অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি পর্ব-১৪

0
3

#অনাকাঙ্ক্ষিত_অতিথি ।১৪।
#সাইরা_শেখ

বিস্মিত, হতভম্ব সভ্যতাকে আরেকটু চমকে দিতে নম্রতা মৃদু হেসে তার বাক্যটি শেষ করে বলল,’আজ বাগদান, তোদের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হবে। জলজ্যান্ত গিফট যখন চলে এসেছে,তখন তার সঙ্গে বসে গল্প কর। আমি নিচে গিয়ে বাকি কাজ দেখছি।মাশহুদ? আঙ্কেল আন্টি সবাই এসেছেন তো?’
মাশহুদ লম্বা শ্বাস নিয়ে, শ্বাস ছেড়ে বলল, ‘সবাই নিচে আছে।’

নম্রতা চলে গেল। মাশহুদ ঘরে ঢুকে সভ্যতার সামনে এসে দাঁড়ায়। সভ্যতা ভয় পায়, মাশহুদ কতটা শুনেছে সেটা ভেবে। মাশহুদ সভ্যতার চোখে চোখ রেখে বলল,
‘তুমি আমার ফোন চেক করেছ?’
‘করেছি। আপনিও তো আলমারি ঘেঁটে আমার ডায়েরি চুরি করেছেন। সুতরাং চেক, চুরিতে শোধবোধ।’
মাশহুদ হেসে কোমলস্বরে বলল,’আমাকেই বলতে, লক খুলে, নিজেই সবকিছু ডিটেইলসে বর্ণনা করতাম। তুমি সামান্য একটা ফোন চেক করতে কত কাঠখড় পোড়ালে বলোতো? এত কষ্ট করার প্রয়োজন ছিল না।’
সভ্যতা কৌতুহলী গলায় প্রশ্ন করলো,’এই বাগদানের কাহিনি কি? এসব কেন হচ্ছে?’

মাশহুদ সন্দিহান গলায় প্রশ্ন করে, ‘তোমার আপত্তি আছে?’
সভ্যতা নির্বিকার ভঙ্গিতে পাল্টা প্রশ্ন করলো,’এটার কি কোনো প্রয়োজন আছে?’
‘যাস্ট আংটি পড়াবে মা। নাকফুল পরাতে চেয়েছিল কিন্তু সিদ্ধান্তে বদল এসেছে। তোমার পরীক্ষার জন্য এখন বিয়ে হবে না, কতদিন পর হবে সেটাও ঠিক করা হয়নি। এভাবে,এখানে সুন্দরী হবু বউয়ের রিলেশনশিপ স্টাটাস সিঙ্গেল রেখে, আমি নিজের বাড়িতে শান্তিতে থাকতে পারছি না।’

সভ্যতা তার বামহাত উচু করে মাশহুদকে দেখিয়ে বলল, ‘কিন্তু আমার অনামিকা আঙ্গুলে তো আগে থেকেই একটা আংটি আরামসে জায়গা দখল করে বসে আছে। কেউ একজন আমাকে জোর করে এই আংটি-টি রাখতে বাধ্য করেছিল। প্রথমে রাখতে চাইনি, তবে গত কয়েক দিন ধরে সেটা আমার আঙ্গুলেই ঠাঁই পেয়েছে। নতুন আংটি কি ডানহাতে পরবো? নতুন আংটির মূল্য এটার সমান হবে তো? আমার মনে হয় না, হবে। যাই হোক, এখন বাইরে যান। আমি শাড়ি পরবো,গতবার আপনার ভাইয়া আমাকে দেখে বাচ্চা বলেছে। শাড়ি পরলে আমাকে বেশ বড়ো মনে হয়। যাওয়ার আগে বলে যান, আমার কোন রঙের শাড়ি পরা উচিত?’

