#তুই__আমার
#লেখাঃ সাফিয়া_জান্নাত_মুন
#পর্ব ১১
———–
আয়েশার খালার পাশে মেঘা দারাতে মেঘার হাত ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলো। তার কান্না বাধ থামছে না এই প্রথমবার মেঘা তাকে এভাবে কাঁদতে দেখলো। মেঘা কি করবে কিছুই বলবে তাও কেন জানি পাড়ছে না। আয়শা খালা মেঘার হাত ছেড়ে দিয়ে ভিতরে চলে গেলো।
মেঘা কিছুক্ষণ ধরে দারিয়ে দারিয়ে ভাবচ্ছে কাব্যর বলা কথা গুলো আসলে মা-বাবার ভালোবাসা টা যে কতটা গুরুত্ববহন করে তা মেঘার থেকে ভালো কে জানে। আজ প্রথমবার মেঘার মনে হচ্ছে সে কাব্য কে ভুল চিনেছে তার যে বাহিরের চেহারাটার পিছে অন্যএকটা চেহারা লুকিয়ে আছে মেঘার সেই চেহারা টাকে খুঁজা উচিৎ তাকে জানা উচিৎ।
মেঘা আর কিছুই না ভেবে মন থেকে কাব্যকে মাপ করে দিলো কাব্য কে খুঁজার জন্য বাসার বাহিরে এসে দেখলো।
কাব্য বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। মেঘা এক চিলতি হাসি নিয়ে কাব্যর দিকে এগিয়ে আসছে। মনের মধ্য হাজারো ভালো লাগার অনুভূতি গুলো নেড়ে চরে উঠছে। ভালোবাসার সাগরে ঢেউহীন আনাগোনা হচ্ছে।
মেঘা কাব্য র কাছে আসার এক মিনিট আগে কই থেকে একটা মেয়ে এসে কাব্যকে জড়িয়ে ধরলো।
দূর থেকে স্পষ্ট ভাবে তা মেঘা দেখে হনহন করে এগিয়ে আসলো ১ মিনিটের যায়গায় ৩০ সেকেন্ড এ ছুটে চলে আসলো।
মেঘা আসতে কাব্য মেয়েটিকে ছেড়ে দিয়ে সরে দারালো। মেঘার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
মেঘা ও প্রিয়তা আমার সব থেকে ভালো বন্ধু প্রিয়তা ও আমার স্ত্রী মেঘা কাব্য চৌধুরী। মেঘা হাসি মুখ নিয়ে প্রিয়তার দিকে তাকালো।
প্রিয়তা হেসে হেসে বললো,
ভারি মিষ্টি মেয়ে তুমি। তুমি জানো তুমি অনেক ভাগ্যবতী তুমি কাব্যর মতো ছেলেকে স্বামী হিসাবে পেয়েছো।
কাব্য প্রিয়তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো,না ভুল বললি আমি অনেক লাকী যে মেঘা আমার বউ।
এই তোর কথার বলার মাঝে কথা বলার স্বভাব টা গেলো না।
হিহিহি তো তোর কথা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলে তো দিন গড়িয়ে রাত।
এই তুই ফুট তো এখন আমি মেঘার সাথে আড্ডা জমাবো আর তুই তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে এখানে থাকতে পারিস না।
না আমি আমার বউ এর সাথে থাকবো।
হুউ ২দিনে ও হয়নি বিয়ে হলো না আর এরমধ্য বউ পাগলা হয়ে উঠেছিস যা ভাগ তো।
না তুই যাহ আমার বউ আমার সাথে থাকবে।
ধুর প্রিয়তা মেঘার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ভিতরে দিকে। আর কাব্য হাসি মুখে তাকিয়ে আছে মেঘার দিকে, কাব্যর হাসি মুখটার দিকে মেঘা এক নজর দিয়ে ভাবলো,,প্রিয়তার জন্য আপনার মুখে কত সুন্দর হাসি ফুটেছে।
!
!
!
!
প্রিয়তা মেয়েটা মন্দ না অনেক সুন্দর ভাবে গুচ্ছিয়ে কথা বলতে পারে। সাধারণ ভাবে আমরা কোন কথার পর কোন কথা বলবো তা খুঁজে পাইনা আর সেই যায়গায় এই মেয়েটি কোন কথা টা বললে কথারঢং সুন্দর হবে তা তার আগে থেকে জানা আছে। সব কথার মাঝে একটা কথা খারাপ লাগছে মেঘার তা হলো কাব্য এ করতে পছন্দ করে কাব্য ও করতে পছন্দ করে কথার ৪ভাগের এক ভাগ অনন্যা বিষয়াবলী নিয়ে আর তিন ভাগই কাব্য আর কাব্য নিয়ে।
তবুও এক চিলতি হাসি ঠোঁটের কোনায় ঝুলিয়ে মেঘা খুব সিরিয়াস ভাব সাব নিয়ে শুনে যাচ্ছে তার কথা।
কোথা থেকে কাব্য এসে মেঘার পাশে গা এলিয়ে বসে তার কাধে মাথা রাখলো। মেঘা সরাতে যাবে সামনে প্রিয়তাকে দেখে কিছুই বললো না উল্টে এমন ভান ধরলো যে সে লজ্জা লতিকা হয়ে উঠেছে প্রিয়তার বিষয়টা হয়তো ভালো লাগলো না, সে বলে উঠলো, কাব্য।
কাব্য মেঘার কাধা মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে পা দুলাচ্ছিলো, সে চোখ বন্ধ করে বললো হুম।
এটা কি হচ্ছে?
