অজানা অনুভূতি পর্ব-৫২+৫৩ এবং শেষ পর্ব

0
527

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৫২
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

ডিভোর্স হয়নি কথাটি শুনে আদ্রিতা চমকে উঠলো।

ডিভোর্স হয়নি মানে? আমি ত সেদিন সাইন করে দিয়েছিলাম। ( আদ্রিতা)

সম্পূর্ণ ঘটনাটি শুনো একবার ( সাজ্জাদ)

হুম বলতে থাকেন শুনছি ( আদ্রিতা)

আমি তোমার প্রতি দুর্বল হতে থাকলাম। এজন্য প্রায়ই তোমার কোচিং-এ ক্লাস নিতাম এছাড়া ওতোমার নিরাপত্তার জন্য তোমার কাছাকাছি থাকতাম। তোমার আচরণে আমি ও বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমাকে পছন্দ করো। S.R যদি একবার জানতে পারতো আমি তোমাকে পছন্দ করি তাহলে হয়তো ততদিনে তোমাকে খু*ন করে ফেলতো। জেনে গিয়েছিলো আমাদের বিয়ে হয়েছে। লোক দিয়ে খবর পাঠিয়েছিলো S.R তোমাকে বিয়ে করতে চাই যেনো আমি তোমান জীবন থেকে সরে আসি নাহলে তোমাকে শেষ করে দিবে। বাধ্য হয়ে সেদিন ডিভোর্স পেপার দেয় তোমাকে তখন সেখানে আড়ালে S.R এর লোক ছিলো তুমি চলে যাওয়ার পর S.R এর লোক ও চলে যায়। সাথে সাথেই আমি ডিভোর্স পেপার ছিড়ে ফেলে দেয় আর আগে আমি সই করি নি। ভেবেছিলাম তোমার পরিবারকে সব জানিয়ে তোমাকে একদম নিজের করে নিবো। পরেরদিন তোমার খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম তুমি আসো নি ভেবেছিলাম হয়তো বেশি কষ্ট পেয়েছো তাই আসো নি। সপ্তাহখানেক পর ও তোমার কোনো দেখা বা খোঁজ পায় নি। তারপর জানতে পারলাম তুমি সব কিছু চেঞ্জ করে ফেলেছো। তোমার সাথে যোগাযোগের কোনো উপায় ছিলো না। একটি দিক ভালো হয়েছিলো আমান কাছাকাছি ছিলে না বলে S.R ও তোমার কোনো খোঁজ পায় নি। এর মধ্যে আমার একটি মিশনের জন্য ২ বছর দেশের বাইরে থাকতে হলো। ২ বছর পর দেশে আসার পর তোমার খোঁজ করা শুরু করলাম। এর মধ্যে একদিন আমার বাবা বললো বাবার এক বন্ধুর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দিতে চাই আমি কোনোভাবেই রাজি ছিলাম না। বাবার মুখে মেয়ের নাম শুনলাম সামিরা খান। বাবা মেয়ের কিছু ছবি দেখালো সেই ছবিতে তোমাকে দেখে মনে হলো আমি যেনো আমার জীবর পুনরায় ফিরে পেয়েছি। বাবাকে সব খুলে বললাম। বাবা শুনে বললো তাহলে তোমাকে বাড়ির বউ করে নিয়ে আসবে। আমি বাঁধা দিলাম কারণ আমি জানি S.R জানতে পারলে তোমাকে শেষ করে দিবে। তোমার বাবাকে সব খুলে বললাম প্লেন করলাম সামিরার সাথে বিয়ের নাটক করবো। দুনিয়ায় সবাই জানবে সামিরার সাথে আমার বিয়ে শেষ মুহুর্তে তোমার আর আমার বিয়ে হয়ে যাবে। সামিরাকে সব বলে দিতাম এর মধ্যে স্বাধীন জানালো স্বাধীন সামিরাকে পছন্দ করে। তাই ঠিক করলাম এক স্টেজে দুবন্ধু বিয়ে করে নিবো। ব্যাপারটা শুধু বাবা, তোমার বাবা আমি আর স্বাধীন জানতাম। আজকে বিয়ের কিছুক্ষণ আগে মা আর তোমার মাকে জানানো হয়েছে। ( সাজ্জাদ)

আদ্রিতা সাজ্জাদের কাঁধে মাথা এলিয়ে দিলো, এতো কিছু আমার অগোচরে হয়ে গিয়েছে? ( আদ্রিতা)

