অনুভবের প্রহর পর্ব-০৭

0
566

#অনুভবের_প্রহর
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব____০৭

ইরতাজ উদ্দিনের দেওয়া লোকেশন ফলো করে অনুভব সন্ধ্যার মধ্যে একটা প্রাইভেট হসপিটালের সামনে দাঁড়ালো। হসপিটালের নাম আরেকবার পরখ করে করে সে ভেতরে ঢুকল। দ্রুত পায়ে সিঁড়ি মাড়িয়ে থার্ড ফ্লোরের দিকে এগোল।

কেবিন নাম্বার ৪০৬ এর সামনে গিয়ে ক্ষণিক সময়ের জন্য দাঁড়াল অনুভব। ফোনের মেসেজে রুম নাম্বারটা আরেকবার চেক করলো সে। এটাই সেই রুম। এখানে প্রহরের এডমিট থাকার কথা। মাথার অগোছালো চুলগুলো সে হাত দিয়ে ঠিক করলো। কপালের ঘাম মুছলো। শার্টের হাতা ফোল্ড করে একটু স্বাভাবিকতা চেহারায় ফুটিয়ে তুলল। সে যে প্রহরের অসুস্থতার খবর শুনে এতটা টেনসড হয়ে গিয়েছিল তা প্রহরকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। কিছুতেই না!

দরজায় হালকা নক করে ভেতরে ঢুকলো। ইরতাজ উদ্দিন আর মিসেস রাবেয়া টুলে বসেছিলেন। অনুভবকে দেখে তারা চমকে উঠে দাঁড়ালো। অনুভব প্রহরের দিকে ঠিক মতো তাকাতে পারলো না। হালকা ভাবে দেখলো নাকে নল লাগানো। তার আগেই ইরতাজ উদ্দিন তাকে হুড়মুড় করে টানতে টানতে কেবিনের বাইরে নিয়ে এলেন।

ইরতাজ উদ্দিন অনুভবকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। যথাসম্ভব নিচু স্বরে বললেন,

‘তুমি এসেছ?’

ইরতাজ উদ্দিনের চোখে মুখে গভীর চিন্তার ছাপ। চোখের নিচে কালির রেখা। অনুভব বুঝতে পারলো তার উপর দিয়ে ছোট খাটো ঝড় গেছে। সে আশ্যস্তের সুরে বলল,

‘হুঁ। আমি এসেছি।’

‘আসলে ব্যাপারটা হয়েছে কি…. প্রহর তোমাদের ওখান থেকে আসার পর থেকে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে৷ জলস্পর্শ করছে না। অনেক ভাবে অনেক কিছু বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কলকাতা থেকে ওর ফুপি পর্যন্ত এসেছে ওকে বুঝানোর জন্য কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না৷ কিছু খাবে না মানে খাবে না। ওর জিদ সম্পর্কে তোমাদের এতদিনে একটু আধটু ধারণা তো হয়েছেই! ওর মুখের এক কথা। তুমি কবুল বলার পর ও জলস্পর্শ করবে।’

অনুভব চমকে উঠলো। প্রহর যে এত নিচু একটা টেকনিক অবলম্বন করবে তা ধারণায় ছিল না। সে অবাক হয়ে বলল,

‘কি বলছেন এসব?’

‘হ্যাঁ। এটাই সত্যি। দিন-রাত সাউথ এশিয়ান ফিল্ম দেখে এই টেকনিক অবলম্বন করেছে৷ কিন্তু ও খুব সিরিয়াস। পাঁচদিন হলো কিচ্ছু খায়নি। অবস্থা বেগতিক দেখে দুদিন হলো হসপিটালে ভর্তি করিয়েছি। চব্বিশ ঘণ্টা স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। নল দিয়ে জোর করে ফলের জুস খাওয়ানো হচ্ছে। ব্যাপারটা কি কষ্টকর তুমি বুঝতে পারছো? আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারছি না।’

ইরতাজ উদ্দিন দু হাতে মুখ ঢাকলেন। অনুভব পড়লো অথই সাগরে। এখন কি করবে সে? নল দিয়ে পাকস্থলীতে খাবার পৌঁছানো কতটা কষ্টের সে বিষয়ে তার কিঞ্চিৎ ধারণা আছে।তার বাবা যখন রোড এক্সিডেন্টে হসপিটালাইজড হয় তখন তার শরীর রেসপন্স করছিল না। নল দিয়ে খাওয়ানো হতো। বেশিদিন এই ধকলটা তার সাদাসিধে বাবা নিতে পারেনি। হার মেনে সাতদিন পর মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিয়েছিল।

কি করা উচিত তার? প্রহর যে ছেলেখেলা করছে না তা সে বেশ বুঝতে পারছে৷ ইরতাজ উদ্দিন হঠাৎ অনুভবের হাত জোড় করে বললেন,

