সি আই ডি অফিসারের ভালোবাসা Part-01

0
1732

গল্প: সি আই ডি অফিসারের ভালোবাসা
Part-01
Writer:Raihan
.
.
_এই ছেলে এদিকে আয়…?
_জি আমাকে বলছেন?
_এখানে তর সাথে তো অন্যকাউকে দেখছিনা।
তাহলে কাকে বলবো?
তকেই বলছি এদিকে আয়।
_জি বলেন।
_ ভার্সিটিতে নতুন নাকি?
_হুমমম।
আজকেই প্রথম আসলাম।
_কোন ইয়ার?
_জি! অনার্স ফাইনাল ইয়ার।
_চাদনী ছেলেটা দেখছি আমাদের সেইম ইয়ার!
{সাথে দাড়িয়ে থাকা একটি মেয়ে কথাটি বললো।
ও তাহলে মেয়েটার নাম চাদনী?
চেহারাটাও মাশাআল্লাহ্
একেবারে পরীর মত।
এক দেখাতে যেকোনো ছেলেই মেয়েটার প্রেমে হাবু-ডুবু খাবে।
কিন্তু কথাতে বুঝা যাচ্ছে মেয়ে তো নয় যেন ফায়ার করা পিস্তল।
_ ভালো।
আইডি কার্ড কোথায় দেখি?
_এই যে।
যখনি আইডি কার্ডটা দেখিয়ে চলে আসতে যাবো ঠিক তখনি…….
_এই কোথায় যাস?
এদিকে আয়।
_জ্বি বলেন।
_এই ভার্সিটিতে কয়েক দিন ধরে যে নতুন কান্ড ঘটছে
সেটা কি তুই জানিস?
_হুম।
সেটার জন্যই তো আমার আসা
(মনে মনে বললাম)
_কিছু বললি?
_না ইয়ে মানে আমি জানি যে কান্ডগুলো যে ঘটছে।
_হুম ভালো।
_তাহলে আমি এখন আসি মেডাম?
_হুম আস।
আর দেখ ভূলেও কিন্তু আমাদের কাছে আসার বা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করবি না।
আমার বাবা কিন্তু এই থানার ওসি।
যদি উল্টা পাল্টা কিছু করিস না তাহলে সোজা লাল দালানের ভাত খাওয়াবো
মনে রাখিস।
_জ্বি আচ্ছা।
মেয়েটার সাথে আরও কয়েকটা মেয়েকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম।
কিন্তু অন্যকোনো মেয়ে কিছু বলছেনা।
শুধু এই মেয়েটা একাই এতগুলো কথা বললো।
অবশ্য বলার ই কথা।
কারণ এখন বর্তমান যে পরিস্থিতি কখন যে কোন মেয়ে সেই হত্যায় স্বীকার হয় সেটা একমাত্র খুনিদেরকে ছাড়া কেউই জানে না।
আর কিছু না বলে সেখান থেকে ক্লাসরুমের দিকে চলে আসলাম
ওহ আপনাদেরকে তো আমার পরিচয়টাই দেওয়া হয় নি।
আমি শাকিল রায়হান।
বাবা মায়ের একমাত্র আদরের ছেলে।
আমার সম্পর্কে আর পরিচয় না হয় গল্পেই জানতে পারবেন।
আর আমার একটা ছোট্ট দুষ্ট_মিষ্টি বোন আছে।
ওর নাম ফারিয়া বিনতে মোসলিমা।
ও এবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে ওঠেছে।
