#প্রণয়
#পর্বঃ১২
#তানিশা সুলতানা
ফজরের আজানের আগেই ঘুম ভেঙে যায় সূচকের। চোখ মেলে তাকায়। ঘুটঘুটে অন্ধকার। সেলিং ফ্যানের শা শা শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই।
ধপ করে উঠে বসে সূচক। চোখ জ্বলছে। আর ঘুম হবে না। পায়ের কাছে রাখা আছে পাতলা কম্বল। গায়ে কম্বলটা গায়ে জড়িয়েই বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। বাগানের বাল্প জ্বলছে। সেই আলোতে সূচকের বারান্দা আলোকিত হয়ে গেছে।
আকাশের দিকে তাকায়।
চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে।
এভাবে তো চলতে পারে না। কিছু তো একটা করতেই হবে।
বাবা মায়ের ইচ্ছে অনার্স শেষ হলেই বিদেশে পাঠিয়ে দেবে। সূচকেরও এমনটাই ইচ্ছে।
এক্সামও চলে আসলো। বাবার সাথে জোরাজোরি করেও এখানে থাকতে পারবে না সূচক।
তানহাকে রেখে কি করে যাবে? তানহা কি পাল্টে যাবে?
অবশ্যই যাবে। সূচকের জন্য তো বসে থাকবে না।
কিছু একটা করা দরকার। যাতে তানহাও সূচকের থাকে আর ওর বিদেশ যাওয়া টাও হয়।
মাথা ধরে আসছে সূচকের। কি করবে এখন? কে সাহায্য করতে পারবে ওকে?
এসব চিন্তা করতল গেলেই মাথা ধরে আসে।
হঠাৎ করে চোখ খুলে সূচক। চোখেমুখে খুশির ঝলক ফুটে ওঠে। বুকের বা পাশে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়।
সবটা ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ❤️❤️
সকাল সকালই উঠতে হয় তানহাকে। এখনো পুরোপুরি ঘুম কাটে নি। ফ্লোরে বিছানা করে শুতে হয়েছে। ওই বৃষ্টি ডাইনি আর ইরা খাটে ঘুমিয়েছে। সাদিয়া বেগমকে মাঝখানে দিয়ে দুই পাশে তোহা আর তানহা ঘুমিয়েছে।
তানহা চোখ বন্ধ করে হাঁটছে। এই বাড়িতে দুটো ওয়াশরুম। একটা সূচকের রুমে আর একটা সূচকের রুমের পাশে।
তানহা চোখ বন্ধ করে সেদিকেই যাচ্ছে। বাসা থেকে ব্রাশ আনতে ভুলে গেছে।
ঘুমে ঢুলতে ঢুলতে সূচকের রুমের দরজায় হাত রাখে। সাথে সাথে দরজা খুলে যায়। তানহা এদিক ওদিক না তাকিয়েই সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
সূচকের ব্রাশ রাখা ওইখানে।
ব্রাশটা তানহা হাতে নিতেই সূচক ঝড়ের গতিতে এসে তানহার থেকে ব্রাশ টা কেরে নেয়।
চমকে ওঠে তানহা। মুহুর্তেই ঘুম গায়েব। বড়বড় চোখ করে তাকায় সূচকের দিকে।
সূচক তানহাকে ওয়াশরুমে ঢুকতে দেখেই বেলকনি থেকে দৌড়ে চলে আসে।
মনে মনে এটাই ভাবছিলো।
“কি হলো এটা?
তানহা কোমরে হাত দিয়ে গাল ফুলিয়ে বলে।
” সেটা তো আমি জিজ্ঞেস করবো। কি হচ্ছে এটা?
সূচক ব্রাশ জায়গা মতো রেখে বলে।
“আমি ব্রাশ করবো। মেয়ে ছেলে কিছুই হয় নি।
তানহা আবার ব্রাশ টা নেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়ে বলে।
সূচক তানহার হাত ধরে।
” এটা আমার ব্রাশ।
“তো কি?
