মাফিয়া ক্রাশ বর পর্ব-২+৩

0
3181

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা : মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ০২ + ০৩

রুহি ঢোক গিলে মাথা নাড়া। অভির ডাকে একজন বডিগার্ড আসতেই রুহি তার সাথে বেড়িয়ে আসে। গাড়ি রুহির বাড়ির সামনে থামতেই রুহি দৌড়ে ভেতরে চলে যায়।

বাড়ির ভেতরে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দরজায় পিঠ লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নিতে থাকে। শান্ত হয়ে সামনের সোফায় ধপ করে বসে মিনি টেবিলের উপরের গ্লাসে পানি ডেলে ঢকঢক করে খেয়ে ফেলে। গোডাউনের কথা মনে পরতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠে রুহির।

“কিরে আপু কখন এলি তুই আর তোকে এমন লাগছে কেনো ” রুহি তার পাশে তাকিয়ে দেখে ওর ছোট বোন রাইমা ওর দিকে একটু অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
রুহি ক্লান্ত সরে বলে
” এখনি এসেছি। রুমে যাচ্ছি আমি, ক্লান্ত লাগছে”

রাইমা মাথা নেড়ে বলে
“ঠিকাছে ” রুহি সোফা থেকে উঠে রুমের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়েও আবার রাইমার দিকে তাকিয়ে বলে
” আম্মু কোথায় রে ?? আর আব্বু কখন আসবে??”

রাইমা মুখ টিপে হেসে বলে
” ভয় পাওয়ার কিছু নেই আব্বুর আসতে অনেক দেড়ি আর পাশের বাসার আন্টি আম্মুর সাথে গল্প করার জন্য আম্মুকে নিয়ে গিয়েছে। ”
রুহি সস্তির নিশ্বাস ফেলে রুমে চলে আসে।

রুহি তার আম্মু – আব্বুকে অনেক ভয় পায়। যদিও তার মা – বাবা রুহি, রাইমাকে তেমন একটা বকা ঝকা করেনা। তবুও রুহি ওদের ভয় পায়। আর রাইমা তার উল্টো। রাইমা মা – বাবাকে একদম ভয় পায়না।

রুহি রুমে এসে হাত থেকে সাইড ব্যাগটা রাখতেই হঠাৎ মনে পড়ে যায় অভি ওকে ফোন করে জানিয়ে দিতে বলেছিলো। রুহি একবার ভাবে যে ফোন করবে না, আরেকবার অভির থ্রেটের কথা মনে পরতেই তাড়াতাড়ি ফোনটা বের করে অভির নাম্বার খুজতে থাকে। কিন্তু ফোনে পরিচিত নাম্বার ছাড়া কোনো অপরিচিত নাম্বার দেখতে পায়নি। শুধু একটা নাম্বার দেখতে পায় সেটাও love লেখে সেভ করে রাখা। রুহি অনেক ভেবে চিনতে সেই নাম্বার ” ami powche giyechi.” লিখে মেসেজ সেন্ড করে দেয়। সেকেন্ডের মাঝেই সেই নাম্বার থেকে ” ok. আমার কথা মনে আছে জেনে খুশি হলাম ” মেসেজ আসে। মেসেজটা দেখে রুহি সিউর হয় এটা অভির নাম্বার। কিন্তু love দিয়ে সেভ করা কেনো সেটা বুঝতে পারলো না।

এসব ভাবনা এখনকার জন্য একসাইডে ফেলে ওয়াসরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। রুমটায় অনেক গল্পের বই রয়েছে। রুহির অবসর সময়ই বেশিরভাগ বই পরে। রুহিদের বাড়িটা আগের বাড়ি থেকে একটু ছোট হলেও বাকি সবই ঠিকাছে।

রুহি ভাবছে অভির কথা। কয়েকদিন আগে যখন অভির সাথে রাস্তায় দেখা হয়েছিলো তখন অভিকে দেখেই অনেক বড় একটা ক্রাশ খেয়েছিলো। সেইদিন অভিকে রুহির কাছে একদম নরমাল আর ইনোসেন্ট একটা ছেলে মনে হয়ে ছিলো। অভির নামটাও জানতো না, এক দেখায় তো আর সব জানা যায় না।
সেদিন রাস্তায় অভি রুহির সামনে আসার পর রাস্তার মানুষদের তাকানো দেখে রুহি অভিকে এভোয়েড করে চলে এসেছিলো। অভিদ রায়জাদা নাম শুনলেও সেই হিসেবে তাকে দেখেনি কিন্তু কে জানতো তার সেই ক্রাশ ছেলেটাই অভিদ রায়জাদা আর এতো বড় মাফিয়া কিং।

