আলো আধারের খেলা পর্ব-২৬

0
288

#আলো আধারের খেলা
#পর্ব_২৬
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

টাকা দিতে এতো কিপটামি করো কেনো?এগুলো তোমার বাপের টাকা নাকি?যে দিতে মায়া লাগে।এগুলো আমার বাপের টাকা।আর বাপ তো সেই কবেই গায়েব হইছে,সে হিসেবে এখন তো আমিই মালিক।সেজন্য যখন যত টাকা চাইবো তখন তত টাকাই দিবে।বুঝেছো?
এই বলে হৃদয় ঊর্মির হাত থেকে সবগুলো টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হলো।এখন এই টাকা দিয়ে বন্ধুদের সাথে বসে নেশা করবে।মাত্র ক্লাস এইটে উঠেছে হৃদয়,আর এই টুকু বয়সেই সে নেশা করা শিখে গিয়েছে।
অন্যদিকে হিয়া একের পর এক ছেলের সাথে মেলামেশা করে শেষ পর্যন্ত ক্লাস টেনে উঠে ফাঁন্দে পড়ে যায়।অনিক নামের এক ছেলেকে ভালোবেসে তাকেই বিয়ে করতে চায়।কিন্তু ঊর্মি রাজি হয় না।কারণ অনিকদের পরিবার স্বচ্ছল ছিলো না।তখন হিয়া রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে যায়,আর অনিককে বিয়ে করে।কিন্তু কয়েকদিন পরেই অনিক কে আর ভালো লাগে না তার।মুখে বলতেও পারছে না,সেজন্য একা একা তার নিজের বাসায় চলে আসে।ঊর্মি হিয়াকে একটুও শাসন করতে পারে না।কিছু বললেই সেও হৃদয়ের মতো বড় বড় কথা বলে।
হিয়া বলে,
এটা আমার বাবার বাসা।এখানে শুধু আমার রাজত্ব চলবে।তুমি চুপচাপ শুধু খাবে আর রান্না করবে।তোমার আর কোনো কাজ নাই এ বাড়িতে।সুতরাং আমার ব্যাপারে বেশি নাক গলাবে না।আমার যা মন চায় আমি সেটাই করবো।

কিছুদিন হলো ঊর্মিদের বাসায় তুহিন নামের নতুন এক ভাড়াটিয়া উঠেছে।ছেলেটা নাকি বড় এক ব্যবসায়ী। তুহিন কে হ্যান্ডসাম আর বড়লোক ভেবে হিয়া তাকে পটাতে চেষ্টা করে।তুহিনও ভাবে বড়লোকের মেয়ে,বাসা বাড়ি আছে,এরকম মেয়েকে বিয়ে করায় যাই।হিয়া তখন অনিক কে ডিভোর্স দিয়ে আবার তুহিন কে বিয়ে করে।আর তাদের বাসাতেই থাকে।

কথায় আছে,মা যেমন হয়,তার সন্তানেরা ঠিক তেমনি হয়।ঊর্মির ছেলেমেয়েরাও তার ব্যতিক্রম হলো না।রুয়েলের ধন সম্পদ আত্নসাৎ করে ঊর্মি ভেবেছিলো সে খুব ভালো থাকবে।তার ছেলেমেয়েদের অনেকদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করাবে।কিন্তু তার ছেলেমেয়েরা তার থেকেও আরো বেশি নিকৃষ্ট হলো।

ঊর্মি ছেলেমেয়েদের এমন কান্ড দেখে আর তাদের মুখে এতো অপমান জনক কথাবার্তা শুনে দিনরাত শুধু কাঁদতে থাকে।আর রুবেলকে গালিগালাজ করে।কু,,,র বাচ্চা।কত করে বলেছি বাসা টা আমার নামে লিখে দি,দেস নি।নিজেও খেতে পারলি না,আমাকেও শান্তিমতো থাকতে দিচ্ছিস না।এখন ছেলেমেয়ের লাথি খেয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে।পুরাটা না দিলি আমাকে যদি অল্প কিছু লিখে দিতিস তাহলে আজ আমাকে এই দিন টা দেখতে হতো না।

