প্রেমনোঙর ফেলে পর্ব-১০

0
406

#প্রেমনোঙর_ফেলে
#লেখনীতে-মিথিলা মাশরেকা
#পর্ব-১০

আকাশে চাঁদ তার সর্বোচ্চ আকৃতি নিয়ে উঠেছে আজ। তারার অভাব নেই পুরো আকাশ জুড়ে। দু এক টুকরো কালোমেঘ অন্ধকারে দেখা যায় না। দিনের তুখোড় রৌদ্রাণীর‌ দাহ করার ছন্দটা কেড়ে নিয়েছে রাতের শীতল‌ বাতাস। আলপথের ওপারে সবুজ ধানক্ষেত রাতেরবেলা আর সবুজ নেই। অন্ধকারের জন্য তৈরী হওয়া কালচে ভাবটা সুন্দরই লাগছে। বাতাসের সাথে তার তরঙ্গরুপ,সৌন্দর্যের অন্য এক‌ জগতেই‌ নিয়ে যায়। চারপাশে জোনাকির মিটিমিটি আলো। যেনো তারা খসে বাতাসে ভাসতে শুরু করেছে। কি মায়াবী পরিবেশ! প্রানখুলে শ্বাস নেওয়ার জন্য এর চেয়ে উপযুক্ত পরিবেশ হয়তো সম্ভব না। চোখ বন্ধ করে মৃদ্যু বাতাসের সাথে গা ভাসাতে মন চায় বারবার।

জসীমদ্দীনের রুপসী বাংলার প্রতিটা বর্ননা চাক্ষুস দেখার জন্য ভাদুলগাঁ যথেষ্ট। রাতের শহরের ব্যস্ততার উল্টোপিঠে গ্রামের স্তব্ধতা কি অমায়িক! মুগ্ধ চোখে আশপাশ দেখে চলেছে রাকীন। ওর নেওয়া প্রজেক্টটা কোনো এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ ছিলো। এলাকার নাম ভাদুলগাঁ শুনেই রাকীন বুঝেছিলো,অনেকটাই পিছিয়ে পরা অঞ্চল হবে এটা। কিন্তু তা বলে এলাকার আর্থসামাজিক পরিবেশ,মতবাদগুলো এতোটাও আদিম হবে,ধারনা করেনি ও। গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরের স্টেশনটায় যখন রাকীন পৌছায়, মাগরিবের আযান পরেছে ততোক্ষনে। এসে উঠেছে পাশের গ্রামের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখানে রাকীনের বন্ধু,ওর ছোট ভাই,আর বাবা মা। বন্ধুর আতিথেয়তায় কেটে গেলো সারা সন্ধ্যা। রাতে ঘুমোনোর জন্য রাকীনকে যে ঘর দেওয়া হয়েছিলো,তার জানালা দিয়ে চাঁদের আলোটা পুরোপুরি ঘরে ঢুকছিলো। সেটা দেখে আর ঘুম আসেনি রাকীনের। এমনিতেও দিনের বেলা ফ্রেমওয়ার্ক,স্কেচ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। তাই ভাবলো রাতের আধারে একঝলক দেখে নেবে ভাদুলগাঁও।

যেমন ভাবা,তেমন কাজ! ড্রোন ক্যামেরাটা নিয়ে বেরিয়ে পরলো রাকীন। গ্রামে বিদ্যুতায়ন ঠিক কতোখানি,সেটা বোঝার জন্য পুরো গ্রামের রাতের ছবিটা তুলবে বলে। রাত খুব একটা গভীর হয়নি। তবুও চারপাশ শুনশান। দিনভর খাটাখাটুনির পর সন্ধ্যের পরপরই বিছানায় গা এলিয়ে দেয় এখানকার লোকজন। কাচা রাস্তার একপাশে বড়সর একটা শিমুল গাছের নিচে দাড়িয়ে আগে খালি চোখে চারপাশ পরখ করে‌ নিলো রাকীন। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা একেবারেই নেই। অবশ্য এমনটা হওয়াতে ওরই‌ সুবিধা হয়েছে। এমনিতেও ও চায়না ওর প্রজেক্টটা নিয়ে এখানকার কেউ এখনই কিছু জানুক। এক পাড়ার ছোটছোট ঘরগুলোর কয়েকটাতে হলুদ বাল্বের আলো দেখা যায়। বাকিগুলো বেশিরভাগই অন্ধকার,নয়তো জানালা দিয়ে প্রদীপের শিখার দেখা মেলে। মানে সে ঘরগুলোতে এখনো বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছেনি।একটা ছোট শ্বাস ড্রোন ক্যামেরা ওড়াতে শুরু করলো রাকীন। হাতের ডিসপ্লে তে ঠিকঠাকমতো বোঝার চেষ্টা করলো সবটা।

