সি আইডি অফিসারের ভালোবাসা পর্ব-3

0
1201

গল্প: সি আইডি অফিসারের ভালোবাসা
পর্ব-3
#Raihan
.
.

.

.
.
“আমার কথাটা শুনে এস.আই পকেট থেকে ফোনটা হাতে নিতেই তার ফোনে একটা কল আসে।
আর এস.আই নাম্বারটা দেখেই ঢুক গিলতে থাকে।
কারণ ফোনটা ছিলো কমিশনারের ফোন।
এস.আই ফোনটা রিসীভ করতেই
এস.আই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আর জি স্যার জি স্যার বলে বলে ফোনে জবাব দিচ্ছে।
এভাবে প্রায় দুই মিনিট কথা বলার পর
_কি অফিসার অবাক হচ্ছেন?
আরে অবাক হওয়ার মত কিছু নেই।
আচ্ছা আসি তাহলে। বাই….
এস.আই কে বাই বলে যেই মাত্র রুম থেকে বের হবো ঠিক তখনি খেলাম এক ধাক্কা।
ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই কে যেন এসে একেবারে আমার উপরে পড়ে যায়।
হঠাৎ তার মুখের দিকে তাকাতেই আমার যেন আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ে।
হায় রে বিপদ!
আরে এ টা তো দেখছি চাদনী।
নিচে পড়ে আছে।
হঠাৎ আমি কিছু বোঝে ওঠার আগেই চাদনি নীচ থেকে উপরে ওঠে দাড়িয়েই__
_ ঠাসসসসস…….

চাদনী আমাকে চর মারলো।
যে লোকটিকে ফলো করার জন্য সবুজ আর মাসুদকে পাঠিয়েছিলাম তার খবর জানতে আমাকে শীঘ্র-ই ওদের কাছে যেতে হবে।
এমন কি অবস্থ্যা বুঝে খুব শীঘ্রই এই কেইসের সমাধান করতে হবে।
কিন্তু যেখানেই যাচ্ছি
শালা এই মেয়েটার জন্য সব কিছুই ভেস্তে যাচ্ছে।
মাথাটাই গেলো খারাপ
হয়ে।
_ বেয়াদপ, লুচ্চা, মেয়েদের দেখলে গায়ে
পড়তে ইচ্ছা করে তাই না?
তোকে আমিইইই….
_ ঠাসসসসস….????
শালার এমনেতেই মাথা গরম।
তার উপর এর ঘ্যানর ঘ্যানর তাই আমিও মারলাম একটা চর।
আমি চরটা দেওয়ার সাথে সাথেই দেখি চাদনীর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।
আমার চরটা মনে হয় একটু জোরেই লেগেছে।
ওর গালে আমার চর দেওয়া পাচটা আঙ্গুলের দাগ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
আমি আর সেখানে এক মুহুর্তও দাড়ালাম নাহ্।
সোজা চলে আসার জন্য যেইমাত্র পা বাড়াবো ঠিক তখনি___
_কি রে শাকিল্লা এত সাহসি হয়া গেলি কখন?…..?{মাসুদ}
_আরে তরা এখানে……!
তরা এখান আসলি কখন?
_আরে শালা সেই কখন থেকেই তো তকে নেওয়ার জন্য এখান বসে আছি।
কিন্তু তোই তো ঐ মেয়ের সাথে ঝগড়াতে ব্যস্ত ছিলি।
কিন্তু মেয়েটা যখন তরে চড় দিছিলো
তখন কিন্তু তকে বাংলা ছবির কমিডিয়ান হাবা হাসমতের মত লাগছিলো….?{সবুজ}
_মা মা…মানে তো তরা কি এতক্ষণ এই দৃশ্যগুলা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখতেছিলি?{আমি}

_তো তর কি মনে হয়?
আমরা কি এখানে বসে বসে আঙ্গুল চুষতেছি….?{মাসুদ}
_ মামা তোর চর মারাটা কিন্তু ঠিক হয়
নাই।
এই কাজটা ভুল করলি।{সবুজ}
_কি করবো বল।
মেয়েটা ভার্সিটিতে প্রবেশের পর থেকেই বিরক্ত করে যাচ্ছে।
এমন কি একটু আগে না দেখে আমার সাথে নিজে ধাক্কা খেয়ে উল্টা আমাকেই গালাগালি শুরূ করে দিয়েছে?

_ আচ্ছা বাদ দে।
চল এখন বাসায় গিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে রাতে মিশনে বের হতে হবে।{সবুজ}
_হুম! যেহেতু একটা করে মেয়েকে ধর্ষণ করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে হত্যাটা এই ভার্সিটির একটা প্রতিদিনের ঘটনা।
সুতরাং আজকেও এই ঘটনা ঘটতে পারে।