কোনটা??
তুই এখানে কেনো আসলি??
দেখ তোদের মাঝে আমি আসলে প্রব্লেম কোথায় বলতো। কাব্য সোজা হয়ে বসে কথা টা বললো।
প্রিয়তা আর কিছুই বললো না।
আচ্ছা আপনি তো সেই কখন এসেছে আমি আপনার জন্য খাবার কিছুই নিয়ে আসছি। মেঘা উঠতেই কাব্য হাত ধরে বসিয়ে দিলো
তোমায় ব্যস্ত হতে হবে না আমার কাছে বসো আমি দুলি কে বলে দিয়ে এসেছি ও কিছুক্ষণ পরে দিয়ে যাবে।
মুখ ফুলিয়ে বাচ্চাদের মতো করে প্রিয়তা বললো কাব্য তুই তো আমায় ভুলে গেছিস বউ পেয়েছিস বলে কথা।
কাব্য হালকা শব্দ করে হেসে প্রিয়তার পাশে বসতে বসতে বললো,, তুই আমার আগে ফ্রেন্ড ছিলি এখনো থাকবি বুঝলি শুন কোনো সম্পর্কের মধ্য কোনো সম্পর্ক আসে না।
হুম হইছে হইছে এখন আমায় পাম দিতে আসবি না একদম না।
আচ্ছা তুই এভাবে রাগ করছিস কেন বলতো।
আমি তোর কে যে রাগ করবো।
তুই আমার ফ্রেন্ড।
প্রিয়তার সাথে কাব্য সেইক্ষন থেকে কথা বলে যাচ্ছে মেঘার মাথা ধরছে তাদের কথায় যতসব ফ্রেন্ডশিপ মেঘার ইচ্ছা করছে দুইটার মাথা এক সাথে করে টোকা দেওয়া। কিন্তু ওইযে ভদ্রতাজনিত কারনে পারছে না। উল্টো হাসি রেখা ফুটিয়ে তুলতে হচ্ছে মুখের কোনে।
ফুলি এসে চা নাস্তা দিয়ে গেলো। উফ সামনে এক কাপ কফি দেখে মেঘার চট করে মনটা ভালো হয়ে গেলো। এক কাপ কফি পারে এখন তাকে শান্তি এনে দিতে। এতসব ভাবনা বক্সে রেখে তালা মেরে কফি কাপ হাতে নিয়ে এক চুমুক দিতে,, রীতিমতো চিল্লায় প্রিয়তা বলতে লাগলো,, এই এই তুমি কি করছো??
মেঘা অবাক হয়ে বললো,, কি করছি??
তুমি ভুল করে কফি কাপ নিয়ে নিচ্ছো কাব্য কফি ছাড়া অন্যকিছু বলতে চা খায় না।
কি আমিও চা খাই না শুধু কফি।
মেঘার কথায় কাব্য হেসে বললো, সত্যি মেঘা তুমি চা পছন্দ করো না?
হুম সেই ছোট থেকে করি না।
যাক আমার বউ এর সাথে আমার কিছুই মিল তো পাওয়া গেলো। আচ্ছা আমি ফুলিকে বলছি আর এক কাপ কফি দিতে।
না আপনি বসুন আমি গিয়ে নিয়ে আসছি আপনি আমার টা নিন।
প্রিয়তা ভ্রু কুচক্রে বললো, মেঘা তুমি তো এটা এঁটো করেছো কাব্য তোমার ছাড়া টা খাবে?
ওহ সরি আমি আর একটা নতুন নিয়ে আসছি।
কাব্য মেঘার হাত থেকে কফির মগ টা নিয়ে বসে পড়লো।
আপনি কি করছেন বলুন তো?
তোমার টা আমি খাবো তুমি অন্য এক কাপ নিয়ে আসো।
আমি তো এটা খেয়েছি।
আমার কোনো সমস্যা নেই বুঝলা এটা এখন আমার কাছে দ্বিগুন মিষ্টি লাগবে। চোখ টিপে মেঘা কে কথা টা বললো।
মেঘা কিচেনে চলে গেলো আরো এক কাপ কফি আনতে।
কিছুইক্ষন পর মেঘা কফি হাতে ফিরে আসলো আর দেখলো।
প্রিয়তা হাসিতে কাব্যর গায়ে এলিয়ে পড়ছে যা মেঘার একদম সহ্য হচ্ছে না।
মেঘা কে দেখে প্রয়িতা হেসে হেসে বলছে মেঘা তুমিও দেখো আমার আর কাব্যর পিকচার।
মেঘা এগিয়ে এসে কাব্যর পাশে বসতে কাব্য এক অদ্ভুত অনুভব নিয়ে মেঘার দিকে তাকালো প্রিয়তা উঠে এসে মেঘার পাশে বসলো মনে মনে মেঘা এটাই চাচ্ছিলো।
প্রিয়তা একেরপর এক ছবি দেখিয়ে চলেছে দেখিয়ে চলেছে।
মেঘা মনে মনে বলছে,
ইহ আমার বরের সাথে আমি পিক তো দূর একটা সেলফি তুললাম না আর একে দেখো সব এংগেলে পিক তুলে শেষ করেছে। মেঘার ইচ্ছা হচ্ছে ফোন টা তুলে আছাড় মারতে কিন্তু সে নিরূপায়।
চলবে__________