শুকমরার তীরে বাঁশ আর কাঠের তক্তা তৈরী ঘাট। পানিতে পা ডুবিয়ে,বাঁশ জরিয়ে তাতে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে খই। মন খারাপ করে একধ্যানে তাকিয়ে আছে পানিতে পরা চাঁদের প্রতিবিম্বের দিকে। আজ সারাদিন বাড়ির বাইরে বেরোয় নি ও। সাহেরা ঘুমিয়েছে বেশ অনেকক্ষন হলো। আর ঘুম আসছিলো না বলে মায়ের কোল থেকে চুপিসারে উঠে এসেছে খই। প্রচন্ড অভিমান হয়েছে,এমন ভঙিমায় সাহেরার সাথে ঠিকমতো কথাও বলেনি ও আজ। সাহেরা কিছু বললো না। দিনভর পাখির মতো সারাগ্রামে উড়ে বেরানো দস্যি মেয়েটাকে ঘরে বেধে দিয়েছে,ওটুকো অভিমান ওর সাজে। অভিমান কমাতে রাতে নিজহাতে তুলে খাইয়ে দিয়েছে খইকে। শুকমরার কাহীনি শুনিয়েছে। জ্বী’নের গল্প শুনিয়েছে। রাজপুত্র রাজকন্যার গল্প শুনিয়েছে। তারপর একসময় নিজেই ঘুমিয়ে গেছে সাহেরা।

খই চুপচাপ বসেবসে মায়ের গল্পগুলো মনোযোগ দিয়ে ভাবছে। শুকমরায় নাকি এ গ্রামের লোকের সুখ ম’রে। কই? আজোবদি কোনোদিনও তো কারো সুখ ম’রতে দেখলো না ও। কোনোদিন শুনলো না শুকমরায় নৌকাডুবি হয়েছে। মায়ের সাথে অভিমান করে কতো রাত এখানে ও নিজেই বসে থেকেছে,হিসেবছাড়া। ওর চোখেও তো পরলো না তেমন কিছু। তবে কি মা মিথ্যে বলে? মায়ের গল্পের রাজপুত্তর তো পক্ষীরাজ চেপে আসে। একবার পুঁটির মা বলেছিলো,রাজকন্যারা দেখতে নাকি চাঁদের চেয়েও সুন্দর হয়। ওর‌ মা কেনো বলে না ওমন? সাহেরা তো ওকেই নিজের রাজকন্যা বলে। কিন্তু ও তো দেখতে চাঁদের মতো ধবধবে ফর্সা না। আবার ওর জন্য তো কোনো রাজপুত্তরও পক্ষিরাজে চেপে আসলো না! তাহলে কি ওর মা মিথ্যে বলে? রাজকন্যা হতে গেলে আগে চাঁদের মতো সুন্দর হতে হয় বুঝি?

