#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_35
আকাশে আজ অর্ধেক চাঁদ উঠেছে।চাঁদের সাথে পাল্লা দিয়ে তারারাও মিটমিট করে জ্বলজ্বল করছে।চারোপাশে হালকা মৃদু বাসাত প্রবাহিত হওয়ার কারনে পরিবেশটা পুরো মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠেছে।
ছাদের এক পাশে বসে রয়েছে সান আর ইশফা।ইশফা নিচে গিয়ে ফাস্টএইড বক্স নিয়ে এসে সান এর হাতের রক্ত পরিষ্কার করে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে।আর সান অপলক দৃষ্টিতে ইশফার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ছাদের লাইটের হালকা আলোতে ইশফার রাগি মুখটা দেখতে সান এর একটু অসুবিধা হচ্ছে না।এই মুহূর্তে সান এর কাছে ইশফাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।সান মনে মনে ভাবতে লাগলো, আচ্ছা রাগি লুকেও কি কাউকে সুন্দর লাগে?নিজে নিজেকে প্রশ্ন করে নিজেই উওর দিল, লাগবে না কেন?ভালোবাসার মানুষের সকল রুপই ভালো লাগে।সুন্দর, অসুন্দর যাই হোক না কেন তাকেই পৃথিবীর সব থেকে রুপবতী, মায়াবতী মনে হয়।সান এর হাতের মলম লাগানো শেষ হতেই ইশফা সান এর দিকে তাকাতেই দেখলো সান পলকহীন তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ইশফা সান এর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বলল……
—জীবনে মাইয়া মানুষ দেখেন নাই এমনে তাকাইয়া রইছেন কেন?
সান এর ভাবনার মাঝে ইশফার ঝাঝালো গলার এমন অদ্ভুত কথা শুনে সান হকচকিয়ে গেলো।কিছু বলার জন্য সান মুখ খোলার আগেই ইশফা ধমক দিয়ে বলল…….
—একদম চুপ।একটা কথাও বলবেন না।
ইশফার ধমক খেয়ে সান ভালো ছেলের মত চুপ করে বসে রইল।ইশফা নিচে যাওয়ার জন্য উঠে দাড়াতেই সান ইশফার হাত ধরে করুন কন্ঠে বলল……
—প্লিজ আরেকটু বসো না।
ইশফা সান এর করুন কন্ঠের ডাক উপেক্ষা করতে না পেরে সান এর পাশে পুনরায় বসে পরল।
💦💦💦💦💦💦
জিদানের নাম্বারে একের পর এক কল করেই চলেছে ইশরা।কয়েক বার রিং হয়ে কেটে যাবার পর ইশরা রাগ করে ফোন বেডে ছুড়ে ফেলে গাল ফুলিয়ে বসে রইল।
একটু পর জিদানের নাম্বার থেকে কল আসতেই ইশরা কল রিসিভ করে হালকা চেচিয়ে বলল…….
—ঐ কই ছিলা তুমি?ফোন ধরতে এতো দেড়ি লাগলো কেন তোমার?কোন মাইয়ার লগে টাংকি মারতে গেছিলা?
মাঝরাতে ফোন করে ইশরার এরুপ ব্যবহারের কারন বুজতে পারল না জিদান।ইশরা যে রেগে আছে সেটা জিদান ঠিকই বুঝেছে কিন্তু কেন রেগে আছে তাই তার মাথায় ঢুকছে না।
—কি হয়েছে ইশু?এভাবে কথা বলছিস কেন?
জিদানের ঘুম জড়ানো সাভাবিক গলার কথা শুনে ইশরা আরো রেগে গেল।ইশরা দাতে দাত চেপে বলল……
—আমার কি হইবো।তোর কি হইছে সেটা আগে ক’।ফোন ধরতে এতো সময় লাগলো কেন?
ইশরার তুই-তোকারি শুনে জিদান বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে বলল……
—থাপ্পড় চিনোস ফাজিল মেয়ে।মাঝ রাতে কি ভূতে ধরেছে?ফোন করে এমন উল্টাপাল্টা কথা কেন বলছিস?
