মাফিয়া ক্রাশ বর পর্ব-৩০

0
2354

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ৩০

রুহির খাওয়া শেষের দিকে আসতেই রুহির কেবিনে রায়হান ঢোকে। রুহি রায়হানকে দেখে কিছু বলতে নিলেই রায়হানের পরে আখিলকে ঢুকতে দেখে ভয় পেয়ে যায়। রুহি ভয় পেয়ে তার ব্যাথার শরীর নিয়ে অভিদকে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণের জন্য ব্যাথার কথা ভুলেই গেলো। রুহি এক হাতে অভিদের কলার ধরে অন্য হাতে বাহুর শার্ট খামছে ধরে চোখ মুখ বন্ধ করর জড়িয়ে ধরে আছে। অভিদ এক হাতে রুহিকে ধরে অন্য হাতে থাকা সুপের বাটিটা এগিয়ে দেয়। রায়হান গিয়ে অভিদের হাত থেকে বাটিটা টেবিলের উপর রাখে।

অভিদ রুহির মাথা হাত বুলিয়ে বলে
” রুহি কিছু হবে না দেখো !! আমরা আছি তো। ভয় পেয়ো না।” রুহি তার দুর্বল হাতে অভিদকে আরও শক্ত করে ধরার চেষ্টা করলো। আখিল অপরাধীর মতো দারিয়ে আছে। রুহির ভয় পাওয়া স্বাভাবিক তবে রুহির অবস্থা দেখে নিজেকে দোষী মনে করছে।
” আজকে আমার জন্য তোমার এই অবস্থা। সেদিন তোমাকে নিয়ে না গেলে আজকে এমন দিন দেখতে হতো না। আমার জন্য কতো গুলো মানুষ কষ্ট পেয়েছে !! আমি যদি তোমাদের জন্য কিছু করতে পারি তাহলে নিজেকে অপরাধবোধ থেকে একটু হলেও রেহায় পাবো।” মনে মনে কথা গুলো ভেবে আখিল রুহির বেডের দিকে আরেকটু এগিয়ে যায়। রুহির দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বলে
” রুহি !! মানে রুহি ভাবি, তোমার এই অবস্থার জন্য আমিই দোষী। তোমাকে সেদিন না নিয়ে গেলে আজকে তোমার সাথে এমিন কিছুই হতো না। তোমার পরিবারের সবাইও এতো দিন কষ্ট পেতো না। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি তোমার আর কোনো ক্ষতি করবো না। শুধু তোমাদের পাশে থাকতে চাই।” আখিলের সব কথা শুনে রুহি অবাক হয়ে তাকালো আখিলের দিকে। আখিলের কথা গুলো যতোটা অবাক হয়েছে তার থেকে বেশি অবাক হয়েছে আখিলের মুখে ভাবি ডাক শুনে।

রুহি অবাক হয়ে বিরবির করে বলে
” ভাবি ??সেইদিন আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেলো আর আজকে আমাকে ভাবি ডাকছে ?? স্ট্রেঞ্জ !!” রুহির বিরবির করা কথা আর ক্রু না শুনলেও অভিদ শুনেছে। তাই অভিদ গম্ভীর গলায় ফিসফিস করে বলে
” কেনো ভাবি ডাক শুনতে ভালো লাগছে না বুঝি ?? সাইয়া ডাকতে বলবো নাকি ?” অভিদের গম্ভীর মুখের এমন কথা শুনে রুহি একটা ঢোক গিললো। হালকা করে মাথা নাড়িয়ে না বলে। রায়হান দুজনের দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে এক ভ্রু উঁচু করে বলে
” তোরা দুজন কি ফিসফিস করছিস বলতো ??”
অভিদ মেকি একটা হাসি দিয়ে বলে
” রুহির বুঝাচ্ছিলাম যাতে আখিলকে ক্ষমা করে দেয়। আখিলের তো বেশি দোষ নেই। সব দোষ তো ওই ব্লাডি স…” নামটা বলতে গিয়েও রুহির দিকে তাকিয়ে থেমে যায়। রুহি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।

