#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৪
কাজ & ঝামেলার চাপে এখনো আমেরিকা তে থাকলেও মন যেনো আর এখানে টিকছেই না। দেশে ইলা, অনামিকা, নিজের বন্ধুবান্ধবদের প্রচুর মিস করে আইরাত। আব্রাহামও চাইছে যে যত জলদি সম্ভব দেশে ফিরে যাবে কিন্তু তা যেনো আর হতেই চাইছে না। আইরাত এখন রুমেই, আর আব্রাহাম গিয়েছে বাইরে। রুমের টুকটাক কাজ করছিলো আইরাত তখনই ল্যান্ডলাইনে কল আসে।
আইরাত;; হ্যালো।
তায়াফ;; গুড মর্নিং।
আইরাত;; আপনি কে?
তায়াফ;; আরে ভুলে গেলেন এতো জলদি। ঠিকআছে আপনি ভুলেছেন, তবে আমি না। আপনি বলেছিলেন গোলাপের সাথে কাটাও থাকে। আমি চাচ্ছি কাটা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত হতে।
আইরাতের বুঝতে আর সময় লাগে না যে এটা তায়াফ ছাড়া আর কেউ না।
আইরাত;; কেনো ফোন করেছেন?
তায়াফ;; বারবার মন-মস্তিষ্কের দরজায় আপনিই এসে কড়া নাড়ছিলেন তাই।
আইরাত ফোন রেখে দিতে যায় তখনই তায়াফ তড়িঘড়ি করে বলে ওঠে…
তায়াফ;; আরে আরে ফোন কাটবেন না একদমই।
আইরাত;; সমস্যা কি আপনার?
তায়াফ;; আপনাকে দেখার আগ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিলো এখন আপনাকে দেখার পর না জানি কি হয়ে গেছে।
আইরাত;; আমি মনে করি কোন ভদ্র ঘরের ছেলে একজন অচেনা মেয়েকে ফোন দিয়ে এভাবে জ্বালাতন অবশ্যই করে না,, সো প্লিজ।
তায়াফ;; খোঁজ নিলাম আপনার ব্যাপারে।
আইরাত;; মানে?
তায়াফ;; মানে কিছুই না এইযে আপনার সাথে কথা বললাম আর কি।
আইরাত;; আশা করি এইসন আজাইরা কথা বলার জন্য দ্বিতীয় বার আর ফোন করবেন না।
এই বলেই আইরাত ঠাস করে ফোন কেটে দেয়। খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আচ্ছা ঝামেলা এই লোক। আইরাত একবার ভাবে যে আব্রাহাম কে সব বলে দিবে কিন্তু আবার নিজ মনে মনেই ভাবে যে থাক আর বলতে হবে না তাকে। কেননা এমনিতেই সে অনেক ঝামেলায় আছে তার ওপর উল্লাসকে মারলো। আবার নতুন করে এই উটকো ঝামেলা না পাকাক। তাই পরক্ষণেই ঝেড়ে ফেলে এই কথা মাথা থেকে।
।
।
অন্যদিকে আব্রাহাম আজ বেশ সাবধানে চলাফেরা করছে। কেননা উল্লাসের অনেক লোকই আছে এখানে। আর তারা যদি জেনে যায় যে আব্রাহামই উল্লাস কে মেরেছে তাহলে তারা বুঝে যাবে যে এখানে আব্রাহাম কোহিনূরের জন্যই এসেছে এবং আরো সতর্ক হয়ে যাবে যা আব্রাহাম চাইছে না। একদম মূলবিন্দু থেকে তারপর ধাপে ধাপে ওপরের দিকে যেতে হবে। উল্লাস বলেছিলো এখানে আতিক আছে তারাও এর সাথে জড়িত। তাহলে সবার আগে আতিকের চেলা বিজয়ের কাছ থেকে তার সব খোঁজ-খবর নিতে হবে তারপর আতিক অব্দি পৌঁছাতে পারলেই মূল উদ্দেশ্য পর্যন্ত যেতে পারবে। আব্রাহাম এখন একটা কফিশপের ভেতরে বসে আছে। তার সামনে দুজন বিদেশি লোক বসে আছে। তাদের সাথে কথায় ব্যাস্ত ছিলো আব্রাহাম তবে তার মাঝেই হঠাৎ করে তার চোখ যায় একজন লোকের দিকে। সেদিকে কপাল কুচকে তাকালে লোকটা তার পেছন ঘুরে তাকায়। আব্রাহাম দেখে এই বিজয়। যাক ভালোই হলো। বেশি একটা খুঁজতে হয়নি, একাই চোখের সামনে পরে গেছে। আব্রাহাম কথা বলছে আর বিজয়ের ওপর নজর রাখছে। এখন কোন মতেই একে হাতছাড়া করা যাবে না। বেশ কিছুক্ষন পর বিজয় হঠাৎ সেখান থেকে চলে আসতে ধরে আব্রাহামও তার সামনে বসে থাকা লোক দুটো কে বলে সেখান থেকে দ্রুত উঠে পরে। মুখে একটা কালো মাস্ক পরে বেশ আড়াল করেই যেতে লাগে। আসলে আব্রাহাম বিজয় কে ফলো করছে। যেতে যেতেই বিজয় ০৩ নাম্বার ফ্লোরের ১৩ নাম্বার রুমের ভেতরে চলে যায়। এখন আব্রাহাম ভেতরে যাবে কি করে। তবে সব রুমেরই ডুপলিকেট চাবি থাকে। তাই সে সোজা রিসিপশনের কাছে চলে যায়।
রিসিপশনিস্ট;; Yes sir, how can i help you?