রুবেলের প্রতি ঊর্মির এতোটুকু অনুশোচনা বা ভালোবাসা কিছুই নাই।সে কখনো ভালোই বাসে নি রুবেলকে।অথচ রুবেল তাকে কত ভালোবাসতো।ঊর্মির কথা শুনে রুবেল তার মা ভাই সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে।রুয়েলের মতো সহজ সরল ভাইকে ঠকিয়ে তার জমিজমা আত্নসাৎ করেছে।অথচ সেই বউ তখনো পরকিয়ায় আসক্ত ছিলো যা রুবেল বুঝতেই পারে নি।

ঊর্মির সেই গোপন প্রেমিক রাশেদ এখন ঊর্মিকে ব্লাকমেল করে করে টাকা আদায় করছে।ঊর্মি যদি তাকে একদিন টাকা না দেয় তাহলেই সে ঊর্মিকে ভয় দেখায়।তাদের সম্পর্কের কথা সবাইকে বলে দেবে বলে জানিয়ে দেয়।বিশেষ করে তার ছেলেমেয়েদের বললেই তারা ঊর্মিকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবে।ঊর্মি এই ভয়ে তাকে টাকা দিতে থাকে।কিন্তু ঊর্মি আর পারছে না টাকা দিতে।কারণ হিয়া এখন নিজেই সবকিছু দেখাশোনা করে।কারন সে তার দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে এই বাসাতেই থাকে।

ঊর্মি তখন রাগ করে রাশেদ কে বলে, আমার কাছে আর কোনো টাকা নাই।আমি আর দিতে পারবো না টাকা।যা করার কর গিয়ে।

ঊর্মি ভাবতেও পারে নি রাশেদ সত্যি সত্যি হিয়া আর হৃদয় কে বলতে যাবে।রাশেদ কে বাসায় দেখামাত্র ঊর্মির পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো।সে তখন কৌশল করে রাশেদকে বললো,তুমি চলে যাও।আমি টাকা পাঠিয়ে দেবো।রাশেদ সেই কথা শুনে চলে গেলো।

এদিকে হিয়া একটু চালাক প্রকৃতির ছিলো।সে রাশেদ কে তাদের বাসায় আসা দেখে কিছু একটা অনুমান করতে পারে।কারণ সে তার মায়ের পরকিয়ার কথা লোকেমুখে শুনেছিলো।তবে বিশ্বাস করে নি।কিন্তু আজ যখন রাশেদ কে তাদের বাসায় দেখলো সেজন্য হিয়া ফলো করতে লাগলো ঊর্মিকে।

গভীর রাতে বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ঊর্মি রাশেদের বাড়ি চলে যায়।সাথে কিছু টাকাও নেয়।হিয়া হৃদয় কে সাথে করে নিয়ে সেও পিছু পিছু ধাওয়া করে।আর হাতেনাতে ধরে ফেলে ওদের।হিয়ার ব্যবহার খুবই বাজে ছিলো।আর ও ভীষণ রগচটা ছিলো।সে ঊর্মিকে কানে কপালে চড় দিতে দিতে বলে এর সাথে তাহলে তুই এখনো নোংরামি করিস?
ঊর্মি তখন বলে,মুখ সামলিয়ে কথা বল হিয়া।আমি তোর মা হই।
–মা!কিসের মা?যে মহিলা তার স্বামীকে ভুলে গিয়ে পরকিয়া করতে পারে সে আবার কিসের মা হয়?

ঊর্মি তখন বলে তুই ফির খুব ভালো। এই বয়সে দুইটা স্বামী করেছিস।আরো যে কয়টা স্বামী হবে কে জানে?

হিয়া সেই কথা শোনামাত্র আরো বেশি রেগে যায়।আর চিৎকার করে বলে আমি তো বিয়ে করেছি,তোর মতো পরকিয়া করি নি।বেয়াদব মহিলা!আর আমাদের বাড়িতে উঠতে পারবি না।এই বেটার লগে এই বাড়িতেই থাক।এই বলে হিয়া চলে যায়।

ঊর্মি তখন হৃদয়ের হাত ধরে বলে,বাবা কি বলছে এসব হিয়া?তুই কিছু বলছিস না কেনো?

