Game 2 Part-18+19

0
409

#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১৮

নিশি বলে উঠে..
– কথা!

সবাই তাকিয়ে দেখে হ্যাঁ এটা কথা’ই! নির্ঝর আর কথা একসাথে আসছে। কথা কে চিনতে কারোই কষ্ট হয় না কারন ও একজন নামকরা অভিনেত্রী! তবে ও নির্ঝরের সাথে এটা সবাইকে খুব ভাবাচ্ছে!
এখানে মেহেরিনও খানিকটা অবাক তবে সেটা প্রকাশ করছে না। নির্ঝর কথার হাত ধরে সবার সামনে এসে দাঁড়াল। নির্ঝর সবাই উদ্দেশ্য করে বলল..

– হেই গাইস! মিট কথা মাই ফিয়ান্সে!

সবাই অবাক শুধু নিহা বাদে কারন এটা সে জানত। হঠাৎ মেহেরিন খুশিতে হাত তালি দিয়ে বলে..
– কি! আপনার ফিয়ান্সে! মানে আপনি কথা কে বিয়ে করছেন। হেই কনগ্রেচুলেশন!

বলেই মেহেরিন গিয়ে কথা কে জরিয়ে ধরল। আর নির্ঝরের সাথে হ্যান্ডশেক করল। নির্ঝর অনেকটা অবাক হলো তার বিয়ের কথা শুনে মেহেরিন এতোটা হ্যাপি হয় কি করে! নির্ঝর ফিসফিসিয়ে নিহা কে জিজ্ঞেস করতেই নিহা বলল..

– কারন ওর ঘাড় থেকে তুই নামছিস ও খুশি হবে না তো কি হবে। বাই দ্যা ওয়ে কথা কিন্তু খুব সুন্দরী!

– তবে আমার মেহু পাখি থেকে না হুহ!

এদিকে মেহেরিন কথা কে বলে..
– তুমি জানো তুমি দেখতে খুব সুইট আর সুন্দর!

কথা হেসে বলে..
– আর তুমি দেখতে খুব কিউট!

মেহেরিন হেসে বলে..
– থ্যাংকু থ্যাংকু! তবে তোমার সাথে এই লেজ কাটা ব্যাঙ’কে খুব মানাবে ট্রাস্ট মি!

নিশি বিড় বিড় করে ইহান কে বলে..
– দেখলি তো, নির্ঝর ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেসে গেল। শেষমেষ কি না কথা!

– দেখবি আদুরী ওদের বিয়ে দিয়েই ছাড়বে!

– তাহলেই হয়েছে!
অতঃপর দুজনেই মুখ টিপে হাসতে লাগলো!

এদিকে কথা বলে উঠে..
– লেজ কাটা ব্যাঙ মানে!

নির্ঝর বলে উঠে..
– আমার নিকেনেম এটা!

– ওহ বেশ ভালো দিয়েছ কিন্তু!

– আই নো! আচ্ছা চলো লেট হচ্ছে।

– হুম চলো!

মেহেরিন যেতে নিবে তখন নির্ঝর কে বলে..
– আপনার ফিয়ান্সে কিন্তু খুব সুন্দরী! বেস্ট অফ লাক!

বলেই মেহেরিন চলে গেল। কথা নির্ঝর এর ঘাড়ে হাত রেখে বলে..
– তোর মেহু পাখি মনে হচ্ছে আমার আর তোর বিয়ে দিয়েই ছাড়বে।

– দোস্ত দেখ তুই আর এমন করিস না আমি এমনেতেই ভয় পেয়ে আছি।

কথা হেসে বলে..
– যাই বলিস তোর পছন্দ কিন্তু হেব্বি। মেহেরিন বর্ষা খান মানে বুঝিস।

– হ্যাঁ বুঝি বুঝি তেজপাতা করে দিচ্ছে আমার জীবন টা। এখন শুধু কাজটা হোক তাহলেই হবে ‌

– হুম এজন্য’ই তো আমি এসেছি তোকে আর মেহেরিন কে এক করতে।

– তা তো করতেই হবে খুব ভালোবাসি আমি ওকে!

কথা নির্ঝর’র কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে..
– আমিও তো তোকে অনেক ভালবাসি তবে তুই যদি আমার ভালোবাসাটা বুঝতি!

– কিরে কি ভাবছিস।

– কিছু না চল!

– হুম!