আখিল এখনও রুহির দিকে তাকিয়ে আছে। রুহির কিছু বলার অপেক্ষায় আছে। আখিল আবার ধীর গলায় প্রশ্ন করে
” আমাকে ক্ষমা করবে না ??” রুহি কিছুক্ষণ চুপ থেকে ধীর গলায় বলে
” নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এতেই আমি খু্শি। আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।”
আখিল স্মিত হেসে বলে
” তোমাকে অনেক অনেক থ্যাংক ইউ। আচ্ছা তাহলে এবার আমি আসি।”
অভিদ ভ্রু কুচকে বলে
” কোথায় যাবে তুমি ??” আখিল মুচকি হেসে হলে
” হোটেলে। আমি আর আশিক হোটেলে উঠেছি ”
অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” তোমাকে কোথাও যেতে হবে না তুমি আমার বাড়িতে থাকতে পারো। আবার এটা ভেবো না যে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার বউ কে ভাবি ডেকেছো তাই একজন দেবর হিসেবে থাকতে পারো।” রায়হান অভিদের কথায় ঠোট চেপে হাসলো।

আখিল মাথা নেড়ে বলে
” নাহ আমি আমি হোটেলেই থাকতে পারবো। আর আমি তো চলেই যাবো।” রায়হান আখিলের কাধে হাত রেখে বলে
” থাকলে সমস্যা কোথায় ?? নাকি তুমি আমাদের বিশ্বাস করছো না ?? তুমি কি ভাবছো আমরা তোমাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে মেরে ফেলবো ??” আখিল হরবরিয়ে বলে
” আরে কি সব বলছো আমি এসব কেনো ভাবতে যাবো ??” রায়হান হেসে বলে
” তাহলে আমাদের সাথেই থাকতে হবে। কোনো না শুনবো না।” আখিল আর কিছু বললো না। এতো বার অনুরোধ করছে তখন যেতে হবে। আখিল মাথা নেড়ে হ্যা বলে। রায়হান হালকা হেসে বলে
” তাহলে সকালে তুমি আশিক কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে এসো। ” আখিল আবার মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে রুহির, অভিদকে বিদায় দিয়ে রায়হানের সাথে কথা বলত্র বলতে বেড়িয়ে যায়।

আখিল যেতেই অভিদ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি এখনও তাকে আগের মতো জড়িয়ে ধরে বসে আছে। অভিদ প্রশান্তির হাসি দিলো। পরক্ষণেই ভ্রু উঁচু করে বলে উঠে
” কি হলো এভাবে তুমি বসে আছো কেনো ঘুমাও। পুরোটা খাবার হবে।” বলে রুহিকে শুয়ে দিতে নিলেই রুহি মুখটাকে কুচকে বলে
” আমি আর খাবো না। অনেক খেয়েছি আর না।”
অভিদ সুপের বাটিতে একবার তাকিয়ে বলে
” আর একটু আছে। একটু খেলেই আর খেতে হবে না” রুহি মুখ ফুলিয়ে বলে
” উফফ বলেছি তো আর খাবো না। আপনি খেয়ে নিন মুখ শুকিয়ে গিয়েছে।” অভিদ ফুস করে একটা শ্বাস ছাড়লো। রুহি আস্তে করে বেডে শুয়ে দিয়ে নিজের খাবারটা খেয়ে হাত ধুয়ে নেয়।একটু পর নার্স এসে রুহিকে মেডিসিন দিতেই রুহি অভিদের হাত হাত ধরে ঘুমিয়ে পরে।অভিদ রুহির মাথার পাশে বসে রুহির মাথায় হাত রেখে দাতে দাত চেপে ক্রুদ্ধ স্বরে বলে
” তোমাকে দেওয়া প্রত্যেকটা আঘাতের হিসেব নেবো আমি। তোমাকে যতো আঘাত দিয়েছে তার থেকে দ্বিগুণ আঘাত দেবো আমি ওদের।তোমার বা আর কারও ক্ষতি করতে দেবো না আমি।” বলে রুহির মাথায় মোটা ব্যান্ডজ করা কপালে ঠোট স্পর্শ করে। রুহির লাশে আরেকটা বেড আনিয়ে রুহির বেডের সাথে সেই বেড লাগিয়ে দিয়ে রুহিকে নিয়ে শুয়ে পরে। অফ কথা লাইটের আবছা আলোর দিকে তাকিয়ে যাবেদ আর সিহাবের জন্য প্ল্যান ভাবতে থাকে।