হৃদয় তখন বললো,আমি আর কি বলবো?আপু যখন চাইছে না তুমি থাকো আমাদের বাসায় তাহলে সেটাই হবে।তুমি থাকলে একটু অসুবিধায় হয় আমার।ঠিক করে টাকা দিতে চাও না।আর আপু বলার সাথেই নোট বের করে দেয়।এই বলে হৃদয় ও চলে গেলো।

ঊর্মি তার ছেলেমেয়ের কথা শুনে একদম স্তব্ধ হয়ে যায়।এই ছেলেমেয়ের জন্য সে এতো কিছু করেছে?সে স্বপ্নেও ভাবে নি হিয়া আর হৃদয় এমন বেয়াদব হয়ে যাবে।

ঊর্মির অসহায়ত্ব দেখে রাশেদ বলে ওরা যখন জেনেই গেছে তাহলে আর কিসের লুকোচুরি? চল আমরা বিয়ে করে ফেলি।তাছাড়া তোর আর কোনো গতি নাই।তোর ছেলেমেয়ের যে ব্যবহার দেখলাম মনে তো হয় না ওই বাড়িতে তুই শান্তিতে থাকতে পারবি।তারচেয়ে বরং আমার সাথেই থাক।বিলাসিতা ভাবে না চলতে পারলেও চারটা ডাল ভাত কিন্তু খেতে পারবি।

ঊর্মি অনেক কিছু ভেবে রাশেদ কে বিয়ে করে ফেলে।

ঊর্মি যখন রাশেদ কে বিয়ে করে পুরো এলাকায় হইচই পড়ে যায়।সবাই ছিঃ ছিঃ করতে লাগলো।এই বয়সে ঊর্মি বিয়ে করেছে।এতো বড় বড় ছেলেমেয়ে রেখে কি করে ঊর্মি বিয়ে করলো?

ঊর্মি একদম নীরব হয়ে থাকলো।সে কারো প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।যে ঊর্মির মুখ দিয়ে খই এর মতো কথা ফোটে আজ সে ঊর্মি চুপচাপ হয়ে গেছে।

ঊর্মির বিয়ের কথা শুনে হিয়া আর হৃদয় আরো বেশি রেগে যায়।তারা ভাবতেই পারে নি সত্যি সত্যি ঊর্মি বিয়ে করবে।হিয়া ভেবেছিলো হয় তো তার মা এসে তাদের রিকুয়েষ্ট করবে।কিন্তু তার মা তো ডাইরেক্ট বিয়ে করে নিলো।

কিছুদিন যেতেই রাশেদ ঊর্মিকে চাপ দিলো সে যেনো তার স্বামীর অংশ বের করে নিয়ে আসে।যেহেতু ঊর্মি রুবেলের স্ত্রী ছিলো সেজন্য সে এখনো দুই আনা সম্পত্তির মালিক।

ঊর্মি রাশেদের এমন সিদ্ধান্তে রাজি হয় না।সে তখন বলে আমি এ কাজ জীবনেও করতে পারবো না।আমি আর ওই ছেলেমেয়ের কাছে জীবনেও যাবো না।রাশেদ তখন ঊর্মির উপর ভীষণ টরচার করতে থাকে।শেষ মেষ বাধ্য হয়ে ঊর্মি তার ছেলেমেয়েদের কাছে প্রস্তাব দেয় তার সম্পদ বের করে দেওয়ার জন্য।

