মিস্টার ভিলেন পর্ব-৭+৮

0
1822

পর্ব ৭+৮
#মিস্টার ভিলেন
পর্বঃ৭
?সামিরা পপি?
____________________________
____________________________

সামিরা নাবলকে দেখে টেনশনে পড়ে গেল।সে’তো নাবিলের মন জয় করার জন্য,নাবিলের কথা রাখার জন্য নিজেকে আবার আগের রুপে সাজিয়েছে।কিন্তু কে জানতো এই আগের রুপে যে কেউ ফিদা হয়ে আছে?ধেৎ কিচ্ছুইই ভালো লাগছে না।এখন ত নাবিল ভূল বুঝবে।উহু বুঝবে না বুঝেও ফেলেছে।তাহলে কি আমি নাবিলকে হারিয়ে ফেলছি?না না না এইটা কিছুতেই হতে পারে না।আমাকে নাবিলের সাথে কথা বলতেই হবে।এইসব কিছু এতক্ষন ভাবছিল সামিরা।হঠাৎ সামনে উপস্থিত ছেলেটার কথায় ধ্যাণ ভাঙল সামিরার। সামিরার দিকে তাকিয়ে বলল,

–“কি ব্যাপার সামিরা?ওইদিকে তাকিয়ে কি ভাবছ?আর তুমি তো কিছু বলছও না।আমি কি এইভাবে বসে থাকব?”

ছেলেটার করুন ফেস দেখে সামিরার হাসি পাচ্ছে।আবার বিরক্তও লাগছে।আজ এই ছেলের জন্যই নাবিল তাকে ভূল বুঝেছে।ইচ্ছে করছে মাথা ফাঁটিয়ে দিতে।তবুও নিজেকে সংযত রেখে সামিরা হাসি মুখে বলল,

–“আপনি এখনও বসে আছেন কেন?প্লিজ উঠে বসুন।আর আমার কথা শুনুন।আসলে আমি আপনার প্রপোজাল একসেপ্ট করতে পারব না।”

ছেলেটা উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,

–“কিন্তু কেন সামিরা?আমি কি তোমার যোগ্য নই?আমি কি স্মার্ট সুদর্শন নই?নাকি আমি তোমাকে বিলাসিতা দিতে পারব না?”

সামিরা কি বলবে বুঝতে পারছে না।তবুও কিছু একটা ভেবে বলল,

–“আসলে তা নয়।সব সব দিক দিয়ে পার্ফেক্ট। ”

–“তাহলে তুমি রাজী হচ্ছ না কেন?”

–“আমি অল রেড়ি এংগেজড তাই।”

সামিরার কথা শুনে ছেলে টি মুখ চোখ এমন করল যে কেউ তার কলিজা টেনে ছিড়ে নিয়ে গেছে।এইবুঝি তার সমস্ত শরিরের অঙ্গ প্রতঙ্গ সব ডোনেট করে দিতে বলেছে কেউ।তবুও সামিরার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল,

–“কিহ??তাহলে এতদিন যে তুমি নাবিলের পেছনে ঘুরেছ সেটা কি ছিল?নাকি তুমি আমাকে বোকা বানাচ্ছ মিথ্যা বলে।”

সামিরা যেন মহা বিপদে পড়ল।এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল,

–“আসলে আমি মিথ্যা বলছি না।সত্যিই বলছি।আমার বিয়েটাও নাবিলের সাথেই ঠিক হয়েছে।ও আমার সাথে রাগ করেছে তাই ওর রাগ ভাঙানোর জন্য এত কিছু করেছি।”

নাবিলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে মনে হচ্ছে ছেলেটা এক্ষুনি হার্ট এ্যাটাক করবে।সামিরাকে আর কিছু না বলে মনের দুঃখ মনে রেখেই চলে গেল।আর এইদিকে সামিরা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল।দ্রুত বিল মিটিয়ে বেড়িয়ে পড়ল ক্যান্টিন থেকে।

এদিক ওদিক নাবিলকে খুঁজে চলেছে সামিরা।কিন্তু নাবিল তো দূরে থাক আজকে নাবিলের সাঙ্গ পাঙ্গদেরও দেখা নেই।তারদের আড্ডা দেওয়ার জায়গাও খালি।সামিরা নাবিলকে কলেজে না পেয়ে বাহিরে চলে গেছে।তাও নাবিলকে পেল না।তাই মন খারাপ করে কলেজে প্রবেশ করল।এইদিকে রুপালি ও আরশি তারাও সামিরাকে খুঁজে চলেছে।রুপালি সামিরাকে মন খারাপ করে ক্লাসের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে আরশিকে বলল,