সভ্যতা আলমারি খুলে মাশহুদকে দেখিয়ে বলল, ‘এখানে সব শাড়ি আমার। কোনটা ভালো লাগছে? দেখে বলুন.. ফাস্ট বলুন, পরতেও তো সময় লাগবে।’

মাশহুদের চোখ বেয়ে দু-ফোটা পানি গড়িয়ে পড়তেই সভ্যতা কালো রঙের একটা শাড়ি বের করে বলল,
‘কান্না দেখে, শোক শোক লাগছে। তাহলে কালো পরা উচিত। পরে আপনার পরিবার যদি জিজ্ঞেস করে কালো রঙের শাড়ি পরেছি কেন? সাফ জানিয়ে দেব আপনি বিয়ের কথা শুনেই কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলেন। তাই শোকের বশে এই কালো জামদানি পরেছি। ওকে?’

মাশহুদ হেসে ফেললো। মৃদুস্বরে বলল, ‘কালো পরতে চাইলে, পরো। সমস্যা নেই, কালো রঙে তোমাকে বেশ অ্যাট্রাক্টিভ লাগে। প্রথমবার তোমাকে কালো থ্রিপিচে দেখেছি, আজ কালো শাড়িতেও দেখে নেব।’

সভ্যতা বেখেয়ালি ভাব নিয়ে বলল,’প্রথমদিন কালো থ্রিপিচ পড়া ছিলাম নাকি? ওহ হ্যাঁ, কলেজ থেকে ফিরে শাড়ি পাল্টে থ্রিপিচ পড়েছিলাম। আপনি এত খেয়াল করেন আমার পোশাকের দিকে? কোনদিন কি রঙের কি পরেছি তাও মনে আছে। আপনার ব্রেইনটা কিছু দিনের জন্য ধার দিন তো, পরীক্ষার পর ফেরত দিবো।’

সভ্যতা শাড়ি-ব্লাউজ নিয়ে মাশহুদের দিকে তাঁকাল। সে দাঁড়িয়ে আছে, সভ্যতাকে এমনভাবে দেখছে যেন কত কাল ধরে দেখেনি। সভ্যতা ভ্রুঁ নাচালো। মাশহুদ সভ্যতার ইশারা বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করলো,’কি?’
‘বাইরে যাবেন না?আমি শাড়ি পরবো।নাকি কিভাবে শাড়ি পরি, সেটা দেখতে চান? দেখাব?’

মাশহুদ অপ্রস্তুত হয়ে দ্রুততার সঙ্গে বলল,’ন..না। যাচ্ছি আমি।’
সভ্যতা হেসে বলল, ‘আপনাকে দেখে মনে হয় না আপনি এত লাজুক। আপুর মজার ছলে বলা কথাটা এত দ্রুত ফলে গেল কি করে?’
মাশহুদ গম্ভীরস্বরে প্রশ্ন করে, ‘মানে?’
সভ্যতা বিরবির করে বলল, ‘হায়! আমার লাল টুকটুকে লাজুক বর।’ কিন্তু প্রকাশ্যে বলল,
‘কিছু না। আপনি যান। নয়তো আমার সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে। আমি টাইমলি, নিজের হবু শ্বশুড়বাড়ির সবার সঙ্গে দেখা করতে চাই। আপনার কারণে লেট হতে চাই না। সো প্লিজ লিভ দিস রুম রাইট নাও।’
মাশহুদ বিস্ময় নিয়ে বলল, ‘আমার থেকেও তারা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তোমার কাছে?’
সভ্যতা অকপটে জবাব দিল, ‘হ্যাঁ।’
মাশহুদ চেহারায় অসন্তোষ ভাব নিয়ে বেরিয়ে গেল। তা দেখে সভ্যতার কোনোরূপ ভাবান্তর প্রকাশ পেল না। সে ব্যস্ত সাজতে, শাড়ি পরে সে চুল বেঁধে নিল। মাথায় লম্বা ঘোমটা টেনে সে নিজেকে আয়নায় একবার দেখে নিয়ে বলল, ‘পার্ফেক্ট।’

সভ্যতা একাই নিচে নেমে এসেছে।ড্রইংরুমে প্রীতি, মুহিব, ফাইয়াজ, মৌশিসহ সবাই বসে আছে। সভ্যতা সবার সামনে গিয়ে চেহারায় হাসিভাব বজায় রেখে সালাম দিল। মাশহুদের বাবা ভড়কে গেলেন সভ্যতার রাখঢাক না থাকা স্বভাব দেখে। সভ্যতা সেটা লক্ষ করে বলল,
‘কেমন আছেন আঙ্কেল? বাকিদের সঙ্গে কিছুটা পরিচয় থাকলেও, আপনার সঙ্গে প্রথম আলাপ হচ্ছে, আপনি কি নার্ভাস? আমি একটু নার্ভাস, বসে কথা বলি?’