আর এই ভার্সিটিতে ডিপার্টমেন্ট আমাকে সহ আরও তিনজনকে একটা সমস্যার সমাধানের জন্য পাঠিয়েছে।
এই ভার্সিটিতে একটা অঘটন বার বার ঘটে যাচ্ছে আর সেটা যে কারা কিভাবে করছে তা কেউ হদিস পাচ্ছে না।
সমস্যাটা হলো প্রতিরাতে এই ভার্সিটিতে একজন করে মেয়ে নিখোজ হচ্ছে
আর পর দিন সকালে সেই মেয়েটির ধর্ষণ করা অবস্থায় লাশ পাওয়া যাচ্ছে ক্যান্টিনের বড় বট গাছটায়।
কিন্তু কে বা কারা এসব করছে কেউ বলতে পারে না।
তবে এই কাজটা যে ভার্সিটিরই কোনো ছাত্রদের কাজ আর এই কাজগুলো যে অন্যকেউ টাকার বিনিময়ে করাচ্ছে সেটা বিষয়ে কারো সন্ধেহ নেই।
আর এ জন্য ই নতুন অবস্থায় মেয়েগুলো আমাকে দেখে এতগুলো প্রশ্ন করলো।
আর যে তিনজনকে সহ ডিপার্টমেন্ট আমাকে এই কেইসটি সমাধানের জন্য পাঠিয়েছে ওরা তিনজন আমার প্রাইমারি স্কুল লাইফের বন্ধু।
সবূজ,মাসুদ,রেজা।
আমরা একসাথে স্কুল,কলেজ,ভার্সিটির গন্ডি পেরিয়ে এখন একই সাথে একই ডিপার্টমেন্টে আছি।
আর আমরা যে এই ভার্সিটিতে ডিপার্টমেন্টের আদেশে আসছি আর আমরা কে বা কারা সেটা একমাত্র এই ভার্সিটির অধ্যক্ষকে ছাড়া আর কেউ জানেনা।
আর কাউকে না জানাতে বলেও দিয়েছি।
পরিচয় দিতে দিতে অবশেষে আমি ক্লাসরুমের কাছে চলে আসলাম।
ক্লাসরুমের বারান্দায় দেখি হারামিরা একসাথে দাড়িয়ে আছে।
আমাকে দেখে হাসছে।
_কিরে মামো ঐখানে মেয়ের মাঝে কিসের exam দিলি…? (সবুজ)
_একটুর জন্য আমরা বাইচা গেছি।
মনে করছি আবার তর সাথে আমাদেরকেও ধরে নাকি
তাই তরে ধরা দেইখ্খা আমরা দৌড় দিছি।
আমরা তো ভাবছি তরে নাকি আবার মেয়েরা ধর্ষক ভেবে ধোলাই দেয় নাকি
তাই দৌড়টা একটু জোরেই দিছি…? {মাসুদ}
_আরে তেমন কিছু না।
চল ক্লাসে যায়।
_হুম চল {রেজা}
ক্লাসে ঢুকতে আমরা পুরোই অবাক!
সারাক্লাশ জুড়ে বই খাতা তে এলোমেলো।
শিক্ষক লেকচার দিচ্ছে ঠিকই কিন্তু কোনো ছাত্র_ছাত্রী মনোযোগ দিয়ে শুনছে না।
আমরা চার জন ক্লাশে প্রবেশের সাথে সাথে সকল ছাত্র_ছাত্রী বসা থেকে দাড়িয়ে যায়।
মনে হচ্ছে আমরা কোনো এনিয়েল
আর আমাদেরকে দেখার জন্য জনগণ এখানে দাড়িয়ে আছে।
_এই এই তোমরা এ কি করছো?
সবাই দাড়িয়ে গেলে কেন?