আব্রাহাম;; Actually i want a duplicate key of room number 13.
রিসিপশনিস্ট;; Sorry sir, we have no permission……
রিসিপশনিস্টের পুরো কথা শেষ না হতেই আব্রাহাম তার মুখ থেকে মাস্ক টা নিচে নামিয়ে দেয়। আব্রাহাম কে দেখে সে একটু ঝটকাই খায়। আর কোন কথা না বলে সোজা ১৩ নাম্বার রুমের চাবি আব্রাহাম কে দিয়ে দেয়। আব্রাহাম চাবি নিয়ে এসে পরে। বিনা শব্দে ধীর গতিতে রুমের ভেতরে চলে যায়। কিন্তু রুমে কেউ নেই, পুরো রুম ফাকা। আব্রাহাম আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছিলো তখনই খেয়াল করে ওয়াসরুম থেকে পানির শব্দ আসছে। আব্রাহাম সেদিকে এগিয়ে যায়, গিয়ে দেখে ওয়াসরুমে কেউ নেই শুধু পানি ঝড়ছে। হুট করেই তার কেনো যেনো মনে হতে লাগলো যে তার ঠিক পেছনেই কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সে পেছনে ঘুড়ে দেখে বিজয় দাঁড়িয়ে আছে আর তার হাতে এক বেধ ধারালো চাকু। বিজয় এক চিৎকার দিয়ে আব্রাহামের ওপর চাকু দিয়ে যেই না আঘাত করতে আসবে তখন আব্রাহাম দ্রুত সেখান থেকে সরে গিয়ে উল্টো ঘুরে বিজয় কে পেছন থেকে শক্ত করে প্যাচিয়ে ধরে একহাতে। বিজয় ছাড়া পাবার জন্য প্রচুর নড়াচড়া করতে লাগে কিন্তু পারে না।
আব্রাহাম;; দেখ আমার তোর সাথে কোন শত্রুনা নেই অযথা আগ বারিয়ে মরতে আসিস না। চুপচাপ বল আতিক কোথায়?
বিজয়;; বলবো না আমি।
আবাহাম;; বাহ, তুই তো দেখি অনেক বেশিই বিশস্ত ব্যাক্তি আতিকের। কিন্তু আফসোস এই বিশস্ততা খারাপ দিকের কোন ভালো দিকের না। এবার বেশি সময় নষ্ট না করে বলে দে যে আতিক কোথায় আছে!
বিজয় কিছু বলছে না দেখে আব্রাহাম তার পায়ে লাথি নিয়ে নিচে বসিয়ে দেয়। তবুও কিছু বলে না দেখে আব্রাহাম উল্টো ঘুরিয়ে বিজয়ের হাতে চাকু নিয়ে ইচ্ছে মতো তারই হাতে কয়েক ঘা বসিয়ে দেয়। যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে ওঠে সে। একটা সময় আর না সইতে পেরে সে বলেই দেয়।
বিজয়;; উনিহ, উ উনি সাত নাম্বার ফ্লোরের রুম নাম্বার এগারো তে আছেন।
আব্রাহাম ক্ষনিকের জন্য বিজয় কে ছেড়ে দেয়। রাগে রক্তচক্ষু নিয়ে আছে। বিজয় কে ছেড়েই দিতো আব্রাহাম কিন্তু পরমূহুর্তেই তার মনে পরে যে বিজয় আইরাতের সব খোঁজ নিয়ে আতিক কে বলেছিলো। এটা মনে পরতেই মেজাজ আরেকদফা চটে যায়। দাঁত গুলো কটমট করতে করতে বিজয়ের হাত থেকে ছুরি টা নিয়ে সোজা তার গলায় চালিয়ে দেয়। কথা বলার সময় টুকুও পায় না। অতঃপর বিজয়ের দেহকে ওয়াসরুমের পানিভর্তি টাবে ফেলে দেয়। মূহুর্তেই যেনো টাবের পানিটুকু গাঢ় লাল বর্ণ ধারন করে রক্তের ধারায়। আব্রাহাম আবার তার মুখে মাস্ক পরে এসে পরে। এখন খুন করে ফেলার কথা কেউ জানলে জানুক, কেউ না জানলে না জানুল তাতে কিছুই যায়-আসে না তার। আব্রাহাম সোজা সেই ফ্লোর থেকেই বের হয়ে পরে। এবার যত দ্রুত সম্ভব আতিক কে খুঁজে বের করতে হবে। আব্রাহাম এখনই আতিকের খোঁজে বের হয়ে পরতো কিন্তু তখন আইরাত ফোন করে বসে।
আব্রাহাম;; হ্যালো
আইরাত;; কোথায় আপনি?