‘কিছু একটা করো তুমি। গিয়ে প্রহরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করো বাবা। দেখো, প্রহরই আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। ওর কিছু হয়ে গেলে আমাদের বাঁচা সম্ভব নয়।’

‘আচ্ছা আমি দেখছি।’

ইরতাজ উদ্দিনের হাত ছাড়িয়ে অনুভব কেবিনের ভেতর ঢুকলো। তাকে দেখে মিসেস রাবেয়া এবার বের হয়ে এলেন। অনুভবের হাত পা মৃদু কাঁপছে৷ হসপিটাল দেখলেই তার বুক কেঁপে উঠে৷ ভীষণ ভয় পায় হসপিটালকে। কিশোর বয়সে এরকম একটা বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখেছিল তার বাবাকে।

প্রহর চোখ বন্ধ করে পড়ে আছে। শরীর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। চোখ ডেবে গেছে। ঠোঁট জোড়া শুষ্ক। চামড়া আরো ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। অনুভব টুল টেনে তার পাশে বসে পড়লো। প্রহরের স্যালাইন মুক্ত ডান হাতটা হালকা হরে ছুঁয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রহর নড়ে উঠলো। অনুভব ক্ষীণ স্বরে ডাকলো,

‘প্রহর?

প্রহর মাথাটা হালকা ঘুরিয়ে অনুভবের দিকে তাকালো। অনুভবকে দেখে চমকালো না সে। যেন ধরেই নিয়েছিল অনুভব আসবে। ঘোলা চোখে সে কিছুক্ষণ অনুভবের দিকে চেয়ে রইলো। চোখ দুটো আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে আসছে তার। চোখ বুজলো সে।

অনুভব তার হাতে একটু চাপ দিয়ে বলল,

‘প্রহর, এসব কি শুরু করেছ? এসব কোন ধরনের পাগলামি?’

প্রহর বন্ধ চোখে অস্পষ্ট ভাবে বলল,

‘তুই এসেছিস অনুভব?’

অন্য সময় হলে অনুভব বেশ রেগে যেত। কেমন নানী দাদীদের মতো তুই-তুকারি করছে। কিন্তু এখন রাগলে চলবে না। সে যথাসম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বলল,

‘হ্যাঁ, আমি এসেছি।’

‘আমি জানতাম তুই আসবি। এবার চটপট কবুল বলে ফেলতো। আমার ভীষণ ক্ষুধা লেগেছে। পাকস্থলীর অস্তিত্ব টের পাচ্ছি না। ওটা কি ডক্টররা কেটে ফেলে দিয়েছে রে?’

‘না কাটেনি। এক কাজ করো। তুমি আপাতত কিছু খাও। তারপর আমি কবুল বলছি।’

‘তোর মনে হয় আমি মজা করছি?’

‘অবশ্যই এসব মজা নয়।’

প্রহর চোখ খুলল। তার সেন্স পুরোপুরি আছে। অনুভবের দিকে নিষ্পলক চেয়ে রইলো কিছুক্ষণ। কতগুলো দিন, কতগুলো ঘন্টা, কতগুলো মিনিট কেটে গেছে। কতগুলো মুহূর্ত বাদে সে এই প্রিয় মুখটা দেখতে পেল। মাঝে মাঝে তার ইচ্ছে করে এই মুখটা আগুনে ঝলসে ফেলতে। সব দোষ অনুভবের এই মুখের। এই মুখটাই তাকে বেহায়া বানিয়েছে। এই মুখটা না দেখলে ভেতরটা হাঁসফাঁস করে। বুকটা খালি খালি লাগে। শুধু এই মুখটা দেখার জন্য কতশত পাগলামি করেছে সে। পাগল উপাধিও পেয়েছে।

কথা বলতে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। হাত, পা, সর্বোপরি শরীরের কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অস্তিত্ব টের পাচ্ছে না। এই যে সে দেখছে অনুভব বিচলিত হয়ে তার হাত ধরে আছে। অথচ তার স্পর্শটুকু সে অনুভব করতে পারছে না। অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ এতটা দূর্বল হয়ে পড়েছে যে মস্তিষ্কে ঠিকমতো সিগন্যালও পাঠাতে পারছে না। সে মনে মনে বলল,

‘যখন সুস্থ থাকি, তখন একটু ভালো মুখে কথা বলেন না। অথচ এখন নিজে থেকে হাত ধরে আছেন।’

চোখের কোণ ভিজে উঠলো তার। দ্রুত চোখ বন্ধ করে ফেলল। ক্ষীণ স্বরে বলল,

‘তোকে তুই তুই করে বলছি বলে রাগ করছিস?’