বসো বলছি বসো!(শিক্ষক)
কিন্তু শিক্ষকের কথা কেউ শুনছে না।
সবাই তবুও আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে
_আরে এদের দেখে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।
এরা তোমাদের ক্লাসমেট।
আজকে ওরা আমাদের ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে।
এর পর আমরা এক এক করে সবার সাথে পরিচয় হয়ে সবার পছনের একটা বেঞ্জে গিয়ে বসি।
আমাদের সাথে পরিচয় হয়ে সবাই দেখলাম খুব খুশি হলো
সবাইকে খুশি খুশি দেখলাম।
কিন্তু সামনের বেঞ্জে একটা ছেলেকে দেখলাম যে কি না মনে হয় আমাদের এই কলেজে আসাতে খুব বিরক্ত হয়েছে।
সেটা ওর মোড অফ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
ওর নাম রাফি।
ভার্সিটিতে ঢুকার পথেই ছেলেটার সাথে আমাদের বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে।
ছেলের চলাফেরাটা আমার কাছে কেমন যেন সন্ধেহ মনে হচ্ছিলো।
কিন্তু প্রথমে ততটুকু গ্রাহ্য করি নি।
কিন্তু এখন কেন যেন ছেলেটাকে খুব সন্ধেহ লাগছে।
আর সন্ধেহ লাগার প্রথম কারণটা হচ্ছে
আমরা ক্লাসে প্রবেশের পর সবার সাথে পরিচয় হবার পর থেকে
ছেলেটা বার বার ওর সামনে রাখা ব্যাগের মধ্যে কি যেন দেখছে আর আমাদের দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।
_আচ্ছা সবুজ দেখতো প্রথম বেঞ্জের ছেলেটা বার বার ওর সামনে রাখা ব্যাগের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে আর বার বার আমাদের দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে না?…?{আমি}
_হুম রে! তাই য়ি তো মনে হচ্ছে।{সবুজ}
_আমার কেন জানি ছেলেটাকে সন্ধেহ হচ্ছে।{আমি}
_হুম হবেই তো।
তুই আমাদের সবার থেকে বড় পোষ্টে আছিস আর আমাদের সবার বস তো তাই সবাইকে সন্ধেহ করাটা তর একটা নেশাতে পরিণত হয়েছে।….? {রেজা}
_দেখছিস?
তাহলে বস হিসেবে তদের কাছে আমার সম্মান আছে…. {আমি}
_আরে রাখ তুই আমাদের বস!
শালা ছোটবেলা থেকে একসাথে বড় হয়েছি।
কত যে তর প্যান্ট খুলে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখেছি তার হিসেব নেই আর সেই তুই আসছস বস দাবি করতে?…? {মাসুদ}
_আরে তর কি মনে নাই যে একদিন আমরা আম চুরি করতে গিয়ে কি দৌড়ানিটাই খাইছিলাম।
আর তকে কেমন ধোলাই দিছিলো?
আর সেই তুই কি না আমাদের বস?
হিহিহি…..? {রেজা}
_ঐ ঐসব ছোটবেলার কাহিনী বলা বাদ দে।
এখন আমরা যে কাজে এখানে এসেছি সেই কাজটা আগে কমপ্লীট করতে দে।{আমি}
_তুই কি ঠিক বলছিস?
ছেলেটা কি সত্যিই তর কাছে সন্ধেহের তালিকাতে পড়ে?
কিন্তু ছেলেটা কোথায়??{রেজা}
_আরে হ্যা রে মামো ঠিকই বলছি দেখ ঐ ছেলেটা?
হাত দিয়ে ইশারা করে যখনি ছেলেটাকে দেখাতে যাবো ঠিক তখনি দেখি ছেলেটা ক্লাসে নেই।
আর ছেলেটার জায়গাতে সেই মেয়েটি বসে আছে
যে মেয়েটি ভার্সিটিতে প্রবেশের সাথে সাথেই আমাকে নানা ধরণের প্রশ্ন করা শুরু করেছিলো।
আমার হাতের ইশারাটা মেয়েটির দিকে পড়তেই দেখি মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।
_কি রে মামো ছেলেটা কই?
এটা না দেখছি তর সেই প্রথম exam নেওয়া মেয়েটা……? {রেজা}
_আরে সত্যিই তো!
ছেলেটা গেলো কোথাই?