–“ওই দেখ সামিরা।মনে হচ্ছে ক্লাসে যাচ্ছে।”

–“হ্যাঁ তাই তো মনে হচ্ছে।আচ্ছা চল ওর সাথে গিয়ে কথা বলি।”

রুপালি সামিরাকে ডাক দিল।সামিরা রুপালির আওয়াজ শুনে পেছনে তাকিয়ে ওদের দেখে দাঁড়াল।আরশি এসেই বলল,

–“কিরে কোথায় ছিলি এতক্ষন?তুই বলেছিলি ক্যান্টিনে যাবি।তোর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আমরা গেলাম।গিয়ে দেখি তুই নেই।এখন তুই বাহির থেকে কোথার থেকে আসছিস?”

সামিরা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল,

–“নাবিলকে খোঁজতে গেছিলাম।”

–“কেন? তুই না ওর সাথে এখন থেকে তেমন কথা বলবি না বলেছিলি?”

–“হ্যাঁ বলেছি।কিন্তু এখন তো ওকে খুঁজে বের করতেই হবে।কারন নাবিল আমাকে ভূল বুঝেছে হয়তো?”

–“কিহ?কেন?হঠাৎ ভুল কেন বুঝতে যাবে?”

সামিরা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে বলল,

–“সে অনেক কথা।ক্যান্টিনে অনেক কিছুই হয়েছে।”

–“আচ্ছা কি হয়েছে সেটা বলতো?”

অত:পর সামিরা সব কিছু খুলে বলল।একদিকে ছেলেটার কথা শুনে যেমন হাসি পাচ্ছে তেমনি নাবিলের জন্য খারাপ লাগছে।

—–++++

সারাদিন শেষে রাত দশটাই নাবিল বাড়ি ফিরেছে।কলিং বেলের আওয়াজে নাবিলের মা দরজা খুলে দেয়।দরজা খুলেই তিনি চমকে যাই।একি তার ছেলের কি হয়েছে? নাবিল মায়ের দিকে এক পলক তাকিয়ে ঘরে প্রবেশ করে।তার মা পেছন পেছন আসতে আসতে বলল,

–“এইসব কি করে হলো নাবিল?তোর হাতে,পায়ে,মাথায় ব্যান্ডেজ করা কেন?কি হয়েছে তোর?”

বলতে বলতেই নাবিলের মা কান্না করে দেওয়ার অবস্থা।নাবিল খুঁড়ে খুঁড়ে হেঁটে সোফায় গিয়ে বসল।আর বলিল,

–“পরে বলব আম্মু।এখন তুমি আমার এজন্য এক গ্লাস পানি দাও।আর মাথা প্রচুর ব্যাথা করছে তাই কড়া করে একটা কফি বানিয়ে দাও।”

–“হ্যাঁ হ্যাঁ দিচ্ছি তুই একটু বস।”

নাবিলের মা চলে যেতেই নাবিল চোখ বন্ধ করে সোফার সাথে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে।আর ভাবছে আজকে সারাদিনের কথা।সামিরাকে সে নিজেই বেশ পরিবর্তন করতে বলেছিল।কিন্তু এইটাই তার জন্য কাল হয়ে গেল।এতদিন সামিরার জ্বালানো গুলো প্রচুর ভালো লাগত তার।শুধু সবার সামনেই দেখাত যে সে প্রচুর বিরক্ত।কিন্তু আজ যখন সামিরা তার দিকে তাকিয়েও দেখেনি তখন তার খুব খারাপ লেগেছিল।সে’তো ছেয়েছিল সামিরা পরিবর্তন হয়ে যাক।কিন্তু তাকে এইভাবে ইগনোর করবে এমন পরিবর্তন সে চায়নি।আবার ক্যান্টিনে কোন ছেলে সামিরাকে প্রোপোজ করতে দেখে যেমন রাগ উঠেছিল।তেমন খারাপও লেগেছিল।তাইতো সে ওখান থেকে সোজা জনির কাছে চলে গেছে।কোন না কোন ভাবে রাগ ঝাড়তে হবে।জনির সাথে আগের থেকেই শত্রুতা।তারপর নাবিলের দলের ছেলেদের মেরেছে জনিরা।তাই আর থাকতে না পেরে জনির সাথেই মারামারি করে।এক পর্যায়ে নাবিলকে জনি মাথায় আঘাত করে।আর মারামারিতে হাতে পায়েও বেশ আঘাত পায়।সেখানে নাবিলের পেছনে রাজ আহানও যাই।তাদেরও হাল্কা পাতলা ছোট লাগে।তবে বেশি নাবিলের লেগেছে।তারা নাবিলকে হস্পিটালে নিয়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে আনে।

