভেতরে গিয়েই অভির পা আটকে যায় রুহিকে দেখে। অভি এক পা এক পা করে সামনে এগিয়ে রুহির পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়।

রুহি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে লেহেঙ্গার দোপাট্টা ঠিক করছিলো। আয়নায় অভিদের প্রতিচ্ছবি দেখে রুহি পেছনে ঘুরে তাকায়। অভিদকে দেখেই রুহির চোখ স্থির হয়ে যায়।
ফর্সা গায়ে হলুদ, গোলাপি শেরওয়ানী, রিচ ওয়াচ, সিল্কি চুল গুলোর কিছু চুল কপালে পরে আছে। এক কথায় অত্যাধিক সুদর্শন পুরুষ। হাজারটা মেয়ে জাতির স্বপ্নের ক্রাশ। এই পুরুষটাই হবে তার একমাত্র স্বামী। স্বামী তো একমাত্রই হয়। কালকে কবুল বলার পর থেকে তার রাখা মাফিয়া ক্রাশ নামটার সাথে আরেকটা শব্দ যুক্ত হবে #মাফিয়া_ক্রাশ_বর। এসব ভেবেই রুহি মুচকি হাসি হাসি দিলো।

রুহির এই হাসি তার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুললো। অভি মুগ্ধ চোখে রুহিকে দেখছে। রুহির হলুদ, গোলাপি মিশ্রণের লেহেঙ্গা, পারফেক্ট সাজ, মেহেদি রাঙা হাত, ফুলের গায়না। সব মিলিয়ে তার স্বপনের রানী। অভিদ তার ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে। রুহির কথায়।
” কিছু বলবেন আপনি ?? ”

অভি বাকা হেসে রুহির দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। রুহু বুঝতে পারছে না হঠাৎ অভি তার দিকে এগিয়ে আসছে কেনো। অভি এগিয়ে আসতে আসতে রুহির একদম কাছে এসে দাঁড়ায়। দুজিন একে অপরের নিশ্বাস অনুভব করতে পারছে। অভি তার হলুদ মাখা হাতটা রুহির কোমড়ে স্পর্শ করে। হঠাৎ ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে রুহির সারা শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছে। রুহি খিচে চোখ বন্ধ করে নেয়,রুহির
হৃদপিন্ড অসম্ভব ভাবে লাফাচ্ছে। অভি রুহির কোমড়ে হলুদ লাগিয়ে রুহিকে কাপতে দেখে বাকা হাসে। রুহির গালে চুমু দিয়ে দূরে সরে আসে।

গালে স্পর্শ পেয়ে রুহি ঠাস করে চোখ খুলে ফেলে। অবাক হয়ে গালে হাত রেখে অভিদের দিকে তাকায়। অভিদ বাকা হেসে বলে।
” আমার বউকে হলুদ লাগাতে এসছিলাম। কাজ শেষ ” বলে হেসে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। রুহি এখনও গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

মিশুরা রুহিকে নিতে এসে রুহিকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে
” কিরে এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো ” মিশুর কথায় রুহি হালকা হেসে বলে
” এ এমনি ”
মিশু হেসে বলে
“ওও চল এখন হলুদ শুরু হবে।” রুহি হুম বলে মিশুদের সাথে চলে গেলো।

দুজনের পরিবার দুজনের হলুদ পর্ব সুন্দর করে শেষ করে। হলুদ অনুষ্ঠান শেষের পরে। অভিরা খাওয়া – দাওয়া করে চলে যায়। সবাই যেতেই মিশুরা রুহিকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য রুমে নিয়ে এসে নিজেরা চলে যায়।

অভিদ বাড়িতে পৌছে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিয়ে অনেক্ষণ পরে রুহির ফোনে কল করে। কিন্তু কয়েকবার রিং হওয়ার পরও কেটে যায়। অভিদ চিন্তিত হয়ে বলে
” রুহি ফোন ধরছে না কেনো ”

রায়হান হেসে বলে
” হায়রে বউ পাগল। ব্যস্ত আছে হয়তো তাই ধরেনি। একটু পরে আবার ট্রায় করে দেখ ”