রুহি একা একা বলতে থাকে
” আগে ছিলো ক্রাশ আর আজকে জানতে পারলাম উনি একজন মাফিয়া। আচ্ছা উনার একটা নাম দিলে কেমন হয় ?? হুমমম ভাবতে হচ্ছে। ” রুহি চোখে বন্ধ করে ভাবতে থাকে।
একটু পর একটা মেকি হাসি দিয়ে চোখ খুলে বলে
” পেয়েছি। আগের ক্রাশ আর এখনের মাফিয়া মিলিয়ে হলো #মাফিয়া_ক্রাশ। ওয়াও জোস নামটা।”
রুহি ক্লান্ত থাকায় আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পরে।

এদিকে
রুমের লাইট অফ করে চেয়ারে বসে ভাবনায় ডুবে আছে অভি। মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরছে। রুমের দরজা খোলার শব্দ শুনতে পেয়ে অভি সেদিকে তাকায়। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে অভির মুখে হালকা হাসি ফোটে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা এগিয়ে এসে অভিকে হালকা করে জড়িয়ে ধরে।
অভি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলে
” তোকে অনেক মিস করেছি ইয়ার ”

ছেলেটা দাত কেলিয়ে বলে
” কেনো আমি কি তোর বউ নাকি। আমাকে মিস করেছিস কেনো ”

অভি বিরক্ত হয়ে বলে
” দেখ রায়হান মজা করিস না ”

রায়হান হেসে বলে
” ওকে, ওকে ভাই আর মজা করবো না। আচ্ছা বল কি এতো ভাবছিস। সব কাজ তো শেষ করে এসেছি।আবার নতুন কি চিন্তা করছিস”

অভি চেয়ারে বসে বলে
” চিন্তার কি শেষ আছে নাকি। তুই আছিস বলেই তো একটু রেহাই পাই নাহলে এতোদিনে পাগল হয়ে যেতাম। যাই হোক ওখানকার সব কাজ হয়েছে ?? ”

রায়হান ধপ করে বিছানায় শুয়ে বলে
” সব কাজ শেষ। ডিল ফাইনাল, ইনভেস্টও করে দিয়েছি। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। ”

অভি ওর ফোনটা হাতে নিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে
” খান ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানির গোপনে নতুন কি কাজ চলছে জানিস ??”

রায়হান শোয়া থেকে উঠে বসে বলে
” না কেউ বলেনি তো কিছু। নতুন কোনো information পেয়েছিস নাকি ”

অভি দাতে দাত চেপে বলে
” কোম্পানির মালের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ড্রাগস সাপ্লাই করছে ”

রায়হান অবাক হয়ে চেচিয়ে উঠে
” হোয়াট !! এতো বড় কোম্পানি ড্রাগস সাপ্লাই করছে ?? Are you sure?? ” অভি রায়হানের দিকে ছোট ছোট চোখে তাকাতেই রায়হান হচকচিয়ে যায়। জোড়পূর্বক হেসে বলে
” মজা করছিলাম তুই যখন বলেছিস তখন তো সত্যি হবে।”

অভি আগের ন্যায় গম্ভীর কন্ঠে বলে
” হুম আমি পাক্কা সিউর। আর ড্রাগস সাপ্লাই করা হচ্ছে সেটা খান কোম্পানির মালিক বা কেউই জানে না। কোম্পানির একজন বিষ্যস্ত মানুষ তার সাঙো পাঙো দিয়ে ড্রাগস সাপ্লাই করছে গোপনে ”

রায়হান বড় নিশ্বাস ফেলে বলে
” ওকে এটার ব্যাবস্থা করছি । এখন চল ডিনার করবি ”

অভি দাঁড়িয়ে বলে
“যাচ্ছি। কালকে সকালে এক জায়গায় যেতে হবে তৈরি থাকিস ”

অভি কোথায় যাবে রায়হান জানে না তাই বলে
“কোথায় যাবি ??”
অভি বাকা হেসে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। রায়হান মাথা চুলকে অভির পেছন পেছন যায়।

রায়হান হলো অভির bestfriend + assistance.
অভিদের দেশে, বিদেশে প্রায় অনেক গুলোই অফিস, কারখানা আছে। সেই অফিস, কারখানায় কোনো সমস্যা বা বড় কোনো ডিল হলে অভিদ বা রায়হান সেখানে উপস্থিত থাকে। সেই হিসেবে রায়হান আমেরিকা গিয়েছিলো একটা ডিলের জন্য কয়েকদিনের জন্য। রায়হান অভিদের সুখ,দঃখের সঙ্গী। অভিদ কখনো রায়হানের সাথে রেগে বা উচু গলায় কথা বলে না। অভিদের সব কাজে রায়হান থাকে। রায়হান অভিদের অফিস সামলায় সাথে মাফিয়ার সব কাজেই থাকে।

