সি আইডি অফিসারের ভালোবাসা পর্ব-5

0
1081

গল্প: সি আইডি অফিসারের ভালোবাসা
পর্ব-5
#Raihan
.
.

.

_মাসুদ দেখ তো বটগাছটাই ঐটা কিসের যেন একটা কাপড় না….(আমি}
_হুম তাই য়ি তো মনে হচ্ছে।
দেখে তো বোঝা যাচ্ছে এটা কোনো ওড়নার মত হবে।{মাসুদ}
_হুম চলতো দেখি।
তাই এটা কিসের কাপড় আর এটা কেন ই বা গাছের সাথে ঝুলানো সেটা দেখার জন্য আমরা গাছটার কাছে গেলাম।
গিয়ে দেখি অনেক লম্বা একটা কাপড় যা দেখতে অনেকটা ওড়নার মত ই।
কিন্তু সেখানে কি যেন একটা প্যাচানো আছে।
তাই সবুজকে প্যাচটা খুলতে বললাম।
কিন্তু প্যাচটা খুলার সাথে সাথে যা দেখলাম সেটা দেখার জন্য আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
_আরে মাসুদ এটা তো দেখছি একটা মেয়ের ছবি।
ছবির উপরে আবার লাল কালি দিয়ে ক্রস চিন্থ দেয়া দেখা যাচ্ছে।
_দেখতো মাসুদ ছবির সামনে এটা কি লেখা….?
আমি একটু এর আশে-পাশটা ঘুরে দেখি।
আর সবাই সাবধান!
যেহেতু এখানে কোনো একটা ক্রু পাওয়া গেছে সো অপরাধীরা আশে_পাশেই থাকতে পারে।
তাই নিরাপত্তার জন্য সবাই রিভেলবারটা ফায়ার করে নে।
আর আমি না বলা পযন্ত কেউ অপরাধীকে শুট করবি না
আর এতে যদি জীবনের রিস্ক নিতে হয় তাহলে সেটাই আমরা নিবো।
মনে রাখিস এ কেইসটা আমরা ঠিক ততক্ষণ পর্যন্তই সমাধান করতে পারবো না যতক্ষণ পর্যন্ত এই অপরাধের সাথে জড়িত একটা অপরাধীকে ধরতে না পারবো।
তাই “”বি কেয়ারফুল””!
তবে যা করবি সিচুয়েশন অনুযায়ী করবি।
এদিকে শাকিল নিজের রিভেলবারটা ফায়ার করে চলে যায় ভার্সিটির ভেতরে।
সেখানে কিছু পাওয়া যায় কি না দেখার জন্য।
ঠিক তখনি মাসুদ
_শাকিল! শাকিল আরে দেখে যা।
_কি রে কি হয়েছে!
কিছু পেলি?
_আরে এখানে দেখে যা।
_হুম কি হয়েছে বল।
_আরে এখানে মেয়েটির ছবিতে দেখা যাচ্ছে
মেয়েটির নাম সাথী।
জন্ম:10/5/1999
মৃত্যু:31/5/2020
থাকে লেডিস হোষ্টেলের 13নং কক্ষে।
_মানে?
এখানে মেয়েটিরমৃত্যুর দিন তারিখও লেখা আছে?(আমি) ?
_তার মানে মেয়েটি মরে গেছে….?(রেজা)
_আরে রাখ তো তর নেকা কান্না।
ঐ শালা তুই এত ইমোশনাল কেন রে?
তকে কোন কারণে যে সি.আই.ডি তে নিয়েছিলাম আল্লাহ ই জনে।
শালার মেয়ে মানুষ।
তকে কতবার বলছিনা সি.আই.ডি পদ ছেড়ে দিয়ে যাত্রাপালাতে অভিনয় করলে ভালো কমিশন পাইতি…..!?{আমি}
_শাকিল তো ঠিক ই বলেছে,
এত দিন হলে বেহুলা-লক্ষিনদর যাত্রাপালার অভিনেতা মফিজের মত অনলাইনে ভাইরাল অয়া যাইতি….?{সবুজ}
_ঐ দেখ! আমারে রাগ তোলাবি না বলে দিলাম!
তাই বলে এই একটা ছোট্ট কথার জন্য তরা আমাকে ইনসাল্ট করবি…?{রেজা}
_আরে ছাগল দেখলি না যে মেয়েটার মৃত্যু তারিখ লিখা আছে 31/5/2020….?(আমি)
_হুম দেখতেই তো পাচ্ছি।{রেজা}
_তাহলে আজকে কয় তারিখ…?(আমি)
_কেন তুই জানিস না…?
আজ তো May 30 তারিখ।
_ঐ শালা হাদারাম আজকে যদি 30 তারিখ হয় তাহলে মেয়েটা মরলো কিভাবে…..??(আমি)
_কিহ তার মানে মেয়েটি মরে নি….?{সবুজ}
_আরে হালা তরা তো দেখছি রেজার থেকেও বেশি গাধা।
এখানে মেয়েটির মৃত্যু তারিখ লেখা 31/5/2020
আর আজকে হলো 30/5/2020
তাহলে মেয়েটি মরলো কিভাবে…??{আমি}
_ওহ তাই য়ি তো।
তার মানে মেয়েটি এখনও বেচে আছে??{মাসুদ}
_exgatly right.