অভিদ মাথার চুল টেনে বলে
” হতেও পারে। তবে আমার কেনো জানি অনেক চিন্তা হচ্ছে। ভালো লাগছে না ” রায়হান হেসে আবার তার কাজে মন দেয়। কিছুক্ষণ পরে অভিদ আবার রুহির ফোনে ট্রায় করে দেখে কিন্তু এবারেও রুহি ফোন রিসিভ করে না।
এবার রায়হানও চিন্তায় পরে। রায়হান উঠে অনির কাছে যায়।

অনির কাছে গিয়ে বলে
” অনি তোর কাছে মিশু, নিলা, রাইমা ওদের কারোর নাম্বার আছে ??” অনি আর তুষার দুজনে রুহিকে নিয়ে কথা বলছিলো। রায়হানের প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে বলে
” হ্যা আছে তো। কিন্তু তুমি কি করবে ”

রায়হান মোবাইল বের করে বলে
” রুহি ফোন ধরছে না অনেক্ষণ ধরে। অভিদ চিন্তা করছে তাড়াতাড়ি নাম্বার দে ” অনি তার ফোন থেকে মিশু আর নিলার নাম্বার দেয়।

রায়হান দৌড়ে অভির কাছে গিয়ে বলে
” অভি মিশু, নিলার নাম্বার এনেছি। ওদের ট্রায় করে দেখ ”
অভি নাম্বার নিয়ে মিশুকে ফোন করে।

মিশু রাইমার রুমে বসে কিছু নিয়ে কথা বলছিলো। তখন অভির ফোন দেখে অনেকটা অবাক হয়ে।
ফোন রিসিভ করে মজা করে বলে
” আরে ভাইয়া আপনি আমাকে ফোন করলেন যে ?? বউ এর সাথে কথা শেষ বুঝি ”

অভি রুমে পাইচারি করতে করতে বলে
” রুহি তো ফোন ধরছে না। ১ ঘন্টা ধরে ফোন করছি। একটু রুহিকে বলো ফোনটা রিসিভ করতে। মিশু অবাক হয়ে বলে।
” রুহি তো রুমের ফ্রেশ হতে পাঠিয়ে ছিলাম। আচ্ছা আমি দেখে আসছি আপনি হোল্ডে থাকুন।

অভি নিশ্বাস ছেড়ে বলে
” ঠিকাছে তাড়াতাড়ি যাও আর ওকে বলো আমার ফোন রিসিভ করতে ”

“ওকে ভাইয়া ” মিশু ফোন কেটে রুহির রুমে যায়। কিন্তু রুহির রুমে গিয়ে রুহিকে পেলো না। মিশু নিলা, রাইমা, জিহান, নিলয় কে নিয়ে পুরো বাড়ি খোজে কিন্তু কোথায় পায়না।

মিশু আবার অভিদকে ফোন করে। অভিদ কল রিসিভ করতেই ভয়ে ভয়ে বলে
” ভাইয়া রুহিকে পুরো বাড়িতে খুজেছি কিন্তু কোথায় খুজে পায়নি।”

অভি হালকা চেচিয়ে বলে
” হোয়াট?? রুহি কোথায় গিয়েছে ?? ”

” জানি না ভাইয়া। রুহিকে আমরা কোথায় পাচ্ছি না। রুহির কোথায় যাওয়ার কথাও নয়। আর গেলে আমাদের বলে যেতো। মামনি, আংকেল কে বলিনি চিন্তা করবে বলে ”

অভিদ দুই চোখ আঙুল দিয়ে চেপে ধরে কাপা কাপা গলায় বলে
” ওকে আমি রুহিকে খুজছি আর তোমরা আংকেল আন্টিকে এখন কিছু বলো না। তোমরা স্বাভাবিক থাকো আর রুহিকে যদি খুজে পাও তাহলে আমাকে সাথে সাথে ফোন করবে। বুঝেছো ?? ”

” ঠিকাছে ভাইয়া। আপনি রুহিকে খুঁজুন। আমরা এদিকটা দেখছি ” বলে ফোন কেটে দেয়।
মিশু সবাইকে অভিদের কথা বলে শান্ত থাকতে বলে।

রায়হান অভিদকে বলে
“কি হয়েছে ”

অভিদ রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে যেতে বলে
” রুহিকে কেউ খুজে পাচ্ছে না। তাড়াতাড়ি চল ওকে খুজে বের করতে হবে ” রায়হান অবাক হয়ে অভির পেছনে দৌড় দেয়।

চলবে…wait for next part….