#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_31
ভার্সিটির মাঠের মধ্যে এলির গালে পর পর দু থাপ্পড় পরায় সামনের মানুষটার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে রয়েছে এলি।সামনের মানুষটা আর কেউ না ইশফা।ইশফা রাগি চোখ এমন ভাবে এলির দিকে তাকিয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই সে এলিকে ভস্ম করে দিবে।মাঠের সবাই অবার হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।এলি পুরো মাঠে একবার চোখ বুলিয়ে তেজি গলায় বলল…..
—ইউ….তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে থাপ্পড় মারার?
কথাটা শেষ করতে না করতেই এলির গালে আরেকটা থাপ্পড় পরল।এলি চেচিয়ে বলল……
—ইউ ছোটলোক তুমি আবার আমাকে থাপ্পড় মারলে?ইউ তুমি জানো আমি তোমার কি হাল করতে পারি?
ইশফা রাগি গলায় বলল….
—শুধু তো থাপ্পড় মেরেছি।ইচ্ছে তো করছে তোর এই সুন্দর গাল দুটো থাবরিয়ে লাল বানিয়ে ফেলি।
এলি চেচিয়ে বলল…..
—তোমার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার?তোমাকে আমি?
এলি ইশফাকে থাপ্পড় মারার আগেই ইশফা এলির হাত ধরে হাত মুচরে দিয়ে রাগি গলায় বলল…..
—সাহস আমার বরাবরই একটু বেশি।এখন অব্দি তো সাহসের কিছুই দেখিস নি।আগেই বলেছিলাম আমার সাথে লাগতে আসিস না।শুনিসনি তো আমার কথা।আমি ভালোর ভালো খারাপের জম।
এলি হাতে ব্যাথা পেয়ে ব্যাথায় কুকরে উঠে শব্দ করতে লাগলো।ইশফার হাত থেকে হাত ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে।কিন্তু কিছুতেই হাত ছাড়াতে পারছে না।ইশফা তাসিল্য হেসে বলল……
—এতটুকেই এই অবস্থা।যার একটু ব্যাথা সহ্য করার শক্তি নেই সে অন্যকে কিভাবে ব্যাথা দেয়।
কথাটা বলেই ইশফা এলির হাত ঝাড়া মেরে ছেড়ে দিল।
💦💦💦💦💦💦
সান এর কানে মাঠের খবর পৌচ্ছানোর পর সান এক মুহূর্ত দেড়ি না করে সাথে সাথে মাঠে চলে আসে।সান সেখানে এসে দেখে এলি ইশফা তর্ক করছে।সান গম্ভীর গলায় বলল……
—কি হচ্ছে এখানে?
এলি সানকে দেখে ন্যাকা কান্না করে বলল…..
—দেখো না সান এই মেয়েটা সবার সামনে আমার সাথে মিস বিহেব করছে।জানো জান এ না আমাকে থাপ্পড়ও মেরেছে।
সান ইশফার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল……
—কি হয়েছে?
ইশফাঃকি হয়েছে আমাকে জিগ্যেস না করে আপনার এই গুনধর চেলাকে জিগ্যেস করুন না কি করেছে সে।
সান এলির দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাতেই এলি থতমত খেয়ে বলল…..
—আমি কিছু করিনি সান।বিশ্বাস কর আমি সত্যি বলছি।আমার কথা বিশ্বাস না হলে মাঠে তো বাকিরাও আছে তাদের জিগ্যেস করো।ইশফা হুট করে এসেই আমাকে থাপ্পড় মেরেছে।
ইশফা তেড়ে বলে উঠল…..
—চোরের মায়ের বড় গলা। মিথ্যে বললে একেবারে জিভ টেনে ছিড়ে ফেলবো।
সান এলির দিকে তাকিয়ে বলল……
—আমাকে বলবে তো কি হয়েছে?কি করেছে এলি?
এলি কাদো কাদো হয়ে বলল…..