মাশহুদের বাবা ঘাবড়ে গিয়ে অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, বসো।’

সাইফুল (সভ্যতার বাবা) গলা খাঁকরি দিয়ে সভ্যতাকে সংকেত দিলেন যেন সে চুপ থাকে। সভ্যতা সেটা দেখে বলল,
‘আমি যেমন, তেমন দেখুক না। পরে যদি বলে ভদ্র সভ্য মেয়ে দেখে এনেছিলাম কিন্তু মেয়ে তো তেমন নয়.. তখন শুনতে বেশি খারাপ লাগবে। এখন পছন্দ না হলে সরাসরি বিয়ে ভাঙবে, তখন পছন্দ না হলে সংসার তো ভাঙা যাবে না। তাই না আন্টি?’

মাশহুদের মা হাসতে হাসতে বললেন, ‘একদম তাই।’
সভ্যতা দাদুর উদ্দেশ্যে বলল, ‘আমাকে কেমন লাগছে দাদু? আপনার চয়েজ ভালো, নয়তো দাদির মতো চমৎকার জীবনসঙ্গী খোঁজা দুষ্কর। তাই আপনার উত্তর অধিকতর গ্রহণযোগ্য।
দাদু ভালো করে দেখে বললেন, ‘চমৎকার।’

সভ্যতা কিয়ৎক্ষণ বাদে বলল,’শেষ? আর কিছু বলবেন না? রূপবতী, মায়াবতী, সুন্দরী টাইপ কিছু?’
দাদু মুচকি হেসে বললেন, ‘না, সব আমি বলে ফেললে মাশহুদ কি বলবে? ওর জন্য কিছু প্রশংসা বাঁচিয়ে রাখছি। পরে ওর থেকে পরিপূর্ণ প্রশংসা শুনে নিও।’

সভ্যতা তিক্তস্বরে বলল, ‘ওনার থেকে প্রশংসা শুনবে কে, আমি? অসম্ভব।’
দাদি বললেন, ‘একদিন শুনেই দেখো। আমরা সারাদিন শুনে অতিষ্ঠ,এই স্বাদ তোমারও নেওয়া উচিত।তা সবার সামনে শুনবে? নাকি আড়ালে, নাতবউ?’

সবাই হেসে উঠলো। সভ্যতা এবার একটু লজ্জা পেলেও নিজেকে সামলে, প্রীতির দিকে তাঁকিয়ে বলল, ‘আপনি তাহলে প্রীতি আপু।সেদিন দেখা হয়নি আমাদের। বাবুর নাম কি?’
প্রীতি মুচকি হেসে বলল, ‘ইফাজ ইলহান। সবাই প্রিন্স বলে ডাকে।’
‘ওয়াও..নাইস নেম।’

রাবেয়ার মাথা ঘুরছে মেয়ের কান্ড দেখে। নম্রতা মুচকি হাসে। মাশহুদ নিজেও এককোণায় দাঁড়িয়ে ঠোঁট চেপে হাসছে। সভ্যতা সবার উদ্দেশ্যেই বলল,
‘আমাকে দেখার পর আপনাদের কি মনে হচ্ছে? আমি প্রচুর কথা বলি? লজ্জা কম, ফটাফট উত্তর দেই? এমন মেয়ে ঘরে তোলা উচিত নয়। তাইনা.. ‘
সবাই ঘাবড়ে বলল, ‘না, না এমন মনে হবে কেন?’
সভ্যতা হতাশ গলায় বলল, ‘এমন মনে হচ্ছে না? কিন্তু এমন মনে হওয়া উচিত। কারণ আমি এমন-ই।’

মাশহুদের বাবা মাশহুদের দিকে তাঁকালেন। চেহারায় কেমন দুঃখীভাব। সভ্যতা তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করে,
‘ওনাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আঙ্কেল? ওনার কপাল খারাপ, কারণ আমার মতো বাচাল বউ পাবে।’