গোটা আপনি টাই তো আমার।
কপাল কুচকে বলে তানহা।
” ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দেই।
সূচক দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
“খালি তো পারবেনই ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিতে।
আদর ভালোবাসা সম্পর্কে তো নুন্যতম ঙ্গান নাই। একদিন আইসেন আমার কাছে শিখাই দিবোনি।
তানহা মুখ বাঁকিয়ে বিরবির করে বলে। সূচকের কানে কথাটা গেলেও কোনো প্রতিক্রিয়া করে না। তানহার চুল গুলো টেনে দিয়ে বেরিয়ে যায় ব্রাশ টা নিয়ে। তানহা কটমট চাহনিতে কিছুখন তাকিয়ে থেকে আঙুল দিয়ে কোনো রকমে দাঁতে মেজে কুলি করে আর চোখে মুখে পানি দিয়ে বেরিয়ে আছে।
সূচক আগে ভাগেই নিজের তোয়ালে টা নিয়ে আবার বেলকনিতে চলে যায়।
তানহা সারা রুম তন্ন তন্ন করে তোয়ালে বা গামছা খুঁজে কিন্তু পায় না।
গেলো কোথায়?
বেলকনিতে সূচকের কাঁধে তোয়ালে দেখে কোমরে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে তাকায় তানহা।
এতো কিপ্টা মানুষ হয়? সামান্য তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে দেবে না?
কিন্তু তানহা তো নাছর বান্দা। যে করেই হোক সূচকের তোয়ালে দিয়েই মুখ মুছবে।
গটগট পায়ে এগিয়ে যায় তানহা
পায়ের শব্দ পেয়ে সূচক পেছন দিকে তাকায়। সাথে সাথে তোয়ালে কাঁধ থেকে নামিয়ে মুঠো করে ধরে নেয়।
“দেখ তানহা তোয়ালে দেবো না।
” তুই দিবি না তোর ঘাড় দেবে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে তানহা।
“তোর নাকে এখনো সর্দি লেগে আছে। আমার তোয়ালে তে লেগে যাবে
রাগটা আরও বেশি বেরে যায় তানহার। ওর সর্দি নিয়ে খোটা দিলো?
আজকে যদি সূচকের তোয়ালে তে তানহা নাক না মুছে তাহলে ওর নামও তানহা না।
বাঘিনীর মতো এগিয়ে যায় তানহা। তানহার এগোনো দেখে সূচক। তোয়ালে ফেলে দেয় নিচে। তারপর তানহার দিকে তাকিয়ে মেকি হাসে।
মাটি গেলে গেলে সমস্যা নেই। কিন্তু সর্দি লেগে গেলে বিরাট সমস্যা। এটা সূচকের পছন্দের তোয়ালে
তানহা খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকে। তারপর
তানহা সোজা এসে সূচকের টিশার্টে নিজের নাক মুছে দৌড় দেয়। ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো যে সূচক কিছু বুঝে উঠতেই পারে না।
যখন বুঝতে পারলো তখন তানহা সূচকের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
সূচক নাক মুখ কুঁচকে টিশার্টের দিকে তাকায়।
” তানহার বাচ্চা তোকে আমি কাঁচা চিবিয়ে যাবো।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সূচক।
🥀🥀
ইমন উসখুস করছে। কি করা যায়? সূচকের সাথে কি কথা বলবে?
তোহা আর ইমনের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক এটা জানে সূচক। তোহা ইমনকে ভীষণ পছন্দ করে এটাও জানে। কিন্তু ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো এটা জানে না।
এবার কি সূচক সাহায্য করবে? না কি বাঁশ খাবে? সবটা একসময় ঠিকঠাক হতো। মাঝখান থেকে ইরা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। বিরক্তকর। ইচ্ছে করছে মেয়েটাকে খু*ন করে দিতে।
“ওই বাবুকে কোলে নে? কাঁদছিল শুনছিস না কি?
ইরিন খাটে আধশোয়া হয়ে আছে। বাবুটা উঠে কাঁদছে। ইরিন একা একা কোলে নিতে পারে না। ইমনের মা একটু বেরিয়েছে। আর ইমনকে থাকতে বলে গেছে ইরিনের কাছে।
ইমন গিয়ে বাবুটাকে কোলে তুলে নেয়। একটু কলামনা করতেই কান্না থেমে যায়।
ইমন বাবুকে কোলে নিয়ে আবারও পায়চারি করতে থাকে আর ভাবতে থাকে।
” কি ভাবছিস?
