#প্রেমের_সম্মোহন💞
#পর্ব_১২(শেষ)
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara
“আদিব ভাইয়া যদি দেশে চলে আসে তাহলে আমার সব স্বাধীনতা শেষ হয়ে যাবে৷
অনু মন খারাপ করেই ঘুমিয়ে গেলো৷
পাঁচদিন পর~~~~
আদিব আর ওর বাবা মার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ৷ আজই আদিবরা বিডিতে ফিরেছে৷
ফ্ল্যাশব্যাক🌿🌿
আদিব বাসায় এসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে নিচে নামলো৷ আকাশকে সোফায় বসে থাকতে দেখে কিছুটা অবাক হলো৷ আসার পর আকাশও আদিবকে দেখেনি আদিবও না৷
আদিব সিড়ি বেয়ে দ্রুত নেমে আকাশের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো৷আকাশ আদিবকে দেখে হাতের রিমোট ফেলে দিলো৷
আদিবঃতুই!!তুই এই বাড়িতে কী করিস৷
.
আগে বল তুই এখানে কী করছিস৷
.
আমার বাড়িতে এসে বলছিস আমি কী করছি৷
.
তোর বাড়ি মানে৷ এটা তো মিতার বাড়ি৷
তাহলে মিতা কে৷
.
মিতা আমার বোন৷
.
আর মিতা আমার স্ত্রী৷
.
ওয়াট৷ আমার বোন তোর স্ত্রী তুই ওকে বিয়ে করেছিস৷আমার বোনকে বিয়ে করেছিস তুই তোর এতো বড় সাহস৷ মিতা মিতা৷
.
আদিব মিতাকে জুড়ে জুড়ে ডাকতে লাগলো মিতা আদিবের ডাক শুনে ভয়ে ভয়ে নিচে নেমে এলো৷
এই ছেলে এসব কী বলছে মিতা৷
.
কী বলছে৷
.
ও নাকি তোর হাসবেন্ড৷
.
কথাটা শুনে মিতা মাথা নিচু করে ফেললো৷
সিরিয়াসলি মিতা তুই এই ছেলে ছাড়া আর কোনো ছেলে পাসনি নাকি৷ ও এর আগে কয়টা বিয়ে করেছে তুই জানিস৷
.
বিয়ে করেছে মানে৷ আর তুমি ওকে কীভাবে চিনো৷
.
ওকে না চিনলে আর কাকে চিনবো৷ ও আমার ফ্রেন্ড ছিলো কিন্তু ওর চরিত্রের জন্য ওর সঙ্গ আমি ত্যাগ করি৷
.
মিতা ও মিথ্যা বলছে৷
.
আদিব রেগে আকাশের কলারে ধরে দাঁড় করালো
“তুই যদি স্বীকার না করিস যে তুই আরও দুটো বিয়ে করেছিস তাহলে এই বাড়ি থেকে তোর লাশ বেড়োবে লাশ৷ তুই তো জানিসই আমি রেগে গেলে কী করতে পারি৷ তাই ভালো ভালো স্বীকার করে দে৷
আদিব কথাটা বলে আকাশের নাকে পাঞ্চ মারলো৷
আকাশের নাক থেকে রক্ত ঝরছে আদিব আবারো ওকে ঘুষি দিতে যাবে ওমনি আকাশ বললো,,,
“বলছি বলছি,আমি৷ আমি আরও দুটো বিয়ে করছি৷
.
আকাশ তুমি আমাকে ঠকালে৷ শুধু আমাকেই নয় সাথে আরও দুটো মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করেছো তুমি তোমার তো জাহান্নামেও জায়গা হবেনা৷
.
মিতা কাঁদছে৷ আদিব আর মিতার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ওর মা বাবা নিচে নেমে এলেন৷ আদিব সব কিছু ওর মা বাবাকে খুলে বললো৷
ফ্ল্যাশব্যাক এন্ড🌿🌿
মাঃছিঃছি আমার মেয়ে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো তোমায় আর তুমি কী না আমার মেয়েকে এভাবে ঠকালে৷
.
মিতাঃতোমার এক মেয়েকে ঠকায়নি মা তোমার দুই মেয়েকেই ঠকিয়েছে৷
.
মাঃমানে অনুও৷
মিতাঃহুম ও অনুর সাথে ফ্লার্ট করেছে৷ কিন্তু চিন্তা নেই অনুর জন্য তো আবির চলে এসেছে৷
আদিবঃআবির কোন আবির৷
.
সিঙ্গার আবির রায়হান চৌধুরী৷
.
বাবাঃহোয়াট৷
.
হুম তোমার মেয়েকে পাগলের মতে ভালোবাসে৷
.