বাড়ির ড্রইংরুমের প্রত্যেকটা কাচের সো পিছ ভেঙে ফ্লোরে পরে আছে। সোফার সামনে থাকা কাচের ছোট টেবিলটাও আধভাঙা হয়ে রয়েছে। সোফায় হেলান দিয়ে বিসে আছে যাবেদ খান। বসে আছে বলে ভুল হবে বসে বসে রাগে ফুঁসছে। সামনে ছয়জন গার্ডের লাশ পরে আছে। দুই কিছুক্ষণ আগেই অভিদের গার্ডরা এসে সবার লাশ বাড়ির সামনে ফেলে গিয়েছে। একজনের হাতে একটা চিঠিও পেয়েছিলো। সেখানে লিখা ছিলো
” প্রিয়, জানের শত্রু যাবেদ খান
রুহিকে দেওয়া প্রত্যেকটা আঘাত তোকে হাজার গুন করে ফিরয়ে দেবো। রুহিকে এতো দিন আমার কাছ থেকে দূড়ে সরিয়ে রেখেছিলি সেটারও প্রতিশোধ নেবো। একটা উদাহরণ বা তোর আজকের গিফট হিসেবে ধরেনে তোর চামচাদের লাশ গুলোকে। অনেক কিছুই হবে তৈরি থাকিস সব কিছুর জন্য। বেশিদিন আর এসব থাকবে না তাই নিজেও আয়েশ করেনে আর ছেলেকেও আয়েশ করে নিতে বল।
ইতি তোর জম
অভিদ রায়জাদা।”

যাবেদ খান রেগে অভিদ বলে চিৎকার করে চিঠিটা পরে দুমড়ে মুচড়ে ছিড়ে ফেলে দেয়।এখন রাগে ফুসছে অভিদের চিঠি পেয়ে আর সিহাবের জন্য। সিহাব এখনও বাড়িতে ফিরেনি। ক্লাবে গিয়ে মেয়েদের সাথে ফুর্তি করছে। যাবেদ খান প্রচন্ড রেগে আছে। নিজের ছেলের জন্যই আজকে রুহিকে হারিয়েছে। যাবেদ খান তার কর্কশ গলায় গার্ডদের উদ্দেশ্য করে বলে উঠে
” যেখান থেকে পারো ওই অপদার্থকে তুলে নিয়ে এসো। কুইক !!” গার্ডরা একপ্রকার দৌড়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো।

যাবেদ খানের গার্ডরা একটা ক্লাবে এসে সিহাবকে খুঁজতে লাগলো। সিহাব প্রতিদিন এই ক্লাবেই আসে যদিও মাঝে মাঝে অন্য ক্লাবে বা কোনো হোটেলে যায় । কিন্তু গার্ডদের ধারণা আজকেও সিহাব এখানেই এসেছে। গার্ডরা সব জায়গায় খুঁজে ক্লাবের রুম গুলোর দিকে গেলো। তিন নাম্বার রুমে সিহাবকে একটা মেয়ের সাথে খুঁজে পেলো। তারা সিহাবকে কোনো রকমে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
বাড়ির সামনে গাড়ি থামাতেই সিহাব গাড়ি থেকে নেমে এসে রেগে একজন গার্ডকে থাপ্পড় মেরে দেয়। চিৎকার করে বলে
” তোমাদের সাহস কি করে হয় আমাকে এভাবে নিয়ে আসার। তোমরা আমার কাছে কাজ করো
নাকি আমি তোমাদের কাছে কাজ করি ?? ড্যাম ইট !!” বলে হনহন করে বাড়িতে ঢুকে যায়। বাড়ির ড্রইংরুমে পা রাখতেই সিহাবের গালে থাপ্পড় পরে।