সূর্য এর কিরণ রুমের বন্ধ জানলা, পর্দা ভেদ করে তীর্যক ভাবে চোখে মুখে পরতেই রুহির মুখ কুচকে আসে। বিরক্তি নিয়ে অন্যপাশে ঘুরে যায়। রোদের কারনে আর ভালো করে ঘুমাতে পারলো না রুহি। উঠে বিছানা ছেড়ে ওয়াসরুমে ঢুকে যায়। ব্রাশ-টাশ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই ঘড়ির উপর চোখ যায়। সকাল ১০টা বাজে।

রুহি অবাক হয়ে বলে
” হায় আল্লাহ এতো সময় হয়ে গিয়েছে আর আমি এতোক্ষণ ধরে ঘুমোচ্ছিলাম। কিন্তু আম্মু আজকে আমাকে সকালে ডাকতে আসেনি কেনো ?? জাই হোক আমি নিচে যাই নাহলে আম্মুর বকা শুরু করবে ” রুহি তাড়াতাড়ি করে বিছানা গুছিয়ে ড্রইংরুমের দিকে যায়।

ড্রইংরুমে পা রাখতেই রুহি সোফায় দুজন ছেলে আর কয়েকজন কালো পোশাক পরা ছেলে বডিগার্ড আর কয়েকজন মেয়ে সার্ভেন্ট দেখতে পায়। প্রত্যেকটা মেয়ের হাতে বড় বড় থালা রয়েছে উপরে লাল কাপড় দিয়ে ঢাকা।

সোফা গুলো সামনের দিকে থাকায় ছেলে দুজনের চেহারা রুহি দেখতে পায়নি। রুহিকে দেখে ওর আব্বু বলে উঠে
” রুহি মা এদিকে এসো। ”
রুহি কিছু না বলে বাবার পাশে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে যায়।

রুহির আম্মু এসে রুহিকে ওর আব্বুর পাশে বসিয়ে দেয়। রুহি মাথা তুলে একপলক ছেলে দুটোর দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেলে। হঠাৎ ওর খেয়াল হয় ওর সামনে দুজন ছেলের মধ্যে একজন হলো অভি। রুহি আবার ফট করে তাকাতেই ওর চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। রুহি লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।

ওর সামনের সোফায় সত্যি সত্যি অভি বসে আছে। সাথে রায়হান তবে রুহি রায়হানকে দেখেনি তাই চিনতে পারলো না। রুহির তরতর করে ঘামছে।

রুহির বাবা রুহিকে এমন অবস্থায় দেখে দাঁড়িয়ে বলে
” কি হলো রুহি, তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে পরলে কেনো আর এতো ঘামছো কেনো ”

রুহি ঢোক গিলে একবার অভির দিকে আরেক বার বাবার দিকে তাকায়। অভির মুখে বাকা হাসিটা দেখে রুহি আরও ভয় পাচ্ছে। রাইমা এসে রুহির হাত ধরে কানে ফিসফিস করে বলে
” আপু চুপ করে বসে থাক নাহলে আম্মু বকা দেবে এতো লোকের মাঝে বকা শুনতে ভালো লাগবে না তাই বলছি চুপচাপ বসে থাক আর আব্বু যা বলে তার উওর দে ”

রাইমা কথাটা বলে সবার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে রুহিকে আবার সুন্দর করে বসিয়ে দেয়। রুহির আব্বু রুহির দিকে তাকয়ে বলে
” রুহি তুমি অভিদ রায়জাদাকে চেনো ?? ”
রুহি অনেক ভেবে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে।

রুহির আব্বু রুহির আম্মুকে চোখের ইশারায় কিছু বলতেই রুহির আম্মু রুহিকে সেখান থেকে নিয়ে রুমে চলে যায়। ওরা যেতেই রুহির আব্বু অভি আর রায়হানকে বলে উঠে
” তুমি আমার মেয়েকে সারাজীবন সুখি রাখতে পারবে তো ??”

অভি উঠে রুহির আব্বুর পাশের সোফায় বসে ওনার এক হাত ধরে বলে
” আংকেল আমি কথা দিচ্ছি রুহিকে কোনো কষ্ট পেতে দেবো না। আর যদি কোনোভাবে বা কেউ রুহিকে কষ্ট দেয় তাহলে তাকে জানে মেরে ফেলবো। প্লিজ আংকেল আপনি রাজি হয়ে জান। আমি রুহিকে খুব ভালো বাসি। ”

রুহির আব্বু হালকা হেসে বলে
” ঠিকাছে আমি রাজি। কিন্তু রুহি রাজি হবে তো ”