মেয়েটি এখনও বেচে আছে।
আর আজকে রাতে পরেই সকালে মেয়েটিকে ক্যাম্পাসের বটগাছটাই ধর্ষণ করা
অবস্থ্যায় ঝুলন্ত দেখতে পারবি।
_মানে কি বলছিস তুই? ?
তুই কি করে জানলি?{সবুজ}
_কেন এই ছবিটা থেকে।
আচ্ছা তরা বলতো এই ছবিটা থেকে তরা কি বুঝতে পারলি….?{আমি}
_কি আর জানমো..?
যেই হালায় এই ছবিটা প্রিন্ট করছে সেইটা আস্ত একটা হাদারাম।
শালাটা মনে অয় জর্দ্দা মনে কইরা গাজা খাইছিলো…?
আর তাই ছবিতে তারিখ লেখতে যায়া মাস 10দিতে যায়া 10 এর জায়গাতে ভূলে 5 লিখে দিছে।
নইলে 31 তারিখ আসার আগেই মেয়েটার ছবি তে মেয়েটার মৃত্যুর তারিখ 31 দিবে কেন?
….?{রেজা}
_আরে তরা এই আবালডারে লাত্তি দিয়া বাইরে ফালায়া দে ত।
শালা বুঝে কম চিল্লাই বেশি……?{আমি}
_ইহ শুধু আমারি দোষ! আমি ছবিটা দেখে যতটুকু বুঝতে পারছি সেটাই তকে বলছি।
রাগ করে আমারে বকা দেছ কেন….?
তুই তো আমাদের লিডার তুই য়ি বল কি বুঝতে পারলি….? {রেজা}
_আরে তাহলে মনোযোগ দিয়ে শোন।
এই ভার্সিটিতে যেহেতু কয়েক দিন ধরে বেশ কয়েকটা মেয়ের লাশ ধর্ষণ করা অবস্থায় এই বটগাছটায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যা সো আজকেও এই কাজ যে হবে তার প্রমাণ আমরা পেয়ে গেছি।
আর আজকে যেই মেয়েটি ওদের শিকার সেই মেয়েটাকেও পেয়ে গেছি।
আর এখানে মেয়েটির ছবি দেওয়া মানে এই মেয়েটিকে আজকেই হত্যা করা হবে
সেভাবেই ঠিক যেভাবে আগের গুলোকে হত্যা করা হয়েছে।
আর এই হত্যাটা যে করাচ্ছে সেই আশে পাশে বা এই শহরে মধ্যে কোথাও নেই।
আর যে বা যারা মেয়েদেরকে হত্যা করছে তারাও ঠিকভাবে জানেনা কোন মেয়েটিকে তারা হত্যা করবে।
আর তাদেরকে সঠিক ভাবে মেয়েটিকে শণাক্ত করার জন্য মেয়েটার ছবি এখানে রেখে দেওয়া হয়।
আর সেই ছবি দেখেই হত্যাকারী ছবিতে চিন্হিত মেয়েটিকে হত্যা করে থাকে।আর মেয়েটির ছবি হত্যাকারীরা বিকাল বা সন্ধার দিকে এখান থেকে নিয়ে যায়।
আর রাত্রে তারা মেয়েটিকে কিডনাপ করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা করে এই গাছটির সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
আর তারিখ লেখা দেখে বুঝা যাচ্ছে কিডনাপ করা মেয়েটিকে তারা হত্যা এমন কি ধর্ষণ করে থাকে রাত বারটার পরে।
_কিন্তু ভার্সিটি তো ছুটির পরে তালা দিয়ে দেওয়া হয়।
তাহলে হত্যাকারীরা এখানে প্রবেশ করে কিভাবে?{মাসুদ}
_আরে আমারও তো ঠিক এই একই প্রশ্ন।
হত্যাকারীরা এখানে প্রবেশ করে কিভাবে?{আমি}
_এই ভার্সিটির চাবি তো থাকে একমাত্র ভার্সিটির পিয়নের কাছে।
তাহলে কি এই ভার্সিটির ই কেউ কি এই হত্যার সাথে জড়িত আছে…??