আব্রাহাম;; আমি বাইরে কেনো কিছু কি হয়েছে নাকি!
আইরাত;; বাইরে বের হয়েছেন ৩ ঘন্টা। এখনো আপনার কাজ শেষ হলো না! রুমে আসুন জলদি।
আব্রাহাম;; কন্ঠ এতো ধীর লাগছে কেনো? বেবিগার্ল ঠিক আছো?
আইরাত;; হ্যাঁ আপনি প্লিজ চলে আসুন তাহলেই হবে।
আব্রাহাম;; আচ্ছা আসছি।
আইরাত ফোন কেটে দেয়। তার কিছু সময় পরেই আব্রাহাম রুমে আসে এসে দেখে আইরাত জানালার থাই গ্লাস টা সরিয়ে দিয়ে দুহাটু ভাজ করে বসে আছে। দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম এসেছে। আব্রাহাম নিজের ওপর থেকে জেকেট টা খুলে রাখে। আইরাতের সামনে গিয়ে বসে পরে। আইরাত তার দিকে তাকালে দে খানিক ভ্রু নাচায়। আইরাত মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
আব্রাহাম;; আরে বাবা হয়েছে কি?
আইরাত;; কবে সব ঝামেলা শেষ হবে? কবে আমরা দেশে যাবো? কবে বাড়ি যাবো?
আব্রাহাম;; কেনো খুব তো দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো মিটে গেছে তা!?
আইরাত;; ইচ্ছে ছিলো আর আছেও। মিটে নি। কিন্তু আমি এইসব অহেতুক ঝামেলা চাই নি যেগুলো এখন হচ্ছে।
আব্রাহাম আইরাতের গালের পাশে নিজের হাত রেখে দেয়।
আব্রাহাম;; খুব শীঘ্রই যাবো আমরা।
আইরাত;; হুমম।
আব্রাহাম;; খেয়েছিলে কিছু নাকি এমনিই বসে আছো?
আইরাত;; খেতে ইচ্ছে করছে না।
আব্রাহাম শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে উঠে পরে। তারপর নিজেই খাবার বেরে এনে আইরাতের মুখের সামনে ধরে। প্রথমে না না করলে আব্রাহাম গিয়ে এক বাটি কাচা মরিচ এনে আইরাতের সামনে রেখে দেয়। দুপা ভাজ করে হাতে মরিচের বাটি নিয়ে বসে পরে। আব্রাহাম তার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে আর আইরাত হাতে কাচা মরিচ নিয়ে ইচ্ছে মতো খাচ্ছে। এটা নতুন কিছু না। আব্রাহাম জানে যে আইরাত প্রচন্ডরকমের ঝাল প্রিয়। কিন্তু তখনই দরজায় কড়া নাড়ে। আব্রাহাম গিয়ে দরজা খুলে কিছুটা অবাকই হয়।
।
।
।
।
চলবে~~
#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৫
দরজার ওপর পাশে দাঁড়িয়ে আছে রিয়ানা। মুখে চুইংগাম চিবুতে চিবুতে একহাত দরজার ওপরে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম কে দরজা মেলে দাঁড়াতে দেখেই টাস করে রিয়ানার মুখে বেলুনের মতো ফুলে থাকা চুইংগাম টা ফুটে গেলো। প্রচন্ডরকমের গরম কড়াইয়ে পানি ঢেলে দিলে যেমন ছাত করে ওঠে এখন রিয়ানা কে দেখে আব্রাহামের মেজাজের অবস্থাও সেইম। রিয়ানা দরজা তে ধাক্কা দিলে আব্রাহাম তার হাত দিয়ে শক্ত করে দরজা ধরে ফেলে। মুখে এক কঠোরতার ছাপ এনে রিয়ানার দিকে তাকায়।
আব্রাহাম;; সমস্যা কি?