কিন্তু আমার মাথায় আবার আরেকটি ঘটনা খুব ঘোরপাক খাচ্ছে।
এই চাদনী হঠাৎ থানাতে কেন?
আর কেনই বা খুব তাড়াহুড়া করে থানার দিকে রওনা দিয়েছে?
আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না।
_সবুজ,মাসুদ তরা এখন রেজাকে ভার্সিটি থেকে নিয়ে বাসায় চলে যা।
আমি একটু পর আসছি।{আমি}
_ওকে তাড়াতাড়ি আসিস!
এদিকে সবুজ,মাসুদ চলে গেলে আমি আস্তে আস্তে চাদনী যে দিকে গেছে সেই দিকে যেতে থাকলাম।
আমি দেখলাম চাদনী এই থানার এস.আই এর কাছ থেকে কিসের যেন একটা কাগজে সাক্ষর নিয়ে সি.আই.ডি ব্যুরো র দিকে যাচ্ছে।
আর আমি এখানে মিশনে আসার কয়েক দিন আগে বেশ কয়েকবার এই ব্যুরোতে এসেছিলাম।
তাই এই ব্যুরোর সব অফিসার আমাকে চেনে এমন কি আমিও তাদেরকে চিনি।
কিন্তু চাদনী এই ব্যুরোর দিকে যাচ্ছে কেন….?
চাদনী সি.আই.ডি ব্যুরোর ভিতরে চলে গেলে আমি দৌড়ে সেখানে চলে যায়।
এবং একটা পিলারের আড়ালে দাড়িয়ে চাদনী সেখানে এক অফিসারের কাছে কি বলছে শুনার চেষ্টা করি।
কিন্তু স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না।
এখানে আসার পথে বেশ কয়টা অফিসারের সাথে আমার দেখা হয়েছে।
সবাই স্যালুট করেছে।
কিন্তু আমি যে এখানে আসছি কেউকে না জানাতে বলে দিয়েছি।
_এই ব্যুরো তে নাকি নতুন ACP এসেছে।
সে কোথায়…..?
_স্যার তো এখন এইখানে নেই।
স্যার তার সাথে আরো তিনজনকে নিয়ে একটা মিশনে গিয়েছে।
_আমি সি.আই.ডি অফিসার নীলা !
কয়েক দিন আগে আমি এই ব্যুরোতে শিফট হয়েছি।
আর আজ থেকেই জয়েন করতে এসেছি।
এই কথা বলে চাদনী ওদের সামনে একটা কার্ড তুলে ধরে।
আর সাথে সাথে সবাই তাকে স্যালুট করতে থাকে।

এখন আমার আর বুঝতে বাকি থাকলো না যে কেন চাদনী থানায় গিয়েছিলো
এমন কি কেন চাদনী এই সি.আই.ডি ব্যুরোতে এসেছে।
তাহলে চাদনীও কি আমাদের মত ই সেই ভার্সিটির স্টুডেন্ট না….?
ও কি তাহলে আমাদের মত ই এই ভার্সিটিতে মিশনে এসেছে?
এখন শাকিলের কাছে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে।
আর শাকিলের এটাও বুঝতে বাকি থাকলো না যে চাদনী কেন সবসময় তাকে কেন সন্ধেহ করে।
চাদনী হয়ত আমাকে সন্ধেহ করে যে আমি অপরাধীদের কারো সাথে জড়িত।
কেন না আমি ভার্সিটিতে কোনো প্রকার ভয় ভীতির মোড ধরে থাকি না।
সমস্ত ভার্সিটি যেখানে ভয়ে ভীত সেখানে আমিই একমাত্র মানুষ যে কি না কোনো প্রকার ভয়ের পরিচয় না দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভার্সিটিতে চলাচল করি।
হয়ত এজন্যই আমার উপর চাদনীর সন্ধেহটা বেশি।
সেখানে ACPকে না পেয়ে চাদনী সোজা সি.আই.ডি ব্যুরো থেকে বের হয়ে ভার্সিটির দিকে চলে যায়।
আর আমি পিলার ঘেষেই দাড়িয়েছিলাম
আমাকে সে দেখতে পারে নি।
চাদনী বের হয়ে যাওয়ার পর আমি গিয়ে সি.আই.ডি ব্যুরোতে গিয়ে ঢুকি।
আর আমার হঠাৎ প্রবেশে অফিসারটা যার সাথে একটু আগে চাদনী কথা বলছিলো সে অবাক হয়ে যায়।
সাথে সাথে আমাকে স্যালুট করে বলতে থাকে__
_স্যার একটু আগে আমাদের এই ব্যুরোতে একজন নতুন সি.আই.ডি অফিসার এসেছিলো।
যে কি না আমাদের এখানে শিফট হয়েছে।
সে আপনার সাথে দেখা করতে এসেছিলো।
আর সে এখন থেকে আমাদের এই ডিপার্টমেন্টেই থাকবে।
_হুম আমি জানি এমনকি দেখেছি ওনাকে!
_কি বলেন স্যার!
আপনি কি করে জানলেন?
_ওকে বাদ দাও এসব কথা।
যখন সে এখানে আসবে আর আমার কথা জিজ্ঞাস করবে তখন বলবে আমি মিশনে আছি।
আর সে যেন কিছুতেই আমাকে চিনতে না পারে।
এমন কি কখনো তাকে আমার ছবিটাও দেখাবে না ওকে…..!
_জি আচ্ছা স্যার!
অফিসারকে বলে সেখানে আমাদের এই ব্যুরোর সব অফিসারদের অ্যালবাম থেকে আমার ফটোটা খুলে রেখে দেয়।
আর তার সাথে সবুজ,মাসুদ,এমনকি রেজার ফটোগুলোও এক এক করে খুলে রেখে দেয়।
_যাক বাবা মেয়েটা এই অ্যালবামটির দিকে খেয়াল করে নি।
না হলে সমস্যা ছিলো।
_আর শোন অফিসার যেই মেয়েটা আজকে আমাদের এখানে যোগ দিয়েছে তাকে তোমরা সবাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিবে।
এমন কি সে যেভাবে যা যা করতে বলবে তোমরা সেভাবে তা তাই করবে ঠিক আছে…?
মনে করবো আমার অনুপস্থিতিতে আমার দায়িত্ব ওনাকে দিয়ে গেলাম।
_জি আচ্ছা স্যার!
এর পর অফিসারের সাথে আরো কিছুক্ষণ এই কেইসের ব্যাপারে কথা বলে চলে আসলাম।
কিন্তু ব্যুরো থেকে বের হয়ে বাইরে আসতেই আমি পুরাই অবাক।
_আরে চাদনী………….

to be continue