হুম। কালকে তোমার ১৮ বছর পূর্ণ হবে কালকের পরেরদিনই তোমার সাক্ষী দিতে হবে আদালতে পারবে ত? ( সাজ্জাদ)

হুম পারবো। ( আদ্রিতা)

কিছুক্ষণ গল্প করে দু’জন ঘুমিয়ে পড়লো। আদ্রিতা আজ অনেক দিন পর শান্তিতে ঘুমিয়েছে। ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে বিশ্বজয় ও সম্ভব হয়। S.R লোকরা কিছুই করতে পারে নি আদ্রিতার জন্য সাজ্জাদ স্পেশাল গার্ডের ব্যবস্থা করে রেখেছিলো। কেটে গেলো আর ও একদিন সাজ্জাদ আর স্বাধীনের বউভাতের অনুষ্ঠান ও হয়ে গিয়েছে।

**** ১ দিন পর ****

আদ্রিতা শরীর কাঁপছে। কোটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিতা আর সাজ্জাদ সাথে স্বাধীন আর সামিরা ও এসেছে। একটু আগেই S.R কে আদ্রিতার সামনে দিয়ে আদালতের ভেতর নেওয়া হয়েছে।

আদুরি চিন্তা করিস না শান্ত ভাবে সেদিন যা যা দেখেছিলি সব বলে দে ( সামিরা)

হ্যাঁ আদ্রিতা কোনো ভয় পেয়ো না আমরা পাশেই আছি। ( স্বাধীন)

আচ্ছা আমি ভয় পাচ্ছি না। ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত ধরলো এক সাথে প্রবেশ করলো আদালতের ভিতর৷ আদ্রিতা প্রথমদিকে একটু ভয় পেলে ওপরে কোথা থেকে যেনো সাহস উদয় হলো। সেদিন রাতে যা যা দেখেছে সব বললো।ওই চেইনে যেই রেকর্ডটি হয়েছিলো সেটি ও দেখালো। সব প্রমাণ S.R এর বিরুদ্ধে। এই পর্যন্ত নাকি ৫০ জনের ও বেশি খুন করেছে। সাথে অবৈধ ব্যবসা ত আছেই। S.R এর ফাসির রায় দেওয়া হলো। সবাই আদালত থেকে বেরিয়ে আসলো। সবার মুখে বিজয়ের হাসি।

আচ্ছা আমরা যায় বাসায় অনেক মেহমান। ( স্বাধীন)

আচ্ছা ঠিক আছে যা তোরা। ( সাজ্জাদ)

স্বাধীন আর সামিরা চলে গেলো। আদ্রিতা আর সাজ্জাদ রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটি পার্কে গেলো। পাশেই একটি নদী। নদীর কিনারে তারা দু’জন বসলো,

জানেন আমার যখন খুব বেশি মন খারাপ বা আনন্দবোধ হয় তখন আমি এইখানে আসি। ( আদ্রিতা)

তাহলে আজকে কি আনন্দের জন্য এসেছো নাকি কষ্ট? ( সাজ্জাদ)

বিজয়ের উল্লাসে ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ হাসলো।

S.R এখন নেই এখন ত আর ছেড়ে যাবেন না আমাকে? ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতার হাতটি ধরে বললো এইযে হাতটি ধরলাম মৃত্যু ব্যতীত এই হাত ছাড়বো না। যেদিন প্রথম তোমার হাত ধরেছিলাম, সেদিন হাত না বুকটা কেপেছিলো💖 ( সাজ্জাদ)

আমৃত্যু প্রিয় মানুষটার হাত সবাই ধরে রাখতে পারে না।একটা মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে,একজন কেয়ারিং Husband.!’🖤 ( আদ্রিতা)

আমার জীবনে সবচেয়ে বড় উপহার তুমি। ( সাজ্জাদ)

