#আমার_গল্পে_তুমি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৩৬_পর্ব
,
আর্দ্র ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে ইয়ানা ওকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে এখন রাগ করলেও কিছু করার নাই তারপর ও গ্যাস অফ করে দিলো, ওদিকে অনিক আর আকাশ এর তো হাচ্ছি আর কাশি দিতে দিতে যক্ষা রোগীর মতো অবস্থা হয়েছে, আর্দ্রর অবস্থাও দেখার মতো ওদের ওমন নাজেহাল অবস্থা দেখে ওদিকে অন্তরা আর রোজা তো হাসতে হাসতেই শেষ,, এমনটা করা ঠিক হয়নি মনে হয় আমরা একটু বেশিই করে ফেলেছি দেখেছো সবার কেমন অবস্থা হয়েছে।
ঠিক হয়েছে কোনো কিছু না পেরে আগে আগে এমন ভাব দেখালে এমনি হয় তুমি চুপ থাকো তো ইয়ানা, ওখানে শুধু তোমার বর না আমার বর ও আছে বুঝলে,, কি ভালোবাসা আহা বরের এমন করুন অবস্থা বউ এর দেখছি সয্যই হচ্ছে না কি বলো রোজা।
হুম সেটাই তো দেখলি আপু আমাদের ইয়ানা দেখছি বিয়ের পর একদম বর পাগল হয়ে গেছে, আর্দ্র ভাই এর এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে ইয়ানার ভারি কষ্ট হচ্ছে, ইস রে, তুই বরং এক কাজ কর তুইও আর্দ্র ভাই এর সাথে যোগ দে তাহলে যদি আর্দ্র ভাইয়ার কষ্ট টা একটু কমে আহারে বেচারা।
চুপ করবে তোমরা আমি মোটেও সেসব কিছু মিন করে কথা বলিনি আমি তো,,,
হুমম আমরা জানি জানি প্লেন কতো উপর দিয়ে যায় বুঝেছো,, তারপর ওরা ইয়ানাকে নিয়ে হাসি মজা করতে করতে আর্দ্রদের রান্না শেষ,, ওরা কোনো মতে ইউটিউব এ দেখে দেখে রান্না শেষ করেছে তারপর একে একে তিন জন টেবিলে খাবার দিলো,, অন্তরার মা আর বাবা চলে গেছে আর আর্দ্রর মা বাবার জন্য আগেই রান্না করে রাখা ছিলো কেননা ইয়ানারা জানত আর্দ্রদের রান্না আর যাই হোক খাওয়ার উপযুক্ত হবে না,, ওনারা দুজনেই খায়ে রুমে চলে গেছে,, কিন্তু আশা আর পরশ বেবির কাছে আছে কেননা অন্তরা নিচে আছে তাই,, রোজা ইয়ানা আর অন্তরা খাবার টেবিলে বসল, ইয়ানার পা এখন একটু ভালো নিজে নিজেই হাঁটতে পারে,, ওরা টেবিলে বসার পরই তিন জন তিনজনকে খাবার পরিবেশন করল, আর্দ্র ইয়ানার প্লেটে ভাত আর মাছ তুলে দিয়ে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে থাকল,, ইয়ানা একটু মাছের টুকরো ছিঁড়ে সাথে তরকারি নিয়ে ভাত মেখে কেবলি মুখে দিলো তখনি বুঝলো, মাছ আসলে ভালো করে ভাজি করা হয়নি মাঝে হালকা কাঁচা আছে, আর সবজির কথা তো বাদ ওটা আরো বেশি কাচাঁ ইয়ানা কেবলি আর্দ্র কে বলবে যে রান্না ভালো হয়নি ওরা হেরে গেছে,, আর্দ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল আর্দ্রর মুখটা লাল হয়ে গেছে আগুনের তাপে আর ও ভ্রু কুঁচকে অধীর আগ্রহে ইয়ানার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ইয়ানা কি বলে, ,ইয়ানা আর্দ্রর এভাবে তাকানো দেখে কিছু বললো না মনে মনে কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসি দিয়ে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বুঝালো যে রান্নাটা অনেক ভালো হয়েছে,, ইয়ানার ইশারা বুঝতে পেরে আর্দ্রর কুঁচকানো ভ্রু ঠিক করে মুখে একটা হাসি এনে শার্টের কলার ধরে একটু টেনে এমন ভাব দেখালো যেনো এসব রান্না ওর বাঁ হাতে খেলা,, আর্দ্রের এহেন কাজে ইয়ানা মাথা নিচু করে আবার ও হাসলো ,, ওদিকে অন্তরা আর রোজা এক লোকমা ভাত মুখে দিয়েই ওরা বুঝলো যে ওরা কাঁচা কোনো সবজি খাচ্ছে অন্তরা কেবলি অনিককে কিছু বলতে যাবে তখনি ইয়ানা ওদের দুজনকে থামিয়ে দিয়ে বলল,, সত্যি ভাইয়া আমি জানতামই না আপনি আর আপনার ভাই এতো ভালো রান্না করতে পারেন অনেক সুন্দর হয়েছে তাই না আপু??