অতঃপর সবাই ফ্লাইটে উঠে। মেহেরিন আর নিরবের সিট একসাথে থাকার কথা ছিল কিন্তু নির্ঝর আর নীল প্ল্যান করে টিকেট চেঞ্জ করে দেয় যার কারনে মেহেরিন আর নির্ঝরের সিট একসাথে হয়। অতঃপর নিরব কাব্য’র সাথে বসে। নির্ঝর মেহেরিন’র পাশে বসার পর মেহেরিন’র সাথে একটা কথাও বলে নি। এতে মেহেরিন’র কেমন একটা লাগলো কারন সে সবসময় বক বক করতে থাকে মেহেরিন’র সাথে। এবার বলেনি শুধু ম্যাগাজিন’এ মুখ গুঁজে আছে। কিন্তু এতে তার কি কি? আরো ভালোই হয়েছে সে পুরোটা জার্নি ঘুমিয়ে কাটাল। এদিকে নির্ঝর বসে শুধু এই ঘুমন্ত মেহেরিন কে দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিল। সে মেহেরিন কে জেলাসি ফিল করাতে চায় তাই ওর সাথে একটা কথাও বলেনি।
.
প্যারিসে পৌছানোর সবাই একটা হোটেলে গিয়ে উঠল। রুমে আগে থেকেই বুক করা ছিল। বিয়েটা এই হোটেলে হবে তাই ম্যানেজার এসে দুই কাপল কে অভিনন্দন জানালো। অতঃপর যে যার মতো রুমে চলে গেল। রুমে যাবার পর’ই মেহেরিন ড্যাভিল কে কল করল আর বলল নকল নিরবের উপর নজর রাখতে।

বিয়ের এই ১০ দিন ধরে চলবে অনুষ্ঠান! আর এখানে নকল নিরবের প্রত্যেকটা পদক্ষেপ সম্পর্কে তাদের জানতে হবে। হঠাৎ করেই কেউ নক করল। মেহেরিন দরজা খুলে দেখল এমদাদ হোসেন। তিনি নানা ভাবে মেহেরিন কে অনুরোধ করল যাতে তার ছেলকে ওদের থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে। মেহেরিন ও তাকে প্রমিস করল নিরব কে ফিরিয়ে দেবে।

এদিকে নিশি’র মন খারাপ। ১০ দিন ধরে দেখতে পারবে না নিশান কে। সে মন খারাপ করেই রুমে ঢুকল। বিছানায় ব্যাগ টা রেখে সোজা চলে গেল ওয়াসরুম এ। ফ্রেশ হয়ে আয়ানার সামনে এসে দাড়িয়ে মুখ মুছতে লাগল। আয়নায় তাকাতেই কেউ তার নজরে পরল। নিশি নিশান কে দেখেছে। নিশান তার বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় তাকে দেখছে। নিশি তাড়াতাড়ি করে পিছনে ঘুরল কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না। সে ভাবল তার মনের ভুল। নিশি আবারো মন খারাপ করে আয়নায় তাকিয়ে নিজের মুখ মুছে সামনে ঘুরতেই নিশান কে দেখল। সে আবারও ভাবল এটা তার কল্পনা। তাই সে তার দিকেই তাকিয়ে বলল..

– যদি তুমি কল্পনা না হয়ে আমার বাস্তব হতে!

বলেই নিশি পাশ কাটিয়ে আসতেই নিশান তার হাত ধরে তার দিকে ঘুরাল। অতঃপর তার গালে হাত রেখে বলল..
– আমি তোমার কল্পনা নই জান পাখি!

নিশি চমকে উঠলো। সে নিশানের গালে হাত রাখতেই বুঝল এটা আসলেই নিশান। সে খুশি হয়ে হেসে তাকে জড়িয়ে ধরল। বলতে লাগল..
– তুমি এখানে!

– আমার জান পাখি যেখানে আমিও সেখানে! ভাবলে কি করে তোমাকে ছাড়া ১০ দিন থাকবো! হুহ একদিন তো দূরে থাক এট মূহুর্ত তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি না আর তুমি ১০ দিনের কথা বলো!

– আই লাভ ইউ নিশান। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না তুমি এখানে! খুব মিস করছিলাম তোমায়!

– কচু করছিলে? একটা বার কল দিয়েছিলে!

– ব্যস্ত ছিলাম জানো’ই তো আদুরীর বিয়ে!

– হ্যাঁ তা জানি তবে ব্যাপারটা কেমন খাপছাড়া না। তুমি তো বড়! তোমার আর আমার বিয়েটা আগে হলেই ভালো হতো!

– শুরু হয়ে গেলে তুমি!

– বিয়ের কথাই তো বললাম, এতে রাগ করছো কেন?
বলেই নিশি কে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।

নিশি বুঝতে পারল নিশান কিছু একটা করবে এখন। সে বলে ওঠে..
– দেখো কিছু করার কথা ভাববে না এখন। খুব খারাপ হবে।

– বাগে পেয়েছি তোমাকে ছাড়ছি না।

– নিশান না..

– আজ ছাড়ছি না জান পাখি!
বলেই নিশি’র দিকে আগাতে থাকে। নিশি খানিকক্ষণ লাফালাফি করে এখন চোখ বন্ধ করে নিয়েছে।‌ নিশান আজ তাকে ছাড়বে না সে বুঝেছি। নিশান এক হাত দিয়ে নিশি’র চুল গুলো পিছনে সরিয়ে দিয়ে ঘাড়ে আলতে করে চুমু গেল। নিশি নিশানের শার্ট আঁকড়ে ধরে। নিশান নিশি’র ঠোঁটের দিকে আগাতেই হুট করেই কেউ রুম নক করল। নিশান বিরক্ত হয়ে ঠোঁটে কামড় দিয়ে নিশি কে ছেড়ে দিলো। নিশি নিশানের মুখ দেখে ফিক করে হেসে দিলো। নিশান বিরক্ত হয়ে বলল..