জিদান এর ধমক খেয়ে ইশরা চুপ না হয়ে উল্টো জিদানকে ধমক দিয়ে বলল……
—ভূতে আমারে না তোরে ধরছে তাও আবার পেত্নীতে।আমারে সুস্থ হইতে দে শুধু।তোরে যেই পেত্নীতে ধরছে না তারে আমি ঝাটা পেটা কইরা তাড়ামু।
কথাটা বলেই ইশরা ফট করে লাইন কেটে দিল।অপর দিকে জিদান বোকার মত ফোন হাতে নিয়ে বসে রইল।
ইশরা রাগে রি-রি করছে। পায়ে ব্যাথা নিয়েই রুমজুড়ে পায়চারি করছে আর জিদানকে গালাগাল করছে।কিছুক্ষন গালাগাল করে ধপ করে বেডে বসে কাদো কাদো হয়ে বলল……
—আল্লাহ্ কি একটা আমার কপালে জুটাইছো তুমি?অসুস্থ হইয়া বাসায় পইরা রইছি খবরডাও ঠিক মত নেয় না।আর এদিকে আমার জিজু বউ এর মান ভাঙাতে রাত বেড়াতে বউ এর বাসায় হামলা করছে।কত্ত সুইট আমার জিজুটা।আর আমারটা আস্ত এক রাম ছাগল।
💦💦💦💦💦💦
সকাল সকাল গাল ফুলিয়ে সোফার উপর বসে রয়েছে রিধি।তার গাল ফুলানোর কারন হল সে ভার্সিটিতে যাবে কিন্তু তার বর মহাশয় তাকে ভার্সিটিতে যেতে দিবে না।রিধি দুদিন বাসায় থেকেই হাপিয়ে উঠেছে।তাছাড়া সব থেকে বড় কারন হল সে তুশি,ইশফাকে সবটা জানাতে চাচ্ছে।(ইশফা,তুশি যে রিধির বেবির কথা জানে তা রিধি জানে না)ফোনে সব কথা না বলে সরাসরি বলাই ভালো হবে ভেবে ফোনে ওদের কে কিছু বলে নি রিধি।আজ ভার্সিটিতে যাবার জন্য নানান ভাবে তার বর মহাশয় কে ভার্সিটিতে যাবার অনুমতি দেবার জন্য মানাতে চেয়েছে।কিন্তু তার এক কথা রিধিকে এই মুহূর্তে সে ভার্সিটিতে যেতে দিবে না।
কলিং বেলের শব্দ পেয়েও রিধি চুপ করে বসে রইল।রিধি পণ করলো সে দরজা খুলবে না।ডোর বেল বাজাতে বাজাত যদি নষ্টও হয়ে যায় তারপরেও সে দরজা খুলবে না।এতো সকালে কে আসতে পারে তা ভেবে একটুপর নিজের পণ ভুলে দরজা খোলার উদ্দেশ্যে উঠে দাড়ালো।
রিধি দরজা খুলতেই দরজার সামনের মানুষদের দেখে হা করে তাদের দিকে তাকিয়ে রইল।
—ঐ মাইয়া দরজা খুলতে এতোক্ষন লাগে?কখন থিকা বেল বাজাইতাছি শুনতে পাসনি?নাকি কানে তুলা দিয়া বইয়া আছিলি।
তুশির কথার কি উওর দিবে তা রিধির জানা নেই।রিধি এখনো হা করে তাকিয়ে আছে।রিধিকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ইশফা বিরক্ত হয়ে বলল……
—কিরে ভিতরে আসতে দিবি না নাকি বাইরেই দাড় করিয়ে রাখবি?
রিধি হালকা চেচিয়ে বলল…..
—সত্যি তোরা এখানে এসেছিস?আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তোরা আমার বাড়িতে এসেছিস?
ইশফাঃআমরা আসি নাই আমগো ভূত আইছে। এহন ভিতরে ঢুকতে দিবি?নাকি দরজার থিকাই যামু গা।
💦💦💦💦💦💦
সোফার মধ্যে রিধি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে বসে রয়েছে।ইশফা আর তুশি চোখ রাঙিয়ে রিধির দিকে তাকিয়ে রয়েছে।রিধি মিনমিন করে বলল……
—তোরা এমনে তাকাইস না প্লিজ।আমার ভয় লাগতাছে।
তুশি ঝাঝালো গলায় বলল……
—রাখ তোর ভয় আগে ক’ তোর জামাইরে কই পলাইয়া রাখছোস?শয়তান মাইয়া আমগো কইলে কি তোর জামারে আমরা উঠাইয়া নিয়া জাইতাম?
রিধি কাদো কাদো মুখ করে ইশফা,তুশির দিকে তাকালো।কিছু বলার আগেই পাশের রুম থেকে রিধির বরের কন্ঠে ভেসে এল……
—রিধু….রিধু…..কোথায় তুমি?প্লিজ রাগ করে থেকো না।বুঝার চেষ্টা করো এই শরীরে তোমার ভার্সিটিতে যাওয়া ঠিক হবে না।আমি জানি তুমি ভার্সিটিতে কেন যেতে চাচ্ছ।আমি ইশফা,তুশিকে বুঝিয়ে সবটা বলবো।প্লিজ তার পরেও যাবার জন্য জিদ করো না।
তুশি রিধির দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে ফিসফিস করে বলল…..