—সত্যি বলছি সান আমি কিছুই করিনি।শুধু শুধু ইশফা আমাকে…..
এতটুকু বলেই এলি ডুকরে কান্না করতে লাগলো।
ইশফা দাতে দাত চেপে বলল…..
—একদম মিথ্যে কথা বলবি না আর এই কুমিরের কান্না তো একদমি কানবি না।
রিধি ইশফাকে সান্তনা দিয়ে বলল……
—ইফু মাথা ঠান্ডা করে কি হয়েছে সেটা তো বল।
ইশফাঃকি ভাবে মাথা ঠান্ডা করবো বলতে পারিস? এর সাহস কি করে হয় আমার কলিজার টুকরো বোন এর গায়ে হাত দেবার।
সানঃমানে?
ইশফাঃমানে হল আপনার এই চেলা ইরুকে সিড়ি থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
কথাটা শোনার সাথে সাথে সান এর চেহারার রং পাল্টে গেলো।
এলি তুতলিয়ে বলল……
—মি-মিথ্যে কে-কেন বলছো।আমি তো তোমার বোনকে চিনিই না।আর সিড়ি থেকে ধাক্কা মারার কথা তো প্রশ্নই উঠে না।
ইশফা চেচিয়ে বলল…..
—ওহ্ আচ্ছা আপনি কিছুই করেননি তাহলে কাল কে ইরুকে বাজে কথা বলেছিল? সিড়ি থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল?আপনার ভূত নাকি আমার মত আপনারো জমজ বোন আছে?
(ইশফা সব জানার পর তুশি,রিধি, ইশরার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল।কারো সাথেই সে কোন প্রকার কথা বলে নাই।সেদিন ভার্সিটি থেকে সোজা তাদের বাসায় না গিয়ে তার বাবার ফ্লাটে গিয়ে ওঠে।সবাই যখন এক সাথে মিলে মজা করেছে তাই এক সাথে সরি বলার জন্য ইশরা কালকে তুশির সাথে যোগাযোগ করে ভার্সিটিতে এসেছিল।এলি ইশরাকে দেখে ইশফা ভেবে অনেক বাজে ব্যবহার করে।ইশরা সেদিন সবার সামনে এলির সাথে মজা করার সাহস করলেও একা দেখে কিছুটা দমে রয়েছিল।এলির বাজে ব্যবহারের মাত্রা বেড়ে যেতে দেখে তুশির এলিকে ইশরার পরিচয় দিতে এলি তার দলবল নিয়ে ইশরার সাথে আরো বাজে ব্যবহার করে।ইশরা তাদের কথাকে উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলো।সিড়ি দিয়ে নামার সময় এলি এসে ইশরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
ইশরার অসুস্থতার খবর পেয়ে বাসার যাবার পর ইশরা,তুশির কাছে সব শুনতেই ইশফা রাগে ফেটে পরেছিলো।কাল কিছু করতে না পারলেও আজ ভার্সিটিতে এসে নিজের রাগ দমিয়ে রাখতে না পেরে এলির উপর রাগ ঝেরে বসে।)
এলিঃকি প্রমানের ভিত্তিতে তুমি আমার নামে এসব বলছো?তাছাড়া ভার্সিটিতে তুমি পড় তোমার বোন কেন এসেছিলো?
ইশফাঃভার্সিটি তো আপনার কেনা সম্পত্তি নায় যে আপনাকে তার জবাবদিহি করতে হবে ও কেন ভার্সিটিতে এসেছিলো।আর প্রমান তা পেয়ে যাবেন। সব সিড়ি কোটার মধ্যে যে সিসি ক্যামেরা আছে সেটা মনে হয় ভুলে গেছেন।
সিসি ক্যামেরার কথা শুনে এলি ঘামতে লাগলো।সে তো জানেই না যে ভার্সিটিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে।
ইশফা,এলির ঝগড়া দেখে সবাই কানাঘুষা করতে লাগলো।সান সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে রাগি গলায় বলল……
—রিধি ইশফাকে নিয়ে যাও।এ নিয়ে পরে কথা হবে।
সান এর কথা শুনে ইশফা সান এর দিকে রাগি চোখে তাকালো।সান এর কথাটা যে ইশফার পছন্দ হয়নি তা সান ইশফার তাকানো দেখেই বুঝতে পারল।ইশফা সানকে কিছু বলার আগে রিধি ফিসফিস করে করে অনুনয়ের সুরে বলল…..