– হাসছো তুমি!

– তোমার মুখটা ( বলেই হেসে দিয়ে নিশানের বুকে ঢলে পরল। )

নিশান এক হাত দিয়ে নিশি কে ধরে বলল..
– এতো ব্যাড টাইমিং কার হতে পারে!

– আমার বোন ছাড়া নেই না!
বলতে বলতে আবার নক করলো। নিশান বললো..
– যাও দরজা খুলো আমার শালিকা বলে কথা!

নিশি হাসতে হাসতে দরজা খুলল। নিশান দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে রইল। নিশি দরজা খুলে দেখে নির্ঝর! নিশি বলে উঠে..
– তুই!

– কেন? অন্য কেউ আসবে নাকি!

– না আমি ভেবেছি আদুরী! তা কি বলবি বল!

– ভিতরে আসতে দিবি না নাকি!

– না মানে..

– সর সামনে থেকে তোর বোন কি করেছে শোন!
বলেই নির্ঝর ঘরে ঢুকে গেল। নিশি কিছুটা কাচুমাচু হয়ে আছে যদি নিশান কে দেখে ফেলে তখন। বলতে বলতে নির্ঝর নিশান কে দেখে ফেলল। নিশান চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। নির্ঝর নিশি’র ঘাড়ে হাত রেখে ইশারা করে বলল..

– কে?

– নিশান!

– ওহ্ আচ্ছা এই কাহিনী দাঁড়া এখন’ই জানাচ্ছি সবাইকে!

– কি বলছিস! অফ যা না ভাই!

– মনে আছে সেদিন কিভাবে মজা নিয়েছিল।

– 😒

– সর এখান থেকে! হেই ব্রো!

– হেই!

– মি নির্ঝর!

– নিশান!

– দেখা হয়ে ভালো লাগল তবে বলতে হবে কি প্রেম এখান অবদি চলে এলে!

– ভালোবাসায় প্যারা তো ছেলেদের’ই থাকবে ভাই!

– তা আর বলতে তুমি বাংলাদেশে থেকে এখানে এসেছো আর আমি ভালোবাসার জন্য বিয়ে করতে যাচ্ছি। আর এই মেয়েরা কিছুই বুঝতে পারে না।

নিশি কোমরে হাত দিয়ে দুজনকে দেখছে। নিশান বলে উঠে..
– কি বলছো বিয়ে!

– ইয়াপ ব্রো! আচ্ছা সেসব পরে বলবো এই হোটেলেই তো আছো!

– হ্যাঁ পাশের রুম!

– আচ্ছা সরি ডিস্টার্ব করার জন্য নিশি আমি পরে আসবো আর তোমার সাথেও পরে কথা হবে। টা টা!

বলেই নির্ঝর বের হয়ে গেল। বের হবার আগেও নিশি কে দেখে নির্ঝর হাসি দিয়ে ইশারা করল। নিশি মুখ ভেংচি দিয়ে দরজা বন্ধ করে সামনে তাকাল। তাকিয়ে দেখে নিশান তার দিকেই তাকিয়ে আছে। নিশি কিছু বুঝে উঠার আগেই নিশান তাকে টেনে তার ঠোঁট আঁকড়ে ধরল। নিশি নিশানের শার্ট আঁকড়ে ধরে আছে আর নিশান নিশি’র কোমড়! কিছুক্ষণ পর নিশান নিশি কে ছেড়ে দিয়ে নিশি’র দিকে তাকাল। নিশি লজ্জা পেয়ে হেসে নিশানের বুকে মুখ লুকালো। নিশান হেসে তাকে জরিয়ে ধরল!
.
রাতের বেলা..
নকল নিরবের কাছে একটা কল আসল। সে খুব সাবধানে আড়ালে গিয়ে কল টা ধরল। তাকে বলা হলো আধঘন্টা পর একটা গাড়ি আসবে। সেটাতে করে তাকে একটা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। হোটেলের 75th ফ্লোরে গিয়ে তাকে ওয়েট করতে বলেছে। সেখান থেকে তাদের লোক এসে তাকে নিয়ে যাবে।

নকল নিরব কথা মতো সে আধঘন্টা পর হোটেল থেকে বের হয়ে গেল। অতঃপর সেই গাড়িতে উঠে হোটেলে এসে পৌঁছাল! সে ফোন টিপতে টিপতে লিফটের অন বাটন চাপ দিল। লিফট খুললে সে ঢুকতে যাবে তখন সামনে তাকিয়ে যা দেখল তাতে সে চমকে উঠল…

#চলবে….

#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১৯

নিরব চমকে উঠলো কারন লিফটের ভেতর মেহেরিন ছিল। একটা নীল রঙের হুডি আর জিন্স পড়া সে। হাতে থাকা কালো টুপি টা মাথায় দিয়ে নিরবের কলার ধরে লিফটের ভেতর আনলো সে। লিফট বন্ধ হবার সাথে সাথে নিরবের কপাল বরাবর গান ধরল। নিরব পুরো থতমত খেয়ে গেল। কি করবে এখন মেহেরিন। মেহেরিন হেসে বলল..