—এই ষাড় গরুর মত চেচাইয়া কথা কইতাছে কে রে?তোর জামাই?
ইশফা তুশির হাতে চাপর মেরে বলল…..
—কথা বার্তা ঠিক কর।
তুশি হাত ঢলতে ঢলতে বলল…..
—মারোস ক্যান?ঠিকই তো কইছি।যেমনে চেচাইয়া কথা কইতাছে ষাড় গরু কমুনা তো কি কমু।
রিধির বর রিধির কোন কথা না শুনে ঘড়ি পরতে পরতে রুম থেকে বের হল।ড্রয়িং রুমে ইশফা,তুশিকে বসে থাকতে দেখে থ’ হয়ে দাড়িয়ে রইল।তুশি কথার মাঝেই পাশে তাকাতেই তাকে দেখতে পেয়ে চেচিয়ে বলল……
—নিরব ভাইয়া আপনি এখানে?
#চলবে,
#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_36
সান বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।সিনথিয়া এসে কয়েক বার সানকে ডাক দেবার পরেও সান এর কোন হেলদুল নেই।থাকবে কি ভাবে সে তো অনেক রাতে বাড়িতে ফিরেছে।বাড়িতে ফিরেও ইশফা সাথে গল্প করে সময় কাটানো,কথার মাঝে মাঝে ইশফার আড়চোখে তাকানো, ইশরার কথা ভাবতে ভাবতে সময় পার করে দিয়ে ভোর রাতের দিকে চোখ লেগেছে।
সিনথিয়া এতো ডাকার পরেও সান এর কোন হেলদুল না দেখে বিরক্ত হয়ে ওয়াসরুম থেকে এক মগ পানি এনে সান এর উপর ঢেলে দিল।মুখে পানি লাগতেই সান ধরফরিয়ে উঠে বসল।মুখের থেকে হাত দিয়ে পানি সরিয়ে সামনে সিনথিয়াকে দাত কেলিয়ে হেসে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সান ধমক দিয়ে বলল……
—এটা কোন ধরনের মজা?পানি ছুড়েছিস কেন?
সান ধমক শুনে সিনথিয়া ভেঙচি কেটে বলল……
—যা করেছি বেশ করেছি।এতোক্ষন যে এতো সুন্দর করে ডাকলাম তখন তো শুনলে না।
সান সিনথিয়াকে চোখ রাঙিয়ে বলল…..
—এখনি আমার চোখের সামনের থেকে সর।তা না হলে তোকে কি করবো নিজেও জানি না।
সিনথিয়া ফট করে সান এর সামনে বসে সান এর গলা জরিয়ে ধরে কলা করে বলল…..
—আমার ভালো ভাইয়া,জাদু ভাইয়া সরি…। রাগ করোনা প্লিজ…..।সত্যি বলছি আমি তোমাকে সুন্দর করে অনেক বার ডেকেছি কিন্তু তুমি শোননি।তাই তো…..(ইনোসেন্ট ফেস করে)
সান বোন এর ফেস দেখেই সব রাগ ভুলে গেলো।সান যতই রাগ করুক না কেন বেশিক্ষন বোন এর সাথে রাগ করে থাকতে পারে না।সান সিনথিয়ার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…..
—কেন এতো তেল মারছিস সেটা বল।আর সকাল সকাল এমন পেত্নী সেজে কেন বসে রয়েছিস?তোকে দেখে তো মনে করেছিলাম কোন পেত্নী আমার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে।
সিনথিয়া সান এর বাহুতে একটা চিমটি কেটে বলল……
—পেত্নী হবে তোর বউ আমি না।
সান কপালে ভাজ ফেলে বলল…..
—আমার বউ পেত্নী?
—না ভাবি পেত্নী না।পেত্নী হল…পেত্নী হল….🤔ধুর এখন এসব কথা রেখে উঠ না ভাই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।
সান সন্দেহর চোখে সিনথিয়ার দিকে তাকাতেই সিনথিয়া বলল…..
—এভাবে তাকিয়ে লাভ হবে।আপনি বলেছেন আমাকে রিধু আপুর বাসায় দিয়ে আসবেন।আপনি নিয়ে গেলে আম্মু মানা করতে পারবে না।প্লিজ ভাইয়া দিয়ে আয় না আপুর বাসায়।
সান বেড থেকে নেমে বলল…..