রিয়ানা;; ওও আব্রাহাম আমার আবার কি সমস্যা হবে বলো। তুমি জানো না যে আমি তোমাতে ফিদাহ!!
আব্রাহাম;; বাজে না বকে বলো কেনো এসেছো?
রিয়ানা;; অবশ্যই তোমার জন্য৷
আব্রাহাম কারো সাথে কথা বলছে দেখে আইরাতের কেমন যেনো একটু খটকা লাগে।
আইরাত;; আব্রাহাম! কে এসেছে?
আব্রাহাম;; কেউ না বেবিগার্ল, জাস্ট এন আউটসাইডার।
আব্রাহাম মেকি হেসে রিয়ানার দিকে তাকায়। আর আইরাত বিছানাতে বসে বসেই উঁকিঝুকি দিয়ে বাইরে কে আছে তা দেখার চেষ্টা করছে।
আব্রাহাম;; গেট লস্ট!
এই বলেই আব্রাহাম ধিরিম করে রিয়ানার মুখের ওপর দরজা লাগিয়ে দেয়। সে ভাবে নি যে রিয়ানাও এখানে আছে বা থাকতে পারে। এভাবে রিয়ানা কে সামনে দেখে বেশ বিরক্তিকর লাগে তার। মেয়েটা আসলেই গায়ে পরা প্রকৃতির।
আব্রাহাম আবার আইরাতের কাছে এসে বসে।
আইরাত;; কে ছিলো?
আব্রাহাম;; কেউ না জানপাখি।
আইরাত;; না না কেউ তো একজন ছিলো যার সাথে আপনি কথা বলছিলেন।
আব্রাহাম;; এমনি, ইগনোর করো।
আইরাত;; হুমম।
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল রেডি থেকো আজ ক্লাবে যাবো।
আইরাত;; কেনো?
আব্রাহাম;; ঘুরতে।
আইরাত;; তো আর জায়গা কি পেলেন না আপনি?
আব্রাহাম;; দরকার আছে তাই। তুমি রেডি থেকো।
আইরাত;; আচ্ছা।
রিয়ানা বেশ অপমানিত হয় আব্রাহামের এমন কান্ডে। সে ভাবে নি এমন করবে। আর না ই রিয়ানা আব্রাহাম-আইরাতের বিয়ের বিষয়ে জানে৷ এটাও জানে না যে আব্রাহামের সাথে সাথে এখানে আইরাতও আছে। চটে গিয়ে টগবগিয়ে হেঁটে সেখান থেকে সে এসে পরে।
।
।
ধীরে ধীরে রাতের সময় ঘনিয়ে আসে। আব্রাহাম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জেকেট পরছে আর আইরাত কে ডেকে যাচ্ছে।
আব্রাহাম;; আইরাত বেবিগার্ল হলো?
আইরাত;; দু মিনিট।
আব্রাহাম;; হুমম।
কিছুক্ষণ পর আইরাত চেঞ্জিং রুম থেকে বের হয়ে পরে৷ আব্রাহাম তার মাথা থেকে পা অব্দি একবার দেখে নেয়। পুরো আব্রাহামের মতোই গেটাপ। অর্থাৎ আব্রাহামের ফিমেল ভারসন লাগছে পুরো আইরাত কে। আব্রাহাম যেমন ব্ল্যাক-হুয়াইট প্যান্ট শার্ট জেকেট পরেছে আইরাতও সেম। চুলগুলো কার্লি করে পেছনে ছেড়ে দিয়েছে। পায়ে উঁচু শু জুতো।
আব্রাহাম;; হে বউ!
আইরাত;; জ্বি জামাইজান।
আব্রাহাম নিজের দুহাত ভাজ করে আয়নার পাশেই মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে পরে। মুখের কোণে ঝুলছে মুচকি হাসি। আইরাত আব্রাহামের তাকানো দেখে নিজেও খানিক হেসে দেয়।
আইরাত;; কি! ভালো লাগছে না দেখতে? চেঞ্জ করে আসবো কি?
আব্রাহাম;; আরে না না একদম না। অনেক কিউট লাগছে।
আইরাত;; সত্যি?
আব্রাহাম;; একদম।
আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে গিয়ে একহাত দিয়ে তার গালে ধরে আলতো করে কপালে চুমু একে দেয়। আইরাত মুচকি হেসে মাথা তুলে তাকায়।
আইরাত;; কি হয়েছে?