°আপনার উপন্যাসের শেষ অধ্যায় হতে চাই,থাকতে চাই আজীবন..!❤️🌸 আপনারে ভালোবাসতে আমার কোনো কারণ প্রয়োজন হয়না, আপনারে আমি এমনিই ভালোবাসি!আমার দীর্ঘদিনের মান-অভিমান আপনার এক ছোট্ট ম্যাসেজে নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। কখনো যদি জিজ্ঞাস করেন আমার জন্য ভালোবাসা মানে কি?
আমি শুধু এটাই বলবো যে “আপনি”। কিন্তু কখনো যদি আপনাকে কেন ভালোবাসি এটা বর্ণনা করতে বলেন, তাহলে দুঃখিত জনাব! আমার কাছে এর কোনো উত্তর নেই! আমি আপনারে ভালোবাসি, এমনিই বাসি, আপনারে কোনো কারণ ছাড়াই ভালোবাসা যায় আমাদের প্রেমটা ঠিকঠাক মতো হলোনা , কখনও তোমার হাত ধরে রাস্তা পার হওয়া হলো না , কখনও প্রচন্ড মায়ায় তোমাকে জড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজা হলো না ,কখনও ফুচকা খেতে গিয়ে প্রচন্ড ঝালে আমার চোখ গড়িয়ে যে পানি পরে ,তা বিস্ময়ে তোমার আমার দিকে তাকানো হলো না । আমার হাতে দুমুঠো কাচের চুড়ি তুমি কিনে দিলে আমার কতটা খুশি লাগত কখনও তোমার দেখা হলো না । আমি কপালে আজন্মই বাঁকা করে টিপ পরি তোমার কখনও ঠিক করা হলো না ।আমার জন্য দুপুরের ঝাঁঝ রোদে তোমার অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকা হলো না , আমার খোলা চুলে তোমার কখনও কাঠগোলাপ পরানো হলো না অথচ ,এত না হওয়ার মধ্যে , আমার শুধু তোমার জন্য অনেক ভালবাসা জন্মাল , আমার আজন্ম মায়া তোমার জন্য জন্মাল। ( আদ্রিতা)

হুম আমাদের প্রেমটা ঠিকঠাক ভাবে হয় নি। কিন্তু এখন হবে। পবিএ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর আমাদের প্রেমটা ঠিকই হবে। ( সাজ্জাদ)

জানেন পুরুষ মানুষের ভালোবাসা ভয়ঙ্কর আর নারীর ভয়ঙ্কর ঘৃণা।
পুরুষ মানুষ সহজে কাউকে ভালোবাসে না।নারী সহজে কাউকে ঘৃণা করতে পারে না। পুরুষ মানুষের প্রকৃত ভালোবাসা হচ্ছে গুপ্ত খাজানার মতো।যে পায় সে ভাগ্যবতী। আর নারীর ঘৃণা হচ্ছে সামুদ্রিক ঝড়ের মতো।সহজে আসে না।আর যখন আসে তখন পুরো কায়নাত লণ্ডভণ্ড করে দেয়। ( আদ্রিতা)

দু’জন সঠিক থাকলে ভালোবাসা এমনিই সুন্দর ( সাজ্জাদ)

হুম ( আদ্রিতা)

তখনই আদ্রিতার ফোনে একটি মেসেজ আসলো,

প্রিয়তমা অনেক বেশি মনে পড়ছে তোমাকে!

আপনি আমার পাশে তাহলে মেসেজ কে করছে? ( আদ্রিতা)

কই দেখি সাজ্জাদ সব মেসেজ গুলো পড়লো এগুলো আমি দেই নি আমি তোমাকে মায়াপরী বলে ডাকি। ( সাজ্জাদ)

তাহলে এই মেসেজ গুলো কে দিলো? ( আদ্রিতা)

দাঁড়াও আমি দেখছি। সাজ্জাদ তার এক বন্ধুকে নাম্বারটি দিয়ে বললো ডিটেইলস বের করতে। সাজ্জাদের বন্ধু ডিটেইলস বের করে সাজ্জাদকে দিলো। সাজ্জাদ ডিটেইলস দেখে চমকে উঠলো,

এই সব মেসেজ আরিয়ান দিয়েছে। ( সাজ্জাদ)

কি আরিয়ান স্যার? ( আদ্রিতা)

হুম ( সাজ্জাদ)

আরিয়ানের নাম শুনে আদ্রিতা ভীষণ অবাক হলো…

#চলবে

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৫৩ ( শেষ পর্ব)
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

বিয়ের ৩ দিন পর কারোরই কলেজে আসতে ভালো লাগে না। কিন্তু সাজ্জাদের জন্য বাধ্য হয়ে আসতে হলো কারণটা হচ্ছে সাজ্জাদ আরিয়ান স্যারের সাথে কথা বলবে। ক্লাসে মনযোগ না দিয়ে এইসব ভাবছিলাম আলো ধাক্কা দিয়ে বললো,

দুলাভাইের চিন্তায় মগ্ন নাকি? ( আলো)

আরে না তেমন কিছু না। একটি ব্যাপার নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। ( আদ্রিতা)

কি ব্যাপার? ( আলো)

