ভোরের_কুয়াশা
#পর্বঃ১১
#Misty Meye(মরিয়ম)
___আমার মা নেই।আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন আমার মা,আমাকে আর আমার ছোয়াট বোনকে একা রেখে চলে গেছে।(মন খারাপ করে)
___একা রেখে মানে,,,,
___একটা এক্সিডেন্ট এ মারা যায়।
___ওহ,,,,সরি,,,আমি বুঝতে পারিনি।আসলে,,,,
___নাহ,,,,,সরি বলার কি আছে,,,,,
___জানেন,,,,আমারও মা নেই।এই জন্যই আমার ভিষন মন খারাপ হয়।
___হুম,,,জানি,,,,
___জানেন,,,কিভাবে জানেন আপনি,,,,আর আপনার মা কিভাবে মারা গেলো?
___তোমার সব কিছুই আমি জানি।কিভাবে তা না হয় পড়েই জানবে।আমার মা কিভাবে মারা গেলো সেটাও তুমি পরে জানতে পারবে।
___হুম,,,,,আচ্ছা আপনি তো বললেন আপনার বোন আছে কই সে,,,,,
___ও পড়াশুনা করছে আমেরিকাতে।আমাদের ওখানে বাড়ি আছে। ও ওখানেই থাকে।পড়া শেষ হলে ও চলে আসবে এখানে।আমিও পড়াশুনা ওখানেই করেছি।এন্ড তিন বছর আমি এখানে আসছি।এখানে আমাদের বিজনেস আছে ওইটাই আমি দেখছি।আগে বাবা দেখতো বাট এখন আমি আর বাবা দুইজনই দেখছি।
___আর আপনার বাবা কোথায়?
___বাবা বিজনেসের কাজে বেশিরভাগ সময়ই বাইরে থাকে।তাই এখন তুমি বাবাকে দেখছোনা।
___ওহ,,,,,কিন্তু আপনি কি অফিসে যাবেন না।না মানে,,,,, সাড়াদিনতো আপনাকে আমি বাসাই দেখছি।কবে যাবেন কাজে,,,,
___কেনো বলতো?(ভ্রু কুঁচকে)
___কেনো আবার এমনি জিজ্ঞাসা করছিলাম আরকি,,,,(আপনি অফিস গেলে আমি পালাবো তাই,,, মনে মনে)
___কালকে যাবো।আর আমাকে অফিস যেতেতো হবেই।কিন্তু তোমার জন্য যেতে পারছিনা।তোমাকেতো আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।একা পেয়ে আবার পালিয়ে যেতে পারো।
___আমি পালাবো।না,, না,,,,আমি অমন মেয়েই না।আমি পালাবো না।আপনি নিশ্চিন্তে অফিসে যাবেন।আমি সত্যি পালাবো না।আমিতো ভালো মেয়ে তাই না।কালকে আপনি বাইরে যাবেন।আর আমি দরজাটা সুন্দর করে লাগিয়ে দিবো।একটুও পালানোর চেষ্টা করবোনা।(একবার খালি অফিস যা আমি পালামু না আমার নানিও পালাবে,,, মনে মনে)।
___ওটা হচ্ছে না।আমি দরজা বাইরে থেকে লক করে যাবো।বুঝেছো।আর বাইরেতো সিকিউরিটি আছেই।
___কিইইইইই,,,,,
___কিসের কি,,,,,
___নাহ (মিথ্যা হেসে)কিছু না।(আমি কি ভাবলাম আর কি হলো।মনে মনে)
___হুম,,,,,(সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)
___এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?
___না কিছু না।
বলে আমাকে খাইয়ে দিলো।তারপর খাওয়া শেষ করে ওইদিনটা ভালোই কাটলো।আজকে বেশি ঝামেলা করেনি।কালকেতো আমি পালিয়েই যাবো।তাই এই একটাদিন আর ঝামেলা করলাম না।হিহিহি,,,,
রাতে আবার সেই এক অবস্থা।আমাকে আবার জরিয়ে ধরে শুয়েছে।বিরক্ত লাগে আমার। উফঃ।ধর ধর বেশি কইরা জড়ায় ধর।কালকেতো আমি চলেই যাবো।সেটা যেভাবেই হোক।হাহাহা।তখন আর আমারে ধরতে পারবি না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি আর ভোর নামাজ পড়ে।আবার একটু ঘুমিয়ে নেই।আজকে আমার মন বেশ ফুরফুরে। আহ,,,,,পালাবো।তারপর আমি স্বাধীন।ও বাল্লে বাল্লে।(মনে মনে নাচছি।)
তারপর সকালের নাশতাটা দুইজন বানিয়ে আমি সাজাচ্ছি আর ভোর উপরে চলে যায় রেডি হতে।আর তখন আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।আমি ভোরের চেয়ারে আঠা ঢেলে দিয়ে ভরে রাখি।এখন ভোর খালি আসবে।তারপর বসবে।আর উঠতে পারবে না।হিহিহি।আমি সব ব্যবস্থা করে আঠার কৌটাটা রাখতে চলে যাই।এসে দেখি ভোর নিচে নামছে।আমি ভোরের সামনে দৌড়ে গিয়ে বলি,,,,
___আপনি চলে আসছেন।চলুন আপনাকে খেতে দেই।
___কি ব্যাপার বলোতো? আজকে আমাকে তুমি নিজেই খেতে দিতে চাইছো।
___কোন ব্যাপার নাতো।আপনি সব কিছুতেই একটু বেশি সন্দেহ করেন।
___কিইইইইই
___নাহ তো কিছুই না।আসুন বসুন।
___হুম।
তারপর ভোর অন্য আরেকটা চেয়ারে বসতে গেলে আমি ওকে টেনে ওই চেয়ারটাই বসাই।
ও কিছুটা সন্দেহ নিয়ে তাকাচ্ছে।কিন্তু আমি পাত্তা দিচ্ছি না।আমার কাজতো শেষ।ও আর উঠতেই পারবে না।আর আমি পালাবো। কি মজা।
তারপর আমি খাবার বেড়ে দিয়ে বসে আছি।এতোটাই এক্সাইটেড যে চোখে কিছুই দেখছিনা।ঊহ,,,,আমি আর কিছুক্ষন পর পালাবো। ভাবতেই অবাক লাগছে।ভোর নিজেও খাচ্ছে আমাকেও খাওয়াচ্ছে।
ভোরের খাওয়া শেষ হলে ভোর উঠতে গেলে আবার বসে পড়ে।মনে হয় কাজ হয়েছে।আঠা লেগে গেছে।এখন আর উঠতে পারছে না।আমি একটা বিজয়ের হাসি হেসে বলি,,,,,
___কি ব্যাপার,,, হুম,,,,উঠতে পারছেন না তাই তো।হাহাহা,,,,এবার আমি পালাবো।আর আপনি বসে বসে দেখবেন।অনেক সহ্য করছি আপনার অত্যাচার। আমাকে দিয়ে ঘর পরিষ্কার, তারপর আপনাকে ফ্রেশ করে দেওয়া,আমাকে চড় মারা,রান্না শেখানো হ্যা।বেশ হইছে আপনি এবার আটকায় থাকেন।আর আমি চলি। আপনি কিছুই করতে পারবেন না।(ভাব নিয়ে)
তারপর আমি উঠতে গেলে,,,,,,,,,,,,
চলবে………………..