#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব :২৫
পরে বুকে থু থু দিয়ে বলে
” উফফ ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি। আচ্ছা তুই এতো রাগছিস কেনো ?? আমি তো মজা করছিলাম। আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু তো তুই। তোর জায়গা অন্য কেউ পাবে না। তুই শুধু শুধু রাগ করছিস ” অভিদ এবার একটু শান্ত হয়। নরমাল ভাবে কাজ করতে থাকে। রায়হান মুচকি হাসলো। রাতে বাড়ির সবার সাথে কথা বলে নিলো। রুহির বাবা রাইমা আর মিশুর সাথেও কথা বলে নিলো।
রায়হান, অভিদ আর গার্ডদের গাড়ি একটা গভীর জংগলের সামনে এসে থামে। জংগলের ভেতরে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। তাই অভিদরা সবাই এখানেই নেমে গেলো। অভিদ তার পরনের লম্বা কোটে হাত ঢুকিয়ে সামনে এগোতে থাকলো, পাশে রায়হানও রয়েছে তবে তার পা যেন চলছেই না শীতের কারণে। রায়হানের আবার রুহির মতো বেশি শীত। রায়হান এখানে এসে প্রতিদিন মোটা গেঞ্জির উপর শার্ট, শার্টের উপর জ্যাকেট, তার উপর কোর্ট পরে। এখনও সব পরেছে তবুও থরথর কাপছে আর হু হা করছে। অভিদ মাঝে মাঝে ঠোট চেপে হাসছে। আগে পিছে অনেক গার্ড রয়েছে।
গভীর জংগলে ঢুকতে ঢুকতে একটা বড় বাড়ি দেখতে পায়। বাড়িটা দেখে অনেক পুরোনো মনে হচ্ছে। বাইরে থেকে একদম চুপচাপ আর মরা বাড়ি মনে হচ্ছে। বাড়িতা দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না যে এখানে কেউ থাকে। শুধু কেউ না অনেক মেয়েকে জোর করে আটকে রাখা হয়।
অভিদ এগিয়ে যেতেই সব গার্ডরা আগে যেতে থাকে। অভিদ বাড়ির বড় দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। দরজায় বাইরে থেকে নতুন তালা ঝুলছে। অভিদ বাকা হাসি দেয়। গার্ডদের ইশারা করে বলে তালা ভাঙতে। একজন গার্ড টর্চ লাইট মাটির দিকে দিতেই ইট পেয়ে গেলো। সেটা হাতে নিয়ে তালায় তিনটা বাড়ি দিলো। এতো আস্তে দিলো যে অভিদের মনে হলো একটা পিঁপড়াও মরবে না এই বারিতে। অভিদ রেগে দাতে দাত চেপে বলে
” গাধার বাচ্চা এতো আস্তে বারি দিয়ে তালা ভাঙছো নাকি পিঁপড়ে মারছো??”
গার্ড ফিসফিস করে বলে
” স্যার জোড়ে দিলে তো ভেতরের লোক গুলো টের পেয়ে যাবে তখন ওরা পালিয়ে যাবে আর আমরা ধরতে পারবো না।”
রায়হান এসে দিলো একটা ধমক। রায়হান বিরক্ত চেহারা করে বলে
” তোমাদের কোথ থেকে ধরে এনেছিলাম বলোতো। গাধার মতো কাজ করছো কেনো।তালা ভাঙতে বলেছে পাতা পিষতে বলেনি। আর ওই লোক পালাবে কি করে ?? তোমরা আছো কেনো ?? ওরা পালালে তোমরা যদি ধরতে না পারো তাহলে তোমার সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে আসবো। ছাগল ” বলে অভিদের পাশে দাঁড়ায়। অভিদ গার্ডের হাত থেকে ইট টা নিয়ে তালায় শক্তি দিয়ে দুইটা বাড়ি দেয়। দুইটা বাড়িতেই তালা ভেঙে যায়।
অভিদ গেট খুলে ভেতরে ঢুকলো। সামনে বাড়ির দিকে একবার তাকিয়ে গার্ডদের বলে