ইরিন ইমনের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে।
“আপু একটা হেল্প করবি?
ইরিনের পাশে এসে বসে বলে ইমন।
” বল?
“তোহার সাথে একটু একা কথা বলার সুযোগ করে দিবি? যেখানে কেউ থাকবে না। আর তোহাও আমার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেতে পারবে না।
খুব মিনতি করে বলে ইমন।
ইরিন মনোযোগ দিয়ে বেপারটা বোঝার চেষ্টা করছে।
” ডিটেইলস এ বল? কাহিনি কি?
“আমরা রিলেশনশিপ এ ছিলাম। হঠাৎ করে থার্ড পারসন এসে রিলেশনটা নরবরে হয়ে গেছে। তোহাকে মানানো দরকার। স্পেস পাচ্ছি না।
ইমন মাথা নিচু করে বলে। ইরিন মুচকি হাসে।
” আচ্ছা কথা বলিয়ে দেবো। কিন্তু আমি নিজে থাকবো তোদের মধ্যে। একা ছাড়বো না তোহাকে। বিশ্বাস পাই না তোকে দিয়ে।
ইমনের কোল থেকে বাবুকে নিজের কোলে নিয়ে বলে ইরিন।
ইমন মুচকি হাসে।
🥀🥀
ব্রেকফাস্ট করেই স্কুলে যেতে হবে তোহা আর তানহাকে। সূচককে আজকে ভার্সিটিতে যেতে হবে। তানহা তো ভীষণ খুশি। যাকককক বাবা ওই বৃষ্টি ডাইনিটার সাথে থাকবে না সূচক। ঈদের থেকেও বেশি খুশি লাগছে।
তানহা স্কুল ড্রেস পড়ে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে। সূচক বসবে তারপর সূচকের পাশে বসবে।
বৃষ্টিও দাঁড়িয়ে আছে। নিশ্চয় সূচকের পাশে বসার ধান্দা। আবার সাজুগুজুও করেছে। মনে হচ্ছে কোথাও যাবে। ভেংচি কাটে তানহা।
তোহা বসে গেছে। ইরা সাদিয়া বেগমের সাথে খাবার বানাচ্ছে।
“সূচক তোমার সাথে ভার্সিটিতে যাবো আমি।
সূচক সবে হাতা গোটাতে গোটাতে এদিকে আসছিলো। তখনই বৃষ্টি এক দৌড়ে সূচকের সামনে গিয়ে খুশিতে গদগদ হয়ে বলে।
সূচক ভ্রু কুচকে বৃষ্টির মুখের দিকে এক পলক তাকিয়ে তানহার দিকে তাকায়।
তানহা অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
” বাবু নিয়ে যা তোর সাথে।
সাদিয়া বেগম টেবিলে রুটি রাখতে রাখতে বলে।
বৃষ্টির খুশি বেরে যায়।
সূচক শুকনো ঢোক গিলে মাথা নিচু করে।
“বাবু নিয়ে যাও না বৃষ্টিকে। একটু নিকনিক করার সুযোগ পাবে।
সাথে ফ্রী তে ঢলাঢলি
এ সুযোগ হাত ছাড়া করা যাবে না।
তানহা দাঁতে দাঁত চেপে বলে।সবার নজর এখন তানহার দিকে।
চলবে
#প্রণয়
#পর্বঃ১৩
#তানিশা সুলতানা
সূচক চুপচাপ বসে খাচ্ছে। বৃষ্টিকে সাথে না নিয়ে গেলে মা কথা শোনাবে। রেগে যাবে। আর নিয়ে গেলে তানহা ঝাড়ু পেটা করবে। বেচারা পড়ে গেছে ফান্দে।
এখন কি করা যায়?
“এক সাথে যাবি। আবার সাথে করে নিয়ে আসবি। একটুও একা ছাড়বি না। বুঝলি?