– গান সাইলেন্ট মোডে আছে তোমাকে এখানে মেরে ফেললেও কেউ হদিস পাবে না!

নিরব কি বলবে বুঝতে পারল না। মেহেরিন আবারো বলে উঠে..
– কি বলেছিলাম! বলেছিলাম আমার সাথে থাকতে তাই না। তাহলে..

– আমাকে ওরা ফোন করেছিলো!

– ওহ আচ্ছা তাই এখানে চলে এলে! আমাকে বলো নি কেন?

নিরব একটা শুকনো ঢোক গিলল। মেহেরিন গান রেখে জোরে হাসল। অতঃপর বলল..
– কি ভাবলে এখানে এসে ওদের সব বলে দেবে আর আমি কিছুই জানতে পারবো না। হুম!

– আমি মানে আমি!

– রাখো আমি আমি! এটা জানো তোমার ওপর ২৪ ঘন্টা নজর রাখছি আমি, এটা একবার ও ভাবলে না এসব যে করছিলে আমি জানতে পারলে তোমার প্রাণ টা আর থাকবে কি না! সে যাই হোক এতে আমার একটা লাভ হয়েছে। খুঁজতে আর কষ্ট করতে হলো না ওরা কোন হোটেলে আছে। এখানে আছে। তোমাকে যখন ডেকেছে নিশ্চিত কিছু না কিছু বলবে। আর সেই কথা তুমি আমাকে বলবে! না বলবে না তোমাকে আর বিশ্বাস নেই। বাট যদি ওখানে গিয়ে মুখ খুলো তো.. তো কি বললেও তো আমি জানবো না তাই না। নকল নিরব হবু জামাই একটা কথা বলি কয়েকদিন আগেই কিন্তু আমাদের এনগেজমেন্ট হয়েছে। রিং পড়িয়েছিলাম তো আমি নাহ!

বলেই মেহেরিন এক গাল হাসল। নিরব মেহেরিন’র হাসি দেখে সন্দেহ হলো। সে নিজের রিং এর দিকে তাকিয়ে রইল। মেহেরিন হেসে বলল..
– ট্র্যাকার মেশিন এটাতে যার মাধ্যমে তোমার ২৪ ঘন্টার খবর আমি রাখি! আর এর মাধ্যমেই আমি এখান পর্যন্ত এসেছি। তাই এখন তোমাকে ওখানে যেতে হবে আর এই রিং এর মাধ্যমে আমি তোমাদের মধ্যের কনভারসেশন জানবো তাই যদি তোমার মুখ খুল তো..

– না না আমি কিছু বলবো না!

– কি করে বিশ্বাস করবো তোমাকে!

– এই যে এই রিং এর মাধ্যমে, আমি যা বলবো সব শুনবে তুমি!

– গুড! আর হ্যাঁ আমি 76th floor থাকবো। যেভাবেই হোক নিরবের খোঁজ করবি যাতে আমি তাকে খুঁজে পাই ওকে!

– হুম!

মেহেরিন হেসে নিরবের কলার ঠিক করে বলে..
– হবু জামাই সাহেব মুড ঠিক করেন যাতে ওরা কিছু বুঝতে না পারে, ঠিক আছে!

অতঃপর নিরব তার মুড ঠিক করার পর নিরব তার ফ্লোরে নেমে পড়ে আর মেহেরিন তার উপরের ফ্লোরে থাকে। তার কানে ব্লুটুথ যার মাধ্যমে ও সব শুনতে পারবে। এদিকে এক লোক এসে নিরব কে নিয়ে যায়। মেহেরিন তার হাতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দিয়ে দেখছে নিরব কোথায় যাচ্ছে। নিরবকে একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরব সেখানে গিয়ে দেখে অংকন রায় সোফায় বসে আছে। নিরব কে দেখা মাত্র সে হেসে নিরব কে তার পাশে বসায়। ওয়াইনের গ্লাস টা নিরবের কাছে দেয়। নিরব অনিচ্ছাকৃত হাসি দিয়ে গ্লাস টা নেয়। অংকন হেসে বলে.

– তা খবর কি!

– হুম স্যার ভালোই! প্ল্যান মতো মেহেরিন রাজি হয়েছে বিয়ের জন্য।

– হ্যাঁ জানি সেটা তবে কথা ছিল বিয়ের পর’ই মেহেরিন কে এখানে আনা কিন্তু তুমি তো দেখছি বিয়ের আগেই এখানে নিয়ে এসেছো!

নিরব থমতম খেয়ে যায়। কিছু বলতে যাবে তখন ‌মিঃ রায় এসে বলে উঠে..
– যাই হোক বিয়ের পর আনুক বা আগে আমাদের কাজটা হলেই হয়!

নিরব তাকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়। তখন মিঃ রায় তাকে ইশারায় বসতে বলে। নিরব বসে পড়ে। মিঃ রায় হেসে বলে..

– তবে যাই হোক তুমি কিন্তু কাজটা ভালো করেছো!

– জ্বি স্যার!

অংকন হেসে বলল..
– আমরা প্ল্যান চেঞ্জ করেছি!

নিরব বলে উঠে..
– প্ল্যান চেঞ্জ!

