ভালোবাসাময় প্রহর পর্ব-১৩

0
387

#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:১৩

রক্তিম আর রাত থানায় এসে ওসির মুখোমুখি বসে আছে রক্তিম
ওসিকে জিজ্ঞেস করলো,

~স্যার,সেই লোকটি কী কোনো ইনফরমেশন দিয়েছে?

ওসি হালকা হেসে জবাব দিলেন,

~দ্বিতীয় দফার ট/র্চা/রে সব বলে দিয়েছে।

রক্তিম বললো,

~মানুষটা কে স্যার?

ওসি সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,

~আপনার ফুপি মিসেস তানহা।

রাত আর রক্তিম এই নামটা শুনে একদমই অবাক হলো না তারা এটাই আশা করছিলো রক্তিম বললো,

~তাহলে আপনারা কেন বসে আছেন?যা করার করে নেন।

রক্তিমের কথা শুনে ওসি সাহেব বললেন,

~অবশ্যই আমরা নিজেদের মতো সব করে ফেলবো।

রক্তিম ওসির সাথে হাত মিলিয়ে থানা থেকে বের হয়ে গেলো রক্তিম গাড়িতে বসে রাতকে বললো,

~রাত,আমি শপিং মলে নেমে পরবো তুই গাড়ি নিয়ে চলে যা বাসায়।

রাত বললো,

~অধরার জন্য শপিং করবে?

রক্তিম বললো,

~হুম মেয়েটা বিয়েতে তার কোনো শখই পূরণ করতে পারেনি তাই ভাবলাম একটা সারপ্রাইজ দেওয়া যাক।

রাত বললো,

~ঠিক বলেছো।

রক্তিম শপিং মলে পৌছে গাড়ি থেকে নেমে রাতকে বিদায় জানিয়ে শপিং করতে নেমে পরলো সর্বপ্রথমই সে শাড়ির দোকানে চলে গেলো অধরার জন্য শাড়ি পছন্দ করার পর তার মায়ের জন্য পছন্দ করলো। অধরার মা, তন্নির আর সাদিয়ার জন্যও শাড়ি নিয়ে নিলো এরপর সে আরো কিছু কেনা কা/টা করে শপিং মল থেকে বের হতেই তার দিবার সাথে দেখা হলো।রক্তিম দিবার পাশ কে/টে চলে যেতে নিলেই দিবা বললো,

~রক্তিম,আ’ম সরি।

রক্তিম দিবার দিকে তাকিয়ে বললো,

~এতো বড় ভু/ল করে শুধু সরি বলছো লজ্জা করে না।

দিবা মাথা নিচু করে ফেললো তখনই রোদ্দুর সেখানে উপস্থিত হলো রোদ্দুরকে দিবার সাথে দেখে রক্তিম একটু অবাক হলে সে বললো,

~রোদ্দুর তুমি?

রোদ্দুর বললো,

~হ্যাঁ রক্তিম আমি আর দিবা বিয়ে করছি।

রক্তিম একবার দিবার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রোদ্দুরের দিকে হাত বারিয়ে বললো,

~অভিনন্দন তোমাদের নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা।

দিবা বললো,

~রক্তিম আমি জানি আমি পা/প করেছি এর জন্য তুমি যা
শা/স্তি দিবে তাই মেনে নিবো।

রক্তিম বললো,

~তুমি যদি সত্যিই নিজ ভু/ল বুঝে থাকো তাহলে আমার কোনো আ/প/ত্তি নেই কিন্তু যদি এসব আবার কোনো নাটক হয় তাহলে আমি তোমাকে ছা/ড়/বো/না।

রক্তিমের কথা শুনে রোদ্দুর বললো,

~এমন কিছুই হবে না আমি আর দিবা আজই বিয়ে করছি আর ২দিন পর আমেরিকা চলে যাবো সারাজীবনের জন্য।

রক্তিম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,

~আ’ম সরি দিবা তোমার বিয়েতে হয়তো তোমার মা-বাবা কেউই থাকবে না।

দিবা বললো,

~আমি বুঝতে পেরেছি তুমি কেন এ কথাটা বলেছো আমি এসবের জন্য প্রস্তুত আছি।

রক্তিম মুচকি বললো,

~দিবা,আমি অনেক খুশি হয়েছি তোমার সিদ্ধান্তের জন্য।

রক্তিম তাদের থেকে বিদায় নিয়ে ট্যাক্সিতে করে চলে যায় নিজ গন্তব্যে।দিবা রোদ্দুরের হাত ধরে নতুন জীবনের শুরুর জন্য শপিং করতে চলে যায় দিনশেষে দিবাও তার প্রিয় মানুষটিকে পেয়ে গেলো।রক্তিম বাসায় এসে শপিং ব্যাগ গুলো সোফায় রেখে রান্না ঘরে চলে গেলো সেখানে গিয়ে দেখলো তার মা কাজ করছে রক্তিম গ্লাসে পানি নিয়ে বললো,