—তোকে ঐ বাসায় দিয়ে আসলে তো তুই পড়াশুনা সব ভুলে ঐ বাসাই পরে থাকিস।বাড়িতে আসার নামই নিস না।আমি পারবো না তোকে দিয়ে আসতে।
কথাটা বলেই সান ওয়াসরুমে ডুকতে নিলেই সিনথিয়া সান এর হাত ধরে করুন কন্ঠে বলল…..
—প্লিজ ভাইয়া না করিস না।দেখ আমি কালকেই চলে আসবো প্রমিস।প্লিজ…প্লিজ….প্লিজ…..নিয়ে যা না ভাইয়া।
—সত্যি তো কালকে চলে আসবি?কাল যে পরশু না হয়।
—সত্যি।প্রমিস।
—ঠিক আছে যা।আমি রেডি হয়ে আসছি।
সিনথিয়া খুশি হয়ে সানকে জড়িয়ে ধরে বলল……
—থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ ভাইয়া।
সান সিনথিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে বলল……
—পাগলি।
💦💦💦💦💦💦
নিরবকে কাচুমাচু করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ইশফা বসা থেকে উঠে নিরবের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে রাগি গলায় বলল……
—আপনাকে দিয়ে এটা আশা করিনি।
নিরব ইশফার কথার উওরে কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে রইল।নিরবকে চুপ করে থাকতে দেখে ইশফা ঝাঝালো গলায় বলল…..
—এখন চুপ করে দাড়িয়ে রয়েছেন কেন?এমন এক ভাব নিয়েছেন মনে তো হচ্ছে ভাজা মাছটাও উল্টিয়ে খেতে জানেন না।
পিছন থেকে রিধি মিনমিনে গলায় বলল…..
—ইফু ওর…..
রিধিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ইশফা, রিধিকে ধমক দিয়ে বলল……
—চুপ।একদম চুপ।একটা কথাও বলবি না।আর এই কিডন্যাপারের পক্ষে তো আরো আগে না।
কিডন্যাপার কথাটা শুনে নিরব অবাক হয়ে বলল……
—কিডন্যাপার!কে কিডন্যাপার?
ইশফাঃদেখ তুশ চোরের মার বড় গলা। এমন একটা ভাব করছে মনে হচ্ছে সে কিছুই জানে না।আমার বেষ্টুকে কিডন্যাপ করে এখানে আটকিয়ে রেখে এখন ন্যাকা সাজা হচ্ছে।
ইশফার কথা শুনে নিরব আকাশ থেকে পরল।ও অবাক হয়ে ইশফা দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো ইশফা কি কথাগুলো ফান করে বলছে নাকি সিরিয়াস হয়ে।কিন্তু ইশফার চেহারা দেখে নিরব কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। রিধি পিছন থেকে কিছু বলতে চাইলে তুশি ইশারায় রিধিকে চুপ থাকতে বলে ইশফার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল….
—এতো কথার কি আছে তুশ।ব্যাটারে ধইরা চারটা উওম মধ্যম লাগা।তারপরে পুলিশে দে।এখন কিছু মনে না পরলেও জেলে গিয়া ডান্ডার বারি খাইয়া ঠান্ডা হইলেই সব মনে পরবো।
নিরবঃকি বলছো তোমরা এসব?আমি রিধিকে কিডন্যাপ করেছি?রিধু তুমি কিছু বলছো না কেন?(রিধিকে উদ্দেশ্য করে)
রিধি ন্যাকা কান্না করে বলল…..
—ইফু এই লোকটা আমাকে দুদিন ধরে কিডন্যাপ করে এখানে রেখে দিয়েছে।প্লিজ এখান থেকে আমাকে নিয়ে চল।
তুশি রিধিকে সান্তনা দিয়ে বলল…..
—কাদিস না বোন আমরা একে কেলিয়ে তোকে এখান থেকে নিয়ে যাব।
কথাটা বলেই তুশি তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে নিরব এর দিকে তাকালো।আর ইশফা তো সেই কখন থেকেই তার বড় বড় চোখ দিয়ে নিরব এর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে।
নিরব চোখ রাঙিয়ে রিধির দিকে তাকিলো।নিরব পারছেনা রিধিকে তুলে আছার মারতে।এতে তো সে ইশফা,তুশির এমন হঠাৎ আগমন আর তাদের উদ্ভব কথার কারনে ঘাবরে রয়েছে।তার উপরে রিধির এই সব ফাজলামো।
তুশি পাশের থেকে একটা ফুলদানি নিয়ে নিরবের দিকে তেড়ে আসতে আসতে বলল…….