মেহেরিন বলে উঠে..
– প্ল্যান চেঞ্জ!

মিঃ রায় বলে উঠে…
– হ্যাঁ প্ল্যান চেঞ্জ!

– কিন্তু নতুন প্ল্যান কি!

অংকন বলে উঠে..
– এটাই যে মেহেরিন না নিরব কে মরতে হবে!

নিরব চমকে উঠে! বলে..
– আমাকে!

মিঃ রায় আর অংকন দুজনেই হেসে উঠে বলে..
– তুমি তো নকল নিরব! তুমি না আসল নিরব মরবে!

– মানে মরার কথা তো মেহেরিন’র !

– হ্যাঁ কিন্তু তুমি এটা তো জানো ওদের জন্য আমার বিজনেস এ অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকা লস হয়েছে আমার। আমিও চাই খান দের এই অবস্থা হোক। মেহেরিন মরে গেলে তো আর বিজনেস এ কিছু হবে না কিন্তু যদি সবাই জানে মেহেরিন বর্ষা খান তার হবু বর নিরব কে খুন করেছে তখন তাকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে। তার কোম্পানি ঢুবে যাবে। খান রা মাটিতে মিশে যাবে। ওদের এতোদিনের সব মান সম্মান ডুবেবে এটাই হবে আমার প্রতিশোধ।

নিরব সব শুনল কিন্তু কিছু বললো না। অংকন বলে উঠলো..

– এখন এটা শোন বিয়ের দিন তোমায় কি করতে হবে…

এদিকে মেহেরিন সব শুনতে থাকলো। সব শোনার পর মেহেরিন একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে..

– বিয়ের দিন খুব বড় ধামাকা হতে চলেছে!

অতঃপর নিরব সেখান থেকে বেরিয়ে পরে। মেহেরিন ও তার পিছু পিছু বের হয়। নিরব একটা টেক্সি তে উঠে, টেক্সি তে উঠার পর নিরব দেখে ড্রাইভার হলো ইহান। তাকে দেখার পর নিরব খুব ঘাড়বে যায়। ইহান বলে উঠে..

– তোমাকে এরপর কি করতে হবে এটা আমি বলবো বুঝলে!

নিরব বাধ্য ছেলের মতোই মাথা নাড়ল।
.
মেহেরিন মাত্র হোটেলে ঢুকল, ঢুকতেই দেখে নির্ঝর আর কথা বের হচ্ছে। কথা বেশ ভালো ভাবেই নির্ঝর’র হাত ধরে রেখেছে। কিন্তু ব্যাপার হলো নির্ঝর একবারও মেহেরিন’র দিকে তাকাল না। সে নিজের মতো করেই হেটে চলে গেল। তবে এখানে কথা মেহেরিন দেখে হেসে দিলো। মেহেরিন’র কিছুটা অপমানিত বোধ হলো কারন নির্ঝর ওকে ইগনোর করেছে!

রাতে মেহেরিন হোটেলের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছিল। কিছুক্ষণ বাদে ঘরে এসে ল্যাপটব অন করল। এখানে হোটেলের রিসেপশনে লাগানো সিসি টিভি ফুটেজ আছে। মেহেরিন দেখছে কোনো গন্ডগোল হচ্ছে নাকি কারন প্ল্যান আবারো কোনসময় চেঞ্জ হতে পারে।
হঠাৎ তার নজরে পরল নির্ঝর আর কথা হোটেলে ফিরছে। তখন প্রায় অনেকটা রাত হয়েছে। ওরা এখন আসল। মেহেরিন একটা মুখ ভেংচি দিয়ে ল্যাপটব বন্ধ করে দিলো।

এদিকে আরিশা সবে মাত্র নিহা আর আনহা’র সাথে গল্প করে রুমের লক খুলতে যাবে হঠাৎ করেই কেউ তার কোমর জরিয়ে ধরে। আরিশা’র কোনো সন্দেহ নেই এটা যে রোদ্দুর! রোদ্দুর আরিশার ঘাড়ে থিতুনি রেখে বলে…

– জানো কতোক্ষণ ওয়েট করেছি আমি!

আরিশা’র রুমের লক খুলে বলে..
– না জানার ইচ্ছে নেই!

– বর কে এভাবে অপেক্ষা করানো ঠিক না বুঝলে!

– আহারে বর মশাই আপনি কবে আমার বর হলেন শুনি!

রোদ্দুর রুমের দরজা খুলে আরিশা’র বাহু ধরে ঘরে নিয়ে গেল। অতঃপর দ্রুত দরজা বন্ধ করে দরজায় আরিশা কে চেপে ধরে বলল…
– ওয়েট করো আদুরীর নকল বিয়েটা শেষ হোক এরপর’ই তোমার ব্যবস্থা করছি!

আরিশা রোদ্দুর কে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে বলে..
– আবার রুম থেকে বের হন!

রোদ্দুর হেসে বিছানায় শুয়ে থাকে। আরিশা এসে রোদ্দুর’র সামনে দু হাত কোমরে রেখে বলে..
– বের হতে বলেছি আর আপনি তো দেখছি এখানে শুয়ে পড়লেন!

রোদ্দুর উঠে বসে বলে..
– ওপস ভুলে গেছি!