রুহির আব্বুর চিন্তিত মুখ দেখে অভি আসস্ত করে বলে
” আংকেল ওটা নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না। আমি রুহিকে রাজি করাবো। আপনি শুধু বিয়ের আয়োজন শুরু করুন ”

রুহির আব্বু হেসে বলে
” ঠিকাছে আমি সব দেখছি। তুমি রুহির সাথে কথা বলে এসো। আমি রায়হানের সাথে কথা বলছি ” অভি হেসে দাঁড়িয়ে যায়। মেয়েদের ইশারা করতেই হাতের সব থালা গুলো একে একে টেবিলের উপর রেখে দেয়।

রুহি মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। কান্না করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু এখন কান্না করতে পারবে না।
একটু আগেই ওর মা আর বোন বললো অভি রুহিকে বিয়ে করতে চায়। আজকে সেই প্রস্তাব নিয়েই বাড়িতে এসেছে। রুহির আম্মু, আব্বু, সবাই রাজি।
বাইরে থেকে রুহির আব্বুর ডাকতেই দুজন বাইরে চলে যায়।

রুহির চোখের পানি বেড়িয়ে আসে। অভি রুহিকে বিয়ে করবে সেটা নিয়ে রুহি ভাবছে না। চোখের সামনে অভিকে খুন করতে দেখেছিলো সেটা এখনও মনের মধ্যে গেথে আছে। মাফিয়া হলেও কি চোখের সামনে খুন করতে দেখলে তো ভয় করবেই। আবার তাকে বিয়েও করতে হবে সেটা নিয়েই রুহি ভয় পাচ্ছে।

অভি রুহির রুমে ঢুকে দরজা লক করে দেয়। মুখে রয়েছে বাকা হাসি। কিন্তু রুহির দিকে তাকাতেই সেটা উধাও হয়ে মুখটা গম্ভীর হয়ে যায়।
রুহি কারো অস্তিত্ব অনুভব করতেই তাড়াতাড়ি চোখ মুছে পেছনে তাকায়। পেছনে তাকাতেই অভিকে দেখতে পেয়ে রুহি ভয় পেয়ে যায়।

অভি কয়েক পা এগিয়ে রুহির সামনে দাঁড়িয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে
” কাদছো কেনো তুমি ”

রুহি অভির গম্ভীর কন্ঠ শুনে আবার কেদে দেয়। অভি রেগে ধমক দিয়ে বলে
” চুপ মুখ থেকে আর একটু কান্নার আওয়াজ আসলেই মেরে ফেলবো।” ধমক শুনেই রুহি কেপে উঠে কান্না থামানোর চেষ্টা করতে থাকে।

অভি রুহির কাছে এগিয়ে বলে
” তুমি কি বিয়েতে রাজি ”
রুহি মাথা মেড়ে বলে
” না আমি আপনাকে বিয়ে করবো না ”

অভি ভ্রু নাচিয়ে বলে
” কেনো ?? আমি কি এমন করলাম যে আমাকে বিয়ে করতে চাইছো না। নাকি আমি দেখতে খারাপ ”

রুহি নাক টেনে বোকার মতো বলে
” না তো আপনি দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম বাট আপনি মানুষ খুন করেন তাই আমি আপনাকে বিয়ে করবো না”

অভি মুখটা ঘুরিয়ে একটু হাসে আবার মুখটাকে গম্ভীর বানিয়ে বলে
” তোমার কি মনে হয় তুমি আমাকে বিয়ে না করলে আমি তোমাকে ছেড়ে দেবো ?? ভুলেও এইসব ভাবনা চিন্তা করবে না। বিয়েতে রাজি না হলে খুব খারাপ হবে। হয়তো কালকে সেই লোকটা কে যেভাবে মেরেছিলাম তোমার পরিবারকেও হয়তো সেই রকম পরিস্থিতিতে পরতে হতে পারে তাই ভেবে চিনতে উত্তর দাও ”

রুহি চমকে অভির দিকে তাকায়। এমন কথা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
অভি তীক্ষ্ণ নজরে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে
” বলো বিয়েতে রাজি নাকি…. ”

রুহি চটপট করে বলে
” না আমার পরিবারের কিছু করবেন না আমি বিয়েতে রাজি ” অভি হেসে রুহির গালে হাত রেখে বলে
” গুড। ওকে বায় আমি আজকে আসছি ” বলে অভি দরজা খুলে বেড়িয়ে যায়।

রুহি দরজা লাগিয়ে কান্না ভেঙে পরে। অভি, রায়হান রুহির আব্বু, আম্মুর সাথে সব কথাবার্তা করে সবাইকে নিয়ে চলে যায়।

চলবে… wait for next part…

গল্পটাতে এতো রেসপন্স পাবো ভাবিনি আমি। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সবাই পাশে থাকবেন, ভালো থাকবেন।