হৃদয় আর হিয়া শোনামাত্র ভীষণ ক্ষেপে যায়।তার মা শেষ পর্যন্ত জমি বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছে!
এদিকে হিয়ার স্বামী তুহিন তাদের পরিবারের এই অবস্থা দেখে সেও সুযোগ নিতে থাকে।তার কাছে তো ঊর্মিকেই তার পথের কাটা মনে হয়।এই ঊর্মি যতদিন থাকবে ততোদিন সে কিছুই করতে পারবে না।সেজন্য তুহিন হিয়াকে বলে,
আম্মা যখন তার জমি বের করেই চাচ্ছে তাকে দিয়ে দাও হিয়া।কারণ এটা ওনার স্বামীর সম্পদ।উনি যতই অন্য কাউকে বিয়ে করুক না কেনো এই সম্পদ ওনার অধিকার।
হিয়া সেই কথা শুনে বলে,আমাদের সম্পদ অন্য কেউ খাবে এটা আমি মেনে নিতে পারবো না।
তুহিন তখন বলে,অন্যজন খাবে কেনো?তোমার মায়ের সম্পদ আমি কিনে নেবো।
হিয়া সেই কথা শুনে রাজি হয়ে যায়।

ঊর্মি তার ভাগের অংশ বিক্রি করে যে টাকা পায় সেটা আর রাশেদ কে দেয় না।কারণ সে বুঝতে পারে রাশেদ এই টাকার জন্যই তাকে বিয়ে করেছে।এই টাকা শেষ হলে আবার তার উপর অত্যাচার করবে সে।এতোদিন এই টাকার জন্য তার উপর সে অনেক অত্যাচার করেছে। সেজন্য ঊর্মি টাকাটা তার নিজের কাছেই রাখে।কিন্তু টাকা না পেয়ে রাশেদের মাথা পাগল হয়ে যায়।এই টাকা টাকা করে প্রতিদিন তাদের ঝগড়া শুরু হয়।এক পর্যায়ে ঊর্মি বাপের বাড়ি চলে যায়।আর সিদ্ধান্ত নেয় রাশেদকে ডিভোর্স দেবে।

রাশেদ ডিভোর্সের কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে ঊর্মির বাড়ি গিয়ে বলে আসে আমি যদি এই টাকা না পাই তাহলে আমি সব ফাঁস করে দেবো।তুই যে রুবেল কে মেরেছিস সব বলে দিবো সবাইকে।

–ঊর্মি তখন বলে যা বল গিয়ে।তুই যদি মুখ খুলিস তাহলে তুই ও ফাঁসবি।কারণ রুবেলকে তুই নিজের হাতে খুন করেছিস।আমার কাছে সেটার ভিডিও আছে।

রাশেদ ঊর্মির কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়।সেজন্য সে আর ঝামেলা করে না।তাড়াতাড়ি করে সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে ঊর্মি মাথায় হাত দিয়ে জোরে জোরে করে কাঁদতে থাকে।সে কি করেছে এসব?শুধুমাত্র রাশেদের কথায় সে তার সহজ সরল স্বামীকে মেরে ফেলেছে।শুধুমাত্র রাশেদের জন্য তার আজ এই দুর্দশা।রুবেল বেঁচে থাকলে সে আজ রানীর মতো করে বেঁচে থাকতো।
সেইদিন রাতে রাশেদ আবার আসে ঊর্মির ঘরে।আর ঊর্মির হাত পা বেঁধে তার সব টাকাপয়সা মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।ঊর্মির কাছে আর কিছুই থাকলো না।
ঊর্মি পরের দিন পুলিশ ষ্টেশনে গিয়ে রাশেদের নামে মামলা করে।কিন্তু পুলিশ রাশেদ কে আর খুঁজে পায় না।রাশেদ যে কই উধাও হয়েছে কেউ জানে না।এখন নিঃশ্ব ঊর্মি তার ভাই বউ এর আঙিনা ঝাঁড় দেয়,থালাবাসন মাজে।তারপরেও তার ভাই বউ নানা রকমের কথা বলে। ঊর্মির আর কোনো উপাই ও নাই,যে রাগ করে কোথাও চলে যাবে।সে তার ভাই বউ এর কথা শুনেই থাকে।আর দিন রাত শুধু চোখের পানি ফেলে।

