বোনু ২ পর্ব-২৬

0
1682

#বোনু
#সিজন_০২
#Part_26
#Writer_NOVA

কিচেনে…….

লিমা কাকী(কাজের মহিলা) মিহুকে কিচেনে দেখে আকাশ থেকে পরলো।চোখ দুটো কচলে আবার মিহুর দিকে তাকালো।

লিমাঃ তুমি এইহানে কি করো?ভুলে ঢুইকা গেছো নাকি?

মিহুঃ কাকী কি বলছো?ভুলে ঢুকবো কেন?আমি নতুন একটা রেসেপি শিখছি তাই বানাবো।

লিমাঃ যেই কিনা চুলাই জ্বালাইতে পারে না। সে কিনা রেসেপি বানাইবো।তাজ্জব কথা।

মিহুঃ বকবক না করে,সরো তো।

লিমা কাকী দৌড়ে লুবনা মির্জার কাছে গেল।এই আশ্চর্য জনক ঘটনাটা তো তাকে বলতে হবে।

লিমাঃ ভাবী দেইখা যান,কি কেরামতি হইছে?মিহু মা-মণি তো কিচেনে গেছে।

লুবনা মির্জার কথাটা বিশ্বাস করতে পারলো না। তাই লিমার সাথে কিচেনে গেল।দরজার সামনে দাঁড়াতেই চোখ কপালে তুললো।মিহু চুলা জ্বালাতে গিয়ে হাত ব্যাথা করে ফেলেছে। কিন্তু তাও জ্বালাতে পারছে না। কারণ গ্যাস লাইনটা ওফ।সামনে মোবাইল সেট করে রেখেছে। মোবাইলের সামনে বকবক করছে।

মিহুঃ আজ আমি আপনাদের দেখাবো গরম পানির রেসেপি।কীভাবে গরম পানি করতে হয় তা আজ আমি শেয়ার করছি আপনাদের সাথে। প্রথমে একটা বড় প্যানে নরমাল পানি নিবেন।তারপর প্যানটাকে চুলার ওপর বসাবেন।চুলাটা জ্বালিয়ে দিবেন।দূর,চুলা জ্বলতাছে না কে?কি হইছে আবার এডার?ভাল্লাগে না।লাইনটা বোধহয় ওফ করা।যা ভাবছি তাই।লাইনটা ঠিক করে নিলাম।আবার শুরু করি বকবক।তারপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।১০ মিনিট পর পানি ফুটতে শুরু করলে বন্ধ করে দিন চুলাটা।হয়ে গেল আমাদের গরম পানির রেসেপি। কেমন লাগলো জানাবেন বন্ধুরা?

মোবাইলটা ওফ করে পানি কফির মগে ঢাললো।তারপর ট্রে-তে করে নিয়ে রওনা দিলো উপরের দিকে। দরজায় ওর মাম্মিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখলো।

লুবনাঃ কি করছিলি তুই?

মিহুঃ গরম পানি।সেটা যে অবশেষে আমি করতে পেরেছি তা আমার জন্য অনেক কিছু।

লুবনাঃএত করে বলতাম মিহু আমার সাথে একটু কিচেনে টুকটাক কাজ কর।শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কাজে দেবে।তাতো কখনো কান দিয়ে ঢুকাতেই না।শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কি করবি তুই?

মিহুঃ গরম পানি 😁।

লুবনাঃ মিহু—-😤

মিহুঃ সেটা তোমার ভাবতে হবে না। আমার শাশুড়ী মা অনোক ভালো।তোমার মতো না।আমি ঠিক তার কাছ থেকে সব শিখে নিবো।

লুবনাঃ এটা যে রাজদের বাড়ি গিয়ে কি করবে?তা একমাত্র আল্লাহ ভালো জানে।

মিহু ওর মা-কে পাশ কাটিয়ে উপরে চলে গেল। ট্রে হাতে উপরে উঠে এলো।

ঐশিকঃ হির বোনু,কি আনছিস আমাদের জন্য?

মিহুঃ স্পেশাল খাবার

আরুহিঃ কি কফি?

মিহুঃ বললাম তো স্পেশাল।

নিবরাজঃ ক্রিম কফি নাকি চকলেট?