~মা,তোমার জন্য শাড়ি এনেছি।

রক্তিমের মা হালকা হেসে বললেন,

~শুধু কী আমার জন্যই শাড়ি এনেছিস নাকি তোর বউয়ের জন্যও এনেছিস।

রক্তিম তার মায়ের কথা শুনে বললো,

~হ্যাঁ এনেছি সবার জন্য এনেছি।

রক্তিমের মা বললেন,

~আমরা সবাই তো একটা বাহানা মাত্র তোর আসল উদ্দেশ্য তো বউকে খুশি করা।

রক্তিম বললো,

~কী বলছো মা এসব আমি তো সবার জন্যই শপিংয়ে গিয়েছিলাম।

রক্তিমের মা তার কান টে/নে বললেন,

~হয়েছে চল এখন দেখি তোর পছন্দ শোন রক্তিম অধরা কাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে সব টেস্ট আবার থেকে করানো হবো আমি চাই কেউ যাতে আমার পুত্রবধুর দিকে আঙ্গুল তুলে কোনো কথা না বলে।

রক্তিম তার মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

~তাই হবে মা।

দিবার মা আর বাবাকে পুলিশ থানায় ধরে নিয়ে এসেছে দিবাকেও নিয়ে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু রক্তিম তাদের মানা করেছে আর বলেছে, সে দিবার ওপর কোনো কে/স করতে চায় না।দিবার মা পুলিশ অফিসারকে বললেন,

~আপনাদের কাছে কী প্রুভ আছে এসব আমিই করেছি?

পুলিশ অফিসার কিছু বলতে যাবে তখনই রক্তিম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললো,

~সব প্রমাণ কোর্টে চলে যাবে আপনার এ নিয়ে এতো চিন্তা করতে হবে না।

দিবার বাবা বললেন,

~রক্তিম,আমি আর কোনোদিন এসব অ/বৈ/ধ কাজ করবো না প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দেও।

রক্তিম বললো,

~আরে ফুপা যে আপনি তো সুইরজারল্যান্ডে ছিলেন এখানে কীভাবে আসলেন?

দিবার বাবা মাথা নিচু করে ফেললেন দিবার মা বললেন,

~আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলবো।

রক্তিম বললো,

~বাবা বলেছে আপনার এই চেহারা সে কোনোদিন দেখবেনা।

দিবার মা আর কোনো কথা বললো না সে চুপচাপ গিয়ে বসে পরলো রক্তিম পুলিশ অফিসারকে বললো,

~এদের ভালো মতো খেয়াল রাখবেন।

অধরা রক্তিমের আনা শাড়ি গুলো হাত দিয়ে বুলাচ্ছে তার খুব মন চাইছে শাড়ি পরতে কিন্তু এই অবস্থায় শাড়ি তো পরা যাবে না।তাই সে মনে কষ্টে নিয়ে বসে আছে রক্তিমের জন্যও তার
খা/রা/প লাগছে বউ নিয়ে তো সেই মানুষটারও কতো আশা আছে।অধরা এবার আস্তে আস্তে বিছানা থেকে পা নামানোর চেষ্টা করলো তখনই সে ব্যাথায় কু/ক/ড়ে উঠলো রক্তিম এসে তাকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলো।রক্তিম হালকা চেঁচিয়ে বললো,

~আমরা কী সবাই ম/রে গেছি যে তুমি একা একা বিছানা থেকে নামতে যাচ্ছিলে।

দরজা বন্ধ থাকায় তার গলা বাহিরে গেলো অধরা রক্তিমের কথা শুনে ফুঁপিয়ে কেঁ/দে উঠলো।রক্তিম অধরার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে বললো,

~তোমার যদি কিছু হয়ে যায় তখন আমাদের কী হবে?

অধরা বললো,

~আমি আপনাকে কোনো সুখ দিতে পারছিনা এই যে দেখেন আপনার আনা শাড়িও পরতে পারছিনয়।

রক্তিম অধরার গালে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,

~যখন তুমি একদম ঠিক হয়ে যাবে তখন এসব হবে।আমি তো ৩জন মেয়ে আর ৩জন ছেলের নামও ঠিক করে ফেলেছি একের পর এক এসে পরবে এই পৃথিবীতে।

রক্তিমের কথা শুনে অধরা ফিক করে হেসে উঠলো রক্তিম অধরাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

~সব ঠিক হয়ে যাবে।

অধরাও রক্তিমের বুকে মাথা রেখে পরম শান্তিতে শুয়ে রইলো।
পরেরদিন অধরাকে নিয়ে রক্তিম অন্য ডাক্তারের কাছে গেলো সব টেস্ট আবার থেকে করিয়ে নিলো ডাক্তার জানালো আগামীকাল সব রির্পোট চলে আসবে।অধরা গাড়িতে বসে রক্তিমকে বললো,

~এতো গুলো টেস্ট কেনো করালো ডাক্তার?

রক্তিম বললো,

~রেগুলার চেকআপ এসব।

অধরা আর কিছুই জিজ্ঞেস করলো রক্তিম মনে মনে বললো সব রির্পোট যখন একদম ঠিক আসবে তখন আমার প্রান প্রিয় ফুপি আর সেই ডাক্তার একদম ফি/নি/স।এগুলো সবই তার বিরুদ্ধে কোর্টে কাজে আসবে।রক্তিম এসব ভেবেই বাকা হাসলো তারপর অধরার এক হাত ধরে ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিলো।
রাত আজ তন্নিকে ফলো করছে তন্নি একটি পার্কে বসে আছে তখনই

চলবে