আদ্রিতা আলোকে সব খুলে বললো। আলো অবাক হয়ে বললো,

তোর বিয়ের পরের দিন যখন কলেজে আসলি না স্যার জিজ্ঞেস করেছিলো কেনো আসিস নি আমি বলেছি তোর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিয়ে হয়ে গেছে শুনে ও স্যার তোকে মেসেজ দিচ্ছে কেনো? ( আলো)

অদ্ভুত ত বিয়ের পর ও একটি মেয়েকে এইভাবে মেসেজ দিচ্ছে কেনো? ( আদ্রিতা)

কথা বলে দেখ স্যারের সাথে ( আলো)

হুম আজকে সাজ্জাদ কথা বলবে স্যারের সাথে (আদ্রিতা)

আলো আর আদ্রিতা ক্লাসে মনোযোগ দিলো।

***** ক্লাস শেষে *****

আদ্রিতা আর আলো ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে।

ওইযে দুলাভাই এসেছে পড়েছে ( আলো)

হুম ( আদ্রিতা)

সরি সরি দেড়ি করে ফেললাম নাকি ( সাজ্জাদ)

না ক্লাস মাএই শেষ হয়েছে ( আদ্রিতা)

ওকে শালিকা কেমন আছো? ( সাজ্জাদ)

জ্বি ভাইয়া ভালো আছি আপনি কেমন আছেন? ( আলো)

হ্যাঁ ভালো আছি। ( সাজ্জাদ)

হুট করে ত বিয়ে করে নিলেন আমার বান্ধবীকে ( আলো)

কি আর করবো বলো ভাবলাম তোমার বান্ধবীকে কেউ বিয়ে করবে না তাই আমি করে ফেললাম ( সাজ্জাদ)

আলো আর সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো।

হয়েছে হয়েছে চলো এখন আরিয়ান স্যারের রুমে।(আদ্রিতা)

আলো, আদ্রিতা,সাজ্জাদ আরিয়ান স্যারের রুমে গেলো,

আরে সাজ্জাদ কেমন আছিস? ( আরিয়ান)

আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই? ( সাজ্জাদ)

আলহামদুলিল্লাহ ভালো। শুনলাম বিয়ে করেছিছ। বন্ধকে একবার দাওয়াত দিলে ও পারতি ( আরিয়ান)

হুট করে হয়েছে সব কিছু তাই বলা হয় নি ( সাজ্জাদ)

ও তাহলে আজকে এসেছিছ যে কোনো দরকার ছিলো নাকি? ( আরিয়ান)

হ্যাঁ তুই কি জানিস আমার আদ্রিতার সাথে বিয়ে হয়েছে? ( সাজ্জাদ)

হ্যাঁ শুনেছি। ( আরিয়ান)

সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত থেকে ফোনটি নিয়ে আরিয়ানের সামনে মেসেজগুলো ধরে বললো তাহলে ওকে এইসব মেসেজ কেনো করছিছ? ( সাজ্জাদ)

আরিয়ান তা দেখে অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গেলো।

আমি ত এইসব মেসেজ আলোকে করেছিলাম। আদ্রিতার কাছে মেসেজ গেলো কিভাবে? ( আরিয়ান)

আলোর নাম শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলো।

কি স্যার আপনি আমাকে মেসেজ করেছিলেন কেনো? ( আলো)

তুই আলোকে মেসেজ করলে আদ্রিতার কাছে মেসেজ আসবে কেনো? ( সাজ্জাদ)

আদ্রিতা কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে এখানে কি হয়েছে। স্যার এই নাম্বার কি আলো আপনাকে দিয়েছিলো?( আদ্রিতা)

হ্যাঁ আলোই দিয়েছিলো ( আরিয়ান)

কিন্তু আমি ( আলো)

আমি বুঝতে পেরেছি কি হয়েছে ( আদ্রিতা)

আলো, আরিয়ান, সাজ্জাদ ৩জনই জিজ্ঞেস করে উঠলো কি হয়েছে?

কলেজের অনুষ্ঠানের আগে কি আপনি আলোর থেকে ফোন নম্বর নিয়েছিলেন? ( আদ্রিতা)

হ্যাঁ ওই সময়ের দিকেই। ( আরিয়ান)

তখন আলোর ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। আলোকে বলেছিলাম ওর নম্বর কেউ চাইলে আমার নম্বর যেনো দিয়ে দেয়। যাতে কলেজের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কিছু জানার প্রয়োজন হলে আমরা যেনো জানাতে পারি। আর আপনি আলোর নম্বর ভেবে এই মেসেজ গুলো করেছেন। ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ খুশি হলো তার মানে আদ্রিতাকে নিয়ে আরিয়ানের মনে কোনো ফিলিংস নেই।

স্যার তার মানে আপনি আলোকে পছন্দ করেন তাই৷ ত?( আদ্রিতা)

হুম। ( আরিয়ান)

আলো লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। আরিয়ান আলোকে জিজ্ঞেস করলো, আমি কোনো প্রেমের প্রস্তাব দিবো না। সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিতে চাচ্ছি। তুমি কি রাজি?