বলেই আরিশা কে টেনে তার উপর শুইয়ে দিয়ে বলে…
– এখন ঠিক আছে!

আরিশা কতোক্ষণ ছটফট করতে থাকে। কিন্তু রোদ্দুর তাকে কোনোমতে ছাড়ে না। হঠাৎ রোদ্দুর আরিশা’র গালে কিস করে। আরিশা চুপ হয়ে গেলে রোদ্দুর নিজের গাল পাতে। আরিশা গালের কাছে গিয়ে কামড় বসিয়ে দেয়। রোদ্দুর “আম্মুউউ” বলে চিৎকার করে আরিশা কে ছেড়ে দেয়।‌ আরিশা হাসতে থাকে, রোদ্দুর বলে উঠে..

– আমাকে কামড় দেওয়া দেখাচ্ছি!

আরিশা কথা শুনেই দৌড় দেয়। রোদ্দুর ও তার পিছু পিছু দৌড়াতে থাকে। পুরো ঘর জুড়ে দুজনেই ঘুরতে থাকে। একপর্যায়ে রোদ্দুর পেছন থেকে আরিশা’র কোমড় ধরে জরিয়ে নেয়। আরিশা অনেক ছোটাছুটি করতে থাকে। রোদ্দুর তখন আরো শক্ত করে তাকে জরিয়ে ধরে। আরিশা বলে উঠে..

– আমি কিন্তু চিৎকার করবো!

– আই ডোন্ট মাইন্ড!

– ছেড়ে দিন না!

– ধরলাম’ই না আর ছাড়ার কথা বলছো!
অতঃপর রোদ্দুর আরিশা কে নিজের দিকে ঘুরালো। দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে গেছে। আরিশা তাকিয়ে আছে রোদ্দুর’র দিকে। রোদ্দুর আরিশা’র গাল ধরে তার কপালে চুমু গেল। অতঃপর তাকে কোলে তুলে নিল। আরিশা চোখ বড় বড় রোদ্দুর কে দেখছে। রোদ্দুর হেসে বলে..
– তুমি তো দেখছি আমাকে নজর দিয়ে দিবা!

– বাজে কথা রাখুন! কোলে তুললেন কেন?

রোদ্দুর’র কিছু না বলে বাঁকা হাসি দিল। কি করবে রোদ্দুর! কিন্তু রোদ্দুর তার ভাবনা ভুল করে তাকে নিয়ে বেলকনিতে গেল। অতঃপর সেখানে দোলনায় বসে আরিশা কে তার কোলে বসাল। আরিশা’র এবার নিজের’ই কেমন লজ্জা হতে লাগলো। এতোটা ভুল ভেবে নিলো সে রোদ্দুর কে। রোদ্দুর’র আরিশা’কে জরিয়ে ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দিয়ে বলল..

– বিশাল আকাশের যেমন ওই একটা চাঁদ তেমনিই আমার আকাশে শুধু আরিশা নামের একটা চাঁদ!

আরিশা হেসে বলল..
– তাহলে তারা গুলো কে?

রোদ্দুর আমতা আমতা করতে লাগলো। আরিশা বলে উঠে..
– ওহ আচ্ছা তার মানে..

– এই না না এমন কিছু না!

– তাহলে!

– ওরা কেউ না। ওদের কোনো অস্তিত্ব নেই।

– তাই বুঝি!

– জানু বিশ্বাস করো!

আরিশা হেসে রোদ্দুর’র গাল টেনে বলল..
– জানু আমি জানি তুমি প্লে বয়!

রোদ্দুর অসহায় ভাবে তাকিয়ে রইল। আরিশা বলে উঠে..
– এবার এসব ছেড়ে দাও ঠিক আছে।

– রোদ্দুর কখনো কোন মেয়ের কাছে যায় নি শুধু তোমাকে ছাড়া!

– তার মানে মেয়েরা এসেছে!

– তুমি এমন ভাবে বলছো কেন?

– সত্যি বলছি তাই।

– সত্যি বলছি এমন কেউ নেই, আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ছুঁই নি।

আরিশা কেমন করে তাকাল রোদ্দুর’র দিকে। রোদ্দুর বলে উঠে…
– আরু সত্যি বলছি!

আরিশা হেসে বলল..
– আরে মজা করছিলাম সিরিয়াস হচ্ছো না।

রোদ্দুর মুখ ভেংচি কেটে আরিশা কে জরিয়ে ধরে বলল..
– আমার জান টা নিয়ে নিয়েছিল আরেকটু হলে।

– এটা আমার তাই আমিই নিবো।

– হ্যাঁ আমার জান শুধু আদুরী আর তুমিই নিবে। আদুরী আর আরু এই দুইজন আর কেউ না ওকে।

– হুম হুম!