আচমকাই বেশ জোরেজোরে একটা শব্দ কানে বাজলো খইয়ের। শব্দ অনুসরন করে চোখ তুলে উপরে তাকালো ও। গোল বাটির মতো টিনের কিছু একটায় আলো জ্বলছে। একদম ঠিক ওর মাথার উপর দিয়ে উড়ছে বাটিটা। বড়বড় চোখে তাকালো খই। পাখি তো নয় ওটা! তবে কি? এই শুকমরার তীরে আজকে ওর প্রথম রাত না! অনেকবার, অনেকরাত অবদি এভাবেই ঘাটে বসে থেকেছে ও। কোনোদিন এমন কিছু তো চোখে পরেনি। এমন অদ্ভুত জিনিসটা কি হতে পারে ভেবে দাড়িয়ে গেলো খই। আজ প্রথমবার মায়ের বলা জ্বী’নের কাহীনির সাথে‌ বেশ মিল পাচ্ছে ও। ভয় পাওয়া উচিত ওর। কিন্তু এতোটুকোও‌ ভয় পেলো না খই। ভেতরের কোনো এক দৃঢ় সত্ত্বা ওকে বলে চলেছে,শুকমরার নৌকাডুবি আর রাজকন্যার কাহীনির মতো জ্বীনের গল্পও মিথ্যে বলেছে ওর মা। জ্বী’ন বলে কিছুই হয় না!

ড্রোন এবার ঘুরে উল্টোদিক চলে যেতে লাগলো। শশব্যস্তের মতো কাপড়ের আঁচলটা কোমড়ে‌ গুজে দিলো খই। পাড় বেয়ে উপরে উঠে এলো ও। তাকিয়ে দেখলো কোনদিকে উড়ে যাচ্ছে ওটা। দক্ষিনের সড়কের দিকে। একপলক বাড়ির দিকে তাকালো খই। ঘরদোর অন্ধকার। পাশের নয়নদের বাড়িতে সদ্য জন্মানো ছাগলছানার পাহাড়ায় রোয়াকের এককোনে নিভুনিভু সলতে রাখা। ওটার একফালি আলো পরেছে খইদের উঠোনেও। আবারো ড্রোনের দিকে ফিরলো খই। জিনিসটার প্রতি তীব্র আগ্রহ জন্মে গেছে ওর। ওমন জিনিস পুঁটি কোনোদিন দেখেনি। জ্বীনের চেরাগ বলে বেশ ভয় দেখানো যাবে ওকে। বেতুর চুরির শোধ তোলা যাবে ওর কাছ থেকে ভেবে হাসি দিলো একটা।

খই ছুট লাগালো ড্রোনের পিছন পিছন। ওর বয়সী গ্রামের আর পাঁচটা মেয়ে হলে নির্ঘাত ভয়ে উল্টোদিক ছুটতো। কিন্তু সেসব ভয়ের কারনকে মনে আসতেই দেয়নি ও। বেশ আগ্রহভরে দেখতে লাগলো উড়ন্ত আলোকবাটিকে। একসময় নিচে‌ নেমে আসতে‌ লাগলো ওটা। বেশ সুন্দরমতো গিয়ে পরলো ছোট খড়ের গাদার উপর। চকচক করে উঠলো খইয়ের চোখ। ওটা হাতে পাওয়ার‌ একরাশ খুশিতে ভেতরটা নাচছে ওর। জ্বলন্ত বাটি,জীনের চেরাগ,বাতিওয়ালা টিনের পাখি এমন হাজারটা নামের মধ্যে থেকে কোনটা বললে পুঁটিকে বেশি ভয় দেখানো যাবে,ভাবতে‌ লাগলো ও। নাচতে নাচতে গিয়ে সবে হাত লাগিয়েছে ড্রোনে,কেউ‌ একজন ওর হাত ধরে ফেললো।

অন্ধকারের মধ্যেও উজ্জ্বলবর্নের হাতটা চোখে পরলো খইয়ের। এ গায়ের মানুষজনকে‌ চেনে ও। তাদের কৃষ্ণবর্নের সাথেও বেশ পরিচিত ও। চাঁদ আলো আর ড্রোনের ক্ষুদ্র আলোকচ্ছটায় ওর হাত ধরে রাখা ফর্সা হাতটা দেখে এতোক্ষনের সুপ্ত ভয়টা হুড়হুড় করে জেগে উঠতে লাগলো ওর। মা বলেছিলো,জ্বী’নদের গায়ে নাকি আলো লেগে থাকে। উজ্জ্বল দেহী হয় তারা নাকি। তাহলে কি এটা সত্যিই জ্বীনের চেরাগ? প্রথমবারের মতো ভয় কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে ওর ভেতর। পাশ থেকে‌ পুরুষালি আওয়াজ এলো,

-এক্সকিউজ মি?