‘করছি না।’

‘গুড। ভেরি গুড। আসলে এখন এতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছি যে শরীরে একবিন্দু পরিমাণ শক্তি নেই। আপনি বলতে অনেকখানি শক্তির প্রয়োজন হয়। যা এই মুহূর্তে আমার নেই। তার থেকে তুই বলা অনেক সহজ। কিন্তু বিয়ের পর আর তুই বলবো না।’

অনুভব হাত মুঠ করে নিজেকে সামলালো। এসব কি হচ্ছে তার সাথে? এই মেয়েটা কেন তার পিছু ছাড়ছে না? যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই সে কোনো না কোনো মেয়ের খপ্পরে পড়ছে৷ নারী তার জন্য নিষিদ্ধ বিধায় ভাগ্য বার বার কেন নারীশক্তি দিয়ে তাকে পরাজিত করতে চায়? এই নারীর জন্য সে পরিবার নিয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে এলো। ঠিক শহরে পা রাখতে না রাখতেই আরেক নারী তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে।

অনুভব দু হাত দিয়ে নিজের মুখ স্পর্শ করলো। তার মনে আছে, একবার তার মা গালে হাত ছুঁয়ে বলেছিল, ‘সৃষ্টিকর্তা সুন্দর জিনিসের আয়ু কমিয়ে দিয়েছে। ফুলগুলো দেখ। সৌন্দর্যের প্রতীক। অথচ কত ক্ষণস্থায়ী সময়ের জন্য প্রস্ফুটিত হয়। দিন ফুরালেই তার আয়ু শেষ। পৃথিবীতে সুন্দর সবকিছুর স্থায়িত্ব কম।’

সে জানে মা কতটা আফসোস নিয়ে কথাগুলো বলেছিল। তার নিজেরও পৃথিবীতে আয়ু কম বলে সৃষ্টি কর্তা পুরুষ জাতির সবটুকু সৌন্দর্য তাকে দিয়ে যেন পৃথিবীতে পাঠিয়েছে।

অনুভবকে চুপ থাকতে দেখে প্রহর আবার চোখ খুলল। বলল,

‘আপনার কি কিছুই বলার নেই? এভাবে বসে থাকার জন্য এখানে এসেছেন?’

অনুভব খুব দ্রুত নিজের মন শক্ত করে নিল। ঠিক করলো প্রহরকে আরেকটু বুঝাবে। না বুঝলে তার জীবনের অমোঘ সত্যটা বলে দিবে। সে ছোট্ট করে শ্বাস নিয়ে বলল,

‘প্রহর। আমার কথা গুলো মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করো। তুমি যেটাকে ভালোবাসা বলছো সেটা ভালোবাসা নয়। ওটা তোমার জিদ। ছোট বাচ্চারা তাদের প্রিয় খেলনার জন্য যেমন জিদ ধরে সেরকম।’

‘তারপর?’

‘তুমি অনেক বড় হয়েছ। কিন্তু ম্যাচিউরড হওনি। ম্যাচিউরড হলে বুঝতে কতটা বাচ্চাদের মতো বায়না ধরেছে তুমি। একটু বাস্তবে ফিরো। এভাবে বিয়ে? তাও আবার চাল চুলোহীন বেকার একটা ছেলেকে? কিভাবে সম্ভব? বিয়ে করে তোমাকে খাওয়াব কি?’

‘এ তুই থাম তো। দেখছিস না আমার কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে? বিয়ে করবি না ভালো কথা। সরে যা চোখের সামনে থেকে। জ্ঞান দিবি না খবরদার।’

‘তুমি কিছু খাও। তারপর আমি যাব।’

‘মরে যাব আমি তবুও খাব ন…’

প্রহরের কথা শেষ করতে দিল না অনুভব। তার মুখ চেপে ধরলো। একটুপর হাত সরিয়ে নিল। মাথা নিচু করে বলল,

‘প্রহর। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই না এর যথোপযুক্ত কারণ আছে। আমার অনেক কঠিন একটা ব্যাধি হয়েছে। পৃথিবীতে আমি খুবই স্বল্প দিনের জন্য আছি। এই অবস্থায় একটা মেয়ের দায়িত্ব নিয়ে তার জীবন কেন নষ্ট করব?’

‘ছি! আমার হাত থেকে, শুধু মাত্র আমার বোঝাটা ঘাড় থেকে নামানোর জন্য নিজেকে মৃত্যু পথযাত্রী বলে চালিয়ে দিচ্ছেন? এতদিনেও আমি আপনাকে চিনলাম না? আপনার চোখে আমার জন্য যা দেখেছিলাম সব ভুল?’