—প্লিজ ইফু আর কোন ঝামেলা করিস না।দেখ ভাইয়া ভার্সিটির ভিপি।এখন এখানে বেশি ঝামেলা হলে পরে ভাইয়ার সমস্যা হতে পারে।ভাইয়ার জন্যই একটু মাথাটা ঠান্ডা করে চল এখান থেকে প্লিজ ইফু।
ইশফা এলির সামনে চুটকি বাজিয়ে বলল…..
—এই যে মিস এলি।লাষ্ট বারের মত বলছি আমার আর আমার কাছের মানুষদের থেকে দুরে থাকবেন।যদি তাদের কোন ক্ষতি করা তো দূর বিন্দু মাত্র কষ্টের কারন হন তখন বুঝবেন এই ইশফা খান কি?আমার সম্পর্কে কিছু না জানলে আমার কলেজে গিয়ে খোজ নিয়ে নিবেন।বেশি কষ্ট করতে হবে না সুনামি ইশফা খান বললেই সবাই চিনে যাবে।কেননা সেখানে সবাই আমাকে সুনামি বলেই ডাকে।মাইড ইট।(চোখ রাঙিয়ে)
কথাটা বলে ইশফা সান এর দিকে আরেকবার রাগি চোখে তাকিয়ে সেখান থেকে গটগট করে হেটে চলে গেলো।
ইশফার এই রুপ দেকে সবাই থ’ হয়ে রয়েছে।এমন শান্ত চুপচাপ কম কথা বলার মেয়েটা যে এতোটা রাগি হবে তা কেউ ধারনা করতে পারেনি।সান ইশফার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল….
—এতোদিন তো দূর থেকে তোমার এই রুপ দেখেছি আজ তো সরাসরি দেখে আমি নিজেই রিয়েক্ট করতে ভুলে গেছি।বাঘিনী কি আর আমি সাধে ডাকি।ঘুমন্ত বাঘিনী জেগে উঠে সবাইকে আজ তাক লাগিয়ে দিয়ে গেল।আর আমি তো ছোট খাট হার্ট এর্ট্যাক করতে করতে বেচেছি।প্রাইড অফ ইউ মাই বাঘিনী।
💦💦💦💦💦💦
ইশরা বেডের মধ্যে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে রয়েছে।সারাদিন শুয়ে বসে থাকতে থাকতে বেচারি অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে।পায়ে ফ্রেকচার হওয়ার কারনে লাফালাফি,ফালাফালি করতে না পারায় তার দিনটাই যেন পানসে হয়ে গেছে।
রুমে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে চোখ খুলে সামনের মানুষটাকে দেখে ধরফরিয়ে উঠতে গিয়ে পায়ে ব্যাথা পেয়ে পা ধরে শব্দ করতেই ভেসে এল……..
—একটা থাপ্পড় লাগাবো ফাজিল মেয়ে।
তিড়িং বিড়িং না করলে ভালো লাগে না?
#চলবে,
#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_32
ইশফা ভার্সিটির গেডের সামনে রিকশার জন্য দাড়িয়ে রয়েছে।একে তো সান এর জন্য এলিকে ভালোমত ধুয়ে দিতে না পারায় সান এর উপর রেগে রয়েছে তার উপরে একটা রিকশাও পাচ্ছে না।যাকেই জিগ্যেস করে সেই বলে ঐ রোডে যাবো না।তাতেই যেন ইশফার রাগটা তরতর করে আরো বেশি বাড়ছে।
দূর থেকে সান ইশফাকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে গাড়ি নিয়ে এসে ইশফার সামনে গাড়ি থামিয়ে বলল……
—গাড়িতে উঠ।
ইশফা সানকে এক পলক দেখেও না দেখার ভান করে একটু সামনে হেটে গিয়ে এদিক ওদিন তাকিয়ে রিকশা খুজতে লাগলো।সান আবারো ইশফার সামনে গাড়ি থামিয়ে বলল….