ঊর্মি বুঝতে পারে এই পরিনতির জন্য শুধু মাত্র সেই দায়ী।সে নিজের হাত দিয়ে তার কপাল শেষ করেছে।আর সবচেয়ে বড় কথা রুয়েলের সাথে সে মারাত্মক অন্যায় করেছে,যার কোনো ক্ষমা নাই।ঊর্মির এখন ইচ্ছা করে রুয়েল আর জান্নাতের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিতে।কিন্তু সে সাহস তার আর হয় না।

এদিকে তুহিন আর হিয়া এখন পুরো সংসারে রাজত্ব করছে।হৃদয় তো দিন রাতে নেশা করে করে ঘুরে বেড়ায়।কোনোদিন বাসায় আসে আবার কোনোদিন আসে না।তুহিন নিজেও সুযোগ খুঁজতে থাকে।সে কোনদিন সবাইকে ঠকিয়ে পালিয়ে যাবে।কিন্তু হিয়া বড্ড চালাক।তাকে চালাকি দেওয়ার মতো ছেলের জন্মই হয় নি।তুহিন সেজন্য হিয়ার সম্পদের আশা ছেড়ে দিলো।

দুই বছর পর হৃদয় কে বিয়ে করালো হিয়া।কারণ হৃদয় বিয়ে করার জন্য ভীষণ চাপ দিচ্ছিলো।কিছুদিন ভালোভাবে চললেও পরে তাদের সংসারেও অশান্তির সৃষ্টি হয়।হৃদয়ের বউ হৃদয় কে বলে তোমার বাবার সম্পত্তিতে তোমার অধিকার বেশি,সেখানে তোমার বোন এতো দালালি করে কেনো?ও তোমার পিছু পিছু ঘুরবে,তা না করে বোকার মতো তুমি ওর পিছু পিছু ঘোরো কেনো?
হৃদয় যখন বুঝলো হ্যাঁ ঠিকই তো।সে কেনো তার বোনের থেকে এভাবে টাকা চেয়ে চেয়ে নেবে?হৃদয় তখন প্রস্তাব দিলো আজ থেকে সে সবকিছু দেখাশোনা করবে।
হিয়া হৃদয়ের কথা শুনে রাগে ফায়ার হয়ে যায়।সে তখন হৃদয় কে বকতে থাকে।এই ভাবে দুই ভাই বোনের মধ্যেও ঝগড়া লেগে যায়।তখন হৃদয় আর হিয়া দুইজনে তাদের বাবার সম্পদ ভাগ করে নেয়।

হিয়া যেটুকু ভাগে পায় সেটুকু দিয়ে তার সংসার চলে না।সেজন্য সে তার সম্পদ বেঁচে তার স্বামীর গ্রামে চলে যায়।কিন্তু তার স্বামীর গ্রামে গিয়ে দেখে তুহিনের কিছুই নাই।তুহিন বলেছিলো তাদের অনেক জমিজমা আছে।বাড়িগাড়ি সব আছে।হিয়ার মাথা গরম হয়ে গেলো।কিন্তু কিছুই আর করার নাই।কারণ তার ও নিজের বলতে আর কিছুই থাকলো না।তার বাবার জমি বিক্রি করা টাকা দিয়ে তুহিন ব্যবসা শুরু করে।কিন্তু ব্যবসাতে তেমন লাভ করতে পারে না।শেষমেশ স্বামী স্ত্রী দুইজনই গার্মেন্টস এ চলে যায়।

অন্যদিকে হৃদয়ের বউ একটু চালাক হওয়াই সংসার টা ধরে রেখেছিলো কিছুদিন।কিন্তু তাদের সংসার টা বেশিদিন টেকে না।কারণ হৃদয় দিনে রাতে নেশা করে করে বাড়ি ফেরে।কোনো কাজকর্ম করে না।এভাবে বসে থেকে আর কতদিন চলে।শেষমেশ হৃদয়ের বউ ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়।হৃদয় এবার পুরো স্বাধীনতা পেয়ে যায়।সে আগের চেয়ে আরো বেশি নেশাখোর হয়ে যায়।হৃদয়ের আর কোনো সম্পদই বাকি থাকে না।সব বেঁচে শেষমেশ হৃদয় পাগলের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়।

#চলবে,