আমার নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই। আপনি আমার পরিবারকে বিষয়টি জানান।( আলো)

আদ্রিতা আর সাজ্জাদ খুশি হলো। আরেক জোড়া ভালোবাসার পূর্ণতা হয়তো পাবে। আরিয়ান সেদিনই আলোর বাসায় প্রস্তাব দেয়। আলোর পরিবার রাজি হয়ে যায়। ১ মাসের মধ্যেই ধুমধাম করে আলোর বিয়ে হয়ে যায়

****** ১০ বছর পর *******

দেখতে দেখতে কেটে গেছে ১০ বছর। আদ্রিতা আর সাজ্জাদের একটি মেয়ে হয়েছে। মেয়ের বয়স ৬ বছর। সেই আঠারো বছরের কিশোরী আজ পাক্কা গিন্নিতে পরিণত হয়েছে। স্বাধীন আর সামিরার একটি ছেলে হয়েছে। ছেলের বছর ৮ বছর। আলো আর আরিয়ানের একটি মেয়ে হয়েছে মেয়ের বয়স ৬ বছর। তানহা আর আবির কিছুদিন হলে পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করেছে। ১০ বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হলে ও একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পরিবর্তন হয়নি বরং বেড়েছে।

*** সকালে**

সাজ্জাদ ঘুম থেকে উঠে দেখলো আদ্রিতা পাশে ঘুমাচ্ছে। বরাবরের মতোই আদ্রিতা ঘুমকাতুরে। যদি ও সাজ্জাদ বিষয়টা অনেক উপভোগ করে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আদ্রিতার চেহারা দেখলে সাজ্জাদ অনেক শান্তি পায়। আনহা ( আদ্রিতার মেয়ে) সাজ্জাদের মায়ের কাছে ঘুমায়। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে ডেকে তুললো আজকে বিকেলে একটি অনুষ্ঠান আছে সেখানে যেতে হবে। আদ্রিতা ও ঘুম থেকে উঠে কাজে লেগে পড়লো।

**** সন্ধ্যায় ****

আজকে ৪ জোড়া ভালোবাসার মানুষ এসেছে। পিচ্চিদের সাথে আনে নি। শুধু তারা তারা এসেছে। বোন আর বান্ধবীদের পেয়ে আদ্রিতার খুশির সীমা নেয়। আদ্রিতা, সাজ্জাদ, আলো, আরিয়ান, সামিরা, স্বাধীন, তানহা, আবির সবাই এসেছে। আনন্দের মধ্যে দিয়েই সবার আজকের দিনটি সমাপ্ত হলো। একে অপরের প্রতি অনুভূতি আর অজানা নেই। আজ সবার ভালোবাসা পূর্নতা পেয়েছে। #অজানা_অনুভূতি এখন আর অজানা অনুভূতি নেই। আমৃত্যু সবাই সবার পাশে থাকবে। সবার ভালোবাসার পূর্ণতা পেয়েছে! আদ্রিতা সাজ্জাদের কাছে এসে মুচকি হাসলো সাজ্জাদ ও এসে আদ্রিতাকে আগলে নিলো।

ভালোবাসি মায়াপরি ( সাজ্জাদ)

ভালোবাসি আপনাকে! ( আদ্রিতা)

_________ সমাপ্ত ________

[ শেষ লাইনটি লেখার সময় চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো। সাজ্জাদ হচ্ছে আমার ভালোবাসার মানুষটিরর নাম। যার সাথে আমার বিচ্ছেদ হয়েছে। তাকে উৎসর্গ করেই আমার এই গল্পটি লেখা।
১০ জানুয়ারি, ২০২২ প্রথম পর্বটি লেখেছিলাম। ২৬, অক্টোবর, ২০২২ সাহস করে প্রকাশ করি গল্পটি। আমার জীবনের প্রথম ধারাবাহিক গল্প। আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসার মাধ্যমেই গল্পটি শেষ করতে পেরেছি ধন্যবাদ সবাইকে ]