ইয়ানার কথা শুনে রোজা আর অন্তরার অবস্থা কাহিল তবুও মুখে হাসি রেখে একটা আধ কাঁচা সবজি চিবতে চিবতে বলল,, হ্যাঁ সত্যি অনেক ভালো লাগছে হিহিহি।
দেখেছো আমি আগেই বলেছিলাম যে আমার সাথে পাঙ্গা নিও না তাহলে হেরে যাবে দেখেছো কেমন হেরে গেলে, আরে এসব তো আমার বা হাতের খেল হুমম? ভাব দেখিয়ে বলল অনিক।
হুমম আপনার বা হাতের খেল বলেই তো তখন আর্দ্র ভাই কাছে ঘ্যান ঘ্যান করছিলেন যে আর্দ্র ভাই যেনো আপনাকে সাহায্য করে ,, ফিসফিস করে কথাটা বলল আকাশ।
সালাবাবু তুমি চুপ থাকো নয়ত আমার সাথে সাথে তোমার ইজ্জত যাবে বুঝলে তাই চুপ থাকাই ভালো আর যত পারো ঢপ মারো।
আচ্ছা তাহলে তো আমাদের খাওয়া শেষ এবার তোমরা খাও আমরা গেলাম,, এই বলে ইয়ানারা তিন জনই উঠে চলে গেলো আর ওরা উঠে,, আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে ইয়ানাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকল কেননা ওর কেমন জানো সন্দেহ হচ্ছে ,,, অনিক আর আকাশ লোভে লোভে খেতে বসল,, আহ কতক্ষণ খাইনি ক্ষিদেই যেনো পেটের মধ্যে ইদুর দৌড়াদৌড়ি করছে আরে আর্দ্র এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো বস সালাবাবু শুরু করো,,।
হ্যাঁ হ্যাঁ আমার ও পেটের মধ্যে যুদ্ধ চলছে আর্দ্র ভাই বসে পড়ুন নইলে ফুরায় গেলে কিন্তু পরে আফসোস করবেন,, আকাশ আর অনিক আর্দ্র কে ডাকাডাকি করে নিজেরা প্লেটে খাবার বেড়ে নিলো তারপর ভাত মেখে এক লোকমা মুখে দিতেই দুজন দুজনের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থু থু মুখের খাবার টুকু ফেলে দিলো।, কিরে ফেলে দিলি কেনো? ভালো হয়নি?? খাওয়ার জন্য এতো তোরজোর করলি এখন না খেয়ে ফেলে দিচ্ছিস কেনো??
আরে এটা তো খাওয়ারি যোগ্য হয়নি সব কিছু কেমন আধ কাঁচাই রয়ে গেছে, আর মুখ পোড়া ঝাল হয়েছে এটা খাওয়া যাবে না।
অনিকের কথা শুনে আর্দ্র অনিককে কিছু বলবে তার আগেই ওর কিছু একটা মনে পড়ে গেলো তারপর ওদের কিছু না বলেই আর্দ্র ওখান থেকে চলে গেলো।
,,,,,
—-এটা কি হলো??