” তোমরা অর্ধেক বাড়ির বাইরে ঘিরে রাখো আর অর্ধেক আমার সাথে ভেতরে এসো। আর তোমাদের ডাকার পর সবাই আসবে। ” বলে বাড়ির দিকে যেতে থাকে। বাড়ির গেট বন্ধ দেখে দুজন গার্ড দরজা ভেঙে ফেলে। অভিদ, রায়হান ভেতরে ঢুকতেই দেখে কয়েকজন গুন্ডা টাইপ লোক ভেতর থেকে এসেছে। দরজা ভাঙার এতো জোড়ে শব্দ শুনেই এসেছে।
ওদের থেকে কয়েকজন দৌড়ে ভেতরের রুম গুলোর দিকে চলে যায় আর কয়েকজন এসে গার্ডদের সামনে দাঁড়ায়। একেক জনের হাতে হকিস্টিক, ছুড়ি, গান রয়েছে। কোমড়ের ডান পাশে প্যান্টে আধগোজা ছুড়ির ব্যক্তিটা এগিয়ে এসে বলে
” এই তোরা কে ?? তোদের এখানে কে পাঠিয়েছে?? বাচতে চাইলে এখনি পালা নয়তো আর প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারবি না।
” তা তোরা কি আমার সামনেই আমার গার্ডদের মারবি নাকি ??” অভিদের গলা শুনে গুণ্ডা গুলো গার্ডদের দিকে তাকায়। গার্ডরা সামনে থেকে সরতেই ওরা অভিদ আর রায়হানকে দেখতে পায়। দুজনের সামনে গার্ড থাকায় গুন্ডারা খেয়াল করেনি অভিদ, রায়হানকে। অভিদকে দেখে সবার আত্মা কেপে উঠলো। অভিদ এখানে কি করছে সেটা ভাবতে চাইলেও পারলো না। এখন এখান থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়াই বেশি শ্রেয় বলে সবাই মনে করলো। সবাই ঢোক গিলে আস্তে আস্তে একটু পিছিয়ে গেলো। যেতে যেতে কাপা হাতে থাকা অস্ত্র গুলো পড়ে গেলো। যেই মুহূর্তে দৌড় দেবে তখন অভিদ গম্ভীর গলায় বলে উঠে
” এখান থেকে এক পা এগোলে প্রত্যেকের লাশ পড়বে আর বাইরে গেলেও লাভ হবে না কারণ পুরো বাড়ি ঘেরাও করা। ” সবাই দাঁড়িয়ে গেলো।
একজন হঠাৎ করে কোমড় থেকে একটা গান বের করে অভিদের দিকে তাক করে পেছনে যেতে যেতে বলে
“কেউ এগোবে না। এগোলেই অভিদ কে গুলি করে দেবো।” লোকটা কথায় বাকি সবাই সাহস পেয়ে গেলো। তাদের মনে হচ্ছে ভয় পেলেও পালানোর চেষ্টা করতে হবে। তারা সবাই পেছনে যেতে লাগে।
অভিদ নরমাল ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে। ওদের পালানোর চেষ্টা দেখছে। অভিদ এবার এগিয়ে গেলো সালনের দিকে। লোক গুলো অভিদকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয় পেয়ে থেমে গেলো। অভিদ বাকা একটা হাসি দিলো আর ওদের দিকে তাকিয়ে থেকেই পায়ের কাছের হকিস্টিকটা পা দিয়ে ছুড়ে লোকটার হাত বরাবর মারলো। লোকটার হাতের গান পরে গেলো। গার্ডরা গিয়ে ওদের মারতে লাগলো। যেই লোকটা গান অভিদের উপর তাক করেছিলো অভিদ তার কাছে গিয়ে চুল গুলো চেপে ধরে বলে
” কি যেনো বলেছিস !! আমাকে গুলি করবি ?? তোর কি মনে হয় আমি এসব ভয় পাই ?? আমার ওই একটা গুলিতে না!! কিছু হবে না। আল্লাহ ছাড়া আমাকে কেউ মারতে পারবে না। এখনও পৃথিবীতে এমন কেউ জন্মায়নি যে আমাকে মারবে। আমি আমার ইচ্ছেয় মরবো নাহলে আল্লাহই আমার প্রাণ নেবে। বুঝেছিস ?? আর আমি তোদের প্রাণ নেবো। ” বলে লোকটার মুখে একটা ঘুষি দিলো।
গার্ডরা ওদেরকে ধরে বেধে নিলো তবে এখনও ভেতরের রুমের লোক গুলো রয়েছে। অভিদ আর রায়হান সেদিকে গেলো আর বাকি গার্ড দের ভেতরে আসতে বললো। ভেতরের দিকে আসতেই দেখলো লোক গুলো দরজার বাইরে গান হাতে দাঁড়িয়ে আছে। রায়হান অভিদকে বলে
” কি করবি এতোগুলোকে ??”