প্রহরের চোখের কোণ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। অনুভব ব্যতিব্যস্ত হয়ে বলল,

‘আমি মিথ্যে বলছি না প্রহর। তুমি চাইলে মেডিকেল রিপোর্টও দেখাতে পারি।’

প্রহর কঠিন গলায় বলল,

‘কিচ্ছু দেখতে চাই না আমি। কিচ্ছু জানতে চাই না। আমি শুধু তোকে বিয়ে করতে চাই। তুই যদি আগামীকালও দুনিয়া ছেড়ে চলে যাস, তবুও আমি তোকে বিয়ে করতে চাই। না হলে আমি সত্যি মরে যাব।’

অনুভব আর কিছু বলল না। সে জানে প্রহর তাকে কিছুতেই বিশ্বাস করছে না। এই মুহূর্তে সে যদি তাকে মেডিকেল রিপোর্টও দেখায় তবুও সে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। আরো বেশি করে তার প্রতি ঝুঁকে পড়বে। এই প্রথম কারো জিদের কাছে হার মানলো সে। এক পলক প্রহরের দিকে চেয়ে উঠে দাঁড়ালো। অগোছালো ভাবে হেঁটে কেবিনের বাইরে বের হয়ে গেল।

অনুভবের গমনপথের দিকে চেয়ে প্রহর কেঁদে দিল। ঠোঁট নেড়ে বলল,

‘একদিন আপনাকে সত্যিটা ঠিক বুঝিয়ে দিবো অনুভব। বুঝিয়ে দিবো যে আপনি আমার জিদ নয়, আপনি আমার ভালোবাসা।’

_____________

সন্ধ্যার সময় জিনস, শার্ট গায়ে, মাথায় টুপি পরে অনুভব কবুল বলে দিল। তাকে কিছুই করতে হয়নি। বিয়ের সব যোগাড় যন্ত্র ইরতাজ উদ্দিন নিজে করেছেন। সে শুধু এতটা সময় বিমূঢ় হয়ে বসে ছিল। মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করছিল, যাতে আসন্ন এই বিপদ থেকে রক্ষা মেলে। প্রহরকে যেন বিয়ে করতে না হয়। কিন্তু বিয়েটা শেষমেশ করতে হলো। প্রহরের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছিল। কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল। তাই সে আর দ্বিমত পোষণ করেনি।

ইরতাজ উদ্দিন সব আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলেন। মেয়ের মতামতের কাছে হার মেনেই তিনি অনুভবকে কল করেছিলেন। অনুভব আসার পর তিনি বিয়ের জন্য মোটামুটি একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। অনুভব রাজি হতে দ্রুত কাছে থেকে একটা মৌলানা ডেকে এনেছেন। সাক্ষী হিসেবে তাঁর বাল্য কালের বন্ধু ডক্টর প্রভাস চন্দ্র আর দুটো অন্য ডক্টর ছিলেন। প্রভাস চন্দ্র এই হসপিটালের কর্তব্যপরায়ণ ডাক্তার।

বিয়ে শেষে প্রভাস চন্দ্র মুচকি হাসলেন। এরকম কেস আজ প্রথম নয়। এই হসপিটালে মাসে তিন থেকে চারটি বিয়ে এভাবে হয়। কেউ একজন সুইসাইড করতে নেয়। তখন বাবা-মা বাধ্য হয়ে বিয়েটা দিয়ে দেয়। এই দিয়ে তিনি কত তম বিয়ের সাক্ষী হলেন তা অজানা। প্রহরের পালস চেক করে তিনি বললেন,

‘কিছুদিন লাইট খাদ্য খাওয়াতে হবে।’

সবাই মাথা নেড়ে সায় জানাল। কিছুক্ষণের মধ্যে কেবিন ফাঁকা করে সবাই একে একে বের হয়ে গেল। সবাই চলে যেতে প্রহরের অনশন ভঙ্গ করলো অনুভব। চামচে করে পানি খাওয়ালো তাকে। তারপর অল্প একটু ফলের জুস।

অনুভব কোনো কথা বলছে না। কবুল বলার পর নিশ্চুপতা আঁকড়ে ধরেছে তাকে। তার থমথমে মুখের দিকে চেয়ে রইলো প্রহর। কি যে ভালো লাগছে তার! আজ থেকে এই মুখটা দেখার অধিকার শুধু তার। এখন দিন রাত এক করে এই মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকলেও কেউ বাঁধা দিতে আসবে না। এখন এই মুখটার জন্য শত রকম পাগলামি করলেও কেউ আর বেহায়া বলবে না। এই মানুষটা যে তার স্বামী!

টিস্যু দিয়ে প্রহরের মুখ মুছে দিল অনুভব। প্রহরের চোখে চোখ রাখছে না সে। বিষয়টা বুঝতে পেরে প্রহর ডান হাত দিয়ে নিজের কান ধরলো। ছোট ছোট করে বলল,

‘স্যরি। ভেরি স্যরি স্বামী।’

(চলবে)

দুটো গল্পই রেগুলার পাবেন ইনশাআল্লাহ। 🧡