—কি হবে??
— রান্না ভালো হয়নি ওটা খাওয়ার যোগ্যই হয়নি তাহলে তখন বললে কেনো যে ওটা ভালো হয়েছে??
— হুম আমি কেনো বলেছি,, কি বলুন তো আপনারা এতো কষ্ট করে রান্না করলেন পরে আমরা খায়ে যদি বলতাম যে ভালো হয়নি তাহলে আপনাদের মন খারাপ হতো তাই আপনাদের যাতে মন খারাপ না হয় এই জন্যই বলেছি,, তবুও তো আপনারা হেরে গেছেন এখন বাজি মোতাবেগ আমরা যা বলবো আপনাদের তাই করতে হবে।
— কি চাই তোমাদের??
— বেশি কিছু নাহ, আমি অনেকদিন হলো আমার মামা বাসায় যায়নি আপনাকে আমাকে সহ সবাইকে নিয়ে আমার মামা বাসায় বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে।, তবে এখন না সামনে শীত আসছে, যখন পুরো শীত আসবে, মানে যখন জাঁকিয়ে শীত পড়বে তখন আর ততদিনে আমার পাও সেরে যাবে।
কীহ অসম্ভব আর আমি তো শুনেছি তোমার মামা বাসা তো গ্রামে তাও আবার পুরো শীতে গ্রামে আর গ্রামে নাকি অনেক বেশি শীত পড়ে আবার ওখানে ভালো টাওয়ার ও পাই নাহ, না না আমি যেতে পারবো না।
এটা বললে তো হবে না, আমি যখন যেতে বলেছি তখন যেতে তো হবেই কেননা আপনারাই বাজি ধরেছেন এখন তো আমার চাওয়া রাখতেই হবে।
আর্দ্র কিছু বলতে যাওয়ার আগেই ওখানে আকাশ রোজা অন্তরা অনিক চলে আসলো,, কিরে আর্দ্র কে বলেছিস যে আমাদের কি চাই??
কি চাই তোমাদের? কই আমাকে তো বললে না, এই ইয়ানা রোজা তোমরা কি প্ল্যান করেছো বলোনি কেনো আমায় আমাকে রেখেই প্ল্যান করেছো, বলো বলো কি চেয়েছো আর্দ্রর কাছে??
আরে আপু বলবো বলবো সব বলবো কিন্তু তোমার দেবর তো রাজিই হচ্ছে না।
—- না না এটা বললে তো হবে না, আর্দ্র ভাইয়া ইয়ানা যা চাই আমরাও তাই চাই এখন মাঝ রাস্তায় এসে থেমে গেলে তো চলবে না।
— আরে আর্দ্র ওরা কি এমন চেয়েছে যে তুই না করেছিস, আর যা টাকা পয়সা চাই দিয়ে দে আর যদি কম পড়ে তাহলে বল আমিও কিছু দিচ্ছি।
— না না অনিক ভাইয়া আমাদের টাকা চাই না আমরা শুধু চাই আমাদের সবাই কে নিয়ে ইয়ানা নানু মানে ওর মামা বাসায় বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে।
— ব্যাস এইটুকু?? আরে আর্দ্র তুই কি বলতো ওরা এটুকু একটা জিনিস চেয়েছে এটাই তুই দিতে পারছিস না, ওকে ডান আমিই তোমাদের নিয়ে যাবো খুশি।
— অনিক ভাই এতো তারাতারি ডান বলেন না, আর্দ্র ভাই মুখ দেখেছেন নিশ্চয়ই ওখানে কোনো ঘাপলা আছে নয়ত ওনি নিষেধ করতো না, তুমি তো রান্নার মতো আগে আগেই হ্যাঁ বলে দিলে পরে কোনো সম্যসা হলে কিন্তু আর্দ্র ভাই আর আপনাকে সাহায্য করবে না,,, আকাশ ফিসফিস করে অনিকের কানে কানে বলল।
— ঠিকি তো বলেছো সালাবাবু আমি তো এমন ভাবে ভেবেই দেখেনি এখন তাহলে কি হবে?