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা : মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ০৩

রুহি দরজা লাগিয়ে কান্না ভেঙে পরে। অভি, রায়হান রুহির আব্বু, আম্মুর সাথে সব কথাবার্তা শেষ করে সবাইকে নিয়ে চলে যায়।

অভি রায়হান গাড়িতে উঠতেই ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়। বাকি গাড়িতে বডিগার্ড, সার্ভেন্ট রয়েছে।
রায়হান অভির দিকে এক চোখ ছোট করে তাকিয়ে বলে
” এই তুই আমাকে বন্ধু বলিস ?? আমি দেশে ছিলাম না আর এত কিছু হয়ে গেলো কিন্তু
তুই আমাকে কিছু জানালি না ??”

অভি মুখে গম্ভীর ভাব এনে বলে
” জানিয়ে কি হতো ?? তুই কি ওখানে বসেই আমার বিয়ে ঠিক করে দিতি??”

রায়হান ইনোসেন্ট মুখ করে বলে
” না তা নয়। আচ্ছা এখন বল কোথায় যাবি ”

অভি বাইরের দিকে তাকয়ে বলে
” আর কোথায় অফিসেই যাবো। তারপর বিকেলে খান কোম্পানিতে যেখানে ড্রাগস সাপ্লাই করা হয় সেই গোডাউনে যাবো ”

রায়হান মোবাইল হাতে নিয়ে বলে
” ওকে, তাহলে আমি সব খোজ খবর বের করতে বলছি ” অভি হুম বলে।

রুহি কান্না করতে করতে মাথা ব্যাথা করে ফেলেছে। কিছুক্ষণ পরে দরজায় কেউ বারি দিতেই রুহি তাড়াতাড়ি ফ্লোর থেকে উঠে ওয়াসরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে আসে। রুমে এসে দরজা খুলে দিয়ে বিছানায় বসে পড়ে।
রাইমা এসে রুহিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে
ঢুলতে ঢুলতে বলে
” আপু দেখেছিস ?? আমার দুলাভাই টা কত্ত হ্যান্ডসাম, কি কিউট আহহহ, আর কি যে বলবো আমার তো ভাইয়াকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছিলো। ”

রুহি মুখ বাকিয়ে বলে
” তো খেয়ে ফেল না !! আমাকে আর বিয়ে করতে হবে না। ”

রাইমা দুঃখি দুঃখি মুখ করে বলে
” কি করে খাবো ক্রাশ বলে কথা আর দুলাভাইকে খেয়ে ফেললে তো তুই বিধবা হয়ে যাবি। তখন সবাই আমাকে বড় বোনের স্বামীর খুনি বলবে ”

রুহি মাথা নিচু করে আঙুল খুটতে খটতে বলে
” আচ্ছা আব্বু, আম্মু এই বিয়েতে রাজি হলো কেনো ?? অভিদ রায়জাদা কতো বড় মাফিয়া !! তার সাথে আমার বিয়ে হবে আব্বু, আম্মু কি করে রাজি হলো। আমি বুঝতে পারছি না ”

রাইমা কিছু বলার আগেই দরজার সামনে থেকে রুহির আব্বু ভেতরে আস্তে আস্তে শান্তভাবে বলে উঠে
” যাই করেছি তোমার ভালোর জন্য করেছি। এখন বুঝতে না পারলেও পরে ঠিকই বুঝতে পারবে।”

রুহি আর কিছু বলে না। রুহি কোনোদিন মা – বাবার কথার উপর কথা বলেনি। আর তার মা – বাবার উপর পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। ওরা যা করবে ভেবে করবে আর রুহির ভালোর জন্যই করবে এটা রুহি বিশ্বাস করে। কিন্তু রুহির ভয় আর চিন্তা হচ্ছে অভি। অভিকে খুন করতে দেখেছে আবার একটু আগে রুহিকে থ্রেট দিয়ে গিয়েছে। অভির থ্রেট টা শুনে অভির প্রতি রুহির মনে খানিকটা ঘৃণা জন্মেছে।

রুহির আব্বু রুহির মাথায় হাত রেখে বলে
” যাও অনেক সময় হয়ে গিয়েছে ব্রেকফাস্ট করে নাও ” রুহি মাথা মেড়ে হ্যা বলে।

রুহির আব্বু রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে গিয়েও আবার রুহির কাছে এসে বলে
” রুহি !! অভিদ বলেছে ওও তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরে ফেলতে চায়। আমি বলেছি তুমি যখন চাইবে তখনই তোমার বিয়ের ডেট ফেলা হবে।
এখন তোমার কি মত সেটা বলো।”