—এই টাইমে গাড়ি পাবে না।উঠ আমি নামিয়ে দিয়ে আসছি।
ইশফা কোন কথা না বলে সামনের দিকে হাটা ধরল।সান ইশফার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলল……
—কেন যে ভুলে যাই আমার বাঘিনী একটা ঘাড়ত্যাড়া।যাকে সোজা কথা সোজা ভাবে বললে কাজ হয় না।
সান গাড়ি থেকে নেমে গটগট করে হেটে এসে ইশফার সামনে দাড়িয়ে বলল…….
—কি সমস্যা তোমার?গাড়িতে যে উঠতে বলছি শুনতে পাওনি?
ইশফা কোন কথা না বলে সাইড কেটে চলে যেতে নিলেই সান ইশফার হাত ধরে ফেলল।ইশফা হাতের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল…..
—হাত ছাড়ুন।
সান এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল…..
—তুমি নিজের ইচ্ছায় গাড়িতে উঠবে নাকি আমি অন্য ভাবে গাড়িতে উঠাবো?
ইশফা সানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল……
—কোন ভাবেই যাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই।
—তাহলে তুমি যাবে না?
ইশফা কড়া গলায় বলল…..
—না যাবো না।এবার হাত ছাড়ুন।
—ওকে।
সান সাথে সাথে ইশফার হাত ছেড়ে দিয়ে ইশফাকে কোলে তুলি নিল।ইশফা সান এর কান্ডে কথা বলতে ভুলে গেল।কয়েক সেকেন্ড পর নিজেকে শূন্যে অনুভব করে নিজের অবস্থান বুঝতে পেরে হালকা চেচিয়ে বলল…..
—কি করছেন কি?নমান আমাকে।আপনার কি কান্ডজ্ঞান নেই?লোকে দেখলে কি ভাববে?
সান কোন কথা না বলে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গাড়ির দিকে হেটে যেতে লাগলো।
ইশফা কোল থেকে নামার জন্য ছটছট করতে লাগলো।কোন ভাবেই কোল থেকে নামতে না পেরে রাগে গজগজ করতে করতে বলল…..
—বয়রা হয়ে গেছেন কি বলছি শুনতে পাচ্ছেন না?
সান সামনের দিকে যেতে যেতে বলল…..
—যেভাবে চেচাচ্ছ বয়রা না হলেও বয়রা হতে সময় লাগবে না।
💦💦💦💦💦💦
সান ইশফাকে গাড়িতে বসিয়ে ডোর লক করে দিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে হেলান দিয়ে বসে বলল…….
—উফ্ মনে হচ্ছে আমার 2kg ওয়েট লস হয়ে গেছে।এই তোমার ওজন কত গো…..
ইশফা কিছু না বলে সান এর দিকে কটমট করে তাকিয়ে রইল।সান ইশফার মুখের থেকে হিজাব টা সরিয়ে মিষ্টি হেসে বলল…..
—এভাবে দেখার কিছু নেই।তোমার বর আগের মতই হ্যান্ডস্যাম আছে।তবে তোমাকে কোলে করে গাড়িতে উঠাতে গিয়ে ওজন একটু কমেছে।
ইশফা রাগি গলায় বলল…..
—আপনাকে আমি খুন করবো।
—খুন তো আগেই করেছো নতুন করে মরা কে আর কি মারবে।
—ডোর লক খুলুন আমি গাড়ি থেকে নামবো।
সান গাড়ি স্টাট দিয়ে বলল…..