অভিদ ওদের দিকে তাকিয়ে বলে
” আর কি করবো কাজের কাজই করবো।” বলে গাম বের করলো। রায়হানও তার গান বের করলো। অভিদ একজনের হাটুতে শুট করলো। সে পা ধরে বসে পরে আর হাত থেকে গান পরে গেলো অভিদ গানটা নিয়ে গার্ডের দিকে থ্রো করতেই গার্ড কেচ করে নেয়। রায়হান আরেকজনের হাতে আর পায়ে সুট শুট করে গার্ডের হাতে গান দেয়। এভাবে সবাইকে শুট করে গান নিয়ে গার্ড দিয়ে ওদের সরিয়ে দেয়।
অভিদ আর রায়হান একটা রুমের দরজা খুলে ভেতরে যায়। অন্ধকার রুমের ভেতর অনেক মেয়ের কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ গুনগুন করে কাঁদছে, কেউ ফুঁপিয়ে কাদছে আর কেউ মুখ চেপে কাঁদছে। অভিদ তিন, চারজন লেডি গার্ডকেও নিয়ে এসেছিলো ওদের জন্য তাই ওদের বললো তারা যেন লাইট জ্বালায়। একজন লেডি গার্ড রুমের ভেতরের লাইট অন করে দেয়।
অভিদ, রায়হান রুমে ঢুকলো। দেখলো অনেক মেয়ে রয়েছে। সবার হাত পেছন থেকে বেধে রাখা। এখানের সবাই ১৬ – ২৪ বছর বয়সের মেয়ে। প্রায় ৩০, ৩৫ জন রয়েছে। অভিদকে দেখে একটা মেয়ে কেঁদে বলে উঠে
” প্লিজ ভাইয়া আমাদের কোথাও নেবেন না। আমাদের বাড়িতে দিয়ে আসুন প্লিজ !! আমাদের মা,বাবা রা চিন্তা করছে আপনারা আমাদের ছেড়ে দিন প্লিজ। আমরা আপনাদের কি ক্ষতি করেছি?? আমাদের কেনো বাংলাদেশ থেকে এতো দূর দেশে পাচার করে এনেছেন ??”
আরেকটা মেয়ে কেঁদে কেঁদে বলে
” পাচার না করলে শয়তান গুলা খাইতে পারবো নাকি ?? ওরা এইসব খারাপ কাজ কইরাই৳ তো টাকা ইনকাম করে। টাকা না থাকলে ওরা তো ফকির হইয়া ঘুইরা বেরাইতো। হেগো লিগা কতো গুলা মা-বাবার সন্তান, স্ত্রী হারায় সেদিকে কি ওদের খেয়াল আছে ??”
অভিদ, রায়হান সবার কথা শুনে আর চেহারা দেখে বুজতে পারলো এখানে সব বাংলাদেশের মেয়েরা রয়েছে। রায়হান সবার দিকে একবার তাকিয়ে শান্তনা দিয়ে বলে
” শান্ত হও তোমরা। তোমাদের আর কোনো ভয় নেই তোমরা সবাই এখন সেফ মানে নিরাপদে আছো। আমরা তোমাদের বাঁচাতে এসেছি। আর বাঁচিয়ে নিয়েছিও এখন শুধু তোমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে।” রায়হানের কথা যেন ওদের জন্য একটা অনেক বড় শক ছিলো।
বিশ্বাসই করতে পারছে না। একজন মেয়ে খেপে বলে
” এইসব মিথ্যা কথা আমাদের বলবেন না। বাচানোর কথা বলে যে আমাদের এখান থেকে বের করে আবার অন্য কোথাও পাঠাবেন সেটা আমরা খুব ভাল করেই জানি। এসব মিথ্যা আশা আমাদের দেখাবেন না। ”
রায়হান হালকা হাসলো। সবার দিকে তাকিয়ে আবার বলে
” তোমাদের মধ্যে কেউ কি অভিদ রায়জাদাকে চেনে ?? বা নাম বা ওর কাজ সম্পর্কে জানে ??”