অতঃপর দু’জনেই সেখানে বসে আকাশ দেখতে থাকল!
.
আজ সবাই বের হবে বিয়ের শপিং করতে। নির্ঝর আর কথা একসাথে গেল আর একসাথেই ছিল। নির্ঝর কথা’র সমস্ত ড্রেস নিজেই পছন্দ করলো। মেহেরিন এসব দেখে কোনো প্রভাব পরল না। কারন ওর সব ড্রেস ওর দু ভাই আর দু বোন পছন্দ করছে। সে, কাব্য, নিরব আর ‌ইহান মিলে মলে ঘুরতে লাগল। সবাই যে যার মতো ঘুরছে। মেহেরিন’র হাতে আইসক্রিম। খাচ্ছে আর ঘুরতে। খানিকক্ষণ পর মনে হলো ওকে কেউ ফলো করছে। মেহেরিন’র মনে হলো এটা অংকন এর লোক। তাই সে নিরবের হাত ধরে হাঁটতে লাগলো। এদিকে নিরবের প্রাণ যেন যায় যায়। এদিকে একজন তো ওদিকে। কে যে ওর প্রাণ নিবে বুঝে উঠতে পারছে না। এদিকে নির্ঝর মেহেরিন কে দেখতে না পেয়ে দোকান থেকে বের হয়ে বাইরে খুঁজতে লাগল। দেখল মেহেরিন নিরবের হাতে মাথা রেখে ঘুড়ে বেরাচ্ছে। এটা দেখার পর’ই তার মাথা গরম হয়ে গেল। সে দ্রুত তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। মেহেরিন নির্ঝর কে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিল হঠাৎ নির্ঝর বলে উঠে..

– নিরব দা তোমাকে আমার সাথে আসতে বলেছে!
বলেই নিরব কে টেনে নিয়ে গেল। মেহেরিন বিরক্ত হল কিন্তু কথা বললো না। এদিকে কথা এলো মেহেরিন’র কাছে। তার কাছে এসে তাকে নিয়ে শপিং করতে লাগল। মেহেরিন’র সাথে কথার ভাব হয়ে গেল। মেহেরিন খুব মিশুকে তাই সবার সাথে মিশতে সময় লাগে না। এদিকে নির্ঝর নিরব কে শাসালো যেন মেহেরিন’র কাছাকাছি না দেখে ওকে। নিরব বেচারা মাঝখান দিয়ে ফেসে গেল!

টানা ৩ দিন চললো এই বিয়ের শপিং! অতঃপর কাল থেকে শুরু হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। মেহেদী, সঙ্গীত থেকে শুরু করে বিয়ে সব অনুষ্ঠান হবে।
আজ মেহেদী এই উপলক্ষে হোটেলের ছাদ খুব জাঁকজমক ভাবে সাজানো হয়েছে। সবাই রেডি হয়ে চলে এলো ছাদে শুধু মেহেরিন’ই এসেছে যে একটা কালো জ্যাকেট আর জিন্স পড়া। তাকে অনেক কষ্ট করে পাঠানো হলো তৈরি হবার জন্য। অতঃপর সে শুধু লেহেঙ্গা পড়েই চলে এলো। কোনো সাজ নেই তার মুখে! চুল গুলো কোনমতে আঁচড়ে চলে এসেছে তবে তাকেই যেন সবচেয়ে সুন্দর লাগছে এখানে!

অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। সবাই সবার হাতে মেহেদি পড়ছে শুধু মেহেরিন বাদে। সে মেহেদী পড়বে না মানে পড়বেই না। কেউ তাকে জোড় করেনি অবশ্য। মেহেরিন বসেছে কথা কে মেহেদী পড়াতে কারন তার মতে ওর বিয়ে তো আর হবে কিন্তু তাই বলে তো নির্ঝর আর কথা’র বিয়েটা সে নষ্ট করতে পারে না। মেহেরিন বেশ সুন্দর করেই মেহেদী পড়ালো আর অনেক সুন্দর নির্ঝর’র নাম লেখে দিলো তার হাতে। কথা তো এসব দেখে অনেক খুশি। মেহেরিন ও বেশ খুশি। শুধু একজনই খুশি হয় নি সে হলো নির্ঝর। তার এসব দেখেই মাথা গরম হয়ে গেল। মেহু পাখি কি না শেষে তার নাম কথা’র হাতে লেখল।

মেহেরিন মেহেদী দেওয়া শেষ করে হাঁটতে লাগল। হঠাৎ তার চোখ পড়ল নিশি হাতে মেহেদী পড়াচ্ছে ঠিক কিন্তু তার চোখ একটা ছেলের দিকে। দুজনেই চোখে চোখে বেশ আলাপ করছে। কিছু না কিছু তো ঘাপলা আছে এখানে। তখন কাব্য এসে ওর ঘাড়ে হাত রেখে বলল..

– ওরা তো জিজু!

– জিজু!

ইহান বলে উঠে…
– হুম নিশান! যাকে নিশি ভালোবাসে!

– কবে হলো এসব আর আমি জানি না!

– এসব কথা আর যাই হোক কেউ তোকে বলবে না।
পেছন থেকে রোদ্দুর বলে উঠে!

– কিন্তু এই হবু জিজু এখানে কি করছে!

আরিশা বলে উঠে..
– ভালোবাসার টানে বাংলাদেশ ছেড়ে এসে গেছে আর কি!