আব্রাহাম;; না মানে এখানে তো কেউ জানে না যে তুমিই আমার একমাত্র বউ (আইরাত কে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
আইরাত;; মানুষ না জানুক বাট আসল কথা তো আমরা জানি তাই না।
আব্রাহাম;; হুমমম। তারা এও জানে না যে এখানে রুমের ভেতরে শুধু আমি একা নই বরং আমার সাথে আরেকজনও থাকে৷
আইরাত;; এখন কি ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলে দিবো?
আব্রাহাম আইরাতের কথা শুনে তার দুগাল ইচ্ছে মতো চেপে দেয়।
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল লিসেন এখান থেকে তুমি আগে যাবে তারপর আমি যাবো ওকে!
আইরাত;; হুম আচ্ছা।
আব্রাহাম;; টেনশনের কোন কারণ নেই গার্ড রা সব থাকবে।
আইরাত;; হুমম।
আইরাত সেখান থেকে চলে আসে, আশেপাশেই অনেক গার্ড আছে যেগুলো ব্যাসিকেলি আইরাতকে প্রটেক্ট করার জন্য কিন্তু তারা গা ঢাকা দিয়ে আছে। ক্লাবের ভেতরে সাদা আলোর রেশটুকুও নেই। বাহারি রঙের সব লাইট দিয়ে সম্পূর্ণ আলোকিত। তাতে মানুষের মাতামাতির শেষ নেই। কানের পর্দা যেনো ফেটে যায় এমন মিউজিকের আওয়াজ দেওয়া। কেউ নাচছে, কেউ ড্রিংক করছে। এর মাঝেই আইরাতের চোখে পরে রিয়ানা কে৷ আইরাত চেনে এই মেয়েকে। অয়নের থেকে কিছুটা বায়ো ডাটা পেয়েছিলো এর। তাই রিয়ানা কে চিনতে আর দেরি হলো না তার। এইসব কিছুতে নজর না দিয়ে আইরাত একটা টেবিলে গিয়ে বসে পরে ফোন ঘাটাঘাটি করতে লাগে। কারো আভাস পেয়ে পাশে তাকায়। দেখে একটা ছেলে কিছুটা গলা খাকাড়ি দিয়ে তার কাছেই আসছে। আইরাত মেকি একটা হাসি দিয়ে হাত দিয়ে মানা করে দেয়। ছেলেটা এসেও যেনো আবার সোজা ঘুরে চলে গেলো। এবার মিউজিকের ভলিউম কমে আর আইরাত এক ক্ষীণ দম ছাড়ে। তখনই ধিরিম করে একজন এসে সোজা আইরাতের পাশে বসে পরে। আইরাত চমকে গিয়ে পাশে তাকাতেই দেখে আর কেউ না আব্রাহাম নিজেই। আইরাত মুখ বাকা করে চাপা স্বরেই আব্রাহাম কে বলে…
আইরাত;; এভাবে কেউ এসে বসে! আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
আব্রাহাম;; আমাকে দেখে এছাড়াও মানুষ ভয়-ই পায়।
আইরাত;; আমি পাই না।
আব্রাহাম এক ভ্রু উঁচু করে আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাত তার দাঁত গুলো একটু দেখিয়ে দেয় আব্রাহাম কে।
আব্রাহাম;; হাহ, ভয় পায় না। এখনই একটা জোরেসোরে ধমক দিলে চোখে পানির বন্যা ভেসে যাবে আর সে নাকি ভয় পায় না।
আইরাত;; 😒
আব্রাহাম;; হয়েছে থাক আর ইনোসেন্ট সাজতে হবে না।
আইরাত;; তখন আমাদের রুমের দরজার সামনে রিয়ানা এসেছিলো তাই না!
আব্রাহাম;; আব…
আইরাত;; বলুন বলুন।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ
আইরাত;; কেনো?
আব্রাহাম;; না আসলে..
আইরাত;; অবশ্যই আপনার জন্য তাই না!
আব্রাহাম;; আরে নাহ।
আইরাত;; হুমম বুঝি বুঝি। এরপর থেকে হলুদ পাকা লেবু আর মরিচের মালা ঝুলিয়ে দিবো আপনার গলায় তাহলেই কেউ আর নজর দিবে না।
আব্রাহাম;; গলায় ঝুলানোর হলে বরমালা ঝুলাও এগুলো কেনো ঝুলাবে।
আইরাত;; নজর লেগেছে নজর।
আব্রাহাম আর কিছু বলে না। রিভলবার বের করে হাতে ঘোরাতে লাগে।
আইরাত;; রিভলবার বের করলেন কেনো?