আইজানঃ উনি বানাবেন কফি?দেখ কি পুড়ে নিয়ে আসছে।একে দিয়ে বিশ্বাস নেই।

মেহরাবঃ তুই কফি বানাতে পারিস বিচ্ছু?কোথায় আগে তো জানতাম না।

মিহু ওদের সামনে ট্রে রাখলো।সবার চোখ কোটর থেকে বের হওয়া বাকি।বেচারা রা শুধু পারেনি অজ্ঞান হতে।সবাই একসাথে চিৎকার করে বলে উঠলো।

সবাইঃ গরম পানি!!!!!!!😳

মিহুঃ হুম নতুন রেসেপি।আমি বানিয়েছি। ইউ-টিউবে আমার নতুন গরম পানির রেসেপি আপলোড দিয়ে আসছি।

সবাইঃ কি-ই-ই-ই-ই😲????

আইজানঃ গরম পানি করতে তো একটা দুই বছরের বাচ্চাও পারে।সেটা আবার আপলোড দিতে হয়।এটা করে এনে এতো লাফানোর প্রয়োজন নেই।

মিহুঃ তুমি চুপ করবে।

আইজানঃ ভাই, সারাজীবন গরম পানি খেয়ে কাটিয়ে দিস।

নিবরাজঃ তুই বেশি কথা না বললেই ভালো হয়।

রিমঃ বাহ্ হির তুই তো ফাটাই দিছিস।এটার জন্য তোকে তো নোবেল প্রাইজ ফিক্কা মারা উচিত।

মিহুঃ আমার রেসিপি তোমাদের পছন্দ হয়নি।
(মুখ ভার করে)

ঐশিকঃ নিশ্চিয়ই হয়েছে হির বোনু।

মেহরাবঃ কি করবি শ্বশুর বাড়ি গিয়ে? গরম পানির রেসেপি করে খাওয়াবি?

মিহুঃ জামাই রাঁধবো আর আমি খামু।

নিবরাজঃ কি-ই-ই-ই!!!!

মিহুঃ হুম☺️।

আইজানঃ এবার বোঝ ঠেলা।তোকে আর কষ্ট করে অফিস করতে হবে না। সারাদিন কিচেনে পরে থাকিস।

নিবরাজঃ ওহ্ নো!!!

মেহরাবঃ এত বছর আমাদের জ্বালাইছে।এবার রাজ বুঝবে মিহু কি চিজ?

মিহুঃ ভা-ই ই ই-ই-য়ু!!!! ভালো হবে না কিন্তু। তুই আমার হবু বরের মনে আমার জন্য বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছিস।দেখ তোর আমি কি করি হুলো বিড়াল।

☘️☘️☘️

মিহু চারদিকে নীলাকে খুঁজতে লাগলো। নীলা ও তমা আগেই এখান থেকে উঠে বাড়ি ঘুরে দেখছিলো।নীলা ঘুরতে ঘুরতে মেহরাবের রুমে ঢুকলো। মিহু ও গেস্ট রুমে থেকে বের হয়ে নীলাকে খুঁজছে।নীলাকে একসময় মিহু মেহরাবের রুমে পেয়ে গেলো।

মিহুঃ আরে নীলা আপু,তুমি এখানে?

নীলাঃ হ্যাঁ,আসলে ঘুরে দেখছিলাম।(চমকে উঠে)

মিহুঃ সোজা ভাইয়ুর রুমে?ঘটনা কি হুম🤨?
(ভ্রু নাচিয়ে)

নীলাঃ আরে কিছু না।

মিহুঃ তুমি এখানে এসেছো সেটা যদি ভাইয়া জানে তাহলে তোমায় খুব বকবে।(ফিসফিস করে)

নীলাঃ কেন?

মিহুঃ আসলে ও কাউকে ঢুকতে দেয় না ওর রুমে।

নীলাঃ কিসের জন্য?

মিহুঃ আমি আসলে কাউকে বলি না।কিন্তু তুমি তো আমার হবু ভাবী হবে তাই তোমাকে বলছি।ভাইয়ুকে বলো না কিন্তু। ভাইয়ু যদি জানতে পারে আমি বলেছি,তাহলে আমাকে বকবে।(নিচুস্বরে)

নীলাঃ ঘটনা কি তাতো বলবে?

মিহুঃ আসলে ভাইয়ু রাতে ডায়পার পরে ঘুমায়।

নীলাঃ কি😳???