পর্বঃ৮
?সামিরা পপি?
__________________________
__________________________

নাবিল মায়ের ডাকে চোখ খুলে।মায়ের হাত থেকে পানির গ্লাস নিয়ে পানিটুকু এক নিমিষেই পান করে।মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,

–“কফি কোথায়?”

–“চুলায় গরম পানি বসিয়েছি।একটু পরেই হয়ে যাবে।”

–“ওহ আচ্ছা।আচ্ছা আমি রুমে যাচ্ছি তুমি নিয়ে এসো।”

–“না এইখানে বস।এক্কেবারে ভাত খেয়ে যাবি।তুই ঘরে গেলে আমি কফি দিয়ে আসব।এমনিতেই এখন সাড়ে দশটা বাজতে চলল।”

–“আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে ভাত দাও।”

–“আয় তুই বস আমি দিচ্ছি।”

–“হুম।”

নাবিল বসা থেকে উঠে আস্তে আস্তে টেবিলের সামনে গেল।একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল।আর তার মা ভাত বেড়ে দিল।এখন সমস্যা হলো খাবে কিভাবে?ডান হাতেই ব্যাথা পেয়েছে।তাই হাত নড়াতে একটু অসুবিধে হচ্ছে।তাই মায়ের দিকে করুন চাহনী নিক্ষেপ করে বলল,

–“আম্মু তুমি নিজের হাতে খাওয়ায় দাও না।ডান হাতে তো ব্যান্ডেজ করা তাই খেতে পারব না।”

মা বলল,

–” আচ্ছা ঠিক আছে।”

নাবিলের মা খাওয়ায় দিতে দিতে বলল,

–“এইসব জখম কি করো হয়েছে?”

নাবিল মায়ের দিলে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে বলল,

–“ও আসলে তেমন কিছু না।আজকে একটা আমাদের মিটিং ছিল।সেখানে তুমি ত জানো বাবু ভাইয়া এইবার কাউন্সিলর পদে দাঁড়াচ্ছে।তাই মিটিংটা হচ্ছিল।আর রেজা ভাইয়াও দাঁড়াচ্ছে কাউন্সিলর পদে।কিন্তু আজকে মিটিংয়ে রেজা ভাইয়ার মানুষরা এসে ঝামেলা করেছে।মারামারি হয়েছে অনেক সেখানেই এই অবস্থা হয়েছে।”

নাবিল ত খুব সুন্দর করে মিথ্যা বলে দিয়েছে।এখন কথা হলো নাবিলের মা তা বিশ্বাস করল কিনা।কিন্তু নাবিল যখন মায়ের দিকে তাকাল তখন দেখল তার মা তার দিকে সন্দেহর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।নাবিলকে বলল,

–“তোর কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।কেন জানি মনে হচ্ছে তুই মিথ্যা বলছিস।যদি মারামারি হতো তাহলে এতক্ষনে পুরো এলাকা খবর হতো।সত্যি করে বলতো কিভাবে হয়েছে এইসব?”

নাবিল এই ভয়টাই পাচ্ছিল।আর মনে মনে ভাবছে,

–“কে বলেছিল একে আমার মা বানাতে?পুরোই একটা গোয়েন্দা।উফফ কিভাবে যে সব খেয়াল রাখে আল্লাহই জানে?”

কিন্তু মুখে কিছুই বলল না।ইনোসেন্ট ফেস করে বলল,

–“আম্মু তাহলে তোমার কি মনে হয়?এই যে আমি তোমাকে মিথ্যা বলছি?তুমি এতদিনে আমাকে এই চিনেছো?তুমি জানো না তোমার ছেলে যে মিথ্যা বলে না?”