আব্রাহাম;; না এমনি হাতটা কেমন খালি খালি লাগছিলো তাই আর কি।
আইরাত;; হুমম।
আব্রাহাম কিছু সময়ের জন্য সেখান থেকে উঠে পরে। হাঁটতে হাঁটতে একটা অন্য রুমে চলে যায়। রুমটায় আলো একেবারেই কম। এখানে বাইরে থেকে গানের শোরগোলও খুব কম আসছে। আব্রাহাম আরো কয়েক কদম এগিয়ে গেলো। তবে পেছন থেকে কারো সাড়া শব্দ পেয়েই দাঁড়িয়ে পরে।
আতিক;; আব্রাহাম স্যার যে!
আব্রাহাম কপালে ভাজ টেনে এনে আতিকের দিকে তাকায়।
আতিক;; কেমন আছেন স্যার?
আব্রাহাম;; সবসময় অনেক ভালোই থাকি। কিন্তু কি করবো বলুন কিছু কিছু মানুষের জন্য তাতেও বাঁধা এসে পরে৷
আতিক;; শুনলাম কোহিনূর হারিয়ে মানে চুরি হয়ে গেছে!
আব্রাহাম;; হুমম।
আতিক;; সো স্যাড। কোহিনূর এতো টা প্রোটেকশনে থাকার পরেও হারিয়ে গেলো!
আব্রাহাম;; চোরের মায়ের বড়ো গলা আজ অব্দি শুধু শুনেই এসেছিলাম আজ দেখেও নিলাম।
আতিক;; আসল কোহিনূর ভেঙে ত……
আব্রাহাম;; প্রশ্নই আসে না। আসল কোহিনূরকে যদি হাতুড়ি দিয়েও ভাঙার ট্রাই করা হয় তাহলে হাতুড়ি ভেঙে যাবে কিন্তু কোহিনূর না।
আতিক;; তো আপনার কি মনে হয় যে কোহিনূর আমি চুরি করেছি!
আব্রাহাম;; আরে ভাই কোহিনূর, আর সেটা চুরি হয়েছে। এতো বড়ো একটা জিনিস চুরি করেছে তো চোরের কিছু তো রেস্পেক্ট দাও।
আতিক;; মানে?
আব্রাহাম;; গাধা আর ঘোড়া দেখতে এক হলেও তফাৎ আকাশচুম্বী। কিন্তু এখন ঘোড়ার দৌড়ে গাধাও দৌড়াচ্ছে দেখছি।
আতিক;; আপনারা জামাই-বউ কোন মাটি দিয়ে গড়া আল্লাহ জানে। একদম সমান।
আব্রাহাম;; বউ আমার, সমান তো হতেই হবে।
আতিক;; তো আপনার বউও এখানে আছে তাই না।
আব্রাহাম;; তো? (গম্ভীর ভাবে)
আতিক;; আ…..
আব্রাহাম;; আপনার যেমন ফালতু কথা বলার মতো সময় আছে আমার তেমন শোনার মতো সময় নেই।
এই বলেই আব্রাহাম সেখান থেকে এসে পরে। একটা ড্রিংক এর শপের সামানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার কিছুদূরেই আইরাত বসে আছে। আব্রাহাম থেকে থেকে তার দিকে নজর রাখছে। কিছু সময় পর রিয়ানা আবার আসে আব্রাহামের কাছে।
রিয়ানা;; হেই আব্রু আমি জানতাম তুমি আসবেই।
আব্রাহাম;; আব্রু!?