মিহুঃ হুম,ভাইয়ু রাতে ওয়াস রুমে যেতে ভয় পায়।তাই এসব পরে ঘুমায়।তুমি আমার কথা বিশ্বাস করছো না তাই না?কিন্তু এটাই সত্যি। তাই তো ভাইয়ু কাউকে ওর রুমে আসতে দেয় না।তোমাকেও বলেনি।যদি তুমি রিলেশন শেষ করে দেও। আমি যে এসব কথা বলেছি তা আবার বলো না কিন্তু।

—- একদম বলবো না।

মিহু ও নীলা পেছনে তাকিয়ে দেখে মেহরাব দরজার সাথে হেলান দিয়ে, দুই হাত বুকে গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।

মিহুঃ ভাইয়ু তুই?? (ভয় পেয়ে)

মেহরাবঃ নীলাকে কি বললি? আবার বল।(শান্ত কণ্ঠে)

মিহুঃ না মানে আমি বলছিলাম,তোর রুমটা অনেক সুন্দর। তুই অনেক আলো, বাতাস পছন্দ করিস।এসব আরকি।(আমতা আমতা করে)

মেহরাবঃ আমি ডায়পার পরে ঘুমাই,বাথরুমে যেতে ভয় পাই।

মিহুঃ না না ছিঃ ছিঃ। আমার ভদ্র, শান্ত শিষ্ট, লেজ বিশিষ্ট ভাইয়ুর নামে এসব বাজে কথা কেন বলবো?

মেহরাবঃ তোর সব কথা আমি শুনছি।যখনই তোকে আমি আমার রুমের দিকে আসতে দেখেছি, তখন বুঝেছি তুই নিশ্চয়ই কোন ভেজাল করবি।গতবার তোর জন্য নীলা আমার সাথে দুই মাস কথা বলেনি।আমার নামে মিথ্যে ছবি এডিট করে পাঠিয়েছিলি বলে।আবারও আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে চাচ্ছিস।আমি তোকে এবার ছাড়ছি না।

মিহুঃ খবরদার সামনে এগুবি না।খামচি দিমু কইলাম।

মেহরাব সামনে এসে ধরে ফেললো ওকে।মিহু খামচি দিয়ে দিলো দৌড়।মেহরাবের হাতের চামড়া ছিলে গেছে।

মেহরাবঃ আহ্।

নীলাঃ কি হয়েছে? এ মা, চামড়া উঠে গেছে। দেখি বসুন এখানে।ফার্স্ট এইড বক্স কোথায়?আমি ঔষধ লাগিয়ে দেই।

☘️☘️☘️

নীলা মেহরাবের হাতে ঔষধ লাগিয়ে দিচ্ছে। মেহরাব ওর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মেহরাব টুপ করে নীলার গালে কিস করে বসলো।নীলা মিটমিট করে হাসছে।মিহু দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো।

মিহুঃ কিরে কি করলি তুই?

মেহরাবঃ তুই এখনো যাস নি।ভাগ এখান থেকে। খামচি হাত কেটে ফেলছিস।(দাঁতে দাঁত চেপে)

মিহুঃ সামান্য একটু চামড়া ছিলে গেছে।যদি হাত কেটে রক্ত বের করে ফেলতে পারতাম,তাহলে আমার খামচিটা স্বার্থক হতো।

মেহরাবঃ তোর খামচি আমি স্বার্থক হওয়াচ্ছি।দাঁড়া তুই। একদম পালাবি না।(কপট রাগ দেখিয়ে)

তার আগেই মিহু ছুটে পালালো।পালাতে গিয়ে দরজার পাশে থাকা বড় ফুলদানির সাথে বেজে পরে যেতে নিলে রাজ ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে ফেলে।মিহু চোখ, মুখ খিঁচে নিবরাজের শার্টের কলার ধরে রেখেছে। রাজ ওর এই অবস্থা দেখে মুচকি হাসলো। তারপর হুট করে কোলে তুলে নিলো।মিহুর মনে হলো সে শূন্যে ভাসছে।তাকিয়ে রাজকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। রাজ ওকে নিয়ে ছাদের দিকে যেতে লাগলো।

মিহুঃ কোথায় যাচ্ছেন আপনি?(ভয়ে ভয়ে)

নিবরাজঃ ছাদে।

মিহুঃ দুপুর হয়ে গেছে। ছাদে গিয়ে কি লাভ বলুন?