— কি আর হবে আমরা সবাই এই শীতের মৌসুমে খাঁটি খেজুরের রস আর শীতের পিঠা খেতে গ্রামে যাবো,, ইয়ে,,,,,
— উফফ হয়ে গেলো,, আর্দ্র বিরক্তি নিয়ে কথাটা বলল।
চলবে,,,,,??
#আমার_গল্পে_তুমি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৩৭_পর্ব
,
আর্দ্র মুখটা পেঁচার মতো করে নিজ মনে ডাইভিং করছে আর ওর পাশে ইয়ানা বসে আছে, বসে আছে বললে ভুল হবে রীতিমতো লাফালাফি করছে তবে ও একা নয় সাথে আরো লোকজন আছে,, অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে সেই দিনটা চলেই আসলো, গ্রামে অবশ্য নম্বরের শুরুতেই শীত পড়া শুরু হয়ে যায়, আর ওরা যাচ্ছে ডিসেম্বর এর মাঝামাঝিতে মানে এখন গ্রামে একদম জাঁকিয়ে শীত পড়েছে ,, এক গাড়িতে পরিবারের গুরুজনেরা আর অপর গাড়িতে হল্লা পাটি মানে হলো আর্দ্র ইয়ানা, আকাশ, রোজা অনিক, অন্তরা পরশ অবশ্য কবির আর আশার কাছে,, গাড়ির মধ্যে ওতটাও শীত পড়ছে না তবুও আকাশ আর অনিক মাথায় মাফলার আর গায়ে মোটা জ্যাকেট পড়ে বসে আছে, আর এতো পরিমাণে লাফালাফি করছে যে শীত তো দূর গরমে মন চাচ্ছে ঘন্টা দুয়েক শাওয়ার নিতে।
আহ ভাইয়া তুইও কি পরশের মতো ছোট হয়ে গেলি নাকি এতো চেঁচাচ্ছিস কেনো আর এতো লাফালাফিরই বা কি আছে, দুই বাচ্চার বাবা হয়েও এখনো বুদ্ধি হলো না,, তোর চেয়ে তো আমার চাম্পই বেশি বুদ্ধিমান।
তো কি তোর মতো হোপ করে বসে থাকবো নাকি, তুই যেনো দেখতে জোয়ান হলেও মনটা বুড়া কিন্তু আমরা তো আর তা নয় কি বলো সালাবাবু।
একদম ঠিক ভাইয়া, কিন্তু কেমন যেনো গরম গরম লাগছে , শুনেছি গ্রামে নাকি সেই শীত তবে এতো গরম লাগছে কেনো??
গরম তো লাগবেই গাধার মতো এতো সাত সকালেই শীতের জামা কাপড় গায়ে দিলে তো গরম লাগবেই,,
ঠিকি বলেছো রোজা আমার ভাই আর বরটা যেনো একদম পাগল হয়ে গেছে, এমন ভাব করছে যেনো আমরা লন্ডন যাচ্ছি , আর অনিক একটু চুপচাপ বসো তো দেখছো মেয়েটা ঘুমিয়েছে তবুও চেঁচাচ্ছো, কেনো একটু চুপ থাকা যাচ্ছে নাহ??