রিয়ানা;; তোমার নামের শর্টফোম৷
আব্রাহাম;; ওও আচ্ছা আচ্ছা।
আব্রাহাম কিছুটা ঝেড়ে কাশে। কি বলবে খুঁজে পায় না। যেখানে আজ পর্যন্ত তার নিজের বউ-ই তার নামের শর্টফোম বের করলো না আর সেখানেই এই মেয়ে। নানা ধরনের কথা রিয়ানা আব্রাহাম কে বলছে। আর তার কাছে ঘেষার চেষ্টা করছে। আব্রাহাম যতটা সম্ভব দুরত্ব বজায় রাখছে৷ একটা সময় বিরক্তির চরম লেভেলে পৌঁছে গিয়ে আব্রাহাম তাকে ব্যাস্ততা দেখিয়ে চট জলদি সেখান থেকে কেটে পরে। ক্লাবের একটা কর্ণারে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে নজর স্থীর করে রেখে দিয়েছিলো আব্রাহাম তবে তারই মাঝে হুট করেই বিকট শব্দে কিছু ভাংচুরের আওয়াজ কানে এলে সেদিকে তাকায়৷ আব্রাহাম দ্রুত গিয়ে দেখে আইরাত যেনো চন্ডীরুপ ধারণ করেছে। আব্রাহাম ‘থ’ হয়ে গেছে পুরো আইরাত কে দেখে। রাগে ফুসছে আর চোখ দিয়ে তো যেনো রক্ত ঝড়ছে তার। আর যেই বিকট আওয়াজ টা হয়েছে তা একটা কাচের টেবিল ভাঙার শব্দ ছিলো। আইরাত ভেঙে দিয়েছে। এমন শব্দে পুরো ক্লাব থেমে গিয়েছে। সব মিউজিক অফ। নজর শুধু আইরাতের দিকেই। কোনরকম কোন কথা না বলে জেকেটের হাতা গুলো গুটিয়ে নিতে নিতে রিয়ানার দিকে এগিয়ে যায় সে। বিনাবাক্যে রিয়ানার কানের ঠিক নিচ বরাবর ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়৷ রিয়ানার চোখে সরষে ফুল। ডেস্কের ওপর এলকোহলের গ্লাস ছিলো তা নিয়ে সোজা রিয়ানার মুখে ছুড়ে মারে। আইরাতের উঁচু জুতা ছিলো তা দিয়ে রিয়ানার পায়ে এমন এক লাথি দেয় যে সে এবার চিল্লিয়েই উঠে। ক্লাবের ভেতরে গন্ডগোল দেখে দুজন সিকিউরিটি গার্ড এগিয়ে এলে আইরাত ডিরেক্ট রিভলবার বের করে তাদের দিকে তাক করে ধরে। এতে গার্ড রা থেমে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে আব্রাহাম দ্রুত আইরাতের কাছে এগিয়ে যায়৷ তার হাত থেকে গান টা নিচে নামিয়ে ফেলে৷ গার্ড দের ইশারাতে দূরে চলে যেতে বলে।
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল হয়েছে কি?
আইরাত তো তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে।
আইরাত;; হয়েছে কি মানে? অন্য কোন মেয়ে কেনো আপনার দিকে তাকাবে? কেনো আপনার কাছে ঘেষার চেষ্টা করবে? কেনো আপনার সাথে ফ্লার্ট করবে? কেনো? আপনি কেনো বলেন না যে আমি আপনার বউ হই!
আব্রাহাম;; কি আর বলবো ওই মেয়ে জানে তো সেটা।
আইরাত;; না ও জানে না।
আব্রাহাম;; জানে (আইরাত কে শুধু শান্ত করার চেষ্টা)
আইরাত;; কিইইইই? ওই জানে যে আমি আপনার বউ তারপরেও, তারপরেও এমন করে। তবে রে
আইরাত কি আর শান্ত হবে সে উল্টো আবার রিয়ানার দিকে তেড়ে যেতে ধরে তাকে মারার জন্য। কিন্তু আব্রাহাম তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে থামিয়ে দেয়। অনেক ক্ষেপা ক্ষেপে গেছে আইরাত। আব্রাহাম কে সরিয়ে দিয়ে রাগে আগুন হয়ে ক্লাব থেকে বাইরে বের হয়ে পরে৷ তারপর গাড়িতে উঠে বসে থাকে। এদিকে ক্লাবের যত ক্ষতি হয়েছে তার দ্বিগুণ টাকা মেনেজার কে ধরিয়ে দিয়ে আব্রাহাম নিজেও বের হয়ে এসে পরে। এসে দেখে আইরাত গাড়িতে ড্রাইভিং সীটের পাশে বসে আছে৷ রাগে ফুলে দুহাত ভাজ করে আছে৷ আব্রাহাম হেসে দেয় তাকে দেখে। আইরাত আজ রাগের বসে এসে এমন কিছু করে বসবে সে তা ভাবতেও পারে নি। ওদিকে হয়তো রিয়ানার দশা নাজেহাল হয়ে গেছে। আব্রাহাম বুঝলো যে রিয়ানা যখন তার সাথে ওভাবে কথা বলছিলো তখন আইরাত সবকিছুই খেয়াল করছিলো। আব্রাহামও সেখান থেকে সরে এলো আর আইরাতও তাকে সোজা মেরে বসলো। আব্রাহাম গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। গাড়ি চালাচ্ছে আর আইরাতের দিকে তাকাচ্ছে।
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল!
আইরাত;; ________________
আব্রাহাম;; জানপাখি!
আইরাত;; ________________
আব্রাহাম;; আব্রাহামের বউ!