_হুম হতে পারে।
এটা অবিশ্বাসের কিছু না।
তবে যেই য়ি হত্যার সাথে জড়িত থাকুক না কেন,
আইনের হাত থেকে পালিয়ে বাচতে পারবে না।
কিন্তু তার আগে আমাদের মেয়েটাকে বাচাতে হবে।
সন্ধ্যা প্রায় হয়ে এলো।
চল এখনি লেডিস হোষ্টেলে যেতে হবে।
আর আমাদেরকে সেখানে দেখে চিনতে পারলে সমস্যা হতে পারে।
মাসুদ তুই ডি.বি অফিসার মিস রত্নাকে ফোন দিয়ে লেডিস হোষ্টেলে আসতে বল।
_হুম বলছি।{মাসুদ}
_আর রেজা তুই মেয়েটার ছবি নিয়ে চল।
আর আর মিস রত্না আসলে তার কাছে দিয়ে দিবি।
_কিন্তু তর ধারণা অনুযায়ী ছবিটা নিয়ে গেলে তো হত্যাকারী তো ছবি না পেয়ে চলে যাবে।
আমরা ওকে ধরবো কিভাবে?(সবুজ}
_আরে ছবি না পেলেই তো ধরা সহজ হবে।
হত্যারারী আসার আগেই আমরা আড়ালে লুকিয়ে থাকবো।
আর যখন হত্যাকারী ছবিটা না পেয়ে খুজতে থাকবে
তখন আর মাত্র একজনে খুজবে না।
যদি কেউ আড়ালে দাড়িয়েও থাকে তাহলে সেও খুজতে আসবে।
আর ঠিক তখনি আমরা এ্যাটাক করবো।
কারণ বলা তো যায় না
হত্যাকারী একজন না হয়ে একাধিক জনও তো হতে পারে তাই না….?
_হুম কথাটা ঠিক বলেছিস
তাহলে তরা এখন চলে যা।
আর আমি যা যা বলছি ঠিক তা তা ই করবি।
আমি একটু লেডিস হোষ্টেলের দিকটা দেখে আসি।
কোনো তথ্য পাই কি না।
ওদেরকে বিদায় করে দিয়ে আমি লেডিস হোষ্টেলের কাছে চলে আসলাম।
কিন্তু আসার পথেই যত্তসব আপদ অপেক্ষা করছে।
আমি আসছি একটু হোস্টেল সুপারের সাথে কথা বলতে।
কিন্তু আসার পথেই যে এই আপদ টার সাথে দেখা হবে সেটা জানতো কে?
হোষ্টেলের সামনে আসতেই দেখি চাদনী ওর বান্ধবীদের নিয়ে হোষ্টেলের সামনে একটা গাছের নীচে বসে আছে।
এই পরন্ত বিকেলের শেষের দিকে হঠাৎ করে চাদনী কে দেখে আমি যেন পুরোই অবাক…?
এটা কি মেয়ে নাকি অন্যকিছু?
সবগুলো মেয়ে একসাথে বসে আছে।
আর তাদের ঠিক মাঝখানে চাদনী বসে আছে।
আজকে ঠিক এই মুহূত্বে মেয়েটাকে যে কতটা সুন্দর লাগছে সেটা কিছুতেই বুঝাতে পারবো না।
কিন্তু তাতে আমার কি?
চাদনী তো আমাকে সহ্য করতেই পারে না।
ওর সাথে তো আমার সাপ_বেজীর ফাইট।
আমি মাথা নিচু করে সামনের দিকে এগোচ্ছি আর মনে মনে বলছি মেয়েটা যেন আমাকে না দেখতে পারে।
কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
আমার বেলাইও ঠিক তাই য়ি হলো।
_চাদনী ঐ দেখ ভার্সিটির সেই ছেলেটা যাচ্ছে না….?
ও হ্যান্ডস্যাম একটু এই দিকে আসেন।
হঠাৎ চাদনীর সাথে থাকা একটি মেয়ে আমাকে ডাক দিলো।
আর সাথে সাথেই আমার পুরো গলা শুকিয়ে যেন কাঠ হয়ে গেছে।
_না ডেকে মরে গেলেও যাবো না।
আমাকে তাড়াতাড়ি এগোতে হবে নইলে বিপদ আছে।
সেদিন থানাতে মেয়েটাকে যে চর দিয়েছিলাম
আজকে আমাকে পাইলে জ্যান্ত পুতে ফেলবে।
মনে মনে কথাগুলো ভাবছি আর সামনে এগোচ্ছি।
_ঐ তকে যে ডাকলো শুনতে পাস নি?
নাকি তুই জন্মগত কালা!কানে শুনতে পাস না?
পেছনে ঘুরে দেখি চাদনী এগুলো বলছে।
আমি মাথা নাড়িয়ে না সম্মতি দিলাম।
_তাহলে এদিকে আয়…..{চাদনী}
_হুম বলেন কি বলবেন?{আমি}
_এখানে এসেছিস কেন….?
_এমনিতেই একটু দরকার ছিলো।
_দরকার ছিলো?
তো লেডিস হোষ্টেলের সামনে কি?
_আজব তো।
আমার দরকার তাই আমি আসছি।
আপনাকে বলতে যাবো কেন….??{আমি}
_কিহ! তর এখানে কিসের দরকার?
আমাকে বলতে হবে।
বলতে বলছি বল।….?{চাদনী}
_না বলবো না।{আমি}
_কিহ্ বলবি না?
_না বলবো না।
_সত্যিই তো বলবি না?
_না
এইকথা বলছে আর চাদনী আমার দিকে এগোচ্ছে।
হঠাৎ করে আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই চাদনী এত লোকের মাঝে এমন একটা কাজ করবে আমি কিছুতেই ভাবতে পারি নি।
সাথে সাথে আমার ………
#to_be_continue
…………
#ধন্যবাদ