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শাকিল।
এবার আর শাকিলের বুঝতে বাকি থাকলো না যে ছেলেটাকে সন্ধেহ করে শাকিল কোনো ভূল করে নি।
নিশ্চয় ছেলেটাকে কোনো ক্রমে আটকাতে গেলে এই কেইসের কোনো একটা ক্রু পাওয়া যেতে পারে।
যেহেতু সবুজ আর মাসুদ ছেলেটাকে দেখেছে
তাই শাকিল সবুজ আর মাসুদকে ছেলেটাকে ফলো করার জন্য পাঠিয়ে দেয়।
আবার এদিকে ক্লাস থেকে বের হওয়ার পর ঘটলো অন্য ঘটনা।
ক্লাস থেকে বের হওয়ার পরেই
_দোস্ত আমি একটু ওয়াশরুমে যাবো?{রেজা}
_যাবি তাহলে যা।
আমাকে বলতে হবে নাকি?{আমি}
_ওকে তুই পাচ মিনিট দাড়া আমি পনের মিনিটের মধ্যেই আসছি।
কথাটা বলেই রেজা দিলো দৌড়।…?‍♂️
আমি ভাবছি হয়ত ওর খুব ওয়াশ রুমে ধরেছে তাই এভাবে দৌড় দিয়েছে।
কিন্তু পেছন দিকে তাকিয়ে আমি তো অবাক।….?
একি এটা তো সেই মেয়েটা।
রাগে যেন মেয়েটার পা মাটিতে পড়ছে না।
মেয়েটা দেখছি আমার দিকেই আসছে।
আরেব্বাস এখন আমি বুঝতে পারছি শালা রেজা কি জন্য ওয়াশরুমের অজুহাতে দৌড়ে পালাল।
মেয়েটা এসেই___
_ঐ কি সমস্যা তর হুম?
তোই আমার দিকে হাত ইশারা করে কি দেখাতেছিলি?…?
রাগের চোটে মনে হচ্ছে আমাকে মেয়েটার কাধে তুলে আছাড় দিবে।
_না ইয়ে মানে……
_কিসের না ইয়ে মানে করছিস?
সত্যি করে বল না হলে কিন্তু এখনি চিৎকার করে আমি ভার্সিটির সবাইকে জড়ো করবো।
_হায় রে কপাল এ আমি কোন বিপদের মধ্যে পড়লাম?…?
ও মেডাম তখন আমি হাতে ইশারা করে আপনাকে দেখাই নি।
সেখানে সিটে একটা ছেলেকে দেখিয়ে ছিলাম।
_কিহ! আমার কাছে মিথ্যা কথা বলিস?
তোই চিনিস আমাকে?…?
_ওকে সরি মেডাম।
আমার ভূল হয়ে গেছে।
আমি আর কখনোই কাউকে হাত ইশারা করে দেখাবো না।
এখন আমি আসি?
_ঐ কিসের আসি রে?
এখানে দাড়া আর বিশবার কান ধরে ওঠ বস কর।…?
_excusme madam!
ভদ্রতা বজায় রাখুন।
আর আমি আপনার জুনিয়র কেউ না যে আমার উপর আপনি হুকুম চালাবেন।
আর language ঠিক করে কথা বলুন।
মনে রাখবেন একাধারে তিনবারের উপর বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করবো না।
আশা করি কথাটা মনে রাখবেন।
কথাটি বলে পেছনে ঘুরতেই হঠাৎ মেয়েটা আমার শার্টের কলার ধরে ফেলে।
_ঐ কি বললি তোই?
আমাকে তর সাথে ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলতে হবে?….?
তোই তো আমাকে চিনিস না।
আমি ইচ্ছে করলে তকে পাচ মিনিটের মধ্যে জেলে পুড়ে দিতে পারি।
_আরে রাখেন আপনার লেকচার।
বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
কথাটা মনে থাকে যেন।
বাই।।।
কথাটা বলে আমি আবার পেছন দিকে ঘুরতেই……….
#to_be_continue
.
#পর্ব_1