কয়েকজন মেয়ে মাথা নাড়ায় একটা ১৬,১৭ বছরের মেয়ে বলে উঠে
” হ্যা আমি চিনি তো অভিদ রায়জাদা অনেক রাগি মানুষ। অনেক বড় বিজনেসম্যান। মাফিয়া কিং তবে অভিদ রায়জাদা কখনও খারাপ কাজ করে না। যে অন্যায় কাজ করে তাকেই সে মেরে ফেলে। ”
রায়হান মুচকি হেসে বলে
” তাহলে সবাই শুনেছো তো ওর কথা ?? এই যে আমার পাশে যে দাঁড়িয়ে আছে সে হলো অভিদ রায়জাদা। তোমাদের এই জায়গা বাঁচাতে এসেছে। এই নরক থেকে নিয়ে যাবে। আরও কি প্রশ্ন আছে নাকি এখন বিশ্বাস করবে ” সবাই অবাক হয়ে অভিদের দিকে তাকায়। অভিদ চুপচাপ দাড়িয়ে ওদের কথা শুনছে।
মেয়ে গুলো খুশিতে কেঁদে উঠলো। বিশ্বাসই করতে পারছে না এই নরক থেকে ওরা বের হবে। আল্লাহ ওদের বাচানোর জন্য কাউকে পাঠিয়েছে। এতো দিনের আল্লাহর নাম নিয়ে চিৎকার করে কান্না করাটা যেন আজ সফল হয়েছে। তাদের বাচানোর জন্য যে এমন একটা মানুষ আসবে বিশ্বাস করতে পারছে না।
অভিদ গার্ডদের করে বলে
” ওদের সবাইকে রুম থেকে বের করে ড্রইংরুমে নিয়ে যাও আমরা দেখি আর কোনো মেয়ে আছে কিনা ” গার্ডরা মাথা নেড়ে মেয়েদের হাতের দড়ি খুলে বাইরে নিয়ে যায়।
অভিদ পাশের রুমে গিয়েও অনেক মেয়ে পেলো। সেখানের সবাই ইন্ডিয়ার। অনেকেই হিন্দিতে কথা বলছে আর কেউ কেউ তামিলে আর বাংলায় কথা বলছে। তাদেরও সবাইকে নিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে যাওয়া হলো। তার এক রুম বাদে আরেকটা রুমে সব সাদা চামড়ার মেয়ে পাওয়া গেলো। সব ইংলিশে কথা বলছে। বলতে গেলে বাংলাদেশ থেকে ধরে অনেক দেশের মেয়েই এখানে রয়েছে।
রায়হান সবাইকে ড্রইংরুমে এনে জিজ্ঞেস করলো
” আর কোনো মেয়ে আছে নাকি এখানেই সবাই রয়েছো ?? দেখো ভালো করে বলো আমরা এখন সবাইকে নিয়ে বের হবো কিন্তু !!”
একটা মেয়ে সবাইকে দেখে বলে উঠে
” ভাইয়া সেই মেয়েটা নেই।”
অভিদ ভ্রু কুচকে বলে
” কোন মেয়েটা নেই ??”