আরে আপু তু,,,,, ইয়ানা কিছু বলবে তখনি দেখলো আর্দ্র রেগে চোখ বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,, এভাবে তাকানোর কি আছে হুম আমি কি আপনাকে ভয় পাই নাকি?? আর আমি কোনো খারাপ কিছু করছি নাকি আমিতো,, আর হ্যাঁ আমি কিন্তু আমার নানি বাড়ি যাচ্ছি ওখানে একদম বরগিরী করবেন না, আর বকাও দেবেন না বলে দিলাম।
আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে একটা ডোন্ট কেয়ার লুক দিয়ে ডাইভিং এ মন দিলো,,, গাড়ি এপারে এসে পাকা রাস্তা পাড় করে এখন কাঁচা রাস্তায় ঢুকেছে,, দুপাশে কৃষকের ক্ষেত আর মাঝ খান দিয়ে মাটির রাস্তা,, এটাকে রাস্তা বললে ভুল হবে ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি আর মহিষ এর গাড়ি যেয়ে যেয়ে রাস্তাটা আর রাস্তা নেই পুরাই পাস্তা হয়ে গেছে,,, ওরে আল্লাহ,, এটা কি রাস্তা গো ইয়ানা কমর তো গেলো।
অনিক ভাইয়া আমার না এখন জেমস এর একটা গান মনে পড়ছে কি গান বলতো?? ,
৷ ,,,,,, ঝাকানাকা ঝাকানাকা দেহ দোলা না,,
,,,,,,, মন বলে মন বলে দেহ ঝাকা না,,
,,,,, মীরা বাই হেইলা দুইলা হেইলা দুইলা গরবর নাচাই,,
,,ঝাকানাকা ঝাকানাকা দেহ দোলা না,, মন বলে মন বলে মন বলে দেহ ঝাকা না।
একদম ঠিক কথা বলছো সালাবাবু এই রাস্তার সাথে এই গানই যায়,, এতো ভাঙ্গা রাস্তা আমি বাপের জন্মে দেখি নাই গায়ের সব কিছু নড়ে যাচ্ছে , মনে হচ্ছে বুকের বাল্ব ও নড়ে কিডনীর কাছে চলে গেছে।
না না অনিক ভাই আমার তো অন্য গান মনে পড়ছে,, চিকনা কমর আমার চিকনা কমর চিকনা কমরের কি জ্বালা, ও আর্দ্র ভাই আপনি আস্তে গরুরু গাড়ি চালান,, এই না না এটা তো কার গাড়ি, তাহলে এখানে গরুর গাড়ি নয় কার গাড়ি হবে।
তোমরা যে যাই বলো না কেনো আমার তো হেব্বি লাগছে আহ কতদিন পর গ্রামে আসলাম সেই রকম লাগছে,,, চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিয়ে বলল ইয়ানা।
স্টপ,,, তোমরা সবাই একটু চুপ করবে?? সেই কখন থেকে কানের কাছে বকবক করেই যাচ্ছো গাড়িতে ওঠা থেকেই শুরু হয়েছে বকবক এখনো থামার নামে কোনো খোঁজই নাই, , রেগে জোরে বলল আর্দ্র।
আর্দ্রর চিৎকারে সবার হালুয়া টাইট সবাই একদম ফুল স্টপ হয়ে গেলো,, আরে তোমরা ভয় পেয়ো না আমার ভাই ছোট বেলা থেকেই এমন করে,, খুব আদরের তো তাই, আমি দেখছি,, তা আর্দ্র ভাই আমার হঠাৎ করে গাড়ি থামালি কেনো?? কি হয়েছে আর এমন রাগ করছিস কেনো কতদিন পর সবাই বেড়াতে যাচ্ছি তাও আবার গ্রামে সবার মধ্যে অনেক এন্যার্জি বেশি বেশি হয়ে গেছে বুঝলি।
ওহ রিয়েলি?? তাহলে তো ভালো এক কাজ করো সবাই গাড়ি থেকে নামো তোমরা বরং হেঁটেই যাও কেননা তোমাদের তো অনেক এন্যার্জি হয়েছে,, আর তাছাড়া হেঁটেই যেতে হবে কেননা গাড়ি আমি এমনি এমনি বন্ধ করেনি বেচারা একাই বন্ধ হয়ে গেছে,, যে রাস্তা আর যে ধূলা গাড়ির অবস্থা খারাপ।
আ্যাঁ??? আর্দ্রর কথা শুনে সবাই একসাথে জোরে বলে উঠলো।