সাদিয়া বেগম সূচকের প্লেটে দুটো রুটি দিয়ে বলে। তানহা ফুঁসে ওঠে। রুটি মুঠো করে ধরে। তোহা দাঁত কেলায়। ঈদ ঈদ লাগছে ওর।
” হুমম
সূচক ছোট করে বলে।
সাদিয়া বেগম তানহার দিকে এক পলক তাকায়।
“তাড়াতাড়ি খা।
বলেই সাদিয়া বেগম চলে যায়। সূচক ফোঁস করে শ্বাস নেয়। যেনো এতখন দম আটকে ছিলো।
তানহা দাঁতে দাঁত চেপে খাচ্ছে আর একটু পর পর সূচকের দিকে তাকাচ্ছে। রুটির বদলে সূচককেই চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে।
বৃষ্টি খাবে না। সে আরও সাজুগুজু করতে গেছে। সূচককে ইমপ্রেস করতে হবে তো।
ইরা এই ফাঁকে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। উদ্দেশ্য ইমনের বাড়ি যাওয়া। ইমনের সাথে কথা বলতে হবে।
ইমনকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না কিছুতেই।
তোহা খাচ্ছে তো খাচ্ছেই।
“তাড়াতাড়ি গিল
যেতে হবে তো।
তানহা ধমক দিয়ে বলে। তোহা নরে চরে বসে।
” খাওয়ার সময় বিরক্ত করছিস কেন? এখনো তো অনেক সময় আছে।
তোহা আবারও খাওয়ায় মনোযোগ দেয়। তানহা ভেংচি কাটে।
সূচক আড় চোখে এক পলক তাকায় তানহার দিকে।
“মেচিং করে ড্রেস পড়া হয়েছে। কেনো রে? তোর কি কালো শার্ট ছাড়া আর কোনো শার্ট নেই। আর ওই ডাইনি টার কি কালো জামা ছাড়া আর কোনো জামা নাই? নিক নিক শুরু করে দিয়েছে দুজনে।
ইচ্ছে করছে মাথা ফাটাতে।
তানহা বিরবির করে বলে।
“তোহা বলছিলাম কি
ওই যে স্কুলের গেইটের সামনে রোগা পাতলা স্মার্ট একটা ছেলে দাঁড়িয়ে থাকে না?
আমাকে রোজ রোজ ফুল দেয় কিন্তু আমি নেই না।
ভাবছি ওই ছেলেটার থেকে আজ ফুল নেবো।
তানহা একটু ভাব নিয়ে বলে। সূচকের খাওয়া থেমে যায়। তাকায় তানহার দিকে।
” তোকে তো কেউ ফুল দেয় না।মিথ্যে কেনো বলছিস? তোর দিকে তো ভালো করে কেউ তাকায়ই না।
তোহা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে। সূচক ঠোঁট মেলে একটু হাসে। তানহা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে। এভাবে কেউ লজ্জা দেয়।
“ডাইনি তুই মিথ্যে বলছিস। একটা ছেলে আমাকে ফুল দেয়।
তানহা তোহার দিকে কটমট চাহনিতে তাকিয়ে বলে।
তোহা তানহার কথার আগামাথা বুঝতে না পেরে খাওয়ায় মনোযোগ দেয়।এসব শোনার টাইম নাই।
” হুমম দেয় তো নিবি। এটা বলার কি হলো?
সূচক মুখে রুটি পুরে চিবতে চিবতে বলে। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তানহার।
ঠাস করে উঠে দাঁড়ায়।
“আর জীবনেও আসবো না আপনার বাড়িতে। শা*লা হনুমান। মেয়ে দেখলেই নিকনিক করতে ইচ্ছে হয় না?
কর তুই নিকনিক। মুখটাও দেখবো না তোর।
বলেই ব্যাগ কাঁধে ওপর ফেলে হনহনিয়ে চলে যায়। তোহা তাড়াহুড়ো করে হাত ধুয়ে তানহার পেছনে দৌড় দেয়।
সূচক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
” এতো পাগলী কেনো আমার ঢংয়ের রানী।
🥀🥀
তোহা বাসা থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে কেউ একজন ওর মুখ চেপে ধরে। চোখ খুলে লোকটাকে দেখার চেষ্টা করে তোহা কিন্তু পারে না কারণ লোকটা রীতিমতো একটা কাপড় দিয়ে পুরো মুখটাই ঢেকে দিয়েছে তোহার।
চিৎকার করতেও কারতেও পারছে। ভয়ে হাত পা কাঁপছে।
আচমকা লোকটা তোহাকে কোলে তুলে নেয়। তারপর হাঁটতে শুরু করে।
হাত দুটো যে মুক্ত ওদিকে খেয়ালই নেই তোহার।
মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছে।
কে লোকটা?