চোখমুখ খিচে বন্ধ করে নিলো খই। এটা কোন ভাষা? গ্রামের কেউ তো এই ভাষায় কথা বলে না! গলাটাও‌ পুরুষ মানুষের। এ সময় কোনো পুরুষমানুষ এদিকে আসবে,এটা বেশ অস্বাভাবিক। তার উপর গায়ের রঙটা বেশিই উজ্জ্বল। যা ভাদুলগায়ের কোনো পুরুষের‌ গায়ের রঙের সাথে যাবে না। চেচিয়ে বলে উঠলো,

-ইয়া আল্লা! গেরামে জ্বীন ঢুকছে!

পুরোই‌ বোকাবনে গেছে রাকীন। কি বললো এই মেয়ে? গ্রামে জ্বীন ঢুকেছে মানে? খইয়ের‌‌ হাত ধরে রেখে নিজেই নিজেকে আপাদমস্তক দেখে নিলো একবার। বোঝার চেষ্টা করলো,ঠিক কোন দিক থেকে জ্বীন মনে হয় ওকে। তেমন কিছু বুঝে না উঠে উকি দিয়ে খইয়ের দিকে তাকালো ও। ভয়ে সে মেয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে আছে। ড্রোনের গায়ে থাকা আলোতে চেহারা বুঝতে সমস্যা হয়নি ওর তেমন। বয়স বিশের এদিক ওদিক হবে হয়তো। চাপা রঙটা রাতের আধারে সেভাবে বোঝা যেতো না হয়তো। তবে ভয় পেয়ে করা বাচ্চামোতে চেহারায় আলাদা এক মোহনীয়তা একে দিয়েছে যেনো। এরইমাঝে খই এক চোখ আটকে রেখে আরেকচোখ খুললো। পাশে দাড়ালো আকাশী টিশার্ট পরিহিত শুভ্রবর্নের মানুষটাকে দেখে আটকে রইলো সেকেন্ডদুই। মানুষ হলে,নিসন্দেহে সে ওর জীবনে দেখা পুরুষমানুষের মাঝে সুন্দরতম। রাকীন ভ্রু নাচিয়ে বললো,

-হোয়াট?

ভাষা শুনে একপলক ড্রোন,আরেকপলক রাকীনের দিকে তাকালো খই। হোট আবার কি? এই ভাষা কোনো মানুষের নয়! এতো সুদর্শন কোনো মানুষ হয়না! জ্বী’নের সাক্ষাৎ দর্শন পেয়ে দ্বিতীয়দফায় ভয় পেতে বিলম্ব হলো না খইয়ের। আবারো চেচাতে যাচ্ছিলো ও। বুঝে উঠে রাকীন হাত ছেড়ে একহাতে পাশের তালগাছটার সাথে চেপে ধরলো খইকে। আরেকহাতে মুখ চেপে ধরলো ওর। রাকীনের বুকে হাত দিয়ে ঠেলতে ঠেলতে,পা ছুড়তে ছুড়তে খই অস্ফুটস্বরে বললো,

-খই কিন্তু কোনো জ্বী’নেরে ডরায় না! বদু কাকারে কইয়া বোতলে ভরামু তরে কইলাম। ছাড় আমারে! ছাড়! ব’জ্জাত জ্বী’ন কোথাকার!