নিবরাজঃ লাভ/লোকসান আমি বুঝবো।তুমি চুপ করে থাকো।আরেকটা প্রশ্ন করলে কোলের থেকে ফেলে দিবো

মিহুঃ ছাদে গেলে তো নিবরাজ চিলি মসলা রেগে যাবে। আমি ছাদের যে অবস্থা করেছি।দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে।তখন হয় কোলের থেকে নিচে ফেলে দেবে।নয়তো কোলে করে নিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিবে।কেন করতে গেলাম এসব?কয়েকদিন পর করলেও তো হতো?(মনে মনে)

নিবরাজ ছাদে এসে মিহুকে নামিয়ে দিলো।মিহুর ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে।রাজ পেছনে ঘুরে যা দেখলো তাতে ওর চোখ রাগে লাল হয়ে গেলো।

এবার আপনাদের কাহিনীটা বলি।কিছু দিন আগে নিবরাজ মিহুকে ৫ টা শাড়ি গিফট করেছিলো।মিহুতো শাড়ির ঘোর বিরোধী। সে শাড়ি পরে না।তাই শাড়ি কেটে ছাদের রেলিঙে সুন্দর করে পেচিয়ে সাজিয়েছে। ছাদের কোণায় কোণায় শাড়ির নিশান উড়িয়ে দিয়েছে।ছাদের একপাশে একটা দোলনা আছে।সেটাকেও শাড়ির টুকরো দিয়ে সুন্দর করে সাজানো।চারিদিকে লাল,নীল,হলুদ,কফি আর বেগুনি কালারের শাড়ির ছড়াছড়ি। শাড়িগুলো মিহুর কাছে ডেকারেশনের জালী কাপড়ের খ্যাতি পেয়েছে।

নিবরাজঃ তোমাকে আমি এসব করতে শাড়ি গিফট করছি।

মিহুঃ (নিশ্চুপ)

নিবরাজঃ কথা বলছো না কেন?জীবনে প্রথম আমি কারো জন্য শাড়ি কিনেছি।এই ৫ টা চয়েজ করতে আমার বহু ঘন্টা লেগে গেছে। আর তুমি কি করছো?

নিবরাজ এক হাত কোমড়ে ও আরেক হাতে কপাল স্লাইড করে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।

মিহুঃ আমিতো শাড়ি পরি না।তাই ভাবলাম শাড়িগুলো কাবার্ডে নষ্ট হবে কেন?এগুলোকে কাজে লাগিয়ে দেই।

নিবরাজঃ 🤬🤬

নিবরাজ রাগে কটমট করে মিহুর দিকে খাইয়া ফালামু লুক দিয়ে চলে গেল।

মিহুঃ আমার এমনটা করা ঠিক হয়নি।নিবরাজ আমার জন্য কত ঘন্টা ব্যয় করে শাড়িগুলো চয়েজ করছিলো।আর আমি কিনা।ধূর,ভাল্লাগে না। যাই রাগ কমিয়ে আসি। আমি ছাড়াতো অন্য কেউ তার রাগ ভাঙতেও পারবে না।

মিহু নিচে গিয়ে রাজকে খুঁজতে লাগলো। কোথাও নেই। হঠাৎ দেখলো রাজ একা বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে রাজকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।

মিহুঃ আই এম সরি। আমি বুঝতে পারিনি।আমি যদি জানতাম আপনি বহু ঘন্টা নষ্ট করে আমার জন্য শাড়িগুলো কিনেছেন তাহলে কখনো এমনটা করতাম না।আমি প্রমিজ করছি আর কখনো আপনার সাথে এমন করবো না। (কাঁদো কাঁদো সুরে)

☘️☘️☘️

রাজ মিহুর গলার আওয়াজ পেয়েই বুঝলো মিহু কাঁদছে। ওমনি ওর সব রাগ পানি হয়ে গেলো। পেছন থেকে দুই বাহু ধরে ওকে সামনে নিয়ে এলো।

নিবরাজঃ হয়েছে আর কাঁদতে হবে না। আজকে সব চোখের পানি শেষ করে ফেললে বিয়ের দিন কোথায় পাবে?