আঙ্কেল চকিতে তাঁকালেন সভ্যতার পানে। উচ্চস্বরে হেসে বললেন, ‘না, বরং ওর ভাগ্য ভালো যে, তোমার মতো মেয়েকে পাচ্ছে। এবার বুঝতে পারছি, কেন এতদিন বিয়ে করতে রাজি হয়নি।’

সভ্যতা ফাইয়াজের দিকে তাঁকিয়ে বলল, ‘আপনি বেশ ভালো কাঁদতে জানেন। হসপিটালে কেঁদে কেঁদে যখন প্রীতি আপুর কথা বলছিলেন তখন খেয়াল করেছি কাঁদার সময় আপনার এক্সপ্রেশন ঠিক থাকে। ওনাকে শিখিয়ে দেবেন, কিভাবে এক্সপ্রেশন ধরে রেখে কাঁদতে হয়। কারণ কাঁদার সময় ওনাকে খুবই বাজে দেখায়, আমার আপুর মতো।’

নম্রতা কেঁপে উঠলো। সভ্যতা বলতেই থাকে, ‘আপনারা কি এ-কজনই? আর কেউ নেই?বাড়িতে কাউকে ফেলে এসেছেন নাকি?আমি ভেবেছিলাম আপনাদের বাড়িতে অনেক মানুষ। আপনার কোনো ভাই-বোন নেই তাই না আঙ্কেল?’
মাশহুদের বাবা অসহায় চাহনি নিক্ষেপ করে বললেন,
‘হুম, নেই। আমি আমার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তুমি জানতে না এ বিষয়ে?’

সভ্যতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হতাশ গলায় জবাব দিল,’আমাকে কিছু জানানো হয়নি।বিয়ে ঠিক করার সময়ও বলা হয়নি, আজকের ব্যাপারেও বলা হয়নি। দেখা যাবে একদিন হুট করে বিয়েটাও করিয়ে দিল, আন্দাজে কবুল বলে ফেললাম কিন্তু টের পেলাম না কাকে, কিভাবে বিয়ে করছি।’

সাইফুল সাহেব বললেন, ‘কিছু মনে করবেন না। আমরা ওকে অনেক আহ্লাদ দিয়ে বড়ো করেছি।কোথায়,কখন কি বলতে হয়..’

সভ্যতা বাবার কথা শেষ করতে না দিয়ে চটপটে ভাব নিয়ে বলল,’কিছু মনে করবে কেন? তোমরা আহ্লাদ দিয়ে বড়ো করেছ।ওনাদের বাড়ি গেলে ওনাদের থেকেও এই আহ্লাদ আশা করি আমি। এটা বোঝাতে হবে না?দাদি ওই বাড়িতে এমন আহ্লাদ পাব না? না পেলে বিয়ে করা ঠিক হবে না।’

দাদি বললেন, ‘পাবে না কেন? সব পাবে। তুমি চিন্তা করো না সাইফুল,তোমার মেয়ে আমার বাড়িতে মেয়ে হয়েই থাকবে। আমরা তোমার রত্নকে যত্নে রাখবো।’
সাইফুল সাহেব হতাশ গলায় বললেন, ‘আপনারা ওকে চেনেন না কাকিমা। ও আপনাদের জ্বালিয়ে..’

সভ্যতা ভ্রুঁ কুঁচকে বলল,’উফ! আব্বু তুমি ওনাদের ভয় দেখাচ্ছ কেন? আমি একাই যথেষ্ট ভয় দেখানোর জন্য। তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। আন্টি আমি কিন্তু তেমন ভালো রান্না জানি না, তবে শিখে নেব। এছাড়া টুকটাক কাজ পারি।’
মৌশি বলল, ‘আপাততো পড়াশোনা করো।ওসব রান্না, কাজ আমি দেখে নিবো।’