পুরোটা না বুঝলেও ব’জ্জাত জ্বী’ন শব্দদুটো স্পষ্ট শুনলো রাকীন। হতাশচোখে তাকিয়ে রইলো ওর হাত থেকে ছোটার চেষ্টারত মেয়েটার দিকে। ছেড়ে দিলে এই মেয়ে যে পুরো গ্রাম মাথায় তুলবে,বুঝতে বাকি রইলো না ওর। খই মুখ চেপে ধরে রাখা অবস্থাতেই,জ্বী’ন বলে বলে রাকীনের বুকে কিলঘুষি ছুড়তে শুরু করেছে এবার। বুকের উপর ধুমাধুম পরতে থাকা মার গুলোতে ব্যথা কম,হতাশা বাড়ছে রাকীনের। একটা ছোট শ্বাস ফেলে রাকীন একহাতের মুঠোয় খইয়ের দুহাতের কব্জি নিয়ে পেছনে খইয়ের কোমড়ে চেপে ধরলো। মার‌ লাগাতে না পেরে আরো উত্তেজিত হয়ে পরছিলো খই। রাকীন ওর মুখ আরো শক্ত করে চেপে‌ ধরে একদম কাছে চলে এসে বললো,

-হুশশশ! শান্ত হও! আমি মানুষ! কোনো জ্বী’নটিন না! রিল্যাক্স!

খই নড়াচড়া থামালো না। চোর যেমন বলে না আমি চোর,তেমনি জ্বী’নও কোনোদিনও‌ বলবে না আমি জ্বী’ন। মানুষ হলে‌ এভাবে চেপে‌ কেনো ধরবে ওকে? জ্বী’ন বলেই তো ধরেছে। মেরে এই তালগাছে ঝুলিয়ে দেবে‌ নাতো ওকে? মাথার উপরে থাকা বাবুইয়ের বাসাগুলোর দিকে তাকালো খই। সকালবেলা ওভাবেই ঝুলতে দেখবে গ্রামের সবাই ওকে। কাদোকাদো ভাবে রাকীনের দিকে তাকালো ও। ড্রোনের আলোটা নিভে যাওয়ায় ওর ভঙিমা রাকীন বেশ একটা বুঝলো না। উম্ উম্ শব্দে তখনো নড়াচড়া করছে খই। রাকীনের মনে হলো এই মেয়ের ভয় কাটেনি তখনো। খইকে আশ্বস্ত করবে বলে বললো,

-আরে আমি তোমার মতোই সাধারন মানুষ! ভয় পেয়ো না! শান্ত হও! কিছুই করবো না তোমাকে!

এটুকো বলে দুবার ফু দিলো ও খইয়ের চোখেমুখে। খই এবার আরো বেশি করে যেনো নিশ্চিত হয়ে গেছে,কালোজাদু করবে জ্বী’নটা বলে‌ ফু দিলো ওর‌ চোখেমুখে। কেদে দিলো এবার ও। আজকে এই‌ জ্বী’ন ওকে মেরেই‌ ক্ষান্ত হবে। মাকে আর দেখতে‌ পাবে না এ জীবনে। ওকে কাদতে দেখে নিজের উপর‌ই চরম বিরক্ত হলো রাকীন। বেছেবেছে এ কোথায় এসেছে ও? যেখানকার মানুষজনের বদ্ধ ধারনা,একটু গভীর রাতে রাস্তায় কোনো মানুষ থাকে না। জ্বী’ন থাকে! এক পর্যায়ে খইকে ধমক দিয়ে বললো,

-দু সেকেন্ডের মধ্যে এই মরা কান্না যদি না থামিয়েছো,সত্যিসত্যিই কিন্তু ঘাড় মটকে দেবো!

কান্না স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেমে গেলো খইয়ের। রাকীন বুঝলো জ্বী’নের বাধ্যানুগত অন্ধবিশ্বাসী মেয়েটা। মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে,খইয়ের হাতদুটো ছেড়ে দিলো ও। সবে কিছু বলতে যাবে,মেয়েটা একদম ওর বুকের মাঝে এসে ঢলে পরলো। ঝিঝিডাকা মাঠের প্রান্তরে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলো রাকীন। খই জ্ঞান হারিয়েছে।

#চলবে…

[ রিচেইক হয়নি। দেরির জন্যও দুঃখিত। ]