রুহি একটা নিশ্বাস ফেলে বলে
” আব্বু তোমরা যখন চাইবে তখনই।”
রুহির আব্বু হেসে বলে
” ঠিকাছে। ”

রুহি ড্রইংরুমে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে নেয়। ভার্সিটিতে কালকে নবীন বরণ উৎসব থাকায় আজকে বন্ধ দেওয়া হয়েছে তাই রুহির আজকে ভার্সিটির কোনো ঝামেলা নেই। অভিদ আসার কথা রুহির আব্বু জানতো না বিধায় আফিসে আগে থেকে ছুটি নিতে পারেনি। তাই আজকে দেড়ি করে অফিসে যেতে হয়েছে।

রুহি তার রুমে গিয়ে সব দরজা জানলায় পর্দা টেনে দেয়। রুমটাকে অন্ধকার করে রাখে। রুহির সূর্যের আলো একদম পছন্দ নয়। দিনের আলো দেখলেই ওর গা জ্বলে উঠে। রাত বাদে সারাদিন রুমে পর্দা দেয়া থাকে।

রুহি তার ফোনটা চার্জ থেকে খুলে অন করতেই ওর ফোনে কারি, কারি কল আর মেসেজ আসে।
রুহি একটা মেসেজ দেখেই বুঝে গিয়েছে কার মেসেজ, কল। রুহি কপালে হাত দিয়ে বিছানায় বসে পরে। হঠাৎ রুমের ভেতর কেউ হুরমুরিয়ে ঢুকতেই রুহি লাফিয়ে দাড়িয়ে যায়। সামনে তাকাতেই তার একমাত্র প্রান প্রিয় বেস্টফ্রেন্ড মিশুকে দেখতে পায়।

মিশু কোমড়ে হাত দিয়ে রক্তাক্ত চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে। রুহি ঢোক গিলে মুখে জোড়পূর্বক একটা হাসি টেনে হাত দাঁড়িয়ে বলে
” হা হাই ” রুহির এই একটা কথায় যেন মনে হচ্ছে বাঘকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা হয়েছে।

মিশু চোখ বন্ধ করে একটা জোড়ে চিৎকার দেয় তারপর রেগে হালকা চেচিয়ে বলা শুরু করে
” রুহির বাচ্চা রুহি। রুহির বাচ্চা উগান্ডা। অসভ্য মেয়ে কোথাকার তোর এতো বড় সাহস কি করে হয় আমার ফোন ধরিস না তার উপর ফোন বন্ধ করে রাখিস ?? তোর কোনো ধারণা আছে যে আমি কতো টেনশন করছিলাম। কালকে নবীন বরন উৎসবে তুই বলেছিলি ভার্সিটিতে যাবি। তা রুহি ম্যাডাম আপনি কোথায় ছিলেন কালকে ?? কালকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোর জন্য অপেক্ষা করেছি আমি। কতো ফোন, মেসেজ দিয়েছি একবারও ফোন রিসিভ করিস নি তুই, আবার রাতে ফোন বন্ধ করে রেখেছিস।সকালেও ফোন বন্ধ পেয়েছি। তোর কোনো ধারণা আছে আমি কতোটা টেন্স ছিলাম ?? ” এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে তারপর থেমে নিশ্বাস নেয়।

রুহি এতোক্ষণ কানে হাত দিয়ে রেখেছিলো। মিশুর কথা শেষ হতেই কান থেকে হাত সরিয়ে বলে
” ঠান্ডা পানি দেব ??”
মিশু রেগে বড়বড় চোখে রুহির দিকে তাকাতেই রুহি আবার মিনমিন গলায় বলে
” একটু শান্তু হয়েনে তারপর নাহয় আমি সব বলছি ”

মিশু রুহির দিকে তেরে আসতে আসতে বলে
” কিসের শান্ত হবো। আর কি সব বলবি তুই ?? কি বলার বাকি আছে ”

রুহি মিশুকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে
” please calm down. তুই বস আমি আসছি ”
বলে রুহি রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।

ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি আনার সময় রুহির আম্মু রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে রুহিকে বলে
” কিরে মিশুর চিৎকার শুনলাম। আজকে আবার কেনো রেগে আছে ??”