সিহাব গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে
” বাবা !! তুমি শুধু শুধু আমাকে মারলে কেনো??”
যাবেদ খান ছেলের শার্টের কলার ধরে টেনে সোফার উপর ছুড়ে ফেলে চিৎকার করে বলে
” আমি শুধু শুধু তোমাকে মারছি ?? অপদার্থ ছেলে !! তোর জন্যই কালকে অভিদের প্রাণ ভোমরা বউকে হারিয়েছি। প্রতিদিন মেরে মেরে আধমরা বানিয়ে পরে দরদ উতলে উঠেছিলো তাই না ?? একেবারে হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করি রাখে। তোর অপদার্থর পরিচয় টা আমি আবার পেলাম। ভেবেছিলাম মেয়েটাকে মেরে ফেলবো আর অভিদ রায়জাদার উপর প্রতিশোধ নিয়ে অভিদকে প্রতিদিন ঠুকরে ঠুকরে মরতে দেখবো কিন্তু তুই !! তুই বলেছিলি মেয়েটাকে ভোগ করে তারপর মারবি। কিন্তু তোর কথা মেনে আজকে আমি বড় ভুল করেছি। তোর জন্য মেয়েটাকে আমি মারতে পারলাম না। শুধু মাত্র তোর জন্য। আর ওই ডক্টর কে খুঁজে বের করতে হবে। ওই শু***** ই তো মেয়েটাকে নিয়ে গিয়েছিলো। অভিদ তো ওর কাছে খুঁজে পেয়েছে। ওকে আগে খুঁজে বের করতে হবে আর অভিদকে তো আমিই শেষ করবো। ” বলে সিহাবের দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রুমে চলে যায়। সিহাবও রেগেমেগে রুমে চলে যায়।

তিনদিন হয়ে আজকে পাঁচদিন হলো রুহি হসপিটালে রয়েছে। এখনও উঠে বসা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না ব্যাথার কারণে। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পরে আবার প্যানিক হয়ে উঠে। অভিদ রুহিকে দেখে রাখছে সারাদিন আর অফিসের কাজও করে। রায়হান তো অভিদের সাথে থাকে আবার অফিসেও থাকে। আখিল, আশিক এখনও যায়নি বিডিতে। অভিদের বাড়িতে থেকেই নিজের অফিসের কাজ সারছে। আখিল চলে যেতে চাইলেও কেই যেতে দেয়নি। অভিদও আখিওএর সাথে নরমাল বিহেব করে। জোতিও এখন সুস্থ। জোতি প্রতিদিন একবার করে আসে রুহিকে দেখার জন্য। আর রুহি অভিদের কাছে প্রতিদিন ক্ষমা চায়। এছাড়া সারাদিন রুমেই থাকে। এদিকে রুহি তাড়া দিয়ে যাচ্ছে রুহিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অভিদ রুহির জন্য রুহির কেবিনকে রুহির ঘর তৈরি করে ফেলেছে তবুও রুহি বাড়ি যেতে চাইছে।