—আমার বেষ্টুকে কিডন্যাপ করা।আপনাকে তো আমি…….।
নিবর তুশির কাজে স্টেচু হয়ে গেলো।কথা বলার ভাষাই যেন সে হাড়িয়ে ফেলল।তার পরেও গলায় জোর দিয়ে বলল…….
—বেকিং নিউজ নিজের বউকে কিডন্যাপ এর অভিযোগে শালিকার হাতে দুলাভাই খুন।
নিরবের ভীতু ফেস দেখে তুশি অনেক কষ্টে এতোক্ষন নিজের হাসি আটকিয়ে রেখেছিল।কিন্তু নিরবের কথা শুনে কোনভাবেই নিজের হাসি আটকিয়ে রাখতে না পেরে ফিক করে হেসে দিল।
তুশিকে হাসতে দেখে নিরব হাফ ছেড়ে বেচে বলল…..
—আরেকটু হলেই হার্ট এর্ট্যাক হয়ে যেত।
তুশি হাসতে হাসতে বলল…..
—সরি ভাইয়া।
ইশফা তুশির বাহুতে চাপর মেরে বলল…..
—দিলি তো সব শেষ করে।ভাইয়ার সাথে আরেকটু মজা করা যেত।
নিরব বড় করে নিশ্বাস নিয়ে বলল…..
—মজা করছিলে না শকড দিচ্ছিলে।আল্লাহ্ সত্যি আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।যে ভাবে তেড়ে আসছিলো ভেবে ছিলাম সত্যিই নাকি আমার আবার মাথা ফাটিয়ে দেয়।
ইশফাঃআমাদের এতটুকু মজাতেই আপনার এই অবস্থা আর আপনারা যে আমাদের সেই শকড দিয়েছেন তা কি ছিলো জিইইইজুওওও?
💦💦💦💦💦💦
ফুরফুরে মন নিয়ে ঘুম থেকে উঠলেও রাতের কথা মনে পরতেই ইশরার চেহারা আধারে ঢেকে গেলো।বালিশের পাশ থেকে ফোন বের করে দেখে নিলো জিদানের কোন কল এসেছে কিনা।জিদানের নাম্বার থেকে কল,মেসেজ কিছুই দেখতে না পেরে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো।ফোনটা পাশে রেখেই ফ্রেস না হয়েই আবার শুয়ে রইল।কিছুক্ষন এপাশ-ওপাশ করার পর নিজের মাথায় নিজেই গাট্টা মেরে বলল…..
—ইশুরে দিনদিন ইডিয়েট হচ্ছিস।কাল রাতে তো জিদ দেখিয়ে নিজেই নাম্বার ব্লক করেছিস সেটা কিভাবে ভুলে গেলি।জিদানের নাম্বারের ব্লক খুলতে চেয়েও খুললো না।
একটু পর ইশান এর নাম্বার থেকে কল আসতেই ইশরা ফট করে কলটা ধরে নিজের রাগ ঝাড়তে বলল……
—ঐ জানোস না আমি এই টাইমে ঘুমিয়ে থাকি এখন আমাকে কল কেন দিয়েছিস?
অপর পাশ থেকে জিদান ধমক দিয়ে বলল…..
—ফাজিল মেয়ে থাপ্পড় খাওনের সখ জেগেছে?
জিদানের ধমক খেয়ে ইশরা চুপ করে রইল।না চাইতেও পানিতে চোখ টলমল করতে লাগলো।ইশরাকে চুপ থাকতে দেখে জিদান রাগি গলায় বলল……
—আমার নাম্বার ব্লক করেছিস কেন?
ইশরা কিছু না করে চুপ করে রইল।জিদান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল……
—ছোট থেকে তুই আমাকে চিনিস।আমি কেমন?আমার বলা না বলা কথা সবই তুই বুঝিস?তার পরেও কেন এমন পাগলামো করিস তুই?চার চারটা বছর তোর থেকে দূরে থেকেও এক মূহুর্তের জন্যও তোকে ভূলতে পারিনি।তোর কি মনে হয় এখন তোর সামনে থেকে তোকে ভূলে যাব?
ইশরা কিছু না বলে নিরবে চোখের জল ফালাতে লাগল।জিদান একটু চুপ থেকে বলল……
—ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে মেডিসিন নিয়ে আধা ঘন্টার মধ্যে কল কর আমাকে।এক মিনিট দেরি হলে খবর আছে।রাখছি।
কথাটা বলেই জিদান ফট করে লাইন কেটে দিল।ইশরা জিদানের কাজে রাগ করতে চেয়েও তার মুখে হাসি ফুটে উঠল।
#চলবে,