নাবিলের মা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে নাবিলের দিকে।কুঁচকানো ভ্রু জোড়া আরো খানিক কুঁচকে বলল,

–“তুই কি আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিস?নাকি উলটো প্রশ্ন করেছিস?কোনটা করেছিস বলতো?”

নাবিল চোখে মুখে সামান্য বিরক্তির ভাব আনার চেষ্টা করে বলল,

–“আম্মু তুমি যেভাবে জেরা করছ মনে হচ্ছে আমি কোন আসামী।তোমার কি আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না?তাহলে আকাশকে অথবা রাজকে অথবা আহানকে কল করে জিজ্ঞেস করে নাও।”

নাবিলের কথা বলার ধরন দেখে নাবিলের মা আর বেশি কিছু বলল না।নাবিলকে খাওয়ায় দিয়ে ঘরে দিয়ে আসল।আর কফিও দিয়ে আসল।

নাবিল কফি শেষ করে বেশ কিছুক্ষন বসে ছিল।মাথায় প্রচুর যন্ত্রণা শুরু হয়েছে তাই আর অপেক্ষা না করেই শুয়ে পড়ল।সারাদিনের দূর্যোগ শেষ এখন ক্লান্ত লাগছে তাই শোয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ল।

—–

এইদিকে সামিরা ছাদে বসে আছে।আজকে তার মনটাও প্রচুর খারাপ।কেন খারাপ তা জানে আবার জানেনা।এক নজরে আকাশ পানে চেয়ে রয়েছে।আকাশে মেঘ জমে আছে।পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢাকা।ঠিক আকাশের মত সামিরার মনের আকাশও কালো মেঘে ঢেকে রয়েছে।বুকের ভেতর এক তীব্র যন্ত্রণা,তীব্র আর্তনাদ ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে তাকে।আজ খুব কান্না করতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু না সামিরা কাঁদবে না।কারন সে তার মনকে সেই অনেক আগেই শক্ত করে নিয়েছিল।যাতে অল্পতেই তার কান্না না আসে।আকাশ পানে তাকিয়ে এক নিশ্বাস ত্যাগ করল।হয়তো এই নিশ্বাস এতক্ষন তার বুকের মধ্যে ভর করে ছিল।
ছাদে আরো কিছুক্ষন বসে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ল।আজকেও সামিরা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠল।উঠে ফ্রেস হয়ে মাকে সাহায্য করল।তারপর নাস্তা খেয়ে কলেজে বেড়িয়ে পড়ল।আজকে সামিরা একটু তারাতাড়িই কলেজে চলে এসেছে।উদ্দেশ্য একটাই আর তা হলো নাবিলকে সত্যিটা বলা।অনেক্ষন অপেক্ষা করল কিন্তু না নাবিল এলো না।তার বন্ধুদেরও দেখল না।আরশি আর রুপালি আসলে ওদের সাথে সামিরা ক্লাসে চলে যাই।কিন্তু বেহায়া মন ক্লাসেও বসছে না।মনে মনে ভাবতে লাগল প্রথম যেদিন নাবিলকে দেখেছিল সেদিনের কথা।

সেদিন সামিরা কলেজে ভর্তি হতে এসেছিল।ভর্তি হয়ে কলেজ থেকে বের হবে এমন সময় দেখল কলেজ গেটে প্রচুর ভিড়।ভিড়ের কারনে সামিরা সামনে যেতে পারছিল না।তখন সামিরার পাশে দাঁড়ানো একটা মেয়ের থেকে জিজ্ঞেস করল,

–“আপু এইখানে কি হচ্ছে?আর এত ভিড় কেন?”

মেয়েটা সামিরাকে এক পলক দেখে মুচকি হেসে দিয়ে বলিল,

–“আর বলো না।বাহিরের ছেলেরা এসে এই কলেজের মেয়েদেরকে প্রচুর ডিস্টার্ব করে।তাই আমাদের কলেজের সিনিয়র ছেলেরা ওই বাহিরের ছেলেদের মারছে।”

–“ওহ আচ্ছা।”