পাশের মেয়েটা বলে
” মেয়েটার নাম ‘জ’ দিয়ে কিছু একটা ছিলো। প্রথম দিন যাবেদ খানের ছেলে তাকে এখানে নিয়ে এসেছিলো। মেয়েটার ছেলেটার গলায় ঝুলে বেবি, বেবি করছিলো। কিন্তু যাবেদ খানের ছেলে মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ফ্লোরে আর বলে ওর সাথে প্রেমের নাটক করেছে ওকে এখানে আনার জন্য। পরে মেয়েটা এখানেই রয়েছে। পালানোর চেষ্টা করেছিলো বলে একটা আলাদা রুমে বেধে রেখেছিলো। এখনও রগেছে।”
অভিদ আর রায়হান দুজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে আবার যায়। যেই রুমটা খুলেনি সেটা খুলে দিলো। রুম একদম শুনশান আর অন্ধকার। অভিদ ধীরেধীরে রুমে গিয়ে লাইট অন করলো। দেখলো একটা মেয়ে হাটুতে মাথা রেখে বসে আছে হাত বাধা পাও বাধা। অভিদ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে
” excuse me.” মেয়েটা ধীরেধীরে মাথা তুলে তাকায়। হঠাৎ লাইটের কারণে একটু সমস্যা হলেও পরে ঠিক হয়ে যায়।
মেয়েটার চেহারা দেখে মাত্র অভিদ, রায়হানের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। মেয়েটাও কম অবাক হয়নি। এতো অবাক হয়েছে যে কোনো কথাই বলতে পারলো না। অভিদ, রায়হান কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। এমন একটা দিন আসবে সেটা ভাবেওনি। মেয়েটা হলো জোতি।
অভিদ, রায়হান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জোতির দিকে। জোতির চোখের নিচে কালো দাগ। পরনে সুতির থ্রি পিছ, চেহারার অবস্থার কথা না বলাই ভালো। কতো রাত কেঁদে এমন হয়েছে সেটা জোতিই বলতে পারবে। অভিদ, রায়হান গিয়ে জোতির সামনে বসে ওর হাত পার বাধন খুলে দেয়। অভিদ অবাক হয়ে বলে
” তুমি ?? তুমি এখানে কি করে এলে ??”
জোতি কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ঢুকড়ে কেঁদে উঠলো। অভিদ, রায়হান লেডি গার্ডকে ডাকতেই সে জোতিকে বাইরে নিয়ে আসে। জোতি এখনও কেঁদেই যাচ্ছে। জোতিকে একটা চেয়ারে বসিয়ে অভিদ, রায়হান তার সামনে বসে। অভিদ জোতিকে বলে
” জোতি বলো তুমি এখানে কি করে এসেছো ??”
জোতি তার কান্না থামানোর হাজার চেষ্টা করলো। আস্তে আস্তে কান্না থামতে থাকলেই সে কান্না কন্ঠে বলে
” অভিদ প্লিজ রুহিকে বাচাও। রুহিকে ওরা নিয়ে গিয়েছে। প্লিজ ওকে বাচাও।” অভিদের পৃথিবী এখানেই থমকে গেলো। তার মানে রুহি এখানেই ছিলো !! তার রুহি এখানেই ছিলো। এই নরকের মাঝে তার রুহিকেও আনা হয়েছিলো ?? অভিদ ঝড়ের বেগে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। চেয়ার বেগটা না সামলাতে পেরে উল্টে পড়ে গেলো।
রায়হানও অভিদের মতো অবস্থা। রায়হান বিশ্বাস করতে পারছে না। রুহিকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এতো দিন কোথায় না কোথায় খুঁজে ছিলো রুহিকে আর সেই রুহি এই নরকে ছিলো। রায়হান অভিদকে সামলাতে অভিদের অপর পাশের কাধে হাত রাখে শক্ত করে ধরে। অভিদ ক্ষীণ স্বরে বলে
” রুহি!!” এভাবেই স্তব্ধ হয়ে গেলো অভিদ। রায়হানের নাক,চোখ লাল হয়ে গিয়েছে।
কিছুক্ষণ পরে খেয়াল এলো জোতি বলেছে রুহিকে বাঁচাতে। রুহির কি হয়েছে ?? কারা রুহিকে নিয়ে গিয়েছে ?? অভিদ দৌড়ে জোতির বাহু ধরে ওকে ঝাঁকিয়ে বলে উঠে
” কি হয়েছে রুহির ?? আমার রুহি কোথায় ?? রুহিকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ?? কথা বলছো না কেনো ?? বলো!! ” চিৎকার করে বলতেই রায়হান এসে অভিদকে ধরে।
চলবে…wait for next part….