মিহুঃ আপনার রাগ কমেছে? আমি কখনো এমন করবো না।আপনি আমার সাথে রাগ করে থাকবেন না।আমার খুব কষ্ট হয়🥺।আমার মনে হয় আপনি বোধহয় আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন।কখনো আমায় ছেড়ে যাবেন না।তাহলে খুন করে ফেলবো।

নিবরাজ মিহুকে নিজের সাথে জড়িয়ে খুব শক্ত করে মিশিয়ে নিলো।মিহুও আলতো হাতে ওকে ধরে রেখেছে। যেনো ছেড়ে দিলেই চলে যাবে।তারপর মিহুকে ছেড়ে আবারও চোখ মুছে দিলো।নিবরাজ গুনগুন করে গান ধরলো।

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪

তোর বর্ষা চোখে,ঝড়তে দিবো না বৃষ্টি
তুই জাগবি সারারাত, আমি আসবো হঠাৎ। (×২)
তোর শুকনো ঠোঁটে, ফোটাবো প্রেমের হাসি
তোকে প্রাণের চেয়ে বড় বেশি ভালোবাসি।(×২)

তোর বুকের গভীরে, দেবো আজ আলতো ছোঁয়া
ভালোবাসবি জনমো ভোর,হৃদয়ে অনেক মায়া
তোর শুকনো ঠোঁটে, ফোটাবো প্রেমের হাসি
তোকে প্রাণের চেয়ে বড় বেশি ভালোবাসি।(×২)

ভুলে যাস না আমায়,তুই ছাড়া বাঁচি না
যতনে রাখবো তোকে, ফুলেরও বিছানায়
তোর শুকনো ঠোঁটে, ফোটাবো প্রেমের হাসি
তোকে প্রাণের চেয়ে বড় বেশি ভালোবাসি।(×২)

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪

মিহু এক ধ্যানে তাকিয়ে নিবরাজের গান শুনছিলো।হঠাৎ রাজের কথায় ওর ধ্যান ভাঙ্গে।

নিবরাজঃ তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না। একমাত্র মরণ ছাড়া অন্য কোন কিছু আমাকে তোমার থেকে আলাদা করতে পারবে না।

মিহুঃ মরতে হলেও একসাথে মরবো।

নিবরাজঃ সত্যি!!!

মিহুঃ হুম।

নিবরাজঃ এতো ভালোবাসো আমায়।কবের থেকে?

মিহুঃ আমিতো সেই তিন বছর আগের থেকেই আপনাকে ভালোবাসি।কিন্তু ইশির ব্যাপারটা নিয়ে আপসেট ছিলাম বলে আপনাকে দূরে ঠেলেছি।
জানেন আপনাকে যেদিন ধাক্কা দিয়ে এক্সিডেন্ট করেছিলাম,সেদিন বাড়ি এসে অনেক কেঁদেছি।তিনদিন কিছু খাইনি।সবসময় আল্লাহর কাছে সারাদিন সারারাত আপনার জন্য দোয়া করতাম।আপনি যাতে ঠিক হয়ে যান।

নিবরাজ অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ও কখনো মনে করেনি মিহু ওর জন্য এতোটা করেছে।আবারো মিহুকে জড়িয়ে ধরলো।

নিবরাজঃ আই লাভ ইউ মাই সুইট পাগলী।

মিহুঃ আই লাভ ইউ নিবরাজ চিলি মসলা।

নিবরাজঃ আবার চিলি মসলা 😐?

মিহুঃ হুম☺️। আমি আপনাকে এই নামেই ডাকবো।

নিবরাজঃ ঠিক আছে নো প্রবলেম।

মিহুঃ ছাড়ুন এবার।চলেন ভেতরে যাই।দাঁড়ান একটা কথা বলুন তো।

নিবরাজঃ কি?

মিহুঃ আপনি জানেন আমি শাড়ি সামলাতে পারি না বলে পছন্দ করি না।তারপরেও আমাকে শাড়ি গিফট কেন করলেন?

নিবরাজঃ মন চাইলো।আর বিয়ের পরতো সবসময় শাড়ি পড়েই থাকতে হবে।

মিহুঃ কিছুতেই না। আমি শাড়ির সাথে উষ্ঠা খাইয়া আমার সব দাঁত হারামু।তখন সবাই বলবো নিবরাজ খানের বউ দাঁত ফোকলা।বলুন তো শুনতে ভালো লাগবো কথাটা।

নিবরাজঃ ঠিক আছে শাড়ি পরতে হবে না। আমি তোমাকে জোর করবো না। আগেও করিনি,ভবিষ্যতেও করবো না। এবার ভেতরে চলো।

হঠাৎ নিবরাজ হাটু মুড়ে বসে মিহুর হাতে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ালো।মিহু বিনিময়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।তারপর দুজন বাড়ির ভেতরে চলে গেল।

#চলবে