বাবাঃযাইহোক মিতা মা বাবাকে না জানিয়ে বিয়ে করাটা তোমার উচিৎ হয়নি৷ এখন আপাতত এর ব্যবস্থা করো৷
আদিবঃমিতা ওকে তুই ডিভোর্স দিবি আর আজকের মধ্যেই ও আমার দুই বোনকে ঠকিয়েছে ওর মতে ঠকবাজের সাথে আমার বোন ভালো থাকতে পারবেনা৷ এক্ষুনি এই মুহুর্তে ওকে বাসা থেকে বেড়িয়ে যেতে বলো তা নাহলে
আদিব আকাশকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিলো৷
আদিবঃআর যাতে তোকে এই আঙ্গিনাতেও না দেখি৷
আদিব আকাশের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলো৷
আদিবঃঅনিলের মতো একটা ভালো ছেলেকে রিজেক্ট করে দিলি৷ আরে অনিলের সম্পর্কে তো সব কিছুই জানতি তারপরও ওকে মেনে নেসনি যে তোকে পাগলের মতো ভালেবাসে৷ আর এখন কী হলো৷
.
সরি ভাইয়া৷
.
অনিল তোকে এখনও ভালোবাসে এখন যদি ও তোর সবকিছু জেনেও তোকে বিয়ে করতে চায় তাহলে কিন্তু তোকেও ওকে বিয়ে করতে হবে৷ আর চিন্তা করিস না আকাশ তোর কিচ্ছু করতে পারবেনা যেখানে অনিলের মতো সিবিআই তোর পাশে সবসময় ছায়ার মতো থাকবে৷আর এটাও ভুলে যাস না তোর ভাইও কিন্তু সিবিআই কেউ তোদের কিচ্ছু পারবেনা৷
.
আদিব এবার অনুর রুমে গেলো৷ অনু সবেমাত্র তখন ঘুম থেকে উঠেছিলো৷
“কী হয়েছে ভাইয়া৷
.
খাট থেকে নাম, নাম বলছি৷
অনু কাঁপা কাঁপা পায়ে খাট থেকে নেমে আদিবের কাছে গেলো৷
“তুই আবিরকে ভালোবাসিস৷
.
আদিবের কথা শুনে।অনু মাথা নিচু করে নিলে৷
কী হলো বলছিস না কেনো?
.
হুম৷
.
আর আবির৷
.
আবিরও৷
.
তাহলে আর কী আমি কালই ওদের আসতে বলছি৷ আর আকাশের ব্যাবস্থাও হয়ে গেছে৷ আদিব হেসে চলে গেলো৷ আদিবকে হাসতে দেখে অনুও হাসলো৷পরক্ষনেই যখন আাকশের কথা মাথায় এলো তখন অনু আদিবের পিছন পিছন দৌড়ে গেলো৷
“ভাইয়া আকাশ কোথায়
অনুর কথা শুনে আদিব ভ্রু কুঁচকে ফেললো
.
কেনো বলতো
.
কোথায় বলো৷
.
ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছি৷
.
এটা তুমি কী করলে ভাইয়া৷
অনু দৌড়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো৷আকাশ এখনও বাইরেই বসে আছে৷
.
আকাশ
.
অনু
.
ভিতরে চলো আকাশ৷
.
আকাশ অনুর নরম কন্ঠ শুনে ভিতরে না গিয়ে পারলোনা৷ ভিতরে যেতেই অনু আকাশের গালে চড় বসিয়ে দিলো৷ অনুর রিয়েকশন দেখে সবাই হতবাক হয়ে গেছে৷
আদিবঃঅনু৷
.
লিসেন ভাইয়া এই আকাশ তোমার এক বোনকে নয় তোমার দুইবোনকে ঠকিয়েছে ওকে কী এমনি এমনি ছেড়ে দেওয়া যায় নাকি ওকে তো ওর কর্মের উপহার দিয়ে দিতে হবে৷
.
অনু কথাটা বলে আকাশের গালে গুনে গুনে আটটা চড় দিয়ে থামলো৷
অনুঃআর যাতে তোকে এখানে না দেখি৷
দরজায় কড়া নরছে অনু গিয়ে দরজা খুলে দিলো৷ দরজার ওপারে আবিরের সাথে আরও দুইজন মহিলা আর পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে৷
অনুঃআসুন ভিতরে আসুন৷
আবির সবার সাথে কুশল বিনিময় করলো৷ আকাশের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো,,,
আবিরঃও কে৷
.
অনুঃআকাশ৷
ও তারমানে ওই সেই লুজার৷ ওকে আইনে দেওয়া যাবেনা তা নাহলে ওকে ধাক্কা দিয়ে জেলে পুরে দিতাম৷
.
অনুর বাবা আকাশকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেন৷ হয়তো সেও তার ভুল বুঝতে পেরেছে তাই মাথা নিচু করে নিয়েছে৷
আবিরের বাবাঃআমরা এসেছি আবির আর অনুর বিয়ে পাকা করতে৷
সাতদিন পর ~~~~
আজ অনু আর মিতার বিয়ে৷ অনিল সবকিছু জেনেও মিতাকে বিয়ে করতে চাইছে৷দুইবোন বউ সেজে একরুমে বসে আছে৷ বর এসে গেছে বর এসে গেছে বলে চারদিকে হট্টগোল পরে গেছে৷ মিতা আর অনু জানালা দিয়ে উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে৷
সামান্তা, আরুহি, ছোঁয়া,রিংকি ওরা চারজন গেট ধরেছে৷ আদনান,আদিল,শ্রাবন,আহিল ওর একটা ভাব নিয়ে গেটের ওপাশে দাড়িয়ে আছে৷
আদনানঃতোমরা ফকিন্নির মতো দাঁড়িয়ে আছো কেনো৷ আমাদের ঢুকতে দাও৷
.