আ্যাঁ নয় হ্যাঁ,, ঠিক হয়েছে এখন বুঝবে মজা।
,,,,,,,,
হেই তোমার গরুর গাড়িতে আমি যাবো না টিকটক টিকটক আর তো পারিনা অনিক ভাইয়া এরপর কি হবে বলেন তো?? ইয়ানা নিজের হাত উপরে তুলে ঘোরাতে ঘোরাতে বলল।
আমি তো জানিনা মাই ডিয়ার শালিকা ,, তবে আমি শেষ এখন মনে হচ্ছে জ্যাকেট এর সাথে কম্বল আনার ও ঠিক ছিলো এতো শীত পরবে আমি জীবনেও ভাবিনি ,, ইয়ানা তোমার নানার বাসা আর কত দূর আর এতো শীত কেনো একেবারে হাড় কাঁপানো শীত, মনে হচ্ছে ওখানে পৌছানোর আগেই জমে বরফ হয়ে যাবো।
আসলে ওরা সবাই গরুর গাড়িতে করে যাচ্ছে কেননা তখন ওদের গাড়ি নষ্ট হওয়ার পর সবাই গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিলো,, ওদের গাড়ি পিছনে ছিলো তাই আগের গাড়িতে ওদের বাবা মা ছিলো ওনারা আগে আগে চলে গেছে,, ওরা দাঁড়িয়ে থাকার মাঝেই ইয়ানার এক চাচাত কাকু গরুর নিয়ে বাড়ি ফিরছিল ওনি জমি থেকে কাটা ধান যার জমি তার বাড়িতে দিয়ে ওনার নিজের বাড়ি ফিরছিলো তখনি মাঝ রাস্তায় ইয়ানাদের সাথে দেখা হয়ে গেলো আর ওরা সবাই এখন গরুর গাড়ি করেই ইয়ানার নানু বাসায় যাচ্ছে ,, এতে সবাই মজা পেলেও আর্দ্রর একটুও মজা লাগছে না উল্টে ও রেগে মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে রেখেছে এক হাতে জুতা ধরে অন্য হাত দিয়ে পায়ের কাছের জিন্স অনেকটা গুছিয়ে রেখে বসে আছে।
কি হলো আপনি মুখটা ওমন করে রেখেছেন কেনো?? দেখুন সবাই কত ইনজয় করছে আপনি এমন চুপ করে বসে আছেন কেনো??
তো কি করবো তোমাদের মতো লাফ ঝাপ করবো বাদরে মতো, সব গুলা ইডিয়ট কোনো কমন সেন্স নেই যত্তসব আর কি রাস্তা আর এটা কি গাড়ি?? এই জন্যই আমি আসতেই চাইনি কিন্তু কে শোনে কার কথা।
আরে কুল কুল এতো রাগ করছেন কেনো?? গ্রামে এতো শীত পরছে তবুও আপনার মাথা এতো গরম হয়ে আছে কেনো?? আচ্ছা আপনার তো গাড়িতে যেতে মন চাচ্ছে না তাইতো ওকে ঠিক আছে তাহলে আপনি বরং হেঁটেই আসেন,,, এই বলে ইয়ানা আর্দ্র কে ধাক্কা দিয়ে গরুর গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলো।
এই ইডিয়ট মেয়ে এটা কি করলে তুমি?? ,, রেগে বলল আর্দ্র
আপনিই তো বললেন আপনার এই গাড়িতে যেতে ভালো লাগছে না তাই আপনি বরং হেঁটেই আসুন,, আর হ্যাঁ চিন্তা করবেন না গাড়ি আস্তে আস্তে চলবে তাই আপনি হারিয়ে যাবেন না,, ইয়ানার এহেন কাজে সবাই হা হয়ে গেছে,, ওদিকে আর্দ্র রেগে জুতা হাতে করে হেঁটে হেঁটে আসছে। ইয়ানা এক ধ্যানে আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,, চুল গুলা এলোমেলো উপর থেকে শার্টের কয়েকটা বোতাম খোলা শার্টের উপরে জ্যাকেট এর চেনটা খোলা থাকায় দেখা যাচ্ছে, রেগে আছে জন্য মুখটা গোমরা করে রেখেছে, ঠান্ডার জন্য নাকটা লাল হয়ে আছে,, ফর্সা মুখে লাল নাক অনেক কিউট লাগছে,, ইস এই কিউট ছেলেটা আমার বর হায়, মে মাজাওয়া, এই ছেলেটা এত্তো হট কেনো,, মনে মনে বলল ইয়ানা।
চলবে,,,,,???