রুহি ওর আম্মুকে দেখে ভয় পেয়ে যায় কারন এখন যদি ওর আম্মু মিশির কাছে যায় তাহলে জানতে পেরে যাবে যে রুহি কালকে ভার্সিটিতে যায়নি। আর জানলে অনেক প্রশ্ন আর বকা শুনতে হবে তাই রুহি ওর আম্মুকে বলে
” আরে আম্মু তুমি তো জানোই মিশু মাঝে মাঝেই রেগে যায়। আচ্ছা এসব বাদ দিয়ে তুমি রান্না করো আর রাই কোথায় ” বাড়িতে সবাই মাঝে মাঝে রাইমাকে রাই বলে।

রুহির আম্মু কপালের ঘাম শাড়ির আচল দিয়ে মুছতে মুছতে বলে
” কলেজে গিয়েছে ”

রুহি রুমের দিকে যেতে যেতে বলে
” ওও, আচ্ছা তুমি রান্না করো হেল্প লাগলে আমাকে ডেকো ঠিকাছে ?? রুহির আম্মু ঠিকাছে বলে আবার রান্না ঘরে চলে যায়।
রুহি তার রুমে এসে মিশুকে ঠান্ডা পানি খাইয়ে ঠান্ডা করে।

মিশু শান্তকন্ঠে বলে
” বল কালকে ফোন ধরিসনি কেনো ”

রুহি মুখ লটকিয়ে বলে
” ফোন তো ব্যাগে ছিলো তাই সন্ধ্যায় ফোন বের করেছিলাম তবে তোর ফোন, মেসেজ খেয়াল করিনি তাই একটা কাজ করে আবার ফোন বন্ধ করে চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলাম।

মিশু চোখ ছোট ছোট করে বলে
” মানে তুই কালকে ভার্সিটিতে না গিয়ে কোথায় গিয়েছিলি যে ফোন ব্যাগে ছিলো ” রুহি উঠে দরজা লাগিয়ে মিশুর পাশে বসে মিশুকে একে একে কালক থেকে আজকে ঘটা সব ঘটনা বলে।
সব শুনে মিশু হা করে তাকিয়ে আছে।

রুহি মিশুর থুতনি ধরে মুখটা বন্ধ করে দেয়।
মিশু অবাক হয়ে রুহিকে বলে
” ভাই আমাকে একটা চিমটি কাট ” রুহি মিশুর হাতে চিমটি দিতেই মিশু লাফিয়ে উঠে হাত ডলতে ডলতে বলে
” উফফ এতো জোড়ে চিমটি দিতে বলেছি ”

রুহি রেগে মিশুর দিকে তাকিয়ে বলে
” তুই এমন করছিস কেনো বুঝতে পারছি না। ঢং না করে এখন কি করবো সেটা বল ”

মিশু অবাক হয়ে বলে
” কি করবি মানে ?? বিয়ে করবি তুই। আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিজনেসম্যান the great Ovid Rayjada. O.R.R
Group of Company owner. And he is great mafiya king. যার ভয়ে সবাই থরথর করে কাপে, যার জন্য দেশ বিদেশের সব মেয়েরা পাগল সেই অভিদ রায়জাদা তোকে বিয়ে করতে চাইছে শুধু চাইছে না তোকে বিয়ে করার জন্য থ্রেট পর্যন্ত দিয়ে গিয়েছে। আমার কি যে করতে ইচ্ছে করছে কি বলবো তোকে। আমার ক্রাশ আমার দুলাভাই হবে oh my allah. আমি সত্যি পাগল হয়ে যাবো। আমাকে বিয়ে করতে চাইলে আমিতো সাথে সাথে বিয়ে করে ফেলতাম। আর তুই কিনা বিয়েতে রাজি না। উফফ কি বলবো আমি তোকে”

রুহি বিরক্ত হয়ে বলে
” তোর কাছে আমি হেল্প চাইছি আর তুই বলছিস কি বলবি ?? থাক তোর কিছু বলতে হবে না। আমার ভাগ্যে যা আছে তাই হবে ”

মিশু রুহির কাধে হাত রেখে বলে
” কি আর হবে বিয়ে ছাড়া। যাই হোক চল বাইরে ঘুরতে যাই ”

রুহি মিশুর হাত সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে
” ছাড় এখন বাইরে যেতে ভালো লাগছে না।”
মিশু ঠিকাছে বলে বিছানায় শুয়ে গেইম খেলতে থাকে। মিশুকে দেখে রুহিও ফোন নিয়ে বসে পড়ে।

রাতে অফিস শেষ করে অভিদ, রায়হান আর কয়েকজন বডিগার্ড একটা গোডাউনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
অভি গম্ভীর গলায় বলে
“ঠিকঠাক information দিয়েছে তো নাকি আমাদের বোকা বানাচ্ছে ”

রায়হান বিরক্তনি ফিসফিস করে বলে
” ভাইরে ভাই আমি কি তোকে ভুল ইনফরমেশন দিবো নাকি ?? আমি সব খোজ খবর নিয়ে তারপর তোকে বলেছি। এবার ভেতরে গিয়ে আমাকে উদ্ধার কর ”