– মজা দেখাচ্ছি! আমার থেকে লুকানো নাহ!
বলেই মেহেরিন গেলো নির্ঝরের সামনে। নির্ঝর তাকে দেখে কিছুটা থমতম খেয়ে গেল। মেহেরিন তার সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠে..
– কে আপনি!

– আমি নিশান!

– ওহ্ আচ্ছা তাহলে এখানে কি করছেন? কার গেস্ট আপনি!

নিশান বেশ ঘাবড়ে গেছে। তার সামনে আদুরী দাঁড়ানো এভাবে তাকে ছেড়ে দিবে এটা হতেই পারে না। নিশান কি বলবে বুঝতে পারছে না। এদিকে নিশি ও বেশ ভয় পেয়ে গেছে। পেছনে তাকিয়ে দেখে ৫ বিচ্ছুর দল হাসছে। এর মানে বুঝতে বাকি নেই যে মেহেরিন সবকিছু জেনে গেছে। এখন নিশানের কি হবে।

এদিকে নিশান কিছুই বলতে পারছে না দেখে মেহেরিন’র খুব হাসি পাচ্ছে। কিন্তু সেটা সে বুঝতে না দিয়ে আবার জিজ্ঞেস করতে যাবে তখন কোথা থেকে নির্ঝর এসে বলল..
– ও আমার ফ্রেন্ড আর আমার গেস্ট!

মেহেরিন’র মেজাজ গেল খারাপ হয়ে। সে কিছু না বলেই চলে এলো সেখান থেকে। তখন নিশান বলে উঠে..
– রাগ করলো নাকি!

– হ্যাঁ তবে তোমার না আমার সাথে।

– বাবা কি ডেঞ্জারেস! যাই হোক থ্যাংকস ভাই তুমি না থাকলে যে কি হতো!

– তুমি কি ভাবলে ও কিছু না জেনে এখানে এসেছে। সব কিছু জানে ও। তাই এসেছে এখানে!

– কি বলছো!

– হুম। আচ্ছা আমি বরং যাই রাগ ভাঙাই গিয়ে। মারাত্মক রেগে আছে।

– হুম যাও!

অতঃপর নির্ঝর গেলো মেহেরিন’র পিছু পিছু! মেহেরিন কে একা দেখে নির্ঝর তার হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরাল। মেহেরিন বলে উঠে..

– কি হয়েছে?

– তোমার হাতের মেহেদি দেখতে এলাম। দেখি দেখি।

– আমি হাতে মেহেদি দেয় নি।

– কেন?
বলেই মেহেরিন’র হাত ধরল।

– আমার ইচ্ছা আপনাকে কেন বলবো।

– না তোমার সাথে একটা ইম্পর্ট্যান্টে কথা ছিল।

– কি আর কার ব্যাপারে।

– কথার ব্যাপারে এখানে এসো বসো।
অতঃপর দুজনেই বসল। মেহেরিন’র হাত নির্ঝর এখনো ধরে রেখেছে। তবে মেহেরিন’র সেখানে খেয়াল নেই। সে ভাবছে নির্ঝর কি বলে। নির্ঝর বলতে লাগল..
– আচ্ছা মেহেরিন কথা কেমন বলো তো?

– কেমন?

– মানে ভালো তো! তোমার কি মনে হয় আমার জন্য ঠিক ও।

– কিইই? এটা বলুন আপনি ওর জন্য ঠিক কি না।

– আচ্ছা যাই হোক ( নিজের ফোন বের করে মেহেরিন’র হাতে দিয়ে বলল ) দেখো!

– কি দেখবো!

– এই যে দেখো কিছু গয়না। বাসর রাতে কথা কে দেবো তবে কোনটা দেবো চুজ করতে পারছি না। করে দাও!

মেহেরিন মুখ ভেংচি দিয়ে ফোন টা নিয়ে দেখতে লাগল। প্রায় অনেকক্ষণ পর মেহেরিন’র একটা নেকলেস পছন্দ হলো। সে নির্ঝর কে দেখিয়ে বলল..

– এই নিন এটা! আমার কাজ শেষ!

নির্ঝর বলে উঠে..
– হুম আমার কাজ ও শেষ!
বলেই নির্ঝর উঠে গেল তবে মেহেরিন কিছু বুঝতে পারল না। খানিকবাদে নিজের হাতে নজর গেলো। তার হাতে মেহেদি দিয়ে নির্ঝরের নাম লেখা।‌ সে বড় বড় চোখ করে তাকাল। নির্ঝর পিছনে ঘুরে তাকে একটা চোখ টিপ দিল। মেহেরিন রেগে হাত মুঠ করে নিলো। তাড়াতাড়ি গিয়ে হাত ধুল কিন্তু মেহেদি যাচ্ছে না। নির্ঝরের লেখা নাম যাচ্ছে না এতো সহজে। মেহেরিন বেশ রেগে গেলো। কিন্তু তবুও নির্ঝরের সাথে কোন কথা বলল না। এরকম অনুষ্ঠানের মাঝে কেটে গেল দুইদিন। এর মধ্যে নিশি এসে তাকে অনেক মানিয়ে টানিয়ে রাগ ভাঙালো। নিশানের সাথেও সবার দেখা করালো। সবাই নিশান কে বেশ পছন্দ করে।

#চলবে….