রুহি এখন মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। অভিদ সামনেই বেডে বসে ল্যাপটপে কি যেন করছে। অনেক্ষণ ধরে জিজ্ঞেস করেও রুহি উত্তর পায়নি অভিদ কি করছে। রুহি এবার দাতে দাত চেপে ইইইইই করে একটা চিৎকার দেয়। অভিদ চোখ পাকিয়ে ধমক দিয়ে বলে
” একটা শব্দ করলে ধরে মারবো। চুপ করে বসে থাকো !! চিৎকার করলে আবার অসুস্থ হয়ে পরবে সেটা খেয়াল আছে ?? এমনি দুর্বল শরীর নিয়ে কথা বলতে পারে না, দাঁড়াতে পারে না আবার রাগ দেখিয়ে চিৎকার দিচ্ছে। চুপ করে বসো একটা সারপ্রাইজ দেবো।” বলে আবার ল্যাপটপে মুখ গুঁজে দেয়। রুহি কাঁদোকাঁদো মুখ করে বসে থাকে। এরমাঝেই আখিল, আশিক, রায়হান, জোতি কেবিনে আসে। রায়হান সকালেও এসেছে। রায়হান রুহির চেহারা দেখে বলে
” কি হয়েছে গো তোমার ?? মুখটাকে এমন করে রেখেছো কেনো ??” রুহি আড়চোখে অভিদের দিকে ইশারা করে। রায়হান রুহির ইশারা বুঝতে পেরে মুখ চেপে হাসলো। রায়হানকে হাসতে দেখে রুহির চোখ ছোটো ছোটো হয়ে গেলো। রায়হান রুহির তাকানো দেখে হাসি বন্ধ করে রাখে। আশিক মজা করে রুহির কাছে এসে ফিসফিস করে বলে
” ম্যাম আপনি জানেন স্যার কালকে একটা মেয়ের সাথে খুব মিষ্টি করে কথা বলছিলো। দেখতে অনেক সুন্দর। একদন আপনার মতো ” রুহি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো।

অভদি সহ সবাই অবাক হয়ে রুহির দিকে তাকায়। রুহি আগের মতো কেঁদেই যাচ্ছে। জোতি রুহির কাছে এসে বলে।
” কিরে কাঁদছিস কেনো ?? কি হয়েছে ?? খারাপ লাগছে ??” রুহি কান্নার মাঝেই মাথা নেড়ে না বলে। অভিদ চোখ গুলো হালকা বড় বড় করে তাকিয়ে বলে
” কি হয়েছে তোমার ?? কোথায় কষ্ট হচ্ছে ??”
রুহি এবার শব্দ করে কেঁদে দেয়। সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছে রুহির কান্না দেখে। সবাই ভাবছে রুহি ব্যাথা বা কোনো কারণে কাঁদছে আর আশিক দাড়িয়ে ঢোক গিলছে। রুহি কান্না করতে করতে অভিদের দিকে তাকিয়ে বলে
” আপনি কোন মেয়ের সাথে মিষ্টি করে কথা বলেছিলেন ?? মেয়েটা কে ?? আমার সতিন হয়ে কে আসছে ?? বুঝেছি আপনি আমার জন্য সতিন আনিছেন তাই বলেছেন সারপ্রাইজ দেবেন আমাকে ??” বলে আবার কেঁদে দেয়। অভিদ মাথায় হাত দিয়ে সবার দিকে তাকায়। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর আশিক রুহির কাছেই এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে। অভিদের বুঝতে বাকি রইলো না কে করেছে এমন। অভিদ আশিককে চোখ রাঙিয়ে ল্যাপটপটা হাতে নেয়। রুহির পাশে বসে রুহির কোলের উপর ল্যাপটপটা রাখে। রুহি আস্তে আস্তে কান্না থামিয়ে নাক টেনে ল্যাপটপের দিকে তাকায়। ধরে নেয় অভিদ কোনো মেয়েকে দেখাবে।

কিন্তু রুহিকে ভুল প্রমাণ করে কিছুক্ষণের মধ্যে ল্যাপটপের স্ক্রিনে কিছু প্রিয় মানুষের চেহারা ভেসে উঠে। রুহি সবাইকে দেখে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ অভিদের বুকে মুখ রেখে ফুঁপিয়ে কেঁদে দেয়।

চলবে…wait for next part….