আইরাত;; ________________
আব্রাহাম;; আরে কিছু তো বলো।
আইরাত যেনো মুখে তালা দিয়ে রেখে দিয়েছে একটা ফোটা কথা বলছে না। দেখতে দেখতেই হোটেলের সামনে এসে গাড়ি থামে। আইরাত নেমে গিয়ে সোজা ভেতরে চলে যায়। গার্ড কে গাড়ি পার্ক করে দিতে বলে আব্রাহামও আইরাতের পিছে পিছে যায়।
গার্ড;; স্যার কিছু ক্লাইন্ট আ…….
আব্রাহাম;; আরে দুনিয়া যাক জাহান্নামে আগে বউ কে সামলাতে হবে।
এই বলেই আব্রাহাম দৌড়। রুমে এসে জেকেট টা শুধু খুলে ধুপ করে বিছানার ওপর বসে পরে আইরাত। আব্রাহাম এসে দেখে এভাবে মন মরা হয়ে বসে আছে সে। আস্তে করে তার পাশে গিয়ে বসে জড়িয়ে ধরে।
আব্রাহাম;; আচ্ছা আ”ম সরি। আ”ম সরি। আমি এখন থেকে মেয়েদের থেকে একশ না না এক হাজার হাত দূরে থাকবো।
আইরাত;; আমি কি আপনাকে কিছু বলেছি!
আব্রাহাম;; আব…না
আইরাত;; তাহলে বাজে বকছেন কেনো? আপনার তো দোষ নেই, মেয়েরা আপনার পিছে ভাগে।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ মেয়েরা আমার পিছে ভাগে আর আমি একাই তোমার পিছে ভাগি। সবাই আমার জন্য পাগল হলেও আমি শুধুই তোমার জন্য পাগল৷
আইরাত;; দেখি আমিও যাই কাল বাইরে যাকে পাবো ফ্লার্ট করা শুরু করবো।
আব্রাহাম;; হাহ, দেখবো নি এমন কোন বাপের ব্যাটা জন্ম হয়েছে যে আমার সামনে তোমার সাথে কথা বলা তো দূর তোমার দিকে নজর তুলে তাকায়৷ আমি কলিজা ছিড়ে না ফেলি ওর।
আইরাত;; নাও কাম টু দি পয়েন্ট, আপনি আমার পাশে কাউকে সহ্য করতে পারেন না তাহলে আমি কি করে পারবো!
আব্রাহাম;; কিন্তু তুমি তো……..
আইরাত;; কি এভাবে মেরে বসবো আমি! আমার এতো শখ নাই যে বারবার মারবো।
আব্রাহাম;; জ্যালাস!
আইরাত এক ঝটকায় দাঁড়িয়ে পরে এবার৷ রাগে দাঁত কটমট করতে করতে বলে ওঠে…
আইরাত;; অবশ্যই আমি জ্যালাস আব্রাহাম। আপনি আমার জামাই লাগেন এন্ড আমি আপনার বউ। অবশ্যই আমার জ্বলবে। শুনুন একটা মেয়ে মানুষ মরে যেতে রাজি আছে বাট তার হাজবেন্ডের ভাগ কাউকেই দিতে রাজি না। এতে আপনি যাই বলুন না কেনো। তো আমিও দিবো না। আমিও এটা মানবো না। আমার দিকে কোন ছেলে চোখ তুলে তাকালে আপনি সহ্য করেন! বলুন! করেন না তাই তো! তো আমি কেনো করবো। আমারও সহ্য হয় না কোন মেয়ে আপনার দিকে তাকালে আপনি বুঝেন না কেনো?
একদম গলা ফাটিয়ে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কথা গুলো বলেছে আইরাত। আব্রাহাম খেয়াল করে দেখে আইরাতের চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়ছে আর সে রাগে ফুসছে। আব্রাহাম উঠে দাঁড়িয়ে পরে৷
আব্রাহাম;; কাছে আসো।
আব্রাহাম তার দুহাত আইরাতের দিকে মেলে ধরলে আইরাত আব্রাহামের বুকে নিজের মাথা ঠেকিয়ে দেয়। একদম আষ্টেপৃষ্টে আইরাত কে জড়িয়ে ধরে। আইরাত কান্না করছে, যেনো তার রাগ গুলো সব কান্নাতে পরিনত হয়েছে। আব্রাহাম তার একহাত দিয়ে আইরাতের মাথার পেছনে বুলিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ এভাবেই কান্নাকাটি করার পর আইরাত তার মুখটা ওপরে তুলে তাকায় আর আব্রাহাম তার অশ্রুবিন্দু গুলো নিজের ঠোঁট দিয়ে শুষে নেয়। এবার গিয়ে আইরাত যেনো কিছুটা শান্ত হয়।
।
।
।
।
চলবে~~