সামান্তাঃউহু টাকা না দিলে ঢুকা যাবেনা৷
.
আদিলঃআচ্ছা আজকের দিনের জন্য আবিরের টাকা দেওয়া মাফ বেইয়ানসাবদের তো আজ আমরা টাকা দিবো হাত পাতো৷
সমান্তা,আরুহি,ছোঁয়া,রিংকি ওরা হাত বাড়িয়ে দিলো আদনান,আদিল,শ্রাবন,আহিল ওরা মুঠো করে কিছু ওদের হাতে ঢুকিয়ে দিলো৷ ওরা সবাই হাত মেলে দেখলো সবার হাতেই আংটি৷
আদনানঃপড়ে নাও কয়দিন পর আমরাও বিয়ে করতে যাচ্ছি৷
ওরা সবাই মুচকি হাসছে আদনানরাও হাসছে৷ এই কয়কদিনে ওদের প্রেমও জমে গেছে৷ পিছনে প্রেসের লোকজনদের দেখে আকুতি মিনতি করে বিদায় করলো আদিল৷
🍁🍁
বাসর ঘরে বসে আছে অনু আর অপেক্ষা করছে কখন আবির আসবে৷ প্রায় বিশ থেকে পঁচিশ মিনিট পর আবির রুমে ঢুকলো৷ অনু খাট থেকে নেমে আবিরের পা ছোঁয়ে সালাম করলো৷ আবির অনুর হাত ধরে ব্যালকনিতে নিয়ে গেলো৷
“জানো অনু তোমায় প্রথম কোথায় দেখেছিলাম৷
.
না৷
.
সেদিন বৃষ্টি ছিলো৷ তুমি ছাতা মাথায় করে বাসায় ফিরছেলে হঠাৎই একটা ধমকা হাওয়ায় তোমার ছাতা দূরে উড়িয়ে নিয়ে যায়৷ তুমি ছাতা আনার জন্য দৌড়াতে থাকলে৷ বৃষ্টির পানি তোমার মুখ বেয়ে নিচে পরছিলো৷ তখন তোমাকে দেখে কেমন যেনো মোহনীয় লাগছিলো৷ জীবনে অনেক মেয়েকে দেখেছি কিন্তু তোমার মতো মায়াবী কেনে মেয়েকে আজ পর্যন্ত দেখেনি৷ প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে গেলে তোমার সেই মুখ খানা ভেসে উঠে৷ তারপর থেকে ঠিক এই টাইমে প্রতিদিন আমি বাইক নিয়ে রাস্তায় তোমার জন্য অপেক্ষা করতাম৷ হেলমেট লাগিয়ে রাখার কারনে কেউ আামাকে চিনতো না আর আমারও সমস্যা হতোনা৷ তারপর একদিন আমি তোমাকে ফলো করি আর দেখি তুমি কোন বাসায় ঢুকো৷ এরপরের কাহিনি তো তোমার জানাই৷
.
হুম৷
.
ভালোবাসি অনু৷
.
আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি৷
.
রিয়েলি তুমি আমায় ভালোবাসো৷
.
কেনো বিশ্বাস হয়না নাকি৷
.
উহু৷
.
তাহলে কীভাবে বিশ্বাস করাবো৷
.
আবির অনুকে পাজা কোলে তুলে নিলো৷
.
এইভাবে৷
অনু হেঁসে আবিরের বুকে মুখ লুকালো৷
বেচে থাকুক আবির অনুর ভালোবাসা৷
_______________সমাপ্ত____________
[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন৷ এখন অনেক পাঠক পাঠিকারা বলবে এতো তারাতাড়ি কেনো শেষ হলো আকাশকে কেনো এতো কম শাস্তি দেওয়া হলো ওকে জুতার বারি আর পুলিশে দেওয়া উচিৎ ছিলো৷ কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এমনটা না করাই বেটার৷ আরুহি,সামান্তা,ছোঁয়া,রিংকি, আদিল, আদনান,শ্রাবন,আহিল এরা গল্পের মেইন নয় তাই এদের বিয়ে দেইনি৷এই গল্পটার জন্য অনেক ভাবতে হয় যে কারনে লেখা পড়ায় মন বসাতে পারিনা৷ টিউশনি করতে গিয়ে মাথায় তাল গুল পেকে যায় যে কারনে গল্প দিতেও মুড থাকেনা৷ তাই বাজে এন্ডিং হলে মাফ করবেন৷ 😑😑 বাই দ্যা ওয়ে প্রেমের সম্মোহন সিজন ২ এ আবির অনু সবাই থাকবে]