সভ্যতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,’আপনাদের পরিবার দেখে বারবার হতাশ হচ্ছি। বি নরমাল প্লিজ.. আমি তো শ্বশুড়বাড়ি যাব, তাই না? সেখানে একটু কম্পিটিশন না হলে হয়? জা’য়ে-জা’য়ে যুদ্ধ করবো, ভাবি-ননদে একটু চুলোচুলি হবে, শাশুড়ির সাথে মনোমালিন্য হবে, এসব না থাকলে পানসে লাগবে। আব্বুর বাড়ি এত ভালো, এখন যদি শ্বশুরবাড়িও ভালো হয়। অন্যরা এটাকে বৈষম্য মনে করবে। সপ্তাহে অন্ততো দু-তিনবার ঝগড়া করা উচিত।’

মাশহুদ গম্ভীরগলায় বলল,’যত চেষ্টাই করো, কেউ তোমার ফাঁদে পা দেবে না। তুমি কেমন সে সম্পর্কে সবাই সব জানে।’
সভ্যতা অবাক হয়ে বলল, ‘কেউ-ই দেবে না? ফাইয়াজ ভাই নিশ্চই দেবে। ওনাকে দেখলেই মনে হয় উনি ভীষণ ভালো মানুষ। আর ভালো মানুষেরা বেশ বোকা হয়। তাই না বলুন?’
ফাইয়াজ ঢোক গিলে বলল, ‘আমি বলবো?’

সভ্যতা বিজ্ঞ ভাব নিয়ে বলল,’দেখলেন তো? উনি এটা অবধি ধরতে পারেন না কাকে প্রশ্ন করছি।উহু আপনি না, আমি প্রীতি আপুকে জিজ্ঞেস করেছি। আপু আপনার কি মনে হয়?’
প্রীতি দুঃখ পেল, মন খারাপের ভান করে বলল, ‘ওই আর কি! সামান্য একটু বোকা, বেশি না।’
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।

মাশহুদের মা কাছে ডাকলেন সভ্যতাকে। সভ্যতা পাশে বসতেই উনি একটি আংটি বের করলেন। প্রীতি বলল,
‘ওহ হো আম্মু,ওর আঙ্গুলের দিকে তাঁকাও।তোমার ছেলে অলরেডি একটা আংটি পরিয়ে রেখেছে।’

এরপর মাশহুদের দিকে তাঁকিয়ে বলল, ‘এই ভাইয়া তোকে আসার সময় নাকফুল দিয়েছিলাম না? ওটা কোথায়?’
দাদি অবাক হয়ে বললেন,’নাকফুল পেলি কোথ থেকে? আমরা তো ঠিক করে এসেছিলাম শুধু আংটি আর চেইন পরাবো।’
প্রীতি বলল,’তোমার নাতি গতবার একটা নাকফুল পছন্দ করে কিনেছিল। নেয়নি, আমার কাছে রেখে গিয়েছিল,আজ আসার সময় বের করেছিলাম। ভাগ্যিস সঙ্গে এনেছি। সভ্যতা তোমার নাকফুল পরতে কোনো অসুবিধা হবে না তো?’
‘বিয়ের আগেই নাকফুল?আচ্ছা সমস্যা নেই, নাকফুলই বেটার।এটার চকচকে ভাব দেখলে কেউ ডিস্টার্ব করবে না, আমাকেও কষ্ট করে আর কাউকে পেটাতে হবে না।’

মাশহুদ ললাটে আঙ্গুল ঘসে মৃদু হাসে। পকেট থেকে নাকফুল বের করে মায়ের হাতে দিয়ে বলল, ‘তোমাকে বলেছিলাম না, তোমার বউমা একটু অন্যরকম? দেখে নাও, কেমন মা’রকুটে বউ আনছো ঘরে।’
‘বেশ করছি, তোকে সোজা করতে এমন মেয়েই লাগবে।’

পরিশেষে সভ্যতাকে স্বর্ণের চেইন ও নাকফুল পরানো হলো। পরীক্ষার পর প্রথম শুক্রবারে বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
কথাবার্তা শেষ হতেই বাবা-মা, দাদা-দাদি বাদে বাকি সবাই ছাদে চলে আসে। বিয়ের তারিখ পাকা হয়েছে, এবার সভ্যতার জন্মদিন সেলিব্রেট করতে হবে।মাহিনও এসেছে একটু আগে।

চলবে…