—বললেই হলো।2kg ওয়েট লস করে গাড়িতে উঠিয়েছি কি গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে।
ইশফা সান এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে রয়েছে।সান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে।সান এর সাথে রাগারাগি করেও যে ইশফা গাড়ি থেকে নামতে পারবে না তা বুঝতে পেরে ইশফা বাহিরের দিকে মুখ করে বসে রইল।সান ইশফার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হেসে গন্তব্যের দিকে ছুটলো।
💦💦💦💦💦💦
ইশরা চেচিয়ে বলল……
—আপনি এখানে?
জিদান কানে হাত দিয়ে বলল……
—আস্তে কথা বল আমার কানে কোন সমস্যা নেই।
ইশরা উওেজিত হয়ে বলল……
—আপনি এখানে কি করে এলেন?
জিদান কোন কথা না বলে ইশরার পায়ের সামনে বসে এক ধ্যানে পায়ের ব্যান্ডেজ এর দিকে তাকিয়ে রইল।
ইশরা দরজার দিকে তাকিয়ে বলল…..
—প্লিজ স্যার আপনি এখান থেকে চলে যান।দরজা খোলা মা যে কোন সময় চলে আসতে পারে।
জিদান কপালে ভাজ ফেলে বলল…..
—নিজেকে কি সিনেমার হিরোইন মনে করিস?তোর কি মনে হচ্ছে তোর জন্য আমি হিরোর মত পাইপ বেড়ে ব্যালকনি দিয়ে লুকিয়ে তোর সাথে দেখা করতে এসেছি?
ইশরা গাল ফুলিয়ে বলল…..
—লুকিয়ে আসেন নি কথাটা সোজা ভাবে বললেও হত।ত্যাড়া ভাবে বলার কি আছে।আর তাছাড়া হিরোদের মত লুকিয়ে আসতে মুরোদ লাগে।নিজে তো একটা ভিতুর ডিম।হুহ…..
জিদান ইশরার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলল…..
—কি বললি তুই?
ইশরা ভেঙচি কেটে বলল….
—হুহ ঢং।যা শুনেছেন তাই বলেছি।
—সাহসের কথা বলতে আসিস না খান বাড়ির ছেলে আমি।নিজের মত সবাইকে ভিতু ভাবিস না।
—সাহস ধুয়ে ধুয়ে পানি খান।সাহসই আছে হিরো হওয়নের লিগা সুন্দর চেহারা লাগে,যগ্যতা লাগে যার কোনটাই আপনার নেই।
—যে বলবে আমার ছেলের হিরো হবার যোগ্যতা নেই তার চোখ খারাপ।
ইশিতা বেগম ট্রে ভর্তি খাবার নিয়ে রুমে ঢুকে কথাগুলো বলল।
ইশরা একবার ইশিতা বেগম এর দিকে তো একবার জিদানের দিকে ভীতু নজরে তাকাচ্ছে।
জিদানঃফুপি চোখ অন্য কারো খারাপ হয়নি হয়েছে তোমার মেয়ের।তোমার মেয়েই বলছে আমি নাকি দেখতে খারাপ।
ইশিতা বেগমঃএর কথায় বাবা কিছু মনে করো না।এর চোখ না পুরো মাথাই খারাপ।
ইশিতা বেগম এর কথা শুনে জিদান মিটমিট করে হেসে বলল……
—তা অবস্য ঠিক বলেছো ফুপি।আর এই পাগলের কথায় কিছু মনে করতে যাবো কেন।আমাকে কি পাগলে পেয়েছে।
ইশরার সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।ইশরা তার ফুপির দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কাপাকাপা গলায় বলল…..