সামিরা ভিড় ঠেলে আরেকটু সামনে গিয়ে দেখল চার পাঁচটা ছেলে তিনটা ছেলেকে মারছে।তার মধ্যে সাদা শার্ট পড়া,গায়ের রঙ হলুদ,চোখের মণি সামান্য ঘোলাটে একটা ছেলে সবার থেকে বেশি মারছে।ছেলেটাকে দেখেই সামিরা হা করে তাকিয়ে ছিল।যেন সে কোথাও হারিয়ে গেছে।ছেলেটাকে আরেকটা ছেলে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলল,

–“নাবিল ছাড় অনেক হয়েছে।এইবার আরো মারলে নির্ঘাত মরে যাবে।”

নাবিল পিছনে ফিরে তাকিয়ে বলল,

–“তুই আমাকে ছাড় রাজ।এদের মেরেই ফেলব।আমাদের কলেজে এসে আমাদের কলেজের মেয়েদের হ্যারাস করবে সেটা আমি কিছুতেই মানব না।”

বলতে বলতেই রাজ নাবিলকে নিয়ে চলে গেল।আস্তে আস্তে ভিড় কমে এলো।কিন্তু সামিরা দাঁড়িয়ে থাকল।আর মুচকি হেসে বিরবির করে শুধু বলেছিল,”লুক লাইক আ মিস্টার ভিলেন।”

–“সামিরা সামিরা।কিরে কোথায় হারিয়ে গেলি?ক্লাস থেকে স্যার চলে গেছে সেই কখন আর তুই এখনও কি ভাবছিস?চল বাহিরে এখন সেকেন্ড ইয়ার স্টুডেন্টদের ক্লাস।”

রুপালীর কথায় সামিরার ধ্যাণ ভাঙে।পুরো ক্লাসে চোখ বুলিয়ে দেখল সত্যি সবাই চলে গেছে তাই রুপালীকে বলল,

–“না কিছু না।আচ্ছা চল বাহিরে যাই।”

–“হুম চল।”

এখন ১ঃ১৫ মিনিট।কলেজ ছুটি হয়েছে আরো পনেরো মিনিট আগে।কিন্তু সামিরা এখনও কলেজেই রয়েছে।সে সব জায়গায় নাবিলকে খোঁজেছে।কিন্তু নাবিলকে কোথাও দেখতে পেল না।তাই মনটা কেমন জানি করছে।আজকে সামিরার কিছুই ভালো লাগছে না।সেই সকাল থেকেই কেমন যেন অন্যমনষ্ক হয়ে রয়েছে।রুপালি ও আরশি তা খুব গভীর ভাবে লক্ষ করেছে।দুইজন সামিরার দুই পাশে বসল।আরশি সামিরাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“সামু কি হয়েছে তোর?সেই সকাল থেকে দেখছি কেমন উদাসীন হয়ে রয়েছিস?”

আরশির কথার পিঠে রুপালীও বলিল,

–“হ্যাঁ সামু বল কি হয়েছে?দেখ আমাদের মধ্যে তুই ই একমাত্র চঞ্চল।আর তুই আমাদের প্রতিদিন হাসি খুশি রাখিস।কিন্তু আজকে তোর এমন নিরবতা আমরা মেনে নিতে পারছি না।প্লিজ বল তোর কি হয়েছে?”

সামিরা রুপালী ও আরশির দিকে তাকিয়ে নিচের দিকে তাকাল।আর বলল,

–“নাবিলকে নিয়ে ভাবছি।গতকালের পর থেকে ওকে আর দেখিনি।কি হয়েছে ওর?কোথায় আছে?কি করছে?কিছুই বুঝতেছি না।সে’কি আমাকে ভূল বুঝে সামনে আসছে না নাকি অন্য কারনে?”

আরশি সামিরার এক হাতে নিজের হাতে নিয়ে বলল,

–“এই ব্যাপার?আচ্ছা এর জন্য চিন্তা করতে হবে না।হয়তো কোন কাযে বিজি আছে।”

রুপালিও বলল,

–“হ্যাঁ আরশি ঠিক বলছে।নাবিল হয়তো বিজি আছে।আর তুই ত জানিস ও রাজনীতির সাথে জড়িত তাই হয়তো বেশিই বিজি।”

আরশি বল্ল,

–” আর তুই চিন্তা করিস না।সব ঠিক হয়ে যাবে।এখন চল পুরো ক্যাম্পাস খালি হয়ে গেছে শুধু আমরাই আছি।পরে কিছু হলে শেষ।”

সামিরা আস্তে করে বলল,

–“হুম চল।”

চলবে….