হিসাব মিলতে না মিলতেই তোহাকে কোল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। কাপড় খুলে নেয় মুখ থেকে। পিটপিট করে চোখ খুলতেই সামনে ইমনকে দেখতে পায় তোহা।
আপনাআপনি কপাল কুঁচকে যায়।
“এটা কি ধরণের অসম্ভতামি?
চোয়াল শক্ত করে বলে তোহা।
ইমন আচমকা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তোহাকে। তোহা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।
এরকম হাতির মতো লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার শক্তি তোহার নেই।
” ভাইয়া ছাড়ুন।
হচ্ছেটা কি?
তোহা দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
ইমন তোহাকে ছেড়ে দেয়। তোহার দুই গালে হাত দিতে গেলে তোহা ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দেয় ইমনের গালে।
স্তব্ধ হয়ে যায় ইমন।গালে হাত দিয়ে তোহার দিকে তাকায়। তোহা রাগে জোরে জোরে শ্বাস টানছে।
“আমাকে ছোঁয়ার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাববেন না? আপনার নোংরা হাত আমাকে ছোঁয়ার জন্য না।
তোহা আঙুল তুলে বলে। চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে যায় ইমনের। চোয়াল শক্ত করে ফেলে। অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তোহার দিকে।
” খুব সাহস হয়েছে তোর না?
তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস?
ইমনকে থাপ্পড় মেরেছিস তুই?
মেঘের মতো গর্জন তুলে বলে ইমন। কেঁপে ওঠে তোহা। ভয়ে গুটিশুটি হয়ে যায়। কাচুমাচু হয়ে এক কোনে দাঁড়ায়। মাথা তোলার সাহস পাচ্ছে না।
ইমন তোহার সামনে এসে দাঁড়ায়। দরজার পাশে দেয়ালের সাথে মিশে দাঁড়িয়েছিলো তোহা। ইমন এক হাতে তোহার পাশে রেখে অন্য হাত দিয়ে দরজাটা ঠাস করে বন্ধ করে দেয়। বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দে আবারও কেঁপে ওঠে তোহা। দুই চোখ দিয়ে অঝড়ে পানি পড়ছে। চোখ মুখ খিঁচে ফেলেছে।
“আমাকে যেতে দিন প্লিজ
দুই হাত এক করে অসহায় দৃষ্টিতে ইমনের দিকে তাকিয়ে বলে তোহা।
🥀🥀
তানহা গেইটের কাছে পায়চারি করছে। তোহা কেনো আসছে না? তোহাকে ছাড়া তো ও যেতে পারবে না।
দারোয়ান হা করে ঘুমচ্ছে। তানহা বিরক্ত হয়ে গেইট খুলে বাইরে চলে যায়। জিসানের বাড়ি এদিকেই। রাস্তায় তানহাকে পায়চারি করতে দেখে ও দৌড়ে তানহার কাছে আসে।
জিসানও স্কুলে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছে।
“কি রে তুই এখানে?
পেছন থেকে মাথায় গাট্টা মেরে বলে জিসান। তানহা মাথায় হাত দিয়ে কপাল কুচকে জিসানের দিকে তাকায়।
“এখানে আমার জামাই থাকে তাই।
বলে তানহা। জিসান উঁকি ঝুঁকি মেরে বাড়িটা দেখে।
” তোর জামাই তো দেখি হেব্বি বড়লোক।
ও বাবা আমার তোর সতীনও আছে??
সূচক আর বৃষ্টিকে বের হতে দেখে বলে জিসান। তানহা চট করে পেছনে ঘুরে। বৃষ্টি আর সূচক পাশাপাশি হাঁটছে। বৃষ্টির ঠোঁটে লেগে আছে অমায়িক হাসি।
সূচক চোখে চশমা লাগাতে লাগাতে বের হচ্ছে।
“বাহ তোর সতীন তো দারুণ দেখতে। ক্রাশ খাইছি।
জিসান হা করে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বুকের বা পাশে হাত দিয়ে বলে।
তানহা বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে সূচকের দিকে।
চলবে