—ফু-ফুপি……
ইশিতা বেগম ইশরার চোখের ভাষা বুঝতে পেয়ে মুচকি হেসে ইশরার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল……
—আমি নিয়ে এসেছি।দেখেছিস ছেলেটাকে ভালোমত তাকিয়ে।তোর অসুস্থতার কথা শুনে কি হাল করেছে।
ইশরা জিদানের দিকে এক পলক তাকিয়ে ছলছল চোখে বলল……
—ফুপি আব্বু……
ইশিতা বেগমঃতোর বাবা কি বলবে না বলবে পরেরটা পরে দেখা যাবে।আমি বেচে থাকতে তাদের ভাইদের রেষারষির জন্য আমার ছেলেমেয়ের দের কষ্ট পেতে দিব না।মগের মুল্লুক নাকি ছোটবেলায় একজনের সাথে এংগেজ করে রাখবে।বড় হলে তারা তাদের ঝামেলার জন্য মত পাল্টাবে।
ইশরা ছলছল চোখে ইশিতা বেগম এর দিকে তাকিয়ে বলল……
—ফুপি তুমি সব ভুলে গেলে?
—কিছু ভুলিনি আমি।সব মনে আছে।এতে জিদানের না কোন হাত ছিলো না দোষ।
—পরে যদি আব্বু সব জানতে পেয়ে কষ্ট পায়?মা জানে ভাইয়ার কথা?
ইশিতা বেগম ইশরার কথার উওর না দিয়ে জিদানকে উদ্দেশ্য করে বলল…..
—জিদান নাস্তা দিয়ে গেলাম খেয়ে নিও।আর একে একটু খাওয়ার জন্য বকা দিয়ে যেও।সকালে শুধু একটা টোষ্ট আর এককাপ চা খেয়েছে।আসছি আমার কিচেনে কাজ আছে।ভাবির ফিরতে দেরি হবে তাই আমিই রান্নাটা সেরে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।কিছু লাগলে বল আমি কিচেনে আছি।
কথাটা বলে ইশিতা বেগম এক মুহূর্ত দেড়ি না করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
💦💦💦💦💦💦
আপন মনে গাড়ি ড্রাইভ করছে সান।নিজের বাসার রাস্তা ছাড়া যে গাড়ি অন্য রাস্তায় যাচ্ছে তা বুঝতে পেরে ইশফা অনেক বার সান কে জিগ্যেস করেছে, কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?কোথায় যাচ্ছি?এটা তো আমার বাসার রাস্তা না ইত্যাদি ইত্যাদি।প্রতি উওরে সান এর থেকে একটা কথাই ভেসে এসেছে গেলেই দেখতে পাবে।তাই ইশফা হাল ছেড়ে রাগ দেখিয়ে আর কোন কথা না বলে বাহিরের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে রয়েছে।
সান তার গন্তব্যে গাড়ি থামিয়ে নিজে গাড়ি থেকে বের হয়ে ইশফাকে গাড়ি থেকে বের হতে সাহায্য করল।ইশফা গাড়ি থেকে নেমেই রনচন্ডি রুপ ধারন করে চেচিয়ে বলল……
—আমার বাসায় না নিয়ে গিয়ে কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাকে?দেখুন মিঃ বিয়ে করেছেন মাথা কিনে নিন নি যে আপনার ইচ্ছে মত সব হবে।আপ……
ইশফার কথার মাঝেই সান ইশফার হিজাব ঠিক করে দিতে লাগল।ইশফা সান এর কাজে কথা বন্ধ করে সান এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই সান মুচকি হেসে বলল…….
—আমি কখনো আমার বাঘিনীকে কোন ব্যপারে জোর করবো না।সব সময় ছায়া হয়ে,ঢাল হয়ে তার পাশে থাকবো।আমার বাঘিনীকে রাগি রুপে মানায় কিন্তু রাগি রুপটা থেকে আমার তার হাসিখুশি রুপটা বেশি পছন্দ।সেই হাসিটুকু ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমি যা কিছুই করতে পারি।তাতে তুমি বাধা দিলেও শুনবো না।কোথায় এসেছি আমাকে জিগ্যেস না করে মাথা খাটিয়ে একটু আশেপাশে তাকিয়ে দেখে।তাহলেই তো হয়।
ইশফা আশেপাশে তাকাতেই সামনের একটা লিখার দিকে তার চোখ আটকে গেলো।
#চলবে,
(বানান ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)