অভি রায়হানকে একটা লুক দিয়ে ভেতরে যায় । রায়হান শার্টের কলারটা টেনে অভির পেছন পেছন হিরো স্টাইল করে যেতে থাকে। অভিদ গোডাউনে দরজার সামনে এসে জোড়ে একটা লাথি দিয়ে দরজা ভেঙে ফেলে। এতো জোরে আওয়াজ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকাতেই অভিদকে দেখে একেক জনের প্রান যায় যায় অবস্থা। তখন ভেতর থেকে একজন আসে সে অভিকে দেখেনি। লোকটা সবার দিকে তাকিয়ে বলে
” তাড়াতাড়ি হাত চালাও আরও মাল সাপ্লাই করতে হবে”

রায়হান এগিয়ে এসে বলে উঠে
” আগে এখান থেকে বেচে বের হয়েনে তারপর নাহয় মাল সাপ্লাই করবি ” রায়হানের কথা শুনে লোকটা ওদের দিকে তাকায়। অভিকে দেখেই কলিজা শুকিয়ে যায়। উল্টো দৌড় দিতে নিলেই অভি সামনে পরে থাকা একটা মোটা লাঠি পা দিয়ে ছুড়ে মারে আর লোকটার হাটুতে লাগাতে সে উল্টি খেয়ে পরে। রায়হান গিয়ে লোকটার কলার ধরে উঠায়।

বডিগার্ড গুলো লোক গুলোকে ধরতে আসলেই একেকজন মারপিট শুরু করে। অভিদের বডিগার্ড গুলো বডি বিল্ডার হওয়ায় একেকটাকে তুলে আছার মারছে সবাই মাটিতে কাতরাতে থাকে। রায়হান সেই লোকটাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে রশ্মি দিয়ে বেধে দেয়। অভি পাশ থেকে একটা চেয়ার এনে লোকটার সামনে বসে পরে।

রায়হান বডিগার্ডকে উদ্দেশ্য করে বলে
” আগুনে গরম করা রড আর বড় পাত্রে পানি নিয়ে এসো ” তিনজন বডিগার্ড গোডাউন থেকে বেড়িয়ে যায়।

অভি লোকটার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে
” তুই খান কোম্পানিতে কি করছিস ?? তুই তো Rahman group of company তে একজন কর্মচারী ছিলি।সেখানের সুখ রেখে এখানে এসে ড্রাগস সাপ্লাই করছিস কেনো ”

লোকটা দাত কিড়মিড় করে বলে
” হুহ সুখ !! ওই আখিল রহমান এর কোম্পানিতে গোপনে ড্রাগস সাপ্লাই করতাম সেটা ওই আখিল জানতে পেরে আমাকে সেখান থেকে বের করে দিয়েছে। তাই এখানে এসেছি কিন্তু এখানে এসেও লাভ হলো না তোর জন্য। এতোদিন ছিলো আখিল আর এখন তুই। তোরা দুইজন শত্রু হলে কি হবে, তোদের দুইজনের জন্য কালো ব্যাবসা করে কেউ শান্তি পেলো না। ”

বডিগার্ড রড আর পানি নিয়ে এসছে। রায়হান রাগে রি রি করছে আর অভি বাঘের লুক নিয়ে ছিলো। এবার বাঘের মতো গর্জন করে বলে উঠে
” চুপপপ। তোদের মতো মানুষকে পৃথিবীতে জায়গা দেওয়া মানে পৃথিবী নোংরা করা। তোদের জন্য হাজার হাজার ছোট ছোট ছেলে, মেয়ে খারাপ পথে যাচ্ছে। তোকে কি করে বাচিয়ে রাখবো বল ??”

অভি বাকা হেসে গরম রড টা নিয়ে লোকটার হাতের উপর রেখে চাপে ধরে। লোকটা যন্ত্রণায় চিৎকার করে ছটফট করে যাচ্ছে কিন্তু অভি সেদিকে পাত্তাও দেয় না। পায়েও বড় দিয়ে ছেকা দেয়। লোকটা আধমরা হয়ে গিয়েছে। এবার রায়হান বড় পানির পাত্রের মধ্যে পাশের একটা দেয়ালের থেকে একটা তার ছুটিয়ে অয়ানির মধ্যে দিয়ে দেয়। তার টায় লাইন রয়েছে। রায়হান লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে পাত্রের মধ্যে ফেলে দেয়। লোকটা ছটফট করতে করতে একসময় সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে।

অভিরা সবাই বেড়িয়ে আসে গোডাউন থেকে। ভেতরে সব কয়টা লোককে বাইরে বেধে নিয়ে আসে। লোক গুলোকে গোডাউনের সামনে ফেলে রাখে। অভি হাত সামনে রাখতেই একজন বডিগার্ড পকেট থেকে লাইটার বের করে দেয়। অভি সেটা দিয়ে গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভি রায়হান একে অপরের দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

চলবে… wait for next par….